বিশিষ্ট তামিল কবির ১০০তম পূণ্য তিথিতে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা বিভাগে তামিল শিক্ষার জন্য সম্মানিক ‘সুব্রহ্মনিয়া ভারতী চেয়ার’ স্থাপনের কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী
সর্দার সাহেবের ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর দর্শন মহাকবি ভারতীর তামিল রচনায় সুস্পষ্টভাবে প্রস্ফুটিত
আজ সমগ্র বিশ্ব উপলব্ধি করছে যে মানবিক মূল্যবোধের মাধ্যমে ৯/১১-র মতো বিপর্যয়ের স্থায়ী সমাধান সম্ভব : প্রধানমন্ত্রী
মহামারীর প্রভাব ভারতীয় অর্থনীতিতে পড়লেও আমাদের অর্থ ব্যবস্থার পুনরুদ্ধার ক্ষতির তুলনায় দ্রুত : প্রধানমন্ত্রী
বৃহৎ অর্থনীতিধর দেশগুলি যখন সংরক্ষণমূলক মানসিকতা নিয়েছে, ভারত তখন সংস্কারের পথে হেঁটেছে : প্রধানমন্ত্রী

নমস্কার!

এই অনুষ্ঠানে আমার সঙ্গে উপস্থিত গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিজয়ভাই রুপানিজি, উপ-মুখ্যমন্ত্রী শ্রী নীতিনভাই, আমার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য শ্রী পুরুষোত্তম রুপালাজি, শ্রী মনসুখভাই মাণ্ডব্যজি, ভগিনী অনুপ্রিয়া প্যাটেলজি, সংসদে আমার সহকর্মী এবং গুজরাট প্রদেশ জনতা পার্টির অধ্যক্ষ শ্রী সি আর পাতিলজি, গুজরাট সরকারের সকল মন্ত্রীগণ, এখানে উপস্থিত আমার সহযোগী সাংসদ বন্ধুগণ, গুজরাটের বিধায়কগণ, সর্দারধামের সকল ট্রাস্টি, আমার মিত্র ভাই শ্রী গাগজীভাই, ট্রাস্টের সকল সম্মানিত সদস্যগণ, এই পবিত্র কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং নিজেদের অবদান রাখা সকল বন্ধু, ভাই ও বোনেরা!

আমাদের দেশে কোনও শুভ কাজ করার আগে গণেশ পুজোর পরম্পরা রয়েছে। সৌভাগ্যবশত, সর্দারধাম ভবনের শ্রী গণেশই গণেশ পুজোর পবিত্র উৎসবের দিনে আয়োজিত হয়েছে। গতকাল শ্রী গণেশ চতুর্থী ছিল আর আজও গোটা দেশ গণেশ উৎসব পালন করছে। আমি আপনাদের সবাইকে গণেশ চতুর্থী এবং গণেশ উৎসবের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। আজ ঋষি পঞ্চমীও। ভারত তো ঋষি পরম্পরার দেশ। ঋষিদের জ্ঞান-বিজ্ঞান ও দর্শনের মাধ্যমেই আমাদের পরিচয়। আমরা সেই ঐতিহ্যকেই এগিয়ে নিয়ে চলেছি। আমাদের বৈজ্ঞানিক, আমাদের চিন্তাবিদরা সমগ্র মানবতাকে পথ দেখাবেন এই ভাবনা নিয়েই আমরা প্রতিপালিত হয়েছি, বড় হয়েছি। এই ভাবনা নিয়েই ঋষি পঞ্চমী উপলক্ষে আপনাদের সকলকে হৃদয় থেকে শুভকামনা জানাই।

ঋষি-মুনিদের পরম্পরা আমাদের উন্নত মনের মানুষ হয়ে ওঠার প্রাণশক্তি জোগায়। এই ভাবনা নিয়ে ‘পর্যুষণ পর্ব’-এর পর জৈন পরম্পরায় আমরা ‘ক্ষমাবাণী দিবস’ পালন করি, ‘মিচ্ছামি দুক্কড়ম’ করি। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের, দেশের সকল নাগরিকদের ‘মিচ্ছামি দুক্কড়ম’ জানাই। এটা এমন একটি পরব, এমন পরম্পরা, যখন নিজের ভুলগুলি স্বীকার করা হয়, সেগুলিকে শুধরানো হয়, নিজের চরিত্রকে উন্নত করার সঙ্কল্প নেওয়া হয় – এইসব কিছু আমাদের জীবনে অঙ্গ হয়ে ওঠা উচিৎ। আমি সকল দেশবাসীকে এবং সমস্ত ভাই-বোনেদের এই পবিত্র পরব উপলক্ষে অনেক অনেক শুভকামনা জানাই আর ভগবান মহাবীরের শ্রীচরণে প্রণাম জানাই।

আমি আমাদের প্রেরণার উৎস, লৌহ পুরুষ, সর্দার সাহেবের চরণেও প্রণাম জানাই। তাঁকে আমার শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করছি। আমি সর্দারধাম ট্রাস্ট্রের সঙ্গে যুক্ত সকল সদস্যকেও শুভকামনা জানাই যাঁরা নিজেদের সমর্পিত সেবার মাধ্যমে এই অদ্ভূত প্রকল্পকে বর্তমান আকার দিয়েছেন। আপনাদের সকলের সমর্পণ, আপনাদের সেবা সঙ্কল্প একটি উদাহরণ হয়ে উঠেছে। আপনাদের প্রচেষ্টায় আজ সর্দারধামের এই অনিন্দ্যসুন্দর ভবনটি উদ্বোধনের পাশাপাশি এখানে দ্বিতীয় পর্যায়ের কন্যা ছাত্রাবাসের ভূমি পুজোও সম্পন্ন হয়েছে।

‘স্টেট অফ আর্ট বিল্ডিং’, আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন কন্যা ছাত্রাবাস, আধুনিক গ্রন্থাগার – এই সকল ব্যবস্থা নবীন প্রজন্মের অনেক ছাত্রীকে ক্ষমতায়িত করবে। একদিকে আপনারা ‘আন্ত্রেপ্রেনার ডেভেলপমেন্ট সেন্টার’-এর মাধ্যমে গুজরাটের সমৃদ্ধ বাণিজ্য পরিচয়কে শক্তিশালী করে তুলছেন, অন্যদিকে সেখানেই ‘সিভিল সার্ভিস সেন্টার’- এর মাধ্যমে সেই যুবক-যুবতীরা নতুন দিশায় পরিচালিত হচ্ছেন যাঁরা সিভিল সার্ভিসেস কিংবা প্রতিরক্ষা বিভাগ বা জুডিশিয়াল সার্ভিসেস-এ যেতে চান।

পাটীদার সমাজের যুব সম্প্রদায়ের পাশাপাশি, দরিদ্র এবং বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষমতায়নে আপনারা যে জোর দিয়েছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়। এই মহিলা ছাত্রাবাসের সুবিধা অসংখ্য কন্যাকে জীবনের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।

আমার সম্পূর্ণ ভরসা আছে যে সর্দারধাম কেবলই দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণের একটি প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠবে না, এই প্রতিষ্ঠান ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সর্দার সাহেবের আদর্শ মেনে জীবনধারণের প্রেরণাও জোগাবে। আরেকটি কথাও আমি আপনাদের বলতে চাইব। আজ আমরা স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব পালন করছি। স্বাধীনতার ৭৫ বছরে এরকম সুযোগ আমরা পেয়েছি যা দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে মনে করে নিজেদের প্রেরণা জোগানো সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু এই ছাত্রাবাসে থেকে যে ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনা করবে, যাদের বয়স আজ ১৮, ২০, ২৫ বছর, ২০৪৭ সালে যখন দেশ স্বাধীনতার ১০০ বছর পূর্তি পালন করবে, তখন এই যুবক-যুবতীরাই দেশে নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করবে। আজ আপনারা যে সঙ্কল্প নেবেন, ২০৪৭-এ যখন স্বাধীনতার ১০০ বছর পূর্তি হবে তখন ভারত কেমন হবে তা এই পবিত্র মাটি থেকেই নির্ণয় করা সম্ভব হবে।

বন্ধুগণ,

সর্দারধাম আজ যে তারিখে উদ্বোধন করা হচ্ছে সেই তারিখটি যতটা গুরুত্বপূর্ণ, তার থেকেও বড় সেই তারিখের সঙ্গে যুক্ত বার্তা। আজ ১১ সেপ্টেম্বর, অর্থাৎ ৯/১১। বিশ্বের ইতিহাসে এটি এমন একটি তারিখ যা মানবতার ওপর প্রহারের জন্য কুখ্যাত। কিন্তু এই তারিখ গোটা বিশ্বকে অনেক কিছু শিখিয়েছেও!

এক শতাব্দী আগে ১৮৯৩ সালের এই ১১ সেপ্টেম্বরে যখন শিকাগোতে বিশ্ব ধর্ম সংসদের আয়োজন হয়েছিল, আজকের দিনেই স্বামী বিবেকানন্দ সেই বিশ্বমঞ্চে সটান দাঁড়িয়ে বিশ্বকে ভারতের মানবিক মূল্যবোধের সঙ্গে পরিচয় করিয়েছিলেন। আজ বিশ্ব এটা অনুভব করছে যে ৯/১১-র যে সন্ত্রাস ২০ বছর আগে হয়েছে, সেই সন্ত্রাসের স্থায়ী সমাধান ১৮৯৩ সালের সেই ১১ সেপ্টেম্বরে প্রচারিত স্বামী বিবেকানন্দের মূল্যবোধ দিয়েই সম্ভব। একদিকে আমাদের এই সন্ত্রাসবাদী আক্রমণ থেকে নেওয়া শিক্ষাগুলিকে মনে রাখতে হবে, পাশাপাশি মানবিক মূল্যবোধের জন্য সম্পূর্ণ আস্থা নিয়ে মানবতার কল্যাণে চেষ্টা করে যেতে হবে।

বন্ধুগণ,

আজকের ১১ সেপ্টেম্বর দিনটি আরও একটি কারণে স্মরণযোগ্য। আজ ভারতের মহান বিদ্বান, দার্শনিক এবং স্বাধীনতা সংগ্রামী সুব্রহ্মনিয়া ভারতীজির শততম মৃত্যুবার্ষিকী। সর্দার সাহেব যে ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে চলতেন, সেই দর্শন মহাকবি ভারতীর তামিল সাহিত্যে উজ্জ্বল। যখন তিনি বলতেন, ‘হিমালয় আমাদের!’ তিনি তো তামিলনাড়ুতে থাকতেন। কিন্তু ভাবনাটা কেমন ভাবুন! তামিলনাড়ুর এক কবি বলছেন, ‘হিমালয় আমাদের!’ তিনি যখন বলতেন, ‘গঙ্গার মতো এমন ধারা আর কোথায় পাওয়া যাবে!’, যখন উপনিষদগুলির মহিমা কীর্তন করতেন, তখন ভারতের একতা, ভারতের শ্রেষ্ঠতাকে আরও উজ্জ্বল করে তুলতেন। সুব্রহ্মনিয়া ভারতীও স্বামী বিবেকানন্দ থেকে প্রেরণা নিয়েছেন, শ্রী অরবিন্দ দ্বারাও প্রভাবিত ছিলেন। কাশীতে বসবাস করে নিজের দর্শনকে প্রাণশক্তিতে পরিপূর্ণ করেছেন, নতুন আলোকবর্তিকা হয়ে উঠেছেন।

বন্ধুগণ,

আজ এই সুযোগে আমি একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করতে চলেছি। বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটিতে সুব্রহ্মনিয়া ভারতীজির নামে একটি চেয়ার প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তামিল স্টাডিজ, তামিল ভারতীয় ভাষাগুলির মধ্যে সমৃদ্ধ ভাষা। বিশ্বের সবচাইতে পুরনো ভাষা আর এই ভাষা আমাদের সমস্ত ভারতবাসীর জন্য গর্বের। তামিল স্টাডিজ-এ সুব্রহ্মনিয়া ভারতী চেয়ার বিএইচইউ-র ‘ফ্যাকাল্টি অফ আর্টস’-এ স্থাপিত হবে। এই কেন্দ্রটি ছাত্রছাত্রী ও গবেষকদের সেই উন্নত ভারত গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অবদান রাখতে নিরন্তর প্রেরণা জোগাবে যে ভারতের স্বপ্ন সুব্রহ্মনিয়া ভারতীজি দেখেছিলেন।

বন্ধুগণ,

সুব্রহ্মনিয়া ভারতীজি সর্বদাই ভারতের একতা এবং প্রতিটি মানুষের ঐক্যে বিশেষ জোর দিতেন। তাঁর এই আদর্শ অখণ্ড ভারতের ভাবনা-চিন্তা এবং দর্শনের অভিন্ন অংশ। আমাদের দেশে পৌরাণিককালে দধীচি এবং কর্ণের মতো দানবীর ছিলেন, মধ্যকালে মহারাজ হর্ষবর্ধনের মতো মহাপুরুষ ছিলেন; যিনি সেবার জন্য সর্বস্ব অর্পণ করে দিতেন। এই পরম্পরা থেকে ভারত আজও প্রেরণা পায়। এটা এমন এক ধরনের জীবনের মন্ত্র আমাদের শিখিয়ে গেছে যে আমরা যেখান থেকে যতটা নেব, তার থেকে অনেকগুণ ফিরিয়ে দেব। আমরা যা কিছু পেয়েছি তা এই পৃথিবী থেকেই পেয়েছি, আমরা যতটা উন্নতি করেছি তা এই সমাজের মধ্য থেকেই করেছি এবং সমাজের কারণেই করতে পেরেছি। সেজন্য আমরা যতটা অর্জন করেছি, সেটাও আমাদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। তার মধ্যে আমাদের সমাজেরও ভাগ আছে, দেশেরও ভাগ আছে। যা সমাজের, সেটা আমাদের সমাজকে ফিরিয়ে দেওয়া উচিৎ, আর সমাজ সেটাকে আরও অনেকগুণ করে আমাদের এবং আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ফিরিয়ে দেবে। এটা এমন একটি আশ্চর্যজনক প্রাণশক্তির চক্র যা প্রত্যেক প্রচেষ্টাকে আরও তীব্র এবং দ্রুত করে তোলে। আজ আপনারা এই প্রাণশক্তির চক্রকে আরও গতি প্রদান করছেন।

বন্ধুগণ,

যখন আমরা সমাজের জন্য কোনও সঙ্কল্প গ্রহণ করি তখন তাকে বাস্তবায়িত করতে সমাজই আমাদের সামর্থ্য জোগায়। সেজন্য আজ একটি এমন কালখণ্ডে যখন আমরা স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব পালন করছি, তখন দেশ ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস’-এর পাশাপাশি ‘সবকা প্রয়াস’-এর মন্ত্র গ্রহণ করেছে। গুজরাটও অতীত থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত মিলিত প্রচেষ্টার একটি ভূমি স্বাধীনতা সংগ্রামে গান্ধীজি এখান থেকেই ডান্ডি যাত্রার শুভ উদ্বোধন করেছিলেন যা আজও স্বাধীনতার জন্য দেশের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার প্রতীক, প্রেরণাস্বরূপ।

এভাবে খেড়া আন্দোলনে সর্দার প্যাটেলের নেতৃত্বে কৃষক, যুবক, গরীবদের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম ব্রিটিশ শাসনকে ঝুঁকতে বাধ্য করেছিল। সেই প্রেরণা, সেই প্রাণশক্তি আজও গুজরাটের মাটিতে সর্দার সাহেবের গগনচুম্বী মূর্তি ‘স্ট্যাচু অফ ইউনিটি’ রূপে আমাদের সামনে দণ্ডায়মান। কে ভুলতে পারে যে যখন ‘স্ট্যাচু অফ ইউনিটি’ গড়ে তোলার ভাবনা গুজরাট প্রকাশ করেছিল, তখন সারা ভারত কিভাবে এই কর্মযজ্ঞে অংশগ্রহণ করেছিল? তখন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কৃষকরা লোহা পাঠাতেন। এই মূর্তি আজ গোটা দেশের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার একটি প্রেরণাস্থল, একটি প্রতীক।

ভাই ও বোনেরা,

‘সহকার সে সফলতা’ – এর যে রূপরেখা গুজরাট পেশ করেছে এতে দেশবাসীও অংশীদার হয়েছে। আর আজ দেশ এই সমবায় আন্দোলনের মাধ্যমে লাভবানও হচ্ছে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে সর্দারধাম ট্রাস্টও মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে নিজেদের জন্য আগামী ৫ এবং ১০ বছরের কিছু লক্ষ্য স্থির করেছে। আজ দেশও তার স্বাধীনতার শতবর্ষ পূর্তির স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য এরকম কিছু লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলেছে।

সরকারে এখন একটি ভিন্ন সমবায় মন্ত্রকও গঠন করা হয়েছে। কৃষক ও নবীন প্রজন্ম যাতে সমবায়ের শক্তি থেকে পুরোপুরি লাভবান হতে পারে তা সুনিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। সমাজের যে অংশ পেছনে রয়ে গেছেন, তাঁদের এগিয়ে আনার জন্য সমস্ত ধরনের প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। আজ একদিকে দলিত, পিছিয়ে পড়াদের অধিকার স্থাপনের লক্ষ্যে দায়িত্ব নিয়ে অনেক কাজ করা হচ্ছে, অন্যদিকে আর্থিক দৃষ্টিকোণ থেকে পিছিয়ে পড়া সমাজের দরিদ্র মানুষদের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণ চালু করা হয়েছে। এই নীতির পরিণামে আজ সমাজে একটি নতুন আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি হয়েছে।

বন্ধুগণ,

আমাদের দেশে বলা হয় :

“সৎ বিদ্যা য়দি কা চিন্তা, ওয়ারাকোদর পূরণে”

অর্থাৎ, যাঁর বিদ্যা আছে, কর্মকুশলতা আছে, তাঁকে নিজের পেশার জন্য, জীবনে উন্নতির জন্য চিন্তা করতে হয় না। সক্ষম ব্যক্তি তাঁর প্রগতির জন্য নিজের পথ নিজেই তৈরি করেন। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে সর্দারধাম ট্রাস্ট দ্বারা শিক্ষা এবং দক্ষতা প্রশিক্ষণের ওপর অনেক জোর দেওয়া হচ্ছে।

আমাদের নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতেও এই ক্ষেত্রে জোর দেওয়া হয়েছে যে আমাদের শিক্ষা কর্মকুশলতা বৃদ্ধির অনুকূল হতে হবে। ভবিষ্যতে বাজারে কী ধরনের দক্ষতার চাহিদা হবে, ভবিষ্যৎ পৃথিবীকে নেতৃত্ব প্রদানের জন্য আমাদের যুব সম্প্রদায়কে কী কী করতে হবে, নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি ছাত্রছাত্রীদের গোড়া থেকেই সেই আন্তর্জাতিক বাস্তবতার জন্য প্রস্তুত করে তুলবে। আজ ‘স্কিল ইন্ডিয়া মিশন’-ও দেশে বড় অগ্রাধিকার পাচ্ছে। এই মিশনের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ যুবক-যুবতীকে ভিন্ন ভিন্ন দক্ষতা অর্জনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে যার ফলে তাঁরা আত্মনির্ভর হয়ে উঠছে। ন্যাশনাল অ্যাপ্রেন্টিসশিপ প্রোমোশন স্কিমের মাধ্যমে যুব সম্প্রদায়কে পড়াশোনার পাশাপাশি দক্ষতা উন্নয়নেরও সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, আর তাঁদের কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা হচ্ছে।

‘মানবকল্যাণ যোজনা’ আর এমন অনেক প্রকল্পের মাধ্যমে গুজরাট নিজে থেকেই এই লক্ষ্যে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলার চেষ্টা করছে আর সেজন্য আমি গুজরাট সরকারকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। অনেক বছরের ক্রমাগত প্রচেষ্টার পরিণামস্বরূপ গুজরাটে আজ যেখানে একদিকে স্কুল ড্রপ-আউটের হার ১ শতাংশেরও নিচে নেমেছে, তেমনই ভিন্ন ভিন্ন প্রকল্পে লক্ষ লক্ষ যুবক-যুবতী দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে নতুন ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারছেন।

গুজরাটের যুব সম্প্রদায়ের রক্তে আন্ত্রেপ্রেনিউরশিপ রয়েছে। স্টার্ট-আপ ইন্ডিয়ার মতো অভিযান থেকে আজ গুজরাটের যুব সম্প্রদায়ের এই প্রতিভা একটি নতুন ইকো-সিস্টেম গড়ে তুলছে।

আমাকে বলা হয়েছে যে সর্দারধাম ট্রাস্টও আমাদের যুব সম্প্রদায়কে গ্লোবাল বিজনেস-এর সঙ্গে যুক্ত করার অনেক চেষ্টা করছে। ‘ভাইব্র্যান্ট গুজরাট সামিট’-এর মাধ্যমে গুজরাট যে সূত্রপাত করেছিল, আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ‘গ্লোবাল পাটীদার বিজনেস সামিট’ সেই লক্ষ্যগুলিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে। পাটীদার সমাজের পরিচয়ই তো এটাই। তাঁরা যেখানেই যান, সেখানকার বাণিজ্যকে একটি নতুন পরিচয় প্রদান করেন। আপনাদের এই দক্ষতা এখন গুজরাট তথা ভারতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, গোটা বিশ্ব আপনাদের এই পরিচয় জানতে শুরু করেছে। কিন্তু পাটীদার সমাজের আর একটি বড় বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তাঁরা যেখানেই থাকেন, ভারতের কল্যাণই তাঁদের সবচাইতে বড় অগ্রাধিকার থাকে। তাঁরা দেশের আর্থিক উন্নতিতে যে অবদান রেখেছেন তা অত্যন্ত অদ্ভূত ও প্রেরণাদায়ী।

বন্ধুগণ,

কঠিন থেকে কঠিন সময়ে যখন নিজের কর্তব্য বুঝে আমরা সম্পূর্ণ বিশ্বাস নিয়ে কাজ করি তখন অবশ্যই পরিণাম আসে। করোনা মহামারী এসেছে। গোটা বিশ্বের অর্থ ব্যবস্থাকে ধ্বস্ত করেছে। ভারতেও এর প্রভাব পড়েছে। কিন্তু আমাদের অর্থনীতি মহামারীর ফলে যতটা থেমে গিয়েছিল, তার থেকে অনেক তীব্র গতিতে পুনরুদ্ধারের কাজ চলছে। যখন বড় বড় অর্থনীতির দেশগুলি আত্মরক্ষার নীতি নিয়েছিল, তখন আমরা সংশোধনের পথ নিয়েছিলাম। যখন আন্তর্জাতিক সরবরাহ শৃঙ্খল ধ্বস্ত হচ্ছিল, তখন আমরা নতুন পরিস্থিতিকে ভারতের পক্ষে নিয়ে আসার জন্য পিএলআই স্কিম শুরু করেছি। এখন পিএলআই স্কিমকে বস্ত্রক্ষেত্রের জন্য সম্প্রসারিত করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। এর দ্বারা দেশের বস্ত্রক্ষেত্র অনেক বেশি লাভবান হবে। বিশেষ করে সুরাটের মতো শহরগুলি অনেক উপকৃত হবে।

বন্ধুগণ,

একবিংশ শতাব্দীর ভারতের কাছে সুযোগের অভাব নেই। আমরা নিজেদেরকে বিশ্বে নেতৃত্ব প্রদানের যোগ্য করে তুলতে চাই, আপ্রাণ প্রচেষ্টায় নিজেদের সর্বশ্রেষ্ঠ করে তুলতে চাই। আমার সম্পূর্ণ ভরসা আছে যে দেশের উন্নতিতে গুজরাটের যে অবদান রয়েছে তাকে আমরা সবাই আরও মজবুত রূপে এগিয়ে নিয়ে যাব। আমাদের প্রচেষ্টা শুধু যে আমাদের সমাজকে উচ্চতা প্রদান করবে তাই নয়, গোটা দেশের উন্নয়নকেও শীর্ষে পৌঁছে দেবে।

এই শুভকামনা নিয়ে আপনাদের সবাইকে আরেকবার অনেক অনেক ধন্যবাদ।

 

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
UPI reigns supreme in digital payments kingdom

Media Coverage

UPI reigns supreme in digital payments kingdom
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Prime Minister watches ‘The Sabarmati Report’ movie
December 02, 2024

The Prime Minister, Shri Narendra Modi today watched ‘The Sabarmati Report’ movie along with NDA Members of Parliament today.

He wrote in a post on X:

“Joined fellow NDA MPs at a screening of 'The Sabarmati Report.'

I commend the makers of the film for their effort.”