এই উদযাপন উপলক্ষে একটি স্মারক লোগোর আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেন
“মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর প্রদর্শিত পথ কোটি কোটি মানুষের মধ্যে আশার বীজ বপন করে”
“ধর্মের সঙ্গে মিথ্যাক্রমে যে মন্দভাব যুক্ত করা হয়েছিল স্বামীজি তা দুর করেন ধর্মকে আলোর পথ হিসেবে দেখিয়ে”
“স্বামীজি সমাজে বেদের আলোক শিখাকে পুনর্জাগ্রত করেন”
“অমৃতকালে মহর্ষি দয়ানন্দ সবস্বতীর ২০০তম জন্ম জয়ন্তী অনুপ্রেরণার অঙ্গ হয়েছে”
“দেশ আজ দৃঢ়তার সঙ্গে ঐতিহ্যকে নিয়ে গর্ব করার ডাক দিচ্ছে”
“আমাদের কাছে ধর্মের প্রথম যে ব্যাখ্যা তা হল কর্তব্য”
“দরিদ্র, পিছিয়ে পড়া এবং নিম্নবিত্তদের সেবাই হল দেশের কাছে আজ প্রথম যজ্ঞ”

আজকের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত গুজরাটের মাননীয় রাজ্যপাল আচার্য্য দেবব্রতজী, আন্তর্জাতিক আর্য প্রতিনিধি সভার অধ্যক্ষ শ্রী সুরেশ চন্দ্র আর্যজী, দিল্লি আর্য প্রতিনিধি সভার অধ্যক্ষ শ্রী ধর্মপাল আর্যজী, শ্রী বিনয় আর্যজী, আমার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সহযোগী কিষাণ রেড্ডিজী, মীণাক্ষি লেখীজী, অর্জুন রাম মেঘওয়ালজী, উপস্থিত সমস্ত প্রতিনিধিগণ, ভদ্র মহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ,

মহর্ষি দয়ানন্দজী ২০০তম জন্মজয়ন্তী এই অনুষ্ঠান ঐতিহাসিক এবং ভবিষ্যতের ইতিহাস রচনার সুযোগ সৃষ্টিকারী। বিশ্বের জন্য মানবতার ভবিষ্যতের জন্য এটি একটি প্রেরণাদায়ী মুহূর্ত। স্বামী দয়ানন্দজীর আদর্শ ছিল ‘কৃণ্বন্তো বিশ্বমার্যম’।। অর্থাৎ, ভারতকে বিশ্বে শ্রেষ্ঠ আর্য করে তোলা। আমরা সমগ্র বিশ্বে শ্রেষ্ঠ দর্শন ও মানবিক আদর্শগুলি সঞ্চারিত করবো। সেজন্য একবিংশ শতাব্দীর এই তৃতীয় দশকে বিশ্ব যখন অনেক বিবাদ ও হিংসায় জর্জরিত, অস্থিরতা বেষ্টিত, তখন মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজীর প্রদর্শিত পথ কোটি কোটি মানুষের মনে আশার সঞ্চার করে। এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আর্য সমাজের পক্ষ থেকে মহর্ষি সরস্বতীজীর ২০০তম জন্মজয়ন্তী পালনের পবিত্র কর্মসূচি দু’বছর ধরে চলবে। আর আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, কেন্দ্রীয় সরকারও এই মহোৎসব পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মানবতার কল্যাণে এই অবিরল সাধনায় এই যজ্ঞে একটু আগেই আমার ঘৃতাহুতি দেওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে। মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজীর জন্মভূমি থেকে পাওয়া সংস্কার, সেই ভূমি থেকে সঞ্চারিত প্রেরণা আজ আমাকেও তাঁর আদর্শগুলির প্রতি আকর্ষিত করতে থাকে।

আমি মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজীর চরণে সশ্রদ্ধ প্রণাম জানাই। আর আপনাদের সকলকে অন্তর থেকে অনেক অনেক শুভকামনা জানাই। 
বন্ধুগণ,

যখন মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজীর জন্ম হয়েছিল, তখন দেশ বেশ কয়েক শতাব্দী দাসত্বের প্রভাবে দুর্বল হয়ে নিজের আভা, তেজ, আত্মবিশ্বাস হারাতে শুরু করেছিল। প্রতি মুহূর্তে আমাদের শিষ্টাচার, আদর্শ ও মূল্যবোধগুলিকে চূড়মার করে দেওয়ার অনেক উদ্দেশ্য প্রণোদিত চেষ্টা হয়েছিল। যখন কোনও সমাজকে দাসত্বের হীন ভাবনা গ্রাস করতে শুরু করে, তখন আধ্যাত্ম এবং আস্থার স্থানে আড়ম্বর বেশি গুরুত্ব পেতে থাকে। যাঁরা আত্মবিশ্বাসী হন, তাঁরাই জীবনে আড়ম্বর সর্বস্ব হয়ে বেঁচে থাকার চেষ্টা করে। আমাদের সমাজেও এই অবস্থা হয়েছিল। এহেন পরিস্থিতিতে মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজী এই গিয়ে এসে সমাজ জীবনে বেদের মূল্যবোধকে পুনরুজ্জীবিত করেছেন। তিনি সমাজকে পথ দেখিয়েছেন। নিজের যুক্তিগুলিকে সিদ্ধ করেছেন। আর বারংবার বলেছেন, ভারতের ধর্ম এবং পরম্পরায় কোনও ত্রুটি নেই। ত্রুটি রয়েছে প্রয়োগে। কারণ, আমরা ভারতের ধর্ম ও পরম্পরার বাস্তবিক স্বরূপকে ভুলে গেছি আর বিকৃতিগুলিকে গুরুত্ব দিচ্ছি। আপনারা কল্পনা করতে পারেন, একটা এমন সময়ে তিনি সমাজকে পথ দেখিয়েছিলেন, যখন আমাদেরই বেদগুলির বিদেশি তর্জমাকে পাশ্চাত্যের অনুরূপ ব্যাখ্যা করা হচ্ছিল। আর সেই নকল ব্যাখ্যার ভিত্তিতে আমাদের ছোট করে দেখানোর, আমাদের ইতিহাসের গৌরব ও পরম্পরাগুলিকে ভ্রষ্ট করার বহুবিধ চেষ্টা চলছিল, সেই সময়ে মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজীর প্রচেষ্টায় একটি অনেক শক্তিশালী সঞ্জীবনী রূপে, একটি জড়িবুটি রূপে, সমাজে একটি নতুন প্রাণশক্তি রূপে উদীত হয়। মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজী সামাজিক বৈষম্য, অস্পৃশ্যতার মতো অনেক কুসংস্কারের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী অভিযান শুরু করে। আপনারা কল্পনা করুন, আজও যখন সমাজে কোনও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে কিছু বলতে হয়, এমনকি আমিও যদি কখনও বলি যে, ভাই কর্তব্যপথে চলতেই হবে, তা হলে কিছু মানুষ আমাকেও বকেন। আর বলেন যে, আপনি শুধু কর্তব্যের কথা বলেন, অধিকারের কথা বলেন না। যদি একবিংশ শতাব্দীতে কর্তব্যের কথা বলে আমাকে এত কথা শুনতে হয়, তা হলে ১৫০-১৭৫ বছর আগে মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজীর সমাজকে পথ দেখাতে গিয়ে কত না সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। যে কুসংস্কারগুলির স্বরূপ হ’ল ধর্মের শরীরে ফোঁড়ার মতো। স্বামীজী সেগুলিকে ধর্মের গন্ডী থেকে বের করে দেন। মহাত্মা গান্ধীজী একটি খুব বড় কথা বলেছিলেন, আর অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে বলেছিলেন যে, “আমাদের সমাজে স্বামী দয়ানন্দজীর অনেক অবদান রয়েছে। কিন্তু, তাঁর সবচেয়ে বড় অবদান হ’ল অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা”। সেই সময় মহিলাদের অবস্থান নিয়ে সমাজে অনেক কুসংস্কার অঙ্কুরিত হয়েছিল। মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজী এর বিরুদ্ধেও একটি যুক্তিসম্মত এবং কার্যকর কন্ঠস্বর হয়ে ওঠেন। মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজী মহিলাদের বিরুদ্ধে বৈষম্যকে খন্ডন করেন, নারী শিক্ষা অভিযান শুরু করেন। মনে রাখবেন, এই কাজ তিনি ১৫০-১৭৫ বছর আগে করেছিলেন। আজও ভারতীয় সমাজের অনেক অংশে মেয়েদেরকে শিক্ষা ও যোগ্য সম্মান থেকে বঞ্চিত করা হয়। মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজী সেই সময় নারীর অধিকারের জন্য আন্দোলন শুরু করেছিলেন, যখন পাশ্চাত্য দেশগুলিতেও নারীর সমান অধিকার ছিল না। 

ভাই ও বোনেরা,

সেই কালখন্ডে মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজীর আবির্ভাব সেই যুগের সকল সমস্যাগুলির বিরুদ্ধে তাঁর উঠে দাঁড়ানো অসামান্য আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। সেজন্য দেশের যাত্রাপথে তাঁর জীবন্ত উপস্থিতি আর্য প্রতিনিধি সভা তাঁর ১৫০ বছর পূর্তি উদযাপন থেকে শুরু করে মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজীর ২০০ বছর পূর্তি উদযাপনেও অনুভূত হচ্ছে। এত বিপুল জনসমুদ্র শুধু এখানে নয়, পৃথিবীর অনেক জায়গার মানুষ আজ এই সমারোহের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। এর থেকে বড় জীবনের উচ্চতা আর কী হতে পারে? আজ জীবন যে গতিতে ছুটছে, মৃত্যুর ১০ বছর পরেই কারও মানুষের মনে কারও এভাবে বেঁচে থাকাটা অসম্ভব হয়ে উঠেছে। কিন্তু, মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজী তাঁর ২০০তম জন্ম দিবসেও আমাদের মনে প্রেরণা যুগিয়ে যাচ্ছেন। আজ ভারত যখন স্বাধীনতার অমৃতকাল পালন করছে, তখন মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজীর ২০০তম জন্মজয়ন্তী একটি পবিত্র প্রেরণা নিয়ে এসেছে। মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজী তখন যে জীবনের মন্ত্র দিয়ে গেছেন, সমাজের জন্য যে স্বপ্নগুলি দেখেছিলেন, সেগুলি বাস্তবায়নের জন্য দেশ এখন সম্পূর্ণ বিশ্বাসের সঙ্গে এগিয়ে চলেছে। স্বামীজী তখন আহ্বান জানিয়েছিলেন, ‘বেদের দিকে প্রত্যাবর্তন’। আজ দেশ অত্যন্ত অহঙ্কারের সঙ্গে তার ঐতিহ্য নিয়ে গর্বের আহ্বান করছে। আজ দেশ সম্পূর্ণ আত্মবিশ্বাস নিয়ে বলছে যে, আমরা দেশকে আধুনিক করে তোলার পাশাপাশি, নিজেদের পরম্পরাকেও সমৃদ্ধ করবো। ঐতিহ্য ও উন্নয়ন - এই দুই সমান্তরাল রেখা অনুসরণ করে দেশ নতুন নতুন উচ্চতা স্পর্শের জন্য ছুটছে।  

বন্ধুগণ,

সাধারণত, বিশ্বে যখন ধর্মের কথা ওঠে, তখন তার পরিধি শুধুই পূজাপাঠ, আস্থা ও উপাসনা, রীতিনীতি এবং তার পদ্ধতিগুলির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। কিন্তু, ভারতের প্রেক্ষিতে ধর্মের অর্থ আর তার নিহিতার্থ পুরোপুরি ভিন্ন। বেদগুলিতে ধর্মকে একটি সম্পূর্ণ জীবন পদ্ধতি রূপে পরিভাষিত হয়েছে। আমাদের দেশে ধর্মের প্রথম অর্থই হ’ল – কর্তব্য। পিতৃ ধর্ম, মাতৃ ধর্ম, পুত্র ধর্ম, দেশ ধর্ম, কাল ধর্ম – এগুলিই আমাদের কল্পনায় রয়েছে। সেজন্য আমাদের সাধু-সন্ন্যাসী ও ঋষি-মুনিদের ভূমিকাও সমাজে শুধুই পুজো-পার্বন আর উপাসনার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। তাঁরা দেশ ও সমাজে প্রতিটি স্তরে নিজেদের দায়িত্ব পালন করেছেন, সমন্বয়ধর্মী দৃষ্টিকোণ থেকে করেছেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক দৃষ্টিকোণ থেকে করেছেন, সংহতিমূলক দৃষ্টিকোণ থেকে করেছেন। আমাদের দেশে ভাষা ও ব্যাকারণের ক্ষেত্রকে পাণিনীর মতো ঋষিরা সমৃদ্ধ করেছেন। পতঞ্জলীর মতো মহর্ষিরা যোগকে জনপ্রিয় করেছেন। এর ক্ষেত্রকে সম্প্রসারিত করেছেন। দর্শনের ক্ষেত্রে কপিল মুণির মতো আচার্য্যরা বুদ্ধিবেত্তাকে নতুন প্রেরণা যুগিয়েছেন। নীতি ও রাজনীতির ক্ষেত্রে মহাত্মা বিদুর থেকে শুরু করে ভর্তহরি এবং আচার্য্য চাণক্য পর্যন্ত অনেক ঋষি, মুনি ও পণ্ডিত ভারতের ভাবনাকে পরিভাষিত করে গেছেন। গণিতের ক্ষেত্রে ভারতের নেতৃত্ব দিয়েছেন আর্যভট্ট, ব্রহ্মগুপ্ত এবং ভাস্করাচার্যের মতো মহান গণিতজ্ঞরা। বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে কণাদ এবং বরাহমিহির থেকে শুরু করে চরক ও শুশ্রুত পর্যন্ত অসংখ্য নাম রয়েছে। যখন আমরা মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজীকে দেখি, তখন বুঝতে পারি যে, সেই প্রাচীন পরম্পরাকে পুনরুজ্জীবিত করতে তাঁর কত বড় ভূমিকা ছিল আর কত প্রবল আত্মবিশ্বাস নিয়ে তিনি কাজ করেছেন।

ভাই ও বোনেরা,

মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজী তাঁর জীবেন শুধু একটি পথ তৈরি করেননি। তিনি ভিন্ন ভিন্ন সংস্থা ও সংস্থাগত ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিলেন। আমি বলব যে, মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজী তাঁর জীবনকালে অসংখ্য বৈপ্লবিক চিন্তাভাবনা নিয়ে বেঁচেছিলেন। আর সেই বৈপ্লবিক চিন্তাভাবনা নিয়ে অন্যদেরকেও বাঁচার প্রেরণা যুগিয়েছেন। তিনি প্রতিটি দর্শনকে ব্যবস্থার সঙ্গে জুড়েছেন, প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছেন। আর এইভাবেই একের পর এক সংস্থা গড়ে তুলেছেন। এই সংস্থাগুলি অনেক দশক ধরে ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে অনেক বড় ইতিবাচক কাজ করে চলেছে। মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজী নিজেই যে পরপোকারিনী সভা স্থাপন করেছিলেন, সেই সংস্থা আজও প্রকাশনা ও গুরুকুলের মাধ্যমে বৈদিক পরম্পরাকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। কুরুক্ষেত্র গুরুকুল, স্বামী শ্রদ্ধানন্দ ট্রাস্ট কিংবা মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজী ট্রাস্ট – এর মতো সংস্থাগুলি দেশের প্রতি সমর্পিত প্রাণ অসংখ্য যুবককে গড়ে তুলেছে। এভাবে মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজীর প্রেরণায় বিভিন্ন সংস্থা গরীব শিশুদের জন্য, তাদের ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে সেবাভাব নিয়ে কাজ করে চলেছে। আর এটাই আমাদের শিষ্টাচার, এটাই আমাদের পরম্পরা। অতিসম্প্রতি আমরা যখন টেলিভিশনে তুরস্কের ভূমিকম্প বিধ্বস্ত এলাকার দৃশ্যগুলি দেখেছি, তখন প্রত্যেকেই অস্থির হয়ে উঠেছি, কষ্ট পেয়েছি। আমার মনে আছে যে, ২০০১ সালে যখন গুজরাটে ভয়ঙ্কর ভূমিকম্প হয়েছিল, তখন সেই সময় আমি ত্রাণ ও উদ্ধার কর্মে জীবন প্রভাত ট্রাস্ট – এর সক্রিয় ভূমিকাকে স্বচক্ষে দেখেছি। এই জীবন প্রভাত ট্রাস্টের কর্মীরা মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজীর প্রেরণাকে সম্বল করে নিরলস কাজ করেছেন। যে বীজ মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজী রোপণ করেছিলেন, তা আজ বিশাল বটবৃক্ষ রূপে সমগ্র মানবতাকে ছায়া দিচ্ছে। 

বন্ধুগণ,

স্বাধীনতার অমৃতকালে আজ দেশ সেই সংস্কারগুলির সাক্ষী হয়ে উঠছে, যেগুলিকে মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজীও অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন। আজ আমরা দেশে অনেক বৈষম্যহীন নীতি প্রণয়ন এবং সেগুলি বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা দেখতে পাচ্ছি। যাঁরা গরীব, পিছিয়ে পড়া ও বঞ্চিত – তাঁদের সেবাই আজ দেশের জন্য সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার। বঞ্চিতদের অগ্রাধিকার – এই মন্ত্র নিয়ে প্রত্যেক গরীবের জন্য মাথার উপর ছাদ বা পাকা বাড়ি, তাঁদের সম্মান, প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা, সকলের জন্য পুষ্টি আর সকলের জন্য সুযোগ ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিসওয়াস অউর সবকা প্রয়াস’ – এই মন্ত্র এখন দেশের জন্য একটি শপথে পরিণত হয়েছে। বিগত ৯ বছরে নারী ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে আমরা দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছি। আজ দেশের মেয়েরা কোনও রকম বাধা-বিপত্তি ছাড়াই প্রতিরক্ষা ও অভ্যন্তরীণ সুরক্ষা ক্ষেত্রে চাকরি পাচ্ছেন, স্টার্টআপ গড়ে তুলছেন। আর এভাবেই তাঁরা প্রত্যেক ভূমিকায় দেশ গঠনে গতি সঞ্চার করছেন। এখন মেয়েরা সিয়াচেনে মোতায়েন হচ্ছেন আবার ফাইটার প্লেন রাফেলও চালাচ্ছেন। আমাদের সরকার সৈনিক স্কুলগুলিতে মেয়েদের ভর্তি হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজী আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি, গুরুকুলগুলির মাধ্যমে ভারতীয় পরিবেশে গড়ে তোলা আদর্শ শিক্ষা ব্যবস্থার গুরুত্বের কথা বলে গেছেন। আমরা নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতির মাধ্যমে দেশে এই ভারতীয় পরিবেশে গড়ে তোলা আদর্শ শিক্ষা ব্যবস্থার বুনিয়াদ শক্তিশালী করার চেষ্টা করছি। 

বন্ধুগণ,

মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজী আমাদের বেঁচে থাকার আরেকটি মন্ত্র দিয়ে গেছেন। তিনি অত্যন্ত সরল শব্দমালায় ব্যাখ্যা করেছিলেন - আসলে পরিপক্ক কে? আপনারা কাকে পরিপক্ক বলবেন? স্বামীজীর মতে, ‘যে ব্যক্তি সবচেয়ে কম গ্রহণ করেন, আর সবচেয়ে বেশি অবদান রাখেন – তিনিই পরিপক্ক’। কল্পনা করতে পারেন, কত সহজ শব্দে তিনি কত গভীর কথা বলে গেছেন। তাঁর এই জীবন মন্ত্র আজও কত না সমস্যার সমাধানে কাজে লাগে। এখন যেমন এই কথাটিকে আমরা পরিবেশ রক্ষার নিরিখে ব্যবহার করছি। সেই শতাব্দীতে যখন বিশ্ব ঊষ্ণায়নজাত পরিবেশ পরিবর্তনের মতো শব্দাবলি উচ্চারিত হয়নি, সেই সময় কেউ এমন ভাবতেও পারতেন না, তখন মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজীর মনে এই বোধ কোথা থেকে জাগ্রত হয়েছিল? এর জবাব হ’ল – আমাদের বেদ ও আমাদের ঋচাগুলি। সবচেয়ে পুরাতন বলে মনে করা হয় যে বেদকে, তার অসংখ্য সুক্তি প্রকৃতি ও পরিবেশের প্রতি সমর্পিত। স্বামীজী বেদগুলি থেকে পাওয়া সেই জ্ঞানকে অত্যন্ত গভীরভাবে বুঝেছিলেন। সেগুলির সার্বভৌমিক বার্তাকে তিনি নিজের সময়ে আরও সম্প্রসারিত করেছিলেন। মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজী বেদের ছাত্র ছিলেন। আর জ্ঞানমার্গের সন্ন্যাসী ছিলেন। সেজন্য তাঁর বোধ ছিল তাঁর সময় থেকে অনেক এগিয়ে থাকা।

ভাই ও বোনেরা,

আজ বিশ্ব যখন টেকসই ও সুদূরপ্রসারী উন্নয়ন নিয়ে কথা বলছে, তখন মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজীর দেখানো পথ ভারতের প্রাচীন জীবন দর্শনকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরে সমাধানের পথ দেখায়। পরিবেশের ক্ষেত্রে ভারত আজ বিশ্ববাসীর জন্য পথপ্রদর্শকের ভূমিকা পালন করছে। আমরা প্রকৃতির সঙ্গে সমন্বয় – এই দূরদৃষ্টির ভিত্তিতে গ্লোবাল মিশন লাইফ অভিযান শুরু করেছি। এই লাইফ – এর অর্থ ‘লাইফ স্টাইল ফর এনভাইরনমেন্ট’ বা পরিবেশের স্বার্থে জীবনশৈলী’। এটি একটি আন্তর্জাতিক ‘লাইফ মিশন’ – এর সূত্রপাতও করে। আমাদের জন্য গর্বের বিষয় হ’ল – এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে জি-২০ গোষ্ঠীর মতো বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলির অধ্যক্ষতার দায়িত্ব ভারতকে দেওয়া হয়েছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আমরা পরিবেশ ভাবনাকে জি-২০ গোষ্ঠীর বিশেষ এজেন্ডা হিসাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। দেশের এই গুরুত্বপূর্ণ অভিযানে আর্য সমাজ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। আপনারা আমাদের প্রাচীন দর্শনের সঙ্গে আধুনিক প্রেক্ষিত এবং কর্তব্যগুলির সঙ্গে সাধারণ মানুষকে যুক্ত করার দায়িত্ব খুব সহজেই করতে পারেন। এই সময় দেশ প্রাকৃতিক চাষকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে। একটু আগেই আচার্য দেবব্রতজী যেভাবে বর্ণনা করেছেন, আচার্যজী এই অভিযানে নিজেকে সমর্পণ করেছেন। ভারত সরকারও প্রাকৃতিক চাষে এই ব্যাপক অভিযানকে গ্রামে গ্রামে পৌঁছে দিতে চায়। প্রাকৃতিক চাষ গো-ভিত্তিক কৃষিকে আমাদের আবার গ্রামে গ্রামে নিয়ে যেতে হবে। আমি চাই যে, আর্য সমাজের যজ্ঞগুলিতে এই সংকল্পের জন্য একটি আহুতি আয়োজন করা হোক। তেমনই ভারতে আরেকটি নতুন অভিযান আমরা শুরু করেছি মিলেটস্‌ বা মোটাদানার শস্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য। এর অনেক বৈচিত্র্য রয়েছে। বিশ্ব বাজারে যাতে তার একটি পরিচয় গড়ে ওঠে, তা সুনিশ্চিত করতে আমরা বাজেটে জোয়ার, বাজরা, রাগি ও যবের মতো মোটাদানার শস্যগুলিকে একটি নতুন নাম দিয়েছি – শ্রী অন্ন। এই শ্রী অন্নগুলিতে পুষ্টি মূল্য অনেক বেশি। সেজন্য এগুলিকে সুপারফুড বলা যায়। আমরা শ্রী ফল-কে যতটা গুরুত্ব দিই, এখন থেকে শ্রী অন্ন-কেও ততটাই যাতে গুরুত্ব দিতে শুরু করি, সেই সচেতনতা বৃদ্ধিতে আর্য সমাজ ইতিবাচক ভূমিকা পালন করুক। আমরা ভারতের শ্রী অন্ন – এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পুষ্টি সুরক্ষা সুনিশ্চিত করতে চাই। রাষ্ট্রসংঘের উদ্যোগে এ বছরটিকে গোটা বিশ্ব ইন্টারন্যাশনাল ইয়ার অফ মিটেলস্‌ হিসাবে পালন করছে। এই বর্ষ পালন একদিকে আমাদের কৃষকদের শ্রী অন্ন উৎপাদনের জন্য উৎসাহিত করছে। অন্যদিকে, এর জন্য আন্তর্জাতিক বাজারও সম্প্রসারিত করছে। আমরা যজ্ঞ সংস্কৃতির মানুষ। আমাদের যা সর্বশ্রেষ্ঠ, তাকেই আমরা আহুতি দিই। আমাদের দেশের যজ্ঞে যবের মতো মোটাদানার শস্য শ্রী অন্নের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। যেহেতু আমরা সর্বোৎকৃষ্ট কিছুকেই যজ্ঞে ব্যবহার করি, সেজন্য যজ্ঞের পাশাপাশি, সমস্ত মোটাদানার শস্য বা শ্রী অন্ন-কে দেশবাসীর জীবনের সঙ্গে যুক্ত করার সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ আপনারা সহজেই করতে পারবেন। 

ভাই ও বোনেরা,

মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজীর ব্যক্তিত্ব থেকেও আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। তিনি অসংখ্য স্বাধীনতা সংগ্রামীর মনে দেশপ্রেমের আগুন জ্বালিয়েছিলেন। কথিত আছে যে, একজন ইংরেজ আধিকারিক তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। ভারতে ব্রিটিশরাজ সর্বদা যাতে বজায় থাকে, সেই প্রার্থনা তিনি তাঁকে করতে বলেন। মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজী সেই ইংরেজ আধিকারিকের চোখে চোখ রেখে নির্ভীক জবাব দেন, ‘স্বাধীনতা আমার আত্মা আর ভারতবর্ষের আওয়াজ, এটাই আমার প্রিয়। আমি বিদেশি সাম্রাজ্যের জন্য কখনও প্রার্থনা করতে পারবো না’। অসংখ্য মহাপুরুষ, যেমন – লোকমান্য তিলক, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু, বীর সাভারকর, লালা লাজপত রায়, লালা হরদয়াল, শ্যামজী কৃষ্ণ ভার্মা, চন্দ্রশেখর আজাদ, রামপ্রসাদ বিসমিলের মতো লক্ষ লক্ষ স্বাধীনতা সংগ্রামী ও বিপ্লবী মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজীর অনুপ্রেরণায় ঋদ্ধ ছিলেন। মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজী, দয়ানন্দ অ্যাঙ্গলো বৈদিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মহাত্মা হংসরাজজী থেকে শুরু করে গুরুকুল কাঙড়ির প্রতিষ্ঠাতা স্বামী শ্রদ্ধানন্দজী, ভাই পরমানন্দজী, স্বামী সহজানন্দ সরস্বতীজীর মতো অসংখ্য দেবতুল্য ব্যক্তিত্বেরও প্রেরণার উৎস ছিলেন। আর্য সমাজের কাছে মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজীর সেইসব প্রেরণার ঐতিহ্য রয়েছে, সেইসব সামর্থের ঐতিহ্য রয়েছে। সেজন্য আপনাদের সকলের কাছ থেকে দেশবাসীর অনেক প্রত্যাশা, আর্য সমাজে প্রত্যেক আর্যবীরের কাছ থেকে অনেক প্রত্যাশা রয়েছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, আর্য সমাজ দেশ ও সমাজের প্রতি এই কর্তব্য যজ্ঞগুলির আয়োজন করে যাবে। যজ্ঞের আলো মানবতার স্বার্থে ছড়িয়ে দিতে থাকবে। আগামী বছর আর্য সমাজ প্রতিষ্ঠার সার্ধশতবর্ষ উদযাপনও শুরু হতে চলেছে। এই উভয় উদযাপনই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটু আগেই আচার্যজী, মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজীর মৃত্যু তিথির শতবর্ষ অর্থাৎ এক প্রকার ত্রিবেণীর কথা বললেন। মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজী স্বয়ং জ্ঞানের জ্যোতি ছিলেন। আমরা সবাই যেন এরকম জ্ঞানের জ্যোতি হওয়ার চেষ্টা করি। যে আদর্শ ও মূল্যবোধগুলি নিয়ে তিনি বেঁচেছিলেন, যে আদর্শ ও মূল্যবোধগুলির জন্য তিনি আত্মোৎসর্গ করেছিলেন আর নিজে বিষ পান করে আমাদের জন্য অমৃত দিয়ে গেছেন, আশু অমৃতকালে সেই অমৃত যেন আমাদের নিরন্তর ভারতমাতার উন্নয়নে আর কোটি কোটি দেশবাসীর কল্যাণের জন্য কাজ করার প্রেরণা যুগিয়ে যায়, শক্তি যোগায়, সামর্থ দেয়। আমি আজ আর্য প্রতিনিধি সভায় অংশগ্রহণকারী সকল পূজনীয় ব্যক্তিদেরও অভিনন্দন জানাই। যেভাবে আজ এই কর্মসূচির পরিকল্পনা করা হয়েছে, এখানে এসে আমি ১০-১৫ মিনিট ধরে যত কিছু দেখার সুযোগ পেয়েছি, আমি মনে করি, এই পরিকল্পনা, এই ব্যবস্থাপনা, এই শিক্ষার সবধরনের উন্নত আয়োজনের জন্য আপনারা সকলে অভিনন্দনের অধিকারী।

অনেক অনেক শুভকামনা।

অনেক অনেক ধন্যবাদ। 

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
ISRO achieves milestone with successful sea-level test of CE20 cryogenic engine

Media Coverage

ISRO achieves milestone with successful sea-level test of CE20 cryogenic engine
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM Modi’s Green Energy Vision is a Game-Changer for India. Here's what Stats Speak
December 13, 2024

Prime Minister Narendra Modi has spearheaded a transformative push in India's renewable energy sector, positioning the nation as a global leader in sustainable energy initiatives. Under his leadership, India has not only made significant strides in increasing its renewable energy capacity but has also taken on pivotal roles in international renewable energy organizations. Notably, India co-founded the International Solar Alliance (ISA) with France, which aims to promote solar energy usage among its 99 member countries and mobilize substantial investments for solar projects. India's ambitious goal to achieve 500 GW of renewable energy capacity by 2030 reflects this commitment. The nation has successfully installed over 200 GW of non-fossil fuel capacity, making it the first G20 country to fulfill its climate commitments ahead of schedule. PM Kusum has been instrumental in ensuring reduction of dependency on fossil fuels from agriculture sector. Over 4 lakh farmers have benefited from the scheme . The PM Surya Ghar scheme exemplifies this approach by providing financial support for rooftop solar installations, allowing households to become power producers while also generating employment opportunities. This initiative not only promotes renewable energy but also helps families save on electricity costs. The PM Surya Ghar Muft Bijli Yojana, the world’s largest domestic rooftop solar initiative, is transforming India’s energy landscape with a bold vision to supply solar power to one crore households by March 2027

Moreover, the government's focus on energy efficiency is evident in the widespread adoption of LED lighting across homes and infrastructure, significantly reducing power consumption and contributing to lower carbon emissions. These combined efforts illustrate India's comprehensive strategy to transition towards a sustainable energy future while ensuring economic growth and environmental protection.

170% +Increase in Installation of Renewable Energy

2014 – 76 GW
2024 – 211 GW

Installed Capacity

• Total Non-Fossil Fuel Capacity: Reached 213.70 GW, a 14.2% increase from 187.05 GW in 2023.
• Total Non-Fossil Fuel Capacity (including pipeline projects): Surged to 472.90 GW, a 28.5% increase from 368.15 GW in the previous year.

New Renewable Energy Capacity Additions

• In FY 24-25, 14.94 GW of new capacity was added by November 2024, nearly doubling the 7.54 GW added during the same period in FY 23-24.
• November 2024 alone saw an addition of 2.3 GW, a fourfold increase compared to the 566.06 MW added in November 2023.

Solar Power Growth

• Installed capacity increased from 72.31 GW in 2023 to 94.17 GW in 2024, marking a growth of 30.2%.
• Total solar capacity (including pipeline projects) rose by 52.7%, reaching 261.15 GW compared to 171.10 GW in 2023.

Wind Power Contributions

• Installed wind capacity grew from 44.56 GW in 2023 to 47.96 GW in 2024, reflecting a growth of 7.6%.
• Total wind capacity (including pipeline projects) increased by 17.4%, from 63.41 GW in 2023 to 74.44 GW in 2024.

As on 31.10.2024, a total of 211.40 GW non-fossil power capacity has been installed in the country, which includes 92.12 GW Solar Power, 47.72 GW Wind Power, 11.33 GW Bio-Power, 52.05 GW Hydro Power and 8.18 GW Nuclear Power .

Government Progressive Reforms for Renewable Energy

100% FDI in Renewable Energy Space – The government has permitted Foreign Direct Investment (FDI) in Renewable energy sector up to 100 percent under the automatic route, which would help in foreign companies to set up their manufacturing plants, and help in creating employment opportunities as well.

Production Linked Incentive (PLI) Scheme for National Programme on High Efficiency Solar PV Modules- for achieving manufacturing capacity of Giga Watt (GW) scale in High Efficiency Solar PV modules

Green Energy Corridor - Inter-State Transmission System - Cabinet Committee on Economic Affairs approved construction of an Inter-State Transmission System for power evacuation and grid integration of the 13 GW RE projects in Ladakh and despatch of power from the U.T. of Ladakh to other parts of the country.

GOBARdhan - a mission to transform biodegradable and organic waste, including cattle dung, agricultural residues, and biomass, into high-value resources like biogas, CBG and organic manure which would help in creating clean burning fuel naturally.

Making Big Impact on Global Stage

International Solar Alliance - India was re-elected as the President of the International Solar Alliance (ISA) for a two-year term

One Sun, One World, One Grid (OSWOG) - is an Indian initiative to provide solar energy to 140 countries.

‘Lifestyle for the Environment (LiFE) Movement - the vision of LiFE is to live a lifestyle that is in tune with our planet and does not harm it. And those who live such a lifestyle are called “Pro-Planet People”

Bio Fuel Alliance - To strengthen global cooperation for rapid adoption and deployment of biofuels, the Global Biofuels Alliance (GBA) was launched on 9th September 2023, on the sidelines of the G20 Summit in New Delhi with the support of 19 countries and 12 international organizations