দূষণমুক্ত শক্তির ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে এক বড় পদক্ষেপ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ গুজরাটের হানসালপুরে দূষণমুক্ত পরিবহণ প্রয়াসের সূচনা করেছেন। সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গণেশোৎসবের এই পরিবেশের মধ্যে মেক ইন ইন্ডিয়ার যাত্রায় এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হল আজ। মেক ইন ইন্ডিয়া, মেক ফর দ্য ওয়ার্ল্ড-এর যে লক্ষ্য রয়েছে তার ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতে তৈরি ইলেক্ট্রিক যানবাহন বিশ্বের ১০০টি দেশে রপ্তানি করা হবে। দেশে হাইব্রিড ব্যাটারি ইলেক্ট্রোড উৎপাদনেরও সূচনা হল আজ। আজকের দিনটি ভারত ও জাপানের বন্ধুত্বে এক নতুন মাত্রা যোগ করলো বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ভারত ও জাপানের নাগরিক এবং সুজুকি মোটর কর্পোরেশনকে শুভেচ্ছা জানান।
শ্রী মোদী বলেন, ২০১২ সালে তিনি মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় হানসালপুরের এই জমি মারুতি সুজুকিকে দেওয়া হয়েছিল। সেই সময়ও এর লক্ষ্য ছিল আত্মনির্ভর ভারত এবং মেক ইন ইন্ডিয়া।

প্রয়াত ওসামু সুজুকির স্মতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত সরকার তাঁকে পদ্মবিভূষণ উপাধি প্রদান করে সম্মানিত বোধ করেছে। ওসামু সুজুকি যে ভাবনা ভেবেছিলেন, আজ তারই রূপায়ণ হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত গণতন্ত্রের শক্তিতে বলিয়ান, সেই সঙ্গে এখানে জনবিন্যাসগত সুবিধা এবং দক্ষ শ্রমশক্তি রয়েছে। এর ফলে, প্রত্যেক অংশীদারের কাছেই এ এক সুবর্ণ সুযোগ। সুজুকি জাপান, ভারতে যা উৎপাদন করবে, তা আবার জাপানে রপ্তানি করা হবে। এতে ভারত – জাপান সম্পর্কের শক্তির পাশাপাশি ভারতের ওপর বিশ্বজনীন সংস্থাগুলির আস্থার প্রতিফলন ঘটছে। মারুতি সুজুকির মতো সংস্থাগুলি ভারতের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডার হয়ে উঠেছে। ডজনখানেক দেশে যে ইলেক্ট্রিক যানবাহান চলাচল করবে, তাতে মেড ইন ইন্ডিয়া লেবেল থাকবে বলে প্রধানমন্ত্রী গর্বের সঙ্গে উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইলেক্ট্রিক যানবাহনের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল এর ব্যাটারি। কিছুদিন আগে পর্যন্ত এই ব্যাটারি ভারতে আমদানি করতে হতো। ইলেক্ট্রিক যানবাহনের উৎপাদনকে উৎসাহ দিতে দেশে এই ব্যাটারি তৈরি করা অত্যাবশ্যক ছিল। এই ভাবনা থেকেই ২০১৭ সালে টিডিএসজি-র ব্যাটারি প্ল্যান্টের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। এখানে তিনটি জাপানি কোম্পানি ব্যাটারি সেল তৈরি করবে। ভারতে স্থানীয় ভাবে ব্যাটারি সেল ইলেক্ট্রোডের উৎপাদনও হবে। এর ফলে, হাইব্রিড ইলেক্ট্রিক যানবাহন ক্ষেত্রের বিকাশের পাশাপাশি আত্মনির্ভর ভারতের ধারণা সুদৃঢ় হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কয়েক বছর আগেও ইলেক্ট্রিক যানবাহনকে বিকল্প হিসেবে ভাবা হতো। গত বছর তাঁর সিঙ্গাপুর সফরের সময় তিনি পুরানো যানবাহন ও অ্যাম্বুলেন্সকে ইলেক্ট্রিক যানবাহনে রূপান্তরিত করার প্রস্তাব করেন। এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণের জন্য শ্রী মোদী মারুতি সুজুকির প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী জানান, পিএম ই-ড্রাইভ নামে ১১ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পে ই-অ্যাম্বুলেন্স তৈরির জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। হাইব্রিড ইলেক্ট্রিক যানবাহন একদিকে যেমন পরিবেশ দূষণ কমাবে, তেমনি এগুলি পুরোনো যানবাহনের রূপান্তরে সহায়ক হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দূষণমুক্ত শক্তি ও দূষণমুক্ত পরিবহণ ভারতের ভবিষ্যতের প্রতিনিধিত্ব করে। এই ধরনের প্রয়াসের মাধ্যমে ভারত এই ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য কেন্দ্র হয়ে উঠবে বলে তিনি মনে করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্ব যখন সরবরাহ শৃঙ্খলে বিঘ্নের সমস্যায় ভুগছেন, তখন ভারতের নীতিগত সিদ্ধান্ত একে সজীব রেখেছে। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর তিনি মেক ইন ইন্ডিয়া কর্মসূচির সূচনা করেছিলেন এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক উৎপাদকদের জন্য সহায়ক পরিবেশ গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়েছিলেন। ভারত তার উৎপাদন ক্ষেত্রকে আরও দক্ষ এবং বিশ্ব স্তরে প্রতিযোগিতার যোগ্য করে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছে। এজন্য দেশজুড়ে শিল্প করিডর, প্লাগ অ্যান্ড প্লে পরিকাঠামো এবং লজিস্টিক পার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে।

শ্রী মোদী বলেন, বড় ধরনের বিভিন্ন সংস্কারের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘদিনের সমস্যা কাটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। এখন ভারতে বিনিয়োগ করার পথ অনেক সহজ হয়ে উঠেছে। শুধুমাত্র এই দশকেই দেশে ইলেক্ট্রনিক্সের উৎপাদন প্রায় ৫০০ শতাংশ বেড়েছে। ২০১৪ সালের তুলনায় মোবাইল ফোনের উৎপাদন বেড়েছে ২,৭০০ শতাংশ। প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদন গত এক দশকে ২০০ শতাংশ বেড়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত এখানেই থামবে না। আরও উৎকর্ষ অর্জন করা ভারতের লক্ষ্য। ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে ভারত সেমিকন্ডাক্টার ক্ষেত্রে বিকাশে বিশেষ উৎসাহ দিচ্ছে। দেশে ৬টি সেমিকন্ডাক্টার কারখানা স্থাপন করা হচ্ছে।

যানবাহণ ক্ষেত্র বিরল খনিজের অভাবে যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে, তার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর মোকাবিলায় জাতীয় বিরল খনিজ মিশন চালু করা হচ্ছে। এই মিশনের আওতায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিরল খনিজ অনুসন্ধানে ১,২০০-রও বেশি অভিযান চালানো হবে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, আগামী সপ্তাহে তিনি জাপান যাচ্ছেন। ভারত ও জাপান একে অপরের উন্নয়নের মধ্য দিয়ে নিজেদের অগ্রগতি দেখে। মারুতি সুজুকির মাধ্যমে যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, তা আজ বুলেট ট্রেনের গতিতে পৌঁছেছে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ভারত ও জাপানের শিল্পগত অংশীদারিত্বের সম্ভাবনার সূচনা হয়েছিল গুজরাটে। ২০ বছর আগে ভাইব্র্যান্ট গুজরাট শিখর সম্মেলনে জাপান প্রধান অংশীদার দেশ ছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত ও জাপানের মধ্যে নাগরিক সংযোগ আরও মজবুত করতে ভারত প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। দুটি দেশই এখন একে অপরের দক্ষতা উন্নয়ন ও মানবসম্পদ সংক্রান্ত চাহিদা মেটাতে তৎপর।
আজকের এই উদ্যোগ ২০৪৭ সালের মধ্যে উন্নত ভারত গঠনের প্রয়াসকে আরও গতি দেবে বলে প্রধানমন্ত্রী আশাপ্রকাশ করেন। এই লক্ষ্য অর্জনে জাপান বিশ্বস্ত অংশীদার হয়ে থাকবে বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।

গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্রভাই প্যাটেল, ভারতে জাপানের রাষ্ট্রদূত ওনো কেইচি, সুজুকি মোটর কর্পোরেশনের আধিকারিকরা সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
সম্পূর্ণ ভাষণ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
Make in India, Make for the World. pic.twitter.com/KZsJB9qrKt
— PMO India (@PMOIndia) August 26, 2025
India has the power of democracy, the advantage of demography and a very large pool of skilled workforce, making it a win-win situation for every partner. pic.twitter.com/TggFpUSLlR
— PMO India (@PMOIndia) August 26, 2025
The world will drive EVs that say… Made in India! pic.twitter.com/HFDCW83sqV
— PMO India (@PMOIndia) August 26, 2025
The Make in India initiative has created a favourable environment for both global and domestic manufacturers. pic.twitter.com/1RjY3VYjVo
— PMO India (@PMOIndia) August 26, 2025
In the coming times, the focus will be on futuristic industries and India is taking off in the semiconductor sector. pic.twitter.com/oVQcksqurI
— PMO India (@PMOIndia) August 26, 2025


