নমস্কার!
বন্ধুগণ,
স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন তথা স্বাস্থ্য পরিচর্যার বিষয়টি কোভিড পূর্ববর্তী এবং অতিমারী পরবর্তী - এই দুটি পর্যায়ের দৃষ্টিকোণ থেকেই আমাদের বিচার করা উচিত। সমৃদ্ধ দেশগুলির উন্নত স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও বিপর্যয়ের কারণে কিভাবে অকেজো হয়ে পড়ে, তার প্রমাণ আমরা করোনা পরিস্থিতিকালেই চাক্ষুষ করেছি। স্বাস্থ্য পরিচর্যার ওপর বিশ্বের দৃষ্টিভঙ্গি অতীতের তুলনায় এখন অনেকটাই উন্নত হলেও এ বিষয়ে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি কিন্তু শুধুমাত্র স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন বা স্বাস্থ্য পরিচর্যার মধ্যেই এখন সীমাবদ্ধ নেই। বরং, এই ক্ষেত্রটিতে আমরা আরও একধাপ এগিয়ে গিয়ে সার্বিকভাবে ভালো থাকা ও সুস্থ থাকার ওপরই বিশেষ জোর দিয়েছি। এই কারণেই ‘একটিমাত্র পৃথিবী এবং স্বাস্থ্যের প্রতি এক অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি’ বিশ্ববাসীর সামনে আমরা তুলে ধরেছি। এর অর্থ হল, মানুষ, প্রাণী বা গাছপালা যাই হোক না কেন, যে কোনও সজীব বস্তুর প্রতি সার্বিক যত্ন গ্রহণের বিষয়টিকে আমরা এখন আরও গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেছি। বিশ্বব্যাপী করোনা অতিমারীর প্রভাব যোগান শৃঙ্খলের গুরুত্বের বিষয়টিকে বিশেষভাবে প্রাধান্য দিয়েছে। অতিমারীজনিত পরিস্থিতি যখন চরমে, তখন ওষুধ, ভ্যাক্সিন সহ জীবনদায়ী চিকিৎসার বিভিন্ন সাজসরঞ্জাম দুর্ভাগ্যবশত গুটিকয়েক দেশের করায়ত্ত হয়ে পড়েছিল। বিগত কয়েক বছরের বাজেটে এই বিষয়টির দিকে ভারত সকলেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। বিদেশি রাষ্ট্রগুলির ওপর ভারতের নির্ভরশীলতা যতদূর সম্ভব কমিয়ে আনার জন্য আমরা চেষ্টা করে চলেছি। এই পরিস্থিতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার দায়িত্ব রয়েছে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষেরই।
বন্ধুগণ,
স্বাধীনতা লাভের পরবর্তী কয়েক দশকে স্বাস্থ্য সম্পর্কে এ দেশে সুসংহত তথা দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গির বিশেষ অভাব ছিল। সেই কারণে স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন তথা স্বাস্থ্য পরিচর্যার বিষয়টি আমরা শুধুমাত্র স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হাতে ন্যস্ত করেই থেমে থাকিনি বরং, এ বিষয়টিকে আমরা সরকারেরই একটি সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গি বলে সকলের সামনে তুলে ধরেছি। ভারতে চিকিৎসা ব্যবস্থাকে সকলের আয়ত্তের মধ্যে নিয়ে আসার বিষয়টিকে সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। আয়ুষ্মান ভারত কর্মসূচির আওতায় ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনা ব্যয়ে চিকিৎসার সুযোগ এর ফলেই সম্প্রসারিত হয়েছে এবং ব্যয়সাশ্রয় ঘটেছে ৮০ হাজার কোটি টাকার মতো। অন্যথায় এ দেশের কোটি কোটি রোগীকে চিকিৎসার জন্য নিজেদেরই ব্যয় বহন করতে হত। আগামীকাল ৭ই মার্চ। এই দিনটি দেশে পালিত হবে ‘জনঔষধি দিবস’ রূপে। সারা দেশে এখন ছড়িয়ে রয়েছে প্রায় ৯ হাজারের মতো জনঔষধি কেন্দ্র। এই কেন্দ্রগুলি থেকে বাজারের চেয়ে অনেক কম দামে ওষুধ সংগ্রহ করা সম্ভব। এই কেন্দ্রগুলি থেকে ওষুধ সংগ্রহের মাধ্যমে দরিদ্র এবং মধ্যবিত্ত পরিবারগুলির সাশ্রয় ঘটেছে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। অন্য কথায় বলতে গেলে, এই দুটি কর্মসূচির মাধ্যমে ভারতীয় নাগরিকরা প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকার মতো ব্যয়সাশ্রয়ের সুবিধা লাভ করেছেন।
বন্ধুগণ,
গুরুতর ধরনের অসুখ-বিসুখের চিকিৎসার জন্য দেশে আধুনিক স্বাস্থ্য পরিকাঠামো গড়ে তোলার বিষয়টিও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। জনসাধারণ যাতে তাঁদের বাড়ির অদূরেই ভালো স্বাস্থ্য পরীক্ষার সুযোগ পেতে পারেন সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছে আমাদের সরকার। এই লক্ষ্যে সারা দেশে গড়ে তোলা হচ্ছে দেড় লক্ষের মতো স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাকেন্দ্র। ডায়াবিটিস, ক্যান্সার এবং হার্টের গুরুতর অসুখ-বিসুখের পরীক্ষার জন্য এই কেন্দ্রগুলিতে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এমনকি দেশের ছোট ছোট শহর ও মফঃস্বল এলাকাগুলিতেও গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে। এই কর্মসূচি রূপায়িত হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো মিশনের আওতায়। স্বাস্থ্য পরিচর্যা সম্পর্কিত শিল্পোদ্যোগী, বিনিয়োগকারী এবং পেশাদারদের এজন্য নতুন নতুন সুযোগ-সুবিধাও দেওয়া হচ্ছে।
বন্ধুগণ,
স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর পাশাপাশি মানবসম্পদও হল সরকারের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত আরও একটি ক্ষেত্র। গত কয়েক বছরে দেশে স্থাপিত হয়েছে ২৬০টিরও বেশি নতুন মেডিকেল কলেজ। এর ফলে, দেশে বর্তমানে মেডিকেল পঠনপাঠনের জন্য স্নাতক তথা স্নাতকোত্তর পর্যায়ে আসন সংখ্যাও ২০১৪-র তুলনায় দ্বিগুণ সংখ্যক বৃদ্ধি পেয়েছে। আপনারা সকলেই জানেন যে একজন চিকিৎসকের সাফল্য নির্ভর করে একজন সফল টেকনিশিয়ানের ওপর। চিকিৎসাক্ষেত্রে মানবসম্পদের বিকাশে মেডিকেল কলেজগুলির কাছাকাছি ১৫৭টি নতুন নার্সিং কলেজ খোলার ঘটনাও একটি বড় ধরনের পদক্ষেপবিশেষ। শুধু ভারতেই নয়, বিশ্বের চাহিদা তথা প্রয়োজন মেটাতেও এগুলি কাজ করে যাবে।
বন্ধুগণ,
স্বাস্থ্য পরিচর্যা সকলের কাছে সুলভ করে তুলতে প্রযুক্তির ভূমিকা নিরন্তর বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। এই কারণে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে প্রযুক্তিকে সর্বোচ্চ মাত্রায় ব্যবহারের জন্য আমরা বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছি। ডিজিটাল হেলথ আইডি-র মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সুযোগ-সুবিধা সময়মতো পৌঁছে দেওয়াই হল আমাদের লক্ষ্য। ‘ই-সঞ্জীবনী’র মাধ্যমে বাড়িতে বসেই প্রায় ১০ কোটি মানুষ চিকিৎসকদের পরামর্শ গ্রহণের সুবিধা ভোগ করছেন। এই বিশেষ ক্ষেত্রটিতে ৫জি প্রযুক্তির হাত ধরে স্টার্ট-আপ সংস্থাগুলির জন্য নতুন নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি হচ্ছে। ওষুধের যোগান এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ড্রোন প্রযুক্তির ব্যবহার পরিবহণ ক্ষেত্রে এক বিপ্লব এনে দিয়েছে। স্বাস্থ্য পরিচর্যাকে সার্বজনীন একটি বিষয় করে তুলতে এই ব্যবস্থা আমাদের প্রচেষ্টায় এক বিশেষ মাত্রা যোগ করবে। শুধু তাই নয়, দেশের শিল্পোদ্যোগীদের জন্যও তা থেকে প্রচুর সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে। তবে, শিল্পোদ্যোগীদের একটি বিষয় নিশ্চিত করতে হবে যে কোনও প্রযুক্তিকে আমদানি না করে এই বিষয়টিতে স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া। এজন্য প্রয়োজনীয় প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার প্রচেষ্টার কাজও আমরা শুরু করেছি। চিকিৎসাপদ্ধতি ও ওষুধের যোগানের ক্ষেত্রে নতুন নতুন সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় কয়েকটি নতুন কর্মসূচির কাজও আমরা গত কয়েক বছরে চালু করেছি। এই ধরনের কর্মসূচিগুলিতে বিনিয়োগ করা হয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকারও বেশি।
গত কয়েক বছর ধরে চিকিৎসাপদ্ধতি ও সাজসরঞ্জামের মতো ক্ষেত্রটিও ১২-১৪ শতাংশ হারে প্রসার লাভ করেছে, আগামী ২-৩ বছরের মধ্যেই অঙ্কের হিসাবে যা বাজারে ৪ লক্ষ কোটি টাকা ছুঁয়ে যাবে বলে আমরা মনে করি। ভবিষ্যতের উপযোগী চিকিৎসা প্রযুক্তি, উন্নতমানের উৎপাদন ও গবেষণা সংক্রান্ত বিষয়গুলির ক্ষেত্রে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার কাজও আমরা ইতিমধ্যে শুরু করে দিয়েছি। আইআইটি সহ দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলিতে চিকিৎসার যন্ত্রপাতি ও সাজসরঞ্জাম উৎপাদনের জন্য প্রশিক্ষণদানের ব্যবস্থাও ক্রমান্বয়ে চালু হয়ে যাবে। এর ফলে উপকৃত হবে দেশের বায়ো-মেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং অনুরূপ ধরনের অন্যান্য কোর্সগুলি। আমাদের এই প্রচেষ্টায় বেসরকারি ক্ষেত্রগুলির অংশগ্রহণ বাড়াতে এবং শিল্প, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারের মধ্যে সর্বোচ্চ সমন্বয় তথা যোগসূত্র গড়ে তুলতে আমাদের একযোগে কাজ করে যাওয়ার বিষয়টিকে নিশ্চিত করতে হবে।
বন্ধুগণ,
কখনও কখনও বিপর্যয়ও আমাদের সামনে সুযোগ এনে দিতে পারে। কোভিড পরিস্থিতিতে দেশের ওষুধ উৎপাদন ক্ষেত্রে একথা বিশেষভাবে প্রমাণিত হয়েছে। কোভিড অতিমারীকালে ভারতের ওষুধ শিল্প যেভাবে সমগ্র বিশ্বের আস্থা অর্জন করেছে তা এক কথায় নজিরবিহীন। বিশ্ববাসীর এই আস্থাকে আমরা বিশেষ মূলধন বলেই মনে করি এবং সেইমতো আমাদের আরও এগিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। যে সাফল্য, সুখ্যাতি এবং আস্থা আমরা অর্জন করেছি তা যাতে বিফলে না যায়, সে সম্পর্কে আমাদের সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। বরং, আমাদের ওপর এই আস্থা যাতে উত্তরোত্তর আরও বৃদ্ধি পায় তা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। কয়েকটি উৎকর্ষ কেন্দ্রের মাধ্যমে ওষুধ উৎপাদন ক্ষেত্রে গবেষণা ও উদ্ভাবন প্রচেষ্টাকে উৎসাহদানের কাজও আমরা শুরু করে দিয়েছি। আমাদের এই প্রচেষ্টা দেশের অর্থনীতিকেই শুধুমাত্র মজবুত করে তুলবে না, একইসঙ্গে সৃষ্টি হবে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও। এই বিশেষ ক্ষেত্রটির আজকের দিনে বাজার মূল্য হল প্রায় ৪ লক্ষ কোটি টাকা। যদি আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ক্ষেত্রগুলির মধ্যে আরও বেশি করে সমন্বয় গড়ে তুলতে পারি তাহলে এই মাত্রা ১০ লক্ষ কোটি টাকাতেও উন্নীত করা সম্ভব। ওষুধ উৎপাদন শিল্পকে আমি পরামর্শ দেব, গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রগুলিকে চিহ্নিত করে সেইমতো অর্থ বিনিয়োগের জন্য। গবেষণার কাজকে উৎসাহ দিতে আরও কয়েকটি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আমাদের সরকার। দেশের যুব সমাজ এবং গবেষণা শিল্পের বিকাশে কয়েকটি আইসিএমআর গবেষণাগার স্থাপনেরও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে সরকারিভাবে। এই ধরনের আরও কিছু পরিকাঠামো গড়ে তোলা যায় কিনা সে সম্পর্কে আমরা অবশ্যই চিন্তাভাবনা করব।
বন্ধুগণ,
প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সরকারি প্রচেষ্টার একটি বিশেষ দিকও রয়েছে। দেশের প্রতিটি প্রান্তকে আবর্জনা মুক্ত করার লক্ষ্যে ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’, ধোঁয়া থেকে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি এড়াতে ‘উজ্জ্বলা যোজনা’ কর্মসূচি, দূষিত জলের হাত থেকে মানুষকে বাঁচাতে ‘জল জীবন মিশন’ – এই ধরনের কর্মসূচিগুলির ইতিবাচক ফল আমরা লক্ষ্য করেছি। একইভাবে, রক্তাল্পতা ও অপুষ্টি আমাদের দেশের আরও দুটি প্রধান সমস্যা। এর মোকাবিলায় ‘জাতীয় পুষ্টি মিশন’-এর কাজ আমরা শুরু করেছি। খুবই আনন্দের কথা যে মিলেট তথা শ্রী অন্ন-এর ব্যবহারের ওপর আমরা এখন বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছি। কারণ, শ্রী অন্ন হল এক কথায় এমন এক সুপারফুড যা দেশের প্রত্যেকটি পরিবারে জনপ্রিয় হয়ে উঠলে অপুষ্টির মতো সমস্যা মেটানো সম্ভব। ভারতের এই প্রচেষ্টার সুবাদে বর্তমান বছরটিকে ‘আন্তর্জাতিক বাজরা বর্ষ’ রূপে উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাষ্ট্রসঙ্ঘ। ‘প্রধানমন্ত্রী মাতৃ বন্দনা যোজনা’ এবং ‘মিশন ইন্দ্রধনুষ’-এর মতো কর্মসূচিগুলিকে সঙ্গে নিয়ে আমরা সুস্থ মাতৃত্ব এবং সুস্থ শৈশব নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছি।
যোগাভ্যাস, আয়ুর্বেদ এবং ফিট ইন্ডিয়া আন্দোলন নানা ধরনের অসুখ-বিসুখের হাত থেকে মানুষকে বাঁচাতে বিশেষভাবে সাহায্য করেছে। আয়ুর্বেদের মতো ভারতীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং ওষুধের চাহিদা এখন বিশ্বব্যাপী। ভারতের এই প্রচেষ্টার সূত্র ধরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরম্পরাগত চিকিৎসার গ্লোবাল সেন্টারটি ভারতে স্থাপিত হতে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত সকল পক্ষকে এবং আয়ুর্বেদের সঙ্গে যুক্ত সকলের কাছে আমি আর্জি জানাব, প্রমাণকে সাক্ষ্য রেখে গবেষণা প্রচেষ্টাকে আরও বাড়িয়ে তোলার জন্য। মনে রাখতে হবে যে ফলাফলই যথেষ্ট নয়, কার্যকারিতার প্রমাণও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আয়ুর্বেদের ক্ষেত্রে আয়ুর্বেদ শিল্পের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত রয়েছেন তাঁদের উচিত গবেষণাকর্মীদের সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজে এগিয়ে যাওয়া।
বন্ধুগণ,
আধুনিক চিকিৎসা পরিকাঠামো এবং চিকিৎসা সম্পর্কিত মানবসম্পদ গড়ে তোলার পাশাপাশি সরকারি প্রচেষ্টার আরও একটি বিশেষ দিকও রয়েছে। দেশে এই ক্ষেত্রগুলিতে আমাদের ক্ষমতা বৃদ্ধি করার সাথে সাথে শুধুমাত্র দেশবাসীর মধ্যেই তা যাতে সীমাবদ্ধ না থাকে তা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। এখন কোনও দেশই পরস্পর বিচ্ছিন্ন নয়। তাই, চিকিৎসার দিক থেকে ভারতকে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ একটি পর্যটন গন্তব্য রূপে তুলে ধরার এক বিশেষ সুযোগ আমাদের সামনে রয়েছে। সত্যি কথা বলতে কি, চিকিৎসা পর্যটন ভারতে একটি বড় ধরনের ক্ষেত্র হয়ে উঠতে চলেছে। শুধু তাই নয়, দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যম হিসেবেও এর গুরুত্ব অপরিসীম।
বন্ধুগণ,
‘সবকা প্রয়াস’ অর্থাৎ, সকলের মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে উন্নত ভারতে আমরা উন্নত ধরনের এক স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারি। আজ এই ওয়েবিনারে অংশগ্রহণকারী সকলের কাছেই আবেদন জানাব যে আপনারা আপনাদের নিজেদের প্রস্তাব ও পরামর্শ আমাদের কাছে তুলে ধরুন। একটি নির্দিষ্ট রোডম্যাপ অনুসরণ করে এবং নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রাকে সঙ্গে নিয়ে বাজেট প্রস্তাবগুলি বাস্তবায়িত হোক একথা যেমন আমাদের কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, একইসঙ্গে এই বাস্তবায়ন প্রচেষ্টা যাতে সঠিক সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ করা যায় তাও আমাদের কাছে এক বিশেষ দায়িত্বের বিষয়। তাই, আগামী বছরের বাজেটের আগেই এই স্বপ্ন যাতে মূর্ত হয়ে উঠতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্য আমি আর্জি জানাই আপনাদের সকলের কাছেই। আমাদের বাজেট প্রস্তাবগুলি যাতে সাফল্যের সঙ্গে বাস্তবায়িত হয় সেই লক্ষ্যে আপনাদের অভিজ্ঞতা ও মতামত তথা পরামর্শ আমাদের কাছে পেশ করুন। দেশের সার্বিক সঙ্কল্প এবং উন্নয়নের ক্ষেত্রে আপনাদের ব্যক্তিগত লক্ষ্য পূরণ নিশ্চিতভাবেই আমাদের সাফল্যের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আপনাদের সকলকেই জানাই আমার বিশেষ শুভেচ্ছা।
ধন্যবাদ।
প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি ছিল হিন্দিতে