প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে আসাম রোজগার মেলায় ভাষণ দিয়েছেন।
সমাবেশের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী আসাম সরকারের সরকারি চাকরির জন্য নিয়োগ প্রাপ্ত যুবক এবং তাঁদের পরিবারকে অভিনন্দন জানান। তিনি বিহু উপলক্ষে গত মাসে তাঁর রাজ্য সফরের কথা স্মরণ করেন এবং গৌরবময় অসমিয়া সংস্কৃতির স্মৃতি এখনও তাঁর মনে গেঁথে রয়েছে বলে জানান। তিনি বলেন, আজকের রোজগার মেলা আসামের তরুণদের ভবিষ্যতের প্রতি গুরুত্বের প্রতিফলন। তিনি আরও জানান, এর আগেও আসামে রোজগার মেলার মাধ্যমে ৪০ হাজারেরও বেশি যুবককে সরকারি চাকরি দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ প্রায় ৪৫ হাজার যুবকের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে। তরুণদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কামনাও করেন শ্রী মোদী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসাম শান্তি ও উন্নয়নের এক নতুন যুগের সাক্ষী হচ্ছে এবং উন্নয়নের এই গতি আসামে ইতিবাচক অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। সরকারি নিয়মকে আরও স্বচ্ছ করার জন্য আসাম সরকার যে প্রক্রিয়া শুরু করেছে, সেকথা উল্লেখ করেন তিনি। বিভিন্ন বিভাগে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালানোর জন্য গঠিত ‘আসাম ডায়রেক্ট রিক্রুটমেন্ট কমিশন’ – এর কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। পূর্বে যে প্রক্রিয়া ছিল, তার জন্য অনেক নিয়োগ সময়মতো করা যায়নি। প্রতিটি বিভাগের আলাদা আলাদা নিয়ম এবং প্রার্থীদের বিভিন্ন বিভাগের জন্য একাধিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হ’ত। তিনি বলেন, এই সমস্ত প্রক্রিয়াগুলি এখন খুব সহজ করা হয়েছে। এই কৃতিত্বের জন্য আসাম সরকারকে অভিনন্দন জানান তিনি।
“আজাদি কা অমৃতকাল – এ আমরা সবাই আমাদের দেশকে এক উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার নিয়েছি” বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। অমৃতকালের পরবর্তী ২৫ বছর সেবাকালের মতো গুরুত্বপূর্ণ। নিয়োগকারীদের আচরণ, চিন্তাভাবনা, কাজের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গী ও জনসাধারণের উপর প্রভাবের গুরুত্বের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে জানান যে, নতুন নিয়োগপ্রাপ্তরা প্রত্যেক সাধারণ নাগরিকের জন্য আসাম সরকারের মুখ হয়ে উঠবে। শ্রী মোদী বলেন, “টি-২০ ক্রিকেটের এই যুগে দেশের মানুষ দ্রুত ফলাফল চান”। তিনি দেশের নাগরিকদের আশা-আকাঙ্খা পূরণে সরকারি কর্মচারীদের দায়িত্বের উপর জোর দেন। প্রধানমন্ত্রী নিয়োগকারীদের নিষ্ঠার সঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান, যাতে তাঁরা সমাজের উন্নতিসাধনে অবদান রাখতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রী জানান, ভারতের পরিকাঠামো ক্ষেত্রে খুব দ্রুতগতিতে আধুনিকীকরণের জন্য লক্ষ-কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। নতুন মহাসড়ক, এক্সপ্রেসওয়ে, রেললাইন, বন্দর, বিমানবন্দর এবং জলপথ প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন তিনি। প্রতিটি নতুন পরিকাঠামো প্রকল্পের সঙ্গে প্রতিটি ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান ও আত্ম-কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইঞ্জিনিয়ার, প্রযুক্তিবিদ, হিসেব রক্ষক, শ্রমিক, নিয়োগ এবং বিমানবন্দরের উন্নয়নে ইস্পাত ও সিমেন্ট, বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি প্রয়োজনীয়তার উদাহরণের কথা তুলে ধরেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, রেললাইন সম্প্রসারণ ও বিদ্যুতায়নের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সু্যোগ তৈরি হচ্ছে। ২০১৪ সাল থেকে সরকার ৪ কোটি পাকা বাড়ি তৈরি করেছে এবং দরিদ্রদের হাতে তুলে দিয়েছে। উৎপাদন, লজিস্টিক ক্ষেত্রে যুক্ত দক্ষ শ্রমিকদের অবদানে প্রশংসা করেন তিনি। কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে আয়ুষ্মান ভারত যোজনার ভূমিকার কথাও তুলে ধরেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই যোজনার আওতায় নতুন হাসপাতাল ও ক্লিনিক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কয়েক সপ্তাহ আগে এইমস্ গুয়াহাটি এবং তিনটি মেডিকেল কলেজ জাতির উদ্দেশে উৎসর্গের কথা স্মরণ করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, চিকিৎসা পেশার সঙ্গে যুক্ত তরুণদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, “আজ তরুণরা এমন অনেক ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে, যা ১০ বছর আগে কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম দেশে লক্ষ লক্ষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সাহায্য করেছে। কৃষি, সামাজিক অনুষ্ঠান এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ড্রোনের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এতে তরুণদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের প্রসঙ্গও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, প্রতিটি গ্রামে ব্রডব্র্যান্ড সংযোগ পৌঁছে গেছে। এটি বৃহৎ পরিসরে কর্মসংস্থান ও আত্মকর্মসংস্থানে উৎসাহ যুগিয়েছে।
বর্তমান সরকারের নীতির কৃতিত্বের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উত্তর-পূর্বের বিপুল সংখ্যক যুবক উন্নয়নের মূল ধারায় যুক্ত হচ্ছেন। শ্রী মোদী বলেন, “সরকার নতুন কর্মসংস্থান ও আত্ম-কর্মসংস্থানের সু্যোগ করে দিয়ে তরুণদের স্বপ্ন পূরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা এক নতুন ভারত গড়ার দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছি।


