ভারতমাতার জয়, ভারতমাতার জয়!
অসমের জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী শ্রী সর্বানন্দ সোনোওয়ালজি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীমন্ডলে আমার সহযোগী শ্রী রামেশ্বর তেলীজি, অসম সরকারের মন্ত্রী ডাঃ হেমন্ত বিশ্বশর্মাজি, ভাই অতুল বোরাজি, শ্রী কেশব মহন্তজি, শ্রী সঞ্জয় কিশনজি, শ্রী জগনমোহনজি, হাউজ ফেডের চেয়ারম্যান শ্রী রঞ্জিত কুমার দাসজি, অন্য সকল সাংসদ, বিধায়ক এবং অসমের আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা!
"আমি অসমবাসীদের ইংরেজি নববর্ষ ও ভোগালী বিহুর আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। সবার আগামী দিনগুলো সুখ ও সমৃদ্ধিতে ভরে উঠুক।
বন্ধুগণ,
অসমের মানুষের এই আশীর্বাদ, আপনাদের এই আত্মীয়তা আমার সৌভাগ্যের বিষয়। আপনাদের এই ভালবাসা, এই স্নেহ আমাকে বারবার অসমে নিয়ে আসে। গত কয়েকবছর ধরে, আমি অসমের বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে দেখার, অসমের ভাইবোনদের সঙ্গে আলাপচারিতা এবং উন্নয়নমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পেয়েছি। গত বছর, আমি কোকরাঝাড়ে ঐতিহাসিক বোড়ো চুক্তির পর এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছি।
এবার অসমের আদিবাসীদের গর্ব ও সুরক্ষার সঙ্গে জড়িত এতবড় একটি অনুষ্ঠানে, আমি আপনাদের খুশিতে যোগদান করতে এসেছি। আজ, অসম সরকার আপনাদের জীবনের বড় চিন্তা শেষ করার কাজ করেছে। ১ লক্ষেরও বেশি আদিবাসী পরিবার জমি মালিকানার পাট্টা পাওয়ায় ফলে তাঁদের জীবনের একটি বড় উদ্বেগ দূর হয়েছে।
ভাই এবং বোনেরা,
এই দিনটিতে একরকমভাবে, আত্ম-সম্মান, স্বাধীনতা এবং সুরক্ষা, তিনটি প্রতীক মিলিত হচ্ছে। প্রথমত, আজ অসমের মাটিকে যাঁরা ভালোবাসেন, সেই আদিবাসীদের জমির আইনী সুরক্ষা দেওয়া হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, জেরেঙ্গা মালভূমির জমিতে শিবসাগরে এই ঐতিহাসিক কাজটি করা হচ্ছে। এই জমি অসমের ভবিষ্যতের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগকারী মহাসতী জয়মতীর বলিদান ভূমি। আমি তাঁর অদম্য সাহস এবং এই ভূমির কাছে মাথা নত করছি। শিবসাগরের গুরুত্ব বিবেচনা করে সরকার এটিকে দেশের শ্রেষ্ঠ ৫ টি অনন্য প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে।
ভাই এবং বোনেরা,
আজই দেশে আমাদের সকলের প্রিয়, শ্রদ্ধেয় নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হচ্ছে। দেশ এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে এই দিনটিকে এবার থেকে 'পরাক্রম দিবস' হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। মা ভারতীর সম্মান ও স্বাধীনতার ক্ষেত্রে নেতাজির স্মৃতি আজও আমাদের অনুপ্রেরণা জাগায়। আজ, পরাক্রম দিবসে সারা দেশে বহু অনুষ্ঠান শুরু হচ্ছে। একরকমভাবে, আজ প্রত্যাশা পূরণের পাশাপাশি আমাদের রাষ্ট্রের সঙ্কল্প সিদ্ধির জন্য অনুপ্রেরণা নেওয়ার সুযোগও বটে।
বন্ধুগণ,
আমরা এমন সংস্কৃতির পতাকাবাহক যেখানে আমাদের ভূমি, আমাদের জমিকে কেবল ঘাস, মাটি, পাথর হিসেবে দেখা হয় না। পৃথিবী আমাদের জন্য মায়ের রূপ। অসমের মহান সন্তান ভারতরত্ন ভূপেন হাজারিকা বলেছিলেন- "ও মুর ধরিত্রী, চোরোনোত দিবা ঠাই, খেতিওকর নিস্তার নাই, মাটি বিনে ওহোহাই।" অর্থাৎ, হে মা ধরিত্রী, আমাকে আপনার পায়ের কাছে জায়গা দিন। মাটি ছাড়া একজন কৃষক কী করবে? মাটি ছাড়া সে অসহায়।
বন্ধুগণ,
এটা অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে স্বাধীনতার এত বছর পরেও অসমে এমন কয়েক লক্ষ পরিবার আছেন যাঁরা কোনও না কোনও কারণে তাঁদের জমির আইনী পাট্টা পাননি। সেজন্যেই, বিশেষত উপজাতি অঞ্চলের একটি বিশাল জনগোষ্ঠী এখনও ভূমিহীন রয়েছেন, তাঁদের জীবিকা নির্বাহ করতে বারবার সঙ্কটে পড়তে হয়েছে। অসমে যখন আমাদের সরকার গঠিত হয়েছিল, তখন এখানে প্রায় ৬ লক্ষ আদিবাসী ছিলেন যাদের কাছে জমির আইনী শংসাপত্র ছিল না। আগের সরকারগুলি আপনাদের এই উদ্বেগকে অগ্রাধিকার দেয়নি। কিন্তু সর্বানন্দ সোনোয়ালজির নেতৃত্বে এখানকার সরকার আপনার উদ্বেগ নিরসনে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। আজ, অসমের আদি বাসিন্দাদের ভাষা ও সংস্কৃতি সংরক্ষণের পাশাপাশি জমি সংক্রান্ত অধিকার সুরক্ষার প্রতিও বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। ২০১৯ সালে যে নতুন ভূমি আইন তৈরি হয়েছে, তা এই সরকারের প্রতিশ্রুতি স্পষ্ট করে। এই প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ, বিগত বছরগুলিতে আড়াই লক্ষেরও বেশি আদিবাসী পরিবারকে জমির শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। এবার এতে আরও ১ লক্ষেরও বেশি পরিবারকে যুক্ত করা হবে। লক্ষ্য একটাই, অসমের এরকম প্রতিটি পরিবারকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জমির আইনী শংসাপত্র পাইয়ে দেওয়া।
ভাই এবং বোনেরা,
জমির পাট্টা প্রদানের মাধ্যমে আদিবাসীদের দীর্ঘদিনের দাবি তো পূরণ হয়েছে, এতে কয়েক লক্ষ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের পথও প্রশস্ত হয়েছে। এবার তাঁরা কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের আরও অনেক প্রকল্পের সুবিধাও পাবেন, যার থেকে আমাদের এই বন্ধুরা এতদিন বঞ্চিত ছিলেন। এখন এই বন্ধুরা অসমের অন্য কৃষক পরিবারগুলির মতোই লাভবান হবেন, যাঁদের প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মান নিধির অধীনে হাজার হাজার টাকা সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হচ্ছে । এখন তাঁরা কিষান ক্রেডিট কার্ড, ফসল বীমা প্রকল্প এবং কৃষকদের জন্য প্রযোজ্য অন্যান্য প্রকল্পগুলির সুবিধাও পাবেন। শুধু তাই নয়, এই কৃষকেরা তাদের বাণিজ্যের জন্য এই জমির ওপর ব্যাঙ্ক থেকে সহজে ঋণ নিতে সক্ষম হবেন।
ভাই এবং বোনেরা,
অসমের প্রায় ৭০ টি ছোট-বড় উপজাতির সামাজিক সুরক্ষা প্রদান এবং তাদের দ্রুত বিকাশ- এটা আমাদের সরকারের প্রতিশ্রুতি। অটলজির সরকারই হোক বা বিগত কয়েক বছর ধরে কেন্দ্র ও রাজ্যের এনডিএ সরকার, অসমের সংস্কৃতি, আত্মমর্যাদা এবং সুরক্ষা আমাদের অগ্রাধিকারে রয়েছে। অসমিয়া ভাষা ও সাহিত্যের প্রচারেও বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। একইভাবে, অসমের প্রতিটি সম্প্রদায়ের মহান ব্যক্তিত্বদের সম্মাননার কাজ বিগত বছরগুলিতে হয়েছে। শ্রীমন্ত শঙ্করদেবজির দর্শন, তাঁর পড়াশোনা অসমের পাশাপাশি সমগ্র দেশ, সমগ্র মানবতার জন্য অত্যন্ত মূল্যবান সম্পদ। এধরনের ঐতিহ্য রক্ষা ও প্রচারের চেষ্টা প্রতিটি সরকারের দায়িত্ব হওয়া উচিত। তবে বাটাদ্রবা অধিবেশন সহ অন্যান্য অধিবেশনে যা করা হয়েছে, তা অসমের মানুষদের অজানা নয়। গত সাড়ে চার বছরে, অসম সরকার এই আস্থা ও আধ্যাত্মিক স্থানগুলোর সৌন্দর্যায়নের জন্য, ঐতিহাসিক শিল্প ও কলার সংরক্ষণে প্রচুর প্রচেষ্টা করেছে। একইভাবে অসম এবং ভারতের গৌরব কাজিরঙ্গা জাতীয় উদ্যানকে দখলদারদের থেকে মুক্ত করতে এবং অভয়ারণ্যের উন্নয়নে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
ভাই এবং বোনেরা,
উত্তর-পূর্বের দ্রুত উন্নয়ন, অসমের দ্রুত উন্নয়ন, স্বনির্ভর ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বনির্ভর অসমের পথ অসমের মানুষের আত্মবিশ্বাসের মধ্য দিয়ে যায় এবং এতে আত্মবিশ্বাসও বৃদ্ধি পায়। যখন পরিবারে সুবিধা পাওয়া যায় তখন রাজ্যের পরিকাঠামোও উন্নত হয়। গত কয়েক বছরে অসমে এই উভয় ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব কাজ হয়েছে। অসমে প্রায় পৌনে ২ কোটি দরিদ্রের জন ধন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। এই অ্যাকাউন্টগুলির মাধ্যমেই, করোনার সময় অসমের কয়েক হাজার বোন এবং কয়েক লক্ষ কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি আর্থিক সহায়তা পাঠানো সম্ভব হয়েছে। আজ, অসমের প্রায় ৪০ শতাংশ নাগরিক আয়ুষ্মান ভারতের সুবিধাভোগী, যার মধ্যে প্রায় দেড় লক্ষ বন্ধুরা নিখরচায় চিকিৎসা পেয়েছেন। অসমে শৌচালয়গুলির কভারেজ গত ৬ বছরে ৩৮ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশ বেড়েছে। ৫ বছর আগে পর্যন্ত, অসমের ৫০ শতাংশেরও কম পরিবারের বিদ্যুৎ সংযোগ সুযোগ ছিল যা এখন প্রায় ১০০ শতাংশে পৌঁছেছে। জল জীবন মিশনের আওতায় গত দেড় বছরে অসমের আড়াই লক্ষেরও বেশি বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের ডবল ইঞ্জিন ৩-৪ বছরের মধ্যে অহমের প্রতিটি বাড়িতে পাইপযুক্ত জল সরবরাহ করার জন্য কাজ করছে।
ভাই এবং বোনেরা,
যে সমস্ত সুবিধা রয়েছে, তার ফলে আমাদের বোন এবং মেয়েরা সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে। অসমের বোন ও মেয়েরা উজ্জ্বলা প্রকল্প থেকে উপকৃত হয়েছেন। আজ, অসমের প্রায় ৩৫ লক্ষ দরিদ্র বোনদের রান্নাঘরে উজ্জ্বলা গ্যাস সংযোগ রয়েছে। এরমধ্যে প্রায় ৪ লক্ষ পরিবার তফসিলি জাতি ও উপজাতির অন্তর্ভুক্ত । ২০১৪ সালে কেন্দ্রে যখন আমাদের সরকার গঠিত হয়েছিল, তখন অসমে এলপিজির কভারেজ ছিল মাত্র ৪০ শতাংশ। উজ্জ্বলা যোজনার কারণে এখন অসমে এলপিজির কভারেজ বেড়ে প্রায় ৯৯ শতাংশ হয়েছে। সরকার এলপিজি ডিস্ট্রিবিউটারের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করেছে, যাতে অসমের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও রান্নার গ্যাস পৌঁছতে কোনও সমস্যা না হয়। ২০১৪ সালে অসমে তিনশো তিরিশ জন এলপিজি গ্যাস বিতরণকারী ছিল, এখন তাদের সংখ্যা পাঁচশো পচাত্তরে পৌঁছে গেছে। আমরা দেখেছি যে উজ্জ্বলা কীভাবে করোনার সময়েও মানুষকে সহায়তা করেছে। ওই সময়ে, অসমে উজ্জ্বলায় সুবিধাভোগীদের জন্য ৫০ লক্ষেরও বেশি বিনামূল্যে গ্যাস সিলিন্ডার দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ উজ্জ্বলা যোজনার মাধ্যমে অসমের বোনদের জীবন সহজ হয়েছে এবং এর জন্য যে কয়েকশত নতুন বিতরণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে, এতে বহু যুবকদের কর্মসংস্থানও হয়েছে।
বন্ধুগণ,
সবার সাথ -সবার বিকাশ, সবার বিশ্বাস, এই মন্ত্র নিয়ে চালিত আমাদের সরকার, অসমের প্রতিটি অঞ্চলে দ্রুত উন্নয়নের সুবিধা প্রদানে নিযুক্ত রয়েছে। পূর্ববর্তী নীতিগুলির কারণে চা উপজাতির কী পরিস্থিতি কী হয়েছে তা আপনারা আমার চেয়ে বেশি জানেন। এখন চা উপজাতির বাড়ি এবং শৌচালয়ের মতো প্রাথমিক সুবিধার সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে। চা উপজাতির অনেক পরিবার জমির আইনী অধিকারও পেয়েছে। চা উপজাতির শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানের দিকে মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে। প্রথমবার তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট করা হয়েছে। এখন এই পরিবারগুলিও সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছে। শ্রমিক নেতা সন্তোষটোপানো সহ চা উপজাতির অন্যান্য বড় নেতার মূর্তি স্থাপন করে, রাজ্য সরকার চা উপজাতির অবদানকে সম্মান জানিয়েছে।
বন্ধুগণ,
অসমের প্রতিটি অঞ্চলের প্রতিটি উপজাতিকে একসঙ্গে নিয়ে চলার নীতির কারণে অসম শান্তি ও অগ্রগতির পথে অগ্রসর হয়েছে।ঐতিহাসিক বোড়ো চুক্তির ফলে অসমের একটা বিশাল অঞ্চল শান্তি ও উন্নয়নের পথে ফিরে এসেছে। চুক্তি স্বাক্ষরের পর, বোড়োল্যান্ড টেরিটোরিয়াল কাউন্সিলের প্রথম নির্বাচন হয়েছে এবং প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছে। আমি নিশ্চিত যে এখন বোড়ো টেরিটোরিয়াল কাউন্সিল উন্নয়ন ও আস্থার নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
ভাই এবং বোনেরা,
আজ, আমাদের সরকার অসমের প্রয়োজনীয়তা চিহ্নিত করে দ্রুত প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে কাজ শুরু করেছে। গত ৬ বছর ধরে অসম সহ পুরো উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পরিকাঠামো এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও প্রসারিত ও আধুনিক হচ্ছে। আজ, অসম এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের অ্যাক্ট ইস্ট নীতি পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ বাড়িয়ে তুলছে। উন্নত পরিকাঠামোর কারণে অসম স্বনির্ভর ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হিসেবে উঠে এসেছে। গত কয়েক বছরে অসমের গ্রামগুলিতে ১১ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি রাস্তার নির্মাণ হয়েছে। ডাঃ ভূপেন হাজারিকা সেতু, বগিবেল সেতু, সরাইঘাট সেতু সহ এমন অনেক সেতু তৈরি হয়েছে বা তৈরি করা হচ্ছে যা অসমের যোগাযোগকে আরও সশক্ত করেছে। এখন উত্তর-পূর্ব ও অসমের মানুষদের দীর্ঘ পথ এবং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে না। এছাড়াও নৌপথের মাধ্যমে বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান এবং মায়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগের দিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে।
বন্ধুগণ,
অসমে রেল ও বিমান যোগাযোগের ক্ষেত্র যেমন বাড়ছে, লজিস্টিক সংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধা আরও উন্নত হচ্ছে, পাশাপাশি এখানে শিল্প ও কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগও তৈরি হচ্ছে। জনপ্রিয় গোপীনাথ বরদলৈ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আধুনিক টার্মিনাল এবং কাস্টম ক্লিয়ারেন্স কেন্দ্রের নির্মাণ, কোকরাঝাড়ের রূপসী বিমানবন্দরের আধুনিকীকরণ, বঙ্গাইগাঁও মাল্টি-মডেল লজিস্টিক হাবের নির্মাণ, এর মাধ্যমে অসমের শিল্পোন্নয়ন ক্ষেত্রে নতুন গতি পাবে।
ভাই এবং বোনেরা,
আজ, যখন দেশ গ্যাস প্রধান অর্থনীতির দিকে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে, অসমও এই অভিযানে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। অসমের তেল ও গ্যাস সংক্রান্ত পরিকাঠামোয় কয়েক বছরে ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করা হয়েছে। গুয়াহাটি-বড়ৌনি গ্যাস পাইপলাইনের মাধ্যমে উত্তর-পূর্ব এবং পূর্ব ভারতের গ্যাস সরবরাহ আরও সশক্ত হতে চলেছে এবং অসমে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। নুমালিগড় শোধনাগারের সম্প্রসারণের পাশাপাশি এখন সেখানে একটি বায়ো-রিফাইনারির ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এরফলে তেল ও গ্যাসের পাশাপাশি অসম ইথানলের মতো বায়োফুয়েল উৎপাদনের ক্ষেত্রেও দেশের প্রধান রাজ্যে পরিণত হতে চলেছে।
ভাই এবং বোনেরা,
অসম এখন স্বাস্থ্য ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বিকশিত হচ্ছে। এইমস এবং ভারতীয় কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট গঠনের ফলে অসমের যুবসমাজ আধুনিক শিক্ষার নতুন সুযোগ পাচ্ছে। অসম যেভাবে করোনা অতিমাত্রায় মোকাবিলা করেছে, তা প্রশংসনীয়। আমি বিশেষত অসমের জনমানুষের পাশাপাশি সোনোয়ালজি, হেমন্তজি এবং তাঁর দলকে অভিনন্দন জানাই। আমি আশাবাদী যে অসম এবার টিকাকরণ অভিযানকেও সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আমি অসমবাসীদের অনুরোধ করছি যার যখন টিকা নেওয়ার কথা, তখন যেন তারা টিকা নিয়ে নেন। এবং এও মনে রাখবেন যে টিকার একটি ডোজ নয়, দুটি ডোজই নেওয়া জরুরী।
বন্ধুগণ,
ভারতে তৈরি টিকার সারা বিশ্ব জুড়ে চাহিদা তৈরি হয়েছে। ভারতেও লক্ষ লক্ষ মানুষকে ইতিমধ্যে টিকা দেওয়া হয়েছে। আমাদের টিকা নিতেও হবে এবং সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। অবশেষে, আবারও যারা জমির পাট্টা পেয়েছেন তাদের সকলকে অনেক অভিনন্দন। আপনারা সবাই সুস্থ থাকুন, আপনারা সবাই অগ্রগতি করুন, এই কামনা করে আপনাদের অনেক অনেক ধন্যবাদ! আমার সঙ্গে বলুন, ভারত মাতার জয়! ভারত মাতার জয়! ভারত মাতার জয়!
অনেক ধন্যবাদ