পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস জি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার আমার সহকর্মী শান্তনু ঠাকুর জি, রভনীত সিং জি, সুকান্ত মজুমদার জি, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জি, সংসদে আমার সহকর্মী শমীক ভট্টাচার্য জি, উপস্থিত অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরা, ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ,
আজ আবারও আমি পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার সুযোগ পেয়েছি। একটু আগেই নোয়াপাড়া থেকে জয়হিন্দ বিমানবন্দর পর্যন্ত কলকাতা মেট্রোতে চড়ার আনন্দ উপভোগ করে ফিরে এসেছি। এই সময়, আমি অনেক সহকর্মীর সঙ্গে কথা বলার সুযোগও পেয়েছি। সকলেই খুশি যে কলকাতার গণপরিবহন এখন সত্যিই আধুনিক হয়ে উঠছে। আজ, এখানে ছয় লেনের এলিভেটেড কোনা এক্সপ্রেসওয়ের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করা হয়েছে। হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে নির্মিত বা নির্মীয়মান এই সমস্ত প্রকল্পের জন্য কলকাতার জনগণ, সমগ্র পশ্চিমবঙ্গের জনগণকে অনেক অভিনন্দন জানাই।

বন্ধুগণ,
কলকাতার মতো আমাদের শহরগুলি ভারতের ইতিহাস এবং আমাদের ভবিষ্যৎ উভয়েরই একটি সমৃদ্ধ পরিচয়। আজ যখন ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার দিকে এগিয়ে চলেছে, তখন দমদম এবং কলকাতার মতো শহরগুলির ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অতএব, আজকের অনুষ্ঠানের বার্তা মেট্রোর উদ্বোধন এবং হাইওয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের চেয়েও বড়। এই অনুষ্ঠানটি আজকের ভারত তার শহরগুলিকে কীভাবে রূপান্তরিত করছে তার প্রমাণ। আজ, ভারতের শহরগুলিতে পরিবেশবান্ধব গতিশীলতা বৃদ্ধির জন্য নানা রকম চেষ্টা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক চার্জিং পয়েন্ট এবং বৈদ্যুতিক বাসের সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি করা হচ্ছে, বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তরিত করার প্রচেষ্টা করা হচ্ছে, শহরগুলির নিষ্কাশিত ও জমা করা বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে, মেট্রো সুবিধা বৃদ্ধি পাচ্ছে, মেট্রো নেটওয়ার্ক সম্প্রসারিত হচ্ছে। আজ সকলেই গর্বিত বোধ করছেন যে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মেট্রো নেটওয়ার্ক এখন ভারতে। ২০১৪ সালের আগে, দেশে মেট্রো রুট ছিল মাত্র ২৫০ কিলোমিটার। আজ দেশে মেট্রো রুট এক হাজার কিলোমিটারেরও বেশি হয়ে গেছে। কলকাতায়ও মেট্রো ধারাবাহিকভাবে সম্প্রসারিত হয়েছে। আজও, কলকাতার মেট্রো রেল নেটওয়ার্কে প্রায় ১৪ কিলোমিটার নতুন লাইন যুক্ত হচ্ছে। কলকাতা মেট্রোতে ৭টি নতুন স্টেশন যুক্ত হচ্ছে। এই সমস্ত কাজ কলকাতার মানুষের জীবনযাত্রাকে সহজ করে তুলবে এবং যাতায়াতের সুবিধা বাড়াবে।
বন্ধুগণ,
একবিংশ শতাব্দীর ভারতের, একবিংশ শতাব্দীর উপযোগী দ্রুতগামী পরিবহন ব্যবস্থার প্রয়োজন রয়েছে। তাই আজ আমরা দেশে আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলছি, রেল থেকে সড়ক, মেট্রো থেকে বিমানবন্দর, সমস্ত মাধ্যমকে উন্নত করার পাশাপাশি সেগুলিকে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত করছি। অর্থাৎ, এক শহর থেকে অন্য শহরে মানুষকে পরিবহনের পাশাপাশি, আমাদের প্রচেষ্টা হল তাঁদের বাড়ির কাছে নির্বিঘ্ন পরিবহন ব্যবস্থা প্রদান করা। এবং এর একটি আভাস আমরা কলকাতার মাল্টি-মডেল সংযোগেও দেখতে পাই। উদাহরণস্বরূপ, আজ হাওড়া এবং শিয়ালদহের মতো দেশের দুটি ব্যস্ততম রেলওয়ে স্টেশন মেট্রোর মাধ্যমে যুক্ত হয়েছে। অর্থাৎ, যে স্টেশনগুলির মধ্যে যাতায়াতে আগে দেড় ঘন্টা সময় লাগত, এখন মেট্রোর মাধ্যমে মাত্র কয়েক মিনিট সময় লাগবে। একইভাবে, হাওড়া স্টেশন সাবওয়েও মাল্টিমডেল সংযোগ নিশ্চিত করছে। আগে পূর্ব রেলওয়ে বা দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ে থেকে ট্রেন ধরতে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হত। এই সাবওয়ে নির্মাণের পর, ইন্টারচেঞ্জে সময় কমবে। আজ থেকে, কলকাতা বিমানবন্দরও মেট্রোর মাধ্যমে যুক্ত হলো। অর্থাৎ, এখন শহরের অনেক দূরবর্তী অংশ থেকে বিমানবন্দরে পৌঁছানো সহজ হবে।

বন্ধুগণ,
ভারত সরকার পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। আজ, পশ্চিমবঙ্গ দেশের সেই রাজ্যগুলির তালিকায় যুক্ত হয়েছে যেগুলিতে রেলপথের ১০০% বিদ্যুতায়ন করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে, পুরুলিয়া এবং হাওড়ার মধ্যে একটি মেমু ট্রেনের দাবি ছিল। ভারত সরকার জনসাধারণের এই দাবিও পূরণ করেছে। আজ, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন রুটে ৯টি বন্দে ভারত ট্রেন চলছে, এবং এর পাশাপাশি, আপনাদের সকলের জন্য ২টি অমৃত ভারত ট্রেনও চলছে।
বন্ধুগণ,
গত ১১ বছরে, কেন্দ্রীয় সরকার এখানে অনেক বড় বড় মহাসড়ক প্রকল্প সম্পন্ন করেছে। অনেক প্রকল্পের কাজ চলছে। যখন ছয় লেনের কোনা এক্সপ্রেসওয়ে প্রস্তুত হবে, তখন এটি রাজ্যের সমুদ্রবন্দর ও নদীবন্দরগুলির মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থারও উন্নতি করবে। এই যোগাযোগ কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গের জন্য একটি উন্নত ভবিষ্যতের ভিত্তি মজবুত করবে। আপাতত এটুকুই।,

বন্ধুগণ,
কিছুক্ষণের মধ্যেই, এখানে কাছাকাছি একটি জনসভা অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। সেই সভায়, পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়ন এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে আপনাদের সকলের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হবে। আরও অনেক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত কথা বলবো। সেখানে অনেকেই অপেক্ষা করছেন।আমি আমার বক্তব্য এখানেই শেষ করছি। আপনাদের সকলের জন্য শুভকামনা! ধন্যবাদ!


