শেয়ার
 
Comments

1. উগান্ডা সাধারণতন্ত্রের মাননীয় প্রেসিডেন্ট ইওয়েরি মুসেভেনির আমন্ত্রণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ২৪ ও ২৫শে জুলাই সরকারি সফর করেন। ভারত সরকারের পদস্থ আধিকারিকদের এক উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল এবং বিরাট সংখ্যক বাণিজ্য প্রতিনিধিরা ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী। গত ২১ বছরে এটাই ছিল কোন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রথম উগান্ডা সফর।

2. প্রধানমন্ত্রী সেখানে পৌঁছনোর পর তাঁকে আন্তরিকভাবে স্বাগত ও অভ্যর্থনা জানানো হয়। প্রেসিডেন্ট মুসেভেনির সঙ্গে ২৪ জুলাই এনটিবি-র স্টেট হাউজে এক দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় মিলিত হন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। সফররত ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে এক রাষ্ট্রীয় ভোজসভারও আয়োজন করেন প্রেসিডেন্ট মুসেভেনি।

3. উগান্ডা সংসদে প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদীর ভাষণ ভারত সহ আফ্রিকার বিভিন্ন দেশগুলিতে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। এই প্রথম একজন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী উগান্ডার সংসদে ভাষণ দিলেন। উগান্ডার বেসরকারি ক্ষেত্রের এক বিশেষ প্রতিষ্ঠান পিএসএফইউ এবং ভারতীয় শিল্প সংস্থাগুলির কনফেডারেশন সিআইআই-এর উদ্যোগে আয়োজিত এক বাণিজ্য সম্মেলনেও বক্তব্য রাখেন দুই রাষ্ট্রপ্রধান। এই সফর উপলক্ষে উগান্ডায় বসবাসকারী ভারতীয় সম্প্রদায়ের এক বিশাল সমাবেশেও ভাষণ দেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী।

4. দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে আলোচনাকালে ভারত ও উগান্ডার মধ্যে পরম্পরাগতভাবে চলে আসা উষ্ণ ও নিবিড় সম্পর্কের বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং প্রেসিডেন্ট মুসেভেনি। তাঁরা দু’জনেই স্বীকার করেন যে এই দুটি দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক খুবই সম্ভাবনাময়। এই পরিস্থিতিতে ভারত ও উগান্ডার মধ্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক, প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত, প্রযুক্তিগত, শিক্ষানৈতিক, বৈজ্ঞানিক এবং সাংস্কৃতিক সহযোগিতাকে আরও শক্তিশালী করে তোলার সপক্ষে সম্মতি জানান তাঁরা। উগান্ডার জাতীয় বিকাশ ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে ভারতীয় সম্প্রদায়ের প্রায় ৩০ হাজার সদস্যের বিশেষ অবদানের প্রশংসা করেন প্রেসিডেন্ট মুসেভেনি। অন্যদিকে, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে অর্থনৈতিক সংহতি এবং শান্তিরক্ষার কাজে উগান্ডার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার সপ্রশংস উল্লেখ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

5. আলোচনার সূত্র ধরে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে যে বিষয়গুলি বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয় তার মধ্যে রয়েছে :

বর্তমান দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার কাজ ও সাফল্যের ওপর ভিত্তি করে তা আরও জোরদার করে তোলার জন্য পুনর্অঙ্গীকার; দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের প্রসার; দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের বর্তমান প্রবণতাকে লক্ষ্য করে বাণিজ্য প্রচেষ্টার বৈচিত্র্যকরণ; বাণিজ্যিক ভারসাম্যহীনতা দূর করা; পারস্পরিক বাণিজ্যিক সম্পর্কের প্রসার ও সম্ভাবনার দিকে লক্ষ্য রেখে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে বেসরকারি বিনিয়োগকে উৎসাহদান; ভারতের কারিগরি তথা অর্থনৈতিক সহযোগিতা (আইটেক), ভারত-আফ্রিকা ফোরাম শীর্ষ বৈঠক (আইএএফএস), ভারতীয় সাংস্কৃতিক সম্পর্ক পরিষদ (আইসিসিআর) ইত্যাদির আওতায় যে বৃত্তি ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা চালু রয়েছে তার সপ্রশংস উল্লেখ ও স্বীকৃতি; প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়গুলিতে বিশেষত ভারতীয় কারিগরি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন ভারতীয় সেনা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে উগান্ডার প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রশিক্ষণ এবং কিমাকায় উগান্ডার সিনিয়র কম্যান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ (এসসিএসসি)-এ ভারতীয় সেনা প্রশিক্ষণ টিমের নিয়োগ ও উপস্থিতিতে সন্তোষ প্রকাশ; তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ভারত-উগান্ডা সহযোগিতা প্রচেষ্টাকে সমর্থনজ্ঞাপন; মূল সরকারি পরিকাঠামো প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে ভারতের উদ্যোগ ও পদক্ষেপকে অনুসরণ ইত্যাদি।

6. দুই রাষ্ট্রপ্রধানই স্বীকার করেন যে বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষার ক্ষেত্রে সন্ত্রাস এক বিরাট হুমকি ও চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে যে কোন ধরণের সন্ত্রাস ও তার বহিঃপ্রকাশের কঠোর মোকাবিলায় দৃঢ় অঙ্গীকারের কথা পুনরুচ্চারণ করেন তাঁরা। সন্ত্রাসমূলক কাজকর্মের পিছনে কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকতে পারে না বলে দৃঢ়তার সঙ্গে ঘোষণা করেন শ্রী মোদী এবং মিঃ মুসেভেনি।

7. দুই নেতাই বিশেষ জোর দিয়ে বলেন যে সন্ত্রাসবাদী, সন্ত্রাসবাদী সংগঠন, সেগুলির নেটওয়ার্ক এবং সন্ত্রাসকে যারা কোন না কোনভাবে সাহায্য, সমর্থন ও মদত যুগিয়ে যাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিৎ। সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলি যাতে কোনরকম ডব্ল্যুএমডি বা প্রযুক্তি অবলম্বন করে সন্ত্রাসের জাল ছড়াতে না পারে তা নিশ্চিত করার ওপরও জোর দেন প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং প্রেসিডেন্ট মুসেভেনি। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস দমন সম্পর্কে আয়োজিত এক বিশেষ সম্মেলনে (সিসিআইটি) গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুসরণ করে পারস্পরিক সহযোগিতার বাতাবরণকে আরও দৃঢ় করে তোলার আহ্বান জানান তাঁরা।

8. আঞ্চলিক তথা আন্তর্জাতিক উদ্বেগ ও স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে সহযোগিতাকে আরও নিবিড় করে তোলার প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্ব দেন দুই বিশ্ব নেতা।

9. আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার ও সম্প্রসারণ প্রচেষ্টার গুরুত্বের ওপরও জোর দেন শ্রী মোদী এবং মিঃ মুসেভেনি। রাষ্ট্রসঙ্ঘকে একুশ শতকের ভৌগোলিক তথা রাজনৈতিক চাহিদা ও বাস্তবতার উপযোগী করে তুলতে তাকে আরও বেশি মাত্রায় প্রতিনিধিত্বমূলক, দায়বদ্ধ ও কার্যকর করে তোলার সপক্ষে বক্তব্য রাখেন তাঁরা। রাষ্ট্রসঙ্ঘ সহ অন্যান্য বহুপক্ষীয় আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলিতে পারস্পরিক সহযোগিতার মাত্রাকে আরও গভীরে নিয়ে যেতে দুই নেতাই তাঁদের প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকারের পুনরুচ্চারণ করেন। জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা এবং আঞ্চলিক তথা আন্তর্জাতিক শান্তি ও সুরক্ষার স্বার্থে এই পদক্ষেপ বিশেষ জরুরি বলে তাঁরা মনে করেন।

10. বৈদেশিক তথা বিদেশ মন্ত্রী পর্যায়ে নিয়মিত দ্বিপাক্ষিক আলাপ-আলোচনার প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্ব দেওয়া হয় দুই নেতার বৈঠকে। তাঁদের মতে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সার্বিক পর্যালোচনা এবং অর্থনৈতিক তথা উন্নয়ন সহযোগিতার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্পের দ্রুত রূপায়ণের স্বার্থেই তা একান্ত জরুরি।

11. ভারতের প্রধানমন্ত্রীর উগান্ডা সফরকালে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, সরকারি তথা কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের ভিসার বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্তি, সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচি এবং পরীক্ষানিরীক্ষা সম্পর্কিত গবেষণাগার স্থাপনের বিষয়ে কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় দু’দেশের মধ্যে।

12. সমঝোতাপত্র সম্পাদনের সিদ্ধান্তের বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়ে দুই নেতাই বর্তমান চুক্তি ও মউগুলির বাস্তবায়নকে নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্ট কর্মী ও আধিকারিকদের।

13. উগান্ডায় বৈদ্যুতিক লাইন ও সাব-স্টেশন তৈরির জন্য ১৪১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ঐ দেশে কৃষি ও দুগ্ধোৎপাদন ক্ষেত্রে ৬৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ সহায়তার কথা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। জিনজায় মহাত্মা গান্ধীর স্মরণে একটি ঐতিহ্যকেন্দ্র গড়ে তোলার কথাও ঘোষণা করেন তিনি। এছাড়াও, বর্তমানে উগান্ডার নেতৃত্বে গঠিত পূর্ব আফ্রিকা গোষ্ঠী (ইএসি)-র অনুকূলে দক্ষতা বৃদ্ধি ও পরিকাঠামো গঠনে ৯২৯,৭০৫ মার্কিন ডলার অর্থ সহায়তা; দুগ্ধোৎপাদন ক্ষেত্রে সহযোগিতা প্রসারের লক্ষ্যে আইটেক কর্মসূচির আওতায় ২৫টির মতো প্রশিক্ষণ কার্যক্রম; উগান্ডার প্রতিরক্ষা বাহিনী (ইউপিডিএফ) এবং অসামরিক কাজে ব্যবহারের জন্য ভারতের পক্ষ থেকে মোট ৮৮টি গাড়ি উপহার; ক্যান্সার নির্মূলকরণে উগান্ডার প্রচেষ্টাকে সাহায্য ও সমর্থনের লক্ষ্যে ভাবাট্রন ক্যান্সার থেরাপি মেশিন উপহার; ঐ দেশের স্কুল ছাত্রছাত্রীদের ১ লক্ষ কপি এনসিইআরটি-র পুস্তক এবং উগান্ডার কৃষি বিকাশ প্রচেষ্টায় সাহায্যকল্পে ১০০টির মতো সৌরবিদ্যুৎচালিত জলসেচ পাম্প উপহার দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

14. প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর এই ঘোষণাকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানান মিঃ ইওয়েরি মুসেভেনি। তিনি বলেন, শ্রী মোদীর এই ঘোষণা দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ককে আরও গভীর ও নিবিড় করে তুলতে বিশেষভাবে সাহায্য করবে।

15. উগান্ডায় অবস্থানকালে তাঁকে এবং তাঁর প্রতিনিধিদলকে উষ্ণ আতিথ্য ও আতিথেয়তা দানের জন্য প্রেসিডেন্ট ইওয়েরি মুসেভেনিকে ধন্যবাদ জানান শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি উগান্ডার রাষ্ট্রপ্রধানকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানালে মিঃ মুসেভেনি তা সানন্দেই গ্রহণ করেন। কূটনৈতিক পর্যায়ে আলাপ-আলোচনার পর তাঁর এই সফরসূচি স্থির হবে বলে জানানো হয়।

Explore More
৭৬তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর জাতির উদ্দেশে ভাষণের বঙ্গানুবাদ

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৬তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর জাতির উদ্দেশে ভাষণের বঙ্গানুবাদ
Opinion: Modi government has made ground-breaking progress in the healthcare sector

Media Coverage

Opinion: Modi government has made ground-breaking progress in the healthcare sector
...

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM meets makers of award winning documentary short film ‘The Elephant Whisperers’
March 30, 2023
শেয়ার
 
Comments

The Prime Minister, Shri Narendra Modi has met the makers of Oscar winning documentary short film ‘The Elephant Whisperers’.

The Prime Minister tweeted;

“The cinematic brilliance and success of ‘The Elephant Whisperers’ has drawn global attention as well as acclaim. Today, I had the opportunity to meet the brilliant team associated with it. They have made India very proud.”