নমস্কার!

কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহযোগী শ্রী হরদীপ সিং পুরীজি, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবজি, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ভাই হেমন্ত সোরেনজি, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথজি, মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী শিবরাজ সিং চৌহানজি, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিজয় রুপানিজি, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী থিরু ই কে পালানিস্বামীজি, অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহন রেড্ডিজি, এই কর্মসূচিতে উপস্থিত সমস্ত মহামান্য রাজ্যপাল মহোদয়, উপস্থিত অন্যান্য সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ, ভাই ও বোনেরা,

আপনাদের সবাইকে, সমস্ত দেশবাসীকে ২০২১ সালের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা। অনেক অনেক মঙ্গলকামনা। আজ নতুন প্রাণশক্তি নিয়ে, নতুন নতুন সঙ্কল্প নিয়ে এবং নতুন নতুন সঙ্কল্প সিদ্ধ করার জন্য দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে আজ শুভারম্ভ হতে চলেছে। আজ গরীবদের জন্য, মধ্যবিত্তদের জন্য, গৃহ নির্মাণের জন্য নতুন প্রযুক্তি পাচ্ছে দেশ। প্রযুক্তির ভাষায় আপনারা একে লাইট হাউজ প্রোজেক্ট বলেন। আমি মনে করি, এই ছয়টি প্রকল্প সত্যিই সত্যিই লাইট হাউজ বা আলোকস্তম্ভের মতোই এক একটি প্রকল্প। এই ছয়টি লাইট হাউজ প্রকল্প দেশের আবাসন নির্মাণের ক্ষেত্রে নতুন দিশা দেখাবে। দেশের পূর্ব-পশ্চিম-উত্তর-দক্ষিণ প্রত্যেক ক্ষেত্র থেকে রাজ্যগুলিকে এই অভিযানে একত্রিত করে আমাদের সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর ভাবনাকে আরও শক্তিশালী করছে। 

বন্ধুগণ,

এই লাইট হাউজ প্রোজেক্ট এখন দেশের কর্মসংস্কৃতিরও একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ। আমাদের এর প্রেক্ষিতে যে দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে সেটিকে বুঝতে হবে। এক সময় এই আবাসন প্রকল্পগুলির প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের অগ্রাধিকার ততটা ছিল না, যতটা হওয়া উচিৎ ছিল। সরকার গৃহ নির্মাণের খুঁটিনাটি এবং উৎকর্ষ নিয়ে মাথা ঘামাত না। কিন্তু আমরা জানি, কোনও প্রকল্পের মূল কাঠামোতে পরিবর্তন না করে যদি কোনও পরিবর্তন আনতে হয়, তাহলে কাজটা কত কঠিন হয়। আজ দেশ একটি ভিন্ন দৃষ্টিকোণ বেছে নিয়েছে, একটি ভিন্ন পথ বেছে নিয়েছে। 

বন্ধুগণ,

আমাদের দেশে এমন অনেক কিছু আছে যার প্রক্রিয়াতে পরিবর্তন প্রয়োজন হয় না, তা এমনই চলতে থাকে। আবাসনের বিষয়টাও অনেকটা এমনই। আমরা একে পরিবর্তনের দৃঢ় সঙ্কল্প করেছি। আমাদের দেশে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে গৃহ নির্মাণ কেন হবে না? দীর্ঘ সময় ধরে বসবাস করা যেতে পারে, এরকম টেকসই বাড়ি আমাদের দেশের গরীব মানুষ কেন পাবেন না? আমরা যে ঘর বানিয়ে দিই, সেগুলি আরও দ্রুতগতিতে করা যেতে পারে কি? সরকারের মন্ত্রকগুলির জন্য এটা জরুরি যে নির্মীয়মান বাড়িগুলি যেন ভঙ্গুর কাঠামোযুক্ত না হয়। সেগুলি যেন স্টার্ট-আপগুলির মতো দেখতে খুব সুন্দর এবং টেকসই হয়। সেজন্য আমরা গ্লোবাল হাউজিং টেকনলজি চ্যালেঞ্জ-এর আয়োজন করেছি এবং সারা পৃথিবীর অগ্রণী কোম্পানিগুলিকে ভারতে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে সারা পৃথিবীর ৫০টিরও বেশি উদ্ভাবক নির্মাণ প্রযুক্তিসম্পন্ন কোম্পানি এই সমারোহে অংশগ্রহণ করেছে, প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে। এই গ্লোবাল চ্যালেঞ্জ থেকে নতুন নতুন প্রযুক্তি বেছে নিয়ে আমরা উদ্ভাবন এবং ইনকিউবেট করার সুযোগ পেয়েছি। এই প্রক্রিয়ার পরবর্তী পর্যায়ে এখন আজ থেকে ভিন্ন ভিন্ন সাইটে ছয়টি এ ধরনের লাইট হাউজ প্রকল্পের সূত্রপাত হচ্ছে। এই লাইট হাউজ প্রকল্পগুলি আধুনিক প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবক প্রক্রিয়ায় তৈরি হবে। এর ফলে, নির্মাণের সময় হ্রাস পাবে এবং গরীবদের জন্য অনেক বেশি টেকসই ও সুলভ এবং আরামদায়ক ঘর তৈরি হবে। বিশেষজ্ঞরা এ সম্পর্কে ভালোভাবেই জানেন কিন্তু দেশের সাধারণ মানুষেরও এ বিষয়ে জানা অত্যন্ত জরুরি কারণ, একটি শহরে ব্যবহার করা হচ্ছে কাল এটিকে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে। 

বন্ধুগণ,

ইন্দোরে যে বাড়িগুলি তৈরি হচ্ছে, তাতে ইঁট এবং সিমেন্টের দেওয়াল তৈরি হবে না। তার জায়গায় 'প্রিফ্যাব্রিকেটেড স্যান্ডউইচ প্যানেল সিস্টেম’ দিয়ে দেওয়ালগুলি তৈরি হবে। রাজকোটে সুড়ঙ্গের মাধ্যমে মনোলিথিক কংক্রিট কনস্ট্রাকশন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। ফ্রান্সের এই প্রযুক্তির মাধ্যমে আমাদের কাজ অনেক দ্রুত হবে এবং বাড়িগুলি বিপর্যয় মোকাবিলায় অনেক বেশি সক্ষম হবে। চেন্নাইয়ে আমেরিকা এবং ফিনল্যান্ডের 'প্রিকাস্ট কংক্রিট সিস্টেম’ ব্যবহার করে দ্রুতগতিতে বাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে এবং সেই বাড়িগুলি অত্যন্ত সুলভও হবে। রাঁচিতে জার্মানির থ্রি-ডি কনস্ট্রাকশন সিস্টেম ব্যবহার করে গৃহ নির্মাণ করা হবে। এতে প্রতিটি কামরা ভিন্নভাবে তৈরি হবে এবং গোটা কাঠামোকে এমনভাবে যুক্ত করা হবে যেভাবে 'লেগো-ব্লকস’ খেলনা দিয়ে ঘর বানানো হয়। আগরতলায় নিউজিল্যান্ডের ইস্পাতের কাঠামো সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করে গৃহ নির্মাণ করা হবে। যেখানে ভূমিকম্পের বিপদ বেশি থাকে, সেখানে এরকম ঘর অনেক নিরাপদ। লক্ষ্ণৌ-এ কানাডার প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে যাতে প্লাস্টার এবং রং-এর প্রয়োজনই পড়বে না, কারণ এতে আগে থেকেই নির্মাণ করা সম্পূর্ণ দেওয়াল জুড়ে দেওয়া হবে। এর ফলে বাড়িগুলি আরও দ্রুত তৈরি হবে। প্রত্যেক লোকেশনে বারো মাসের মধ্যে এক হাজারটি করে বাড়ি তৈরি হয়ে যাবে। এক বছরে এক হাজারটি বাড়ি। তার মানে এটা হল যে প্রতিদিন গড়ে আড়াই থেকে তিনটি বাড়ি তৈরি হয়ে যাবে। এক মাসে প্রায় ৯০-১০০টি বাড়ি তৈরি হবে। আর সারা বছরে ১ হাজারটি বাড়ি তৈরির লক্ষ্য রাখা হয়েছে। আগামী বছর ২৬ জানুয়ারির আগে এই প্রকল্পে সাফল্য পাওয়ার আশা রয়েছে।

বন্ধুগণ,

এই প্রকল্পগুলিকে এক প্রকার ইনকিউবেশন সেন্টার বলা যেতে পারে; যেগুলির মাধ্যমে আমাদের প্ল্যানার, আর্কিটেক্ট, ইঞ্জিনিয়ার এবং ছাত্রছাত্রীরা অন্যান্য দেশে উদ্ভাবিত ওই অভিনব প্রযুক্তিগুলি শিখতেও পারবেন, আর পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করতে পারবেন। কাজেই এভাবে সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে অনুরোধ জানাই, সমস্ত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজকে অনুরোধ জানাই, এই ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আপনাদের অধ্যাপক, অধ্যাপিকা, অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকা, আপনাদের ছাত্রছাত্রীরা ১০-১৫ জনের গোষ্ঠী বানিয়ে এক এক সপ্তাহের জন্য এই সাইটগুলিতে থাকার জন্য চলে যাবেন। সম্পূর্ণরূপে এই নির্মাণ প্রক্রিয়া অধ্যয়ন করবেন। সেখানকার সরকারও আপনাদের সাহায্য করবে, আর এভাবে সারা দেশে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির জন্য এগুলি পাইলট প্রোজেক্ট রূপে প্রতিষ্ঠিত হবে, ইনকিউবেটর্স রূপে কাজ করবে। আমি চাইব যে আমাদের ছাত্রছাত্রী, অধ্যাপক-অধ্যাপিকাদের সেখানে গিয়ে চোখ বন্ধ করে কোনও প্রযুক্তি শেখার প্রয়োজন নেই। আমরা দেখব, আর তারপর আমাদের দেশের প্রয়োজন অনুসারে, দেশের কাঁচামাল ও সম্পদের হিসেবে, এই প্রযুক্তির মধ্যেও এমন কোনও পরিবর্তন আনতে পারি কিনা, যা তার কর্মপদ্ধতিকে আরও সরল করবে, দক্ষতাকে আরও বাড়িয়ে দেবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আমাদের দেশের নবীন প্রজন্ম এগুলি দেখে অবশ্যই কিছু না কিছু মূল্য সংযোজন করবে। কিছু না কিছু নতুনত্ব জুড়বে এবং প্রকৃত অর্থেই দেশকে নতুন লক্ষ্যে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। এর পাশাপাশি, গৃহ নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত মানুষদের নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষতা উন্নয়নের জন্য সার্টিফিকেট কোর্সও চালু করা হচ্ছে। এটা খুব বড় কাজ। আমরা এর সঙ্গে মানবসম্পদ উন্নয়ন, দক্ষতা উন্নয়নের কাজও একসঙ্গে শুরু করেছি। আপনারা চাইলে এসব কিছু অনলাইনে পড়তে পারবেন, এই নতুন প্রযুক্তিকে বুঝতে পারবেন। আর তারপর পরীক্ষা দিয়ে শংসাপত্রও পেতে পারবেন। এটা এজন্য করা হচ্ছে, যাতে দেশবাসী গৃহ নির্মাণের ক্ষেত্রে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ প্রযুক্তি, সরঞ্জাম এবং উপাদান পেতে পারেন। 

বন্ধুগণ,

দেশের মধ্যেই আধুনিক গৃহ নির্মাণ প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা এবং স্টার্ট-আপগুলিকে উৎসাহ যোগানোর জন্য 'আশা ইন্ডিয়া প্রোগ্রাম' চলছে। এর মাধ্যমে ভারতেই একবিংশ শতাব্দীর উপযোগী গৃহ নির্মাণের জন্য নতুন নতুন সুলভ প্রযুক্তি বিকশিত করা হচ্ছে। এই অভিযানের মাধ্যমে পাঁচটি সর্বশ্রেষ্ঠ প্রযুক্তিকেও বেছে নেওয়া হয়েছে। একটু আগেই আমি উন্নত নির্মাণ প্রযুক্তি-ভিত্তিক একটি গ্রন্থ এবং অনলাইন সার্টিফিকেট কোর্স – 'নবরীতি' সংক্রান্ত পুস্তকের মোড়ক উন্মোচনের সৌভাগ্য হয়েছে। এগুলির সঙ্গে যুক্ত সমস্ত বন্ধুদেরকেও এ ধরনের সংহত দৃষ্টিকোণ আপন করে নেওয়ার জন্য আমি অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই। 

বন্ধুগণ,

শহরে বসবাসকারী গরীব হোক কিংবা মধ্যবিত্ত – সকলেরই সব থেকে বড় স্বপ্ন কী থাকে? প্রত্যেকের স্বপ্ন থাকে নিজের ঘর। যে কাউকে জিজ্ঞাসা করুন, তাঁর মনে ঘর বানানোর চিন্তা থাকে। ছেলে-মেয়েদের ভালো জীবনযাপনের জন্য সেই বাড়ি; যার সঙ্গে আনন্দ জুড়ে থাকে, সুখ-দুঃখ জুড়ে থাকে, ছেলে-মেয়েদের বড় হয়ে থাকা জুড়ে থাকে, কঠিন সময়ে একটি নিশ্চয়তা জুড়ে থাকে যে আর কিছু না থাকলেও আমার একটা বাড়ি তো আছেই! কিন্তু বিগত বছরগুলিতে এই বাড়ি তৈরি নিয়ে মানুষের অনেক ভরসা ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছিল। সারা জীবনের পুঁজি বিনিয়োগ করে কেউ বাড়ি তো কিনে নিল, টাকাও জমা করে দিল, কিন্তু দেখা গেলো সেই বাড়ি শুধু কাগজের মধ্যেই রয়েছে। সেই বাড়িতে গৃহ প্রবেশের কোনও ভরসাই আর নেই। কষ্টের রোজগার থেকে জমা করা টাকা জমা দিয়েও প্রয়োজনে যে কেউ ঘর কিনতে পারবেন, সেই ভরসাই নড়বড়ে হয়ে গিয়েছিল। এর ফলে, বাড়ির দামও চরচর করে বাড়ছিল। আর একদিকে মানুষের ভরসা নষ্ট হচ্ছিল যে দেশের আইন আমাদের সঙ্গ দেবে কিনা, কঠিন সময়ে প্রোমোটার-বিল্ডারদের সঙ্গে কোনও ঝগড়া হয়ে গেলে কঠিন সময়ে এই লড়াই দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠছিল। আবাসন ক্ষেত্রে এমন পরিস্থিতি গড়ে উঠেছিল যে সাধারণ মানুষের আস্থা ছিল না যে প্রতারিত হলে দেশের আইন তাঁদের সঙ্গ দেবে। 

বন্ধুগণ,

এসব কিছু পেরিয়ে বা কোনমতে সামলে তাঁরা এগিয়ে যেতে চাইছিলেন। কিন্তু তখন ব্যাঙ্কের উঁচু সুদের হার এবং ঋণ পেতে নানারকম ঝক্কি তাঁদের স্বপ্নগুলিকে আরেকবার ধরাশায়ী করে দিচ্ছিল। আজ আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে বলতে পারছি, যে বিগত ছয় বছর ধরে দেশে যে পদক্ষেপগুলি নেওয়া হয়েছে সেগুলি একজন সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে, পরিশ্রমের রোজগারে সংসার চালানো মধ্যবিত্ত পরিবারের বিশ্বাস ফিরিয়ে এনেছে যে তাঁদেরও নিজস্ব বাড়ি হতে পারে। নিজের বাড়ির মালিক তাঁরা হতে পারবেন। এখন দেশের অগ্রাধিকার হল গরীব এবং মধ্যবিত্তদের প্রয়োজন মেটানো। এখন দেশের অগ্রাধিকার হল শহরে বসবাসকারী মানুষদের সংবেদনশীলতার সঙ্গে তাঁদের ভাবনা-চিন্তাগুলিকে বাস্তবায়িত হতে সাহায্য করা। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মাধ্যমে শহরগুলিতে অনেক কম সময়ে লক্ষ লক্ষ বাড়ি বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আরও লক্ষ লক্ষ বাড়ির নির্মাণ প্রক্রিয়া জারি রয়েছে।

বন্ধুগণ,

আমরা যদি পিএম-আবাস যোজনার মাধ্যমে নির্মিত লক্ষ লক্ষ বাড়িগুলির কাজের দিকে তাকাই, এতে উদ্ভাবন এবং বাস্তবায়ন – এই দুটিরই অগ্রাধিকার দেখা যাবে। গৃহ নির্মাণ সরঞ্জামের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রয়োজন এবং বাড়ির মালিকের প্রত্যাশা অনুসারে উদ্ভাবন পরিলক্ষিত হবে। বাড়ির পাশাপাশি, অন্যান্য প্রকল্পের ক্ষেত্রেও একটি প্যাকেজ রূপে একে আমরা জুড়েছি। এর ফলে, যে গরীব মানুষ বাড়ি পাচ্ছেন, তাতে পরিশ্রুত পানীয় জল, বিদ্যুৎ সরবরাহ, রান্নার গ্যাস সরবরাহের মতো অনেক পরিষেবা সুনিশ্চিত করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, কাজের স্বচ্ছতা সুনিশ্চিত করার জন্য প্রত্যেক বাড়িকে জিও-ট্যাগিং করা হচ্ছে। জিও-ট্যাগিং-এর ফলে প্রত্যেক বিষয়ে জানা যাবে। এর মধ্যেও সম্পূর্ণরূপে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। গৃহ নির্মাণের প্রত্যেক পর্যায়ের ছবি ওয়েবসাইটে আপলোড করতে হয়। গৃহ নির্মাণের জন্য যে সরকারি সাহায্য আসে তা সরাসরি সুবিধাভোগীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আর আমি রাজ্যগুলির কাছেও কৃতজ্ঞতা জানাতে চাইব কারণ, এক্ষেত্রে তারাও অত্যন্ত সক্রিয়তার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। আজ অনেক রাজ্যকে এর জন্য সম্মানিত করার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। আমি এই রাজ্যগুলিকে, যারা বিজয়ী হয়েছে, যারা এগিয়ে যাওয়ার জন্য মাঠে নেমেছে, সেই সকল রাজ্যগুলিকে বিশেষভাবে অভিনন্দন জানাই। 

বন্ধুগণ,

সরকারের এই প্রচেষ্টাগুলির মাধ্যমে শহরে বসবাসকারী মধ্যবিত্তরা বেশি লাভবান হচ্ছেন। মধ্যবিত্তদের নিজের আগের বাড়ির জন্য একটি নির্দিষ্ট অর্থ গৃহ ঋণের সুদে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি করোনা সঙ্কটের সময়েও সরকারের গৃহ ঋণে সুদের ক্ষেত্রে ছাড়ের বিশেষ প্রকল্প রয়েছে। যাঁরা বছরের পর বছর ধরে অসম্পূর্ণ হয়ে পড়ে আছেন, সেইসব মধ্যবিত্ত বন্ধুদের জন্য ২৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করা হয়েছে। 

বন্ধুগণ,

এই সমস্ত সিদ্ধান্তের পাশাপাশি জনগণের হাতে এখন রেরা-র মতো আইনের শক্তিও রয়েছে। রেরা আইনের মাধ্যমে জনগণের যে প্রকল্পে অর্থ বিনিয়োগ করলে সেটি সম্পূর্ণ হবে, তাঁর বাড়ি পেতে দেরি হবে না। আজ দেশে প্রায় ৬০ হাজার রিয়েল এস্টেট প্রোজেক্ট রেরা-র মাধ্যমে নথিভুক্ত হয়েছে। এই আইনের মাধ্যমে হাজার হাজার অভিযোগের নিষ্পত্তি করা হয়েছে। অর্থাৎ, হাজার হাজার পরিবারকে তাদের বাড়ি পেতে সাহায্য করা হয়েছে। 

বন্ধুগণ,

‘সকলের জন্য গৃহ' – এই লক্ষ্য প্রাপ্তির জন্য যে চতুর্মুখী কাজ করা হচ্ছে তা কোটি কোটি গরীব এবং মধ্যবিত্তের জীবনে বড় পরিবর্তন আনছে। এই বাড়ি গরীবদের আত্মবিশ্বাস বাড়াচ্ছে, এই বাড়ি দেশের যুব সম্প্রদায়ের সামর্থ্য বাড়াচ্ছে, এই বাড়িগুলির চাবি দিয়ে অনেক দরজা একসাথে খুলছে। যখন কেউ বাড়ির চাবি পাচ্ছেন, তখন তো তা কেবল একটি দরজা কিংবা চারটি দেওয়াল, এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। যখন বাড়ির চাবি হাতে আসে, তখন একটা সম্মানপূর্ণ জীবনের দরজা খুলে যায়। একটি নিরাপদ ভবিষ্যতের দরজা খুলে যায়। যখন বাড়ির মালিকের মালিকানার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়, চাবি হাতে আসার পর থেকেই তাঁর সাশ্রয়ের দরজা খোলে। নিজের জীবনকে সম্প্রসারিত করার দরজা খোলে, অসংখ্য মানুষের মধ্যে সমাজে জ্ঞাতিগোষ্ঠীতে একটি নতুন পরিচয়ের দরজা খোলে। একটা সম্মানের ভাব ফিরে আসে, আত্মবিশ্বাস অঙ্কুরিত হয়। এই চাবি, জনগণের উন্নয়নের এবং তাঁদের প্রগতির দরজাও খুলে দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, এই চাবি দরজার চাবি হলেও তা মস্তিষ্কেরও তালা খুলে দেয়। নতুন স্বপ্ন বুনতে শুরু করে, নতুন সঙ্কল্পের দিকে এগিয়ে যায় এবং জীবনে কিছু করার স্বপ্ন নতুনভাবে বুনতে শুরু করে। এই চাবির এতটাই শক্তি থাকে।

বন্ধুগণ,

গত বছর করোনা সঙ্কটের মধ্যেই আরেকটি বড় পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি। এই পদক্ষেপ হল – ‘অ্যাফোর্ডেবল রেন্টাল হাউজিং কমপ্লেক্স' প্রকল্প। এই প্রকল্পের লক্ষ্য আমাদের সেই শ্রমিক বন্ধুরা, যাঁরা এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে অথবা এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে যান। করোনার আগে তো আমরা দেখেছি, কিছু জায়গা থেকে, অন্য রাজ্যে থেকে আসা মানুষদের জন্য অনেক উল্টো-পাল্টা কথা বলা হত, তাঁদেরকে অপমানিত করা হত। কিন্তু করোনার সময় সমস্ত শ্রমিক নিজের নিজের গ্রামে ফিরে গেলে অন্যরা বুঝতে পারে যে তাঁদেরকে ছাড়া জীবনে বেঁচে থাকা কতটা কঠিন। ব্যবসা চালানো কতটা সমস্যার বিষয়। শিল্প ও ব্যবসা চালানো কতটা মুস্কিল এবং হাতজোড় করে মানুষকে বলতে শুরু করে, ফিরে যান, ফিরে যান! করোনা আমাদের শ্রমিকদের সামর্থ্যের সম্মানকে ফিরিয়ে এনেছে যা মানুষ স্বীকার করত না, তাঁদের স্বীকার করার জন্য বাধ্য করে দিয়েছে। আমরা দেখেছি যে শহরগুলিতে আমাদের শ্রমিক বন্ধুরা ন্যায্য ভাড়ার বিনিময়ে বাড়ি পেতেন না। সেজন্য ছোট ছোট কামরায় বড় সংখ্যক শ্রমিকদের থাকতে হয়। এই জায়গায় বিদ্যুৎ, পরিশ্রুত পানীয় জল, শৌচাগার থেকে শুরু করে অস্বচ্ছতার মতো অনেক সমস্যা রয়েছে। দেশের সেবায় নিজেদের শ্রম দেওয়া সমস্ত বন্ধুরা যাতে গরিমার সঙ্গে নিজেদের বাছতে পারেন, এটাও আমাদের মতো সমস্ত দেশবাসীর দায়িত্ব। এই ভাবনা নিয়ে সরকার, শিল্প জগতের সঙ্গে এবং অন্যান্য বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে মিলে ন্যায্য মূল্যে গৃহ নির্মাণের দিকে নজর দিচ্ছে। এটাই চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে এই আবাসন সেই জায়গাতেই গড়ে তোলা হোক, যেখানে এটি কাজে লাগে। 

বন্ধুগণ,

রিয়েল এস্টেট সেক্টরকে উৎসাহিত করার জন্যও নিরন্তর সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। ক্রেতাদের উৎসাহ বৃদ্ধির জন্য বাড়ির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য করও এখন কম করা হয়েছে। সস্তা বাড়ির ওপরে যে কর আগে ছিল ৮ শতাংশ তা এখন মাত্র ৩ শতাংশে পৌঁছেছে। তেমনই সাধারণ বাড়ির জন্য প্রয়োজনীয় ১২ শতাংশ করের জায়গায় এখন মাত্র ৫ শতাংশ জিএসটি নেওয়া হচ্ছে। সরকার এক্ষেত্রের পরিকাঠামোকেও স্বীকৃতি দিচ্ছে যাতে তারা সস্তা দরে ঋণ পেতে পারে। 

বন্ধুগণ,

বিগত বছরগুলিতে যে সংস্কারগুলি সাধিত হয়েছে, সেগুলিতে কনস্ট্রাকশন পারমিট নিয়ে তিন বছরের মধ্যেই আমরা র‍্যাঙ্কিং-এর ক্ষেত্রে ১৮৫ থেকে সরাসরি ২৭ নম্বরে পৌঁছে গিয়েছি। কনস্ট্রাকশন সংশ্লিষ্ট অনুমতির ক্ষেত্রে অনলাইন ব্যবস্থার বিস্তারেও ২ হাজারেরও বেশি শহরে কাজ চলছে। এখন নতুন বছরে একে সারা দেশের সমস্ত শহরে চালু করার জন্য আমরা সবাই মিলে কাজ করবে। 

বন্ধুগণ,

পরিকাঠামো এবং নির্মাণে সম্ভাব্য বিনিয়োগ, বিশেষ করে আবাসন ক্ষেত্রের খরচ, অর্থনীতিতে 'ফোর্স মাল্টিপ্লায়ার’-এর কাজ করে। এত বড় মাত্রায় স্টিলের ব্যবহার, সিমেন্টের ব্যবহার এবং অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রীর ব্যবহার গতিশীল করে। এর ফলে চাহিদা তো বাড়েই, রোজগারেরও নতুন নতুন সুযোগ গড়ে ওঠে। দেশের রিয়েল এস্টেট ক্ষেত্র যেন নিরন্তর শক্তিশালী থাকে, তার জন্য সরকার লাগাতার চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এই 'সকলের জন্য গৃহ'-এর স্বপ্ন অবশ্যই বাস্তবায়িত হবে। গ্রামাঞ্চলেও এই বছরগুলিতে ২ কোটিরও বেশি গৃহ নির্মিত হয়েছে। এ বছর আমাদের গ্রামে নির্মীয়মান বাড়িগুলি সম্পূর্ণ করার ক্ষেত্রে আরও দ্রুততা আনতে। শহরাঞ্চলে এই নতুন প্রযুক্তির বিস্তার থেকেও গৃহ নির্মাণ এবং ডেলিভারি - উভয় ক্ষেত্রেই গতি বাড়বে। আমরা দেশকে দ্রুতগতিতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের সকলকে দ্রুতগতিতে এগোতেই হবে, মিলেমিশে এগোতে হবে। নির্ধারিত লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে। সেজন্য দ্রুতগতিতে সঙ্কল্পও নিতে হবে। এই সঙ্কল্প নিয়েই আজ আপনাদের সবাইকে এই ছয়টি লাইট হাউজ প্রকল্প এক প্রকার আমাদের নতুন প্রজন্মকে আমাদের প্রযুক্তি এবং ইঞ্জিনিয়ারিং-এর শিক্ষার্থীদের জন্য সব থেকে বেশি উপযোগী হয়ে উঠবে। আমি চাইব, সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত কলেজের ছাত্রছাত্রীরা এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলির কাজকর্ম সম্পর্কে অধ্যয়ন করুক, সেখানে গিয়ে ঘুরে দেখুক কিভাবে কাজ হচ্ছে, কিভাবে প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে, কিভাবে হিসাব রাখা হচ্ছে। এটা নিজে থেকেই তাঁদের শিক্ষার পরিধিকে অনেক বিস্তৃত করবে। সেজন্য আমি দেশের সমস্ত নবীন ইঞ্জিনিয়ার এবং টেকনিশিয়ানদের বিশেষভাবে নিমন্ত্রণ জানাই এই লাইট হাউজ প্রকল্পগুলি থেকে তাঁরা যতটা আলো নিতে পারবেন, আর নিজেদের আলো যতটা এর মধ্যে ফেলতে পারবেন, ফেলুন। আপনাদের মস্তিষ্কের আলো যতটা জ্বালাতে পারেন, জ্বালান। আপনাদের সবাইকে এই নববর্ষের অনেক অনেক শুভকামনা। এই ছয়টি লাইট হাউজ-এর জন্য অনেক অনেক শুভকামনা।

অনেক অনেক ধন্যবাদ।

Explore More
শ্রী রাম জন্মভূমি মন্দিরের ধ্বজারোহণ উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বাংলা অনুবাদ

জনপ্রিয় ভাষণ

শ্রী রাম জন্মভূমি মন্দিরের ধ্বজারোহণ উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বাংলা অনুবাদ
India’s PC exports double in a year, US among top buyers

Media Coverage

India’s PC exports double in a year, US among top buyers
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM Congratulates India’s Men’s Junior Hockey Team on Bronze Medal at FIH Hockey Men’s Junior World Cup 2025
December 11, 2025

The Prime Minister, Shri Narendra Modi, today congratulated India’s Men’s Junior Hockey Team on scripting history at the FIH Hockey Men’s Junior World Cup 2025.

The Prime Minister lauded the young and spirited team for securing India’s first‑ever Bronze medal at this prestigious global tournament. He noted that this remarkable achievement reflects the talent, determination and resilience of India’s youth.

In a post on X, Shri Modi wrote:

“Congratulations to our Men's Junior Hockey Team on scripting history at the FIH Hockey Men’s Junior World Cup 2025! Our young and spirited team has secured India’s first-ever Bronze medal at this prestigious tournament. This incredible achievement inspires countless youngsters across the nation.”