শেয়ার
 
Comments
প্রধানমন্ত্রী উত্তরপ্রদেশ প্রতিরক্ষা শিল্প করিডরের আলিগড় সংযোগের মডেলটি ঘুরে দেখেছেন
প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে জাতীয় নায়ক ও নায়িকাদের আত্মবলিদানের তথ্য মানুষ জানত না। একবিংশ শতাব্দীর ভারত বিংশ শতকের এই ভুলগুলি শুধরে দিচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী
রাজা মহেন্দ্র প্রতাপ সিংজির জীবন থেকে আমরা এই শিক্ষাই পাই যে আমাদের যেকোন স্বপ্ন পূরণে অদম্য ইচ্ছাশক্তি সহায়ক হতে পারে : প্রধানমন্ত্রী
ভারত বিশ্বের বৃহত্তম প্রতিরক্ষা আমদানিকারক দেশের তকমা থেকে বেরিয়ে আসছে এবং পৃথিবীর সামনে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রপ্তানীকারক দেশের পরিচিতি অর্জন করছে : প্রধানমন্ত্রী
দেশ বিদেশের সব ছোট ও বড় বিনিয়োগকারীর জন্য উত্তরপ্রদেশ আকর্ষণীয় স্থান হয়ে উঠছে : প্রধানমন্ত্রী
আজ ডাবল ইঞ্জিন সরকারের দ্বিগুণ সুবিধার উদাহরণ উত্তরপ্রদেশ হয়ে উঠছে : প্রধানমন্ত্রী

ভারত মাতার জয়,
ভারত মাতার জয়!

উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল শ্রীমতী আনন্দী বেন প্যাটেলজি, উত্তরপ্রদেশের যশস্বী এবং কর্মতৎপর মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথজি, উপ-মুখ্যমন্ত্রী দীনেশ শর্মাজি, উত্তরপ্রদেশ সরকারের মন্ত্রীগণ, উপস্থিত অন্যান্য সাংসদ ও বিধায়কগণ এবং আমার আলিগড়ের প্রিয় ভাই ও বোনেরা,

আজ আলিগড়ের জন্য, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের জন্য একটি অনেক বড় দিন। আজ রাধা অষ্টমীও। সেজন্য আজকের এই দিনটি আরও পবিত্র হয়ে উঠেছে। ব্রজভূমির প্রতিটি কণায় কণায়, প্রতিটি বিন্দুতে রাধাই রাধা। আমি আপনাদের সবাইকে এবং গোটা দেশকে রাধা অষ্টমী উৎসবের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। 

আমাদের সৌভাগ্য যে, উন্নয়নের এতবড় কাজটির সূত্রপাত আজকের এই পবিত্র দিনে সম্পন্ন হচ্ছে। আমাদের শিষ্টাচার হল, যখন কোনও শুভ কাজ হয়, তখন আমাদের শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিদের অবশ্যই স্মরণ করি। আমি আজ এই মাটির মহান সন্তান স্বর্গীয় কল্যাণ সিং-জির অনুপস্থিতি অনেক বেশি করে অনুভব করছি। আজ কল্যাণ সিং-জি আমাদের সঙ্গে থাকলে রাজা মহেন্দ্র প্রতাপ সিং রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে নির্মীয়মান আলিগড়ের নতুন পরিচয় দেখে অনেক খুশি হতেন। আমি দৃঢ় নিশ্চিত, আজ তাঁর আত্মা যেখানেই থাকুক না কেন, সেখান থেকে আমাদের আশীর্বাদ দিচ্ছেন।

বন্ধুগণ,

ভারতের হাজার হাজার বছরের ইতিহাস এমন অনেক দেশভক্তের কীর্তিতে সঞ্জীবিত যাঁরা তাঁদের সময়ে ভারতকে নিজেদের তপস্যা এবং ত্যাগের মাধ্যমে নতুন দিশা দেখিয়েছেন। আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনে এমন অনেক মহান ব্যক্তি রয়েছেন যাঁরা নিজেদের সবকিছু উৎসর্গ করেছেন। কিন্তু এ দেশের দুর্ভাগ্য যে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই দেশ-নায়ক ও দেশ-নায়িকাদের তপস্যা ও কীর্তি সম্পর্কে দেশের পরবর্তী প্রজন্মকে পরিচিত করানো হয়নি। তাঁদের কীর্তিগাথা সম্পর্কে জানতে না পেরে দেশের কয়েকটি প্রজন্ম বঞ্চিত থেকে গেছে। 

বিংশ শতাব্দীর সেই ভুলগুলিকে আজ একবিংশ শতাব্দীর ভারত শুধরাচ্ছে। মহারাজা সুহেল দেবজি থেকে শুরু করে দীনবন্ধু চৌধুরি ছোটুরামজি কিংবা রাজা মহেন্দ্র প্রতাপ সিং-জি ; রাষ্ট্র নির্মাণের ক্ষেত্রে তাঁদের অবদান সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে পরিচিত করানোর সৎ প্রচেষ্টা আজ দেশে হচ্ছে। আজ যখন দেশ তাঁর স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষ পালন করছে, স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব পালন করছে, তখন এই প্রচেষ্টাগুলিকে আরও গতি প্রদান করা হয়েছে। ভারতের স্বাধীনতায় রাজা মহেন্দ্র প্রতাপ সিং-এর অবদানকে প্রণাম জানানোর এই প্রচেষ্টা তেমনই একটি পবিত্র সুযোগ।

 

বন্ধুগণ,

আজ দেশের তেমন প্রত্যেক যুবক-যুবতী যাঁরা বড় বড় স্বপ্ন দেখছেন, যাঁরা বড় লক্ষ্য অর্জন করতে চান, তাঁদের অবশ্যই রাজা মহেন্দ্র প্রতাপ সিং সম্পর্কে জানতে হবে, পড়তে হবে। রাজা মহেন্দ্র প্রতাপ সিং-জির জীবন থেকে আমরা অদম্য ইচ্ছাশক্তি, নিজের স্বপ্নগুলিকে বাস্তবায়নের জন্য অসাধ্যসাধনের আপ্রাণ চেষ্টা আজও আমাদের অনেক শিক্ষা দেয়। তিনি ভারতের স্বাধীনতা চাইতেন এবং নিজের জীবনের প্রত্যেকটি মুহূর্ত সেজন্য সমর্পণ করে দিয়েছিলেন। তিনি শুধু ভারতে থেকে ভারতীয়দের প্রেরণা জোগাননি, তিনি ভারতের স্বাধীনতার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়েছেন। আফগানিস্তান থেকে শুরু করে পোল্যান্ড, জাপান, দক্ষিণ আফ্রিকা – জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি ভারত মাতাকে শৃঙ্খলমুক্ত করতে সবরকম চেষ্টা করেছেন। সারা জীবন আপ্রাণ চেষ্টা করে গেছেন। 

আমি আজকের যুব সম্প্রদায়কে বলব যে যখনই তাঁদের কোনও লক্ষ্যকে কঠিন বলে মনে হবে, তখন রাজা মহেন্দ্র প্রতাপ সিং-জির কথা স্মরণ করবেন, দেখবেন আপনাদের ইচ্ছাশক্তি অনেক প্রবল হয়ে উঠবে, সাহস অনেক বেড়ে যাবে। রাজা মহেন্দ্র প্রতাপ সিং-জি যেভাবে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে একাগ্রতা নিয়ে, নিষ্ঠার সঙ্গে ভারতের স্বাধীনতার জন্য কাজ করে গেছেন, তা আজও আমাদের সকলের জন্য প্রেরণার উৎস। 

বন্ধুগণ,

আজ যখন আমি আপনাদের সঙ্গে কথা বলছি, তখন দেশের আরেকজন মহান স্বাধীনতা সংগ্রামী, গুজরাটের সুপুত্র শ্যামজি কৃষ্ণ ভার্মার কথা মনে পড়ছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় রাজা মহেন্দ্র প্রতাপ সিং-জি বিশেষ করে, শ্যামজি কৃষ্ণ ভার্মাজি ও লালা হরদয়ালজির সঙ্গে দেখা করতে ইউরোপে গিয়েছিলেন। সেই বৈঠকে যে লক্ষ্য স্থির হয়েছিল তার পরিণাম আমরা আফগানিস্তানে ভারতের প্রথম নির্বাসিত সরকার রূপে দেখতে পেয়েছি। এই সরকারের নেতৃত্ব রাজা মহেন্দ্র প্রতাপ সিং-জি করেছিলেন। 

এটা আমার সৌভাগ্য, আমি যখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম, শ্যামজি কৃষ্ণ ভার্মার মৃত্যুর ৭৩ বছর পর তখন তাঁর অস্থি ভারতে ফিরিয়ে আনার সাফল্য পেয়েছিলাম। আপনারা যদি কখনও কচ্ছ-এ যাওয়ার সুযোগ পান, তাহলে দেখবেন কচ্ছ-এর মাণ্ডভিতে শ্যামজি কৃষ্ণ ভার্মাজির একটি অনন্য সুন্দর স্মারক রয়েছে যেখানে তাঁর অস্থি রাখা রয়েছে। সেই স্মারক আমাদের ভারত মাতার জন্য বাঁচার প্রেরণা জোগাবে। 

আজ দেশের প্রধানমন্ত্রী রূপে আমার আরেকবার রাজা মহেন্দ্র প্রতাপ সিং-জির মতো দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মহান স্বাধীনতা সংগ্রামীর নামে নির্মীয়মান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিলান্যাসের সৌভাগ্য হল। আমার জীবনে এটা বড় সৌভাগ্যের দিন। আজ এই পবিত্র অনুষ্ঠানে আপনারা এত বিপুল সংখ্যায় আমাকে আশীর্বাদ দেওয়ার জন্য এসেছেন, এই পবিত্র দিনে জনগণেশের দর্শনও অত্যন্ত শক্তিদায়ক ঘটনা। 

 

বন্ধুগণ,

রাজা মহেন্দ্র প্রতাপ সিং-জি শুধু যে ভারতের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছেন তা নয়, তিনি ভারতের ভবিষ্যৎ নির্মাণের ভিত্তি স্থাপনের ক্ষেত্রেও সক্রিয় অবদান রেখেছেন। তিনি নিজের দেশ-বিদেশ সফরের অভিজ্ঞতাকে ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকীকরণের জন্য প্রয়োগ করেন। বৃন্দাবনে আধুনিক টেকনিক্যাল কলেজ নির্মাণের সময় নিজের পৈত্রিক সম্পত্তি দান করা ছাড়াও অর্থ যুগিয়েছেন। আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যও রাজা মহেন্দ্র প্রতাপ সিং-জি জমি দিয়েছিলেন আর স্বাধীনতার এই অমৃত বর্ষে যখন একবিংশ শতাব্দীর ভারত শিক্ষা এবং প্রকৌশলের নতুন যুগের দিকে এগিয়ে চলেছে, তখন ভারত মাতার এহেন অমর সুপুত্রের নামে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলাই তাঁর প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ। এই ভাবনাকে বাস্তবায়িত করার জন্য যোগীজি এবং তাঁর পুরো টিমকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। 

বন্ধুগণ,

এই বিশ্ববিদ্যালয় আধুনিক শিক্ষার একটি বড় কেন্দ্র তো হয়ে উঠবেই, পাশাপাশি দেশে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত পড়াশোনা, ডিফেন্স ম্যানুফ্যাকচারিং সংক্রান্ত প্রযুক্তি এবং মানবসম্পদ গড়ে তোলার কেন্দ্রও হয়ে উঠবে। নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে যেভাবে শিক্ষা, দক্ষতা এবং স্থানীয় ভাষায় পড়াশোনার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে, তার মাধ্যমে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা অনেক লাভবান হবেন। 

দেশের সৈন্যশক্তিকে মজবুত করতে আত্মনির্ভরতার পথে এগিয়ে যাওয়া ভারতের প্রচেষ্টাগুলি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন ধরনের পড়াশোনায় আরও গতি প্রদান করবে। আজ শুধু দেশ নয়, গোটা বিশ্ব দেখছে যে ভারতে কিভাবে আধুনিক গ্রেনেড থেকে শুরু করে রাইফেল, যুদ্ধবিমান, অত্যাধুনিক ড্রোন, যুদ্ধজাহাজ ইত্যাদি নির্মাণের অভিযান চলছে। ভারত বিশ্বের একটি বৃহত্তম প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম আমদানিকারক দেশ - এই ধারনা বদলে আমরা প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রপ্তানিকারক হয়ে উঠতে চাই। স্বাধীনতার পর ৭৫ বছর পেরিয়ে গেছে। আমাদের দেশ শুধু প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম আমদানি করেই গেছে। এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে এসে আমরা বিশ্বে একটি প্রতিরক্ষা রপ্তানিকারকের নতুন পরিচয় গড়ে তোলার সঙ্কল্প নিয়ে এগিয়ে চলেছি। ভারতের এই পরিবর্তিত পরিচয়ের একটি বড় কেন্দ্র আমাদের উত্তরপ্রদেশে তৈরি হতে চলেছে আর উত্তরপ্রদেশের একজন সাংসদ রূপে এই কারণে আমি অত্যন্ত গর্বিত। 

বন্ধুগণ,

কিছুক্ষণ আগে ডিফেন্স করিডরের ‘আলিগড় নোড’-এর প্রগতি আমি সরেজমিনে দেখেছি। আলিগড়েই ডিফেন্স ম্যানুফ্যাকচারিং সংক্রান্ত দেড় ডজনেরও বেশি কোম্পানি কয়েক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের মাধ্যমে হাজার হাজার নতুন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে চলেছে। ‘আলিগড় নোড’-এ ছোট ছোট অস্ত্র, বড় অস্ত্রশস্ত্র, ড্রোন, এরোস্পেস, মেটাল কম্পোনেন্টস, অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেম, ডিফেন্স প্যাকেজিং – এই ধরনের পণ্য নির্মাণের জন্য নতুন নতুন কারখানা চালু হচ্ছে। এই পরিবর্তন আলিগড় এবং তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলিকে একটি নতুন পরিচয় দেবে।

বন্ধুগণ,

এতদিন পর্যন্ত মানুষ নিজেদের বাড়ি-ঘর, দোকানের নিরাপত্তার জন্য আলিগড়ের ভরসায় থাকতেন তাই না? কারণ আলিগড়ের তালা লাগানো থাকলে সবাই নিশ্চিন্ত থাকতে পারে। আজ আমার ছোটবেলার কথা মনে পড়ছে। প্রায় ৫৫-৬০ বছর আগে কথা। আমি ছোট ছিলাম। আলিগড় থেকে তালা বিক্রি করতে এক মুসলমান ভদ্রলোক আমাদের গ্রামে অতিথি হয়ে ছিলেন। তিনি তিন মাস পরপর আমাদের গ্রামে অতিথি হতেন। এখনও মনে পড়ে যে তাঁর পরনে থাকত কালো জ্যাকেট আর একজন বিক্রেতা হিসেবে তিনি সবার দোকানে নিজের তালা রেখে যেতেন আর তিন মাস পরে এসে টাকা নিয়ে যেতেন। গ্রামের চারপাশে যে গ্রামগুলি ছিল, সেখানকার ব্যবসায়ীদেরকেও তিনি তালা সরবরাহ করতেন। আমার বাবার সঙ্গে তাঁর খুব ভালো বন্ধুত্ব ছিল। তিনি যখনই আসতেন ৫-৬ দিন আমাদের গ্রামে থাকতেন আর সারাদিনে যত টাকা তুলতেন তা আমার বাবার কাছে রেখে যেতেন। বাবা তাঁর টাকা খুব সামলে রাখতেন। ৫-৬ দিন পর গ্রামে যাওয়ার আগে তিনি বাবার কাছ থেকে সব টাকা নিয়ে ফেরার ট্রেনে উঠে পড়তেন। আমরা ছোটবেলায় উত্তরপ্রদেশের দুটি শহরের সঙ্গে খুব পরিচিত ছিলাম। একটি হল সীতাপুর আর অন্যটি আলিগড়। আমাদের গ্রামে কারোর চোখের রোগ হলে চিকিৎসার জন্য সবাই সীতাপুরে যেতেন। এর বেশি কিছু বুঝতাম না। কিন্তু সবার মুখে সীতাপুর শুনেছি। আর এই মহাশয়ের কারণে বারবার আলিগড়ের নাম শুনেছি।

কিন্তু বন্ধুগণ,

এখন থেকে আলিগড় প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের জন্য পরিচিত হবে। আজ পর্যন্ত যে আলিগড়ের তালা দেশের অসংখ্য মানুষের বাড়ি ও দোকান নিরাপদ রাখত, একবিংশ শতাব্দীতে সেই আলিগড় ভারতের সীমান্ত রক্ষার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। এখানে এমন অস্ত্রশস্ত্র তৈরি হবে … ‘এক জেলা এক পণ্য’ প্রকল্পের মাধ্যমে উত্তরপ্রদেশ সরকার আলিগড়ের তালা এবং হার্ডওয়্যারকে একটি নতুন পরিচয় প্রদানের কাজ করেছে। এর মাধ্যমে যুব সম্প্রদায়ের জন্য অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগের জন্য নতুন সুযোগ গড়ে উঠছে। এখন প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম নির্মাণ শিল্পের মাধ্যমে এখানকার শিল্পপতিরা বিশেষ করে, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগীরা নতুন নতুন শিল্পোদ্যোগ স্থাপনের সুযোগ পাবেন, উৎসাহ পাবেন। এই ছোট শিল্পোদ্যোগীদের জন্য ডিফেন্স করিডরের ‘আলিগড় নোড’ অনেক নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে।

ভাই ও বোনেরা,

ডিফেন্স করিডরের ‘লক্ষ্ণৌ নোড’-এ বিশ্বের সবচাইতে উন্নত মিসাইলের অন্যতম ‘ব্রাহ্মস’ নির্মাণের প্রস্তাব রয়েছে। এর জন্য আগামী কয়েক বছরে ৯ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হচ্ছে। ‘ঝাঁসি নোড’-এও আরেকটি মিসাইল নির্মাণ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট চালু করার প্রস্তাব রয়েছে। উত্তরপ্রদেশ ডিফেন্স করিডর এরকম বড় বড় বিনিয়োগ এবং রোজগারের অনেক বড় বড় সুযোগ নিয়ে আসছে। 

বন্ধুগণ,

আজ উত্তরপ্রদেশ দেশ ও বিশ্বের প্রত্যেক ছোট-বড় বিনিয়োগকারীর জন্য অত্যন্ত আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে উঠছে। এটা তখনই হয় যখন বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় আবহ গড়ে ওঠে, সমস্ত প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়। আজ উত্তরপ্রদেশ ডবল ইঞ্জিন সরকারের ডবল লাভের অনেক বড় উদাহরণ। যোগীজি এবং তাঁর গোটা টিম ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস’-এর মন্ত্র নিয়ে উত্তরপ্রদেশকে নতুন ভূমিকা পালনের জন্য প্রস্তুত করে তুলছেন। এখন আপনাদের সকলের প্রচেষ্টায় একে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সমাজে উন্নয়নের সুযোগগুলি থেকে এতদিন যাঁদেরকে দূরে রাখা হয়েছিল, সমাজের সেই অংশগুলিকে আজ শিক্ষা ও সরকারি চাকরির সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। আজ দেশে বড় বড় পরিকাঠামো প্রকল্প এবং বড় বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় উত্তরপ্রদেশের নাম নেওয়া হয়। বিশেষ করে, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের মানুষ এর দ্বারা অনেক লাভবান হচ্ছেন। 

বৃহত্তর নয়ডায় ইন্টিগ্রেটেড ইন্ডাস্ট্রিয়াল টাউনশিপ গড়ে তোলা, মাল্টি-মডেল লজিস্টিক্স হাব, জেবার ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট, দিল্লি-মীরাট রিজিওনাল র‍্যাপিড ট্রানজিট সিস্টেম, উন্নত মেট্রো যোগাযোগ ব্যবস্থা, আধুনিক উড়ালপুল এবং এক্সপ্রেসওয়ে – এরকম অনেক কাজ আজ পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে হচ্ছে। উত্তরপ্রদেশে এত হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প গড়ে উঠছে যে আগামী বছরগুলিতে উত্তরপ্রদেশ ভারতের উন্নয়নের বড় ভিত্তি হয়ে উঠবে। 

ভাই ও বোনেরা,

আমি আজ এটা দেখে অত্যন্ত আনন্দিত, যে উত্তরপ্রদেশকে এতকাল দেশের উন্নয়নে একটি বড় বাধা রূপে দেখা হত, সেই রাজ্যটিই আজ দেশের বড় বড় উন্নয়ন অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছে। যেমন শৌচালয় নির্মাণ অভিযান, দরিদ্রদের জন্য পাকা বাড়ি নির্মাণ, উজ্জ্বলা যোজনার মাধ্যমে গরিবদের বাড়িতে রান্নার গ্যাস সংযোগ, মানুষের বাড়িতে বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ, পিএম কিষাণ সম্মান নিধি – এরকম প্রতিটি প্রকল্প, প্রত্যেক অভিযানে, যোগীজির নেতৃত্বে উত্তরপ্রদেশ দেশের লক্ষ্যসাধনের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। আমি সেদিনের কথা ভুলিনি। ২০১৭ সালের আগে এই রাজ্যে গরীবদের স্বার্থে নেওয়া প্রতিটি প্রকল্প বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে বাধা দেওয়া হত। এক একটি প্রকল্প চালু করার জন্য কেন্দ্র থেকে অসংখ্যবার চিঠি লেখা হয়েছে। কিন্তু এই রাজ্যে সেই গতিতে কাজ হত না। এটা আমি ২০১৭-র আগের কথা বলছি। যেমনটা হওয়া উচিৎ ছিল, তেমনটা হত না। 

বন্ধুগণ,

উত্তরপ্রদেশের মানুষ এটা ভুলতে পারেনি কিভাবে এ রাজ্যে দুর্নীতি হত। একের পর এক ঘোটালা হত। প্রতিটি সরকারি কাজ দুর্নীতিবাজদের হাতে চলে গিয়েছিল। আজ যোগীজির নেতৃত্বাধীন সরকার সম্পূর্ণ সততার সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের উন্নয়নে নিয়োজিত। একটা সময় ছিল যখন এ রাজ্যের শাসন, প্রশাসন গুন্ডা এবং মাফিয়াদের ইচ্ছায় চলত। কিন্তু এখন সেই তোলাবাজ, মাফিয়া রাজের ক্রীড়নকরা সবাই গরাদের পেছনে।

আমি পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের জনগণকে বিশেষভাবে মনে করাতে চাই, ৪-৫ বছর আগে আপনারা বাড়িতে কতটা ভয়ে ভয়ে থাকতেন। বোন ও মেয়েদের বাড়ি থেকে বেরোতে, স্কুল-কলেজে পাঠাতে ভয় করত। যতক্ষণ পর্যন্ত মেয়েরা বাড়িতে না ফিরে আসত, বাবা-মায়ের শ্বাস রুদ্ধ হয়ে থাকত। এমন আবহ থাকার ফলে অনেক পরিবারকে তাদের পারিবারিক বিষয়-সম্পত্তি ছেড়ে পালাতে হয়েছিল। আর আজ উত্তরপ্রদেশে এরকম কিছু করার আগে অপরাধীরা একশোবার চিন্তা করে।

যোগীজির সরকার গরীবের কথা শোনে, গরীবকে সম্মান করে। যোগীজির নেতৃত্বে উত্তরপ্রদেশের পরিবর্তিত কর্মসংস্কৃতির একটি বড় প্রমাণ – ‘সবাইকে টিকা, বিনামূল্যে টিকা’ অভিযান। উত্তরপ্রদেশ ইতিমধ্যেই ৮ কোটিরও বেশি টিকাকরণ করেছে। দেশে একদিনে সবচাইতে বেশি টিকাকরণের রেকর্ডও এই রাজ্যটির রয়েছে। করোনার এই সঙ্কটকালে গরীবদের রক্ষা করার চিন্তাই সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। কোনও গরীব যেন খালি পেটে না থাকে তা সুনিশ্চিত করতে মাসের পর মাস ধরে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য বিতরণ করা হচ্ছে। গরীবদের খিদে থেকে বাঁচানোর জন্য যে কাজ বিশ্বের অনেক অনেক বড় বড় দেশ করতে পারেনি, তা আজ ভারত করছে, আমাদের উত্তরপ্রদেশ করছে।

বন্ধুগণ,

স্বাধীনতার এই অমৃতকালে গ্রামীণ অর্থনীতিতে দ্রুত পরিবর্তন আসছে। পরিবর্তনের সঙ্গে কিভাবে ভারসাম্য রেখে চলতে হয় তার পথ কয়েক দশক আগেই দেশকে দেখিয়ে গেছেন স্বয়ং চৌধুরী চরণ সিং-জি। যে পথ চৌধুরী চরণ সিং-জি দেখিয়ে গেছেন, তা থেকে দেশের খেতমজুর এবং ছোট কৃষকরা কতটা লাভবান হয়েছেন তা আমরা সবাই জানি। আজকের অনেক প্রজন্ম সেই সংস্কারগুলির কারণে একটি গরিমাময় জীবনযাপন করতে পারছেন।

দেশের যে ছোট ছোট কৃষকদের চিন্তা চৌধুরী সাহেব করেছিলেন, তাঁর সঙ্গে সরকার সহযোগী হিসেবে পাশে থাকার প্রয়োজন ছিল। আমাদের দেশে ৮০ শতাংশেরও বেশি ছোট কৃষকের দুই হেক্টর থেকেও কম জমি রয়েছে। অর্থাৎ, দেশের প্রতি ১০ জন কৃষকের মধ্যে ৮ জনের অত্যন্ত ছোট জমির মালিকানা রয়েছে। সেজন্য কেন্দ্রীয় সরকার এমন উদ্যোগ নিয়েছে যাতে ছোট জমির মালিক কৃষকদের সুবিধা হয়। দেড়গুণ ন্যূনতম সহায়ক মূল্য প্রদান থেকে শুরু করে কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের পরিধি বিস্তার, বিমা যোজনায় সংস্কার, ৩ হাজার টাকা পেনশনের ব্যবস্থা – এরকম সিদ্ধান্ত ক্ষুদ্র কৃষকদের ক্ষমতায়িত করছে। 

করোনার এই কঠিন সময়ে সারা দেশে ছোট কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরকার ইতিমধ্যেই ১ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি প্রত্যক্ষ হস্তান্তর করেছে। এর মধ্যে ২৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি শুধু উত্তরপ্রদেশের কৃষকরা পেয়েছেন। আমি এজন্য অত্যন্ত আনন্দিত যে উত্তরপ্রদেশে বিগত চার বছরে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ক্রয়ের নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে। আখ বিক্রি নিয়ে যে সমস্যা হত, ক্রমাগত প্রচেষ্টায় তাও অনেকটা লাঘব করা গেছে। বিগত চার বছরে উত্তরপ্রদেশের আখ চাষিদের কাছ থেকে ১ লক্ষ ৪০ হাজার কোটি টাকারও বেশি আখ কেনা হয়েছে। আগামী বছর উত্তরপ্রদেশের আখ চাষিদের জন্য নতুন নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলতে চলেছে। আখ থেকে যে ইথানল তৈরি হয়, যে জৈব জ্বালানি তৈরি হয়, জ্বালানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে তার প্রয়োগ বাড়ানো হচ্ছে। এই প্রকল্পের ফলে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের আখ চাষিরাও অনেক লাভবান হবেন। 

বন্ধুগণ,

আলিগড় সহ গোটা পশ্চিম উত্তরপ্রদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে যোগীজির নেতৃত্বাধীন সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকার কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দিন-রাত পরিশ্রম করছে। আমরা মিলেমিশে এই অঞ্চলকে আরও সমৃদ্ধ করব। এখানকার ছেলে-মেয়েদের সামর্থ্যকে আরও বাড়াব আর উন্নয়ন-বিরোধী প্রতিটি শক্তির হাত থেকে উত্তরপ্রদেশকে রক্ষা করব। রাজা মহেন্দ্র প্রতাপ সিং-জির মতো রাষ্ট্র-নায়কদের প্রেরণা থেকে আমরা সমস্ত লক্ষ্যে সাফল্য পাব। এই কামনা নিয়ে আপনাদের সকলকে এত বিপুল সংখ্যায় আশীর্বাদ প্রদানের জন্য সম্মিলিত হওয়ায় ধন্যবাদ জানাই। আপনাদের সবাইকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে - সেজন্য কৃতজ্ঞতা জানাই, অনেক অনেক শুভকামনা জানাই!

দু’হাত ওপরে তুলে আমার সঙ্গে বলুন – আমি বলব, রাজা মহেন্দ্র প্রতাপ সিং! আপনারা দু’হাত ওপরে তুলে বলবেন – অমর রহে, অমর রহে!

রাজা মহেন্দ্র প্রতাপ সিং
অমর রহে, অমর রহে!
রাজা মহেন্দ্র প্রতাপ সিং
অমর রহে, অমর রহে।
রাজা মহেন্দ্র প্রতাপ সিং
অমর রহে, অমর রহে।
ভারত মাতার
জয়।
ভারত মাতার
জয়।

অনেক অনেক ধন্যবাদ!!

 

Explore More
৭৬তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর জাতির উদ্দেশে ভাষণের বঙ্গানুবাদ

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৬তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর জাতির উদ্দেশে ভাষণের বঙ্গানুবাদ
What is the ‘Call Before u Dig’ application launched by PM Modi?

Media Coverage

What is the ‘Call Before u Dig’ application launched by PM Modi?
...

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM to visit Karnataka on 25th March
March 23, 2023
শেয়ার
 
Comments
PM to inaugurate Sri Madhusudan Sai Institute of Medical Sciences and Research at Chikkaballapur
PM to inaugurate Whitefield (Kadugodi) to Krishnarajapura Metro Line of Bangalore Metro
Metro line will further enhance ease of mobility and reduce traffic congestion in the city

Prime Minister Shri Narendra Modi will visit Karnataka on 25th March, 2023. At around 10:45 AM, Prime Minister will inaugurate Sri Madhusudan Sai Institute of Medical Sciences and Research at Chikkaballapur. At around 1 PM, Prime Minister will inaugurate Whitefield (Kadugodi) to Krishnarajapura Metro Line of Bangalore Metro and also undertake a ride in the metro.

PM at Chikkaballapur

In an initiative that will help students to avail new opportunities and provide accessible and affordable healthcare in this region, Prime Minister will inaugurate Sri Madhusudan Sai Institute of Medical Sciences and Research (SMSIMSR). It has been established by Sri Sathya Sai University for Human Excellence at Sathya Sai Grama, Muddenahalli, Chikkaballapur. Situated in a rural area and established with a vision of de-commercialising medical education and healthcare, SMSIMSR will provide medical education and quality medical care - completely free of cost - to all. The institute will start functioning from the academic year 2023.

PM at Bengaluru

Prime Minister has had a special focus on the development of world class urban mobility infrastructure across the country. In line with this, the 13.71 km stretch from Whitefield (Kadugodi) Metro to Krishnarajapura Metro Line of Reach-1 extension project under Bangalore Metro Phase 2, will be inaugurated by the Prime Minister at Whitefield (Kadugodi) Metro Station. Built at a cost of around Rs 4250 crores, the inauguration of this metro line will provide a clean, safe, rapid and comfortable travel facility to commuters in Bengaluru, enhancing ease of mobility and reducing traffic congestion in the city.