আমি যখন মরিশাসে আসি, তখন আমার মনে হয় যে, আমি আমার নিজের লোকেদের সঙ্গেই রয়েছি: প্রধানমন্ত্রী
মরিশাসের জনসাধারণ এবং সরকার, যেমনটা প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, আমাকে তাঁদের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। আমি মাথা নত করে আপনাদের এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলাম: প্রধানমন্ত্রী
এটি কেবল আমার জন্য সম্মানের বিষয় নয়, এই সম্মান ভারত ও মরিশাসের ঐতিহাসিক সম্পর্কের প্রতিফলন: প্রধানমন্ত্রী
মরিশাস একটি 'মিনি ভারত'-এর মতো: প্রধানমন্ত্রী
আমাদের সরকার আবারও নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়কে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেছে এবং নালন্দার ঐতিহ্যকে জাগ্রত করছে: প্রধানমন্ত্রী
আজ ভারত জুড়ে বিহারের মাখানা যথেষ্ট জনপ্রিয়: প্রধানমন্ত্রী
মরিশাসে যে সপ্তম প্রজন্মের ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা রয়েছেন, তাঁদের সকলকে ওসিআই – এর স্বীকৃতি দেওয়া হবে: প্রধানমন্ত্রী
মরিশাস শুধু একটি অংশীদার রাষ্ট্রই নয়, আমাদের কাছে মরিশাস একটি পরিবার: প্রধানমন্ত্রী
আজ সাগর পরিকল্পনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে মরিশাস: প্রধানমন্ত্রী
মরিশাস যখন সমৃদ্ধ হয়, তখন ভারতই প্রথম উদযাপন করে: প্রধানমন্ত্রী

নমস্কার!
কি খবর আপনাদের? 
আপনারা সকলে ভালো আছেন তো?
আজ আমি মরিশাসে এসেছি,
আপনাদের সকলের মধ্যে আসতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত!
আপনাদের সকলকে প্রণাম জানাই!

বন্ধুগণ,
১০ বছর আগে আজকের এই দিনে আমি যখন মরিশাসে এসেছিলাম, তার এক সপ্তাহ আগে আমরা হোলি উদযাপন করেছি। সেই সময়ে ভারত থেকে ফাগুয়ার আমেজ নিয়ে আমি এসেছিলাম। আর এবার আমি সেই আমেজ নিয়ে ফিরব, মরিশাসের হোলির রঙ নিয়ে ভারতে যাব। আমরা আর একদিন পরই হোলি উদযাপন করব। ১৪ তারিখ সর্বত্র রঙের উৎসব উদযাপিত হবে। 

রামের হাতে ঢোলক বাজে
লক্ষ্মণের হাতে খঞ্জর।
ভরতের হাতে সোনার পিচকিরি...
শত্রুঘ্নের হাতে আবির

আমরা যখন হোলি নিয়ে কথা বলছি, তখন কি গুজিয়ার মিষ্টি স্বাদের কথা ভুলতে পারি? এক সময়ে মরিশাস পশ্চিম ভারতকে চিনি সরবরাহ করত, সেই অঞ্চলের লোকের পায়েসে সেই চিনি ব্যবহার করা হ’ত। হয়তো এই কারণে গুজরাটি ভাষায় চিনিকে মোরাস বলে। সময় যত অতিক্রান্ত হয়েছে, ভারত ও মরিশাসের মধ্যে মিষ্টি সম্পর্কও তত বেড়েছে। এই মিষ্টত্ব নিয়েই আমি মরিশাসের সকল জনসাধারণকে জাতীয় দিবসের শুভেচ্ছা জানাই।

বন্ধুগণ,
আমি যখন মরিশাসে আসি, তখন আমার মনে হয় যে, আমি আমার নিজের লোকেদের সঙ্গেই রয়েছি। এ দেশের আকাশে-বাতাসে-মাটিতে-জলে একাত্মতার সুর পাওয়া যায়। যে গান এখানে গাওয়া হয়, ঢোলে যে বোল ফুটে ওঠে, ডালপুরি, কুচ্চা, গাতেপিমে তরকারিতে  খাবারের যে স্বাদ  পাওয়া যায়, তা তো আমরা ভারতেও পাই। এই যোগসূত্র তো স্বাভাবিক। কারণ, এদেশের মাটিতে বহু ভারতীয়র রক্ত ও ঘাম মিশে রয়েছে। এরা আমাদের পূর্বপুরুষ। আমরা আসলে একই পরিবারের সদস্য। আর সেই ভাবনাতেই প্রধানমন্ত্রী নবীন রামগুলামজি এবং তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যরা এখানে উপস্থিত হয়েছেন। আপনাদের সকলকে উষ্ণ অভিনন্দন জানাই। প্রধানমন্ত্রী নবীনজি যে কথাগুলি বললেন, তা আসলে তাঁর অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে বেরিয়ে এসেছে। তাঁর এই বক্তব্যের জন্য আমি তাঁকে ধন্যবাদ জানাই। 

বন্ধুগণ,
মরিশাসের জনসাধারণ এবং সরকার, যেমনটা প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, আমাকে তাঁদের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। আমি মাথা নত করে আপনাদের এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলাম। এই সম্মান ভারত ও মরিশাসের ঐতিহাসিক সম্পর্কের প্রতিফলন। যেসব ভারতীয়রা যুগ যুগ ধরে নিষ্ঠা সহকারে এই দেশের হয়ে কাজ করে চলেছেন এবং মরিশাসকে এক উচ্চ স্থানে নিয়ে গেছেন, এই সম্মান আসলে তাঁদের। মরিশাসের জনসাধারণ ও সরকারকে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই। 

বন্ধুগণ,
গত বছর ভারতের রাষ্ট্রপতি জাতীয় দিবসের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্য দিয়ে মরিশাস ও ভারতের সম্পর্ক যে কতটা শক্তিশালী তা বোঝা যায়। ১২ মার্চকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করার এই সিদ্ধান্ত আসলে আমাদের দুটি দেশের অভিন্ন ইতিহাসের এক প্রতিফলন। এই দিনই মহাত্মা গান্ধী দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে বেরিয়ে আসার জন্য ডান্ডি সত্যাগ্রহের সূচনা করেছিলেন। দুটি দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে এই দিনটি স্মরণ করায়। ব্যারিস্টার মণিলাল ডক্টর, যিনি মরিশাসে এসে এদেশের মানুষের অধিকার রক্ষার জন্য আন্দোলন শুরু করেছিলেন। সেই মহান মানুষটির কথা কেউ কি ভুলতে পারেন? আমাদের চাচা রামগুলামজি ,নেতাজী সুভাষ ও অন্যদের সঙ্গে একযোগে পরাধীনতার বিরুদ্ধে অভূতপূর্ব এক সংগ্রামে লিপ্ত হন। বিহারের পাটনার ঐতিহাসিক গান্ধী ময়দানে শিউসাগুরজির মূর্তি এই সমৃদ্ধ ঐতিহ্যকে মনে করায়। নবীনজির সঙ্গে শিউসাগুরজিকে শ্রদ্ধা জানানোর সৌভাগ্য আমার হয়েছে। 

বন্ধুগণ, 
আমি যখন আপনাদের কাছে আসি, আপনাদের সঙ্গে কথা বলি, তখন আমার মন চলে যায় ২০০ বছর আগের ইতিহাসে। ঔপনিবেশিক শাসনের সেই সময়কালে অগণিত ভারতবাসীকে এখানে আনা হয়েছিল। নিদারুণ কষ্ট, যন্ত্রণা ও বিশ্বাস ভঙ্গের ইতিহাস সেই সময়ের সাক্ষী। সঙ্কটের সেই দিনগুলিতে তাঁদের শক্তির উৎস ছিলেন ভগবান রাম, রামচরিত মানস। ভগবান রামের সংগ্রাম, তাঁর জয়লাভ — সকলের অনুপ্রেরণার উৎস। তাঁরা ভগবান রামের থেকেই শক্তি ও সাহস অর্জন করেন। 

যদি রাম হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে চান, তা হলে রাম হয়ে উঠুন
তা একদিক থেকে ভালোই হবে।
এক বনবাসী, যিনি ১৪টি বর্ষা বনে কাটিয়েছিলেন,
পুণ্য অযোধ্যা ভূমিতে ফিরে আসতে পেরেছিলেন।।
আমরা আবারও সেই দিনে ফিরে গিয়েছি, 
বন্ধুত্বের সেই দিনগুলি একসঙ্গে কাটিয়েছি।
আমরা আবারও একজোট হয়েছি,
একসঙ্গে রাত কাটিয়েছি।

বন্ধুগণ,
১৯৯৮ সালে আন্তর্জাতিক রামায়ণ সম্মেলন উপলক্ষ্যে আমি এখানে এসেছিলাম। সেই সময়ের কথা খুব মনে পড়ছে। আমি তখন কোনও সরকারি পদে ছিলাম না। সাধারণ এক কর্মী হিসেবে এখানে এসেছিলাম। মজার কথা হ’ল, নবীনজি তখনও প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। পরবর্তীতে যখন আমি প্রধানমন্ত্রী হলাম, নবীনজি দিল্লিতে আমার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগদান করে আমাকে সম্মানিত করেছেন।   

বন্ধুগণ,
ভগবান রাম ও রামায়নের প্রতি যে অগাধ আস্থা ও ভরসা আপনাদের রয়েছে, তা আমি এখানে আসলেই বুঝতে পারি। ভগবান রামের প্রতি এই শ্রদ্ধা গত বছর জানুয়ারি মাসে অযোধ্যায় প্রাণ প্রতিষ্ঠা করার সময় আমরা উপলব্ধি করেছিলাম। ৫০০ বছরের এক প্রতীক্ষার অবসান ঘটেছিল। সেই সময়ে ভারত জুড়ে যে উৎসাহ-উদ্দীপনা সঞ্চারিত হয়েছিল, তা একইভাবে মরিশাসেও নজরে আসে। আপনারা যে কিভাবে আমাদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তা বোঝা গিয়েছিল, সেই দিন মরিশাসে অর্ধদিবস ছুটি ঘোষণার মধ্য দিয়ে। এর মধ্য দিয়ে আমাদের চিরস্থায়ী বন্ধুত্বের ভিত আরও শক্তিশালী হয়েছে। ভারত ও মরিশাসের আস্থার বন্ধন দৃঢ় হয়েছে।

বন্ধুগণ,
আমি জানি যে, মরিশাসের অনেকে মহাকুম্ভে গিয়েছিলেন। সারা বিশ্ব মানবজাতির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জনসমাগম প্রত্যক্ষ করেছে। ৬৫-৬৬ কোটি মানুষ এই কুম্ভে এসেছিলেন। মরিশাসের বহু জনগণও এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষ্য ছিলেন। কিন্তু, আমি এটাও জানি যে, মরিশাসের অনেক ভাই-বোনের আন্তরিক ইচ্ছে থাকলেও তাঁরা একতার মহাকুম্ভে যোগদান করতে পারেননি। আপনাদের সেই ইচ্ছা আমি উপলব্ধি করতে পেরেছি। আর তাই, আমি মহাকুম্ভের পবিত্র সঙ্গম থেকে আপনাদের জন্য পবিত্র জল নিয়ে এসেছি। আগামীকাল এই পবিত্র জল এখানের গঙ্গা তালাওয়ে মিশিয়ে দেওয়া হবে। ৫০ বছর আগেও গোমুখ থেকে গঙ্গাজল নিয়ে এসে এই গঙ্গা তালাওয়ে মেশানো হয়। আগামীকালও আমরা আরও একটি পবিত্র মুহূর্তের সাক্ষী থাকব। মা গঙ্গার আশীর্বাদ এবং মহাকুম্ভের প্রসাদ মরিশাসকে উন্নতির নতুন এক উচ্চতায় পৌঁছে দিক, সেই কামনাই করি।

 

বন্ধুগণ,
১৯৬৮ সালে মরিশাস স্বাধীনতা লাভ করেছে। কিন্তু, যেভাবে এই দেশ উন্নয়ন যাত্রায় এগিয়ে চলেছে, তা গোটা পৃথিবীর কাছে উদাহরণ-স্বরূপ। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ এসেছেন এই মরিশাসে। আপন করে নিয়েছেন এই দ্বীপভূমিকে। তাঁরা এক প্রাণবন্ত সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। বিহার, উত্তর প্রদেশ সহ ভারতের নানা প্রান্ত থেকে আমাদের পূর্বপুরুষরা এখানে এসেছেন। আপনারা যদি এদেশের ভাষা, উপ-ভাষা ও খাদ্যাভাসকে খুব ভালোভাবে প্রত্যক্ষ করেন, তা হলে দেখতে পাবেন, মরিশাসে একটি ছোটখাটো ভারতবর্ষ রয়েছে। যুগ যুগ ধরে ভারতীয়রা রূপালী পর্দায় মরিশাসকে দেখে এসেছেন। আপনি যখন জনপ্রিয় হিন্দি গানগুলি শুনবেন, তখন দেখবেন সেই গানের ফাঁকে ইন্ডিয়া হাউস, ইলে আউস সেরফ, গ্রিস গ্রিস সমুদ্রতটের সুন্দর ছবি, কাউডান জলপ্রপাত এবং রোচেস্টার জলপ্রপাতের শব্দ। ভারতীয় চলচ্চিত্রে মরিশাসের প্রতিটি প্রান্তই ঠাঁই পেয়েছে। ভারতীয় সঙ্গীত ও মরিশাসের সৌন্দর্য একত্রিত হলেই সেই সিনেমা যে দারুণ জনপ্রিয় হবে, সেই গ্যারান্টি দেওয়া যায়। 

বন্ধুগণ,
বিহার ও সমগ্র ভোজপুর অঞ্চলের সঙ্গে আপনারা কতটা একাত্ম, তা আমি বুঝতে পারি। 
পূর্বাঞ্চলের সাংসদ হওয়ার কারণে আমরা জানি যে, বিহারের ক্ষমতা কতটা। একটি সময় ছিল, যখন বিহার সারা পৃথিবীর কাছে সমৃদ্ধ এক জনপদ হিসেবে পরিচিত ছিল। আর এখন আমরা সকলে মিলে বিহারের হৃত গৌরবকে পুনরুদ্ধারের কাজ করছি।

বন্ধুগণ,
যখন বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে শিক্ষার আলো প্রবেশ করেনি, সেই সময়ে ভারতের বিহারে নালন্দার মতো একটি আন্তর্জাতিক শিক্ষা কেন্দ্র গড়ে উঠেছিল। আমাদের সরকার আবারও নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়কে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেছে এবং নালন্দার ঐতিহ্যকে জাগ্রত করছে। আজ সারা বিশ্ব জুড়ে শান্তির খোঁজে ভগবান বুদ্ধের শিক্ষাকে অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আমরা সেই সমৃদ্ধ ঐতিহ্যকে সংরক্ষণই করছি না, সারা বিশ্বের কাছে তা পৌঁছে দিচ্ছি। আজ ভারত জুড়ে বিহারের মাখানা যথেষ্ট জনপ্রিয়। সেইদিন আর বেশি বাকি নেই, যখন বিহারের এই মাখানা সারা বিশ্বে পরিচিত হবে। 

বন্ধুগণ,
আজ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা বিবেচনা করে ভারত মরিশাসের সঙ্গে তার গভীর সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করতে উদ্যোগী হয়েছে। মরিশাসে যে সপ্তম প্রজন্মের ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা রয়েছেন, তাঁদের সকলকে ওসিআই – এর স্বীকৃতি দেওয়া হবে। মরিশাসের রাষ্ট্রপতি এবং তাঁর স্ত্রী বৃন্দাজির হাতে ওসিআই কার্ড তুলে দেওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর স্ত্রী বীণাজির হাতেও এই কার্ড আমি তুলে দিয়েছি। এ বছরের প্রবাসী ভারতীয় দিবস উদযাপনের সময় গিরমিতিয়া সম্প্রদায়ের জন্য কিছু প্রস্তাব আমি রেখেছি। আপনারা আনন্দিত হবেন যে, ভারত সরকার বিশ্বের নানা প্রান্তে থাকা গিরমিতিয়া সম্প্রদায়ের নাগরিকদের জন্য একটি সর্বাঙ্গীন তথ্য ভাণ্ডার গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছে। যে গ্রাম বা শহর থেকে তাঁরা এসেছেন, সংশ্লিষ্ট সেইসব তথ্য যোগাড় করতে আমরা উদ্যোগী হয়েছি। বর্তমানে গিরমিতিয়া সম্প্রদায়ের মানুষরা যেখানে বসবাস করছেন, সেই জায়গাগুলিকেও আমরা চিহ্নিত করতে উদ্যোগী হয়েছি। গিরমিতিয়া সম্প্রদায়ের অতীত থেকে বর্তমান সময়কালের সমগ্র ইতিহাসকে নথিভুক্ত করা হচ্ছে। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে গিরমিতিয়াদের ঐতিহ্য নিয়ে পড়াশোনা করা হবে। এছাড়াও, নির্দিষ্ট সময় অন্তর বিশ্ব গিরমিতিয়া সম্মেলন আয়োজন করা হবে। মরিশাস সহ অন্যান্য দেশগুলিতে সেই সময়ের দেশান্তরী শ্রমিকদের যে পথ দিয়ে নিয়ে যাওয়া হ’ত, সেই পথ চিহ্নিত করতে ভারত একটি পরিকল্পনা করেছে। মরিশাসের ঐতিহাসিক অপ্রবাসী ঘাট সহ গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্যশালী স্থানগুলিকে আমরা রক্ষা করব।  

 

বন্ধুগণ,
মরিশাস শুধু একটি অংশীদার রাষ্ট্রই নয়, আমাদের কাছে মরিশাস একটি পরিবার। দীর্ঘদিনের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও নাগরিকদের ভাবনার মধ্য দিয়ে এই বন্ধন আরও শক্তিশালী হয়েছে। ভারতের সঙ্গে দক্ষিণী বিশ্বের সেতুবন্ধ ঘটাতে মরিশাস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ২০১৫ সালে যখন আমি মরিশাসে আসি, সেই সময়ে ভারতের ‘সাগর’ পরিকল্পনার কথা আমি ঘোষণা করেছিলাম। এই অঞ্চলের সকলের জন্য নিরাপত্তা ও উন্নয়ন এই কর্মসূচির মাধ্যমে নিশ্চিত হবে। আজ সাগর পরিকল্পনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে মরিশাস। বিনিয়োগ অথবা পরিকাঠামো, ব্যবসা-বাণিজ্য অথবা সঙ্কটময় মুহূর্তে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ – ভারত সর্বদাই মরিশাসের পাশে রয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়নের প্রথম রাষ্ট্রই হ’ল মরিশাস, যাদের সঙ্গে আমরা ২০২১ সালে সর্বাঙ্গীন, অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। এর ফলে, নতুন নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে। মরিশাস ভারতীয় বাজারকে কাজে লাগানোর সুযোগ পেয়েছে। ভারতীয় সংস্থাগুলিও মরিশাসে লক্ষ লক্ষ ডলার বিনিয়োগ করছে। আমরা এদেশের জনগণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো নির্মাণে অংশীদার হয়েছি। উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং শিল্প জগতের সংস্কারের ক্ষেত্রে এই উদ্যোগ সহায়ক হয়েছে। মরিশাসের দক্ষতা বিকাশে ভারত এক গর্বিত অংশীদার। 

বন্ধুগণ,
মরিশাসের বিস্তীর্ণ অঞ্চল মহাসাগরের মধ্যে থাকায় অবৈধভাবে মাছ ধরা, জলদস্যুদের সমস্যা সহ নানাধরনের অপরাধের হাত থেকে এদেশের সম্পদকে রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। আস্থাভাজন বন্ধু হিসেবে ভারত আপনাদের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করবে এবং ভারত মহাসাগরকে সুরক্ষিত রাখবে। সাম্প্রতিক সময়কালে যখনই কোনও সঙ্কট দেখা দিয়েছে, ভারত তখনই মরিশাসের পাশে দাঁড়িয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারীর সময় ভারতই ছিল প্রথম দেশ, যারা এখানে ১ লক্ষ টিকা ও গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ সরবরাহ করেছে। মরিশাস যখনই কোনও বিপদের সম্মুখীন হয়েছে, তখনই ভারত তাকে রক্ষা করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। মরিশাসের যখন উন্নতি হয়, ভারত সেই আনন্দকে উপভোগ করে।  

বন্ধুগণ,
ভারত ও মরিশাস ঐতিহাসিক সময়কাল থেকে যেমন যুক্ত রয়েছে, পাশাপাশি ভবিষ্যতে এক অভিন্ন সুযোগ আমরা যাতে কাজে লাগাতে পারি, সেই বিষয়টিও বিবেচনা করা হয়। ভারতের দ্রুতগতিতে উন্নয়নের সময় আমরা মরিশাসের উন্নয়নকেও সহায়তা করি। মেট্রো ব্যবস্থাপনা, বৈদ্যুতিক বাস চালানো, সৌরশক্তি প্রকল্প, ইউপিআই এবং রুপে কার্ড – এর ব্যবহার অথবা নতুন সংসদ ভবন নির্মাণ – বন্ধুত্বের মানসিকতায় সবক্ষেত্রে ভারত মরিশাসকে সহায়তা করে চলেছে। আজ বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে ভারত পরিচিত। আমাদের উন্নয়নের সুফল যাতে মরিশাসও পায়, ভারত তা নিশ্চিত করে। আর তাই, ভারত যখন জি-২০ গোষ্ঠীর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিল, সেই সময়ে আমরা মরিশাসকে বিশেষ আমন্ত্রিত রাষ্ট্রের মর্যাদা দিয়েছি। সেই সময়ে শীর্ষ সম্মেলনে আফ্রিকান ইউনিয়নকে জি-২০ গোষ্ঠীর স্থায়ী সদস্যপদ দেওয়া হয়। সভাপতি হিসেবে ভারত দায়িত্ব পালনের সময়েই দীর্ঘদিনের এই দাবি পূরণ করা হয়।

 

বন্ধুগণ,
একটি জনপ্রিয় গানের কথা মনে পড়ছে -
তার বেঁধেছি ধরত্রী মায়ের উপর
আমি রয়েছি, আকাশ মায়ের কাছে
এদিক-সেদিক ঘুরে বেড়াচ্ছি
আমি রয়েছি দেবীর কাছে
শ্বেত উৎসব শুরু হয়েছে
আমি রয়েছি মা বসুন্ধরার কাছে

আমরা পৃথিবীকে জননী হিসেবে বিবেচনা করি। ২০ বছর আগে আমি যখন মরিশাসে এসেছিলাম, তখন আমি সারা বিশ্বকে জানিয়েছিলাম, জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে মরিশাস কি বলছে, আমাদের তা শুনতে হবে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, এই বিষয়ে বিশ্ব জুড়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে মরিশাস ও ভারত একযোগে কাজ করছে। আন্তর্জাতিক সৌর জোট এবং আন্তর্জাতিক জৈব জ্বালানী জোটের মতো বিভিন্ন জোটে মরিশাস ও ভারত গুরুত্বপূর্ণ সঙ্গী। আজ মরিশাস ‘এক পেড় মা কে নাম’ কর্মসূচিতে যুক্ত হ’ল। প্রধানমন্ত্রী নবীন রামগুলামজির সঙ্গে এই কর্মসূচির আওতায় আমি একটি গাছ রোপণ করলাম। এর মধ্য দিয়ে আমাদের জন্মদাত্রী মায়ের সঙ্গে আমাদের বন্ধন যেমন গড়ে উঠবে, পাশাপাশি মা বসুন্ধরার সঙ্গেও সম্পর্ক শক্তিশালী হবে। এই কর্মসূচিতে মরিশাসের প্রতিটি নাগরিককে যোগদান করার জন্য আমি অনুরোধ জানাচ্ছি। 

বন্ধুগণ,
একবিংশ শতাব্দীতে মরিশাসের সামনে অনেক নতুন নতুন সুযোগ এসেছে। আমি আপনাদের সকলকে আশ্বস্ত করে জানাতে চাই যে, মরিশাসের প্রতিটি পদক্ষেপে ভারত আপনাদের সঙ্গে রয়েছে। আরও একবার আমি প্রধানমন্ত্রী, তাঁর সরকার এবং মরিশাসের জনগণকে ধন্যবাদ জানাই। 
জাতীয় দিবস উপলক্ষে আপনাদের সকলকে আবরও শুভেচ্ছা জানাই।
অনেক অনেক ধন্যবাদ। 
নমস্কার।

 

Explore More
প্রত্যেক ভারতীয়ের রক্ত ফুটেছে: মন কি বাত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী

জনপ্রিয় ভাষণ

প্রত্যেক ভারতীয়ের রক্ত ফুটেছে: মন কি বাত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী
'Operation Sindoor on, if they fire, we fire': India's big message to Pakistan

Media Coverage

'Operation Sindoor on, if they fire, we fire': India's big message to Pakistan
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM Modi's address to the nation
May 12, 2025
Today, every terrorist knows the consequences of wiping Sindoor from the foreheads of our sisters and daughters: PM
Operation Sindoor is an unwavering pledge for justice: PM
Terrorists dared to wipe the Sindoor from the foreheads of our sisters; that's why India destroyed the very headquarters of terror: PM
Pakistan had prepared to strike at our borders,but India hit them right at their core: PM
Operation Sindoor has redefined the fight against terror, setting a new benchmark, a new normal: PM
This is not an era of war, but it is not an era of terrorism either: PM
Zero tolerance against terrorism is the guarantee of a better world: PM
Any talks with Pakistan will focus on terrorism and PoK: PM

প্রিয় দেশবাসী, নমস্কার। আমরা সবাই বিগত দিনগুলিতে দেশের সামর্থ্য ও সংযম উভয় দেখেছি। আমি সবার আগে ভারতের পরাক্রমী সেনাদের, সশস্ত্র সেনাদলগুলিকে... আমাদের গোয়েন্দা এজেন্সি গুলিকে, আমাদের বিজ্ঞানীদের প্রত্যেক ভারতবাসীর পক্ষ থেকে স্যালুট জানাই। আমাদের বীর সৈনিকেরা অপারেশন সিঁদুরের বিভিন্ন লক্ষ্য সাধনের জন্য অসীম শৌর্য প্রদর্শন করেছেন।

আমি তাদের বীরত্বকে, তাদের সাহসকে, তাদের পরাক্রমকে আজ সমর্পণ করছি, আমাদের দেশের প্রত্যেক মা-কে দেশের প্রত্যেক বোনকে আর দেশের প্রত্যেক কন্যাকে এই পরাক্রম সমর্পণ করছি।

বন্ধুগণ, ২২শে এপ্রিল পহেলগামে সন্ত্রাসবাদীরা যে বর্বরতা দেখিয়েছিল, তা দেশ ও বিশ্বকে প্রবলভাবে নাড়িয়ে দিয়েছিল। যারা ছুটি কাটাতে এসেছিলেন সেই নির্দোষ অসহায় নাগরিকদের ধর্ম জিজ্ঞেস করে... তাদের পরিবারের সামনে, তাদের শিশুদের সামনে নৃশংসভাবে হত্যা করা... এটা সন্ত্রাসের অত্যন্ত বীভৎস চেহারা ছিল... ক্রুরতা ছিল। এটা ছিল দেশের সদ্ভাব নষ্ট করার ঘৃণ্য প্রচেষ্টাও। আমার জন্য ব্যক্তিগতভাবে এই পীড়া ছিল অসহনীয়। এই সন্ত্রাসবাদী হামলার পর গোটা দেশ... প্রত্যেক নাগরিক... প্রত্যেক সমাজ... প্রত্যেক গোষ্ঠী... প্রতিটি রাজনৈতিক দল... এক স্বরে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠিন প্রত্যাঘাতের জন্য উঠে দাঁড়িয়েছিল... আমরা সন্ত্রাসবাদীদের ধূলিসাৎ করার জন্য আমাদের সেনাবাহিনীকে পূর্ণ অধিকার দিয়েছিলাম। আর আজ প্রত্যেক সন্ত্রাসবাদী, প্রতিটি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে যে আমাদের বোন ও কন্যাদের সিঁথি থেকে সিঁদুর মোছার পরিণাম কী হয়।

বন্ধুগণ, অপারেশন সিঁদুর... এটা শুধুই একটা নাম নয়... এটি দেশের কোটি কোটি জনগণের ভাবনার প্রতিধ্বনি। অপারেশন সিঁদুর... ন্যায়ের অখণ্ড প্রতিজ্ঞা...

৬ই মে’র রাত...৭ মে’র সকাল... গোটা বিশ্ব এই প্রতিজ্ঞাকে পরিণামে বদলাতে দেখেছেন। ভারতের সেনারা পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদের ডেরাগুলিকে, তাদের ট্রেনিং সেন্টারগুলিকে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। সন্ত্রাসবাদীরা স্বপ্নেও ভাবেনি যে ভারত এতবড় সিদ্ধান্ত নিতে পারে... কিন্তু যখন দেশ একজোট হয়ে, nation first-এর ভাবনায় সম্পৃক্ত হয়... রাষ্ট্র সর্বোপরি থাকে... তখনই কঠিন সিদ্ধান্তগুলি নেওয়া যায়, যা ফলদায়ক হয়। যখন পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী ডেরাগুলিকে ভারতীয় মিসাইলগুলি আক্রমণ হানে, ভারতের ড্রোনগুলি আক্রমণ হানে... তখন সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির বাড়িগুলি শুধু থরথর করে কাঁপে না, তাদের সাহসও ধূলিসাত হয়ে যায়। বহাওয়ালপুর এবং মুরিদকের মতো সন্ত্রাসবাদী ডেরাগুলিতে এক প্রকার global terrorism-এর university চলত। বিশ্বের যেকোন জায়গায় যখন বড় বড় সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়েছে, সেগুলির তার কোথাও না কোথাও এই সন্ত্রাসবাদী ঠিকানাগুলির সাথে জুড়েছিল।

সন্ত্রাসবাদীরা আমাদের বোনেদের সিঁদুর মুছেছিল, সেজন্য ভারত সন্ত্রাসবাদের এই head quarterগুলি ধ্বংস করে দিয়েছে। ভারতের এই আক্রমণে ১০০-রও বেশি ভয়ানক সন্ত্রাসবাদীকে মেরে ফেলা হয়েছে। সন্ত্রাসের অনেক মনিব বিগত আড়াই তিন দশক ধরে মুক্তভাবে পাকিস্তানে ঘুরে বেড়াচ্ছিল... যারা ভারতের বিরুদ্ধে একের পর এক ষড়যন্ত্র করেছে... তাদেরকে ভারত এক ঝটকায় শেষ করে দিয়েছে।

বন্ধুগণ, ভারতের এই প্রত্যাঘাত পাকিস্তানকে ঘোর নিরাশার অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে, হতাশার অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে, ফলে তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। আর এই মাথা খারাপ হওয়াতেই তারা একটি দুঃসাহস করে। সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে ভারতের প্রত্যাঘাতকে সমর্থন করার বদলে পাকিস্তান ভারতের ওপর হামলা করা শুরু করে।

পাকিস্তান আমাদের স্কুল, কলেজে, গুরুদ্বারে, মন্দিরগুলিতে সাধারণ মানুষের বাড়িগুলিকে নিশানা করে। পাকিস্তান আমাদের সৈন্য ঠিকানা গুলিকেও নিশানা করে, কিন্তু এক্ষেত্রেও পাকিস্তানের নিজের মুখোশ খুলে যায়। বিশ্ববাসী দেখে, কীভাবে পাকিস্তানের ড্রোন এবং মিসাইলগুলি ভারতের সামনে খড়ের টুকরোর মত ছড়িয়ে পরে। ভারতের শক্তিশালী air defence system সেগুলিকে আকাশেই নষ্ট করে দেয়। পাকিস্তানের প্রস্তুতি ছিল সীমান্তে আক্রমণ করার... কিন্তু ভারত পাকিস্তানের বুকে আক্রমণ করে। ভারতের ড্রোন... ভারতের মিসাইলগুলি নির্ভুল গন্তব্যে আক্রমণ হানে। পাকিস্তানি বায়ু সেনার সেই এয়ারবেসগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে যেগুলি নিয়ে পাকিস্তানের অনেক অহঙ্কার ছিল।

ভারত প্রথম তিনদিনেই পাকিস্তানকে এমন তছনছ করে দেয় যা তারা কল্পনাও করতে পারেনি... সেজন্য... ভারতের ভয়ানক প্রত্যাঘাতের পর পাকিস্তান বাঁচার রাস্তা খুঁজতে থাকে। পাকিস্তান সারা পৃথিবীতে তাদের রক্ষা করার জন্য বার্তা পাঠাতে থাকে। আর ভীষণরকম ভাবে মার খাবার পর অসহায়ের মতো ১০ই মে দুপুরে পাকিস্তানের সেনা আমাদের DGMO-এর সঙ্গে যোগাযোগ করে। ততক্ষণে আমরা সন্ত্রাসবাদের পরিকাঠামোগুলিকে ধ্বংস করে দিয়েছিলাম। সন্ত্রাসবাদীদের মৃত্যুমুখে ঠেলে দিয়েছিলাম। পাকিস্তানের বুকে বাসা বাঁধা সন্ত্রাসবাদী ডেরাগুলিকে আমরা ধ্বংসস্তুপে পরিণত করে দিয়েছিলাম। সেজন্য যখন পাকিস্তানের পক্ষ থেকে আর্ত চিৎকার শোনা গেল... পাকিস্তানের পক্ষ থেকে যখন বলা হল যে তাদের পক্ষ থেকে ভবিষ্যতে কোন সন্ত্রাসবাদী ক্রিয়াকলাপ এবং দুঃসাহস দেখানো হবে না, তখন ভারত সে বিষয় নিয়ে ভাবনাচিন্তা করে। আর আমি আর একবার বলছি, আমরা পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী এবং সৈন্য ঠিকানাগুলিকে আমাদের প্রত্যাঘাতগুলিকে শুধুমাত্র স্থগিত রেখেছি।

আগামীদিনে... আমরা পাকিস্তানের প্রতিটি পদক্ষেপকে দাঁড়িপাল্লায় মাপবো। তাদের গতিবিধির ওপর লক্ষ্য রাখব।

বন্ধুগণ, ভারতের তিনটি বাহিনী আমাদের Airforce, আমাদের Army, আমাদের Navy, আমাদের Border Security ফরচে, BSF ভারতের সমস্ত আধা সামরিক বাহিনী লাগাতার এলার্ট থাকবে। সার্জিক্যাল স্ট্রাইক এবং এয়ার স্ট্রাইক-এর পর অপারেশন সিঁদুর এখন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের নীতি।

সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অপারেশন সিঁদুর একটি নতুন রেখা টেনে দিয়েছে...

একটি নতুন মাত্রা, একটি নিউ নর্মাল স্থাপন করা হয়েছে।

প্রথমত- ভারতের ওপর সন্ত্রাসী হামলা হলে, উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।

আমরা আমাদের নিজস্ব পদ্ধতিতে, আমাদের নিজস্ব শর্তে প্রত্যাঘাত হানবো। সন্ত্রাসবাদের শিকড় যেখান থেকে বেরিয়ে আসবে, আমরা সেখানেই কঠোর ব্যবস্থা নেব।

দ্বিতীয়ত- ভারত কোনও পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইল সহ্য করবে না। ভারত পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইলের আড়ালে গড়ে ওঠা সন্ত্রাসবাদী আস্তানাগুলির ওপর একটি সুনির্দিষ্ট এবং সিদ্ধান্তমূলক আক্রমণ শুরু করবে।

তৃতীয়ত, আমরা সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষকতাকারী সরকার এবং সন্ত্রাসবাদের প্রভুদের আলাদা সত্তা হিসেবে দেখব না।

অপারেশন সিন্দুরের সময়...

বিশ্ব আবারও পাকিস্তানের কুৎসিত সত্যটি দেখেছে...

যখন মৃত সন্ত্রাসবাদীদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য করা হয়...

পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা ছুটে আসেন।

এটি রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত সন্ত্রাসবাদের একটি বড় প্রমাণ।

ভারত এবং আমাদের নাগরিদের যেকোনো হুমকি থেকে রক্ষা করার জন্য আমরা সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নেওয়া অব্যাহত রাখব।

বন্ধুরা,

আমরা প্রতিবারই যুদ্ধক্ষেত্রে পাকিস্তানকে পরাজিত করেছি। আর এবার অপারেশন সিন্দুর একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আমরা মরুভূমি এবং পাহাড়ে আমাদের দক্ষতা উজ্জ্বলভাবে প্রদর্শন করেছি... এবং এছাড়া... নতুন যুগের যুদ্ধেও নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছি। এই অভিযানের সময়...আমাদের ভারতে তৈরি অস্ত্রের ক্ষমতা প্রমাণিত হয়েছে। আজ বিশ্ব দেখছে... একবিংশ শতাব্দীর যুদ্ধের জন্য ভারতে তৈরি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম... সময় এসেছে।

বন্ধুরা,

সকল ধরণের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্য... আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। এটা অবশ্যই যুদ্ধের যুগ নয়... কিন্তু এটা সন্ত্রাসবাদের যুগও নয়। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা... এটিই একটি উন্নত বিশ্বের গ্যারান্টি।

বন্ধুরা,

পাকিস্তানি সেনাবাহিনী... পাকিস্তান সরকার... যেভাবে সন্ত্রাসবাদকে লালন করা হচ্ছে... একদিন তারা পাকিস্তানকেই ধ্বংস করে দেবে। পাকিস্তান যদি টিঁকে থাকতে চায়, তাহলে তাদের সন্ত্রাসবাদী পরিকাঠামো ধ্বংস করতে হবে। এ ছাড়া শান্তির আর কোনো উপায় নেই। ভারতের অবস্থান খুবই স্পষ্ট... সন্ত্রাস আর আলাপ-আলোচনা একসঙ্গে চলতে পারে না।... সন্ত্রাস এবং বাণিজ্য একসঙ্গে চলতে পারে না। এবং... এমনকি জল এবং রক্তও একসঙ্গে প্রবাহিত হতে পারে না। আমি আজ বিশ্ব সম্প্রদায়কে বলতে চাই...

আমাদের ঘোষিত নীতি হল…

যদি পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা হ্য়...তাহলে তা হবে কেবল সন্ত্রাসবাদ নিয়ে…যদি পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা হয়, তাহলে তা হবে পাক অধিকৃত কাশ্মীর...শুধুমাত্র পাক-অধিকৃত কাশ্মীর নিয়ে।

প্রিয় দেশবাসী,

আজ বুদ্ধ পূর্ণিমা।

ভগবান বুদ্ধ আমদের শান্তির পথ দেখিয়েছেন।

শান্তির পথও ক্ষমতার মধ্য দিয়ে যায়।

মানবতা...শান্তি ও সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যায়…

প্রত্যেক ভারতবাসী যাতে শান্তিতে বসবাস করতে পারে…

উন্নত ভারতের স্বপ্ন পূরণ করতে পারে…

এর জন্য ভারতের শক্তিশালী হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ…

এবং প্রয়োজনে এই ক্ষমতা ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ।

আর গত কয়েকদিন ধরে ভারত ঠিক তাই করেছে।

আমি আবারও ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং সশস্ত্র বাহিনীকে স্যালুট জানাই।

আমরা ভারতীয়দের সাহস এবং প্রত্যেক ভারতীয়র ঐক্যকে আমি অভিবাদন জানাই।

ধন্যবাদ…

ভারত মাতা দীর্ঘজীবী হোক!!!

ভারত মাতা দীর্ঘজীবী হোক!!!

ভারত মাতা দীর্ঘজীবী হোক!!!