আমাদের মন্দির, আমাদের মঠ ও পবিত্র স্থানগুলি আরাধনার কেন্দ্র এবং একাধারে বিজ্ঞান ও সামাজিক যোগাযোগের কেন্দ্রবিন্দু : প্রধানমন্ত্রী
আমাদের সাধুরা আমাদের বর্তমানে সমগ্র বিশ্বে সমাদৃত আর্য়ুবেদ বিজ্ঞান, যোগ বিজ্ঞানের সঙ্গে পরিচিতি ঘটিয়েছেন : প্রধানমন্ত্রী
দেশ যখন আমাকে সেবা করার সুযোগ দিল তখন আমি আমাদের সরকারের মন্ত্র হিসেবে ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’কে গ্রহণ করলাম এবং সকলের জন্য চিকিৎসা, সকলের জন্য সুস্বাস্থ্য-এর ওপর ভিত্তি করেই ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’-এর লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছি : প্রধানমন্ত্রী

ভাই, সকলে মিলে বলুন, মতঙ্গেশ্বর-এর জয়, বাগেশ্বর ধামের জয়, জটাশঙ্কর ধামের জয়, আমি দু’হাত জোড় করে আপনাকে প্রণাম জানাই আর জোরে জোরে আসুন আমরা সকলে রাম-রাম জপ করি।

মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপাল শ্রী মাঙ্গুভাই প্যাটেল, মুখ্যমন্ত্রী  ভাই শ্রী  মোহন যাদবজি, জগদগুরু পুজ্য রামভদ্রাচার্যজি, বাগেশ্বর ধামের পীঠাধেশ্বর শ্রী ধীরেন্দ্র শাস্ত্রীজি, সাধ্বী ঋতাম্ভরাজি, স্বামী চিদানন্দ সরস্বতীজি, মহন্ত শ্রী বালক যোগেশচরদাসজি, এই অঞ্চলের সাংসদ বিষ্ণুদেব শর্মাজি, অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিবৃন্দ, আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা! 

বীর নায়কদের ভূমি বুন্দেলখণ্ডে দীর্ঘদিন পর এলাম, এটি আমার দ্বিতীয় সফর। এবার বালাজির ডাকে আমি এখানে এসেছি। প্রভু হনুমানের আশীর্বাদে এই পবিত্র ধর্মীয় সংস্থাটি এখন স্বাস্থ্য পরিষেবার কেন্দ্রে পরিণত হতে চলেছে। আমি এইমাত্র শ্রী বাগেশ্বর ধাম মেডিকেল সায়েন্স অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট-এর ভিত পুজো করলাম। এই প্রতিষ্ঠানটি ১০ একর জমির ওপর গড়ে উঠবে। প্রথম পর্বে এখানে ১০০টি শয্যার ব্যবস্থা করা হবে। শ্রী ধীরেন্দ্র শাস্ত্রীজি যে মহতী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন, আমি তার জন্য তাঁকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। একইসঙ্গে, বুন্দেলখণ্ডের জনসাধারণকে আমার শুভেচ্ছা। 

 

বন্ধুগণ,

বর্তমান সময়কালে আমরা দেখেছি, এক শ্রেণীর নেতা ধর্ম নিয়ে মজা করেন, বিভাজনের চেষ্টা চালান। বহু ক্ষেত্রে বিদেশি শক্তিগুলি আমাদের জাতিকে দুর্বল করতে উদ্যোগী হয়েছে। যারা হিন্দু বিশ্বাসের প্রতি ঘৃণা পোষণ করেন, আমাদের ঔপনিবেশিক মানসিকতার কারণে  যে ধারণাগুলি যুগের পর যুগ ধরে চলে এসেছে, যেগুলি  আমাদের বিশ্বাস, আমাদের মন্দির, আমাদের সাধু-সন্ত, আমাদের সংস্কৃতি এবং আমাদের মূল্যবোধের ওপর আঘাত হানে, তারা আমাদের উৎসব, রীতিনীতি এবং ঐতিহ্যকেও অসম্মান করে। এরা ধর্ম এবং সংস্কৃতি সম্পর্কেও নানা কথা বলে, আমাদের সমাজকে ভাঙার চেষ্টা করে, আমাদের ঐক্যবোধে ফাটল ধরাতে চায়। 

এই পরিস্থিতিতে আমার ছোট ভাই ধীরেন্দ্র শাস্ত্রীজি দীর্ঘদিন ধরে দেশবাসীর মধ্যে ঐক্যের মন্ত্র প্রচার করছেন। আর এখন তিনি সমাজ এবং মানবজাতিকে সেবা করার জন্য আরেকটি সঙ্কল্প গ্রহণ করেছেন – তিনি এই ক্যান্সার প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলতে ব্রতী হয়েছেন। আর তাই, এখানে বাগেশ্বর ধামে শুধুমাত্র ভজন গাওয়া হবে না, প্রসাদ বিতরণ করা হবে না, সুস্থ জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিষেবাও এখান থেকে পাওয়া যাবে। 

বন্ধুগণ,

আমাদের মন্দির, মঠ এবং পবিত্র স্থানগুলি পুজোপাঠ এবং ধ্যান করার জায়গা হিসেবে পরিচিত হয়ে এসেছে। একইসঙ্গে, এইসব কেন্দ্রে বৈজ্ঞানিক ভাবনায় নানা জিজ্ঞাসার উত্তর, সমাজচিন্তা এবং গঠনমূলক সচেতনতা গড়ে তোলার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। আমাদের সাধু-সন্ন্যাসীরা আমাদের আয়ুর্বেদ বিজ্ঞান উপহার দিয়েছেন, যোগাভ্যাসের কথা জানিয়েছেন – এই দুটিই বিশ্বজুড়ে সমাদৃত। আমাদের বিশ্বাস খুব সহজ-সরল। নিঃস্বার্থ সেবাই পরম ধর্ম। প্রিয় বন্ধু, এক কথায় বলা যায়, অন্যের কষ্ট লাঘবের জন্য তাঁকে সহায়তা করা আসলে প্রকৃত ধর্মাচারণ। প্রতিটি প্রাণীর সেবা করা আমাদের চিরায়ত ঐতিহ্য। অর্থাৎ, এর মাধ্যমে প্রতিটি মানুষের মধ্যে যে ভগবান রয়েছেন, তাই প্রতিফলিত হয়। নর এবং নারায়ণ একই ব্যক্তি। প্রত্যেকের মধ্যে শিব অধিষ্ঠিত। 

 

বর্তমানে সর্বত্র মহাকুম্ভ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এই বিপুল আয়োজন শেষ হতে চলেছে। কোটি কোটি মানুষ সেখানে জড়ো হয়েছেন, পবিত্র স্নান করেছেন। তাঁরা সাধু-সন্ন্যাসীদের থেকে আশীর্বাদ পেয়েছেন। এটি আসলে একতার মহাকুম্ভ। ১৪৪ বছর পর এই মহাকুম্ভ অনুষ্ঠিত হয় যা আসলে ঐক্যের প্রতীক, সংগঠিত ভাবনাকে শক্তিশালী করে মানুষের মধ্যে সেবা করার বাসনাকে জাগ্রত করে। কুম্ভে আসা প্রতিটি মানুষ এই ঐক্যবোধ উপলব্ধি করেছেন। তবে, এখানে দু’রকমের ভাবনা উঠে এসেছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যাঁরা এসেছেন এই মহাকুম্ভে যোগ দিতে, তাঁরা প্রথমেই নিকাশি ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের প্রশংসা করেছেন। এঁদের ২৪ ঘন্টা পরিষেবার কারণেই মহাকুম্ভ একতার স্থান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। নিরলস পরিষেবা দেওয়ার এই ভাবনার কারণে আমি নিকাশি ব্যবস্থার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত তাঁদের সকলকে শ্রদ্ধা জানাই, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।  

দ্বিতীয় যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সেটি হল, আমাদের পুলিশকর্মীদের অভূতপূর্ব পরিষেবা প্রদান। এবার আমি খেয়াল করলাম, প্রত্যেক তীর্থযাত্রী মহাকুম্ভ থেকে ফিরে জানাচ্ছেন কিভাবে পুলিশকর্মীরা মানবিকভাবে একনিষ্ঠ হয়ে কোটি কোটি ভক্তের দেখভাল করেছেন। এঁরা আসলে প্রকৃত অর্থেই সেবাব্রতী। এই পুলিশকর্মীরা যেভাবে মানুষের মন জয় করেছেন, তার জন্য তাঁদের আমরা অভিনন্দন জানাই। 

কিন্তু, ভাই ও বোনেরা,

প্রয়াগরাজে অনুষ্ঠিত এই মহাকুম্ভে অগণিত সমাজসেবার পিছনে ছিল নিঃস্বার্থ পরিষেবা প্রদানের এক মানসিকতা। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, সংবাদমাধ্যমের কাছে এই  খবরটি তুলে ধরা খুবই কষ্টের কাজ ছিল। আর তাই, এদের সম্পর্কে যতটা তথ্য প্রচারের প্রয়োজন ছিল, ততটা হয়নি। আমি যদি বিস্তারিতভাবে এই পরিষেবাগুলি সম্পর্কে জানাই, তাহলে আমার পরবর্তী কর্মসূচিতে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। তবে আমি এখানে অন্তত একটা গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগের কথা জানাব – সেটি হল নেত্রর মহাকুম্ভ, একতার এই মহাকুম্ভে যা অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

নেত্র মহাকুম্ভে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা সমাজের পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর মানুষেরা বিনামূল্যে চক্ষু পরীক্ষা করাতে পেরেছেন। গত দু’মাস ধরে বিশিষ্ট চক্ষুবিদরা দেশের নানা স্থান থেকে এখানে এসেছেন তাঁদের পরিষেবা দেওয়ার জন্য। এ পর্যন্ত ২ লক্ষেরও বেশি ভাই-বোনের চক্ষু পরীক্ষা হয়েছে। এছাড়াও প্রায় দেড় লক্ষ মানুষ এখান থেকে বিনামূল্যে ওষুধ এবং চশমা পেয়েছেন। যাঁদের চোখে ছানি পড়েছে – এই সংখ্যাটি প্রায় ১৬,০০০ – এঁদের চিত্রকূট সহ নিকটবর্তী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে যেখানে তাঁরা বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশন করাতে পেরেছেন। এভাবেই একতার মহাকুম্ভে বিভিন্ন মহতী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

 

ভাই ও বোনেরা,

এইসব উদ্যোগগুলির পেছনে কারা আছেন? আমাদের পূজনীয় সাধু-সন্ন্যাসীরা হাজার চিকিৎসক এবং স্বেচ্ছাসেবককে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করতে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন। যাঁরা একতার মহাকুম্ভ সফর করেছেন, তাঁরা এই উদ্যোগগুলির প্রশংসা করেছেন। 

ভাই ও বোনেরা,

আমাদের বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ভারতের বড় বড় হাসপাতালগুলির অনেকগুলিরই পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে। বিভিন্ন ধর্মীয় ট্রাস্ট বেশ কিছু গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে পরিচালনা করে যেখানে স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞানের নানা চর্চা হয়। এই প্রতিষ্ঠানগুলি সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদান করে। তাঁদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রোগের চিকিৎসা হয়। এখানে  ‘দিদি মা’-র উদ্যোগ এর মধ্যে একটি।  অনাথ বালিকাদের যে পরিষেবা এখান থেকে দেওয়া হয় তা সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক। তিনি তাঁর পুরো জীবন এই মেয়েদের কল্যাণে উৎসর্গ করেছেন। 

বন্ধুগণ, 

বুন্দেলখণ্ডের পবিত্র চিত্রকূট ভগবান রাম-এর স্মৃতি বিজড়িত একটি জায়গা। এখানে অসুস্থ এবং ভিন্নভাবে সক্ষমদের নানা পরিষেবা দেওয়া হয়। বাগেশ্বর ধামের মাধ্যমে আরেকটি মহতী উদ্যোগ গ্রহণ করায় আমি অত্যন্ত আনন্দিত। এখন বাগেশ্বর ধাম আধ্যাত্মিকতার কেন্দ্র ছাড়াও স্বাস্থ্যকেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে। 

আমি শুনলাম, আর মাত্র দু’দিন পর যে মহাশিবরাত্রি এখানে অনুষ্ঠিত হবে, সেইদিন এক গণ-বিবাহ অনুষ্ঠানে ২৫১ জন কন্যাকে পাত্রস্থ করা হবে। আমি বাগেশ্বর ধামের এই উদ্যোগের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিনন্দন জানাই। যাঁদের বিয়ে হবে, সেইসব নব-দম্পতিকে এবং ঐ ২৫১ জন কন্যাকে অগ্রিম শুভেচ্ছা জানালাম।

 

বন্ধুগণ,

আমাদের বিভিন্ন পবিত্র গ্রন্থে বলা হয়েছে আমাদের শরীর ও স্বাস্থ্য আমাদের কর্তব্য পালনে এবং সাফল্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর তাই যখন দেশ আমাকে সেবা করার সুযোগ দিয়েছে, তখন আমি আমাদের সরকারের নীতি হিসেবে ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ মন্ত্রকে গ্রহণ করেছি। এই সঙ্কল্প বাস্তবায়নে ‘সবকা ইলাজ, সবকা আরোগ্য’ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এই লক্ষ্য পূরণের জন্য আমরা নানাভাবে কাজ করছি। আমরা নিজেদের রোগ প্রতিরোধ করতে গুরুত্ব দিচ্ছি। এখানে আমি একটা প্রশ্ন আপনাদের কাছে রাখতে চাই। স্বচ্ছ ভারত অভিযানে দেশের প্রতিটি গ্রামে তো শৌচালয় নির্মিত হয়েছে, তাই না? আচ্ছা, এগুলি নির্মাণের ফলে আপনারা উপকৃত হয়েছেন তো? আপনারা হয়তো জানেন, শৌচালয় নির্মাণের পেছনে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। নিকাশি ব্যবস্থা যখন যথাযথভাবে কাজ করে তখন রোগভোগ কমে যায়। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে, যেসব বাড়িতে যথাযথ শৌচালয় রয়েছে, সেখানে ওষুধের পেছনে খরচ কম হয়।

বন্ধুগণ,

২০১৪ সালে আমাদের সরকার ক্ষমতায় আসার আগে দেশের পরিস্থিতি এমন ছিল যে দরিদ্র মানুষেরা ভাবতেন তাঁরা কিভাবে চিকিৎসা করাবেন। তাঁদের পরিবারের কেউ যদি গুরুতর অসুস্থ হতেন, তাহলে গোটা পরিবার আর্থিক দুর্দশায় পড়ত। আপনাদের অনেকের মতোই আমিও অত্যন্ত সাধারণ পরিবার থেকে এসেছি। আমি এই সমস্যাগুলিকে অনুভব করেছি। আর তাই, আমি শপথ নিয়েছিলাম, চিকিৎসার খরচ কমাব, যাতে কঠোর পরিশ্রম করে যে দুটি পয়সা আপনারা আয় করেন সেই অর্থের সাশ্রয় হয়। 

আমি প্রায়শই আপনাদেরকে আমাদের সরকারের বিভিন্ন কল্যাণমূলক প্রকল্প সম্পর্কে জানিয়েছি যাতে যোগ্য ব্যক্তিরা সকলেই এর সুযোগ পান। আজ আমি আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আপনাদের সামনে উপস্থাপিত করব। আশা করব, আপনারা এই তথ্য আপনাদের পরিচিতদের মধ্যে ভাগ করে নেবেন। কি করবেন তো? আমি নিশ্চিত আপনারা সেটি করবেন কারণ, সচেতনতার প্রসার ঘটানো সমাজসেবার অঙ্গ। আমরা কি চিকিৎসার খরচ কমাতে উৎসাহিত নই?
 
আর তাই, আমি সমাজের পিছিয়ে পড়া প্রতিটি মানুষের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবার ব্যবস্থা করেছি। ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে আপনারা চিকিৎসা করাতে পারবেন। কোনো সন্তান তার মা-বাবার চিকিৎসার জন্য ৫ লক্ষ টাকা ব্যয় করতে কুন্ঠিত হবে না। কারণ, আপনাদের ছেলে দিল্লিতে বসে আছে যে আপনাদের সকলের কথা ভাবছে। তবে, এই পরিষেবা পাওয়ার জন্য আপনাদের আয়ুষ্মান কার্ড পেতে হবে। আমি জানি আপনাদের অনেকের কাছেই সেই কার্ড আছে। যাঁদের নেই, তাঁরা দ্রুত সেই কার্ড সংগ্রহ করুন। আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করব, এই অঞ্চলে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পটি বাস্তবায়নে যেসব সমস্যাগুলি রয়েছে তার দ্রুত সমাধান করুন।

 

বন্ধুগণ,

একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আপনাদের মনে রাখতে হবে। এখন থেকে যাঁদের বয়স ৭০-এর বেশি, তাঁরা দরিদ্র হতে পারেন, মধ্যবিত্ত হতে পারেন অথবা বড়লোক হতে পারেন – এঁদের সকলকেই আয়ুষ্মান কার্ড দেওয়া হবে যার মাধ্যমে এঁরা বিনামূল্যে চিকিৎসা করাতে পারবেন। অনলাইনে এই কার্ড পাওয়া যাবে। এর জন্য কোনো বাড়তি টাকা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। কেউ টাকা চাইলেই সরাসরি আমাকে জানাবেন, বাকি ব্যবস্থা যা নেওয়ার আমি নেব। আমি আমাদের পূজনীয় সাধু-সন্ন্যাসীদের এবং আধ্যাত্মিক নেতাদের বলব, আপনারা সকলে আয়ুষ্মান কার্ড সংগ্রহ করুন, যদি আপনারা অসুস্থ হয়ে পড়েন তাহলে আপনাদের সেবা করার সুযোগ আমি পাব। দেখুন, আমি চাইব আপনারা সকলে সুস্থ থাকুন, কিন্তু অনেক সময় এমন কিছু পরিস্থিতি দাঁড়ায় তখন এই কার্ড থাকলে আপনাদের সবার সুবিধা হবে।

ভাই ও বোনেরা,

অনেক সময় দেখা যায়, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া হয়তো জরুরি নয়, রোগীর বাড়িতে ওষুধ খেলেই চলবে। এই ওষুধ যাতে ব্যয়সাশ্রয়ী মূল্যে পাওয়া যায়, তার জন্য আমরা দেশজুড়ে ১৪ হাজারের বেশি জন ঔষধি কেন্দ্র গড়ে তুলেছি। এই কেন্দ্রগুলি থেকে যথেষ্ট সস্তায় ওষুধ পাওয়া যায়। যে ওষুধের বাজার মূল্য ১০০ টাকা, সেই ওষুধই আপনি জন ঔষধি কেন্দ্র থেকে ১৫, ২০ অথবা ২৫ টাকায় পাবেন। তাহলে বলুন, এর ফলে তো আপনার অর্থের সাশ্রয় হবে, তাই না? আপনারা কি জন ঔষধি কেন্দ্র থেকে ওষুধ কিনবেন না?

আরও একটি বিষয়ে আমি উদ্বিগ্ন। সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে যে গ্রামাঞ্চলে কিডনির অসুখ বেশ বাড়ছে। কিডনির অসুখ খারাপ পর্যায়ে গেলে রোগীকে ডায়ালিসিস করতে হয়। এজন্য অনেক দূরে যেতে হয়। পুরো প্রক্রিয়াটিই ব্যয়বহুল। এই সমস্যার সমাধানে আমরা দেশের ৭০০-র বেশি রাজ্যে ১,৫০০ ডায়ালিসিস সেন্টার গড়ে তুলেছি যেখানে বিনামূল্যে এই পরিষেবা দেওয়া হবে। 

আপনারা শুধু এই সরকারি প্রকল্পগুলির সুযোগই গ্রহণ করবেন না, এগুলি সম্পর্কে অন্য লোকেদেরকেও জানাবেন। কি জানাবেন তো? হাত তুলে আমাকে বলুন – আপনারা জানাবেন কিনা? আসলে এটি একটি পবিত্র কাজ যার মধ্য দিয়ে আপনারা পূণ্য অর্জন করতে পারবেন। 

বন্ধুগণ,

বাগেশ্বর ধামে একটি বড় ক্যান্সার হাসপাতাল গড়ে উঠতে চলেছে। ক্যান্সার এখন একটি বেশ বড় সমস্যা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে। ফলে, এই অসুখের মোকাবিলা করতে সরকার, সমাজ এবং আধ্যাত্মিক নেতাদের একযোগে কাজ করতে হবে। 

ভাই ও বোনেরা,

আমি জানি ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই কতটা কষ্টকর, বিশেষত গ্রামাঞ্চলে। অনেক ক্ষেত্রে মানুষ দীর্ঘদিন ধরে জানতেও পারেন না তাঁরা ক্যান্সারে আক্রান্ত। প্রাথমিক স্তরে তাঁরা জ্বর এবং ব্যথার ওষুধ খান। অনেকে পুজোপাঠ করেন। অনেকে ভুয়ো ব্যক্তির কবলে পড়েন। যখন ব্যথা অসহ্য হয়ে ওঠে বা কোনো লাম্প দেখতে পাওয়া যায়, তখনই তাঁরা চিকিৎসকের কাছে যান। প্রতিটি বাড়িতে এই রোগ সম্পর্কে একটা ভয়ের ধারণা আছে। যাঁরা এই রোগে আক্রান্ত হন, সেই পরিবারগুলির স্বপ্ন ভেঙে খান খান হয়ে যায়। তাঁরা কোথায় চিকিৎসা করবেন তা নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাঁরা দিল্লি ও মুম্বাইতে চিকিৎসা করাতে আসেন। 

তাই, আমাদের সরকার এই সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হয়েছে। ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইকে আরও শক্তিশালী করতে এ বছরের বাজেটে গুরুত্বপূর্ণ কিছু ঘোষণা করা হয়েছে। ক্যান্সারের চিকিৎসাকে আরও সুলভ করে তুলতে মোদী উদ্যোগী হয়েছেন। আগামী তিন বছরে দেশের প্রতিটি জেলায় ক্যান্সার ডে-কেয়ার সেন্টার গড়ে তোলা হবে। সেখানে ক্যান্সারের পরীক্ষানিরীক্ষা চলবে। এছাড়াও, প্রতিটি জেলা হাসপাতালে ক্যান্সার ক্লিনিক গড়ে তোলা হবে। আপনার কাছাকাছি অঞ্চলের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাতে ক্যান্সার পরিষেবা পাওয়া যায়, তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

কিন্তু, ভাই ও বোনেরা,

এই প্রসঙ্গে আমি একটি কথা বলব। শুনতে হয়তো ভাল লাগবে না, কিন্তু আপনাদের সকলের জন্যই এটি গুরুত্বপূর্ণ। ক্যান্সার থেকে রক্ষা পেতে হলে আপনাদের সতর্ক থাকতে হবে। দ্রুত শনাক্তকরণ অত্যন্ত জরুরি। একবার ক্যান্সার শরীরে ঢুকে গেলে তার চিকিৎসা খুবই কঠিন। আর তাই, দেশজুড়ে যাঁদের বয়স ৩০-এর বেশি, তাঁদের কারোর ক্যান্সার আছে কিনা, তা জানার জন্য আমরা এক অভিযান শুরু করেছি। আপনারা প্রত্যেকে এই সুযোগ গ্রহণ করুন। ন্যূনতম সন্দেহ দেখা দিলে ক্যান্সার হয়েছে কিনা তা জানার জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করান। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল সচেতনতা গড়ে তোলা। ক্যান্সার কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়। একজনের ছোঁয়ায় আরেকজনের ক্যান্সার হয় না। তবে জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। বিড়ি, সিগারেট, গুটখা, খৈনি খাওয়া অথবা মশলাদার খাবার খেলে ক্যান্সার হতে পারে। আমি লক্ষ্য করছি, আমাদের এখানে উপস্থিত মা ও বোনেরা এই কথাগুলি শুনে নিশ্চিন্ত বোধ করছেন। আর তাই আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ, এইসব ক্ষতিকর জিনিসের থেকে দূরে থাকুন, অন্যকে দূরে রাখুন। আপনার স্বাস্থ্যের কথা প্রথমে চিন্তা করুন। আমরা যদি রোগ নিরাময়ের জন্য সচেতন হই, তাহলে যেরকম হাসপাতাল বাগেশ্বর ধামে গড়ে উঠছে, সেই রকম হাসপাতালের যাওয়ার ঝঞ্ঝাট থেকে সকলে মুক্ত হব । এখানে রোগী হিসেবে আসতে আপনারা কেউই নিশ্চয়ই চাইবেন না। তাই আপনাদের সকলকে সচেতন হতে হবে, তাই তো?

বন্ধুগণ,

মোদী আপনাদের জন্য এক একনিষ্ঠ সেবক। ছাতারপুরে আমার বিগত সফরে কয়েক হাজার কোটি টাকার কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করার সৌভাগ্য হয়েছিল। আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, এর মধ্যে ৪৫ হাজার কোটি টাকার কেন-বেতোয়া সংযোগ প্রকল্প অন্যতম। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে এই প্রকল্পটি আটকে ছিল। অনেক সরকার এসেছে। বুন্দেলখণ্ডে অনেক রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা এসেছেন। অথচ, জল সঙ্কটের সমাধান হয়নি, তা ক্রমশ বেড়েছে। আচ্ছা বলুন তো, এর আগে অন্য কোনো সরকার এই সমস্যার সমাধান করতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল? দীর্ঘদিনের এই প্রকল্পগুলি বাস্তবায়িত হচ্ছে তার কারণ আপনারা মোদীকে আশীর্বাদ করেছেন। 

পানীয় জলের সমস্যার সমাধান করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আজ বুন্দেলখণ্ডে জল জীবন মিশন – হর ঘর জল প্রকল্পে ঘরে ঘরে নলবাহিত জল পৌঁছে যাচ্ছে। গ্রামাঞ্চলে যাতে জল সমস্যা না হয়, তা নিশ্চিত করতে আমরা সবরকমের চেষ্টা চালাচ্ছি। এর ফলে, আমাদের কৃষক ভাই-বোনেদের কষ্ট লাঘব হবে, তাঁদের আয় বাড়বে। 

ভাই ও বোনেরা,

বুন্দেলখণ্ডের প্রকৃত উন্নয়নের জন্য আমাদের মা ও বোনেদের ক্ষমতায়ন অত্যন্ত জরুরি। এই লক্ষ্য পূরণে আমরা ‘লাখপতি দিদি’ ও ‘ড্রোন দিদি’র মতো বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছি। আমাদের উদ্দেশ্য হল ৩ কোটি বোনকে লাখপতি দিদিতে পরিণত করা যাতে তাঁরা আর্থিকভাবে স্বাধীন হন। আজ মহিলাদের ড্রোন ওড়ানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। একবার কল্পনা করুন, বুন্দেলখণ্ডে সেচের কাজে আমাদের বোনেরা ড্রোনের সাহায্যে স্প্রে করছেন, তাঁরা সক্রিয়ভাবে কৃষিকাজে যোগ দিয়েছেন। এর ফলে বুন্দেলখণ্ডের দ্রুত সমৃদ্ধি হবে। 

ভাই ও বোনেরা, 

ড্রোন প্রযুক্তির মাধ্যমে আমাদের গ্রামগুলিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে। ‘স্বামীত্ব’ প্রকল্পের আওতায় ড্রোনের মাধ্যমে ভূমি সমীক্ষার কাজ নিখুঁতভাবে করা হচ্ছে, যাতে জমির মালিকানা সংক্রান্ত সঠিক নথি দেওয়া যায়। মধ্যপ্রদেশে এই ক্ষেত্রে যথেষ্ট ভালো কাজ হয়েছে। রাজ্যের মানুষ তাঁদের আইনি নথির মাধ্যমে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পাচ্ছেন, যার সাহায্যে তাঁরা নতুন নতুন ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু করতে পারছেন। এর ফলে, আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। মানুষের আয়ও বাড়ছে।

বন্ধুগণ,

ডবল ইঞ্জিন সরকার পবিত্র বুন্দেলখণ্ডকে উন্নয়নের নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আজ বাগেশ্বর ধামে বুন্দেলখণ্ডের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির যাত্রা যাতে বজায় থাকে, আমি সেই প্রার্থনাই জানিয়েছি। যখন আমি হনুমান দাদার পদতলে উপস্থিত হই, তখন আমার মনে একটি চিন্তা উঁকি মারে, ধীরেন্দ্র শাস্ত্রী কি এককভাবে আধ্যাত্মিক পূণ্য অর্জন করবেন, নাকি সঙ্গে আমিও খানিকটা পূণ্য অর্জন করব? আমি দেখতে চাই, হনুমান দাদা আমাকে আশীর্বাদ করেন কিনা।

আমার বন্ধুরা,   

এই পবিত্র অনুষ্ঠানে, যেখানে সঙ্কল্প হয় দৃঢ়, সন্ন্যাসীদের আশীর্বাদকে পাথেয় করে সেখানে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রতিটি লক্ষ্য পূরণ করা  সম্ভব হয়। আপনাদের এখানে কেউ কেউ এসেছেন এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিতে। আবার কেউ কেউ এসেছেন তাঁদের বিবাহ উপলক্ষে শোভাযাত্রায় যোগদানের আমন্ত্রণ নিয়ে। আজ আমি আপনাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, দুটি অঙ্গীকারই আমি পূরণ করব!

আরও একবার আপনাদের সকলকে শুভেচ্ছা জানাই। অনেক অনেক ধন্যবাদ। হর হর মহাদেব!

 

Explore More
শ্রী রাম জন্মভূমি মন্দিরের ধ্বজারোহণ উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বাংলা অনুবাদ

জনপ্রিয় ভাষণ

শ্রী রাম জন্মভূমি মন্দিরের ধ্বজারোহণ উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বাংলা অনুবাদ
Since 2019, a total of 1,106 left wing extremists have been 'neutralised': MHA

Media Coverage

Since 2019, a total of 1,106 left wing extremists have been 'neutralised': MHA
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Prime Minister Welcomes Release of Commemorative Stamp Honouring Emperor Perumbidugu Mutharaiyar II
December 14, 2025

Prime Minister Shri Narendra Modi expressed delight at the release of a commemorative postal stamp in honour of Emperor Perumbidugu Mutharaiyar II (Suvaran Maran) by the Vice President of India, Thiru C.P. Radhakrishnan today.

Shri Modi noted that Emperor Perumbidugu Mutharaiyar II was a formidable administrator endowed with remarkable vision, foresight and strategic brilliance. He highlighted the Emperor’s unwavering commitment to justice and his distinguished role as a great patron of Tamil culture.

The Prime Minister called upon the nation—especially the youth—to learn more about the extraordinary life and legacy of the revered Emperor, whose contributions continue to inspire generations.

In separate posts on X, Shri Modi stated:

“Glad that the Vice President, Thiru CP Radhakrishnan Ji, released a stamp in honour of Emperor Perumbidugu Mutharaiyar II (Suvaran Maran). He was a formidable administrator blessed with remarkable vision, foresight and strategic brilliance. He was known for his commitment to justice. He was a great patron of Tamil culture as well. I call upon more youngsters to read about his extraordinary life.

@VPIndia

@CPR_VP”

“பேரரசர் இரண்டாம் பெரும்பிடுகு முத்தரையரை (சுவரன் மாறன்) கௌரவிக்கும் வகையில் சிறப்பு அஞ்சல் தலையைக் குடியரசு துணைத்தலைவர் திரு சி.பி. ராதாகிருஷ்ணன் அவர்கள் வெளியிட்டது மகிழ்ச்சி அளிக்கிறது. ஆற்றல்மிக்க நிர்வாகியான அவருக்குப் போற்றத்தக்க தொலைநோக்குப் பார்வையும், முன்னுணரும் திறனும், போர்த்தந்திர ஞானமும் இருந்தன. நீதியை நிலைநாட்டுவதில் அவர் உறுதியுடன் செயல்பட்டவர். அதேபோல் தமிழ் கலாச்சாரத்திற்கும் அவர் ஒரு மகத்தான பாதுகாவலராக இருந்தார். அவரது அசாதாரண வாழ்க்கையைப் பற்றி அதிகமான இளைஞர்கள் படிக்க வேண்டும் என்று நான் கேட்டுக்கொள்கிறேன்.

@VPIndia

@CPR_VP”