শেয়ার
 
Comments
নর্থ এবং সাউথ ব্লকের নির্মীয়মান জাতীয় সংগ্রহালয়ের ভার্চ্যুয়াল ওয়াক-থ্রু-র উদ্বোধন করেছেন
ইন্টারন্যাশনাল মিউজিয়াম এক্সপো-র ম্যাসকট, গ্র্যাফিক নভেল – আ ডে অ্যাট দ্য মিউজিয়াম, ডিরেক্টরি অফ ইন্ডিয়ান মিউজিয়ামস, কর্তব্য পথ-এর পকেট ম্যাপ এবং মিউজিয়াম কার্ডের উদ্বোধন করেছেন
“অতীত থেকে অনুপ্রেরণা যোগায় এবং ভবিষ্যতের প্রতি কর্তব্যবোধ জাগায়”
“দেশে নতুন সাংস্কৃতিক পরিকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে”
“প্রতিটি রাজ্যের এবং সমাজের সকল শ্রেণীর ঐতিহ্য সংরক্ষণের পাশাপাশি স্থানীয় এবং গ্রামীণ সংগ্রহালয়গুলির সংরক্ষণে বিশেষ অভিযান চালাচ্ছে”
“বর্তমানে যা সারা বিশ্বের ভগবান বুদ্ধের অনুগামীদের ঐক্যবদ্ধ করছে”
“আমাদের ঐতিহ্য বিশ্ব ঐক্যের বার্তা বয়ে নিয়ে যাচ্ছে”
“প্রত্যেকটি পরিবারই তার নিজের পরিবারের জন্য একটি পারিবারিক সংগ্রহালয় গড়ে তুলতে পারে”
“এগুলি সবই সম্ভব যখন ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির সংরক্ষণ কোনও একটি দেশের বৈশিষ্ট্যে পরিণত হবে”
“যুব সমাজ বিশ্ব সাংস্কৃতিক কার্যকলাপের মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে”
“কোনও দেশের কোনও সংগ্রহালয়ে এমন কোনও শিল্পসামগ্রী থাকা উচিত নয় যা কোনও না কোনও অনৈতিক উপায়ে সংগৃহীত হয়েছে। আমাদের সব সংগ্রহালয়ের জন্য একটি নৈতিক দায়বদ্ধতা গড়ে তুলতে হবে”
“আমরা আমাদের ঐতিহ্যকে রক্ষা করব এবং একটি নতুন পরম্পরার সৃষ্টি করব”

আমার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সহকর্মী শ্রী কিশন রেড্ডিজি, শ্রীমতী মীনাক্ষ্মী লেখীজি, শ্রী অর্জুন রাম মেঘওয়ালজি, ল্যুভর মিউজিয়ামের নির্দেশক শ্রী ম্যানুয়েল রবাতেজি, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সমাগত অতিথিবৃন্দ, অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ,

আপনাদের সবাইকে ‘ইন্টারন্যাশনাল মিউজিয়াম ডে’ উপলক্ষে অনেক অনেক শুভ কামনা জানাই। আজ এখানে সংগ্রহালয় জগতের অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত হয়েছেন। আজকের এই অনুষ্ঠান আরও একটি কারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ ভারত তার স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে অমৃত মহোৎসব পালন করছে।

 

বন্ধুগণ,

‘ইন্টারন্যাশনাল মিউজিয়াম এক্সপো’র ইতিহাসেরও ভিন্ন ভিন্ন অধ্যায়কে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে জীবন্ত করে তোলা হচ্ছে। যখন আমরা কোনো মিউজিয়ামে যায় তখন এ রকম অনুভব হয় যেন আমাদের বিগত দিনের সঙ্গে সেই সময়কার ঘটনাবলীর সঙ্গে পরিচয় হচ্ছে, সাক্ষাৎকার হচ্ছে। মিউজিয়াম বা সংগ্রহালয়ে যা যা প্রদর্শিত হয় সবই তথ্যে ভিত্তিতে প্রদর্শিত হয়, প্রত্যক্ষ হয় প্রমানের ভিত্তিতে হয়। মিউজিয়াম আমাদের একদিকে অতীত থেকে প্রেরণা যোগায় আর অন্যদিকে ভবিষ্যতের প্রতি আমাদের মনে কর্তব্যবোধ জাগিয়ে তোলে।

আজকের যে মূল ভাবনা ‘সাসটেইনেবিলিটি অ্যান্ড ওয়েল বিয়িং’ অর্থাৎ ‘স্থায়িত্ব এবং মঙ্গল’-এর ভাবনা যা আজকের বিশ্বের অগ্রাধিকারগুলিকে তুলে ধরে আর এই আয়োজনকে আরও বেশি প্রাসঙ্গিক করে তোলে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আপনাদের প্রচেষ্টা সমস্ত সংগ্রহালয়ের প্রতি নবীন প্রজন্মের মানুষদের আগ্রহ আরও বাড়িয়ে তুলবে। তাঁদের আমাদের ঐতিহ্যগুলির সঙ্গে পরিচিত করাবে। আমি আপনাদের সবাইকে এইসব প্রচেষ্টার জন্য অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই। এখানে আসার আগে আমার কিছুক্ষণ সময় মিউজিয়ামে কাটানোর সৌভাগ্য হয়েছে। আমাদের সরকারি-বেসরকারী অনেক কর্মসূচীতে অংশগ্রহণের সৌভাগ্য হয়। কিন্তু আমি বলতে পারি যে আমার মনে সম্পূর্ণ প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে তেমন পরিকল্পনা, শিক্ষা এবং সরকারও এই উচ্চতায় কতটা উৎকৃষ্ট কাজ করতে পারে তা দেখে খুব গর্ব হয়েছে। এটি এমনই সুন্দরভাবে প্রদর্শিত হয়েছে যে আমার গর্ব হয়। আমি মনে করি আজকের এই অনুষ্ঠান ভারতের মিউজিয়ামগুলির অগ্রগতিতে একটি অনেক বড় মোড় হিসেবে প্রতিপন্ন হবে। এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস।

 

বন্ধুগণ,

কয়েকশো বছরের দাসত্বের দীর্ঘ কালখন্ডে ভারতের একটি বড় ক্ষতি হয়েছে যে আমাদের লিখিত-অলিখিত অনেক ঐতিহ্য ও সম্পদ নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। অসংখ্য পান্ডুলিপি, অনেক পুস্তকালয় দাসত্বের কালখন্ডে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, ধ্বংস করা হয়েছে। এই ধ্বংসলীলায় শুধু ভারতের ক্ষতি হয়নি, গোটা বিশ্বের, সমগ্র মানবজাতির ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে স্বাধীনতার পরেও আমাদের ঐতিহ্যগুলিকে সংরক্ষণ করার যতটা প্রচেষ্টা হওয়া উচিত ছিল তা হয়নি।

জনগণের মনে আমাদের ঐতিহ্য সম্পর্কে সচেতনতার অভাব এই ক্ষতিকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। আর সেজন্য স্বাধীনতার অমৃতকালে ভারত যে ‘পঞ্চ-প্রাণ’ ঘোষণা করেছে তার মধ্যে প্রধান হল- আমাদের ঐতিহ্য নিয়ে গর্ব। অমৃত মহোৎসবে আমরা ভারতের ঐতিহ্যগুলিকে সংরক্ষিত করার পাশাপাশি নতুন সাংস্কৃতিক পরিকাঠামো গড়ে তুলছি। দেশের এই সকল প্রচেষ্টার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস আর ভারতের হাজার হাজার বছরের সাংস্কৃতিক ইতিহাস।

আমাকে বলা হয়েছে যে আজকের এই আয়োজনে স্থানীয় এবং গ্রামীণ সংগ্রহালয়গুলিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আমাদের কেন্দ্রীয় সরকারও স্থানীয় এবং গ্রামীণ সংগ্রহালয়গুলিকে সংরক্ষণ করার উদ্দেশ্যে একটি বিশেষ অভিযান শুরু করেছে। আমাদের প্রতিটি রাজ্য, প্রত্যেক ক্ষেত্র এবং প্রতিটি সমাজের ইতিহাস সংরক্ষিত করার চেষ্টা চলছে। আমরা স্বাধীনত সংগ্রামে আমাদের বিভিন্ন জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষদের অবদানকে অমর করে রাখতে ১০টি বিশেষ সংগ্রহালয় নির্মাণ করছি।

আমি মনে করি এটা গোটা বিশ্বে এমন একটি অভিনব উদ্যোগ যাতে জনজাতি বৈচিত্র্যের এত ব্যাপক উদাহরণ তুলে ধরা হচ্ছে। লবন সত্যাগ্রহের সময় মহাত্মা গান্ধী যে পথ অনুসরণ করেছিলেন সেই ডান্ডি পথকেও সংরক্ষণ করা হয়েছে। যে স্থানে গান্ধীজি লবন আইন ভেঙেছিলেন সেখানে আজ একটি অনিন্দ্যসুন্দর স্মারক গড়ে তোলা হয়েছে। আজ দেশ ও বিশ্বের পর্যটকরা ডান্ডি কুটির দেখতে গান্ধীনগরে আসেন।

আমাদের সংবিধানের প্রধান রূপকার বাবাসাহেব আম্বেদকরের মহাপরিনির্বাণ যেখানে হয়েছে সেই স্থানটি অনেক দশক ধরে খুব খারাপ অবস্থায় ছিল। আমাদের সরকার দিল্লির ৫ নম্বর আলিপুর রোডে সেই স্থানটিকে একটি জাতীয় সংগ্রহশালায় রুপান্তরিত করেছে। বাবাসাহেবের জীবন সংশ্লিষ্ট পঞ্চতীর্থকেই আমরা সংরক্ষণের কাজ করেছি। মহুতে যেখানে তাঁর জন্ম হয়েছিল, লন্ডনে যেখানে তিনি ছিলেন, নাগপুরে যেখানে তিনি দীক্ষা গ্রহণ করেছিলেন আর মুম্বাইয়ের চৈত্যভূমিতে যেখানে তাঁর সমাধি রয়েছে সেই স্থানগুলিকেও সংরক্ষণের মাধ্যমে উন্নত করা হয়েছে। ভারতের ৫৮০টিরও বেশি দেশীয় রাজরাজরা ও নবাবদের রিয়াসতকে যিনি ভারতের সঙ্গে যুক্ত করেছেন সেই লৌহমানব সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের গগণচুম্বি মূর্তি আমরা তৈরি করেছি। তার নাম দিয়েছি স্ট্যাচু অফ ইউনিটি। সেটি এখন দেশের অন্যতম গর্ব। সেই স্ট্যাচু অফ ইউনিটির ভিতরেও একটি অনিন্দ্যসুন্দর সংগ্রহশালা গড়ে উঠেছে।

পাঞ্চাবের জালিয়ানওয়ালাবাগ থেকে শুরু করে গুজরাটের গোবিন্দ গুরুজির স্মারক, উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে মানমহল সংগ্রহালয়, গোয়ার মিউজিয়াম অফ ক্রিশ্চিয়ান আর্ট- এ রকম অনেক স্থানকে সংরক্ষণ করা হয়েছে। সংগ্রহালয় বিষয়ক আর একটি অভিনব উদ্যোগ আমাদের দেশে নেওয়া হয়েছে। আমরা রাজধানী দিল্লিতে দেশের সমস্ত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বর্ণময় জীবন এবং অবদানকে তুলে ধরে একটি বিশেষ ‘পিএম মিউজিয়াম’ গড়ে তুলেছি। আজ সারা দেশ থেকে মানুষ দিল্লিতে বেড়াতে এসে এই পিএম মিউজিয়াম দেখতে যান আর স্বাধীনতার পর থেকে ভারতের উন্নয়ন যাত্রার সাক্ষী হয়ে উঠেন। আমি আজকের এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে আসা অতিথিদের অনুরোধ জানাবো যে আপনারা অবশ্যই এই মিউজিয়ামটি ঘুরে দেখে যাবেন।

বন্ধুগণ,

যখন কোনো দেশ তার ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করতে শুরু করে তখন তার সামনে আর একটি দিক উঠে আসে। সেই দিকটি হল অন্যান্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক এবং আত্মীয়তা। ভগবান বুদ্ধের মহাপরিনির্বাণের পর ভারত যেমন তার পবিত্র দেহাবশেষগুলিকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে সংরক্ষণ করেছে সেই পবিত্র দেহাবশেষগুলি এখন শুধু ভারত নয়, বিশ্বের কোটি কোটি বৌদ্ধ ও অনুগামীদের একসঙ্গে ঐক্যবদ্ধ করছে। গত বছরই আমরা বুদ্ধ পুর্ণিমার সময় বুদ্ধের চারটি পবিত্র দেহাবশেষ মঙ্গোলিয়াতে পাঠিয়েছিলাম। এই ঘটনা সমগ্র মঙ্গোলিয়ার জন্য আস্থা ও বিশ্বাসের একটি মহা পর্বে পরিণত হয়েছিল।

গৌতম বুদ্ধের যে দেহাবশেষগুলি আমাদের প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কায় রয়েছে, গত বছর বুদ্ধ পুর্ণিমার সময় সেগুলিকে আমাদের দেশে কুশীনগরে আনা হয়েছিল। তেমনই গোয়ায় সেন্ট ক্যুইন কেটেওয়ান-এর পবিত্র দেহাবশেষ-এর ঐতিহ্য ভারতের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে। আমার মনে আছে যখন আমরা সেন্ট ক্যুইন কেটেওয়ান-এর পবিত্র দেহাবশেষগুলিকে জর্জিয়া পাঠিয়েছিলাম তখন সে দেশে কী রকম জাতীয় মহোৎসবের আবহ গড়ে উঠেছিল। সেদিন জর্জিয়ার অসংখ্য নাগরিক পথে বেড়িয়ে এসেছিলেন সারা দেশে মেলার মতো আবহ গড়ে উঠেছিল। অর্থাৎ আমাদের ঐতিহ্য বিশ্ব ঐক্যেরও সূত্রধার হয়ে উঠতে পারে। আর সেজন্য এই ঐতিহ্যকে সংরক্ষণকারী আমাদের সংগ্রহালয়গুলির ভূমিকা আরও বৃদ্ধি পায়।

 

বন্ধুগণ,

আমরা যেমন পরিবারের সম্পদকে ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করি তেমনই আমাদের গোটা বিশ্বকে একটি পরিবার ভেবে আমাদের সম্পদগুলিকে সংরক্ষণ করতে হবে। আমার পরামর্শ হল আমাদের এই সংগ্রহালয়গুলি এ ধরণের সমস্ত আন্তর্জাতিক উদ্যোগে সক্রিয় অংশগ্রহণ করুক। আমাদের পৃথিবী বিগত শতাব্দীগুলিতে অনেক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মোকাবিলা করেছে। সেগুলির স্মৃতি এবং নির্দশনগুলি আজও বিদ্যমান। আমাদের উচিত অধিকাংশ সংগ্রহালয়ে সেসব নির্দশন সংগ্রহ করা, আর সংশ্লিষ্ট ফটোগুলি দিয়ে কী ভাবে গ্যালারি গড়ে তোলা যায় তা ভাবা।

আমরা বিভিন্ন সময়ে পৃথিবীর পরিবর্তিত ছবিও আঁকতে পারি। এরফলে আগামীদিনে জনগণের মনে পরিবেশের প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে। আমাকে বলা হয়েছে যে এই এক্সপোতে ‘গ্যাসট্রোনমিক এক্সপিরিয়েন্স’-এর জন্য একটি স্থান রাখা হয়েছে সেখানে আয়ুর্বেদ এবং মিলেটস- শ্রীঅন্ন ভিত্তিক বিভিন্ন রন্ধনপ্রণালী অভিজ্ঞতা জনগণ জানতে পারে।

ভারতের এসব উদ্যোগের মাধ্যমে আয়ুর্বেদ এবং মিলেটস- শ্রীঅন্ন- উভয়কে নিয়েই আজ বিশ্বব্যাপি অভিযান শুরু হয়েছে। আমরা মিলেটস- শ্রীঅন্ন এবং ভিন্ন ভিন্ন বনস্পতির হাজার হাজার বছরের ব্যবহারযোগ্যতা ভিত্তিক নতুন সংগ্রহালয়ও গড়ে তুলতে পারি। এই ধরনের প্রচেষ্টা আমাদের এই জ্ঞান ব্যবস্থাকে আগামী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেবে এবং এগুলিকে অমর করে তুলবে।

বন্ধুগণ,

এই সকল প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা তখনও সাফল্য পাব যখন আমাদের ঐতিহাসিক উপাদানের সংরক্ষণকে আমরা জাতীয় স্বভাবে পরিণত করতে পারবো। এখন প্রশ্ন হল যে আমাদের ঐতিহ্যের সংরক্ষণকে কীভাবে দেশের সাধারণ মানুষের স্বভাবে পরিণত করা সম্ভব। আমি একটা ছোট উদাহরণ দিচ্ছি। ভারতের প্রত্যক পরিবার তাদের বাড়িতে একটি পারিবারিক সংগ্রহালয় গড়ে তুলতে পারে। বাড়ির প্রত্যেক সদস্য সম্পর্কে তথ্যাবলী ও তাদের ব্যবহৃত জিনিসপত্র সেখানে সংগৃহীত থাকবে। বিশেষ করে বাড়ির বয়স্ক মানুষদের পুরনো এবং কিছু প্রিয় জিনিস সংরক্ষণ করে রাখা যেতে পারে। আজ আপনারা যে কাগজে লেখেন সেটাকে সাধারণ বলেই মনে হয়, কিন্তু আপনাদের ব্যবহৃত সেই কাগজের টুকরো তিন-চার প্রজন্ম পর একটি ‘আবেগজড়িত সম্পদ’-এ পরিণত হবে। সে রকমই আমাদের স্কুলগুলিতে, ভিন্ন সংস্থা ও সংগঠনে নিজস্ব সংগ্রহালয় গড়ে তোলা উচিত। দেখবেন এর মাধ্যমে আপনারা নিজেদের অজান্তেই ভবিষ্যতের জন্য কত বড় এবং ঐতিহাসিক সম্পদ সংরক্ষণ করে ফেলবেন।

দেশের বিভিন্ন শহরে সিটি মিউজিয়ামের কিছু প্রকল্প গড়ে তুলে সেগুলিকে আধুনিক পদ্ধতিতে সাজানে যেতে পারে। সেখানে সেই শহরগুলির ঐতিহাসিক উপাদানগুলি সংরক্ষিত করা যেতে পারে। বিভিন্ন ধর্মে ও ধর্মস্থানগুলিতে যে তথ্য সংরক্ষণের পুরনো পরম্পরা আমরা দেখি সেগুলিও আমাদের এক্ষেত্রে খুব সাহায্য করবে।

 

বন্ধুগণ,

আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে সংগ্রহালয় আজকের যুব সম্প্রদায়ের জন্য নিছকই একটি ভ্রমণস্থান নয়, সেগুলি একটি পেশার সুযোগও গড়ে তুলছে। কিন্তু আমি চাইবো যে আমাদের নবীন প্রজন্ম সংগ্রহালয়গুলিকে নিছকই কর্মক্ষেত্রের দৃষ্টিকোন থেকে না দেখেন। ইতিহাস এবং স্থাপত্য শৈলীর মতো বিষয়গুলি নিয়ে অধ্যয়নরত যুব সম্প্রদায় আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের মাধ্যম হয়ে উঠতে পারেন। এই  যুবক-যুবতীরা অন্যান্য দেশে শিক্ষা সফরে যেতে পারেন। সেখানকার যুব সম্প্রদায়ের কাছ থেকে বিশ্বের ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতি সম্পর্কে শিখতে পারেন। ভারতের সংস্কৃতি সম্পর্কে তাদের শেখাতে পারেন। এর অভিজ্ঞতা এবং অতীতের সঙ্গে সম্পর্ক আমাদের দেশের ঐতিহ্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে।

বন্ধুগণ,

আজ যখন আমরা যৌথ ঐতিহ্যের কথা বলি, সম্মিলিত ঐতিহ্যের কথা বলি, তখন আমি একটি সম্মিলিত সমস্যার মোকাবিলার প্রসঙ্গও তুলে ধরতে চাই। এই সমস্যাটি হল বিভিন্ন কলাকৃতি বা শিল্প সামগ্রী চুরি, তস্করী ও বিকৃত করা। ভারতের মতো প্রাচীন সংস্কৃতি সম্পন্ন দেশ হাজার হাজার বছর ধরে এই চুরি, তস্করী ও বিকৃতকরণের শিকার। দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে এবং স্বাধীতার পরেও আমাদের দেশ থেকে অনেক শিল্পসামগ্রী অবৈধভাবে বিদেশে পাচার করা হয়েছে। এই ধরনের অপরাধের মোকাবিলা করতে আমাদের সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।

আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে আজ সারা পৃথিবীতে ভারতের ক্রমবর্ধমান সখ্যতার ফলে সারা পৃথিবী থেকে এ ধরনের পাচার হয়ে যাওয়া শিল্পসামগ্রী সেসব দেশ ফিরিয়ে দিচ্ছে। বেনারস থেকে চুরি হওয়া মা অন্নপূর্ণার মূর্তি থেকে শুরু করে গুজরাট থেকে চুরি হওয়া মহিষাসুরমর্দিনীর মূর্তি, চোল সাম্রাজ্যের সময় নির্মিত নটরাজের বেশ কিছু মূর্তি- এ রকম প্রায় ২৪০টি প্রাচীন শিল্প সামগ্রী ভারত বিদেশ থেকে ফিরিয়ে এনেছে। আমরা সরকারের ক্ষমতায় আসার পূর্ববর্তী কয়েক দশকে এ ধরনের ২০টিরও কম চুরি হয়ে যাওয়া প্রাচীন শিল্পসামগ্রীকে ভারতে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছিল। বিগত ৯ বছরে ভারত থেকে এ ধরনের সাংস্কৃতিক শিল্প সামগ্রীর পাচারও হ্রাস পেয়েছে।

গোটা বিশ্বের শিল্পবোদ্ধা বিশেষজ্ঞদের প্রতি আমার অনুরোধ বিশেষ করে সংগ্রহালয়গুলির সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞদের প্রতি আমার আবেদন যে এক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা আরও বৃদ্ধির চেষ্টা করুন। কোনো দেশের কোনো সংগ্রহালয় থেকে এমন কোনো শিল্প সামগ্রী যেন অবৈধভাবে পাচার হয়ে আমাদের দেশের সংগ্রহালয়গুলিতে স্থান করে না নিতে পারে। আমাদের সংগ্রহালয়গুলির জন্য এটা যেন একটা নৈতিক দায়বদ্ধতা হিসেবে পরিগণিত হয়।

 

বন্ধুগণ,

আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আমরা অতীতের সঙ্গে যুক্ত থেকে ভবিষ্যতের জন্য এ ধরনের নতুন নতুন ভাবনা কীভাবে গড়ে তোলা যায় তা নিয়ে কাজ করে যাবো। আমাদের ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করবো আবার নতুন নতুন ঐতিহ্য নির্মাণও করবো। এই কামনা নিয়ে আপনাদের সকলকে অন্তর থেকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।

Explore More
ভারতের ৭৭তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে লালকেল্লার প্রাকার থেকে দেশবাসীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

জনপ্রিয় ভাষণ

ভারতের ৭৭তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে লালকেল্লার প্রাকার থেকে দেশবাসীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ
20 years of Vibrant Gujarat: Industrialists hail Modi for ‘farsightedness’, emergence as ‘global consensus builder’

Media Coverage

20 years of Vibrant Gujarat: Industrialists hail Modi for ‘farsightedness’, emergence as ‘global consensus builder’
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Prime Minister congratulates Anush Agarwala for winning Bronze Medal in the Equestrian Dressage Individual event at Asian Games
September 28, 2023
শেয়ার
 
Comments

The Prime Minister, Shri Narendra Modi has congratulated Anush Agarwala for winning Bronze Medal in the Equestrian Dressage Individual event at Asian Games.

In a X post, the Prime Minister said;

“Congratulations to Anush Agarwala for bringing home the Bronze Medal in the Equestrian Dressage Individual event at the Asian Games. His skill and dedication are commendable. Best wishes for his upcoming endeavours.”