“উত্তর পূর্বাঞ্চল এবং মণিপুর ভারতের ক্রীড়া ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ স্বাক্ষর রেখেছে”
“দেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যে উত্তর পূর্বাঞ্চল নতুন রঙ এবং দেশের ক্রীড়া বৈচিত্র্যে নতুন গতি সংযোজন করেছে”
“যে কোন চিন্তন শিবিরের সূচনা হয় মননের মধ্যে দিয়ে তা এগিয়ে যায় অনুধ্যানের মাধ্যমে এবং শেষ হয় রূপায়ণে”
“প্রত্যেক টুর্নামেন্টের নিরিখে ক্রীড়া পরিকাঠামো এবং প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিতে হবে আপনাদের। সেইসঙ্গে স্বল্পকালীন মধ্য মেয়াদী এবং দীর্ঘ মেয়াদী লক্ষ্য স্থির করতে হবে”
“ক্রীড়া পরিকাঠামোর ক্ষেত্রে ৪০০ কোটি টাকারও বেশি প্রকল্প উত্তর পূর্বাঞ্চলে আজ উন্নয়ন এবং নতুন দিশার সঞ্চার ঘটিয়েছে”

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ মণিপুরের ইম্ফল-এ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির যুব বিষয়ক এবং ক্রীড়া মন্ত্রীদের চিন্তন শিবিরে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে ভাষণ দেন।

সম্মেলনে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ বছরের চিন্তন শিবির মণিপুরে অনুষ্ঠিত হওয়ায় আনন্দ প্রকাশ করেন এবং বলেন, উত্তর পূর্বাঞ্চলের অনেক ক্রীড়াবিদ দেশের জন্য পদক জয় করে ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকার গৌরব অর্জন করেছে। এলাকার নিজস্ব ক্রীড়া যেমন সাগল কাংজাই, থাং-তা, যুবি লাকপি, মুকনা এবং হিয়াং তানাবা প্রভৃতির উল্লেখ করেন এবং বলেন যে এই সমস্ত ক্রীড়া নিজ গুণেই খুবই আকর্ষণীয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, উত্তর পূর্বাঞ্চল এবং মণিপুরের দেশের ক্রীড়া নৈপুণ্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রভূত অবদান রয়েছে। দেশজ ক্রীড়াগুলি সম্পর্কে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মণিপুরের ওও-লওবি’র উল্লেখ করেন যা কবাডিকে মনে করিয়ে দেয়। হিয়াং তানাবা কেরালার নৌকা দৌড়ের কথা মনে করায়। তিনি সেই সঙ্গে বলেন, পোলো-র সঙ্গে মণিপুরের এক ঐতিহাসিক সম্পর্কে রয়েছে। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, দেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যে নতুন রঙ এবং ক্রীড়া বৈচিত্র্যে নতুন গতি সঞ্চার করেছে উত্তর পূর্বাঞ্চল। প্রধানমন্ত্রী আস্থা প্রকাশ করে বলেন, দেশের সমস্ত জায়গার ক্রীড়া মন্ত্রীরা চিন্তন শিবিরের শেষে এক শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা লাভ করবেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে কোন চিন্তন শিবির শুরু হয় মননের মধ্যে দিয়ে তা এগিয়ে যায় অনুধ্যানের মাধ্যমে এবং শেষ হয় রূপায়ণে। চিন্তন শিবিরের ওপর আলোকপাত করে প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যৎ লক্ষ্য নিয়ে আলোচনা এবং পূর্ববর্তী সম্মেলনগুলির পর্যালোচনার ওপর জোর দেন। ২০২২ সালে কেভাডিয়ায় বৈঠকের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে সেখানে আলোচনা হয়েছিল এবং দেশের উন্নত ক্রীড়া পরিমন্ডল গড়ে তোলার একটা নকশা তার থেকে তৈরি করা হয়। কেন্দ্র এবং রাজ্যগুলির ক্রীড়া ক্ষেত্রে আরও বেশি করে অংশগ্রহণের ফলেই সফলতা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, পর্যালোচনা নীতি এবং কর্মসূচিকে নিয়ে নয়। বরং পূর্ববর্তী বছরে ক্রীড়া সাফল্য এবং পরিকাঠামো উন্নয়ন ভিত্তিক কর্মসূচি নিয়ে হতে হবে।

গত বছরে ভারতীয় অ্যাথলিট এবং ক্রীড়া ব্যক্তিত্বদের সাফল্যের ওপর আলোকপাত করে প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক ক্রীড়া ক্ষেত্রে তাঁদের অসাধারণ সাফল্যের প্রশংসা করেন। তাঁদের সাফল্যের উদযাপনের পাশাপাশি খেলোয়াড়দের সহায়তা প্রসারের ওপরও জোর দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে ক্রীড়া মন্ত্রক এবং তার দপ্তরের প্রস্তুতি পরীক্ষিত হবে আগামীদিনে বিশ্বকাপ স্কোয়াশ, হকি এশীয় চ্যাম্পিয়ানশিপ ট্রফি এবং এশীয় যুব ও জুনিয়ার ভারোত্তলন চ্যাম্পিয়ানশিপে। এক্ষেত্রে তিনি খেলোয়াড়দের প্রস্তুতির কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে ক্রীড়া মন্ত্রীদের ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে কাজ করার সময় এসেছে। ফুটবল এবং হকিতে ম্যান টু ম্যান মার্কিং-এর তুলনা টেনে তিনি বলেন, প্রত্যেক টুর্নামেন্টের জন্য ভিন্ন কৌশল নিয়ে এগোতে হবে এবং ম্যাচ টু ম্যাচ মার্কিং-এর দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে চলতে হবে। তিনি বলেন, ‘ক্রীড়া পরিকাঠামোর এবং প্রত্যেকটা টুর্নামেন্টের নিরিখে ক্রীড়া প্রশিক্ষণের ওপর আপনাদের জোর দিতে হবে, সেই সঙ্গে স্বল্প মেয়াদী, মধ্য মেয়াদী এবং দীর্ঘ মেয়াদী লক্ষ্য স্থির করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একজন খেলোয়াড় এককভাবে দক্ষতা অর্জন করতে পারে। কিন্তু সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারলে তবেই অসাধারণ নৈপুন্য দেখানো সম্ভব। স্থানীয় এলাকা ভিত্তিক আরও বেশি প্রতিযোগিতা এবং ক্রীড়া টুনার্মেন্টে অংশ নেওয়ার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, খেলোয়াড়রা এর থেকে অনেক কিছু শিখতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদীর ক্রীড়া মন্ত্রীদেরকে স্পষ্টতই বলেন, কোনো ক্রীড়া প্রতিভা যাতে উপেক্ষিত না হয় সেদিকে নজর দিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের প্রত্যেক প্রতিভাবান খেলোয়াড়কে উন্নতমানের ক্রীড়া পরিকাঠামোর জোগান দেওয়া সরকারের দায়িত্ব। এক্ষেত্রে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারকে একযোগে কাজ করতে বলেন তিনি। খেলো ইন্ডিয়া প্রকল্পের ওপর আলোকপাত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা নিঃসন্দেহে জেলা স্তরে ক্রীড়া পরিকাঠামোর উন্নতি সাধন করেছে। এখন সেই উন্নয়নকে ব্লক স্তরে পৌঁছে দিতে হবে। বেসরকারী ক্ষেত্র সহ সমস্ত অংশীদারদের এক্ষেত্রে অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি বলে তিনি জানান। প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাব দেন জাতীয় ক্রীড়া উৎসবকে পুনর্বিবেচনা করা যেতে পারে তাকে আরও বেশি সক্রিয় করে তোলার জন্য। এবং তিনি এও বলেন, এই জাতীয় অনুষ্ঠান যা রাজ্যস্তরে হয়ে থাকে তাকে প্রথা মাফিক হিসেবে বিবেচনা করলে চলবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বাত্মক প্রয়াসের মধ্যে দিয়ে ভারত এক প্রথম সারির ক্রীড়া রাষ্ট্র হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে পারবে।

উত্তর পূর্বাঞ্চলে ক্রীড়া উন্নয়নের যে অগ্রগতি সাধন হয়েছে তার ওপর আলোকপাত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই এলাকা দেশের কাছে এক বিরাট অনুপ্রেরণা। তিনি জানান, ক্রীড়া পরিকাঠামো ক্ষেত্রে ৪০০ কোটি টাকারও বেশি প্রকল্প উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নে আজ নতুন দিশার সঞ্চার করেছে। প্রধানমন্ত্রী ইম্ফলের জাতীয় ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃষ্টান্ত দিয়ে বলেন, আগামীদিনে দেশের যুব সম্প্রদায়ের জন্য নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে যাবে। খেলো ইন্ডিয়া কর্মসূচি এবং টিওপিএস এক্ষেত্রে এক বিরাট ভূমিকা পালন করেছে। উত্তর পূর্বাঞ্চলের প্রত্যেকটি জেলায় অন্তত পক্ষে দুটি খেলো ইন্ডিয়া সেন্টার এবং প্রত্যেক রাজ্যে খেলো ইন্ডিয়া স্টেট সেন্টার অফ এক্সলেন্স গড়ে তোলা হচ্ছে। তিনি বলেন, এগুলি হবে ক্রীড়া ক্ষেত্রে নব ভারতের ভিত্তি স্বরূপ এবং দেশকে তা এক নতুন পরিচিতি দেবে। ভাষণ শেষে শ্রী মোদী প্রত্যেক অংশীদারদের সংশ্লিষ্ট রাজ্যে কাজের গতি বাড়ানোর ওপর জোর দেন এবং আস্থা প্রকাশ করে বলেন, যে চিন্তন শিবির এই দিশা পথে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

প্রেক্ষাপট

বিভিন্ন রাজ্য, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং যুব কল্যাণ মন্ত্রক থেকে ১০০রও বেশি অভ্যাগত দু-দিনের এই চিন্তন শিবিরে অংশ নেবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশ্বে ভারতকে এক সর্ববৃহৎ ক্রীড়া শক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে এবং রাষ্ট্রকে আরও বেশি সক্ষম করে তুলতে তারা তাদের মতামত ও দৃষ্টিভঙ্গীর কথা জানাবেন। এর পাশাপাশি দেশ গড়ার বিভিন্ন কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত করে যুব ব্যক্তিত্ব বিকাশ কি ভাবে ঘটানো যায় তা নিয়েও আলোচনা হবে।  

সম্পূর্ণ ভাষণ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
Make in India goes global with Maha Kumbh

Media Coverage

Make in India goes global with Maha Kumbh
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Governor of Mizoram meets PM Modi
January 21, 2025