নমস্কার।

 

দক্ষিণ কোরিয়ায় বসবাসকারী আমার প্রিয় ভারতীয় ভাই ও বোনেরা, এই উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য আমি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আমাকে বলা হয়েছে যে, আপনারা এখানে অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছেন। যদিও বাইরে ভীষণ ঠান্ডা। ভেতরে হয়তো আপনাদের বেশ ভালোই লাগছে। সবকিছুকে ইতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা উচিৎ। আমি আপনাদের এই ভালোবাসার সামনে নত মস্তক হয়ে প্রণাম জানাই।

 

বন্ধুগণ, এই নিয়ে দ্বিতীয়বার আমার দক্ষিণ কোরিয়ায় এসে প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে কথা বলার সৌভাগ্য হ’ল। ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়ার সম্পর্কের ভিত্তি নিছকই বাণিজ্যিক নয়, এর মূল ভিত্তি হ’ল – উভয় দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক। প্রবাসী ভারতীয় এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূতরাই এই সম্পর্কের বুনিয়াদ। আমি বলি, আপনারা প্রত্যেকেই দেশের সাংস্কৃতিক রাজদূত।

 

প্রাচীনকালে ভারতের রাজকুমারী সূর্যরত্না কয়েক হাজার কিলোমিটার সফর করে এখানে এসেছিলেন। এখানকার রাজার সঙ্গে তাঁর বিবাহ হয়েছিল। আজও লক্ষ লক্ষ কোরিয়াবাসী নিজেদের তাঁর বংশধর বলে মনে করেন। সেজন্য আমি বলতে পারি, কোরিয়ার সঙ্গে আমাদের রক্তের সম্পর্ক রয়েছে।

 

কোরিয়াবাসীর শরীরের রক্তে ভারতের অংশ রয়েছে। আজও অযোধ্যায় রাজকুমারী সূর্যরত্নার মূর্তি স্থাপিত রয়েছে। গত বছর দীপাবলির সময়ে দক্ষিণ কোরিয়ার ফার্স্ট লেডি কিম জোঙ্গ সুক সেখানে একটি জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের সাক্ষী ছিলেন। হয়তো এখানকার টিভিতেও সেই অনুষ্ঠান সম্প্রচার হয়েছিল। ভগবান রামচন্দ্র যুদ্ধে জয়ী হয়ে অযোধ্যায় ফেরার পর, যেরকম আলোকমালায় সেজে উঠেছিল, কয়েক হাজার বছর পর দক্ষিণ কোরিয়ার ফার্স্ট লেডির উপস্থিতিতে সম্ভবত সেরকমই আলোকমালায় অযোধ্যা সেজে উঠেছিল।

বন্ধুগণ, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়ার পারস্পরিক সম্পর্কে বৌদ্ধ ধর্ম আরেকটি শক্তিশালী ভিত্তি। অষ্টম শতাব্দীতে কোরিয়ান বৌদ্ধ ভিক্ষুক হাইচো ভারত সফরে গিয়েছিলেন। কোরিয়ার উন্নয়নে প্রাচীন ভারতীয় প্রভাবের পাশাপাশি, আধুনিক সময়ে আপনাদের পরিশ্রমের অবদানও অনস্বীকার্য। এদেশে আপনাদের অবদান, ভারতীয় মেধা ও দক্ষতার সুনাম রয়েছে। ভারতে থেকেও অনেকে কোরিয়ার কোম্পানিগুলিকে গবেষণা ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে সাহায্য করছে। কোরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে কর্মরত ভারতীয় অধ্যাপক, গবেষক ও পোস্ট ডক্টরেট ছাত্ররাও দক্ষিণ কোরিয়ার আর্থিক সমৃদ্ধির পাশাপাশি, এখানকার সাংস্কৃতিক ও সামাজিক জীবনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন।

 

বন্ধুগণ, আপনাদের উপস্থিতি-ই দক্ষিণ কোরিয়াতে যোগচর্চাকে জনপ্রিয় করে তুলেছে। সিওল, বুসান এবং অন্যান্য শহরে দু’হাজারেরও বেশি মানুষ আন্তর্জাতিক যোগ দিবসে অত্যন্ত নিষ্ঠা ও উৎসাহের সঙ্গে যোগদান করেছিলেন। আর আপনারা দক্ষিণ কোরিয়ায় হোলি, দীপাবলি ও বৈশাখীর মতো সমস্ত ভারতীয় উৎসব পালনের সময়ে কোরিয়ান বন্ধুদেরও এতে অংশীদার করে তোলেন। এদেশের শহরগুলিতে ভারতীয় রেস্তোরাঁগুলি নানা প্রদেশের ভারতীয় খাবার পরিবেশন করে কোরিয়াবাসীদেরও মন জয় করে নিয়েছেন।

 

একইভাবে, দক্ষিণ কোরিয়ায় ভারতীয় সিনেমার জনপ্রিয়তা ক্রমবর্ধমান। ক্রীড়ার ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়ার ছেলেমেয়েদের মুখে ‘কবাডি কবাডি’ শুনতে আমার বেশ ভালো লাগে। ২০১৮’র এশিয়ান গেমস্‌ – এ কাবাডিতে দক্ষিণ কোরিয়া রৌপ্য পদক জিতেছে।

 

বন্ধুগণ, আমার মতে, আপনারা প্রত্যেকেই যেমন দক্ষিণ কোরিয়ায় ভারতের রাজদূত, তেমনই সারা পৃথিবীতে ৩০ মিলিয়ন প্রবাসী ভারতীয়র পরিশ্রম ও নিয়মানুবর্তীতা তাঁদেরকে সেসব দেশে ভারতের গর্বিত রাজদূত করে তুলেছে। সেসব দেশের রাষ্ট্র নায়করা গর্বের সঙ্গে কৃতী ভারতীয়দের প্রশংসা করেন।

 

বন্ধুগণ, মহাত্মা গান্ধীজীর সার্ধশত জন্মবর্ষে সারা পৃথিবীতে ভারতীয়দের নিয়ে এই গর্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সারা পৃথিবীতে গান্ধীজীর মতো মহাপুরুষের যতটা পরিচয় গড়ে ওঠা উচিৎ ছিল, দুর্ভাগ্যবশত ততটা হয়নি। নেলসন ম্যান্ডেলা, মার্টিন লুথার কিং কিংবা কেনেডি-কে বিশ্ববাসী যেভাবে জানেন, গান্ধীজীকে এখনও সেভাবে জানেন না। ভারতীয় হিসাবে এই যুগপুরুষকে বিশ্ববাসীর সঙ্গে পরিচিত করানোর দায়িত্ব কিন্তু আমাদের সকলের। আমাদের পূর্বজরা যেটা করেননি, সেটি করার স্বপ্ন আমাদের থাকা উচিৎ।

মহাত্মা গান্ধী বিশ্বমানব ছিলেন। আজকের বিশ্ব যেসব সমস্যার সম্মুখীন, সেগুলির সমাধানে তাঁর দর্শন অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক। বাপুর জীবনে প্রকৃতির ভূমিকা পরিবেশের সঙ্গে মানুষের জীবনকে মিলিয়ে দেবার যে দর্শন, সেটাই অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারে। দক্ষিণ কোরিয়ায় বাপুকে অতুলনীয় শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হচ্ছে। তাঁর স্মৃতিতে আমরা সবাই মিলে দক্ষিণ কোরিয়ায় ১৫০টি বৃক্ষ রোপণ করতে যাচ্ছি।

 

বন্ধুগণ, দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে ভারত এই অঞ্চলের শান্তি, স্থিরতা এবং সমৃদ্ধি বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে পায়ে পা মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের মধ্যে যে স্পষ্ট ও সহজ অংশীদারিত্ব রয়েছে, আমরা সবাই মিলে সেটিকে আরও নিবিড় করে তুলতে পারলে উভয় দেশের জনগণই উপকৃত হবেন।

 

এই উপলব্ধি উভয় দেশের সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করে তুলছে। এক্ষেত্রে ভারতীয় কোম্পানিগুলির কোরিয়ায় উপস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আর ভারতের গ্রামে গ্রামে বাড়িতে বাড়িতে এলজি, স্যামসং, হুন্ডাই – এর মতো কোরিয়ান ব্র্যান্ডগুলি জনপ্রিয় হচ্ছে।

 

বন্ধুগণ, আজ গোটা বিশ্ব ভারতের দিকে আশা নিয়ে তাকিয়ে আছে। আমরা আজ বিশ্বে সবচেয়ে দ্রুত এগিয়ে চলা বড় অর্থনীতির দেশ। ২০১৪ সালের আগে আমাদের দেশ ‘ফ্রেজাইল ফাইভ’ বা ভঙ্গুরতম দেশগুলির মধ্যে পরিগণিত হ’ত। আর আজ ভারত কয়েক বছরের মধ্যেই ৫ ট্রিলিয়ন অর্থনীতির দেশ হয়ে ওঠার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলেছে। ২০১৪’য় আমি যখন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলাম, তখন আমরা বিশ্বের ১১তম অর্থনীতির দেশ ছিলাম। আর আজ আমরা ষষ্ঠ স্থানে পৌঁছে গিয়েছি। আর বিশ্বাস করুন, পঞ্চম হতে বেশি দেরী নেই। আমরা আগামী দেড় দশকে ভারতকে শ্রেষ্ঠ তিনটি অগ্রগণ্য দেশের অন্যতম করে তোলার চেষ্টা করছি।

বন্ধুগণ, বিগত সাড়ে চার বছরে আমরা ‘ইজ অফ লিভিং’ এবং ‘ইজ অফ ডুয়িং বিজনেস’ সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে চলেছি। সেজন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক ও সামাজিক সংস্কার যেমন অপ্রত্যক্ষ কর সংস্কার এবং পণ্য ও পরিষেবা কর বা জিএসটি-কে আজ আমাদের ব্যবস্থার অংশ করে নিয়েছি। সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল যেমন দেশকে রাজনৈতিকভাবে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন, জিএসটি তেমনই দেশকে অর্থনৈতিকভাবে ঐক্যবদ্ধ করেছে। আমরা দৃঢ় পদক্ষেপে নগদ বিহীন অর্থনীতির দিকে এগিয়ে চলেছি। আমরা আর্থিক নিয়মানুবর্তিতা বজায় রাখতে পেরেছি। ফলে, বিগত চার বছরে ‘ইজ অফ ডুয়িং বিজনেস’ – এ আমরা বিশ্ব তালিকায় ৬৫তম স্থান এগিয়ে এসেছি। ভারতের মতো এত বৈচিত্র্যময় একটি উন্নয়নশীল দেশ কিভাবে এতটা এগিয়েছে, তা বিশেষজ্ঞদের বিস্ময়ের কারণ হয়ে উঠেছে।

 

বিশ্ব ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান আমাকে ফোন করে তাঁর বিস্ময়ের কথা জানিয়েছেন। তিনি এও বলেছেন, যে দেশ এত প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যেতে পারে, সেদেশের প্রধানমন্ত্রীর দুশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই। কিন্তু আমি আত্মতুষ্টিতে ভুগিনি। আমরা দ্রুত ঐ তালিকায় প্রথম ৫০টি দেশের মধ্যে পৌঁছতে চাইছি।

বন্ধুগণ, বিশ্বে ভারতকে এখন বিনিয়োগের জন্য উজ্জ্বলতম দেশ বলে মানা হচ্ছে। বিগত চার বছরে রেকর্ড পরিমাণ ২৬৩ বিলিয়ন ডলার প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে। আপনাদের মধ্যে যাঁরা সম্প্রতি ভারতে এসেছেন, তাঁরা হয়তো দেশে অনেক পরিবর্তন দেখেছেন।

 

এখন দেশে প্রায় প্রত্যেক নাগরিকেরই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। মাত্র এক হাজার দিনের মধ্যে ৩৩ কোটিরও বেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। একটি আন্তর্জাতিক রিপোর্ট অনুযায়ী গত চার বছরে সারা পৃথিবীতে মোট যত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে, তার অর্ধেকই খোলা হয়েছে ভারতে। শুধু তাই নয়, ভারতের এই গরিব মানুষেরা কতটা ধনী তার প্রমাণ-স্বরূপ ঐ নতুন খোলা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এই অল্প সময়ের মধ্যে ১২ বিলিয়ন ডলার জমা হয়েছে। ফলে, বিশ্ববাসী ভারতে এই আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণ বিপ্লবকে বিশেষ দৃষ্টিতে দেখছেন।

 

মুদ্রা যোজনার মাধ্যমে ১২৮ মিলিয়ন নাগরিককে ৯০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭৪ শতাংশ ঋণ পেয়েছেন মহিলারা। এটা কত বড় বিপ্লব আপনারা হয়তো তা অনুধাবক করতে পারছেন।

 

সামাজিক নিরাপত্তার জন্য আজ পেনশন ও বিমার এমন প্রকল্প চালু করা হয়েছে, যাতে ন্যূনতম ৯০ পয়সা প্রতিদিন কিংবা মাসে এক টাকা কিস্তি প্রদান করে গরিব মানুষ ২ লক্ষ টাকার বিমা করতে পারেন। আর মাস পাঁচেক আগে বিশ্বে সর্ববৃহৎ স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্প আয়ুষ্মান ভারত চালু হয়েছে, যেটিকে অনেকে এখন মোদী কেয়ার বলছেন। এর মাধ্যমে দেশের ৫০ কোটি মানুষ বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা পাচ্ছেন। অর্থাৎ আমেরিকা, কানাডা ও মেক্সিকোর মোট জনসংখ্যারও বেশি মানুষ এই প্রকল্প দ্বারা লাভবান হচ্ছেন।

আজ বিশ্বের সর্বোচ্চ মূর্তি ‘স্ট্যাচু অফ ইউনিটি’ ভারতে গড়ে উঠেছে। এই গর্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি, ডিজিটাল ইন্ডিয়া দেশের প্রাত্যহিক জীবনে দ্রুত পরিবর্তন আনছে। আজ প্রায় প্রত্যেক ভারতীয় নাগরিকের কাছে বায়োমেট্রিক পরিচয়পত্র রয়েছে। দেশের ১ লক্ষ ২৫ হাজার গ্রামে ইতিমধ্যেই অপ্টিক্যাল ফাইবার পৌঁছে গেছে।

 

বন্ধুগণ, আজ অনেক বিষয়ে ভারত বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে। যক্ষ্মা নিবারণের জন্য রাষ্ট্রসংঘ ২০৩০ সালকে লক্ষ্য বছর হিসাবে নির্ধারণ করেছে। কিন্তু ভারত ২০২৫ সালকে লক্ষ্য রেখে এগিয়ে চলেছে এবং আপনারা নিশ্চিত থাকুন যে, তার আগেই আমরা সেই লক্ষ্যে পৌঁছে যাব।

 

পরিবেশ-বান্ধব শক্তি উৎপাদনে ভারত বিশ্বকে পথ দেখাচ্ছে। আন্তর্জাতিক সৌরসংঘ স্থাপনের মাধ্যমে এই আন্দোলনে নেতৃত্ব প্রদান এবং সবুজ অর্থনীতির দিকে এগিয়ে যাওয়া আমাদের মূল লক্ষ্য। আমাদের দেশ ইতিমধ্যেই পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদনে বিশ্বে ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেছে।

 

বন্ধুগণ, এই সার্বিক পরিবর্তন আপনারাও হয়তো অনুভব করছেন। যখনই অন্য কোনও দেশের নাগরিকের সঙ্গে করমর্দন করেন, তখন তাঁরা আগের তুলনায় অনেক বেশি সময় নিয়ে আপনার হাত ধরে রাখতে চাইছেন। আর আপনারাও দেশের ইতিবাচক উন্নয়নের কথা তাঁদেরকে জানাতে পারছেন। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ একটি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড হয়ে উঠেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার মতো বন্ধু দেশের সঙ্গে মিলে আমরা দেশকে বৈদ্যুতিন নির্মাণ ক্ষেত্রে বড় হাব করে তুলতে চাই।

 

বন্ধুগণ, আজ ভারতে একটি নতুন প্রাণশক্তি অনুভব করা যায়। সেই প্রাণশক্তি প্রতিনিধি-স্বরূপ আগামীকাল আমাকে সিওল শান্তি পুরস্কারে সম্মানীত করা হবে। এই পুরস্কার আমার নয়, আমি মনে করি, এটি আমি ১৩০ কোটি ভারতবাসী এবং ৩ কোটি প্রবাসী ভারতীয়র পক্ষ থেকে গ্রহণ করতে এসেছি। এই পুরস্কার প্রত্যেক ভারতীয়র পরিশ্রমের সম্মান। বিগত চার বছর ধরে ভারতবাসী দিন-রাত এক করে যে পরিশ্রম করে চলেছে তার সম্মান। সেজন্য আমি আপনারা যাঁরা এদেশে নিজেদের পরিশ্রমের মাধ্যমে দেশের সম্মান বৃদ্ধি করে চলেছেন, তাঁদের সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।

 

আমাদের দেশে কুম্ভমেলার ইতিহাস সুপ্রাচীন। প্রতিদিন গঙ্গার তীরে ইউরোপের অনেক দেশের মোট জনসংখ্যার চেয়ে বেশি একত্রিত হন এবং গঙ্গা স্নান করেন। আর সম্পূর্ণ কুম্ভমেলায় যত মানুষ স্নান করেন, তা দক্ষিণ কোরিয়ার জনসংখ্যার চার গুণ। এ বছর যাঁরা দেশ-বিদেশ থেকে কুম্ভমেলায় গেছেন, তাঁরা এই মেলার সুব্যবস্থা এবং পরিচ্ছন্নতার প্রশংসা করেছেন। এই প্রথম নিউ ইয়র্ক টাইম্‌স – এ কুম্ভমেলার প্রতিবেদনে পরিচ্ছন্নতা নিয়ে বিশেষভাবে লেখা হয়েছে। আমাদের দেশবাসী দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে কাজ করলে কেমন পরিবর্তন আনতে পারে, কুম্ভমেলা তার একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ।

 

বন্ধুগণ, ভারত দ্রুতগতিতে পরিবর্তিত হচ্ছে, এগিয়ে চলেছে। আমি যেদেশেই যাই, প্রবাসী ভারতীয় এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করি। কিন্তু বিনামূল্যে নয়, এই সাক্ষাতের জন্য রাজি হয়ে আপনাদের কাছ থেকে একটি অনুরোধ রাখি। আজ আপনাদের কাছেও চাইছি। আপনারা যেখানে থাকেন, সেখানকার প্রতিবেশী এবং কর্মস্থলে আপনাদের সহকর্মীদের ভারত ভ্রমণের জন্য উদ্বুদ্ধ করুন। পর্যটন উন্নয়নের বড় শক্তি। প্রত্যেকে ন্যূনতম ৫টি অভারতীয় পরিবারকে ভারতে আসার জন্য উদ্বুদ্ধ করুন, সাহায্য করুন। আপনারা যদি এটুকু করতে পারেন, তা হলেই দেখবেন দেশের জন্য কত বড় অবদান রাখছেন।

 

আপনারা আমার এই প্রতিশ্রুতি কিভাবে রক্ষা করছেন, তা আমি ভারতীয় দূতাবাস থেকে জেনে যাব। আমি জানি যে, ভারতীয়রা প্রতিশ্রুতি দিলে পালন করেন। কী ব্যাপার, আমি আপনাদের প্রশংসা করছি আর আপনারা হাসছেন?

 

আমি আসব, আসব বারবার আসব। চিন্তা করবেন না। আর এলেই জানতে চাইব যে, আপনারা দেশের জন্য কতটা কী করেছেন?

 

আমি আরেকবার এই প্রবল শীতে আপনারা এখানে আমাকে আশীর্বাদ জানানোর জন্য এসেছেন বলে অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা জানাই।

 

ধন্যবাদ।

Explore More
প্রত্যেক ভারতীয়ের রক্ত ফুটেছে: মন কি বাত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী

জনপ্রিয় ভাষণ

প্রত্যেক ভারতীয়ের রক্ত ফুটেছে: মন কি বাত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী
India Remains Fastest-Growing Economy At

Media Coverage

India Remains Fastest-Growing Economy At "Precarious Moment" For World: UN
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
সোশ্যাল মিডিয়া কর্নার 16 মে 2025
May 16, 2025

Appreciation for PM Modi’s Vision for a Stronger, Sustainable and Inclusive India