এই উপলক্ষে তিনি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগের সূচনা করেছেন
জাতীয় উন্নয়নের ‘মহাযজ্ঞে’ জাতীয় শিক্ষানীতি একটি বড় বিষয় : প্রধানমন্ত্রী
সমগ্র দেশ আমাদের যুব সম্প্রদায়ের পাশে থেকে প্রত্যাশা পূরণে অঙ্গীকারবদ্ধ – জাতীয় শিক্ষানীতি এই আশ্বাস দেয় : প্রধানমন্ত্রী
সরলতা এবং চাপমুক্ত পরিবেশ জাতীয় শিক্ষানীতির গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য : প্রধানমন্ত্রী
আটটি রাজ্যের ১৪টি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ পাঁচটি ভারতীয় ভাষায় পঠনপাঠন শুরু করেছে : প্রধানমন্ত্রী
শিক্ষাদানের মাধ্যম হিসেবে মাতৃভাষা দরিদ্র, গ্রামীণ ও আদিবাসী এলাকা থেকে উঠে আসা ছাত্রছাত্রীদের মনে আস্থার সঞ্চার করবে : প্রধানমন্ত্রী

নমস্কার !
আজ এই অনুষ্ঠানে আমার সঙ্গে কেন্দ্রিয় মন্ত্রিসভার যে সমস্ত সহযোগী যুক্ত হয়েছেন, বিভিন্ন রাজ্যের মাননীয় রাজ্যপাল, সকল সম্মানিত মুখ্যমন্ত্রী, উপমুখ্যমন্ত্রী, বিভিন্ন রাজ্য সরকারের মন্ত্রীগণ, উপস্থিত বিশিষ্ট শিক্ষাবিদগন, অধ্যাপকগন, সমস্ত অভিভাবক এবং আমার প্রিয় যুব বন্ধুরা !
নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির এক বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে সকল দেশবাসী এবং বিশেষ করে সকল ছাত্রছাত্রীদের অনেক অনেক শুভ কামনা। বিগত ১ বছরে দেশে আপনাদের মতো সমস্ত মান্য গণ্য ব্যক্তিগণ, শিক্ষক – শিক্ষিকাগণ, প্রধান শিক্ষক – শিক্ষিকাগণ, নীতি প্রণয়নকারীগণ এই জাতীয় শিক্ষানীতিকে বাস্তবায়িত করার জন্য অনেক পরিশ্রম করেছেন। করোনার এই সঙ্কটকালেও লক্ষ লক্ষ নাগরিকদের থেকে শিক্ষক – শিক্ষিকাদের থেকে, বিভিন্ন রাজ্য সরকার ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাগুলি থেকে পরামর্শ নিয়ে টাস্কফোর্স গঠন করে নতুন শিক্ষানীতিকে পর্যায়ক্রমিকভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে। বিগত এক বছরে জাতীয় শিক্ষানীতিকে ভিত্তি করে অনেক বড় বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই ক্রমেই আজ আমার অনেক নতুন প্রকল্প এবং নতুন উদ্যোগের শুভ সূচনা করার সৌভাগ্য হয়েছে।
বন্ধুগণ,
এই গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ এমন সময় এসেছে, যখন দেশ স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে অমৃত মহোৎসব পালন করতে শুরু করেছে। আজ থেকে কয়েক দিন পর ১৫ই আগস্টে আমরা স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষে প্রবেশ করতে চলেছি। এক ভাবে, এই নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির প্রয়োগ, স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবের প্রধান অংশ হয়ে উঠেছে। এত বড় মহা পর্বের মাঝে জাতীয় শিক্ষানীতির মাধ্যমে আজ শুরু হওয়া প্রকল্পগুলি নতুন ভারত নির্মাণে অনেক বড় ভূমিকা পালন করবে। ভারতের যে সোনালী ভবিষ্যতের সংকল্প নিয়ে আজ আমরা স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব পালন করছি, সেই ভবিষ্যতের পথে আজকের নতুন প্রজন্মই আমাদের নিয়ে যাবে। ভবিষ্যতে আমরা কতটা এগিয়ে যাবো, কতটা উচ্চতা অর্জন করবো, এই সমস্ত বিষয়টি নির্ভর করবে নবীন প্রজন্মের ওপর। আমরা আমাদের নবীন প্রজন্মকে বর্তমানে, অর্থাৎ আজ কী রকম শিক্ষা দিচ্ছি, কী রকম পথ নির্দেশ দিচ্ছি। সেজন্য আমি মনে করি ভারতের নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি দেশ গঠনের মহাযজ্ঞে বড় উপাদানগুলির মধ্যে অন্যতম। আর সেজন্য দেশ এই শিক্ষানীতিকে এতটা আধুনিক করে তুলেছে, এতটা ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছে, আজ এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে যারা যুক্ত হয়েছেন, অধিকাংশ গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির খুঁটিনাটি সম্পর্কে পরিচিত। কিন্তু এটা কত বড় মিশন, তার অনুভব আমাদের বার বার মনে করতেই হবে।
বন্ধুগণ,
সারা দেশ থেকে আমাদের অনেক ছাত্রছাত্রী যুব বন্ধুরাও এই অনুষ্ঠানে আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। যদি এই বন্ধুদের সঙ্গে আমরা তাদের আকাঙ্খা সম্পর্কে, স্বপ্নগুলি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করি, তাহলে আপনারা দেখবেন, যে প্রত্যেক যুবকের মনে একটি নতুনত্ব আছে, এই নতুন প্রাণশক্তি আছে। আমাদের যুব শক্তি পরিবর্তনের জন্য সম্পূর্ণ রূপে প্রস্তুত। তাঁরা আর অপেক্ষা করতে চান না। আমরা সকলে দেখেছি, করোনাকালে কিভাবে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার সামনে এতো বড় সমস্যার এসে দাঁড়িয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার, জীবনশৈলী বদলে গেছে। কিন্তু দেশের ছাত্রছাত্রীরা দ্রুত গতিতে এই পরিবর্তনকে আপন করে নিয়েছে। অনলাইন শিক্ষা এখন একটি সহজ চলনে পরিণত হতে চলেছে। শিক্ষা মন্ত্রকও এর জন্য অনেক চেষ্টা করেছে। মন্ত্রক একটি দীক্ষা প্ল্যাটফর্ম চালু করেছে। নিজেরাই এই পোর্টালে পাঠ্যক্রম চালু করেছেন, আর আমাদের ছাত্রছাত্রীরা পূর্ণ উদ্যোমে এর অংশ হয়ে উঠেছেন। আমাকে বলা হয়েছে, যে দীক্ষা পোর্টালে বিগত এক বছরে ২৩০০ কোটিরও বেশি হিট হওয়া এটা প্রমাণ করে, যে এই উদ্যোগ কতটা উপযোগী হয়ে উঠেছে। আজও এতে প্রত্যেক দিন প্রায় ৫ কোটি হিট হচ্ছে।
বন্ধুগণ,
একবিংশ শতাব্দীর আজকের যুব সম্প্রদায় নিজেদের ব্যবস্থা, নিজেদের বিশ্ব নিজেরাই নিজেদের হিসেবে গড়ে তুলতে চায়। সেজন্য তাদের “এক্সপ্রোজার চাই”, তাদের পুরোনো বন্ধনগুলি থেকে, খাঁচাগুলি থেকে মুক্তি চাই। আপনারা দেখুন, আজ ছোট ছোট গ্রাম থেকে, ছোট জনপথ থেকে উঠে আসা যুবক – যুবতীরা কত অসাধারণ কাজ করছেন। এতো দূর দুরান্তের এবং সাধারণ পরিবার থেকে উঠে আসা যুবক – যুবতীরা আজ টোকিও অলিম্পিক্সে দেশের পতাকাকে উচ্চে তুলে ধরছেন, ভারতকে নতুন পরিচয় দিচ্ছেন। তেমনি কোটি কোটি যুবক – যুবতী আজ ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে অসাধারণ কাজ করছেন। অসাধারণ লক্ষ্যের ভিত্তি স্থাপন করছেন। কেউ কলা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে পুরাতন এবং আধুনিক ফিউশনের মাধ্যমে নতুন নতুন ধারার জন্ম দিচ্ছেন। আবার কেউ রোবটিক্সের ক্ষেত্রে কখন যাকে সাইফাই মনে করা হতো, সেরকম কল্পনাগুলিকে বাস্তবে রূপ দিচ্ছেন। কেউ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে মানবিক ক্ষমতাগুলিকে নতুন উচ্চতা প্রদান করছেন। আবার কেউ মেশিন লার্নিং এর ক্ষেত্রে নতুন মাইল ফলক স্থাপন করছেন। অর্থাৎ প্রতিটি ক্ষেত্রে ভারতের যুব সম্প্রদায় নিজেদের বিজয় পতাকা নিয়ে এগিয়ে চলেছেন। এই যুব সম্প্রদায়ই ভারতের ‘স্টার্ট-আপ ইকো সিস্টেম’এ বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনছেন। ইন্ড্রাস্টি ৪.০ –তে ভারতকে নেতৃত্ব প্রদানের জন্য প্রস্তুত করছেন। আর ডিজিটাল ইন্ডিয়াকে নতুন গতি দিচ্ছেন। আপনারা কল্পনা করুন, এই যুব সম্প্রদায় যখন তাদের স্বপ্নের অনুরূপ আবহ পাবে, তখন এদের শক্তি বেশি বেড়ে যাবে। আর সে জন্য, নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি যুব সস্প্রদায়কে এই বিশ্বাস এনে দিয়েছে যে, দেশ এখন সম্পূর্ণ রূপে তাদের সঙ্গে রয়েছে, তাদেরকে সাহস যোগাচ্ছে। একটু আগেই যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রোগ্রাম উদ্বোধন করা হল, তাও আমাদের যুব শক্তিকে ভবিষ্যৎ মুখি করে তুলবে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিচালিত অর্থনীতির অনেক পথ খুলবে। শিক্ষায় এই ডিজিটাল বিপ্লব, গোটা দেশে একসঙ্গে এসেছে। গ্রাম, শহর সর্বত্র মানুষ যাতে সমানরূপে ডিজিটাল লার্নিংএর সাথে যাতে যুক্ত হতে পারে, সেদিকেও বিশেষ লক্ষ্য রাখা হয়েছে।‘ ন্যাশনাল ডিজিটাল এডুকেশন আর্কিটেকচার’ অর্থাৎ এনডিপিএআর ‘ন্যাশনাল এডুকেশন টেকনোলজি ফোরাম’ বা এনইটিএফ এই লক্ষ্যে গোটা দেশে ডিজিটাল এবং প্রযুক্তিগত ফ্রেমওয়ার্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। যুবমন যে দিশাতেই ভাবনা চিন্তা করতে চায়, খোলা আকাশে যেভাবে উড়তে চায়, দেশের নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা তাদের জন্য তেমনি সুযোগ প্রদান করবে।

 

বন্ধুগণ,
বিগত এক বছরে আপনারাও এটা অনুভব করেছেন, যে জাতীয় শিক্ষানীতিকে কোনো রকম চাপ থেকে মুক্ত রাখা হয়েছে। যে উন্মুক্ততা নীতি নির্ধারণের পর্যায়ে রয়েছে, সেই উন্মুক্ততা ছাত্রদের পাওয়া বিকল্পের মধ্যেও রয়েছে। এখন ছাত্রছাত্রীরা কতটা পড়াশুনা করবে, কতটা সময় ধরে পড়বে, এটা শুধুই সংশ্লিষ্ট বোর্ড এবং বিশ্ববিদ্যালয় ঠিক করবে না। এই সিদ্ধান্ত গ্রহণে ছাত্রছাত্রীদেরও ভূমিকা থাকবে। “মাল্টিপল এন্ট্রি অ্যান্ড এক্সিট” –এর যে ব্যবস্থা আজ শুরু হয়েছে, এটি ছাত্রছাত্রীদের একই ক্লাস এবং একই কোর্সে বাধা পড়ে থাকার ও কোনও রকম বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্ত করে দিয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর “অ্যাকাডেমিক ব্যাঙ্ক অফ ক্রেডিট” এই ব্যবস্থা থেকে এই লক্ষ্যে ছাত্রছাত্রীদের জন্য বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে আসবে। এখন প্রত্যেক যুবক যুবতী নিজেদের রুচি অনুসারে, নিজেদের সুবিধা অনুসারে যে কোনো সময় একটি স্ট্রিম বেছে নিতে পারে, আবার ছাড়তেও পারে। এখন অনেক কোর্স নির্বাচন করার সময় এই ভয় থাকবে না, যে যদি আমাদের সিদ্ধান্ত ভুল হয়, তাহলে কী হবে? এভাবে “স্ট্র্যাকচার অ্যাসেসমেন্ট ফর অ্যানালাইজিং লার্নিং লেভেলস” অর্থাৎ সফল হওয়ার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের যোগ্যতা মান নির্ধারণেও বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থা শুরু হয়েছে। এই ব্যবস্থা আগামী সময়ে ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষার ভয় থেকে মুক্তি এনে দেবে। ছাত্রছাত্রীরা যখন এই ভয় মন থেকে বের করে দিতে পারবে, তখন ওরা নতুন নতুন দক্ষতা অর্জনের সাহস ও নতুন নতুন উদ্ভাবনের প্রতিযোগিতা শুরু হবে। সম্ভাবনাগুলির অসীম বিস্তার ঘটবে। সেজন্য আমি আবার চাইবো, যে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির মাধ্যমে যে নতুন কর্মসূচি শুরু হয়েছে, তা ভারতের ভাগ্য পরিবর্তনে সামর্থ্য রাখে।
বন্ধুগণ,
আমরা পূর্ববর্তী দশকগুলিতে এই আবহ দেখেছি, যখন মনে করা হতো, ভালো পড়াশোনা করার জন্য বিদেশে যেতেই হয়। কিন্তু উন্নত পড়াশোনার জন্য বিদেশ থেকে ছাত্রছাত্রীরা ভারতে এলে বিদেশের শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানগুলি যাতে ভারতে আসে, সেটা এখন আমরা দেখবো। এই তথ্য অনেক উৎসাহবর্ধক। দেশের ১৫০ –এরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে অফিস অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স স্থাপন করা হয়েছে। ভারতের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি যাতে আন্তর্জাতিক স্তরে গবেষণা এবং শিক্ষাক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে পারে তা সুনিশ্চিত করতে আজ নতুন গাইডলাইন্সও জারি করা হয়েছে।
বন্ধুগণ,
আজ যে সব নতুন সম্ভাবনা জন্ম নিচ্ছে, সেগুলিকে বাস্তবায়িত করতে আমাদের যুব সম্প্রদায়কে বিশ্ব থেকে অবশ্যই এক কদম এগিয়ে থাকতে হবে। এক পা এগিয়ে যাওয়ার কথা ভাবতে হবে। স্বাস্থ্য হোক কিংবা প্রতিরক্ষা, পরিকাঠামো থেকে শুরু করে প্রযুক্তি পর্যন্ত দেশকে প্রত্যেক দিশায় সমর্থ ও আত্মনির্ভর করে তুলতে হবে। আত্মনির্ভর ভারতের পথ দক্ষতা উন্নয়ন ও প্রযুক্তির মাধ্যমেই এগোয়। যে ক্ষেত্রে এনইপি –তে বিশেষ লক্ষ্য রাখা হয়েছে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে বিশ্বে বিগত একমাসে ১২০০রও বেশি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দক্ষতা উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত কয়েকশো নতুন কোর্সকে মঞ্জুর করা হয়েছে।
বন্ধুগণ,
শিক্ষার বিষয়ে পূজনীয় বাপু মহাত্মা গান্ধীজি বলতেন, জাতীয় শিক্ষার প্রকৃত অর্থ জাতীয় হওয়ার জন্য জাতীয় পরিস্থিতিগুলিকে প্রতিফলিত করা উচিত। বাপুর এই দূরদৃষ্টি সম্পন্ন ভাবনাকে বাস্তবায়িত করতে স্থানীয় ভাষাগুলিতে মাতৃভাষায় শিক্ষার ভাবনা এনইপি –তে রাখা হয়েছে। এখন উচ্চশিক্ষায় ‘মিডিয়াম অফ ইনস্ট্রাকশন’ এর জন্য স্থানীয় ভাষাতেও একটি বিকল্প থাকবে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, ৮টি রাজ্যের ১৪টি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ৫টি ভারতীয় ভাষায় – হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠী এবং বাংলায় ইঞ্জিনিয়ারিং এর পাঠ্যক্রম শুরু করতে চলেছে। ইঞ্জিনিয়ারিং পাঠ্যক্রমকে ১১টি ভারতীয় ভাষায় অনুবাদের জন্য একটি টুলও ডেভলপ করা হয়েছে। আঞ্চলিক ভাষাগুলিতে নিজেদের পড়াশোনা শুরু করতে চলেছেন যে ছাত্রছাত্রীরা, তাদেরকে আমি বিশেষ অভিনন্দন জানাতে চাই। এর সব থেকে বড় লাভ দেশের গরীব জনসাধারণ পাবেন। গ্রাম ও জনপদগুলিতে বসবাসকারী মধ্যবিত্ত ছাত্রছাত্রীরা দলিত, পিছিয়ে পড়া এবং আদিবাসী ভাই – বোনেরা এর দ্বারা উপকৃত হবেন। এই পরিবারগুলি থেকে উঠে আসা ছেলে মেয়েরা সব থেকে বেশি ভাষা বিভাজনের সম্মুখীন হয়। সব থেকে বেশি ক্ষতি এই পরিবারগুলির মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের কাঁধে তুলে নিতে হয়। মাতৃভাষায় পড়াশোনার ফলে গরীব ছেলে মেয়েদের আত্মবিশ্বাস বাড়বে, তাদের সামর্থ্য এবং প্রতিভার সঙ্গে ন্যায় হবে।
বন্ধুগণ,
প্রারম্ভিক শিক্ষার ক্ষেত্রেও মাতৃভাষাকে উৎসাহ যোগানোর কাজ শুরু হয়েছে। যে ‘বিদ্যা প্রবেশ’ প্রোগ্রাম আজ উদ্বোধন করা হল, সেটিরও এখানে অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে। প্লে স্কুলের যে বড় ধারণা এখন পর্যন্ত বড় শহরগুলিতেই সীমাবদ্ধ রয়েছে, বিদ্যা প্রবেশের মাধ্যমে তা এখন দূর দুরান্তের বিদ্যালয়গুলিতেও ছড়িয়ে পড়বে, গ্রামে গ্রামে এর প্রয়োগ হবে। এই অনুষ্ঠান আগামী দিনে ‘ইউনিভার্সাল’ প্রোগ্রাম রূপে চালু হবে। রাজ্যগুলিও নিজেদের প্রয়োজন অনুসারে একে প্রয়োগ করবে। অর্থাৎ দেশের যে কোনো অংশের শিশুরা তা সে গরীব ঘরের হোক কিংবা ধনী ঘরের, তার পড়াশোনা, খেলা এবং হাসির মাধ্যমেই শুরু হবে, সহজভাবে হবে, এই লক্ষ্যে, এই প্রচেষ্টা জারি থাকবে।
বন্ধুগণ,
আজ আর একটি কাজ হল যা আমার হৃদয়ের খুব কাছের, অত্যন্ত সংবেদনশীল। আজ দেশে ৩ লক্ষেরও বেশি শিশু এমন রয়েছেন, যাদের শিক্ষার জন্য সাংকেতিক ভাষার প্রয়োজন পড়ে। এটা মাথায় রেখে ভারতীয় সাইন ল্যাঙ্গুয়েজগুলিকে প্রথমবার একটি ভাষা বিষয় অর্থাৎ একটি সাবজেক্টের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এখন ছাত্রছাত্রীরা একে একটি ভাষারূপে পড়তে পারবেন। সেজন্যে ভারতীয় সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ অনেক উৎসাহ পাবে। আমাদের দিব্যাঙ্গ বন্ধুদেরও অনেক সুবিধা হবে।
বন্ধুগণ,
আপনারাও জানেন যে, কেন ছাত্র কিংবা ছাত্রীদের সম্পূর্ণ পড়াশোনায়, তাদের জীবনে বড় প্রেরণা হন অধ্যাপকরা। আমাদের দেশে বলা হয়,
‘গুরৌ ন প্রাপ্যতে ইয়দ তৎ,
না অন্য অত্রাপি লভ্যতে’।
অর্থাৎ যিনি গুরু থেকে কিছু পান না, তিনি কোথাও থেকে কিছু পাবেন না। অর্থাৎ এমন কিছু নেই, যা একজন ভালো গুরু ভালো শিক্ষক পাওয়ার পর দুর্লভ হয়ে উঠবে। সেজন্য জাতীয় শিক্ষানীতির পরিকল্পনা, খসড়া তৈরি থেকে শুরু করে বাস্তবায়ন পর্যন্ত প্রত্যেক পর্যায়ে আমাদের শিক্ষক শিক্ষিকাদেরকেই সক্রিয়ভাবে এই অভিযানের অংশ করে তোলা হয়েছে। আজ উদ্বোধিত ‘নিষ্ঠা ২.০’ প্রোগ্রামও এই লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এই কর্মসূচীর মাধ্যমে দেশের শিক্ষকদের আধুনিক প্রয়োজনের হিসেবে প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে। আর তাঁরা বিভাগগুলিকেও নিজেদের পরামর্শ দিতে পারবেন। আপনাদের মতো প্রত্যেক শিক্ষক ও শিক্ষাবিদের প্রতি আমার অনুরোধ, এই প্রচেষ্টাগুলিতে আপনারা যত বেশি জন সম্ভব অংশগ্রহণ করুন এবং অধিক থেকে অধিকতর অবদান রাখুন। আপনাদের প্রত্যেকেরই শিক্ষা ক্ষেত্রে এতো অভিজ্ঞতা রয়েছে, আপনারা ব্যাপক অনুভবের ধারক; সেজন্য যখন আপনারা প্রচেষ্টা করবেন, তখন এই প্রচেষ্টা দেশকে অনেক এগিয়ে নিয়ে যাবে। আমি মনে করি এই কালখন্ডে আমরা যে ভূমিকাই পালন করি না কেন, আমাদের এত বড় পরিবর্তনের সাক্ষী হয়ে ওঠার মতো সৌভাগ্য হয়েছে। এই পরিবর্তনে আমরা সক্রিয় ভূমিকা পালন করছি। আপনাদের জীবনে এই সোনালী সুযোগ এসেছে, যে আপনারা দেশ এবং ভবিষ্যতের নির্মাণ করবেন, দেশের ভবিষ্যতের রূপরেখা নিজেদের হাতেই রচনা করবেন, লিখবেন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস আগামী দিনে যেভাবে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির ভিন্ন ভিন্ন উপাদান বাস্তবে রূপান্তরিত হবে, আমরা দেশের একটি নতুন যুগের সম্মুখীন হবো। যেভাবে আমরা আমাদের নবীন প্রজন্মকে একটি আধুনিক এবং জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করে যাবো, দেশ স্বাধীনতার অমৃত সংকল্পগুলিকে বাস্তবায়িত করতে থাকবে। এই শুভকামনাগুলির সঙ্গে আমি নিজের বক্তব্য শেষ করছি। আপনারা সবাই সুস্থ থাকুন। আর নতুন প্রাণশক্তি নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকুন। অনেক অনেক ধন্যবাদ।

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
How India is looking to deepen local value addition in electronics manufacturing

Media Coverage

How India is looking to deepen local value addition in electronics manufacturing
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
সোশ্যাল মিডিয়া কর্নার 22 এপ্রিল 2025
April 22, 2025

The Nation Celebrates PM Modi’s Vision for a Self-Reliant, Future-Ready India