প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ গুজরাটের নওসারিতে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সূচনা করেন। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে উপস্থিত শ্রোতাদের সম্বোধিত করে তিনি বিপুল সংখ্যায় আগত মা, বোন ও কন্যাদের ভালোবাসা, স্নেহ ও আশীর্বাদের জন্য কৃতজ্ঞতা জানান এবং দেশের সমস্ত মহিলাদের এই বিশেষ দিনের শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন যে মহাকুম্ভে তিনি মা গঙ্গার আশীর্বাদ পেয়েছিলেন, কিন্তু আজ তিনি মাতৃশক্তির মহাকুম্ভের আশীর্বাদ পেয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী আজ গুজরাটে দুটি প্রকল্প ‘জি-সফল’ (কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য অন্ত্যোদয় পরিবারগুলির জন্য গুজরাট সরকারের প্রকল্প) এবং ‘জি-মৈত্রী’ (গ্রামীণ আয় বৃদ্ধির জন্য গুজরাট সরকারের মেন্টরশিপ এবং অ্যাক্সিলারেশন প্রকল্প)-এর শুভ সূচনা উপলক্ষে এগুলি সম্পর্কে বলেন। তিনি আরও বলেন যে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে ধনরাশি সরাসরি মহিলাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়েছে এবং এই অভিজ্ঞতার জন্য সবাইকে শুভেচ্ছা জানান।

শ্রী মোদী বলেন যে তিনি আজকের এই মহিলাদের প্রতি সমর্পিত দিনটিতে নিজেকে বিশ্বের সবচাইতে ধনী ব্যক্তি বলে মনে করেন, অর্থের নিরিখে নয়, কোটি কোটি মা, বোন ও কন্যাদের আশীর্বাদের নিরিখে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “এই আশীর্বাদই আমার সবচাইতে বড় শক্তি, পুঁজি এবং সুরক্ষাকবচ।”
মহিলাদের সম্মানকে গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, এখন দেশের দ্রুত উন্নয়নের জন্য মহিলাদের নেতৃত্বসম্পন্ন উন্নয়নের পথে ভারত এগিয়ে চলেছে। তিনি বলেন যে বর্তমান সরকার মহিলাদের জীবনে সম্মান ও পরিষেবাকে গুরুত্ব দেয়। তিনি কোটি কোটি মহিলার জন্য শৌচালয় নির্মাণের কথা উল্লেখ করে বলেন, অনেক রাজ্যে এটাকে ‘ইজ্জত ঘর’ বা ‘সম্মান কা ঘর’ বলা হয়। কোটি কোটি মহিলাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার ফলে তাঁদের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় যুক্ত করা গেছে। ধোঁয়ার কারণে তাঁদের যত অসুস্থতার সম্মুখীন হতে হত, সেগুলি থেকে মুক্তি দিতে উজ্জ্বলা যোজনার মাধ্যমে বিনামূল্যে রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন যে তাঁর সরকার কর্মরত মহিলাদের জন্য মাতৃত্ব অবকাশকে ১২ সপ্তাহ থেকে বাড়িয়ে ২৬ সপ্তাহ করে দিয়েছে। মুসলিম বোনেদের তিন তালাকের বিরুদ্ধে আইন প্রণয়নের দাবিকে স্বীকার করে সরকার লক্ষ লক্ষ বোনেদের জীবন রক্ষাকারী একটি কঠিন আইন প্রণয়ন করেছে। জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা যখন জারি ছিল, তখন মহিলাদের অনেক অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখা হত। অন্য কোনো রাজ্যের মানুষের সঙ্গে বিয়ে হলে তাঁরা পৈত্রিক সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত হতেন। তাঁর সরকার ৩৭০ ধারা বাতিল করায় জম্মু-কাশ্মীরের মহিলারা এখন নিজেদের অধিকার পেয়েছেন।
সমাজ, সরকার এবং বিভিন্ন বড় প্রতিষ্ঠানে নানা স্তরে কর্মরত মহিলাদের ক্রমবর্ধমান সুযোগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে ২০১৪ সালের পর থেকে রাজনীতি, ক্রীড়া, বিচারবিভাগ কিংবা পুলিশের মতো ক্ষেত্রে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে মহিলাদের অংশীদারিত্ব উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারে এখন সবচাইতে বেশি মহিলা মন্ত্রী রয়েছেন এবং সংসদে মহিলাদের সংখ্যা বেড়েছে। ২০১৯-এ ৭৮ জন মহিলা সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন, আর এবার অষ্টম লোকসভায় ৭৪ জন মহিলা সাংসদ নির্বাচিত হয়ে এসেছেন। বিচারবিভাগে মহিলাদের ক্রমবর্ধমান অংশগ্রহণের কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, যে বিচারবিভাগে তাঁদের উপস্থিতি এখন ৩৫ শতাংশেরও বেশি। অনেক রাজ্যে সিভিল জজ রূপে যাঁরা নির্বাচিত হয়েছেন তাঁদের মধ্যে ৫০ শতাংশেরও বেশি মহিলা।

শ্রী মোদী আরও বলেন, ভারতে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম স্টার্ট-আপ ইকো-সিস্টেম রয়েছে। এর প্রায় অর্ধেক স্টার্ট-আপ-এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন মহিলারা। মহাকাশ অভিযানে নেতৃত্ব প্রদানকারী বৈজ্ঞানিকদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি তাঁর গর্বের কথা জানিয়ে বলেন, ভারতে বিশ্বের সবচাইতে বেশি মহিলা পাইলট রয়েছে। তিনি নওসারি কর্মসূচির আয়োজন এবং নিরাপত্তা ক্ষেত্রে মহিলা পুলিশ ও অন্যান্য আধিকারিকদের ভূমিকাকেও প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীতে অংশগ্রহণকারীদের মহিলাদের সঙ্গে তাঁর কথোপকথনের কথা উল্লেখ করে বলেন, তাঁদের উৎসাহ এবং আত্মবিশ্বাস অতুলনীয়। উন্নত ভারত গড়ে তুলতে এই মহিলারাই সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন বলে তাঁর বিশ্বাস।
গুজরাটকে মহিলা নেতৃত্বসম্পন্ন উন্নয়নের একটি অসাধারণ উদাহরণ রূপে তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে এই রাজ্য দেশকে মহিলাদের কঠিন পরিশ্রম এবং তাঁদের শক্তির বিকাশের উপযোগী মডেল তৈরি করেছে। তিনি আমূলের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির কথা উল্লেখ করে জানান, কিভাবে গুজরাটের গ্রামে গ্রামে লক্ষ লক্ষ মহিলা দুগ্ধ উৎপাদনকে একটি বিপ্লবে পরিবর্তিত করেছে। এভাবে তাঁরা নিজেকে কেবল আর্থিক রূপে ক্ষমতায়িত করে তোলেননি, সেইসঙ্গে গ্রামীণ অর্থ ব্যবস্থাকেও শক্তিশালী করেছেন। তিনি গুজরাটি মহিলাদের দ্বারা শুরু করা লিজ্জত পাপড়-এর সাফল্যের কথাও উল্লেখ করে বলেন, এখন এটি কয়েকশ’ কোটি টাকার ব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছে।
গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁর কার্যকালের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন কিভাবে সরকার মহিলাদের কল্যাণে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছিল যেমন – ‘চিরঞ্জীবী যোজনা’, ‘বেটি বাঁচাও অভিযান’, ‘মমতা দিবস’, ‘কন্যা কেলাওয়ানি রথ যাত্রা’, ‘কুঁয়রবাই নূ মামেরু’, ‘সাত ফেরা সমুহ লগ্ন যোজনা’ এবং ‘অভয়ম হেল্পলাইন’। তিনি ডেয়ারি ক্ষেত্রে কর্মরত মহিলাদের অ্যাকাউন্টে প্রত্যক্ষ নগদ হস্তান্তরের কথা উল্লেখ করে বলেন, এই পদ্ধতি গুজরাটেই শুরু হয়েছিল আর এখন গোটা দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষের উপকারে লেগেছে। এই প্রকল্প ছাড়াও আরও অন্যান্য প্রকল্পের ক্ষেত্রে অসংখ্য মানুষের উপকারে লেগেছে।

ভুজ-এর ভূমিকম্পের পর পুনর্নিমাণকালে মহিলাদের নামে বাড়ি বানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এখন ‘পিএম আবাস যোজনা’য় সেই মডেলই অনুসরণ করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে ২০১৪-র পর থেকে প্রায় ৩ কোটি মহিলা বাড়ির মালিক হয়েছেন। তেমনই ‘জল জীবন মিশন’-এর মাধ্যমে দেশের লক্ষ লক্ষ গ্রামে বাড়িতে বাড়িতে নলের মাধ্যমে পরিশ্রুত জল পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। বিগত পাঁচ বছরে ১৫.৫ কোটি বাড়িতে নলের মাধ্যমে জল পৌঁছেছে, আর এক্ষেত্রে মহিলা জল সমিতিগুলির ভূমিকা অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য। এই মডেলও গুজরাট থেকেই শুরু হয়েছিল।
জল সংরক্ষণের গুরুত্ব নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রীয় জল শক্তি মন্ত্রী শ্রী সি আর পাটিলের নেতৃত্বে সারা দেশে ‘ক্যাচ দ্য রেইন’ অভিযানের কথা বলেন। তার উদ্দেশ্য, বর্ষার জলকে বাঁচানো। এক্ষেত্রে নওসারির মহিলাদের প্রচেষ্টার প্রশংসা করে তিনি বলেন, পুকুর চেক ড্যাম, বোরওয়েল রিচার্জ এবং গোষ্ঠী সোক পিট সহ ৫ হাজারেরও বেশি প্রকল্প সম্পূর্ণ হয়েছে। নওসারিতে এখনও কয়েকশ’ জল সংরক্ষণ পরিকল্পনার কাজ চলছে যার লক্ষ্য, একদিনে এক হাজারটি পারকোলেশন পিট তৈরি করা। এভাবে নওসারি জেলাকে বর্ষার জল সঞ্চয় ও সার্বিকভাবে জল সংরক্ষণের ক্ষেত্রে গুজরাট তথা দেশের একটি অগ্রগণ্য জেলা রূপে স্বীকার করে নিয়ে তিনি এই এলাকার মা, বোন ও কন্যাদের বিশেষ শুভেচ্ছা জানান।
শ্রী মোদী বলেন, গুজরাটের মহিলাদের শক্তি এবং তাঁদের অবদান কোনো নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ নয়। এই রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৫০ শতাংশের বেশি আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। তাঁকে যখন প্রধানমন্ত্রী রূপে দিল্লিতে পাঠানো হয়েছে, তখন তিনি দেশের জন্য এই অভিজ্ঞতা ও দায়বদ্ধতা নিয়ে এসেছেন। তাঁর নেতৃত্বে এবারের সংসদে প্রথম যে বিলটি প্রণীত হয়েছিল সেটি ছিল মহিলা ক্ষমতায়নের জন্য ‘নারীশক্তি বন্দন অধিনিয়ম’। তিনি গর্বের সঙ্গে বলেন যে এটিকে রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিয়ে দিয়েছেন, কারণ তিনি নিজে সাধারণ আদিবাসী প্রেক্ষিত থেকে এসেছেন। সেইদিন দূরে নেই যখন এখানকার মহিলাদের মধ্যে থেকে কেউ কেউ সাংসদ বা বিধায়ক হবেন আর এভাবে এসে মঞ্চে বসবেন।
মহাত্মা গান্ধীর কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, দেশের আত্মা গ্রামীণ ভারতে থাকে, আর গ্রামীণ ভারতের আত্মা নিহিত গ্রামের মহিলাদের ক্ষমতায়নে। তিনি আরও বলেন, ভারত ইতিমধ্যেই বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হয়েছে। লক্ষ লক্ষ মহিলাদের অংশগ্রহণেই এই আর্থিক উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। বিশেষ করে গ্রামীণ অর্থ ব্যবস্থা এবং মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা স্বীকার করে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা দেশে ১০ কোটিরও বেশি মহিলা ৯০ লক্ষেরও বেশি স্বনির্ভর গোষ্ঠী পরিচালনা করছেন। এর মধ্যে ৩ লক্ষেরও বেশি স্বনির্ভর গোষ্ঠী গুজরাটে রয়েছে। তিনি বলেন, তাঁর সরকার তাঁদের সবাইকে ‘লাখপতি দিদি’তে পরিণত করতে চান। ইতিমধ্যেই প্রায় ১.৫ কোটি মহিলা ‘লাখপতি দিদি’ হয়েছেন। সরকার আগামী পাঁচ বছরে ৩ কোটি মহিলাকে ‘লাখপতি দিদি’তে পরিণত করার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন কোনো বোন লাখপতি দিদি হয়, তখন পুরো পরিবারের ভাগ্য বদলে যায়। এভাবে ধীরে ধীরে বাড়িতে করা কাজগুলিও আর্থিক আন্দোলনে পরিণত হয়। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সরকার গত এক দশকে বাজেট বরাদ্দ পাঁচগুণ বৃদ্ধি করেছে। এখন এই স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কোনরকম গ্যারান্টি ছাড়াই ঋণ দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া, এই মহিলাদের নতুন দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ ও নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যখন ‘ড্রোন দিদি’ প্রকল্প শুরু করেছিলাম, তখন এর সাফল্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিল। কিন্তু আমাদের বোন ও মেয়েদের প্রতিভা এবং সমর্পণ সেই সন্দেহকে আত্মবিশ্বাসে পরিণত করেছে। আজ ‘নমো ড্রোন দিদি অভিযান’ কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনীতিতে একটি নতুন বিপ্লব আনছে। এতে প্রত্যেক পরিবর্তনের নেতৃত্ব প্রদানকারী মহিলাদের আয় বাড়ছে। ‘ব্যাঙ্ক সখী’ এবং ‘বিমা সখী’র মতো প্রকল্পগুলি গ্রামের মহিলাদের নতুন নতুন সুযোগ প্রদান করছে। গ্রামীণ মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য ‘কৃষি সখী’ এবং ‘পশু সখী’ অভিযানের সঙ্গেও লক্ষ লক্ষ মহিলাদের যুক্ত করা হচ্ছে। তাঁদেরও আয় বাড়ছে। তিনি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্রভাই প্যাটেলকে আরও ১০ লক্ষ মহিলাকে ‘লাখপতি দিদি’ করে তোলার যে অভিযান তিনি শুরু করেছেন, তার জন্য শুভেচ্ছা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন যে লালকেল্লার প্রাকার থেকে ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধগুলি থামানো এবং একটি উন্নত সমাজ গড়ে তোলার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। গত এক দশকে সরকার মহিলাদের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে দ্রুত ন্যায় সুনিশ্চিত করার জন্য অনেক ফাস্ট-ট্র্যাক আদালত স্থাপন করেছে। ইতিমধ্যেই সারা দেশে ৮০০টি এমন আদালত গড়ে তোলার প্রকল্পকে মঞ্জুর করা হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই ইতিমধ্যে চালু হয়ে গেছে। এই আদালতগুলি ধর্ষণ এবং পক্সো আইন সংশ্লিষ্ট প্রায় ৩ লক্ষ মামলার সমাধান ত্বরান্বিত করেছে। শ্রী মোদী জোর দিয়ে বলেন যে তাঁদের সরকার ধর্ষণের মত জঘন্য অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ডের ব্যবস্থা করেছে। তাছাড়া, ২৪x৭ মহিলা হেল্পলাইনকে শক্তিশালী করতে এবং মহিলাদের জন্য ‘ওয়ান-স্টপ সেন্টার’ স্থাপন করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। সারা দেশে এখন প্রায় ১০০টি এরকম সেন্টার চালু রয়েছে যা ১০ লক্ষেরও বেশি মহিলাকে সাহায্য করছে।

প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, নতুন প্রণীত ভারতীয় ন্যায় সংহিতা অনেক অচল ঔপনিবেশিক আইনকে যেমন বাতিল করেছে, তেমনই মহিলাদের প্রতি নিরাপত্তা সংক্রান্ত আইনকে আরও শক্তিশালী করেছে। নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধকে সংজ্ঞায়িত করার জন্য একটি স্বতন্ত্র অধ্যায় যুক্ত করা হয়েছে। তিনি স্বীকার করেছেন যে অত্যাচারিতা মহিলাদের ন্যায়বিচার পেতে অনেক দেরি হচ্ছে। এই সমস্যার সমাধানের জন্য ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধের ক্ষেত্রে ৬০ দিনের মধ্যে চার্জশিট দেওয়া এবং পরবর্তী ৪৫ দিনের মধ্যে রায় দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এই নতুন আইনে যে কোন জায়গা থেকে ই-এফআইআর নথিভুক্ত করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে যা পুলিশের জন্য তৎকাল ব্যবস্থা নিতে সাহায্য করবে। জিরো এফআইআর ব্যবস্থার মাধ্যমে যে কোন মহিলা অত্যাচারের সম্মুখীন হলে, যে কোন থানায় এফআইআর করতে পারেন। তাছাড়া, প্রধানমন্ত্রী বলেন যে পুলিশ এখন যাতে অডিও-ভিডিও-র মাধ্যমে ধর্ষণ পীড়িতদের বয়ান নথিভুক্ত করতে পারে তা আইনসিদ্ধ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ডাক্তারদের সাতদিনের মধ্যে মেডিকেল রিপোর্ট পাঠাতে হবে।
শ্রী মোদী গত অক্টোবরে সুরাটে একটি দুঃখজনক ঘটনার কথা স্মরণ করান যেখানে ধর্ষণের ১৫ দিনের মধ্যে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে এবং কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই দোষীদের আজীবন কারাবাসের সাজা দেওয়া হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে একটি আদালতে নাবালিকার ধর্ষণকারীকে চার্জশিট জমা দেওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে ২০ বছরের কারাবাসের সাজা দেওয়া হয়েছে। কলকাতার একটি আদালতে সাত মাসের একটি শিশুর ধর্ষণকারীকে অপরাধের ৮০ দিনের মধ্যে মৃত্যুর সাজা দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন রাজ্যের এরকম উদাহরণ দিয়ে বলেন যে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা এবং অন্যান্য সরকারি সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মহিলাদের নিরাপত্তা বেড়েছে আর তাঁদের বিচারব্যবস্থাও ত্বরান্বিত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী দেশবাসী আশ্বস্ত করেন যে তাঁদের স্বপ্নগুলি বাস্তবায়িত করতে তিনি কোনো বাধা আসতে দেবেন না। তিনি নিজেকে দেশের পুত্র হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, ছেলে যেমন মায়ের সেবা করে, তেমনই ভারতমাতা এবং তার কন্যাদের তিনি সেবা করছেন। তিনি নিজের ভাষণের শেষে দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে বলেন যে কঠিন পরিশ্রম, সমর্পণ এবং আশীর্বাদই ২০৪৭ সালের মধ্যে উন্নত ভারতের লক্ষ্য পূরণে সহায়ক হবে। তিনি আরও একবার দেশের প্রত্যেক মা, বোন ও কন্যাদের মহিলা দিবসের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান।
এই অনুষ্ঠানে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্রভাই প্যাটেল এবং কেন্দ্রীয় জল শক্তি মন্ত্রী শ্রী সি আর পাটিল সহ অন্য গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
সম্পূর্ণ ভাষণ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
Women’s blessings are my strength, wealth and shield, says PM @narendramodi. pic.twitter.com/SB6tSism8V
— PMO India (@PMOIndia) March 8, 2025
India is now walking the path of women-led development. pic.twitter.com/aCNi9pVF9c
— PMO India (@PMOIndia) March 8, 2025
Our government places utmost importance on 'Samman' and 'Suvidha' for women. pic.twitter.com/ChzQ7n3JfR
— PMO India (@PMOIndia) March 8, 2025
The soul of rural India resides in the empowerment of rural women. pic.twitter.com/qZ6EjxBAsR
— PMO India (@PMOIndia) March 8, 2025
Nari Shakti is rising, surpassing every fear and doubt. pic.twitter.com/wy0VXlj94I
— PMO India (@PMOIndia) March 8, 2025
In the past decade, we have given women's safety the highest priority. pic.twitter.com/8CESftFlTj
— PMO India (@PMOIndia) March 8, 2025


