Quoteপ্রধানমন্ত্রী সর্দার প্যাটেলের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন, যিনি দেশের প্রাচীন গৌরবের পুনর্জাগরণের জন্য অদম্য ইচ্ছাশক্তি দেখিয়েছিলেন
Quoteপ্রধানমন্ত্রী লোকমাতা অহল্যাবাঈ হোলকারকেও স্মরণ করেন, যিনি বিশ্বনাথ থেকে সোমনাথ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি মন্দির সংস্কার করেছিলেন
Quoteএটি প্রত্যেক সময়ের দাবি ছিল যে, আমরা ধর্মীয় পর্যটনে নতুন সম্ভাবনার দিক অনুসন্ধান করি এবং তীর্থযাত্রা ও স্থানীয় অর্থনীতির মধ্যে সম্পর্ককে জোরদার করে তুলি: প্রধানমন্ত্রী
Quoteধ্বংসাত্মক শক্তি যে চিন্তাধারা নিয়ে সন্ত্রাসের ভিত্তিতে সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে তা সাময়িকভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারে কিন্তু এর অস্তিত্ব কখনই স্থায়ী হয়না, এটি দীর্ঘকাল মানবতাকে দমন করতে পারেনা। এটি সত্য যে কিছু আক্রমণকারী সোমনাথকে ধ্বংস করেছিল, এটা আজও সমানভাবে সত্য বিশ্ব এখনও এই ধরণের মতাদর্শ নিয়ে শঙ্কিত: প্রধানমন্ত্রী
Quoteদেশ কঠিন সমস্যার সমাধানের পথে এগিয়ে চলেছে। আধুনিক ভারতের গৌরবের একটি উজ্জ্বল স্তম্ভ হিসেবে রাম মন্দির উঠে আসছে: প্রধানমন্ত্রী
Quoteআমাদের জন্য ইতিহাস এবং বিশ্বাসের সারমর্ম হল সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস এবং সবকা প্রয়াস: প্রধানমন্ত্রী
Quoteআমাদের ৪টি ধাম, শক্তিপিঠের ধারণা, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন তীর্থযাত্রার প্রতিষ্ঠা, আমদের বিশ্বাসের এই রূপরেখা আসলে এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারতেরই চেতনার বহিপ্রকাশ: প্রধানমন্ত্রী
Quoteআধুনিক পরিকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে দেশ প্রাচীন গৌরবকে পুনরুজ্জীবিত করছে: প্রধানমন্ত্রী

জয় সোমনাথ! অনুষ্ঠানে আমার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন সর্বজনশ্রদ্ধেয় লালকৃষ্ণ আদবানীজি, দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী শ্রী অমিত শাহজি, শ্রীপদ নায়িকজি, অজয় ভট্টজি, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিজয় রুপানিজি, উপ-মুখ্যমন্ত্রী নীতিনভাই, গুজরাট সরকারের পর্যটন মন্ত্রী জওহরজি, ওয়াসনভাই, আমার লোকসভার সহকর্মী রাজেশভাই, সোমনাথ মন্দির ট্রাস্টের ট্রাস্টি শ্রী প্রবীণ লাহিড়ীজি, সকল শ্রদ্ধালু, ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ!

আমি এই পবিত্র অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হচ্ছি। কিন্তু মনের মধ্যে নিজেকে ভগবান শ্রী সোমনাথের চরণেই অনুভব করছি। আমার সৌভাগ্য যে সোমনাথ মন্দির ট্রাস্টের অধ্যক্ষ রূপে দীর্ঘকাল এই পূণ্যস্থানের সেবা করার সুযোগ পাচ্ছি। আজ আরেকবার আমরা সবাই এই পবিত্র তীর্থের কায়াকল্পের সাক্ষী হয়ে উঠছি। আজ আমার সমুদ্র দর্শন পথ, সোমনাথ প্রদর্শন গ্যালারি এবং পুনরুদ্ধারের পর নতুন রূপে জুনা সোমনাথ মন্দির উদ্বোধনের সৌভাগ্য হয়েছে। পাশাপাশি, আজ পার্বতীমাতা মন্দিরেরও শিলান্যাস হয়েছে। এত পবিত্র সংযোগ, তার সঙ্গে পবিত্র শ্রাবণ মাস, আমি মনে করি, এটা আমাদের সকলের জন্য ভগবান সোমনাথজির আশীর্বাদেরই ফসল। আমি এই অবসরে আপনাদের সবাইকে, ট্রাস্টের সমস্ত সদস্যদের এবং দেশ-বিদেশে ভগবান সোমনাথজির কোটি কোটি ভক্তজনেদের শুভকামনা জানাই। বিশেষ করে, আজ আমি লৌহপুরুষ সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলজির চরণে প্রণাম জানাই যিনি ভারতের প্রাচীন গৌরবকে পুনরুজ্জীবিত করার ইচ্ছাশক্তি দেখিয়েছিলেন। সর্দার সাহেব, সোমনাথ মন্দিরকে স্বতন্ত্র ভারতের স্বতন্ত্র ভাবনার সঙ্গে যুক্ত বলে মনে করতেন। এটা আমার সৌভাগ্য যে আজ স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষে, স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবের সময় আমরা যখন সর্দার সাহেবের প্রচেষ্টাগুলিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, সোমনাথ মন্দিরকেও নতুন রূপ প্রদান করছি। আজ আমি লোকমাতা অহিল্যাবাঈ হোলকরকেও প্রণাম জানাই - যিনি বিশ্বনাথ থেকে শুরু করে সোমনাথ পর্যন্ত না জানি কত মন্দিরকে পুনর্নিমাণ করিয়েছিলেন। প্রাচীনতা এবং আধুনিকতার যে সঙ্গম তাঁর জীবনে ছিল, আজ দেশ তাকে আদর্শ মনে করে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

বন্ধুগণ,

স্ট্যাচু অফ ইউনিটি থেকে শুরু করে কচ্ছ-এর কায়াকল্প পর্যন্ত পর্যটনের সঙ্গে আধুনিকতা যুক্ত হওয়ায় কিরকম পরিণাম এসেছে গুজরাট তা খুব কাছ থেকে দেখেছে। এসব সময়ের চাহিদা ছিল যে আমরা যেন ধার্মিক পর্যটনের লক্ষ্যেও নতুন সম্ভাবনাগুলি খুঁজে বের করি। স্থানীয় অর্থনীতির সঙ্গে তীর্থযাত্রার যে সম্পর্ক যুগ যুগ ধরে রয়েছে, তাকে আরও শক্তিশালী করি। যেমন, সোমনাথ মন্দির এতদিন পর্যন্ত গোটা দেশ এবং বিশ্বের শ্রদ্ধালুরা দর্শন করতে আসতেন। কিন্তু এখন এখানে সমুদ্র দর্শন পথ, প্রদর্শনী, পিলগ্রিম প্লাজা এবং শপিং কমপ্লেক্সও পর্যটকদের আকর্ষণ করবে। এখন এখানে যত শ্রদ্ধালু আসবেন তাঁদের কাছে জুনা সোমনাথ মন্দিরের দর্শনও একটা আকর্ষণের বিষয় হয়ে উঠবে। তাঁরা নতুন পার্বতী মন্দিরও দর্শন করতে যাবেন। কিন্তু এখন যেখানে সমুদ্র দর্শন পথ, প্রদর্শনী, পিলগ্রিম প্লাজা এবং শপিং কমপ্লেক্সও পর্যটকদের আকর্ষিত করবে। এর ফলে এখানে নতুন সুযোগ এবং নতুন কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হবে আর এই স্থানের মাহাত্ম্যও বৃদ্ধি পাবে। শুধু তাই নয়, ‘প্রোমনেড’-এর মতো নির্মাণ সমুদ্র কিনারে দাঁড়িয়ে থাকা মন্দিরের নিরাপত্তাও বাড়াবে। আজ এখানে সোমনাথ একজিবিশন গ্যালারির উদ্বোধনও হয়েছে। এর ফলে আমাদের নব যুবক-যুবতীরা, আমাদের আগামী প্রজন্ম সেই ইতিহাসের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার, আমাদের আস্থার প্রাচীন স্বরূপকে দেখার, তাকে বোঝার একটা সুযোগও পাবে।

বন্ধুগণ,

সোমনাথ তো শত শত বছর ধরে সদাশিবের ভূমি ছিল আর আমাদের শাস্ত্রেও বলা হয়েছে

– ‘শং করোতি সঃ শঙ্করঃ’!

অর্থাৎ, যিনি কল্যাণকে, যিনি সিদ্ধিকে প্রদান করেন - তিনিই শিব। এই শিবই বিনাশের মধ্যেও সৃষ্টির বীজকে অঙ্কুরিত করেন, সংহারের মধ্যেও সৃজনের জন্ম দেন। সেজন্য শিব অবিনাশী, অব্যক্ত, অনাদি আর সেজন্য শিবকে অনাদি যোগী বলা হয়েছে। সেজন্য শিবের ওপর আমাদের আস্থা আমাদের সমস্ত সীমার ঊর্ধ্বে অস্তিত্বের বোধ অনুভূত করায়, আমাদের সময়ের প্রতিস্পর্ধাগুলির সঙ্গে মোকাবিলার শক্তি যোগায় আর সোমনাথের এই মন্দির আমাদের এই আত্মবিশ্বাসেরও একটি প্রেরণা স্থল।

|

বন্ধুগণ,

আজ বিশ্বের যে কোনও ব্যক্তি এই অসাধারণ সৃষ্টিকে যখন দেখেন, তখন তাঁরা শুধুই একটি মন্দির হিসেবে দেখেন না, তাঁরা এটাকে একটি অস্তিত্ব হিসেবে দেখেন যা শত শত, হাজার হাজার বছরের প্রেরণার উৎস, যা মানবতার মূল্যবোধকে ঘোষণা করছে। একটি এমন স্থল যাকে হাজার হাজার বছর আগে আমাদের ঋষি-মুনিরা প্রভাস ক্ষেত্র বলতেন, অর্থাৎ আলোকের স্থান, জ্ঞানের স্থান আর আজও গোটা বিশ্বের প্রতি এটি আহ্বান করছে যে সত্যকে অসত্যের মাধ্যমে হারানো যায় না, আস্থাকে সন্ত্রাসের মাধ্যমে পদদলিত করা যায় না। এই মন্দিরকে হাজার হাজার বছরের ইতিহাসে কতবার যে ভাঙা হয়েছে, এখানকার মূর্তিগুলিকে বারবার ভাঙা হয়েছে, এর অস্তিত্ব মিটিয়ে দেওয়ার সবরকম চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু একে যতবার ভাঙা হয়েছে, এটি ততবারই উঠে দাঁড়িয়েছে। সেজন্য ভগবান সোমনাথ মন্দির আজ শুধু ভারতের নয়, গোটা বিশ্বের জন্য একটি বিশ্বাস এবং একটি আশ্বাসের প্রতীক যা বিধ্বংসী শক্তিদের, সন্ত্রাসের মাধ্যমে সাম্রাজ্য স্থাপনকারী ভাবনা, তা সে যে সময়েই হোক না কেন, কিছু সময়ের জন্য প্রবল হয়ে উঠতে পারে কিন্তু, তার অস্তিত্ব কখনও স্থায়ী হতে পারে না। বেশিদিন তারা মানবতাকে দাবিয়ে রাখতে পারে না। একথা তখন যতটা সত্য ছিল, যখন কিছু আততায়ী সোমনাথ মন্দিরকে ভেঙে ফেলছিল, ততটাই আজও সত্য যখন বিশ্ব এ ধরনের সন্ত্রাসবাদীদের ভাবনাচিন্তার ফলে আশঙ্কিত।

বন্ধুগণ,

আমরা সবাই জানি, সোমনাথ মন্দিরের পুনর্নিমাণ নিয়ে অসাধারণ উন্নয়নের এই যাত্রা শুধু কয়েক বছরের কিংবা কয়েক দশকের পরিণাম নয়, এটি কয়েক শতাব্দীর দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি এবং নিরন্তর ভাবনাচিন্তার পরিণাম। রাজেন্দ্র প্রসাদজি, সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল এবং কে এম মুন্সির মতো মহান মনীষীরা এই অভিযানে সামিল হয়ে স্বাধীনতার পরেও অনেক প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়েছেন। কিন্তু অবশেষে ১৯৫০-এ সোমনাথ মন্দির আধুনিক ভারতের দিব্য স্তম্ভ রূপে স্থাপিত হয়েছিল। অনেক প্রতিকূলতার সৌহার্দ্র্যপূর্ণ সমাধানের দায়বদ্ধতা নিয়ে আজ দেশ আরও এগিয়ে চলেছে। আজ অযোধ্যায় রাম মন্দির রূপে নতুন ভারতের গর্বের একটি আলোকজ্জ্বল স্তম্ভও গড়ে উঠছে।

|

বন্ধুগণ,

আমাদের ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে বর্তমানকে শুধরানো, একটি নতুন ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার মনোভাব থাকা উচিৎ। সেজন্য আমি যখন ‘ভারত জোড়ো আন্দোলন’ -এর কথা বলি তখন তার গুঢ়ার্থ শুধুই ভৌগোলিক বা দার্শনিক সংযুক্তির সীমায় আবদ্ধ থাকে না, এই আহ্বান ভবিষ্যতের ভারত গড়ে তোলার জন্য, আমাদের অতীতের সঙ্গে যুক্ত করার সঙ্কল্পও। এই আত্মবিশ্বাস নিয়ে আমরা অতীতের ভগ্নাবশেষের ওপর আধুনিক গৌরব নির্মাণ করেছি, অতীতের প্রেরণাগুলিকে সঞ্জীবিত করেছি। যখন রাজেন্দ্র প্রসাদজি সোমনাথ এসেছিলেন, তখন তিনি যা বলেছিলেন তা আমাদের সর্বদাই মনে রাখতে হবে। তিনি বলেছিলেন, “অনেক শতাব্দী আগে ভারত সোনা এবং রূপোর ভাণ্ডার ছিল। বিশ্বের স্বর্ণ ভাণ্ডারের বড় অংশ তখন ভারতের মন্দিরগুলিতে থাকত। আমার দৃষ্টিতে সোমনাথের পুনর্নিমাণ সেদিনই পূর্ণ হবে যেদিন এর ভিত্তিতে বিশাল মন্দিরের পাশাপাশি সমৃদ্ধ এবং সম্পন্ন ভারতের অনিন্দ্যসুন্দর ভবনও তৈরি হবে। সমৃদ্ধ ভারতের সেই ভবন যার প্রতীক সোমনাথ মন্দির হবে” – আমাদের প্রথম রাষ্ট্রপতি ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদজির এই স্বপ্ন আমাদের সকলের জন্য অনেক বড় প্রেরণা।

বন্ধুগণ,

আমাদের জন্য ইতিহাস আর আস্থার মূল মন্ত্র হল –

‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস, অউর সবকা প্রয়াস’

আমাদের দেশে যে দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গ স্থাপন করা হয়েছিল, তার সূত্রপাত ‘সৌরাষ্ট্রে সোমনাথম’ অর্থাৎ, সোমনাথ মন্দির থেকেই হয়েছিল। পশ্চিমে সোমনাথ আর নাগেশ্বর থেকে শুরু করে পূর্বে বৈদ্যনাথ পর্যন্ত, উত্তরে বাবা কেদারনাথ থেকে শুরু করে দক্ষিণে ভারতের শেষ প্রান্তে বিরাজমান শ্রী রামেশ্বর পর্যন্ত – এই ১২টি জ্যোতির্লিঙ্গ নিজের মতো করে গোটা ভারতকে একসূত্রে গাঁথার কাজ করে। এভাবে আমাদের চারধামের ব্যবস্থা, আমাদের ৫৬টি শক্তিপীঠের কল্পনা, আমাদের ভিন্ন ভিন্ন প্রান্তে ভিন্ন ভিন্ন তীর্থের উপস্থিতি, আমাদের আস্থার এই রূপরেখা বাস্তবে ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর ভাবনারই অভিব্যক্তি। শত শত বছর ধরে বিশ্ববাসী এত বৈচিত্র্যের মধ্যেও ভারত কিভাবে ঐক্যবদ্ধ, ভারত কিভাবে এক তা দেখে আশ্চর্য হয়ে এসেছেন। কিন্তু এখন আপনারা যখন পূর্ব থেকে হাজার হাজার কিলোমিটার যাত্রা করে পশ্চিমে সোমনাথ মন্দির দর্শন করতে আসা শ্রদ্ধালু মানুষদের দেখেন, কিংবা দক্ষিণ ভারতের হাজার হাজার ভক্তদের কাশীর মাটিতে কপাল ঠেকাতে দেখেন, তখন আপনাদের এই অনুভব হবে যে ভারতের শক্তি কেমন! আমরা পরস্পরের ভাষা হয়তো বুঝি না, বেশভূষাও আলাদা হয়, খাদ্যাভ্যাস আলাদা হয়, কিন্তু আমাদের অনুভূতি বলে দেয় যে আমরা সবাই এক। আমাদের এই আধ্যাত্মিকতা অনেক শতাব্দী ধরে ভারতকে ঐক্যসূত্রে গাঁথার, পারস্পরিক ভাবনা আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, আর আমাদের দায়িত্ব একে নিরন্তর আরও মজবুত করতে থাকা।

বন্ধুগণ,

আজ গোটা বিশ্ব ভারতের যোগ, দর্শন, আধ্যাত্ম ও সংস্কৃতির প্রতি আকর্ষিত হচ্ছে। আমাদের নতুন প্রজন্মের মধ্যেও এখন তাদের শিকড়ের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার নতুন চেতনা জাগ্রত হয়েছে। সেজন্য আমাদের পর্যটন আর আধ্যাত্মিক পর্যটনের ক্ষেত্রে আজ জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সম্ভাবনা রয়েছে। এই সম্ভাবনাগুলিকে বাস্তবায়িত করার জন্য আজ দেশ আধুনিক পরিকাঠামো গড়ে তুলতে প্রাচীন গৌরবগুলিকে পুনরুদ্ধার করছে। রামায়ণ সার্কিটের উদাহরণ আমাদের সামনে রয়েছে। আজ দেশ বিশ্বের অসংখ্য রাম ভক্তদের রামায়ণ সার্কিটের মাধ্যমে ভগবান রামের জীবনের সঙ্গে যুক্ত নতুন নতুন স্থান সম্পর্কে বিশদ তথ্য প্রদান করছে। ভগবান রাম কিভাবে গোটা ভারতের রাম এই স্থানগুলিতে গিয়ে অনুভব করার সুযোগ পাচ্ছি। এভাবে বুদ্ধ সার্কিট গোটা বিশ্বের বৌদ্ধ অনুগামীদের ভারতে আসার ও ভ্রমণের সুযোগ করে দিচ্ছে। আজ এই লক্ষ্যে সমস্ত কর্মকাণ্ডকে ত্বরান্বিত করা হয়েছে। এভাবেই আমাদের পর্যটন মন্ত্রক ‘স্বদেশ দর্শন স্কিম’-এর মাধ্যমে ১৫টি ভিন্ন ভিন্ন মূল ভাবনা নিয়ে পর্যটন সার্কিট গড়ে তুলছে। এই সার্কিটগুলির মাধ্যমে দেশের অনেক উপেক্ষিত অঞ্চলগুলিরও পর্যটন এবং উন্নয়নের সুযোগ গড়ে তুলবে।

|

বন্ধুগণ,

আমাদের পূর্বজদের এতটাই দূরদৃষ্টি ছিল যে তাঁরা দেশের দূরদুরান্তে এলাকাগুলির সঙ্গে আমাদের আস্থাকে যুক্ত করার কাজ করেছেন। আমাদের মনে সেই অঞ্চলগুলিকে আপন ভাবার বোধ এনে দিয়েছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে আমরা যখন সক্ষম হয়েছি, যখন আমাদের কাছে আধুনিক প্রযুক্তি এবং সরঞ্জাম এসেছে, তখন আমরা এই অঞ্চলগুলিকে দুর্গম ভেবে উন্নয়নের কাজ করিনি। আমাদের পার্বত্য এলাকাগুলি এর অনেক বড় উদাহরণ। কিন্তু আজ দেশ এই পবিত্র তীর্থগুলির দূরত্বও কম করছে। বৈষ্ণোদেবী মন্দিরের চারপাশের উন্নত উন্নয়ন থেকে শুরু করে উত্তর-পূর্ব ভারত পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া হাইটেক পরিকাঠামো আজ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের নাগরিকদের মধ্যে দূরত্বকে কম করছে। এভাবে ২০১৪ সালে দেশ এ ধরনের তীর্থস্থানগুলির উন্নয়নের জন্য ‘প্রসাদ স্কিম’-এরও ঘোষণা করেছিল। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশে প্রায় ৪০টি বড় তীর্থস্থানের উন্নয়ন করা হচ্ছে। এর মধ্যে ১৫টি প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ হয়েছে। গুজরাটেও ১০০ কোটিরও বেশি টাকা ব্যয়ে তিনটি প্রকল্পকে ‘প্রসাদ যোজনা’র মাধ্যমে উন্নয়ন করা হচ্ছে। গুজরাটে সোমনাথ এবং অন্যান্য পর্যটন স্থল আর শহরগুলিকে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে পর্যটকরা একটি জায়গা দর্শন করতে এলে, তাঁরা যেন অন্যান্য পর্যটন স্থলগুলিও দেখে বাড়ি ফেরেন। এভাবে সারা দেশে ১৯টি ‘আইকনিক ট্যুরিস্ট ডেস্টিনেশন’ চিহ্নিত করে আজ সেগুলিকে উন্নয়ন করা হচ্ছে। এই সকল প্রকল্প আমাদের পর্যটন শিল্পকে আগামীদিনে একটি নতুন প্রাণশক্তি যোগাবে।

বন্ধুগণ,

পর্যটনের মাধ্যমে আজ দেশ সাধারণ মানুষকে শুধু যুক্ত করছে না, নিজেকেও এগিয়ে নিয়ে চলেছে। এর পরিণাম হল ২০১৩-তে আমাদের দেশ ভ্রমণ ও পর্যটনের ‘কম্পেটিটিভনেস ইন্ডেক্স’-এ যেখানে ৬৫তম স্থানে ছিল, সেখানে ২০১৯ সালে ৩৪তম স্থানে উন্নীত হয়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যটনকে উৎসাহ যোগানোর জন্য দেশে এই সাত বছরে বেশ কিছু নীতিগত সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে যার দ্বারা দেশবাসী আজ লাভবান হচ্ছে। দেশে ‘ই-ভিসা রেজিম’, ‘ভিসা অন অ্যারাইভ্যাল’-এর মত ব্যবস্থাগুলিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে আর ভিসার ফিও কমানো হয়েছে। এভাবে পর্যটন ক্ষেত্রে হসপিটালিটি সংক্রান্ত জিএসটি কমানো হয়েছে। এর ফলে, পর্যটন ক্ষেত্র অনেক লাভবান হবে আর কোভিডের প্রভাব থেকে মুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রেও অনেক সাহায্য হবে। পর্যটকদের স্বার্থের কথা ভেবে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেমন, অনেক পর্যটক আসেন যাঁদের উৎসাহ থাকে অ্যাডভেঞ্চার নিয়ে। তাঁদের কথা মাথায় রেখে সরকার ১২টি পর্বত শৃঙ্গকে ট্রেকিং-এর জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে। পর্যটকরা যাতে নতুন জায়গায় অসুবিধায় না পড়েন তা সুনিশ্চিত করতে নতুন জায়গাগুলির সম্পূর্ণ তথ্য সংগ্রহের প্রোগ্রাম চালু করে গাইডদেরকে প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে অনেক বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগও গড়ে উঠছে।

বন্ধুগণ,

আমাদের দেশের ঐতিহ্য হল আমরা কঠিন সময় থেকে বেরিয়ে এসে সমস্ত কষ্ট প্রতিকূলতাকে ভুলে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা পাই। আমরা দেখেছি যে করোনার এই সময়ে পর্যটন অনেকের মনে আশার সঞ্চার করেছে। সেজন্য আমাদের নিজস্ব পর্যটনের স্বভাব এবং সংস্কৃতিকে নিয়মিত বিস্তৃত করতে হবে, এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে আর নিজেদেরও এগিয়ে যেতে হবে। কিন্তু পাশাপাশি, আমাদের এটাও মনে রাখতে হবে যে আমাদের প্রয়োজনীয় সাবধানতা এবং সতর্কতা বজায় রাখার দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এই ভাবনা নিয়ে দেশ এগিয়ে যাবে আর আমাদের পরম্পরা, আমাদের গৌরব আধুনিক ভারত নির্মাণে আমাদের পথ দেখাতে থাকবে। আমাদের ওপর ভগবান সোমনাথের আশীর্বাদ বজায় থাকুক, দরিদ্র থেকে দরিদ্রতম মানুষের কল্যাণ করার জন্য আমরা যেন নতুন নতুন ক্ষমতা, নতুন প্রাণশক্তি অর্জন করতে পারি, যাতে সকলের কল্যাণের পথকে আমরা সমর্পণভাব নিয়ে, সেবার মাধ্যমে জনসাধারণের জীবনে পরিবর্তন আনতে পারি। এই শুভকামনা জানিয়ে আপনাদের সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ!! জয় সোমনাথ!

Explore More
প্রত্যেক ভারতীয়ের রক্ত ফুটেছে: মন কি বাত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী

জনপ্রিয় ভাষণ

প্রত্যেক ভারতীয়ের রক্ত ফুটেছে: মন কি বাত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী
Indian Economy Poised To Remain Fastest-Growing One In FY26: SBI Report

Media Coverage

Indian Economy Poised To Remain Fastest-Growing One In FY26: SBI Report
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM to participate in International Air Transport Association's 81st Annual General Meeting on 2nd June in New Delhi
June 01, 2025
QuoteIATA AGM being held in India after a gap of 42 years
QuotePM to address Global Aviation CEOs

In line with his commitment to developing world-class air infrastructure and enhancing connectivity, Prime Minister Shri Narendra Modi will participate in the International Air Transport Association's (IATA) 81st Annual General Meeting (AGM) on 2nd June, at around 5 PM at Bharat Mandapam in New Delhi. He will also address the gathering on the occasion.

The IATA 81st Annual General Meeting and World Air Transport Summit (WATS) will be held from 1st to 3rd June. The last AGM in India was held 42 years ago in 1983. It brings together more than 1,600 participants including top global aviation industry leaders, government officials and international media representatives.

The World Air Transport Summit will focus on key issues facing the aviation industry including Economics of the Airline industry, Air Connectivity, Energy Security, Sustainable Aviation Fuel Production, Financing Decarbonisation, Innovations among others. The aviation leaders and media representatives from around the world will also get to witness India's remarkable transformation in the aviation landscape and its contribution to the country's socio - economic development.