স্বাধীনতা সংগ্রামে শহীদ এবং আদিবাসী নায়কদের অকীর্তিত আত্মত্যাগের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধার্ঘ্য
“মানগড় হল রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ ও গুজরাটের জনগণের কাছে ঐতিহ্যস্বরূপ”
“গোবিন্দ গুরুর মতো মহান স্বাধীনতা সংগ্রামীরাই ভারতের আদর্শ এবং ঐতিহ্যের প্রতিভূ”
“আদিবাসী সম্প্রদায় ছাড়া ভারতের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যতের ইতিহাস সম্পূর্ণ হবে না”
“মানগড়ের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে রাজস্থান, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রকে রোডম্যাপ তৈরিতে একযোগে কাজ করতে হবে”

‘মানগড় ধাম-এর গৌরব গাথা’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ এক সর্বজনীন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে স্বাধীনতা সংগ্রামের শহীদ এবং আদিবাসী নায়কদের অকীর্তিত আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছনোর পর প্রধানমন্ত্রী গোবিন্দ গুরুর মূর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ‘ধুনী দর্শন’ করেন।

সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বীর হৃদয় আদিবাসীদের আত্মোৎত্যাগ, বীরত্ব, তপস্যার এক সামগ্রিক প্রতীক হল মানগড়ের পবিত্র ভূমি যা সব সময়েই আমাদের কাছে অনুপ্রেরণাদায়ক। মানগড় হল রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ ও গুজরাটের মানুষের এক সম্মিলিত ঐতিহ্য। গত ৩০ অক্টোবর গোবিন্দ গুরুর মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি মানগড়ের সেবাকর্মে যুক্ত হয়েছিলেন। তিনি বলেন যে গোবিন্দ গুরু তাঁর জীবনের শেষ বছরগুলি এখানে কাটিয়েছিলেন এবং তাঁর জ্ঞান ও শক্তির পরশ আজও এর মাটি থেকে পাওয়া যায়। শ্রী মোদী স্মরণ করেন যে এই সম্পূর্ণ এলাকাটি যা কিনা আগে বিস্তীর্ণ নিষ্ফলা জমি ছিল, তা তিনি ‘বন মহোৎসব’ উপলক্ষে সকলকে বৃক্ষ রোপণের আহ্বান জানানোর পর সবুজ-শ্যামলীমায় রূপান্তরিত হয়েছে। নিঃস্বার্থে এই অভিযানে কাজ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী আদিবাসী সম্প্রদায়কে অভিনন্দন জানান।

শ্রী মোদী বলেন যে উন্নয়ন কেবলমাত্র স্থানীয় মানুষের জীবনধারণের মানোন্নয়নেই পরিললক্ষিত হয়নি, গোবিন্দ গুরুর শিক্ষাকেও তা ছড়িয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, গোবিন্দ গুরুর মতো মহান স্বাধীনতা সংগ্রামীরা ভারতের আদর্শ এবং ঐতিহ্যের প্রতিভূ। গোবিন্দ গুরু তাঁর পরিবার হারিয়েছেন, কিন্তু তাঁর হৃদয় হারাননি এবং প্রত্যেক আদিবাসী মানুষকে তিনি তাঁর পরিবার করেছেন। গোবিন্দ গুরু আদিবাসী সম্প্রদায়ের অধিকার অর্জনের লড়াইয়ে কেবলমাত্র ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন তাই নয়, তিনি তাঁর নিজের সম্প্রদায়ের বিভিন্ন ত্রুটি-বিচ্যুতির বিরুদ্ধেও অভিযান চালিয়েছেন তার কারণ তিনি ছিলেন একজন সমাজ সংস্কারক, একজন আধ্যাত্মিক নেতা, একজন সাধক এবং একজন নায়ক। তাঁর বৌদ্ধিক এবং দার্শনিক দিক তাঁর সাহসিকতা ও সামাজিক কাজকর্মের মতোই সপ্রতিভ ছিল বলে প্রধানমন্ত্রী জানান।

মানগড়ে ১৯১৩-র ১৭ নভেম্বরের হত্যাকাণ্ডের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতে ব্রিটিশ শাসনের ভয়ঙ্কর ক্রূরতার এ এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তিনি বলেন, যখন নিরীহ আদিবাসীরা তাঁদের নিজ ভূমিতে নিজেদের স্বাধীনতা চাইছিলেন, তখন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকরা মানগড়ের পাহাড়কে ঘিরে ফেলে প্রকাশ্য দিবালোকে দেড় হাজারেরও বেশি নিরীহ পুরুষ, মহিলা, বয়স্ক এবং শিশুদের ওপর হত্যাকাণ্ড চালায়। তিনি বলেন যে দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতির কারণে স্বাধীনতা সংগ্রামের এরকম একটি উল্লেখযোগ্য ও মর্মভেদী ঘটনা ইতিহাসের বইয়ে উপযুক্ত পায়নি। শ্রী মোদী বলেন, “আজাদি কা অমৃত মহোৎসবে কয়েক দশকের সেই ভ্রান্তি ভারত আজ সংশোধন এবং পূরণ করছে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আদিবাসী সম্প্রদায় ছাড়া ভারতের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যতের ইতিহাস কখনই সম্পূর্ণ হবে না। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের গল্পের প্রতিটি পাতা আদিবাসীদের বীরত্বের বিজয়গাথায় পূর্ণ। ১৭৮০-র সেই সময়কালে তিলকা মানঝির নেতৃত্বে সাঁওতাল আন্দোলন হয়েছিল। বুধু ভগতের নেতৃত্বে ১৮৩০-৩২-এ দেশ প্রত্যক্ষ করেছিল লারকা আন্দোলন। ১৮৬৫-তে সিধু-কানহুর আন্দোলন সমগ্র জাতিকে উজ্জীবিত করেছিল। ভগবান বিরসা মুন্ডা তাঁর বীরত্ব এবং দেশাত্মবোধে সকলকে অনুপ্রাণিত করেন। শ্রী মোদী বলেন, “বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত শতবর্ষব্যাপী দাসত্বের এমন কোনো সময়কাল আপনি খুঁজে পাবেন না যেখানে স্বাধীনতার লড়াইয়ের আলোকশিখা আদিবাসী সম্প্রদায় প্রজ্জ্বলিত করেনি।” তিনি উল্লেখ করেন, অন্ধ্রপ্রদেশের আল্লুরি সীতারামা রাজু ছাড়াও তার আগে রাজস্থানে মহারানা প্রতাপের সাথে একযোগে দাঁড়িয়েছিল আদিবাসী সমাজ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আদিবাসী সম্প্রদায়ের এই আত্মোৎত্যাগের প্রতি আমরা ঋণী। এই সমাজ ভারতের প্রকৃতি, পরিবেশ, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যে ভারতীয় চরিত্রকে সংরক্ষিত রেখেছে।”

১৫ নভেম্বর ভগবান বিরসা মুন্ডার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জনজাতীয় গৌরব দিবস উদযাপন করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। “স্বাধীনতা সংগ্রামে আদিবাসীদের ইতিহাস সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে শিক্ষিত করে তোলার একটা প্রচেষ্টাই হল এই জনজাতীয় গৌরব দিবস” – বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। আদিবাসী সম্প্রদায়ের ইতিহাসকে সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যেতে দেশজুড়ে বিশেষ সংগ্রহশালা আদিবাসী স্বাধীনতা সংগ্রামীদের উদ্দেশে নিবেদিত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এই গৌরব গাথা আমাদের চিন্তা প্রক্রিয়ার অঙ্গ হয়ে উঠবে এবং যুব সম্প্রদায়কে তা অনুপ্রেরণা যোগাবে।

দেশে আদিবাসী সম্প্রদায়ের ভূমিকাকে ছড়িয়ে দিতে আরও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত – রাজস্থান, গুজরাট থেকে শুরু করে উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও ওড়িশার বিভিন্ন আদিবাসী সম্প্রদায়ের কল্যাণে সুস্পষ্ট নীতি নিয়ে দেশ কাজ করছে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, আদিবাসী সম্প্রদায়কে পরিশ্রুত পানীয় জল, বিদ্যুৎ সংযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ ‘বনবন্ধু কল্যাণ যোজনা’র মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। আজ দেশে বনাঞ্চল বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সম্পদের সংরক্ষণ করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে, আদিবাসী এলাকাকে ডিজিটাল ভারতের সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান। প্রথাগত কর্মকুশলতার পাশাপাশি আদিবাসী যুব সম্প্রদায়কে আধুনিক শিক্ষার আলোকে আলোকিত করার সুযোগ পৌঁছে দিতে ‘একলব্য আবাসিক বিদ্যালয়’-এর উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। গোবিন্দ গুরুজির নামে তৈরি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বৃহৎ প্রশাসনিক ক্যাম্পাসের উদ্বোধন করতে জাম্বুঘোড়ায় যাবেন বলে তিনি জানান।

প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে গত সন্ধ্যায় তিনি আমেদাবাদ-উদয়পুর ব্রডগেজ লাইনে একটি ট্রেনের যাত্রার সূচনা করেছেন তিনি। রাজস্থানের মানুষের জন্য ৩০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলপথের গুরুত্বের ওপর আলোকপাত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই রেলপথ গুজরাটের বিভিন্ন আদিবাসী এলাকার সঙ্গে রাজস্থানের আদিবাসী এলাকাকে যুক্ত করবে এবং ঐ এলাকার শিল্প বিকাশ ও কর্মসংস্থানের পথকে গতিশীল করে তুলবে।

মানগড় ধামের সামগ্রিক বিকাশ নিয়ে আলোচনার ওপর আলোকপাত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে তিনি চান এই মানগড় ধামকে আরও বড় আকারে তোলা হোক। রাজস্থান, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রের সরকারকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী যাতে করে গোবিন্দ গুরুজির এই স্মরণীয় দ্রষ্টব্য স্থান বিশ্ব মানচিত্রে জায়গা করে নিতে পারে। “আমার স্থির বিশ্বাস, মানগড় ধামের উন্নয়ন আগামী প্রজন্মের কাছে এই এলাকাটিকে এক উৎসাহের ক্ষেত্র করে তুলবে” – বলে আশা প্রকাশ করে শ্রী মোদী তাঁর ভাষণ শেষ করেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী অশোক গেহলট, মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী শিবরাজ সিং চৌহান, সেই রাজ্যের রাজ্যপাল শ্রী মঙ্গুভাই প্যাটেল, কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী শ্রী অর্জুন রাম মেঘাওয়াল, কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী শ্রী ফগগন সিং কুলস্তে, সাংসদ ও বিধায়কগণ।

সম্পূর্ণ ভাষণ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
From Donning Turban, Serving Langar to Kartarpur Corridor: How Modi Led by Example in Respecting Sikh Culture

Media Coverage

From Donning Turban, Serving Langar to Kartarpur Corridor: How Modi Led by Example in Respecting Sikh Culture
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM to attend second Asia Pacific Civil Aviation Ministers Conference on 12th September
September 11, 2024

Prime Minister Shri Narendra Modi will attend the 2nd Asia-Pacific Ministerial Conference on Civil Aviation on 12th September 2024 at 4 PM at Bharat Mandapam, New Delhi. He will also address the gathering on the occasion.

Prime Minister will also proclaim the adoption of the "Delhi Declaration," by all the member states, which is a visionary roadmap to elevate the region's aviation sector to new heights.

This conference and the adoption of the Delhi Declaration represent a significant step forward in advancing safety, security, and sustainability in the Asia Pacific civil aviation sector and highlights the spirit of cooperation that exists among the countries of this region.

The Asia-Pacific Ministerial Conference on Civil Aviation organised by the Ministry of Civil Aviation in collaboration with International Civil Aviation Organization (ICAO) will bring together Transport and Aviation ministers, regulatory bodies, and industry experts from across the Asia-Pacific region. The conference will focus on addressing key challenges such as infrastructure development, sustainability, and workforce development, while fostering greater collaboration between the public and private sectors.