শেয়ার
 
Comments
প্রধানমন্ত্রী রাজস্থানে চারটি নতুন মেডিকেল কলেজের শিলান্যাস করেছেন
মহামারীতে ভারত স্বনির্ভরতা ও শক্তি বৃদ্ধির সংকল্প গ্রহণ করেছে
আমরা দেশের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনার জন্য একটি জাতীয় দৃষ্টিভঙ্গী গ্রহণ করেছি এবং জাতীয় স্বাস্থ্য নীতির লক্ষ্যে কাজ করছি
বিগত ৬-৭ বছরে ১৭০টিরও বেশি নতুন মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং ১০০টিরও বেশি নতুন মেডিকেল কলেজে দ্রুত কাজ শুরু হয়েছে
২০১৪ সালে দেশে মেডেকেলে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে মোট আসন সংখ্যা ছিল ৮২ হাজার। আজ এই সংখ্যা বেড়ে ১ লক্ষ ৪০ হাজার হয়েছে
রাজস্থানের উন্নয়ন দেশের উন্নয়নে গতি আনবে

নমস্কার,

রাজস্থানের সুপুত্র আর ভারতের সবচাইতে বড় পঞ্চায়েত দেশের লোকসভার কাস্টডিয়ান আমাদের মাননীয় অধ্যক্ষ শ্রী ওম বিড়লাজি, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী অশোক গেহলতজি, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী শ্রী মনসুখ মাণ্ডব্যজি, আমার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অন্য সমস্ত সহযোগী, শ্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াতজি, ভূপেন্দ্র যাদবজি, অর্জুন রাম মেঘওয়ালজি, কৈলাশ চৌধুরিজি, ডঃ ভারতী পাওয়ারজি, ভগবন্ত খুবাজি, রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভগিনী বসুন্ধরা রাজেজি, বিরোধী দলনেতা গুলাবচাঁদ কাটারিয়াজি, রাজস্থান সরকারের অন্যান্য মন্ত্রীগণ, সাংসদগণ, বিধায়কগণ, অনুষ্ঠানে উপস্থিত অন্য সকল মাননীয় ব্যক্তিবর্গ আর আমার প্রিয় রাজস্থানের ভাই ও বোনেরা,

১০০ বছরের সবচাইতে বড় মহামারী বিশ্বের স্বাস্থ্যক্ষেত্রকে অনেক সমস্যাসঙ্কুল করে তুলেছে, আর এই মহামারী অনেক কিছু শিখিয়েছে এবং অনেক কিছু শেখাচ্ছেও। প্রত্যেক দেশ নিজের নিজের মতো করে এই সঙ্কট মোকাবিলায় ব্যস্ত রয়েছে। ভারত এই বিপর্যয় মোকাবিলায় আত্মনির্ভরতা, নিজের সামর্থ্য বৃদ্ধির সঙ্কল্প নিয়েছে। রাজস্থানে চারটি নতুন মেডিকেল কলেজের নির্মাণ শুরু করা আর জয়পুরে ইনস্টিটিউট অফ পেট্রোকেমিক্যালস টেকনলজির এই উদ্বোধন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আমি রাজস্থানের সমস্ত নাগরিককে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। আর আজ যখন আমার রাজস্থানের একটি বিশেষ কর্মসূচিতে প্রযুক্তির মাধ্যমে বক্তব্য রাখার সৌভাগ্য হয়েছে তখন আমি রাজস্থানের সেই সুপুত্র ও সুকন্যাদের অভিনন্দন জানাতে চাই যাঁরা অলিম্পিকে ভারতের ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকার সম্মান বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। এমনিতে, আমার রাজস্থানের ছেলে-মেয়েদেরকেও আজ আমি শুভেচ্ছা জানাতে চাই। আজ যখন এই অনুষ্ঠান চলছে তখন জয়পুর সহ দেশের ১০টি সিআইপিইটি কেন্দ্রে প্লাস্টিক এবং সংশ্লিষ্ট বর্জ্য ব্যবস্থাপনার নিয়মাবলী নিয়ে সচেতনতামূলক কর্মসূচি চলছে। এই উদ্যোগের জন্য আমি সংশ্লিষ্ট সকলকে, দেশের সমস্ত গণ্যমান্য নাগরিকদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।

ভাই ও বোনেরা,

২০১৪ সালের পর কেন্দ্রীয় সরকার রাজস্থানে ২৩টি নতুন মেডিকেল কলেজের আবেদন মঞ্জুর করেছে। এর মধ্যে সাতটি মেডিকেল কলেজ ইতিমধ্যেই চালু হয়ে গেছে। আর আজ বনসওয়াড়া, সিরোহি, হনুমানগড় এবং দৌসায় নতুন মেডিকেল কলেজ নির্মাণের কাজ শুরু হল। আমি এই অঞ্চলগুলিতে বসবাসকারী জনগণকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। আমি দেখেছি যে এখানকার যত জনপ্রতিনিধি রয়েছেন, আমাদের মাননীয় সাংসদদের সঙ্গে যখনই দেখা হয়, তাঁরা বলতে থাকেন যে রাজস্থানে মেডিকেল কলেজ তৈরি করলে কত লাভ হবে! তা সে আমার বন্ধু, ভাই কনক-মল কাটারাজি হন কিংবা আমাদের অগ্রজ সাংসদ দিদি জসকৌর মীনাজি, অথবা আমার অনেক পুরনো বন্ধু ভাই নিহালচাঁদ চৌহানজি বা আমার অর্ধেক গুজরাটি অর্ধেক রাজস্থানী ভাই দেওজি প্যাটেল – তাঁরা প্রত্যেকেই রাজস্থানে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সচেষ্ট ও সচেতন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এই নতুন মেডিকেল কলেজের নির্মাণ রাজ্য সরকারের সহযোগিতায় যথাসময়ে সম্পূর্ণ হবে।

বন্ধুগণ,

আমরা প্রত্যেকেই দেখেছি যে কয়েক দশক আগে দেশে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কেমন ছিল। ২০০১-এ, আজ থেকে ২০ বছর আগে যখন গুজরাটের জনগণ আমাকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে সেবা করার সুযোগ দিয়েছিলেন তখন গুজরাটেও স্বাস্থ্য পরিষেবা অত্যন্ত সমস্যাসঙ্কুল ছিল। স্বাস্থ্য পরিকাঠামো থেকে শুরু করে চিকিৎসা-শিক্ষা, চিকিৎসা পরিষেবা – প্রত্যেক ক্ষেত্রে দ্রুতগতিতে কাজ করার প্রয়োজন ছিল। আমরা সেই চ্যালেঞ্জ স্বীকার করে নিয়ে সবাই মিলেমিশে পরিস্থিতি পরিবর্তনের চেষ্টা করি। সেই সময় গুজরাটে ‘মুখ্যমন্ত্রী অমৃতম যোজনা’র মাধ্যমে গরীব পরিবারগুলিকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসার সুবিধা দিয়ে এই অভিযান শুরু হয়েছিল। গর্ভবতী মহিলাদের হাসপাতালে প্রসবের চিরঞ্জীবি যোজনার মাধ্যমে উৎসাহিত করা হয়েছিল। ফলে, মা ও বোনেদের জীবন রক্ষায় অনেক বেশি সাফল্য এসেছে। চিকিৎসা-শিক্ষার ক্ষেত্রেও বিগত দু’দশকে অনেক চেষ্টার ফলে গুজরাটে মেডিকেল আসন সংখ্যা প্রায় ছয়গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

বন্ধুগণ,

মুখ্যমন্ত্রী রূপে দেশের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে যে ত্রুটিগুলি আমি অনুভব করেছিলাম, বিগত ৬-৭ বছরে সেগুলি দূর করার নিরন্তর চেষ্টা করে গেছি। আর আমরা সবাই জানি, আমাদের সংবিধানে যে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো রয়েছে তাতে স্বাস্থ্য রাজ্যের বিষয়, রাজ্যের দায়িত্ব। কিন্তু আমি দীর্ঘকাল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকে এক্ষেত্রে সমস্ত সীমাবদ্ধতা ও সমস্যাগুলি সম্পর্কে সুপরিচিত। সেজন্য আমি কেন্দ্রীয় সরকারে নেতৃত্বের সুযোগ পেয়ে স্বাস্থ্য রাজ্যের দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের যে ধরনের কাজ করা উচিৎ বলে মনে করতাম সেই লক্ষ্যে কাজ করা শুরু করেছি। আমাদের দেশে সবচাইতে বড় সমস্যা ছিল দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অনেক বেশি বিভাজিত ছিল। ভিন্ন ভিন্ন রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় জাতীয় স্তরের যোগাযোগ এবং সম্মিলিত দৃষ্টিকোণের অভাব ছিল। ভারতের মতো দেশে যেখানে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা রাজ্যের রাজধানী কিংবা কিছু মেট্রো মহানগরীগুলির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল, যে রাজ্যগুলি থেকে গরীবদের রোজগারের জন্য অন্য রাজ্যে যেতে হয়, সেখানে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সীমাকে রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রকল্পের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে খুব একটা লাভ হচ্ছিল না। তেমনই, প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবা আর বড় হাসপাতালগুলির মধ্যে একটি বড় ব্যবধান দেখা যেত। আমাদের পারস্পরিক চিকিৎসা পদ্ধতি এবং আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যেও যোগাযোগ ও ভারসাম্যের অভাব ছিল। সুশাসনের স্বার্থে এই ত্রুটিগুলি দূর করা অত্যন্ত প্রয়োজন ছিল। দেশের স্বাস্থ্যক্ষেত্রকে রূপান্তরিত করতে আমরা একটা জাতীয় দৃষ্টিকোণ, একটি নতুন জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি রচনার কাজ করেছি। স্বচ্ছ ভারত অভিযান থেকে শুরু করে আয়ুষ্মান ভারত আর এখন আয়ুষ্মান ভারত ডিজিটাল মিশন পর্যন্ত এরকম অনেক প্রচেষ্টা এর অংশ। আয়ুষ্মান ভারত যোজনার মাধ্যমে এখন পর্যন্ত রাজস্থান থেকে প্রায় ৩.৫ লক্ষ মানুষ বিনামূল্যে চিকিৎসার সুযোগ পেয়েছেন। আজ রাজস্থানের গ্রামগঞ্জে স্বাস্থ্য পরিষেবা মজবুত করার জন্য প্রায় ২,৫০০ হেলথ অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টার কাজ করা শুরু করে দিয়েছে। সরকার প্রতিরোধী স্বাস্থ্য পরিষেবার ওপর বেশি জোর দিচ্ছে। সেজন্য আমরা নতুন আয়ুষ মন্ত্রক গড়ে তুলেছি। আয়ুর্বেদ এবং যোগকেও নিরন্তর উৎসাহ যোগাচ্ছি।

ভাই ও বোনেরা,

স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নির্মাণের শ্লথ গতি থেকে আরেকটি বড় সমস্যা উদ্ভূত হয়। এইমস থেকে শুরু করে মেডিকেল কলেজ কিংবা এইমস-এর মতোই সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের নেটওয়ার্ক দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দ্রুতগতিতে গড়ে তোলা প্রয়োজন রয়েছে। আজ আমরা অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে বলতে পারি যে ২০১৪সালে ছয়টি এইমস থেকে এগিয়ে আজ ভারত ২২টিরও বেশি এইমস-এর মজবুত নেটওয়ার্কের দিকে এগিয়ে চলেছে। এই ৬-৭ বছরে ১৭০টিরও বেশি নতুন মেডিকেল কলেজ গড়ে উঠেছে আর ১০০টিরও বেশি নতুন মেডিকেল কলেজ নির্মাণের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। ২০১৪ সালে দেশে মেডিকেল আন্ডার-গ্র্যাজুয়েট এবং পোস্ট গ্র্যাজুয়েটের মোট আসন ছিল প্রায় ৮২ হাজার। আজ এই আসন সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ১ লক্ষ ৪০ হাজার হয়েছে। অর্থাৎ আজ অনেক বেশি তরুণ-তরুণী চিকিৎসক হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। আগের থেকে অনেক বেশি চিকিৎসক তৈরি হচ্ছে। চিকিৎসা-শিক্ষায় এই দ্রুত উন্নয়নের ফলে রাজস্থানও অনেক লাভবান হয়েছে। এই সাত বছরে রাজস্থানে মেডিকেল আসন সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। আন্ডার-গ্র্যাজুয়েট আসন ২ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৪ হাজারেরও বেশি হয়েছে আর পোস্ট গ্র্যাজুয়েটের আসন রাজস্থানে ১ হাজারেরও কম ছিল। যা এখন প্রায় ২,১০০ হয়েছে।

ভাই ও বোনেরা,

আজ দেশের প্রত্যেক জেলায় একটি মেডিকেল কলেজ কিংবা স্নাতকোত্তর চিকিৎসা-শিক্ষা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান স্থাপনের প্রয়োজন রয়েছে। এর জন্য চিকিৎসা-শিক্ষা সংক্রান্ত প্রশাসন থেকে শুরু করে অন্যান্য নীতি, আইন ও প্রতিষ্ঠানগুলিতে বিগত কয়েক বছরে বড় সংস্কার আনা হয়েছে। আমরা দেখেছি, আগে যে মেডিকেল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া (এমসিআই) ছিল কিভাবে তার বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠত, নানারকম আরোপ লাগানো হত। সংসদেও ঘন্টার পর ঘন্টা তা নিয়ে বিতর্ক হত। স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠত। এর অনেক বড় প্রভাব দেশের চিকিৎসা-শিক্ষার উৎকর্ষ ও স্বাস্থ্য পরিষেবায় প্রতিফলিত হত। অনেক বছর ধরে প্রত্যেক সরকার ভাবত যে কিছু করা উচিৎ। পরিবর্তন আনার জন্য কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিৎ। কিন্তু তেমনটা হয়ে উঠত না। আমিও এ কাজ করতে গিয়ে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। সংসদেও বিগত সরকারের অনেকে রয়েছেন যাঁরা এটা করতে চাইছিলেন কিন্তু করতে পারছিলেন না। অনেক গোষ্ঠী নানারকম প্রতিকূলতা তৈরি করছিল। অনেক সমস্যার সমাধান করে অবশেষে আমরা সাফল্য পেয়েছি। সেজন্য আমাদেরকেও অনেক পরস্পর বিরোধিতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। এখন এই ব্যবস্থার দায়িত্ব ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশন-এর হাতে ন্যস্ত হয়েছে। এর অনেক ভালো প্রভাব দেশের স্বাস্থ্য সুরক্ষা, মানবসম্পদ এবং স্বাস্থ্য পরিষেবায় পরিলক্ষিত হতে শুরু হয়েছে।

বন্ধুগণ,

অনেক দশক পুরনো স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় আজকের প্রয়োজনীয়তা অনুসারে পরিবর্তন জরুরি। স্বাস্থ্য-শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য পরিষেবার মধ্যে যে পার্থক্য রয়েছে সেটিকে ক্রমাগত কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। নতুন বিশেষজ্ঞ ও নতুন নতুন চিকিৎসক এবং নতুন স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষিত করার জন্য বড় হাসপাতাল, তা সে সরকারিই হোক কিংবা বেসরকারি – সেগুলিকে ব্যবহার করার দিকে সরকার জোর দিচ্ছে। ৩-৪ দিন আগে যে আয়ুষ্মান ভারত ডিজিটাল মিশন শুরু হয়েছে তা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিতে অনেক সাহায্য করবে। ভালো হাসপাতাল, টেস্টিং ল্যাব, ফার্মেসি, ডাক্তারদের অ্যাপয়েন্টমেন্ট – সবই এখন এক ক্লিকে হবে। এর মাধ্যমে রোগীরা তাঁদের হেলথ রেকর্ড সামলে রাখার সুবিধাও পাবেন।

ভাই ও বোনেরা,

স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত দক্ষ মানবসম্পদ স্বাস্থ্য পরিষেবাকে প্রত্যক্ষভাবে প্রভাবিত করবে। এটা আমরা করোনাকালে আরও বেশি করে অনুভব করেছি। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘সবাইকে টিকা, বিনামূল্যে টিকা’ অভিযানের সাফল্য এই অভিজ্ঞতারই প্রতিফলন। আজ পর্যন্ত ভারতে করোনা টিকার ৮৮ কোটিরও বেশি ডোজ দেওয়া হয়েছে। রাজস্থানেও ৫ কোটির বেশি টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছে। হাজার হাজার টিকা কেন্দ্রে আমাদের চিকিৎসক, সেবিকা ও স্বাস্থ্যকর্মীরা ক্রমাগত টিকাকরণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। চিকিৎসাক্ষেত্রে আমাদের দেশের সামর্থ্যকে আরও বাড়াতে হবে। গ্রাম এবং গরীব পরিবার থেকে উঠে আসা তরুণ-তরুণীদের জন্য শুধু ইংরেজি ভাষায় চিকিৎসা এবং প্রযুক্তি-শিক্ষার পড়াশোনা একটি বড় বাধা। এখন নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি অনুসারে হিন্দি এবং অন্যান্য ভারতীয় ভাষায় চিকিৎসাশাস্ত্র পড়াশোনার পথও প্রশস্ত হয়েছে। রাজস্থানের গ্রামে গরীব পরিবারগুলির মায়েরা তাঁদের সন্তানদের নিয়ে যে স্বপ্ন দেখেন তা এখন আরও সহজে বাস্তবায়িত হবে। গরীবের ছেলে-মেয়েরাও, যাঁরা ইংরেজিমাধ্যম স্কুলে পড়ার সুযোগ পান না, তাঁরাও এখন চিকিৎসক হয়ে মানবতার সেবা করবেন। চিকিৎসা-শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগ যেন সমাজের প্রত্যেক অংশের মানুষ সমানভাবে পান তার প্রয়োজন রয়েছে। চিকিৎসা-শিক্ষায় ওবিসি এবং আর্থিক রূপে দুর্বল সাধারণ বর্গের তরুণ-তরুণীদের সংরক্ষণ প্রদানের পেছনে এই ভাবনাই রয়েছে।

বন্ধুগণ,

স্বাধীনতার এই অমৃতকালে উচ্চস্তরের দক্ষতা শুধু যে ভারতের শক্তি বাড়াবে তাই নয়, আত্মনির্ভর ভারতের সঙ্কল্পকে বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রেও বড় ভূমিকা পালন করবে। সবচাইতে দ্রুতগতিতে বিকশিত হওয়া শিল্পগুলির মধ্যে অন্যতম পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পের জন্য দক্ষ মানবসম্পদ আজকের প্রয়োজন। রাজস্থানে নতুন গড়ে ওঠা ইনস্টিটিউট অফ পেট্রোকেমিক্যাল টেকনলজি এক্ষেত্রে প্রত্যেক বছর শত শত যুবককে নতুন সম্ভাবনার সঙ্গে জুড়বে। পেট্রোকেমিক্যালের ব্যবহার আজকাল কৃষি, স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং অটোমোবাইল ইন্ডাস্ট্রি থেকে শুরু করে জীবনের অনেক ক্ষেত্রে বৃদ্ধি পেয়েছে। সেজন্য আগামী বছরগুলিতে দক্ষ যুবক-যুবতীদের জন্য রোজগারের অনেক সুযোগ গড়ে উঠবে।

বন্ধুগণ,

আজ যখন আমরা এই পেট্রোকেমিক্যাল প্রতিষ্ঠানের উদ্বোধন করছি, তখন আমার ১৩-১৪ বছর আগের সেই দিনটির কথা মনে পড়ছে যখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী রূপে গুজরাটে আমি পেট্রোলিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবনা নিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম। তখন কিছু মানুষ এই ভাবনা নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করেছিলেন। তাঁরা বলছিলেন, এরকম বিশ্ববিদ্যালয়ের কি প্রয়োজন, এটা দিয়ে কি হবে? এখানে পড়ার জন্য ছাত্রছাত্রী কোথা থেকে আসবে? কিন্তু আমারা এই ভাবনাকে ত্যাগ করিনি। রাজধানী গান্ধীনগরে জমি খোঁজা হয়েছে আর তারপর পণ্ডিত দীনদয়াল পেট্রোলিয়াম বিশ্ববিদ্যালয় বা পিডিপিইউ চালু হয়েছে। অত্যন্ত কম সময়ে পিডিপিইউ প্রমাণ করেছে যে তার সামর্থ্য কতটা। গোটা দেশের ছাত্রছাত্রীরা সেখানে পড়ার জন্য ভিড় লাগিয়ে দিয়েছে। এখন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃষ্টিভঙ্গি আরও বিস্তৃত হয়েছে। এখন এই বিশ্ববিদ্যালয়কে পণ্ডিত দীনদয়াল এনার্জি ইউনিভার্সিটি বা সিডিইইউ-তে পরিণত করা হয়েছে। এ ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভারতের যুব সম্প্রদায়কে পরিবেশ-বান্ধব, স্বচ্ছ শক্তি উৎপাদন আবিষ্কারের পথ দেখাচ্ছে। এক্ষেত্রে অনেক বেশি বিশেষজ্ঞ তৈরি হচ্ছে।

বন্ধুগণ,

বাড়মের-এ রাজস্থান রিফাইনারি প্রজেক্ট গড়ে তোলার কাজও দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। এই প্রকল্পে ৭০ হাজার কোটি টাকারও বেশি ইতিমধ্যেই বিনিয়োগ হয়েছে। ইনস্টিটিউট অফ পেট্রোকেমিক্যাল টেকনলজি থেকে পড়াশোনা সেরে যে পেশাদাররা বেরিয়ে আসবেন, তাঁদের জন্য এই প্রকল্প অনেক নতুন সুযোগ গড়ে তুলবে। রাজস্থানে যে সিটি গ্যাস সরবরাহের কাজ চলছে, সেখানেও এই যুবক-যুবতীদের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। ২০১৪ সালের আগে রাজস্থানের মাত্র একটি শহরেই সিটি গ্যাস সরবরাহ মঞ্জুর করা হয়েছিল। আজ রাজস্থানের ১৭টি জেলায় সিটি গ্যাস সরবরাহ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার কাজ চলছে। আগামী বছরগুলিতে এই রাজ্যের প্রত্যেক জেলায় পাইপের মাধ্যমে গ্যাস পৌঁছে দেওয়ার নেটওয়ার্ক চালু হবে।

ভাই ও বোনেরা,

রাজস্থানের একটা বড় অংশ মরুভূমি আর সীমান্তবর্তী এলাকা। কঠিন ভৌগোলিক পরিস্থিতির কারণে আমাদের মা-বোনেদের অনেক প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়। অনেক বছর ধরে আমি রাজস্থানের বিভিন্ন প্রান্তে যাতায়াত করছি। আমি দেখেছি যে শৌচালয়, বিদ্যুৎ এবং রান্নার গ্যাস সংযোগের অভাবে মা-বোনেদের কত সমস্যা হত। আজ দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর মানুষের বাড়িতে শৌচালয় বিদ্যুৎ এবং রান্নার গ্যাস সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার ফলে তাঁদের জীবন অনেক সহজ হয়েছে। পানীয় জল তো প্রায় প্রতিদিনই রাজস্থানের মা-বোনেদের ধৈর্য্যের পরীক্ষা নেয়। আজ জল জীবন মিশনের মাধ্যমে রাজস্থানের ২১ লক্ষেরও বেশি পরিবারে নলের মাধ্যমে জল পৌঁছনো শুরু হয়েছে। ‘প্রত্যেক বাড়িতে জল’ অভিযান রাজস্থানের মা-বোন ও কন্যাদের পায়ে বছরের পর বছর ধরে যে ফোস্কা পড়তো তাতে যেন মলম লাগানোর কাজ; ক্ষুদ্র হলেও একটি সৎ প্রচেষ্টা।

বন্ধুগণ,

রাজস্থানের উন্নয়ন নিশ্চিতভাবেই ভারতের উন্নয়নকে গতি প্রদান করবে। যখন রাজস্থানের জনগণ, গরীব ও মধ্যবিত্তদের জীবন আরও সহজ হয়, যখন তাঁদের ‘ইজ অফ লিভিং’ বৃদ্ধি পায় তখন আমার খুব আনন্দ হয়। বিগত ৬-৭ বছরে কেন্দ্রীয় সরকারের গৃহ নির্মাণ প্রকল্পের মাধ্যমে রাজস্থানের দরিদ্রদের জন্য ১৩ লক্ষেরও বেশি পাকা ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। পিএম কিষাণ সম্মান নিধির মাধ্যমে রাজস্থানের ৭৪ লক্ষেরও বেশি কৃষক পরিবারের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা প্রত্যক্ষ হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনার মাধ্যমে রাজ্যের কৃষকদের ১৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি ক্লেমের টাকা দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বন্ধুগণ,

সীমান্তবর্তী রাজ্য হওয়ার ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং কেন্দ্রীয় সরকারের দেশের সীমান্ত অঞ্চল উন্নয়নের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার থেকেও রাজস্থান লাভবান হচ্ছে। জাতীয় মহাসড়ক নির্মাণ থেকে শুরু করে নতুন নতুন রেললাইনের কাজ, সিটি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন, এরকম কয়েক ডজন প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। দেশের রেলওয়ে ব্যবস্থায় যে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডর, তার একটা বড় অংশ রাজস্থান ও গুজরাটের ওপর দিয়ে গেছে। এই প্রকল্পও নতুন কর্মসংস্থানের অনেক সম্ভাবনা গড়ে তুলছে।

ভাই ও বোনেরা,

রাজস্থানের সামর্থ্য গোটা দেশকে প্রেরণা যোগায়। আমাদের রাজস্থানের সামর্থ্যকে আরও বাড়াতে হবে। তাহলেই দেশও নতুন উচ্চতায় পৌঁছবে। এটা আমাদের সকলের প্রচেষ্টাতেই সম্ভব। ‘সবকা প্রয়াস’! স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষ পূর্তি উৎসবের সময় আমাদের এই ‘সবকা প্রয়াস’ মন্ত্র নিয়ে অনেক উজ্জীবিত হয়ে এগিয়ে যেতে হবে। ভারতের স্বাধীনতার এই অমৃতকাল যাতে রাজস্থানের উন্নয়নেরও সোনালী সময় হয়ে ওঠে – এই শুভকামনা জানাই। একটু আগেই রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনছিলাম। তিনি রাজ্য সরকারের কাজের একটি দীর্ঘ তালিকা আমাদের শুনিয়েছেন। সেজন্য আমি রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীজিকে অনেক ধন্যবাদ জানাই, কারণ, তিনি আমাকে এতটা ভরসা করেন, আর গণতন্ত্রের এটাই তো বড় শক্তি। তাঁর ও আমার রাজনৈতিক বিচারধারা ও দল আলাদা। কিন্তু তবুও অশোকজি আমার ওপর ভরসা করেন। সেজন্য আজ তিনি মন খুলে অনেক কথা বলেছেন। এই বন্ধুত্ব, এই বিশ্বাস, এই ভরসা – এটাই গণতন্ত্রের অনেক বড় শক্তি। আমি আরেকবার রাজস্থানের জনগণকে হৃদয় থেকে অভিনন্দন জানাই। অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।

ধন্যবাদ!

Explore More
৭৬তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর জাতির উদ্দেশে ভাষণের বঙ্গানুবাদ

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৬তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর জাতির উদ্দেশে ভাষণের বঙ্গানুবাদ
India’s defence export reaches an all-time high of approx. ₹16,000 crore in 2022-23

Media Coverage

India’s defence export reaches an all-time high of approx. ₹16,000 crore in 2022-23
...

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM to inaugurate Diamond Jubilee Celebrations of CBI on 3rd April
April 02, 2023
শেয়ার
 
Comments
PM to confer President's Police Medal for Distinguished Service and Gold Medal for Best Investigating Officers of CBI
PM to release Postage Stamp and Commemorative Coin marking Diamond Jubilee Celebration year of CBI

Prime Minister Shri Narendra Modi will inaugurate the Diamond Jubilee Celebrations of Central Bureau of Investigation (CBI) on 3rd April at 12 noon at Vigyan Bhawan, New Delhi.

During the programme, an Investiture Ceremony for recipients of President's Police Medal for Distinguished Service and Gold Medal for Best Investigating Officers of CBI will be held wherein Prime Minister will confer medals to the awardees. Prime Minister will also inaugurate newly constructed office complexes of CBI at Shillong, Pune and Nagpur. He will release a Postage Stamp and Commemorative Coin marking the Diamond Jubilee Celebration year of CBI. He will also launch the Twitter handle of CBI.

The Central Bureau of Investigation was established by a resolution of the Ministry of Home Affairs, Government of India dated 1st April, 1963.