“নতুন নতুন উৎসাহ, উদ্দীপনা এবং সংকল্প গ্রহণের এক নতুন অধ্যায় শুরু হ’ল বলে মন্তব্য প্রধানমন্ত্রীর”
“আজ সারাবিশ্বের নজর ভারতের ওপর। আন্তর্জাতিক আঙ্গিনায় উজ্জ্বল হয়েছে ভারতের ভাবমূর্তি”
“যখন দেশে এতগুলি নতুন এবং আধুনিক স্টেশন গড়ে উঠবে, তখন তৈরি হবে বিকাশের এক নতুন আবহ”
“স্বাধীনতার ‘অমৃত কাল’-এ দেশ নিজের ঐতিহ্যে গর্বিত। এই অমৃত রেলস্টেশনগুলি সেই গর্ববোধের প্রতীক হয়ে উঠবে”
“ভারতীয় রেলের আধুনিকীকরণই শুধুমাত্র নয়, তাকে আরও পরিবেশবান্ধব করে তোলা আমাদের লক্ষ্য”
“রেলের রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিচ্ছন্নতা দায়িত্বশীল নাগরিকদের কর্তব্য”
“সকলেই বুঝতে পারছেন যে তাদের টাকা নতুন ভারত গড়তে কাজে লাগছে। এইসব উন্নয়নের মধ্যেই লুকিয়ে আছে আপনার শিশুদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের চাবিকাঠি”
“প্রতিটি ভারতীয়ের কাছে আগস্ট মাসটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। এই মাস কর্তব্য পালনের বার্তা দেয়, স্মরণে আনে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের দিনগুলিকে”
আমাদের স্বাধীনতা দিবস আমাদের তেরঙা এবং আমাদের দেশের অগ্রগতির প্রতি আমাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করার সময়: প্রধানমন্ত্রী মোদী

নমস্কার! 
দেশের রেলমন্ত্রী শ্রী অশ্বিনী বৈষ্ণজি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় দেশের প্রতিটি প্রান্তের সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন রাজ্যের রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্য, সাংসদ ও বিধায়ক, সুধীবৃন্দ এবং আমার ভাই-বোনেরা!

ভারত তার ‘অমৃত কাল’(স্বর্ণালী অধ্যায়) –এর সূচনালগ্নে এগিয়ে চলেছে বিকাশের লক্ষ্যে। নতুন শক্তি, নতুন উদ্দীপনা এবং নতুন অঙ্গীকার এই যাত্রার পাথেয়। এই প্রেক্ষিতে, ভারতীয় রেলের ইতিহাসেও আজ একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হচ্ছে। ভারতের প্রায় ১৩০০ বড় রেলস্টেশন এখন গড়ে তোলা হবে ‘অমৃত ভারত রেল স্টেশন’ হিসেবে। তাদের আরও আধুনিক এবং উন্নত করে তোলা হবে। আজ, ৫০৮টি ‘অমৃত ভারত’ রেলস্টেশনের পুনর্বিকাশের কাজ শুরু হল। এই ৫০৮টি ‘অমৃত ভারত’ স্টেশন তৈরি করা হবে ২৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে। এই অভিযান দেশের পরিকাঠামো, রেল, এবং সর্বোপরি আমার দেশের সাধারণ নাগরিকদের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা আপনারা সহজেই বুঝতে পারেন। এই প্রকল্পের সুফল পাবে দেশের প্রায় সব রাজ্য। উদাহরণস্বরূপ, উত্তরপ্রদেশের ৫৫টি অমৃত স্টেশন –কে সাজিয়ে তুলতে খরচ করা হবে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। রাজস্থানের ৫৫টি রেলস্টেশন হয়ে উঠবে ‘অমৃত ভারত’ স্টেশন। মধ্যপ্রদেশে ৩৪টি স্টেশনের পুনর্বিকাশের কাজ হবে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে। মহারাষ্ট্রে ৪৪টি স্টেশনের উন্নয়নে খরচ করা হবে ২৫০০ কোটি টাকার বেশি। তামিলনাড়ু, কর্ণাটক এবং কেরলের বড় স্টেশনগুলিকেও ‘অমৃত ভারত’ স্টেশন হিসেবে গড়ে তোলা হবে। ‘অমৃতকাল’-এর এই ঐতিহাসিক সূচনালগ্নে আমি রেলমন্ত্রক-কে অভিনন্দন জানাই। শুভেচ্ছা জানাই দেশের সব নাগরিককে। 

 

বন্ধুগণ, 

আজ সারাবিশ্বের নজর ভারতের ওপর। আন্তর্জাতিক আঙ্গিনায় উজ্জ্বল হয়েছে ভারতের ভাবমূর্তি। এদেশের প্রতি সারাবিশ্বের মনোভাবই পাল্টে গেছে। এর পেছনে আছে দুটি প্রধান কারণ। প্রথমত, প্রায় ৩০ বছর পর এদেশে পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে একটি সরকার গঠিত হয়েছে। দ্বিতীয়ত, পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা সম্পন্ন এই সরকার গুরুত্বপূর্ণ নানা সিদ্ধান্ত নিয়েছে দৃঢ়তা এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে। সাধারণ মানুষের আবেগ ও মনোভাবকে যথাযথ মর্যাদা দিয়ে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের স্থায়ী সমাধান খোঁজার লক্ষ্যে সরকার কাজ করে চলেছে।  

আজ ভারতীয় রেল এই পরিবর্তনের একটি প্রতীক হয়েও উঠেছে। রেলক্ষেত্রে বিগত বছরগুলিতে যে কাজ হয়েছে সে সংক্রান্ত পরিসংখ্যান এবং তথ্যাদি সকলকে খুশি করার পাশাপাশি বিস্মিত করে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় বিগত ৯ বছরে ভারতে দক্ষিণ আফ্রিকা, ইউক্রেন, পোল্যাণ্ড, যুক্তরাজ্য কিংবা সুইডেনের মতো দেশের তুলনায় বেশি রেললাইন পাতা হয়েছে। এই সাফল্যের মাত্রাটা একবার বুঝে দেখুন। মাত্র ১ বছরে ভারতে দক্ষিণ কোরিয়া, নিউজিল্যাণ্ড কিংবা অস্ট্রিয়ার মতো দেশে পুরো রেল নেটওয়ার্কের বেশি রেলপথ নির্মিত হয়েছে। এখন দেশের লক্ষ্য হল, প্রতিটি যাত্রী, প্রতিটি নাগরিকের কাছে রেল ভ্রমণ আরও আরামদায়ক ও উপভোগ্য করে তোলা। ট্রেন থেকে শুরু করে স্টেশন-সব খানেই যাত্রী পরিষেবা আরও উন্নত করে তোলার লক্ষ্যে কাজ চলছে। প্ল্যাটফর্মগুলিতে যাত্রীদের বসার আরও ভালো ব্যবস্থা হচ্ছে, তৈরি করা হচ্ছে উন্নততর প্রতীক্ষা কক্ষ। আজ দেশের হাজার হাজার রেলস্টেশনে নিখরচায় ওয়াই-ফাই পরিষেবা মেলে। এর ফলে তরুণ প্রজন্ম কতটা উপকৃত তা আমরা প্রত্যক্ষ করছি। 

বন্ধুগণ, 

রেলক্ষেত্রে যেভাবে কাজ এগিয়েছে এবং যে গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য অর্জিত হয়েছে তা  আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম। যেকোনও প্রধানমন্ত্রী এই সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরতে আগ্রহী হবেন ১৫ই আগস্ট লালকেল্লার প্রাকার থেকে। ১৫ই আগস্ট এগিয়ে আসছে। ওই বিশেষ দিনে এই নিয়ে আলোচনা হতেই পারে। কিন্তু আজ বিপুল সমারোহের আয়োজন হয়েছে এবং এখানে দেশের প্রতিটি প্রান্তের মানুষ সামিল হয়েছেন। সেজন্যই আমি এত বিশদে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি। 

 

বন্ধুগণ, 
 
রেলকে প্রায়শই আমাদের দেশের জীবনরেখা বলে উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি আমাদের শহরগুলির পরিচিতিও তাদের রেলস্টেশনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। সময় এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই রেলস্টেশনগুলি এখন ‘শহরের প্রাণকেন্দ্র’ হয়ে উঠেছে। একটি শহরের যাবতীয় বৃহৎ কর্মকান্ড কেন্দ্রীভূত তার রেলস্টেশনকে ঘিরে। কাজেই রেলস্টেশনগুলিকে আরো আধুনিক ও দক্ষ পরিসর হিসেবে গড়ে তোলা এবং রেলপরিকাঠামোর পূর্ণ সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করা একান্ত জরুরি। 

বন্ধুগণ, 

যখন দেশে এতগুলি নতুন এবং আধুনিক স্টেশন গড়ে উঠবে, তখন তৈরি হবে বিকাশের এক নতুন আবহ। যখন দেশ কিংবা বিদেশের কোনও পর্যটক ট্রেনে করে এইসব আধুনিক স্টেশনে পৌঁছোবেন তখনই তাঁরা পেয়ে যাবেন আপনার রাজ্য এবং শহরের প্রাথমিক একটি চিত্র -যা হয়ে উঠবে তার কাছে মনে রাখার মতো এক অভিজ্ঞতা। এইসব আধুনিক সুযোগ সুবিধার জেরে পর্যটনের পালে লাগবে হাওয়া। স্টেশনগুলির আশেপাশে গড়ে উঠা উন্নততর ব্যবস্থাপনা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে প্রসারিত করবে। রেলস্টেশনগুলিকে শহর এবং রাজ্যের পরিচিতির সঙ্গে সংযুক্ত করতে সরকার ‘এক স্টেশন, এক পণ্য’ কর্মসূচির সূচনা করেছে। এরফলে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলটির শ্রমিক ও কারিগর সহ প্রতিটি মানুষ উপকৃত হবেন এবং জেলার ব্র্যাণ্ড হয়ে উঠবে উজ্জ্বলতর। 

বন্ধুগণ, 

স্বাধীনতার ‘অমৃত কাল’-এ দেশ নিজের ঐতিহ্যে গর্বিত। এই অমৃত রেলস্টেশনগুলি সেই গর্ববোধের প্রতীক হয়ে উঠবে। এই স্টেশনগুলিতে প্রতিফলিত হবে দেশের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য। যেমন, জয়পুর রেলস্টেশনে প্রদর্শিত হবে হাওয়া মহল কিংবা আমের দুর্গের মতো ঐতিহ্যবাহী নির্মাণকে। জম্মু ও কাশ্মীরের জম্মু তাওয়াই রেলস্টেশনের গঠনে থাকবে বিখ্যাত রঘুনাথ মন্দিরের ছোঁয়া। নাগাল্যাণ্ডের ডিমাপুর স্টেশনে তুলে ধরা হবে ওই রাজ্যের ১৬টি জনজাতি গোষ্ঠীর চিরাচরিত শিল্প কলা। প্রতিটি অমৃত স্টেশন সংশ্লিষ্ট শহরটির সমকালীন চাহিদা এবং ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে কাজ করবে। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী স্থান এবং তীর্থস্থলকে সংযুক্ত করতে সূচনা হয়েছে ভারত গৌরব পর্যটক ট্রেনের। এইসব উদ্যোগ এখন আরও জোরদার হচ্ছে তা আপনারা লক্ষ্য করেছেন। 

বন্ধুগণ, 

কোনও ব্যবস্থাপনার ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটাতে গেলে তার সম্ভাবনার দিকটি বুঝে নেওয়া জরুরি। বিকাশের পালে হাওয়া লাগানোর বিরাট ক্ষমতা ধরে ভারতীয় রেল। সেকথা মাথায় রেখে বিগত ৯ বছরে আমরা রেলক্ষেত্রে নজিরবিহীন মাত্রায় বিনিয়োগ করেছি। এবছরের বাজেটে রেলক্ষেত্রে বরাদ্দ হয়েছে আড়াই লক্ষ কোটি টাকার বেশি। এই অর্থের পরিমাণ ২০১৪-এর তুলনায় ৫ গুণ। আজ রেলক্ষেত্রে সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য আমরা সার্বিক এক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করছি। বিগত ৯ বছরে রেলইঞ্জিন উৎপাদন বেড়েছে নগুণ। বর্তমানে দেশে আগের তুলনায় ১৩ গুণ বেশি এইচএলবি কামরা উৎপাদন হচ্ছে। 

 

বন্ধুগণ, 

উত্তর পূর্বাঞ্চলে রেল সংযোগের প্রসারে অগ্রাধিকার দিচ্ছে আমাদের সরকার। রেলপথ ডবল লাইন করা, গেজ রূপান্তর, বৈদ্যুতিকীকরণ এবং নতুন রেলপথ নির্মাণ – সবক্ষেত্রে কাজ চলছে জোরকদমে। খুব শীঘ্রই উত্তর পূর্বাঞ্চলের সব রাজ্যের রাজধানী এসে যাবে রেল সংযোগের আওতায়। নাগাল্যাণ্ডে ১০০ বছর পর তৈরি হয়েছে দ্বিতীয় রেলস্টেশন। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নতুন রেলপথ চালুর কাজ যে গতিতে এগোচ্ছে তা আগের তুলনায় তিনগুণ। 

বন্ধুগণ, 
 
বিগত ৯ বছরে ২২০০ কিলোমিটার পণ্যবাহী রেল করিডর তৈরি হয়েছে- যার ফলে পণ্যবাহী ট্রেনের যাতায়াতের সময় কমে গেছে অনেকখানি। আগে দিল্লি- রাজধানী অঞ্চল থেকে গুজরাট কিংবা মহারাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূলের  বন্দরগুলিতে পণ্য পাঠাতে গড়ে ৭২ ঘন্টা সময় লাগতো। এখন একই পরিমাণ পণ্য সেখানে পৌঁছে যাচ্ছে ২৪ ঘন্টার মধ্যে। একইভাবে অন্য রুটগুলিতেও পণ্য পরিবহনে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত সময় কম লাগছে এখন। অর্থাৎ, পণ্যবাহী ট্রেন এখন চলছে আরও দ্রুত, জিনিষপত্র গন্তব্যে পৌঁছোচ্ছে তাড়াতাড়ি। এই ইতিবাচক পরিবর্তনের সুবাদে আমাদের উদ্যোগপতি, ব্যবসায়ী এবং বিশেষ করে আমাদের কৃষক ভাইবোনেরা বিশেষভাবে উপকৃত হচ্ছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অনেক তাড়াতাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া যাচ্ছে ফলমূল কিংবা শাকসব্জী। পরিবহনে গতি আসায় আমাদের পণ্য আরও তাড়াতাড়ি পৌঁছে যাবে বিশ্বের বাজারে। ক্ষুদ্র উদ্যোগপতি এবং কারিগররা আরও সহজে এবং আরও দ্রুত বিশ্বের বাজারের নাগাল পাবেন। 

বন্ধুগণ, 

আপনারা দেখেছেন, অতীতে রেল সেতুর সংখ্যা কম হওয়া কতটা অসুবিধার কারণ ছিল। ২০১৪-র আগে দেশে রেলসেতুর সংখ্যা ছিল ৬ হাজারের কম। আজ তা ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। ব্যস্ত রেলপথগুলিতে মানব প্রহরাযুক্ত লেভেল ক্রসিংয়ের সংখ্যা নামিয়ে আনা হয়েছে শূন্যে। প্রবীণ এবং দিব্যাঙ্গদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হচ্ছে রেল প্ল্যাটফর্ম এবং ট্রেন। 


বন্ধুগণ, 

ভারতীয় রেলের আধুনিকীকরণই শুধুমাত্র নয়, তাকে আরও পরিবেশবান্ধব করে তোলা আমাদের লক্ষ্য। খুব শীঘ্রই ভারতের একশো শতাংশ রেলপথেই বৈদ্যুতিকীকরণের কাজ শেষ হবে। এটি পরিবেশবান্ধব তা আপনারা সহজেই অনুমান করতে পারছেন। বিগত ৯ বছরে সোলার প্যানেল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকাঠামো সম্বলিত রেল স্টেশনের সংখ্যা ১২০০ ছাড়িয়েছে। আমাদের ট্রেনগুলির প্রায় ৭০ হাজার কামরায় লাগানো হয়েছে এলইডি আলো। ট্রেনে বায়ো টয়লেটের সংখ্যা ২০১৪-র তুলনায় এখন ২৮ গুণ। এসব অমৃত স্টেশন-এর বাড়িগুলিও হবে পরিবেশবান্ধব। ২০৩০ নাগাদ নিজের রেল নেটওয়ার্কের কার্বন নি:সরণের পরিমাণ শূন্যে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য রেখেছে ভারত। 


বন্ধুগণ, 
 
দশকের পর দশক ধরে ভারতীয় রেল নাগরিকদের কাছে প্রিয়জনের সঙ্গে সংযোগ সাধনের অন্যতম মাধ্যম এবং তা সারাদেশকে বেঁধেছে একসূত্রে। এখন আমাদের কর্তব্য তাকে আরও আধুনিক করে তোলা। রেলের রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিচ্ছন্নতা দায়িত্বশীল নাগরিকদের কর্তব্য। ‘অমৃত কাল’ কর্তব্য পালনের সময়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিরোধীদের একাংশ পুরোনো যুগেই পড়ে আছেন এবং অন্যদেরও কাজ করতে দিচ্ছেন না। বর্তমান এবং ভবিষ্যতের চাহিদার কথা মাথায় রেখে গড়ে তোলা হয়েছে আধুনিক সংসদভবন। সংসদ হল দেশের গণতন্ত্রের প্রতীক। কিন্তু বিরোধীদের একাংশ এক্ষেত্রেও আপত্তি তুলেছেন। তারা আপত্তি তুলেছেন ‘কর্তব্য পথ’ নির্মাণের সময়ও। এঁরা আমাদের বীর শহীদদের জন্য ৭০ বছরেও একটি যুদ্ধ স্মারক গড়ে তোলেননি। কিন্তু যখন আমরা তা গড়ে তুলেছি, তারা সমালোচনা করেছে। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের স্ট্যাচু অফ ইউনিটি বিশ্বের দীর্ঘতম মূর্তি-যা প্রত্যেক ভারতীয়র কাছে গর্বের বিষয়। কয়েকটি রাজনৈতিক দল সর্দার সাহেবকে শুধুমাত্র ভোটের সময় স্মরণ করে। কিন্তু এইসব রাজনৈতিক দলের কোনও গুরুত্বপূর্ণ নেতা স্ট্যাচু অফ ইউনিটি-তে গিয়ে শ্রদ্ধা জানাননি। 

বন্ধুগণ, 

আমরা, ইতিবাচক রাজনীতিতে বিশ্বাসী এবং গঠনাত্মক নীতি নিয়ে চলছি। ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থের উপরে উঠে আমরা অগ্রাধিকার দিয়েছি সমগ্র দেশের বিকাশে। এক্ষেত্রে কোন রাজ্যে কারা ক্ষমতায় আছেন তা বিচার্য নয়। ‘সবকা সাথ-সবকা বিকাশ’ আমাদের মূল মন্ত্র। 

বন্ধুগণ, 

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে দেশের তরুণ প্রজন্মের কর্মসংস্থানের অন্যতম ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে ভারতীয় রেল। শুধুমাত্র রেলেই প্রায় দেড় লক্ষ তরুণ-তরুণী স্থায়ী চাকরি পেয়েছেন। পাশাপাশি পরিকাঠামো খাতে কোটি কোটি টাকার বিনিয়োগ তরুণ প্রজন্মের সামনে কাজের সুযোগ এনে দিয়েছে। বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকার ১০ লক্ষ তরণ তরুণীর কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে একটি বিশেষ কর্মসূচিতে হাত দিয়েছে। নিয়মিত আয়োজন করা হচ্ছে ‘রোজগার মেলা’-র যেখানে নিয়োগ পত্র তুলে দেওয়া হচ্ছে তরুণ-তরুণীদের হাতে। 

বন্ধুগণ, 

এই অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকজন স্বাধীনতা সংগ্রামী উপস্থিত রয়েছেন। রয়েছেন, পদ্ম সম্মান প্রাপকরাও। প্রতিটি ভারতীয়ের কাছে আগস্ট মাসটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। এই মাস কর্তব্য পালনের বার্তা দেয়, স্মরণে আনে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের দিনগুলিকে। আগামীকাল ৭ই আগস্ট, সারাদেশ জাতীয় হস্তচালিত তাঁত দিবস পালন করবে- যা  স্বদেশী আন্দোলনের প্রতি উৎসর্গীকৃত। এই দিনটি ভোকাল-ফর-লোকাল ধারনার প্রসারে উদ্যোগী হওয়ার সময়। খুব শীঘ্রই আমরা গণেশ চতুর্থী পালন করবো। এই উদযাপনকে পরিবেশ বান্ধব করে তোলার লক্ষ্যে অগ্রাধিকার দেওয়া দরকার। স্থানীয় কারিগর এবং ক্ষুদ্র উদ্যোগপতিদের পণ্য ক্রয়ে আমাদের উৎসাহিত করে এই উৎসব। 
বন্ধুগণ, 

৭ই আগস্টের পর একদিন পেরোলেই আসবে ৯ই আগস্ট – যেদিন শুরু হয়েছিল ভারত ছাড়ো আন্দোলন। মহাত্মা গান্ধীর আহ্বানে স্বাধীনতার পথে অগ্রসর হওয়ায় নতুন শক্তিতে উজ্জীবিত করেছিল দেশবাসীকে। সেই ধারায় অনুপ্রাণিত হয়ে আজ সারাদেশ সব ধরনের নেতিবাচকতার বিরুদ্ধে গর্জে উঠছে। প্রতিধ্বনিত হচ্ছে, এইসব স্লোগান - দুর্নীতি দূর হোক, পরিবারতন্ত্র দূর হোক, তোষণের রাজনীতি দূর হোক। 

বন্ধুগণ, 

১৪ আগস্ট বিভাজন বিভীষিকা দিবস। ওইদিন ভারতমাতা দুভাগ হয়ে গিয়েছিলেন। ভারত ভাগের জেরে যাদের চোখে জল এসেছিল তাদের স্মরণ করার দিন এটি।  যেসব পরিবার সর্বহারা হয়ে পড়েছিলেন তাদের প্রতি ঐক্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার দিন ওইটি। ভারত মাতার ভবিষ্যতের সুরক্ষার দায়িত্ব সকলেরই। নিশ্চিত করতে হবে যাতে কোনওভাবেই আমাদের দেশের কোনও ক্ষতি না হয়। 

বন্ধুগণ, 

প্রতিটি শিশু, প্রতি প্রবীণ নাগরিক - দেশের সকলেই ১৫ই আগস্টের জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকেন। আগের বছরের মতো এবারেও প্রতিটি ঘরে তুলতে হবে ত্রিবর্ণরঞ্জিত জাতীয় পতাকা। আমি দেখছি, আমার বন্ধুদের অনেকে তাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলের ডিপিতে ত্রিবর্ণ-বিষয়ক ছবি আপলোড করছেন। ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ পতাকা মিছিলেরও আয়োজন হচ্ছে। এই চিন্তাধারায় সকলেই, বিশেষত যুব প্রজন্ম, অণুপ্রাণিত হোন- এমনটাই আমি চাই। 

বন্ধুগণ,

দীর্ঘদিন ধরে আমাদের দেশের মানুষ মনে করতেন কর প্রদান কোনও কাজেই আসে না। তারা মনে করতেন তাদের কষ্টার্জিত অর্থ দুর্নীতির জাঁতাকলে নষ্ট হয়ে যাবে। আমাদের সরকার এই ধারণা পাল্টে দিয়েছে। আজ মানুষ অনুভব করছেন যে তাদের টাকা খরচ করা হচ্ছে দেশের উন্নয়নে। বাড়ছে সুযোগ সুবিধা, সহজ হয়ে উঠছে জীবন-যাপন। আপনি যে দুর্ভোগ পেরিয়ে এসেছেন, আপনার সন্তানকে যাতে তা না পোহাতে হয় তা নিশ্চিত করতে দিনরাত কাজ চলছে। আমাদের করদাতারা যেভাবে উন্নয়নমূলক উদ্যোগসমূহের প্রতি আস্থা রাখছেন এবং কর প্রদানে এগিয়ে আসছেন তাতেই বিষয়টি প্রতিফলিত। একটা সময় ছিল যখন ২ লক্ষ টাকা উপার্যনের ওপরেও কর বসতো। আজ, মোদীর গ্যারিন্টির ফলে ৭ লক্ষ টাকা উপার্জনেও কর দিতে হয়না। অথচ আয়কর বাবদ সংগ্রহ ধারাবাহিকভাবে বেড়ে চলেছে- যা খরচ করা হচ্ছে দেশের উন্নয়নে। এর থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় দেশের মধ্যবিত্তদের সংখ্যা বাড়ছে। সম্প্রতি আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা শেষ হয়েছে। এবছর দাখিল হওয়া আয়কর রিটার্নের সংখ্যা বেড়েছে ১৬ শতাংশ। দেশের বিকাশের সাক্ষী হচ্ছেন মানুষ। রেল যোগাযোগ বাড়ছে, প্রসারিত হচ্ছে মেট্রো নেটওয়ার্ক। মানুষ দেখছেন কত দ্রুত গতিতে দেশে তৈরি হচ্ছে একের পর এক নতুন এক্সপ্রেসওয়ে। মানুষ দেখছেন, কত দ্রুত তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন বিমানবন্দর, হাসপাতাল কিংবা স্কুল বাড়ি। সকলেই বুঝতে পারছেন যে তাদের টাকা নতুন ভারত গড়তে কাজে লাগছে। এইসব উন্নয়নের মধ্যেই লুকিয়ে আছে আপনার শিশুদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের চাবিকাঠি। মানুষের এই বিশ্বাস দিনদিন আরও জোরদার করে তোলা দরকার। 

ভাইয়েরা ও বোনেরা, 

৫০৮টি রেলস্টেশনের আধুনিকীকরণ সঠিক দিশায় অগ্রসর হওয়ার এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। অমৃত ভারত স্টেশনগুলি ভারতীয় রেলকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে এই আশ্বাস আমি আপনাদের দিচ্ছি। বিপ্লবের এই মাসে, ২০৪৭-এ ভারত যখন স্বাধীনতার ১০০ বছর উদযাপন করবে, তখন নতুন ভারত গড়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার অঙ্গীকার আমরা গ্রহণ করছি। এই অঙ্গীকার গ্রহণের মধ্যে দিয়েই আমি আপনাদের সকলকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও শুভেচ্ছা জানাই! 

 

Explore More
শ্রী রাম জন্মভূমি মন্দিরের ধ্বজারোহণ উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বাংলা অনুবাদ

জনপ্রিয় ভাষণ

শ্রী রাম জন্মভূমি মন্দিরের ধ্বজারোহণ উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বাংলা অনুবাদ
India leads globally in renewable energy; records highest-ever 31.25 GW non-fossil addition in FY 25-26: Pralhad Joshi.

Media Coverage

India leads globally in renewable energy; records highest-ever 31.25 GW non-fossil addition in FY 25-26: Pralhad Joshi.
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Prime Minister lauds Suprabhatam programme on Doordarshan for promoting Indian traditions and values
December 08, 2025

The Prime Minister has appreciated the Suprabhatam programme broadcast on Doordarshan, noting that it brings a refreshing start to the morning. He said the programme covers diverse themes ranging from yoga to various facets of the Indian way of life.

The Prime Minister highlighted that the show, rooted in Indian traditions and values, presents a unique blend of knowledge, inspiration and positivity.

The Prime Minister also drew attention to a special segment in the Suprabhatam programme- the Sanskrit Subhashitam. He said this segment helps spread a renewed awareness about India’s culture and heritage.

The Prime Minister shared today’s Subhashitam with viewers.

In a separate posts on X, the Prime Minister said;

“दूरदर्शन पर प्रसारित होने वाला सुप्रभातम् कार्यक्रम सुबह-सुबह ताजगी भरा एहसास देता है। इसमें योग से लेकर भारतीय जीवन शैली तक अलग-अलग पहलुओं पर चर्चा होती है। भारतीय परंपराओं और मूल्यों पर आधारित यह कार्यक्रम ज्ञान, प्रेरणा और सकारात्मकता का अद्भुत संगम है।

https://www.youtube.com/watch?v=vNPCnjgSBqU”

“सुप्रभातम् कार्यक्रम में एक विशेष हिस्से की ओर आपका ध्यान आकर्षित करना चाहूंगा। यह है संस्कृत सुभाषित। इसके माध्यम से भारतीय संस्कृति और विरासत को लेकर एक नई चेतना का संचार होता है। यह है आज का सुभाषित…”