শেয়ার
 
Comments
“গুজরাটের এই ‘স্বাগত’ উদ্যোগ দেখিয়ে দিয়েছে, কিভাবে প্রযুক্তি কার্যকরভাবে জনগণের অভাব-অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে পারে”
“আমি কখনই আমার পদের দাসত্ব গ্রহণ করবো না – এই বিষয়ে আমার ধারণা ছিল স্পষ্ট; আমি জনগণের মধ্যে থেকে তাঁদের জন্য কাজ করবো”
“’স্বাগত’ ভারতের জীবনযাত্রার সরলীকরণ এবং সরকারের কাছে পৌঁছনোর অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে”
“আমরা প্রমাণ করেছি যে, শাসন ব্যবস্থা কেবলমাত্র পুরনো আইন বা নিয়ম-কানুনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; নতুন নতুন চিন্তাভাবনা ও উদ্ভাবনেরও অন্যতম স্থান”
“শাসন ব্যবস্থার নানা সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে ‘স্বাগত’ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে; অনেক রাজ্যই এই ধরনের ব্যবস্থাপনায় কাজ শুরু করছে”
এই উদ্যোগ সফলভাবে ২০ বছর পূর্ণ করায় গুজরাট সরকার ‘স্বাগত’ সপ্তাহ পালন করছে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এই প্রকল্পের পুরনো সুবিধাভোগীদের সঙ্গে আলাপচারিতায় অংশ নেন।

আপনারা সরাসরি আমার সঙ্গে কথা বলবেন। পুরনো দিনের বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাওয়া দারুণ একটি বিষয়। আসুন দেখা যাক, প্রথম কার সঙ্গে কথা বলব।

প্রধানমন্ত্রী : আপনার নাম কি?

সুবিধাভোগী : সোলাঙ্কি ভরতভাই বাছুজি।

প্রধানমন্ত্রী : আমরা যখন ‘স্বাগত কর্মসূচি শুরু করেছিলাম তখন কি আপনি প্রথম এসেছিলেন?

ভরতভাই(সুবিধাভোগী) : হ্যাঁ স্যার! প্রথম যাঁরা এসেছিলেন আমি তাঁদের মধ্যে একজন ছিলাম।

প্রধানমন্ত্রী : তাহলে আপনি কি করে জানলেন যে যদি সরকারি আধিকারিকদের জন্য কিছু বলতে হয় তাহলে ‘স্বাগত’ কর্মসূচিতে আপনাকে আসতে হবে?

ভরতভাই (সুবিধাভোগী) : হ্যাঁ স্যার! ২০০০ সালের ২০ নভেম্বর আমি সরকারি আবাস যোজনার আওতায় বাড়ি বানানোর অনুমতি পেয়েছিলাম দেহগ্রাম তহশিল থেকে। এক সপ্তাহের জন্য এই অনুমতি পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু আমি যখন প্লিন্থ পর্যন্ত গেঁথেছি, তখন আমার কোনও ধারণা নেই দেওয়ালটি কি ৯ ইঞ্চির গাঁথব না ১৪ ইঞ্চির। ভূমিকম্পের জন্য আমার মনে আশঙ্কা ছিল যে ৯ ইঞ্চির দেওয়াল যদি গাঁথি তাহলে কি বাঁচতে পারব? তাই আমি ১৪ ইঞ্চির দেওয়াল গেঁথেছিলাম। কিন্তু দ্বিতীয় সপ্তাহে আমার মজুরি চাইতে গেলে বিডিও জানান, যেহেতু আমি ৯ ইঞ্চির বদলে ১৪ ইঞ্চির দেওয়াল গেঁথেছি, তাই আমাকে মজুরি দেওয়া হবে না। তিনি আমাকে বলেন, প্রথম সপ্তাহের ৮,২৫৩ টাকা সুদ সমেত ফেরত দিতে। আমি এরপর জেলা এবং ব্লকের অফিসে বারবার আমার অভিযোগ নিয়ে যাই কিন্তু কেউ আমার কথা শোনেননি। গান্ধীনগর জেলায় এক আধিকারিক আমার কাছে জানতে চান যে আমি বারবার কেন এখানে আসছি। আমার কথা শোনার পর তিনি বলেন, “কাকা আপনি এক কাজ করুন, সচিবালয়ে মাননীয় শ্রী নরেন্দ্রভাই মোদীর ‘স্বাগত’ কর্মসূচিতে চলে যান। প্রতি বৃহস্পতিবার এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।” তাই আমি সরাসরি সচিবালয়ে গিয়ে আপনার কাছে অভিযোগ দায়ের করি। আপনি আমার পুরো অভিযোগ ধৈর্য্য ধরে শুনে শান্তভাবে জবাব দিয়েছিলেন। সংশ্লিষ্ট আধিকারিককে নির্দেশ দেওয়ার পর আমি ৯ ইঞ্চির বদলে ১৪ ইঞ্চির দেওয়াল বানানোর বাড়তি পয়সাও পেয়েছিলাম। আজ আমি আমার ছয় সন্তানকে নিয়ে নিজের বাড়িতে সুখে-শান্তিতে বাস করছি। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ স্যার।

প্রধানমন্ত্রী : ভরতভাই, আপনার অভিজ্ঞতার কথা শুনে আমার পুরনো দিনের ঘটনাগুলি মনে পড়ছে। ২০ বছর পর আবারও আপনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সুযোগ পেলাম। আপনার সন্তানরা কি পড়াশোনা করছে, নাকি অন্য কিছু কাজ করছে?

ভরতভাই (সুবিধাভোগী) : স্যার, আমার চার মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। বাকি দুই মেয়ের বয়স এখনও ১৮ হয়নি, তাই তাদের বিয়েও হয়নি।

প্রধানমন্ত্রী : এই ২০ বছরে আপনার বাড়ি কি একইরকম আছে, নাকি পুরনো হয়ে গেছে?

ভরতভাই (সুবিধাভোগী) : স্যার, আগে চাল দিয়ে জল পড়ত। তাছাড়া বাড়িতে জলের সমস্যাও ছিল। কাঁচা বাড়ি হওয়ায় ছাদ দুর্বল হয়ে গিয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী : আপনার জামাইরা কি সবাই ভালো?

ভরতভাই (সুবিধাভোগী) : হ্যাঁ স্যার! সকলেই খুব ভালো।

প্রধানমন্ত্রী : বাঃ! ভালো থাকুন। আচ্ছা আপনি কি ‘স্বাগত’ কর্মসূচির কথা অন্যদেরকে বলেছিলেন বা অন্যদেরকে পাঠিয়েছিলেন?

ভরতভাই (সুবিধাভোগী) : স্যার, আমি অন্যদেরকেও এই কর্মসূচির কথা বলতাম। আমি তাঁদের বলতাম মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্রভাই মোদী আমাকে সন্তোষজনক উত্তর দিয়েছেন, আমার অভিযোগগুলি ধৈর্য্য ধরে শুনেছেন। তাই, কারোর কোনও সমস্যা থাকলে ‘স্বাগত’ কর্মসূচিতে চলে যাও। যদি কোনও অসুবিধা হয় তাহলে আমিও তোমাদের সঙ্গে যেতে পারি।

প্রধানমন্ত্রী : আচ্ছা ভরতভাই শুনে খুব ভালো লাগল। এরপর কে আছেন?

বিনয় কুমার (সুবিধাভোগী) : নমস্কার স্যার! আমি চৌধুরি বিনয় কুমার বালুভাই, তাপি জেলার ওয়াগমেরা গ্রাম থেকে আসছি।

প্রধানমন্ত্রী : বিনয়ভাই নমস্কার!

বিনয়ভাই : নমস্কার স্যার!

প্রধানমন্ত্রী : কেমন আছেন?

বিনয়ভাই : আপনার আশীর্বাদে ভালো আছি।

প্রধানমন্ত্রী : আপনি কি জানেন, আপনাদের মতো মানুষদের আমরা ‘দিব্যাঙ্গ’ বলে অভিহিত করি? আপনার গ্রামে যাতে সবাই আপনাকে সম্মান জানান তার জন্য সকলের এই শব্দটি ব্যবহার করা উচিত।

বিনয়ভাই : হ্যাঁ স্যার!

প্রধানমন্ত্রী : আমার মনে পড়ছে আপনি সেই সময় আপনার অধিকার পাওয়ার জন্য যথেষ্ট লড়াই করেছিলেন। এখানে সকলকে আপনার সেই লড়াইয়ের সম্পর্কে জানান যার জন্য আপনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে গিয়েছিলেন এবং আপনার অধিকার অর্জন করেছিলেন। সবাইকে বলুন!

বিনয়ভাই : স্যার, ব্যাপারটা হল সেই সময় আমি স্বনির্ভর ছিলাম না। আমি সংখ্যালঘু অর্থ কমিশনে ঋণের জন্য আবেদন করেছিলাম। আমার আবেদন মঞ্জুর হয়েছিল কিন্তু আমি চেক হাতে পাইনি। আমার খুব মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল। সেই সময় আমার এক বন্ধু আমাকে বলেন, গান্ধীনগরে ‘স্বাগত’ কর্মসূচিতে আমি আমার সমস্যার কথা জানালে তার সমাধান হতে পারে। তাই আমি বাসে করে গান্ধীনগরে যাই এবং এই কর্মসূচির সুবিধা পাই। আপনি আমার সমস্যার কথা শুনে তক্ষুণি, ৩৯,২৪৫ টাকার চেক ইস্যু করেন। এই টাকা দিয়ে আমি ২০০৮ সালে আমার বাড়িতে একটি দোকান খুলি। আজও আমার সংসার এই দোকানের আয় থেকে চলে। স্যার, দোকান খোলার দু’বছর পর আমি বিয়ে করি। আমার দুটি কন্যাসন্তান আছে, তারা পড়াশোনা করছে। বড়টি ক্লাস এইট আর ছোটটি ক্লাস সিক্স-এ পড়ে। আজ আমাদের পরিবার স্বনির্ভর। গত দু’বছর ধরে আমি আমার স্ত্রীর সঙ্গে দোকান চালানোর পাশাপাশি চাষবাসের কাজও করি। এখন আমার আয় বেশ ভালো।

প্রধানমন্ত্রী : বিনয়ভাই, আপনার দোকানে আপনি কি বিক্রি করেন?

বিনয়ভাই : আমরা চাল, ডাল, মুদিখানার জিনিসপত্র বেচি।

প্রধানমন্ত্রী : এখন তো ‘ভোকাল ফর লোকাল’-এর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তা আপনার দোকানের খরিদ্দাররা কি স্থানীয় পণ্য কিনতে আগ্রহী?

বিনয়ভাই : হ্যাঁ স্যার! তাঁরা আমার দোকান থেকে চাল, ডাল, চিনি - এসব কেনেন।

প্রধানমন্ত্রী : এখন আমরা ‘শ্রী অন্ন’ অভিযান শুরু করেছি। সকলে মিলেট, জোয়ার এগুলি খান। আচ্ছা, আপনার দোকানে কি ‘শ্রী অন্ন’ বিক্রি হয়?

বিনয়ভাই : হ্যাঁ স্যার।

প্রধানমন্ত্রী : আপনি কি আপনার স্ত্রীর সঙ্গেই কাজকর্ম করেন নাকি অন্য কোনও লোক রেখেছেন?

বিনয়ভাই : আমরা কয়েকজন মজুরকে রেখেছি।

প্রধানমন্ত্রী : আচ্ছা। আপনি ক’জন মজুরকে রেখেছেন?

বিনয়ভাই : প্রায় ৪-৫ জন। মাঠে কাজ করেন।

প্রধানমন্ত্রী : এখন তো আমরা সকলকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে লেনদেনে উৎসাহিত করছি। আপনিও কি ডিজিটাল পদ্ধতিতে লেনদেন করেন? মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বা কিউআর কোড ব্যবহার করে?

বিনয়ভাই : হ্যাঁ স্যার! অনেক লোকেই আমার দোকানে এসে আমার কিউআর কোড জানতে চায় এবং সরাসরি আমার অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দেয়।

প্রধানমন্ত্রী : দারুণ ব্যাপার! তার মানে গ্রামে এখন সবকিছুই পাওয়া যায়।

বিনয়ভাই : হ্যাঁ স্যার! সবরকমের সুবিধাই পাওয়া যায়।

প্রধানমন্ত্রী : বিনয়ভাই, আপনার বিশেষত্ব হল আপনি ‘স্বাগত’ কর্মসূচি থেকে যে সুবিধা পেয়েছেন সেটিকে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়েছেন। আপনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করার সাহস রেখেছেন। আচ্ছা, আধিকারিকরা যখন জেনেছিলেন যে আপনি তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, তখন কি তাঁরা ঝামেলা করেছিলেন?

বিনয়ভাই : হ্যাঁ স্যার!

প্রধানমন্ত্রী : তারপর কি সমস্যার সমাধান হয়েছিল?

বিনয়ভাই : হ্যাঁ স্যার!

প্রধানমন্ত্রী : তারপর তো বিনয়ভাই গ্রামের সবাইকে নিশ্চয়ই বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আপনার সরাসরি যোগাযোগ আছে, তাই না?

বিনয়ভাই : না স্যার!

প্রধানমন্ত্রী : আচ্ছা বিনয়ভাই, আপনাকে অনেক অনেক অভিনন্দন। আপনার মেয়েদের লেখাপড়া করাচ্ছেন, খুব ভালো বিষয়। ওদেরকে ভালো করে পড়াশোনা করান, কেমন? আপনার নাম কি?

রাকেশভাই পারেখ : রাকেশভাই পারেখ

প্রধানমন্ত্রী : রাকেশভাই পারেখ। আপনি কি সুরাট জেলা থেকে এসেছেন?

রাকেশভাই পারেখ : হ্যাঁ, আমি সুরাট থেকে এসেছি।

প্রধানমন্ত্রী : আপনি কি সুরাটেই থাকেন না সুরাটের কাছাকাছি?

রাকেশভাই পারেখ : আমি সুরাটে একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকি।

প্রধানমন্ত্রী : আপনার অভিজ্ঞতার কথা জানান।

রাকেশভাই পারেখ : ২০০৬ সালে একটি রেল প্রকল্পের জন্য আমাদের বাড়ি ভাঙা পড়েছিল। আটতলা বাড়িতে ৩২টি ফ্ল্যাট ও আটটি দোকান ছিল। যেহেতু আমাদের বাড়ি বিপজ্জনক বাড়ি বলে ঘোষিত হয়েছিল তাই আমরা বাড়ি বানানোর জন্য কোনও অনুমতি পাইনি। পুরসভাও আমাদের অনুমতি দেয়নি। সেই সময় আমরা জানতে পারি, মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সাহেবের কাছে অভিযোগ জানানো যাবে। আমি শ্রী গাম্বিতের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি জানান, আমার অভিযোগ নেওয়া হয়েছে। খুব শীঘ্রই আমাকে ডাকা হবে। এরপর আমি ‘স্বাগত’ কর্মসূচিতে যোগদানের সুযোগ পাই। সেই সময় আপনি বাড়ি বানানোর অনুমতি দেন। আমি বছর দশেক একটি ভাড়া বাড়িতে থাকি। আপনি স্পেশাল কেস হিসেবে আমার বাড়ি বানানোর অনুমতি দিয়েছিলেন। এরপর আমরা বাড়ি বানাই এবং ৩২টি পরিবার ও আটজন দোকানদার সকলেই আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ।

প্রধানমন্ত্রী : পারেখজি, আপনি দারুণ কাজ করেছেন। শুধু নিজের জন্যই নয়, ৩২টি পরিবারের জন্যও কাজ করেছেন। আচ্ছা, এই ৩২টি পরিবারের সকলে ভালো আছেন তো?

রাকেশভাই পারেখ : সকলেই ভালো আছেন কিন্তু আমি সামান্য সমস্যায় রয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী : সকলে কি একসঙ্গে থাকেন?

রাকেশভাই পারেখ : হ্যাঁ, সকলেই একসঙ্গে থাকি।

প্রধানমন্ত্রী : আর আপনার আবার কি সমস্যা হল?

রাকেশভাই পারেখ : হ্যাঁ স্যার! সেই সময় আপনি বলেছিলেন, যদি আমার কোনও সমস্যা হয় তাহলে আমি আপনার বাংলোতে থাকতে পারি। কিন্তু আমি ভাড়া বাড়িতে ছিলাম এবং পুরো বাড়িটি আমরা তৈরি করেছিলাম। তবে এখন আমরা শান্তিতেই আছি। আমার দুই ছেলে এবং স্ত্রীর সঙ্গে সুখেই ঘর করছি।

প্রধানমন্ত্রী : ছেলেরা কি করে?

রাকেশভাই পারেখ : এক ছেলে চাকরি করছে, অন্যজন রাঁধুনির কাজ করে। ঐ যে হোটেল ম্যানেজমেন্ট বলে না। ও আসলে ঘর থেকেই ব্যবসা চালায়। আমার আসলে স্নায়ুজনিত কিছু সমস্যা হয়েছে তাই গত দেড় বছর ধরে আমি খুব একটা হাঁটাচলা করতে পারি না।

প্রধানমন্ত্রী : কিন্তু আপনি যোগাভ্যাস করেন তো?

রাকেশভাই পারেখ : হ্যাঁ স্যার! নিয়মিত ব্যায়াম করি।

প্রধানমন্ত্রী : কোনও অপারেশন করার আগে আপনি ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন। এখন তো আয়ুষ্মান কার্ডও আছে। আশা করি সেই কার্ড আপনার রয়েছে। এই কার্ডের মাধ্যমে আপনারা ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসা করাতে পারবেন। গুজরাট সরকারেরও ‘মা কার্ড’-এর মতো বেশ কিছু প্রকল্প রয়েছে। এই সুবিধাগুলি আপনি নিন। আশা করি সমস্যার সমাধান হবে।

রাকেশভাই পারেখ : হ্যাঁ স্যার।

প্রধানমন্ত্রী : দেখুন, আপনি এত বুড়ো হয়ে যাননি যে এখনই পিছু হটবেন। রাকেশভাই আপনি ‘স্বাগত’ কর্মসূচির মাধ্যমে অনেক মানুষের সুবিধা করে দিয়েছেন। একজন সচেতন নাগরিক কিভাবে অন্যকে সাহায্য করতে পারেন তার উদাহরণ আপনি। সরকার যে আপনার সমস্যার সমাধান যথাযথভাবে করেছে, সেটি জেনে আমারও ভালো লাগছে। বহু বছর আগের ঘটনা। এখন আপনার ছেলেরাও নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছেন। সকলকে আমার শুভেচ্ছা জানাবেন।

বন্ধুগণ,

এই মতবিনিময়ের মাধ্যমে আমি এটা বুঝতে পারছি ‘স্বাগত’ কর্মসূচি যথেষ্ট সফল হয়েছে। মানুষ শুধু তাঁদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে পেরেছেন তা নয়, রাকেশজির মতো অনেকে শত শত পরিবারগুলির সমস্যার কথা জানিয়ে সেগুলির সমাধানও করেছেন। আমি বিশ্বাস করি, সাধারণ নাগরিকের সব বিষয় সরকার জানতে পারবে এবং তার সমাধান করবে। ভূপেন্দ্রভাই আজ আমাদের মধ্যে রয়েছেন। এখানে অনেক মন্ত্রী ও আধিকারিকরাও আছেন। বেশিরভাগই নতুন মুখ। আমি কয়েকজনকে চিনতে পারছি।

গুজরাটের কোটি কোটি মানুষের জন্য যে ‘স্বাগত’ কর্মসূচির সূচনা হয়েছিল আজ তা ২০ বছর অতিক্রম করল। কয়েকজন সুবিধাভোগীর কথা জানতে পেরে আমার পুরনো দিনের বিভিন্ন ঘটনা আবারও মনে পড়ছে। ‘স্বাগত’ কর্মসূচির সাফল্যের জন্য যাঁরা নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন, এই উপলক্ষে আমি তাঁদের সকলকে ধন্যবাদ জানাই, অভিনন্দন জানাই।

বন্ধুগণ,

যখন কোনও কর্মসূচির পরিকল্পনা করা হয়, তখন সেই কর্মসূচি কতটা সাধারণ মানুষের কাছে ভবিষ্যতে পৌঁছে দেওয়া যায়, সেই বিষয়টি বিবেচনার মধ্যে থাকবে। ২০০৩ সালে আমি যখন ‘স্বাগত’ কর্মসূচির সূচনা করেছিলাম, তারপর দীর্ঘদিন আমি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নই। এর আগে আমি একজন কর্মী হিসেবে, সাধারণ নাগরিক হিসেবে জীবন অতিবাহিত করেছি। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে যখন আপনারা আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন তখন সবকিছু পরিবর্তন হয়েছে। বলা হত, এই পদে বসার পর মানুষ বদলে যায়। কিন্তু আমি তখন থেকেই ঠিক করেছিলাম, আমি যেমনটি ছিলাম, তেমনটিই থাকব। আমি যে কোনও পরিস্থিতির শিকার হব না। মানুষের মধ্যেই আমি থাকব। এই ভাবনা নিয়ে রাজ্যজুড়ে প্রযুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন অভিযোগ গ্রহণ করার এবং সমস্যার সমাধানের জন্য ‘স্বাগত’ কর্মসূচির সূচনা করা হয় যাতে সাধারণ মানুষ একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনায় এসে তাঁদের সমস্যার সমাধান করতে পারেন। আজ ২০ বছর পর ‘স্বাগত’-র অর্থ দাঁড়িয়েছে সহজ জীবনযাত্রা এবং প্রশাসনের কাছে সহজে পৌঁছনো। ফলস্বরূপ, আজ বিশ্বে গুজরাট প্রশাসনিক দিক থেকে আদর্শ স্থানীয় হয়ে উঠেছে। ইন্টারন্যাশনাল টেলিকম অর্গানাইজেশন একে বৈদ্যুতিন মাধ্যমে স্বচ্ছ এবং দায়বদ্ধ এক কর্মসূচি বলে আখ্যায়িত করেছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘও এই কর্মসূচির প্রশংসা করেছে। জনসেবামূলক পুরস্কার পেয়েছে রাষ্ট্রসঙ্ঘ থেকে এই কর্মসূচি। ২০১১ সালে যখন কেন্দ্রে কংগ্রেস সরকার ক্ষমতায় ছিল, সেই সময়ও গুজরাট ই-গভর্ন্যান্সের জন্য স্বর্ণ পদক লাভ করেছিল। এর মূল কারণ ছিল ‘স্বাগত’ কর্মসূচি।

ভাই ও বোনেরা,

‘স্বাগত’ কর্মসূচির সাফল্যের সবথেকে বড় কারণ আমরা গুজরাটবাসীর জন্য কাজ করছি। ব্লক এবং তহশিল স্তর থেকে অভিযোগ শোনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলাস্তরে তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জেলাশাসকের ওপর। রাজ্যস্তরে আমি নিজে এই কাজের তত্ত্বাবধান করতাম। সরকারের বিভিন্ন নীতির সুযোগ-সুবিধা যাতে মানুষ পান, তার জন্য আমি মানুষের কথা নিয়মিত শুনতাম। কেউ যাতে সরকারের কোনও নীতির কারণে সমস্যায় না পড়েন তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা উদ্যোগী হয়েছি। ‘স্বাগত’ কর্মসূচির মাধ্যমে গুজরাটের সাধারণ নাগরিকরা উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের কাছে সহজে পৌঁছতে পারেন। তাঁদের কাজ যদি না হত, তাহলে তাঁরা স্পষ্ট বলতেন, যদি আপনারা আমার কথা না শোনেন তাহলে আমি সোজা ‘স্বাগত’ কর্মসূচিতে চলে যাব। আধিকারিকরাও তৎক্ষণাৎ তাঁদের অভিযোগগুলি শুনতেন।

‘স্বাগত’ কর্মসূচির জনপ্রিয় এতটাই বেড়েছিল যে সাধারণ মানুষের বিভিন্ন অভাব-অভিযোগ সম্পর্কে আমি সরাসরি খবর পেতাম। তাঁদের অভিযোগগুলির নিষ্পত্তি করে তৃপ্তিও পেতাম। এখানেই শেষ নয়। মাসে একবার এই কর্মসূচি পালিত হলেও তার জন্য কাজ কিন্তু গোটা মাস জুড়ে চলত। আমরা বিভিন্ন সময়ে তার পর্যালোচনা করতাম। যদি কোথাও কোনও নিয়ম-কানুনের পরিবর্তন ঘটাতে হয়, তাও করতাম। এই কর্মসূচির মাধ্যমে সাধারণ মানুষের অদ্ভূত এক আস্থা তৈরি হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, যখন জনসাধারণের অভিযোগ নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়, তখনই গণতন্ত্রের সাফল্য নিশ্চিত হয়। আজ আমি গর্বিত, ‘স্বাগত’ নামের যে বীজটি আমি বপন করেছিলাম, তা আজ এক মহীরূহে পরিণত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ে আমার পুরনো সহকর্মী এ কে শর্মা আজ ইকনমিক টাইমস পত্রিকায় এই কর্মসূচিতে তাঁর অভিজ্ঞতা নিয়ে সুন্দর একটি নিবন্ধ লিখেছেন। আজ তিনি আমার মতো রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমানে তিনি উত্তরপ্রদেশের একজন মন্ত্রী। কিন্তু সেই সময় তিনি একজন আধিকারিক হিসেবে এই কর্মসূচি রূপায়ণ করতেন।

বন্ধুগণ,

দীর্ঘ সময় ধরে একটি বিশ্বাস ছিল, যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন, অবস্থা একইরকম থাকবে। যাঁরা সরকার চালাতেন তাঁরা তাঁদের সময়কালে ফিতে কাটতেন, প্রদীপ জ্বালাতেন। কিন্তু গুজরাট ‘স্বাগত’ কর্মসূচির মাধ্যমে সেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়েছে। প্রশাসন যে শুধুমাত্র কতগুলি নিয়ম-কানুন তৈরি করবে তা নয়, প্রশাসনিক কাজে উদ্ভাবনও নিয়ে আসতে হবে, নতুন নতুন ধারণার প্রয়োগ করতে হবে। প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা একটি জীবন্ত উদ্যোগ যা অত্যন্ত স্পর্শকাতর।

২০০৩ সালে যখন ‘স্বাগত’ কর্মসূচির সূচনা হয়েছিল তখন প্রযুক্তি বা ই-গভর্ন্যান্সকে এত গুরুত্ব দেওয়া হত না। প্রত্যেক কাজের জন্য নতুন নতুন ফাইল তৈরি হত, আবার সেই ফাইল হারিয়েও যেত। সেই সময় ভিডিও কনফারেন্সিং সম্পর্কেও ধারণা কম ছিল। এই পরিস্থিতিতে গুজরাট ভবিষ্যতের কথা ভেবে এক উদ্যোগ গ্রহণ করে। আজ ‘স্বাগত’-র মতো একটি কর্মসূচি বহু সরকারি ব্যবস্থাপনার অনুপ্রেরণার উৎস। অনেক রাজ্যই এই ব্যবস্থাপনাকে গ্রহণ করেছে। আমার মনে আছে, বিভিন্ন রাজ্যের থেকে সেই সময় প্রতিনিধিরা গুজরাটে আসতেন এবং পরবর্তীতে নিজের রাজ্যে গিয়ে তাঁরা এই ব্যবস্থাপনাগুলিকে প্রয়োগ করতেন। আপনারা যখন আমাকে দিল্লিতে পাঠালেন তখন আমরা কেন্দ্রে ‘প্রগতি’ বলে একটি কর্মসূচির সূচনা করি। গত ৯ বছরে দেশে দ্রুত উন্নয়নের পিছনে ‘প্রগতি’র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ‘স্বাগত’ কর্মসূচির থেকেই ধারণা নিয়ে ‘প্রগতি’র পরিকল্পনা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমি ‘প্রগতি’র বৈঠকগুলিতে ১৬ লক্ষ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্পের পর্যালোচনা করেছি। দেশে শত শত প্রকল্পে আজ গতি এসেছে। আজ যখন ‘প্রগতি’তে কোনও কর্মসূচি পর্যালোচনার জন্য নথিভুক্ত হয়, তখন সব রাজ্যগুলি সব ধরনের বাধা-বিপত্তিকে সরিয়ে তা কার্যকর করার জন্য উদ্যোগী হয়।

বন্ধুগণ,

একটি বীজ থেকে গাছের জন্ম হয় আর সেই গাছ যখন হাজার হাজার ডালপালা মেলে ধরে তখন সেখান থেকে হাজার হাজার বীজের জন্ম হয়। আর সেই বীজ থেকেই আবার নতুন নতুন গাছ জন্মায়। আমি নিশ্চিত, ‘স্বাগত’ কর্মসূচিও প্রশাসনিক কাজে হাজার হাজার নতুন নতুন উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করবে। এটি জনমুখী প্রশাসনের আদর্শ হয়ে উঠবে। আপনাদের মধ্যে আসার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আবারও একবার আপনাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ‘স্বাগত’ কর্মসূচি আরও উৎসাহ-উদ্দীপনায় এগিয়ে চলবে। গুজরাটে আমার ভাই-বোনেদের আবারও শুভেচ্ছা জানাই। ১ মে রাজ্যজুড়ে প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপিত হবে। সেই দিন উন্নয়নের উৎসব আমরা উদযাপন করব। তার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। আপনাদের সবাই ধন্যবাদ। অনেক অনেক অভিনন্দন।

প্রধানমন্ত্রী সুবিধাভোগীদের সঙ্গে গুজরাটি ভাষায় মতবিনিময় করেছেন

 

Explore More
ভারতের ৭৭তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে লালকেল্লার প্রাকার থেকে দেশবাসীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

জনপ্রিয় ভাষণ

ভারতের ৭৭তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে লালকেল্লার প্রাকার থেকে দেশবাসীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ
20 years of Vibrant Gujarat: Industrialists hail Modi for ‘farsightedness’, emergence as ‘global consensus builder’

Media Coverage

20 years of Vibrant Gujarat: Industrialists hail Modi for ‘farsightedness’, emergence as ‘global consensus builder’
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM condoles the demise of Dr. MS Swaminathan
September 28, 2023
শেয়ার
 
Comments

The Prime Minister, Shri Narendra Modi has expressed deep sorrow over the death of eminent agriculture scientist, Dr. MS Swaminathan whose "groundbreaking work in agriculture transformed the lives of millions and ensured food security for our nation."

The Prime Minister posted a thread on X:

"Deeply saddened by the demise of Dr. MS Swaminathan Ji. At a very critical period in our nation’s history, his groundbreaking work in agriculture transformed the lives of millions and ensured food security for our nation.

Beyond his revolutionary contributions to agriculture, Dr. Swaminathan was a powerhouse of innovation and a nurturing mentor to many. His unwavering commitment to research and mentorship has left an indelible mark on countless scientists and innovators.

I will always cherish my conversations with Dr. Swaminathan. His passion to see India progress was exemplary.
His life and work will inspire generations to come. Condolences to his family and admirers. Om Shanti."