অবলোকিতেশ্বর পদ্মপাণির হাজার বছরের থেকেও বেশি পুরনো এক মূর্তি ফিরিয়ে আনা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
২০১৩ সাল পর্যন্ত মোটামুটি ১৩টি প্রতিমা ভারতে ফিরে এসেছিল। কিন্তু গত সাত বছরে ভারত সাফল্যের সাথে ২০০টিরও বেশি মূল্যবান মূর্তি ফিরিয়ে এনেছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী মোদী কিলি পল এবং তার বোন নীমার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, আমাদের জাতীয় সংগীত জণ গণ মন গাওয়ার সময় ওদের ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল
মা আর মাতৃভাষা দুইয়ে মিলেই জীবনের ভিত্তি মজবুত করে, তাকে চিরন্তন রাখে: প্রধানমন্ত্রী মোদী
আমাদের গর্বের সঙ্গে নিজেদের মাতৃভাষায় কথা বলা উচিৎ: প্রধানমন্ত্রী মোদী
গত সাত বছরে, আমাদের দেশে আয়ুর্বেদের প্রচার এবং সম্প্রসারণের বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
ভারতে আপনি যেখানেই যান, স্বচ্ছতার জন্যে কোনো না কোনো উদ্যোগ আপনি সর্বত্রই দেখতে পাবেন: প্রধানমন্ত্রী
আমাদের দেশে সংসদ থেকে পঞ্চায়েত পর্যন্ত আলাদা আলাদা কার্যক্ষেত্রে, মহিলারা নতুন উচ্চতায় পৌছোতে পারছেন: প্রধানমন্ত্রী মোদী

আমার প্রিয় দেশবাসীরা, নমস্কার। ‌ 'মন কি বাত'- এ আপনাদের সকলকে আরও একবার স্বাগত জানাই‌। আজ আমরা 'মন কি বাত' শুরু করব ভারতের সাফল্যের বিষয় উল্লেখ করে। এই মাসের শুরুতে, ভারত ইটালি থেকে নিজের এক বহুমূল্য ঐতিহ্য ফেরত আনতে সফল হয়েছে। এই ঐতিহ্য হলো অবলোকিতেশ্বর পদ্মপাণির হাজার বছরের থেকেও বেশি পুরনো এক মূর্তি। কয়েক বছর আগে এই মূর্তিটি বিহারের গয়াজী দেবীর স্থান কুন্ডলপুর মন্দির থেকে চুরি হয়েছিল। কিন্তু অনেক চেষ্টার পর ভারত এই মূর্তিটি ফিরিয়ে আনতে পেরেছে। একইভাবে কয়েক বছর আগে তামিলনাড়ুর ভেলোর থেকে ভগবান অঞ্জনেয়ার হনুমানজীর মূর্তি চুরি হয়েছিল। হনুমানজীর এই মূর্তিটিও ৬০০-৭০০ বছরের পুরনো ছিল। এই মাসের শুরুতে অস্ট্রেলিয়াতে আমরা এটি পেয়েছি। আমাদের মিশন এটি পেয়েছে।

বন্ধুরা, হাজার হাজার বছরের আমাদের ইতিহাসে, দেশের কোণে কোণে, একের পর এক মূর্তি সর্বদাই তৈরি হতো, তাতে শ্রদ্ধা ছিল, শক্তি ছিল, দক্ষতা ছিল এবং তা ছিল বৈচিত্র্যে ভরপুর ।  আমাদের প্রতিটি মূর্তির ইতিহাসে তৎকালীন সময়ের প্রভাব স্পষ্ট ছিল। এগুলি ভারতীয় ভাস্কর্যের এক অপূর্ব নিদর্শন তো ছিলই, তাদের প্রতি আমাদের বিশ্বাসও যুক্ত ছিল। কিন্তু অতীতে অনেক মূর্তি চুরি করে ভারতের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কখনও এদেশে, কখনো ওদেশে এসব মূর্তি বিক্রি হতো এবং তাদের কাছে সেগুলো ছিল শুধুই শিল্পকর্ম। বিশ্বাস বা ইতিহাসের সাথে তাদের কোন সম্পর্ক ছিল না। ভারতমাতার প্রতি আমাদের দায়িত্ব হল এই মূর্তি গুলো ফিরিয়ে আনা। এই মূর্তিগুলিতে ভারতের আত্মা আছে, বিশ্বাসের অংশ আছে। তাদের সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক গুরুত্বও রয়েছে। এই দায়িত্বের কথা উপলব্ধি করে ভারত নিজের উদ্যোগ বৃদ্ধি করে। এর ফলে , চুরি করার প্রবৃত্তি যাদের মধ্যে ছিল, তাদের মধ্যে এক ভয় জন্ম নেয়। যেসব দেশে এই মূর্তিগুলি চুরি করে নিয়ে  যাওয়া হয়েছিল, তারাও এখন মনে করতে শুরু করেছে যে, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার  ক্ষেত্রে কোমল শক্তির  যে কূটনৈতিক যোগাযোগ ব্যবস্থা আছে, সেখানেও মূর্তিগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। কারণ, এর সঙ্গে ভারতের    অনুভূতি জড়িত, ভারতের শ্রদ্ধা যুক্ত। মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের ক্ষেত্রে যা শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে পারে। এই কিছুদিন আগেও আপনারা নিশ্চয়ই দেখেছেন, কাশি থেকে চুরি হয়ে যাওয়া মা অন্নপূর্ণা দেবীর  মূর্তিও ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এটি ভারতের প্রতি বিশ্বের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের একটি উদাহরণ। ২০১৩ সাল পর্যন্ত মোটামুটি ১৩টি প্রতিমা ভারতে ফিরে এসেছিল। কিন্তু গত সাত বছরে ভারত সাফল্যের সাথে ২০০টিরও বেশি মূল্যবান মূর্তি ফিরিয়ে এনেছে। আমেরিকা, বৃটেন হল্যান্ড, ফ্রান্স, কানাডা, জার্মানি, সিঙ্গাপুর, এরকম অনেক দেশ ভারতের এই আবেগ বুঝতে পেরেছে এবং মূর্তিগুলোকে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে যখন আমি আমেরিকায় গিয়েছিলাম, তখন সেখানে অনেক পুরোনো মূর্তি এবং সাংস্কৃতিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস পেয়েছিলাম।  দেশের কোনো মূল্যবান ঐতিহ্য যখন দেশে ফেরত আসে, তখন ইতিহাসের প্রতি যারা শ্রদ্ধাশীল, প্রত্নতত্ত্বের প্রতি যাঁদের আস্থা রয়েছে, বিশ্বাস ও সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত মানুষেরা এবং সর্বোপরি একজন ভারতীয় হিসেবে আমাদের সকলের সন্তুষ্টি খুবই স্বাভাবিক।      

বন্ধুরা, ভারতীয় সংস্কৃতি এবং আমাদের ঐতিহ্যের কথা বলতে গিয়ে আমি আজ আপনাদের মন কি বাত অনুষ্ঠানে দু’জন লোকের কথা শোনাতে চাই। কয়েকদিন ধরে ফেসবুক, টুইটার এবং ইনস্টাগ্রামে তানজানিয়ার দুই ভাই-বোন কিলি পল এবং তার বোন নীমাকে নিয়ে নানান কথাবার্তা হচ্ছে, আর আমার বিশ্বাস আপনারাও ওঁদের কথা অবশ্যই শুনেছেন। ওঁদের মধ্যে ভারতীয় সঙ্গীত নিয়ে বিশেষ উন্মাদনা রয়েছে, ভালোবাসা রয়েছে আর তাই ওঁরা ভীষণভাবেই জনপ্রিয়। ওঁদের যথাযথভাবে ঠোঁট নাড়ানো দেখে বোঝা যায় যে ওঁরা এই বিষয়টার জন্য কতটা পরিশ্রম করেন। কিছুদিন আগেই সাধারণতন্ত্র দিবসে আমাদের জাতীয় সংগীত 'জণ গণ মন' গাওয়ার সময় ওদের ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। কয়েকদিন আগেই ওঁরা লতা দিদির একটি গান গেয়ে তাঁকে আবেগপ্রবণ  শ্রদ্ধাঞ্জলি দিয়েছেন, আমি এই অদ্ভুত সৃজনশীলতার জন্য এই দু’জন ভাই-বোন কিলি আর নীমা - দু'জনকেই ভীষণভাবে প্রশংসাসূচক দৃষ্টিতে দেখি। কয়েকদিন আগে তানজানিয়ায়  ভারতীয় দূতাবাসে এঁদের বিশেষ সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে। ভারতীয় সংগীতের জাদু এমনই যে সবাইকে তা আকৃষ্ট করে। আমার মনে আছে কয়েক বছর আগে  দেড়শোর থেকেও বেশি দেশে গায়ক-গায়িকা এবং সঙ্গীতজ্ঞরা নিজেদের দেশে নিজেদের পোশাকে পরম পূজনীয় বাপুর প্রিয় অর্থাৎ মহাত্মা গান্ধীর প্রিয় ভজন 'বৈষ্ণব জন' গাওয়ার সফল চেষ্টা করেছেন। 

আজ যখন ভারত নিজের স্বাধীনতার ৭৫তম বার্ষিকীর মতো গুরুত্বপূর্ণ উৎসব উদযাপন  করছে, তখন দেশভক্তির গান নিয়েও এমন উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। এখন বিদেশি নাগরিকরা সেখানকার বিখ্যাত গায়কদের ভারতের দেশভক্তির গান গাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। শুধু এটাই নয়, যদি তানজানিয়ায় কিলি আর নীমা ভারতের গান এভাবে লিপ-সিংক করে গাইতে পারে তাহলে আমার দেশে আমাদের দেশের অনেক ভাষায় এমন অনেক গান আছে, যা নিয়ে আমরাও এমন চেষ্টা করতে পারি। কোন গুজরাতি শিশু তামিল সংগীতের উপর করতে পারে, কোন কেরলের শিশু আসামের সংগীতের উপর করতে পারে, আবার কোন কন্নড় শিশু জম্মু-কাশ্মীরের গানের উপর করতে পারে। একটা এমন পরিবেশ আমরা তৈরি করতে পারি আমরা যেখানে ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’-কে অনুভব করতে পারব। শুধু তাই নয় আমরা ‘আজাদী কা অমৃত মহোৎসবকে’ এরকম নতুন ভাবে পালন করতে পারি। আমি দেশের যুবক-যুবতীদের আহ্বান জানাচ্ছি যে আসুন ভারতীয় ভাষায় যেসব জনপ্রিয় গান রয়েছে আপনারা নিজেদের মতন করে তার ভিডিও বানান, আপনারাও জনপ্রিয় হবেন। আর দেশের বৈচিত্র্যের সঙ্গে নতুন প্রজন্মের পরিচয়ও হবে ।

আমার প্রিয় দেশবাসী, এই কয়েকদিন আগেই আমরা মাতৃভাষা দিবস পালন করেছি। বিদ্বান মানুষেরা মাতৃভাষা শব্দ কোথা থেকে এসেছে, কেমনভাবে এই শব্দের উৎপত্তি হয়েছে তা নিয়ে অনেক একাডেমিক শিক্ষামূলক তথ্য দিতে পারেন। আমি তো মাতৃভাষার জন্য এটাই বলতে পারি যেভাবে আমাদের জীবনকে যেভাবে আমাদের মা গড়ে দেয়, মাতৃভাষাও সেভাবেই আমাদের জীবনকে তৈরি করে। মা আর মাতৃভাষা দুইয়ে মিলেই জীবনের ভিত্তি মজবুত করে, তাকে চিরন্তন রাখে। যেমন আমরা আমাদের মাকে কখনোই ছাড়তে পারি না তেমন ভাবেই নিজের মাতৃভাষাকেও ছাড়তে পারিনা। আমার অনেক বছর আগের এক কথা মনে পড়ছে, আমি যখন আমেরিকা যাচ্ছিলাম, আলাদা আলাদা পরিবারের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেয়েছিলাম, একবার এক তেলুগু পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম আমি, সেখানে খুব খুশির এক দৃশ্য দেখেছিলাম। সেই পরিবারের একজন আমায় বলেছিল যে তাঁরা তাঁদের পরিবারের মধ্যে একটি নিয়ম তৈরি করেছেন যে যতই কাজ থাকুক, তারা যদি শহরের বাইরে না থাকেন তাহলে পরিবারের সকল সদস্য ডিনার টেবিলে বসে একসঙ্গে রাতের খাবার খাবেন আর ডিনার টেবিলে অবশ্যই সকলে তেলুগু ভাষায় কথা বলবেন।    

যে বাচ্চারা ওখানে জন্মেছিল, তাদের জন্যও এই নিয়ম বাধ্যতামূলক ছিল। নিজের মাতৃভাষার প্রতি এই পরিবারের প্রেম দেখে আমি খুবই প্রভাবিত হয়েছি।

বন্ধুরা, স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও কিছু মানুষ এক মানসিক দ্বন্দ্বে ভোগেন, যার কারণে তারা নিজেদের ভাষা, পোশাক-আসাক, খাদ্যাভ্যাস নিয়ে সংকোচ বোধ  করেন। এমনটা বিশ্বে আর কোথাও নেই। আমাদের গর্বের সঙ্গে নিজেদের মাতৃভাষায় কথা বলা উচিৎ।  আর ভাষার ব্যাপারে ভারত এত সমৃদ্ধ যে পৃথিবীতে এর তুলনাই নেই আর। আমাদের ভাষা গুলির সৌন্দর্য হল- কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত, কচ্ছ থেকে কোহিমা পর্যন্ত, শত ভাষা, হাজার বুলি একে অন্যের থেকে একদম আলাদা হয়েও কোথাও গিয়ে ভাবাদর্শে এক। ভাষা অনেক, ভাব এক। বহু বছর  ধরে আমাদের ভাষাগুলি একে অন্যের থেকে শিখে আসছে, একে অপরকে সমৃদ্ধ করেছে, একে অপরের বিকাশে সহায়ক হয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো ভাষা - তামিল আর ভারতীয় হিসেবে আমাদের গর্ব হওয়া উচিৎ যে আমাদের কাছে এরকম এক ঐতিহ্য আছে। এভাবেই যত পুরানো ধর্মশাস্ত্রগুলি আছে, তার অভিব্যক্তিও আমাদের সংস্কৃত ভাষায় আছে। ভারতবাসী প্রায় ১২১ কোটি। অর্থাৎ এটা গর্বের বিষয় যে ১২১ রকমের মাতৃভাষা এই দেশে রয়েছে।  আর এর মধ্যে ১৪টি এমন ভাষা আছে, যাতে অন্তত এক কোটি মানুষ রোজ কথা বলেন, ব্যবহার করেন; অর্থাৎ,  অনেক ইউরোপীয় দেশের জনসংখ্যা এক কোটিরও কম, তার চেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ এই ১৪টি ভাষার সাথে যুক্ত। ২০১৯-এ হিন্দি বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ভাষাগুলির মধ্যে তৃতীয় স্থানে ছিল। ভারতীয়দের এই বিষয়ে গর্ব হওয়া উচিৎ।  ভাষা কেবল অভিব্যক্তি প্রকাশের এক মাধ্যম নয়, ভাষা সমাজের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে বাচিঁয়ে রাখে। নিজের ভাষার ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করছেন সুরিনামের সুরজন পরোহিজি। এই মাসের ২ তারিখে ওঁর  ৮৪ বছর বয়স হল। ওঁর পূর্ব পুরুষরা বহু বছর আগে, রুজিরোজগারের খোঁজে হাজারো শ্রমিকদের সাথে সুরিনাম গিয়েছিলেন।  সুরজন পরোহিজি হিন্দিতে চমৎকার কবিতা লেখেন। ওঁকে ওখানকার জাতীয় কবিদের মধ্যে গন্য করা হয়। আজও ওঁর ভারতের প্রতি ভালবাসা অটুট, মাটির টান বিদ্যমান।  সুরিনামের লোকেরা সুরজন পরোহিজির নামে একটি সংগ্রহশালাও বানিয়েছেন। আমার জন্য একটি খুবই আনন্দের মূহুর্ত ছিল যখন আমি ২০১৫-তে ওঁকে সম্মানিত করার সুযোগ পাই।  

বন্ধুরা, আজকে, অর্থাৎ ২৭শে ফেব্রুয়ারী মারাঠি ভাষা গৌরব দিবস।

সর্ব মারাঠী বন্ধু, ভগিনিনা মারাঠি ভাষা, দিনাচ্চা হার্দিক শুভেচ্ছা।  

"সব মারাঠি বন্ধু, বোনেদের মারাঠি ভাষা দিবসের শুভেচ্ছা।"

মারাঠি কবিরাজ, বিষ্ণু বামন শীরওয়াডাকার জি, শ্রীমান কুসুমাগ্রজজি কে আজ শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে।

আজ কুসুমাগ্রজজির জন্ম দিন। কুসুমাগ্রজজি মারাঠি ভাষায় কবিতা লিখেছেন, অনেক নাটক লিখেছেন, মারাঠি সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছেন।

বন্ধুরা, আমাদের ভাষার নিজস্ব গুণ রয়েছে, মাতৃভাষার নিজস্ব বিজ্ঞান রয়েছে। সেই বিজ্ঞানকে বুঝেই জাতীয় শিক্ষানীতিতে স্থানীয় ভাষায় পড়াশোনার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। আমাদের প্রফেশনাল কোর্সগুলোও যেন স্থানীয় ভাষায় পড়ানো হয়, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। স্বাধীনতার অমৃতকালে আমাদের সকলের এক সঙ্গে এই উদ্যোগকে আরও ত্বরান্বিত করা উচিত, এ কাজ আমাদের আত্মমর্যাদার। আমি চাই, আপনার মাতৃভাষা যাই হোক না কেন, তার গুণাবলী সম্পর্কে অবশ্যই কিছু জানুন এবং কিছু অন্তত লিখুন।  

বন্ধুরা, কয়েকদিন আগে আমার বন্ধু এবং কেনিয়ার পূর্ব প্রধানমন্ত্রী রাইলা ওডিঙ্গাজির সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। এই বৈঠক চিত্তাকর্ষক কিন্তু বেশ আবেগপূর্ণ ছিল। আমরা যেহেতু খুব ভালো বন্ধু, তাই একে অপরকে মনের কথাও খোলাখুলিভাবে বলতে পারি। যখন আমরা কথা বলছিলাম, ওডিঙ্গাজি তাঁর মেয়ের কথা বললেন। তাঁর মেয়ে রোজমেরির ব্রেন টিউমার ধরা পড়ে এবং সেই জন্য উনি তাঁর মেয়ের অস্ত্রোপচার করিয়েছিলেন। কিন্তু, এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায়  রোজমেরির দৃষ্টিশক্তি প্রায় চলে গিয়েছিল, তিনি প্রায় কিছুই দেখতে পেতেন না। এবার আপনি কল্পনা করতে পারেন যে মেয়েটির কী দুরবস্থা হয়েছিল এবং আমরাও অনুমান করতে পারি একজন বাবার জন্যে তা কতটা কষ্টকর পরিস্থিতি, তা আমরা অনুভব করতে পারি। তিনি তাঁর মেয়ের চিকিৎসার জন্য বিশ্বের সমস্ত হাসপাতালে চেষ্টা করেছেন, বিশ্বের এমন কোন বড় দেশ নেই, যেখানে তিনি তাঁর মেয়ের চিকিৎসার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেননি। বিশ্বের বড় বড় দেশে খোঁজাখুঁজি করেও কোনো সাফল্য না পেয়ে একপ্রকার তিনি সব আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন, তাঁর বাড়িতে তখন হতাশার পরিবেশ। এই সময় কেউ তাঁকে আয়ুর্বেদ চিকিৎসার জন্য ভারতে আসার পরামর্শ দিয়েছিলেন। যদিও তিনি মেয়ের জন্য অনেক কিছু করেছেন, ক্লান্ত ছিলেন, তবুও তিনি ভাবলেন দেখাই যাক একবার চেষ্টা করে, কি হয়? তিনি ভারতে আসেন, কেরালার একটি আয়ুর্বেদিক হাসপাতালে তাঁর মেয়ের চিকিৎসা করাতে শুরু করেন। তাঁর মেয়ে এখানে অনেকদিন থেকেছে। আয়ুর্বেদের এই চিকিৎসার প্রভাবে রোজমেরির দৃষ্টিশক্তি অনেকাংশে ফিরে আসে। আপনি কল্পনা করতে পারেন, যেন আবার নতুনকরে প্রাণের সঞ্চার হল, রোজমেরির জীবনে আলো  ফিরে এলো। সম্পূর্ন পরিবারও যেন নতুন আলো নতুন জীবন ফিরে পেল। ওডিঙ্গাজি আমাকে আবেগপূর্ণ হয়ে বলেছিলেন তাঁর ইচ্ছা ভারতের আয়ুর্বেদের জ্ঞান, এই মহার্ঘ্য বিজ্ঞান, তিনি কেনিয়াতে নিয়ে যেতে চান। এতে যে ধরনের গাছপালা ব্যবহার করা হয় উনি সেইসব গাছের চাষ করবেন এবং আরও বেশি মানুষ যেন এর থেকে উপকৃত হয় তার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন।

এটা আমার জন্য অত্যন্ত আনন্দের বিষয় আমাদের দেশ ও ঐতিহ্য একজনের জীবনে সীমাহীন এক কষ্ট দূর করতে সাহায্য করেছে। এটা শুনে আপনিও খুশি হবেন। এমন কোন ভারতীয় আছেন যে গর্বিত হবে না? আমরা সবাই জানি যে শুধু ওডিঙ্গাজিই নয়, বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ আয়ুর্বেদ থেকে অনুরূপ উপকৃত হচ্ছেন। আয়ুর্বেদের অতি বড় প্রশংসাকারীর মধ্যে ব্রিটেনের প্রিন্স চার্লস'ও একজন! আমার সঙ্গে যখনই তাঁর দেখা হয়, তখনই তিনি আয়ুর্বেদ প্রসঙ্গে কথা বলেন। তিনি ভারতের বহু আয়ুর্বেদিক সংস্থার খবর-ও  রাখেন!

বন্ধুরা, গত সাত বছরে, আমাদের দেশে আয়ুর্বেদের প্রচার এবং সম্প্রসারণের বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।  আমাদের ঐতিহ্যবাহী চিরাচরিত স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ব্যবস্থাকে জনপ্রিয় করার যে সংকল্প, তা আরো সুদৃঢ় হয়েছে আয়ুষ মন্ত্রালয় গঠন হওয়ায়। আমি অত্যন্ত আনন্দিত কারণ সাম্প্রতিক অতীতে আয়ুর্বেদিক ক্ষেত্রেও বেশ কিছু নতুন স্টার্টআপ সামনে এসেছে।  এ মাসের শুরুতে, আয়ুস স্টার্টআপ চ্যালেঞ্জ শুরু হয়েছিল। এই চ্যালেঞ্জের উদ্দেশ্য ছিল এই ক্ষেত্রে কর্মরত  স্টার্টআপ গুলোকে চিহ্নিত করে, তাদের সাহায্য দেওয়া। যে সমস্ত যুবক-যুবতী বন্ধুরা এ বিষয়ে কাজ করছেন তাদের কাছে আমার আবেদন, তারা যেন এই চ্যালেঞ্জে অবশ্যই অংশগ্রহণ করেন।    

বন্ধুরা, একবার যখন সকলে মিলে কিছু করার সংকল্প নেয় তখন অসাধ্য সাধন-ও সম্ভব হয়। সমাজে এমন অনেক বড় পরিবর্তন এসেছে, যেখানে জনসাধারনের অংশগ্রহণ ও সমষ্টিগত প্রচেষ্টা খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। কাশ্মীরের শ্রীনগরে, "মিশন জল থল" নামে এমনই এক জন-আন্দোলন চলছে। এটি শ্রীনগরের হ্রদ ও জলাশয় গুলিকে পরিষ্কার করা ও পুরনো আকর্ষণ ফিরিয়ে আনার এক অনন্য প্রচেষ্টা। মিশন জল থল"-এ  "কুশল সার" এবং " গিল সার"-কে বেশী গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।  এখানে জনসাধারণের অংশগ্রহণের পাশাপাশি প্রযুক্তিরও  অনেক সাহায্য নে য়া হচ্ছে। কোথায় কোথায় বেদখল হয়েছে, কোথায় অবৈধ নির্মাণ হয়েছে তা খুঁজে বার করতে এই এলাকার সমীক্ষাও করা হয়েছে। তার সঙ্গেই আবর্জনা পরিষ্কার ও প্লাস্টিক বর্জ্য সরানোর অভিযানও চালানো হয়েছে। মিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ে  জলের পুরনো উৎস এবং জলাশয়ে জলের যোগান দেয় এমন উনিশটি ঝরনাকে পুনরুজ্জীবিত করার পূর্ণ চেষ্টা করা হয়েছে। এই পুনরুজ্জীবন প্রকল্পের গুরুত্ব নিয়ে জনসচেতনতা যাতে আরো বেশী বৃদ্ধি পায় সেজন্য স্থানীয় মানুষ এবং যুব বন্ধুদের ওয়াটার আম্বাস্যাডারও করা হয়েছে। এখন ওখানকার স্থানীয় মানুষেরা 'গিল সার লেকে' পরিযায়ী পাখি ও মাছের সংখ্যা যাতে আরো বাড়ে সেই উদ্যোগ নিয়েছেন, এবং তা দেখে আনন্দিতও হচ্ছেন। আমি এই সুন্দর প্রচেষ্টার জন্য শ্রীনগরের মানুষকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। 

বন্ধুরা, আট বছর আগে দেশে যে 'স্বচ্ছ ভারত মিশন' শুরু হয়েছিল, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার পরিধি-ও বৃদ্ধি করা হয়েছে। নতুন নতুন উদ্ভাবন সংযোজন হয়েছে। ভারতে আপনি যেখানেই যান, স্বচ্ছতার জন্যে কোনো না কোনো উদ্যোগ আপনি সর্বত্রই দেখতে পাবেন। আসামের কোকরাঝারের এমনই একটি প্রয়াস সম্পর্কে আমি জানতে পেরেছি। সেখানে প্রাতঃভ্রমণকারীদের একটি দল 'স্বচ্ছ ও সবুজ কোকরাঝাড় মিশনের' জন্য প্রশংসনীয় কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন। তাঁরা নতুন ফ্লাইওভার এলাকায় তিন কিলোমিটার লম্বা রাস্তা পরিষ্কার করে, স্বচ্ছতা সম্পর্কে উৎসাহিত হওয়ার মতো বার্তা দিয়েছেন। ঠিক একইভাবে বিশাখাপত্তনমেও স্বচ্ছ ভারত অভিযানের জন্য পলিথিন-এর বদলে কাপড়ের ব্যাগ ব্যবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে। 

এখানকার লোক পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন রাখতে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক উৎপাদনের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে। এর সঙ্গে সঙ্গেই তাঁরা বাড়িতেই জঞ্জালকে আলাদা করার সুফলের বিষয়ে  সচেতনতাও প্রচার করছে। মুম্বাইয়ের সোমাইয়া কলেজের ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের স্বচ্ছতা অভিযানে সৌন্দর্যকেও অন্তর্ভূক্ত করে নিয়েছে। এঁরা কল্যাণ রেলওয়ে স্টেশনের দেয়ালগুলোকে সুন্দর পেইন্টিং দিয়ে সাজিয়েছে। রাজস্থানের সাওয়াই মাধোপুর-এর আরেকটি অনুপ্রেরণাদায়ক উদ্যোগের কথা  আমি জানতে পেরেছি। এখানকার যুবকরা রনথম্বরে মিশন বিট প্লাস্টিক নামে একটি অভিযান চালাচ্ছে। এর আওতায়  রনথম্বরের জঙ্গলের ভেতর থেকে সমস্ত প্লাস্টিক পলিথিন সরিয়ে ফেলা হয়েছে। সবার প্রয়াসের মাধ্যমে এইরকমই ভাবনা জনসাধারণের যোগদানকে আরও মজবুত করে আর জনসাধারণের অংশগ্রহণ থাকলে বড়ো থেকে বড়ো  লক্ষ্য অবশ্যই পূরণ হয়।  

আমার প্রিয় দেশবাসী, আজ থেকে কিছুদিন বাদেই, ৮ই মার্চ সমগ্র বিশ্ব জুড়ে  'আন্তর্জাতিক মহিলা দিবস' পালন করা হবে। মহিলাদের সাহস, দক্ষতা, প্রতিভার সঙ্গে জুড়ে থাকা কত উদাহরণ আমি মন কি বাত অনুষ্ঠানে নানা সময়ে ভাগ করে থাকি। আজ স্কিল ইন্ডিয়া হোক, স্বনির্ভর গোষ্ঠিই হোক, বা ছোট বড় উদ্যোগ হোক, মহিলারা সব জায়গায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। আপনারা যে কোন ক্ষেত্রেই দেখুন, পুরোনো ধারণাগুলো  ভেঙে যাচ্ছে। আজ, আমাদের দেশে সংসদ থেকে  পঞ্চায়েত পর্যন্ত আলাদা আলাদা কার্যক্ষেত্রে, মহিলারা নতুন উচ্চতায় পৌছোতে পারছেন। সেনাবাহিনীতেও মেয়েরা এখন নতুন এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাতে নিজেদের দায়িত্ব পালন করছে, দেশকে রক্ষা করছে। গত মাসে সাধারণতন্ত্র দিবসে আমরা দেখেছি আধুনিক যুদ্ধবিমানও মেয়েরা ওড়াচ্ছে । দেশও  সৈনিক স্কুলগুলোতে মেয়েদের ভর্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে, আর সারা দেশে  এখন  সৈনিক স্কুলে মেয়েরা ভর্তি হচ্ছে। একইভাবে, আপনার স্টার্ট-আপ জগৎ-কে দেখুন, গত বছর দেশে হাজার রকমের স্টার্ট-আপ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক স্টার্ট-আপে মহিলারা পরিচালকের ভূমিকায় আছে।  মহিলাদের  মাতৃত্বকালীন অবকাশ বাড়ানোর মত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ছেলে এবং মেয়েদের সমান অধিকার দেওয়ার জন্য বিয়ের বয়স সমান সমান করার জন্য দেশ চেষ্টা করছে। এইভাবে প্রতিটি ক্ষেত্রে মহিলাদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশে আরও একটি বড়ো পরিবর্তনও হয়ত আপনারা  দেখতে পাচ্ছেন! এই পরিবর্তন হলো আমাদের দেশের সামাজিক অভিযানগুলির সফলতা। ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’র সাফল্যকেই দেখুন, দেশে লিঙ্গ অনুপাত এখন অনেক ভালো হয়েছে। স্কুলে যাওয়া মেয়েদের সংখ্যা বেড়েছে।  আমাদের মেয়েরা  যাতে মাঝপথে স্কুলছুট না হয় সেটা দেখার দায়িত্ব আমাদের। এইভাবেই, 'স্বচ্ছ ভারত অভিযানের' মধ্যে দিয়ে দেশের মহিলাদের এখন আর খোলা জায়গায় শৌচকর্ম করতে হয় না । তিন তালাকের মতন সামাজিক কুপ্রথাও শেষও হতে চলেছে। যবে থেকে তিন তালাকের বিরুদ্ধে আইন এসেছে, তবে থেকে তিন তালাকের মামলা ৮০ শতাংশ কমে গেছে। এই এত কিছু পরিবর্তন এত কম সময়ের মধ্যে কি করে হচ্ছে? এটা পরিবর্তন এই জন্য সম্ভব হচ্ছে কারণ আমাদের দেশে পরিবর্তন এবং প্রগতিশীল প্রয়াসের নেতৃত্ব মহিলারা নিজেরাই দিচ্ছেন।  

আমার প্রিয় দেশবাসী, আগামীকাল ২৮শে ফেব্রুয়ারি হল জাতীয় বিজ্ঞান দিবস। এই দিনটি রমন এফেক্ট-এর আবিষ্কারের জন্যও পরিচিত। আমি সি ভি রমন জির সঙ্গে সঙ্গে, সেই সমস্ত বৈজ্ঞানিকদের প্রতি সম্মানের সঙ্গে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করতে চাই, যাঁরা আমাদের বিজ্ঞান নিয়ে নানা গবেষোণাকে মসৃণ বানাতে গুরুত্বপূর্ণ  ভূমিকা পালন করেছেন। বন্ধুরা, আমাদের সহজ সরল জীবনযাত্রায় প্রযুক্তি একটা বিরাট স্থান তৈরি করেছে। কোন প্রযুক্তি ভালো বা কোনো প্রযুক্তির  আরো ভালো ব্যবহার কিভাবে করা যায় - এইসব বিষয়ের ধারণা আমরা ভালোভাবে  পেয়ে থাকি। কিন্তু এটাও সত্যি যে আমাদের পরিবারের বাচ্চাদের আমরা এটা বোঝাই না, যে ওই প্রযুক্তির ভিত্তি কি? তার পিছনের বিজ্ঞান কি? এইদিকে  আমাদের মনোযোগ কখনোই যায়না। এই বিজ্ঞান দিবসে তে, আমার সমস্ত  পরিবারের কাছে অনুরোধ আপনাদের বাচ্চাদের মধ্যে বিজ্ঞানমনস্কতা গড়ে তোলার জন্য  অবশ্যই ছোট ছোট প্রয়াস গ্রহণ করুন। যেমন ধরুন যারা অস্পষ্ট দেখে,  কিন্তু চশমা লাগানোর পরে তারা স্পষ্ট দেখতে পায়,  এর পেছনের বিজ্ঞানটা কি তা বাচ্চাদের আমরা সহজেই বোঝাতে পারি । শুধুই চশমা  দেখে আনন্দ পাবেন এমনটা নয়। এখন সহজেই আপনারা একটি  ছোট কাগজের সাহায্যে ওকে বোঝাতে পারবেন। এখন ওরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে, কিন্তু ক্যালকুলেটর কিভাবে কাজ করে? রিমোট কন্ট্রোল কি করে কাজ করে? সেন্সর কি জিনিস? এইরকম বিজ্ঞানের নানা কথাবার্তা  ওদের সঙ্গে ঘরে আলোচনা করা হয় কি? হতে  পারে খুব সহজেই। আমরা ঘরের রোজনামচায় দরকারি জিনিসের পিছনে কি বিজ্ঞান আছে এটা ওদের বোঝাতে পারি। সেই ভাবেই আমরা কি কখনো বাচ্চাদের সঙ্গে নিয়ে আকাশ পর্যবেক্ষণ করেছি? রাতে তারাদের সম্পর্কে নিশ্চিত কথা হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের নক্ষত্রপুঞ্জ দেখা যায়, তাদের সম্বন্ধে বলুন। এরকমভাবে   আপনারা বাচ্চাদের মধ্যে পদার্থবিদ্যা আর জ্যোতির্বিদ্যার প্রতি নতুন আগ্রহ তৈরি  করতে পারেন। আজকাল তো অনেক অ্যাপ-ও আছে যার মাধ্যমে আপনারা গ্রহ-নক্ষত্রকে চিহ্নিত করতে পারেন বা যে নক্ষত্র আকাশে দেখা যাচ্ছে তাকে চিনে   নিতে পারেন, জানতে পারেন তার সম্বন্ধে। আমি আমাদের নতুন শিল্পোদ্যোগীদের- ও বলবো, আপনারা আপনাদের কৌশল আর সায়ন্টিফিক ক্যারেক্টার রাষ্ট্র নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত কাজেও লাগান। এটা দেশের প্রতি আমাদের বিজ্ঞানের জন্য যৌথ দায়বদ্ধতাও বটে। যেরকম আজকাল আমি দেখছি আমাদের স্টার্টআপ ভার্চুয়াল রিয়েলিটির জগতে অনেক ভালো কাজ হচ্ছে। ভার্চুয়াল ক্লাসের এই যুগে, এরকমই একটি ভার্চুয়াল ল্যাব, বাচ্চাদের কথা মাথায় রেখে বানানো যায়। আমরা ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে বাচ্চাদের ঘরে বসেই রসায়নের গবেষণার অভিজ্ঞতা  দিতে পারি। আমাদের শিক্ষক ও অভিভাবকদের কাছে আমার অনুরোধ যে আপনারা সবাই, ছাত্রছাত্রী ও বাচ্চাদের প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করবার জন্য উৎসাহ দিন। ওদের সঙ্গে মিলে প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করুন। আজ, আমি করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারতীয় বৈজ্ঞানিকদের ভূমিকার প্রশংসা করতে চাই। তাঁদের কঠিন পরিশ্রমের জন্যই মেড ইন ইন্ডিয়া টিকা তৈরি সম্ভব হয়েছে যার ফলে সমগ্র  বিশ্বের মানুষ বড় সাহায্য পেয়েছে। মানবতার জন্য বিজ্ঞানের এটাই তো উপহার।  

আমার প্রিয় দেশবাসী, এ বারেও আমি বহু বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। আসন্ন মার্চ মাসে বহু উৎসব-পার্বণ রয়েছে, শিবরাত্রি রয়েছে এবং কিছুদিন পরেই আপনারা হোলি উৎসবের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন। হোলি এমন একটি উৎসব যা আমাদের সবাইকে এক সূত্রে বেঁধে ফেলে। এখানে আপন-পর, শত্রুতা, বৈরি, ছোট-বড় সব বিভেদ মুছে যায়। এই জন্যই বলা হয়, হোলির রঙের থেকেও বেশি গাঢ় এই উৎসবের প্রেম ও সৌহার্দের রঙ। হোলিতে গুজিয়ার মিষ্টত্বের সঙ্গে থাকে সম্পর্কের অনন্য মিষ্টত্বও। এই সম্পর্কগুলি আমাদের আরও মজবুত করতে হবে। এবং সম্পর্ক বলতে আমি শুধু আপন পরিবারের কথা বলছি না, বলছি সেই সব সম্পর্কের কথা যেগুলি আপনার বৃহৎত্তর পরিবার সৃষ্টি করে। এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতিটিকেও আপনাদের মনে রাখতে হবে। এই পদ্ধতিটি হল - ভোকাল ফর লোকাল। একে সঙ্গে নিয়ে আমাদের উৎসব পালন করতে হবে। আপনারা উৎসবের সময় স্থানীয় জিনিস ক্রয় করুন যাতে আপনার চারপাশে থাকা মানুষজনের জীবন রঙ্গিন হয়ে ওঠে, রঙ্গিন থাকে, উদ্দীপনায় ভরা থাকে।

আমাদের দেশ যে সাফল্যের সঙ্গে করোনার মোকাবিলা করছে ও অগ্রসর হচ্ছে, তাতে উৎসব পালনের ক্ষেত্রেও উৎসাহ অনেক গুণ বেড়ে গেছে।

এই উৎসাহের সঙ্গেই আমাদের উৎসব পালন করতে হবে এবং তার পাশাপাশি সবাইকে সাবধানতাও অবলম্বন করতে হবে। আসন্ন উৎসবগুলি যাতে আপনাদের খুব ভাল কাটে এই কামনা করছি।

আমি সব সময়ই আপনাদের বার্তার, আপনাদের চিঠির, আপনাদের কথার অপেক্ষা করব। অনেক, অনেক ধন্যবাদ।

Explore More
শ্রী রাম জন্মভূমি মন্দিরের ধ্বজারোহণ উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বাংলা অনুবাদ

জনপ্রিয় ভাষণ

শ্রী রাম জন্মভূমি মন্দিরের ধ্বজারোহণ উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বাংলা অনুবাদ
MSME exports touch Rs 9.52 lakh crore in April–September FY26: Govt tells Parliament

Media Coverage

MSME exports touch Rs 9.52 lakh crore in April–September FY26: Govt tells Parliament
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
সোশ্যাল মিডিয়া কর্নার 21 ডিসেম্বর 2025
December 21, 2025

Assam Rising, Bharat Shining: PM Modi’s Vision Unlocks North East’s Golden Era