India is eager to become developed, India is eager to become self-reliant: PM
India is not just an emerging market, India is also an emerging model: PM
Today, the world sees the Indian Growth Model as a model of hope: PM
We are continuously working on the mission of saturation; Not a single beneficiary should be left out from the benefits of any scheme: PM
In our new National Education Policy, we have given special emphasis to education in local languages: PM

বিবেক গোয়েঙ্কা জি, ভাই অনন্ত, জর্জ ভার্গিজ জি, রাজকমল ঝা, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস গ্রুপের অন্যান্য সহকর্মী এবং এখানে উপস্থিত ভদ্রমহোদয়া এবং ভদ্রমহোদয়গণ!

আজ এখানে আমরা সমবেত হয়েছি সম্মান জানাতে এমন এক ব্যক্তিত্বকে যিনি সাংবাদিকতা, মত প্রকাশ এবং ভারতীয় গণতন্ত্রে জনচলাচলে শক্তিকে নতুন উচ্চতা দিয়েছিলেন। একজন দূরদর্শী হিসেবে, প্রতিষ্ঠান নির্মাতা হিসেবে, জাতীয়তাবাদী হিসেবে এবং সংবাদ মাধ্যমের নেতা হিসেবে রামনাথ জি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস গোষ্ঠী স্থাপন করেছিলেন শুধুমাত্র একটি সংবাদপত্র হিসেবে নয়, বরং ভারতের মানুষের মধ্যে একটি লক্ষ্য হিসেবে। তাঁর নেতৃত্বে এই গোষ্ঠী ভারতের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং জাতীয় স্বার্থের কন্ঠ হয়ে উঠেছিল সেই জন্য। যখন ভারত একবিংশ শতাব্দীর এই যুগে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে ওঠার সংকল্প নিয়ে এগোচ্ছে, রামনাথ জি-র দায়বদ্ধতা, তাঁর প্রয়াস এবং তাঁর দর্শন আমাদের জন্য অনুপ্রেরণার একটি বড় উৎস। আমি কৃতজ্ঞতা জানাই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস গোষ্ঠীকে এই বক্তৃতায় আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য এবং আমি আপনাদের সকলকে অভিনন্দন জানাই। 

বন্ধুগণ, 

রামনাথ জি গীতার একটি বাণী থেকে বিশাল অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন : সুখ দুঃখে সমে কৃত্বা, লাভা-লাভৌ জয়া-জয়ৌ। ততো যুদ্ধায় যুজ্যস্ব, নৈয়ং পাপং অবাপস্যসি।। এর অর্থ আনন্দ এবং দুঃখ, লাভ এবং ক্ষতি, জয় এবং পরাজয়কে একইরকম ভাবে দেখে একজনের কর্তব্য পালন করা উচিত, যুদ্ধ করা উচিত এবং সেভাবে সে কখনও পাপ করবে না। স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় রামনাথ জি কংগ্রসকে সমর্থন করেছিলেন, পরে জনতা পার্টিকে সমর্থন করেছিলেন, এমনকি জনসংঘের টিকিটে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। আদর্শ যাই থাকুক না কেন, তিনি জাতীয় স্বার্থকে সকলের ওপরে স্থান দিয়েছিলেন। যাঁরা রামনাথ জির সঙ্গে বহু বছর ধরে কাজ করেছেন, তাঁরা তাঁর বলা অনেক গল্প ভাগ করে নিয়েছেন। কীভাবে রামনাথ জি সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলকে সাহায্য করেছিলেন, যখন স্বাধীনতার পরে হায়দ্রাবাদ এবং রাজাকারদের অত্যাচারের ঘটনা সামনে এসেছে। যখন বিহারের ছাত্র আন্দোলনে ১৯৭০ সালে নেতার প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল, রামনাথ জি নানাজি দেশমুখকে নিয়ে জেপিকে জোর করেন আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য। জরুরি অবস্থার সময় যখন ইন্দিরা গান্ধীর একজন কাছের মন্ত্রী তাঁকে ডেকে জেলে ভরে দেওয়ার হুমকি দেন, তার উত্তরে রামনাথ জি যা বলেছিলেন তা এখন ইতিহাসের গুপ্ত অধ্যায়। কিছু জিনিস জনসমক্ষে আসে, কিছু অজানা থেকে যায়, কিন্তু এই কাহিনী আমাদের বলে যে, রামনাথ জি সবসময় সত্যের পাশে ছিলেন, সব সময় সবকিছুর ওপরে কর্তব্যকে স্থান দিয়েছেন, সে তার বিরুদ্ধে যত বড় শক্তি দাঁড়াক না কেন। 

 

বন্ধুগণ, 

প্রায় বলা হয়ে থাকে রামনাথ জি সম্পর্কে, তিনি ভীষণ অধৈর্য ছিলেন। অধৈর্য কোন নেতিবাচক অর্থে নয়, ইতিবাচক অর্থে। এক ধরনের অধৈর্য যা পরিবর্তনের স্বার্থে কঠোর পরিশ্রমকে পেরোতে একজনকে ঠেলে দেয়। অধৈর্য যা বদ্ধ জলেও ঢেউ তোলে। একই ভাবে আজকের ভারতও অধৈর্য। ভারত উন্নতির জন্য অধৈর্য। ভারত স্বনির্ভর হওয়ার জন্য অধৈর্য। আমরা সকলে দেখেছি, একবিংশ শতাব্দীর প্রথম ২৫টি বছর কীভাবে দ্রুত পেরিয়ে গেল। অভূতপূর্ব সমস্যা এসেছে আমাদের সামনে একের পর এক কিন্তু সেগুলি ভারতের গতিকে শ্লথ করতে পারেনি। আপনারা দেখেছেন গত ৪-৫ বছরে সারা বিশ্বের সামনে কীভাবে সমস্যা এসেছে। ২০২০-তে করোনা ভাইরাস অতিমারী সঙ্কট দেখা দিল। সারা বিশ্বের অর্থনীতি অনিশ্চয়তার ফাঁদে পড়ল। বিশ্বের সরবরাহ শৃঙ্খল মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হল এবং সারা বিশ্বই হতাশার দিকে চলতে শুরু করল। যখন কিছুদিন পরে পরিস্থিতি আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হচ্ছে, তখন আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলিতে উথাল-পাথাল শুরু হল। এই সব সঙ্কটের মধ্যে আমাদের অর্থনীতি উচ্চ অগ্রগতির হার অর্জন করল। ২০২২-এ বিশ্ব সরবরাহ শৃঙ্খল এবং শক্তির বাজার ইউরোপীয় সঙ্কটের জন্য বিপদে পড়ে। সারা বিশ্বের ওপরে এর প্রভাব পড়ে, এমনকি ২০২২-২৩-এও আমাদের অর্থনীতি দ্রুত গতিতে এগোতে থাকে। ২০২৩-এ যখন পশ্চিম এশিয়ায় পরিস্থিতি খারাপ হয়, তখনও আমাদের বৃদ্ধির হার ভালই ছিল এবং এবছরও যখন বিশ্ব অস্থিরতায় ভুগছে, আমাদের অগ্রগতির হার ৭ শতাংশের কাছাকাছি। 

বন্ধুগণ, 

আজ যখন বিশ্ব ব্যাঘাতের জন্য ভীত। ভারত তখন প্রাণবন্ত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে চলেছে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এই প্ল্যাটফর্ম থেকে আমি বলতে পারি যে, ভারত শুধুমাত্র একটি উদীয়মান বাজার নয়, ভারত একটি উদীয়মান মডেলও। আজ বিশ্ব ভারতীয় বৃদ্ধির মডেলকে দেখছে আশার মডেল হিসেবে। 

বন্ধুগণ, 

এক শক্তিশালী গণতন্ত্রের অনেক বৈশিষ্ট্য আছে। অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যটি হল গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় মানুষের অংশগ্রহণ। গণতন্ত্র নিয়ে মানুষ কতটা আত্মবিশ্বাসী, কতটা আশাবাদী তা পরিষ্কার দেখা যায় নির্বাচনের সময়। আপনাদের মনে থাকবে ১৪ নভেম্বর যখন ফল প্রকাশিত হল এবং যেহেতু রামনাথ জির সঙ্গেও বিহারের একটা সম্পর্ক ছিল, তা এখানে উল্লেখ করা খুবই উচিত কাজ হবে। ঐতিহাসিক ফলাফলের পাশাপাশি আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে, কেউ অস্বীকার করতে পারবেন না গণতন্ত্রে মানুষের ক্রমবর্ধমান অংশগ্রহণের কথা। এবারে বিহারের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে। একবার ভাবুন, মেয়েদের ভোট পড়েছে পুরুষদের চেয়ে ৯ শতাংশ বেশি। এটাও গণতন্ত্রের জয়। 

 

বন্ধুগণ, 

বিহারের ফলাফল আরও একবার দেখিয়েছে ভারতের মানুষের প্রত্যাশার কত জোর। ভারতে মানুষ সেই রাজনৈতিক দলগুলিকে বিশ্বাস করে যারা তাঁদের প্রত্যাশা পূরণে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে এবং উন্নয়নে অগ্রাধিকার দেয় এবং আজ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্ল্যাটফর্ম থেকে আমি দেশের প্রত্যেকটি রাজ্য সরকারের কাছে বিনয়ের সঙ্গে আবেদন করছি, সে বাম হোক, ডান হোক, মধ্যপন্থী হোক, যে কোন ধরনের আদর্শের সরকার হোক, বিহারের ফলাফল আমাদের শিক্ষা দেয় যে, যারা যে ভাবে সরকার চালাচ্ছে আগামীদিনে সেটাই আপনাদের রাজনৈতিক দলের ভবিষ্যৎ ঠিক করবে। বিহারের মানুষ আরজেডি সরকারকে দিয়েছে ১৫ বছর, লালু যাদব জি যদি চাইতেন তাহলে বিহারের উন্নয়নের জন্য অনেক কিছু করতে পারতেন। কিন্তু তিনি জঙ্গলরাজের পথ বেছে নিয়েছিলেন। বিহারের মানুষ এই বিশ্বাসঘাতকতা ভুলতে পারেনি। সেই জন্য আজ সে কেন্দ্রে আমাদের সরকার হোক অথবা রাজ্যগুলিতে বিভিন্ন দলের সরকারই হোক, আমাদের সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত উন্নয়ন, উন্নয়ন এবং শুধুমাত্র উন্নয়নে এবং সেই কারণে আমি প্রত্যেকটি রাজ্যসরকারকে বলছি, আপনার রাজ্যে আরও ভাল বিনিয়োগের পরিবেশ গড়ে তুলতে প্রতিযোগিতায় নামুন। সহজে ব্যবসা করার উন্নতি করতে প্রতিযোগিতায় নামুন, উন্নয়নের মাপকাঠিতে এগিয়ে যেতে প্রতিযোগিতায় নামুন এবং দেখুন কীভাবে মানুষ আপনাদের ওপর বিশ্বাস রাখে। 

বন্ধুগণ, 

বিহার নির্বাচন জেতার পরে কিছু মানুষ যার মধ্যে সংবাদ মাধ্যমের কিছু মোদী সমর্থকও আছেন, তাঁরা আরও একবার বলতে শুরু করেছেন যে, বিজেপি এবং মোদী সব সময়ই ২৪X৭ নির্বাচনী ভাবনায় থাকেন। আমি বিশ্বাস করি যে, নির্বাচনে জিততে নির্বাচনের ভাবনায় ডুবে থাকার কোন দরকার নেই। প্রয়োজন ২৪X৭ অনুভূতির মোডে থাকা। যখন হৃদয়ে অস্থিরতা থাকবে তখন একটা মিনিটও নষ্ট করা চলবে না এবং গরীবের কষ্ট কমাতে কাজ করতে হবে, গরীবের কর্মসংস্থান করতে হবে, গরীবকে স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে হবে, মধ্যবিত্ত শ্রেণীর প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে। নিরলস ভাবে কাজ করতে হবে। যখন এই অনুভূতি, এই মনোভাব প্রতিনিয়ত সরকারকে চালনা করবে, তখন নির্বাচনের দিনে তার ফলাফল প্রত্যক্ষ করা যাবে। আমরা বিহারে সেটাই ঘটতে দেখেছি। 

বন্ধুগণ, 

কোন একজন রামনাথ জিকে নিয়ে অন্য একটা গল্প উল্লেখ করেছেন। এটা সেই সময় যখন রামনাথ জি বিদিশা থেকে জনসংঘের টিকিট পান। সেই সময় তিনি এবং নানাজি দেশমুখ আলোচনা করছিলেন সংগঠন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, না ব্যক্তি। নানাজি দেশমুখ রামনাথ জিকে বলেছিলেন তাঁকে প্রয়োজন শুধুমাত্র মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য। এরপর আর একবার ফিরে এসে জয়ের সার্টিফিকেট সংগ্রহ করার জন্য। এরপর নানাজি, রামনাথ জির হয়ে নির্বাচনে লড়াই করেন, দলের কর্মীদের শক্তিতে এবং জয় নিশ্চিত করেন। এই গল্পে উল্লেখ করার আমার উদ্দেশ্য এটা বলা নয় যে প্রার্থীরা শুধুমাত্র মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় দেখা দেবে। আমার উদ্দেশ্য আপনাদের মনোযোগ আকর্ষণ করা বিজেপির অগুন্তি কর্তব্যপরায়ণ কর্মীদের নিষ্ঠার প্রতি।

 

বন্ধুগণ, 

লক্ষ লক্ষ বিজেপি কর্মী তাঁদের ঘাম দিয়ে দলের শিকড়কে লালন-পালন করেছেন এবং তাঁরা এখনও তা করে চলেছেন এবং শুধুমাত্র তাই নয়, কেরালা, পশ্চিমবঙ্গ এবং জম্মু ও কাশ্মীরের মতো রাজ্যে আমাদের শয়ে শয়ে কর্মী তাঁদের রক্ত দিয়ে বিজেপির শিকড়কে সিঞ্চিতও করছেন। যে পার্টিতে এরকম নিষ্ঠাবান কর্মী থাকেন, নির্বাচনে জেতাই একমাত্র উদ্দেশ্য নয়, তাঁরা অবিরত কাজ করে চলেন সেবার আদর্শ নিয়ে, মানুষের হৃদয় জয় করতে। 

বন্ধুগণ, 

দেশের উন্নয়নের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়নের সুফল প্রত্যেকের কাছে পৌঁছে দেওয়া। যখন সরকারি কর্মসূচি পৌঁছোয় দলিত, নিপীড়িত, বঞ্চিত, অত্যাচারিতদের কাছে, সামাজিক ন্যায় তখন নিশ্চিত হয়। কিন্তু আমরা গত কয়েক দশকে দেখেছি কীভাবে কিছু দল এবং কিছু পরিবার এটাকে ব্যবহার করেছে শুধুমাত্র তাঁদের নিজেদের স্বার্থে এবং সামাজিক ন্যায়ের নামে। 

বন্ধুগণ, 

আমি সন্তুষ্ট যে আজ দেশ সামাজিক ন্যায় বাস্তবে পরিণত হওয়া প্রত্যক্ষ করছে। আমি আপনাদের বলতে চাই প্রকৃত সামাজিক ন্যায় কী। ১২ কোটি শৌচাগার নির্মাণ অভিযান, সেই সব গরীব মানুষের জীবনে মর্যাদা এনেছে, যাঁরা আগে বাধ্য হতো উন্মুক্ত স্থানে শৌচ করতে। ৫৭ কোটি জনধন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করেছে তাঁদের জন্য, যাঁদের পূর্বতন সরকারগুলি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রাখার যোগ্য মনেই করতো না। চার কোটি পাকা বাড়ি দেওয়া হয়ছে গবীর মানুষকে, যা তাঁদের দিয়েছে নতুন স্বপ্ন দেখার সাহস এবং ঝুঁকি নেওয়ার সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। 

বন্ধুগণ, 

গত ১১ বছরে সামাজিক নিরাপত্তায় যে কাজ করা হয়েছে তা অসাধারণ। বর্তমানে ভারতে প্রায় ৯৪ কোটি মানুষ সামাজিক নিরাপত্তার আওতায়। কিন্তু আপনারা কী জানেন ১০ বছর আগে পরিস্থিতি কী ছিল? মাত্র ২৫ কোটি মানুষ ছিলেন সামাজিক নিরাপত্তার আওতায়। আজকে সেই সংখ্যাটি ৯৪ কোটি। এর অর্থ, পূর্বে মাত্র ২৫ কোটি মানুষ সরকারি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধা পেতেন এবং এখন সেই সংখ্যা পৌঁছেছে ৯৪ কোটিতে এবং এটাই প্রকৃত সামাজিক ন্যায়। এবং আমরা সামাজিক নিরাপত্তার আওতা বাড়িয়েছি তাই নয়, আমরা অবিরত কাজ করে চলছি পূর্ণ লক্ষ্য পূরণে। যার অর্থ, যেন একজনও যোগ্য সুবিধাপ্রাপক বাকি না থাকে। যখন একটি সরকার এই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে, যখন সে চায় প্রত্যেক সুবিধাপ্রাপকের কাছে পৌঁছোতে তখন যে কোন ধরনের বৈষম্যের সমাপ্তি ঘটে। এই সব প্রয়াসের কারণে ২৫ কোটি মানুষ গত ১১ বছরে দারিদ্র্যমুক্ত হয়েছেন। এবং সেই কারণেই বিশ্ব আজ একমত যে গণতন্ত্রে পরিষেবা প্রদান করা যায়। 

 

বন্ধুগণ, 

আমাদের প্রত্যাশামূলক জেলা কর্মসূচিগুলি খতিয়ে দেখুন, ১০০-রও বেশি জেলা ছিল যাকে পূর্বতন সরকারগুলি অনগ্রসর জেলা হিসেবে দাগিয়ে দিয়ে ভুলে গিয়েছিল। বিশ্বাস করা হতো যে, এখানে উন্নয়ন করা খুব দুরূহ এবং কে এসব জেলায় কঠোর পরিশ্রম করতে রাজি হবে। যখন কোন অফিসারকে শান্তিমূলক বদলি করার প্রয়োজন হতো, তাঁদের পাঠানো হতো এই সব অনগ্রসর জেলাগুলিতে এবং বলা হতো সেখানেই থাকতে। আপনারা জানেন, এই সব অনগ্রসর জেলাগুলিতে কতজন লোক থাকেন? দেশের ২৫ কোটির বেশি নাগরিক এইসব জেলাগুলিতে থাকতেন! 

বন্ধুগণ, 

যদি এইসব অনগ্রসর জেলাগুলি অনগ্রসরই থেকে যেত, ভারত আগামী ১০০ বছরেও উন্নতি করতে সক্ষম হতো না। সেই জন্য আমাদের সরকার নতুন রণকৌশল নিয়ে কাজ করতে শুরু করে। আমরা রাজ্য সরকারগুলিকে সঙ্গে নিই, সমীক্ষা করি কোন জেলা উন্নয়নের কোন মাপকাঠিতে পিছিয়ে আছে এবং প্রত্যেক জেলার জন্য আলাদা আলাদা রণকৌশল স্থির করি। আমরা সেরা অফিসারদের উজ্জ্বল উদ্ভাবনী তরুণ মনকে বহাল করি, নিয়োগ করি সেখানে, যে জেলাগুলিকে মনে করা হতো ততটা পিছিয়ে পড়া নয়, বরং প্রত্যাশাযুক্ত এবং আজ আপনারা দেখতে পাবেন কীভাবে এই প্রত্যাশাযুক্ত জেলাগুলি উন্নয়নের অনেক মাপকাঠিতে রাজ্যের অন্য জেলাগুলির থেকে ভাল কাজ করছে। উদাহরণস্বরূপ ছত্তিশগড়ের বস্তারের কথা ধরুন, এটা আপনাদের অনেক সাংবাদিকের কাছেই খুব পছন্দের বিষয় ছিল। একটা সময় যখন সাংবাদিকরা সেখানে যেতেন, তাঁদের শুধুমাত্র প্রশাসনের নয়, অন্য সংগঠন থেকেও অনুমতিপত্র নিতে হতো। কিন্তু আজ সেই একই বস্তার উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে। আমি জানি না, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বস্তার অলিম্পিককে কতটা তুলে ধরেছে। কিন্তু আজ রামনাথ জি থাকলে খুশি হতেন যে, বস্তারের তরুণরা বস্তার অলিম্পিকের মতো অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। 

বন্ধুগণ, 

যেহেতু বস্তারের কথা উল্লেখ করা হল, আমি এই প্ল্যাটফর্ম থেকে আলোচনা করব নকশালবাদ নিয়েও। অর্থাৎ মাওবাদী সন্ত্রাসবাদ। নকশালবাদ এবং মাওবাদী সন্ত্রাসের সুযোগ দেশে দ্রুত কমছে এবং এটা কংগ্রেসের ভেতর সমানভাবে বাড়ছে। আপনারা সকলে জানেন যে, গত ৫ দশকে দেশের প্রায় প্রত্যেকটি রাজ্যই মাওবাদী সন্ত্রাসে পীড়িত ছিল। কিন্তু এটা দেশের দুর্ভাগ্য যে, কংগ্রেস সমর্থন করেছিল এবং লালন-পালন করেছিল মাওবাদী সন্ত্রাসকে যারা ভারতীয় সংবিধানকে প্রত্যাখ্যান করেছে। এবং শুধুমাত্র দুর্গম জঙ্গল এলাকায় নয়, কংগ্রেস শহরগুলিতেও নকশালবাদের শিকড়কে লালন-পালন করেছে। কংগ্রেস অনেক বড় সংস্থাতেও নকশালদের প্রতি শহুরে সহানুভূতিশীলদের তৈরি করেছে। 

 

বন্ধুগণ, 

শহুরে নকশাল এবং মাওবাদী শক্তি যা ১০-১৫ বছর আগে কংগ্রেসে অনুপ্রবেশ করেছিল, তা এখন কংগ্রেসকে রূপান্তর করেছে মুসলিম লিগ-মাওবাদী কংগ্রেস (এমএমসি)-তে। এবং আজ আমি এটা বলছি পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে যে, এই মুসলিম লিগ-মাওইস্ট কংগ্রেস নিজেদের স্বার্থ পূরণে জাতীয় স্বার্থ বিসর্জন দিয়েছে। আজকের মুসলিম লিগ-মাওইস্ট কংগ্রেস দেশের ঐক্যের পক্ষে বিপদজনক হয়ে উঠছে। 

বন্ধুগণ, 

বর্তমানে ভারত যখন উন্নত দেশ হওয়ার যাত্রা শুরু করেছে, রামনাথ গোয়েঙ্কা জির পরম্পরা তখন আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। রামনাথ জি ব্রিটিশ অত্যাচারের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছিলেন। তাঁর একটি সম্পাদকীয়তে তিনি লিখেছিলেন যে, তিনি ব্রিটিশের আদেশ পালনের থেকে বরং সংবাদপত্র বন্ধ করে দেওয়া উচিত মনে করেন। একইরকম ভাবে জরুরি অবস্থা রূপে যখন দেশকে আরও একবার দাসে পরিণত করার চেষ্টা করা হয়, রামনাথ জি দৃঢ়ভাবে তার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন। এবছর জরুরি অবস্থা জারির ৫০ বছর। ৫০ বছর আগে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস দেখিয়েছিল যে, এমনকি শূন্য সম্পাদকীয় মানুষকে দাসে পরিণত করার মনোভাবকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে। 

বন্ধুগণ, 

আজ আমি এই মঞ্চ থেকে আরও বিশদে বলব, দাসত্ব মনোভাব থেকে আমাদের মুক্ত করার বিষয়ে। কিন্তু তার জন্য আমাদের ফিরে যেতে হবে ১৯০ বছর আগে। এমনকি ১৮৫৭-র প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে। বছরটা ছিল ১৮৩৫। ১৮৩৫-এ ব্রিটিশ সাংসদ টমাস ব্যাবিংটন মেকলে ভারতকে তার ভিত্তি থেকে উপড়ে ফেলার জন্য এক বিশাল অভিযান শুরু করেছিলেন। তিনি ঘোষণা করেছিলেন যে, তিনি এমন ভারতীয় তৈরি করবেন, যাঁরা বাইরে দেখতে ভারতীয় হলেও, মনেপ্রাণে ইংরেজ হবেন। এবং এটা অর্জন করতে মেকলে শুধু ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থার বদল ঘটিয়েছিলেন তাই নয়, তিনি একে শিকড় থেকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। মহাত্মা গান্ধী নিজেই বলেছিলেন যে, ভারতে প্রাচীন শিক্ষা ব্যবস্থা একটি সুন্দর গাছের মতো, যাকে শিকড়সুদ্ধু উপড়ে ফেলা হয়েছে এবং ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। 

 

বন্ধুগণ, 

আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা আমাদের শিখিয়েছে আমাদের সংস্কৃতি নিয়ে গর্বিত হতে। ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থা পড়াশোনার পাশাপাশি সমান জোর দেয় দক্ষতার ওপর। সেই কারণে মেকলে ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থার মেরুদণ্ডটি ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং তিনি তাঁর লক্ষ্যে সফল হয়েছিলেন। সেই যুগে ব্রিটিশ ভাষা এবং ব্রিটিশ ভাবনা বিশাল স্বীকৃতি যাতে পায় তা নিশ্চিত করেছিলেন মেকলে এবং ভারত শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে তার দাম চোকাচ্ছে। 

বন্ধুগণ, 

মেকলে আমাদের আত্মবিশ্বাসকে চূরমার করে দিয়েছেন। তিনি আমাদের মধ্যে হীনম্মন্যতাবোধ ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন। এক ধাক্কায় মেকলে হাজার হাজার বছরের আমাদের জ্ঞান এবং বিজ্ঞান, আমাদের শিল্প এবং সংস্কৃতি এবং আমাদের সমগ্র জীবনযাত্রাকে আস্তাকুঁড়ে ফেলে দিয়েছিলেন। সেই সময় বীজ বপন করা হয়েছিল যে, যদি ভারতীয়রা উন্নতি করতে চায়, যদি তাঁরা বড় কিছু অর্জন করতে চায়, তবে তাদের তা করতে হবে বিদেশী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। এই মনোভাব আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে স্বাধীনতার পরেও। আমাদের শিক্ষা, আমাদের অর্থনীতি, আমাদের সামাজিক প্রত্যাশা সবকিছু জড়িত বিদেশী ব্যবস্থার সঙ্গে। নিজেদের যা ছিল সেই নিয়ে গর্বের মনোভাব ক্রমশ হ্রাস পায়। স্বদেশী (আত্মনির্ভরতা) যা গান্ধীজি স্বাধীনতার ভিত্তি বলে ভাবতেন, তাকে আর দাম দেওয়া হয়নি। আমরা প্রশাসনের মডেল খুঁজতে শুরু করলাম বিদেশে। আমরা উদ্ভাবনের জন্য বিদেশের মুখাপেক্ষী হয়ে উঠলাম। এই মনোভাব সমাজে এমন একটা ধারা নিয়ে এল যেখানে আমদানি করা ভাবনা, আমদানি করা পণ্য এবং আমদানি করা পরিষেবাকে সেরা ভাবা হয়। 

বন্ধুগণ, 

যখন আপনি আপনার নিজের দেশকে সম্মান করবেন না, আপনি দেশজ পরিমণ্ডলটাকেই প্রত্যাখ্যান করবেন। আপনি মেড ইন ইন্ডিয়া উৎপাদন পরিমণ্ডলকে প্রত্যাখ্যান করবেন। আমাকে পর্যটনের উদাহরণটা একবার দিতে দিন। আপনারা দেখবেন যে, প্রত্যেক দেশে যেখানে পর্যটনের বাড়বাড়ন্ত, সেই দেশের মানুষ তাঁদের ঐতিহাসিক ঐতিহ্য নিয়ে গর্ব অনুভব করেন। আমাদের বেলায় ঠিক উল্টো। স্বাধীনতার পর আমাদের ঐতিহ্যকে অবহেলা করার প্রয়াস হয়েছে। যখন নিজেদের ঐতিহ্য নিয়ে কোন গর্ব থাকে না, তাকে সংরক্ষণ করার জন্য কোন প্রয়াস করা হয় না। যখন কোন সংরক্ষণ করা হয় না, তখন আমরা সেটিকে মনেকরি একটা ইঁট পাথরের ধ্বংসস্তূপ এবং ঠিক সেটাই হয়েছে। পর্যটনের উন্নতির জন্য নিজের ঐতিহ্য নিয়ে গর্বিত হওয়া একটি জরুরি শর্ত। 

বন্ধুগণ, 

স্থানীয় ভাষা সম্পর্কে একই ব্যাপার। কোন দেশে স্থানীয় ভাষাকে ঘৃণার চোখে দেখা হয়? জাপান, চীন, কোরিয়ার মতো দেশ অনেক পশ্চিমা পদ্ধতি অনুকরণ করেছে, কিন্তু তাঁরা তাঁদের ভাষাটাকে একই রকম রেখেছে, নিজেদের ভাষা নিয়ে তাঁরা কখনও কোনরকম সমঝোতা করেনি। সেই কারণে আমরা নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে স্থানীয় ভাষায় শিক্ষা দেওয়ার ওপর জোর দিয়েছি। আমাকে পরিষ্কার করে একটা কথা বলতে দিন :  আমরা ইংরেজি ভাষার বিরুদ্ধে নই, আমরা ভারতীয় ভাষাগুলির ভাল চাই। 

বন্ধুগণ, 

১৮৩৫-এ অপরাধ ঘটিয়েছিলেন মেকলে। এবং ২০৩৫-এ, ১০ বছর পরে, সেই অপরাধের ২০০ বছর পূর্ণ হবে। এবং সেই কারণে আজ আমি আপনাদের মাধ্যমে সমগ্র দেশের কাছে আবেদন করতে চাইছি যে, আমাদের প্রতিজ্ঞা করতে হবে, আমরা আগামী ১০ বছরের মধ্যে মেকলের দাসত্বের মনোভাব থেকে নিজেদের মুক্ত করবো। এই পরবর্তী ১০ বছর আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমার একটা ঘটনা মনে পড়ছে, গুজরাটে কুষ্ঠের জন্য একটা হাসপাতাল তৈরি করা হচ্ছিল। সেই কাজে যুক্ত মানুষরা মহাত্মা গান্ধীর কাছে যান উদ্বোধন করার জন্য আমন্ত্রণ জানাতে। গান্ধীজী বলেন, তিনি কুষ্ঠের জন্য হাসপাতালের উদ্বোধনের পক্ষে নন; তিনি বলেন, “আমি উদ্বোধনের জন্য যাব না। কিন্তু যখন হাসপাতালটি স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাবে তখন আমাকে ডেকো, আমি গিয়ে সেটা বন্ধ করে দেব।” সেই হাসপাতাল অবশ্য গান্ধীজীর জীবদ্দশায় বন্ধ হয়নি। কিন্তু যখন গুজরাট কুষ্ঠ মুক্ত হল, আমি তখন মুখ্যমন্ত্রী হওয়ায় হাসপাতালটি বন্ধ করার সুযোগ পাই। ১৮৩৫-এ যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, তার শেষ করতে হবে ২০৩৫-এ, একই ভাবে যেমনভাবে গান্ধীজী হাসপাতাল বন্ধ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন, এটা আমারও স্বপ্ন যে, আমরা সেই দাসত্বের মনোভাবকে চিরতরে বন্ধ করে দেব। 

বন্ধুগণ, 

আজ আমরা অনেকগুলি বিষয় নিয়ে আলোচনা করলাম। আমি আপনাদের বেশি সময় নেবো না। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস গোষ্ঠী প্রত্যেকটি বড় রূপান্তর এবং আমাদের দেশের প্রতিটি বেড়ে ওঠার কাহিনীর সাক্ষী থেকেছে। এবং আজ যখন ভারত ‘বিকশিত ভারত’ হওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে, এটা এই যাত্রারই একটা অংশ। রামনাথ জির ভাবনা এবং আদর্শকে পূর্ণ নিষ্ঠার সঙ্গে সংরক্ষণ করার আপনাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার জন্য আমি আপনাদের অভিনন্দন জানাই। আমি আরও একবার আপনাদের সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই এই চমৎকার অনুষ্ঠানের জন্য। রামনাথ গোয়েঙ্কা জির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমি আমার বক্তব্য শেষ করছি। 

অনেক ধন্যবাদ!

 

Explore More
শ্রী রাম জন্মভূমি মন্দিরের ধ্বজারোহণ উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বাংলা অনুবাদ

জনপ্রিয় ভাষণ

শ্রী রাম জন্মভূমি মন্দিরের ধ্বজারোহণ উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বাংলা অনুবাদ
India's Q2 FY26 GDP soars 8.2%: A structural shift reshaping the economy like ’83 cricket triumph

Media Coverage

India's Q2 FY26 GDP soars 8.2%: A structural shift reshaping the economy like ’83 cricket triumph
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Share your ideas and suggestions for 'Mann Ki Baat' now!
December 05, 2025

Prime Minister Narendra Modi will share 'Mann Ki Baat' on Sunday, December 28th. If you have innovative ideas and suggestions, here is an opportunity to directly share it with the PM. Some of the suggestions would be referred by the Prime Minister during his address.

Share your inputs in the comments section below.