মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হোলনেস,
উভয় দেশের প্রতিনিধিবৃন্দ,
সংবাদমাধ্যমের বন্ধুগণ,
নমস্কার!

প্রধানমন্ত্রী হোলনেস এবং তাঁর প্রতিনিধিদলকে ভারতে স্বাগত জানাতে পেরে আমি আনন্দিত। এটাই হল দ্বিপাক্ষিক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী হোলনেসের প্রথম ভারত সফর। এই কারণে তাঁর এই সফরটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে আমরা মনে করি। প্রধানমন্ত্রী হোলনেস দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের বন্ধুস্থানীয়। বেশ কয়েকবার তাঁর সঙ্গে আলোচনায় মিলিত হওয়ার সুযোগ আমার হয়েছে এবং প্রত্যেকবারই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে সুদৃঢ় করে তুলতে তাঁর চিন্তাভাবনার মধ্যে আমি অঙ্গীকারবদ্ধতার সন্ধান পেয়েছি। আমার স্থির বিশ্বাস, তাঁর এই বর্তমান সফর আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নতুন উৎসাহ যোগানোর পাশাপাশি সমগ্র ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ ও ঘনিষ্ঠতাকে আরও নিবিড় করে তুলবে। 

 

বন্ধুগণ,

আমাদের দু’দেশের সম্পর্কের ইতিহাস যদি আমরা অনুসন্ধান করি তাহলে দেখব, ভারতের সঙ্গে জামাইকার সম্পর্কের মূল রয়েছে অনেক অনেক গভীরে। আমাদের পারস্পরিক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং দু’দেশের জনসাধারণের মধ্যে সম্পর্কের ইতিহাসেও একথা আমরা খুঁজে পাব। আমাদের সহযোগিতার অংশীদারিত্ব মূলত চারটি ‘সি’-এর ওপর দাঁড়িয়ে আছে। যেমন – কালচার (সংস্কৃতি), ক্রিকেট (ক্রিকেট খেলা), কমনওয়েলথ এবং ক্যারিকম। আজকের বৈঠকে পারস্পরিক সম্পর্কের সবক’টি ক্ষেত্রেই আমাদের সহযোগিতাকে আরও শক্তিশালী করে তোলার কথা আমরা আলোচনা করেছি। কয়েকটি ক্ষেত্রে নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়গুলিও আমরা চিহ্নিত করতে পেরেছি। ভারত-জামাইকার মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। জামাইকার উন্নয়নের যাত্রাপথে ভারত বরাবরই এক বিশ্বস্ত ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ অংশীদারের ভূমিকা পালন করে আসছে। জামাইকার সাধারণ মানুষের নানা প্রয়োজন ও চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখে আমরা নিয়োজিত করেছি আমাদের কর্মপ্রচেষ্টাকে। আইটেক এবং আইসিসিআর বৃত্তি প্রকল্পের মাধ্যমে জামাইকার জনসাধারণের ক্ষমতা বৃদ্ধি ও দক্ষতা বিকাশের কাজে আমরা অবদানের নজির সৃষ্টি করতে পেরেছি। 

ডিজিটাল সরকারি পরিকাঠামো, ক্ষুদ্র শিল্প, জৈব জ্বালানি, উদ্ভাবন প্রচেষ্টা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং কৃষির মতো ক্ষেত্রগুলিতে আমাদের অভিজ্ঞতাকে জামাইকার সামনে তুলে ধরতে আমরা প্রস্তুত। আবার, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে জামাইকার সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ ও ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করতেও আমরা সম্মত। মনে রাখতে হবে যে সংগঠিত অপরাধ, মাদকের চোরাচালান এবং সন্ত্রাস হল আমাদের দুটি দেশের কাছে কয়েকটি সাধারণ চ্যালেঞ্জ। আমরা যুক্তভাবে এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় সম্মত হয়েছি। আবার মহাকাশ ক্ষেত্রে আমাদের অভিজ্ঞতা ও সাফল্যকে জামাইকার সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারলেও আমরা খুশি হব। 

বন্ধুগণ,

আজকের বৈঠকে কয়েকটি আঞ্চলিক তথা আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়েও আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। আমরা মনে করি যে যাবতীয় উদ্বেগ, আশঙ্কা ও বিবাদের নিষ্পত্তি সম্ভব আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে। শান্তি ও স্থিতিশীলতার লক্ষ্যে আমাদের প্রচেষ্টাকে আমরা কখনই স্তিমিত হতে দেব না। রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদ সহ সবক’টি বিশ্ব সংগঠন ও সংস্থার সংস্কার যে একান্ত জরুরি, এ বিষয়টিতেও ভারত ও জামাইকা সহমত পোষণ করে। এই ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলিকে আরও আধুনিক করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা মিলিতভাবে কাজ করে যাব। 

 

বন্ধুগণ,

ভারত ও জামাইকার মধ্যে রয়েছে বিশাল মহাসমুদ্র। ভৌগোলিক দিক থেকে পরস্পরের থেকে বিচ্ছিন্ন হলেও সংস্কৃতি, মানসিকতা এবং ঐতিহাসিক পরম্পরার দিক থেকে আমরা কিন্তু পরস্পরের সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত রয়েছি। আজ থেকে প্রায় ১৮০ বছর আগে যাঁরা ভারত থেকে জামাইকায় গিয়ে বসবাস করতে শুরু করেন, তাঁরা আমাদের দু’দেশের জনসাধারণের মধ্যে নিবিড় বন্ধুত্বের এক দৃঢ় ভিত্তি স্থাপন করেছেন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রায় ৭০ হাজার মানুষ জামাইকাকে তাঁদের নিজেদের দেশ বলে ভাবতে শুরু করেছেন। এইভাবেই আমাদের মিলিত ঐতিহ্যের এক প্রামাণ্য নজির ও দৃষ্টান্ত আমরা চাক্ষুষ করতে পেরেছি। জামাইকায় বসবাসকারী ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের দেখভালের জন্য প্রধানমন্ত্রী হোলনেস এবং তাঁর সরকার যে চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখছেন না, সেজন্য আমি প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সরকারকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই। এইভাবে এক জনগোষ্ঠীকে সকলরকমভাবে সাহায্য ও সমর্থন যুগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী হোলনেস এবং সরকারের প্রতি জানাই আমার গভীর কৃতজ্ঞতার কথা। 

যোগাভ্যাস থেকে ভারতের বলিউড সিনেমা ও লোকসঙ্গীত জামাইকায় বিপুলভাবে সমাদৃত হয়েছে। আবার একইভাবে জামাইকার ‘রেগি’ এবং ‘ডান্সহল’ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ভারতে। যে সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচি চালু রয়েছে দু’দেশের মধ্যে তা আমাদের পারস্পরিক নৈকট্যকে আরও নিবিড় করে তুলবে। দিল্লিতে জামাইকা হাইকমিশনের সামনের রাস্তাটিকে আমরা ‘জামাইকা মার্গ’ নামে নামকরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। এই রাস্তাটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মগুলির কাছে দু’দেশের নিরবচ্ছিন্ন বন্ধুত্ব ও সহযোগিতা সম্পর্কের প্রতীক হয়ে থাকবে।

 

আমাদের দুটি দেশই ক্রিকেটপ্রেমী। এই কারণে আমাদের দু’দেশের সম্পর্কের মধ্যে খেলাধূলা একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে রয়েছে। ‘কার্টনি ওয়ালশ’-এর কিংবদন্তীপ্রায় ফাস্ট বোলিং অথবা ‘ক্রিস গেইল’-এর ঝলসানো ব্যাটিং ভারতের জনসাধারণকে মুগ্ধ করেছে। সেই কারণেই জামাইকার ক্রিকেটারদের প্রতি ভারতবাসীর এক বিশেষ আকর্ষণ রয়েছে। এই বিষয়টিকে মনে রেখে ক্রীড়াক্ষেত্রে পারস্পরিক সম্পর্ককে আরও গভীরে নিয়ে যাওয়ার কথাও আমরা আলোচনা করেছি। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে আজকের আলোচনাগুলির ফলশ্রুতি আমাদের সম্পর্ক ‘ইউসেন বোল্ট’-এর থেকেও আরও দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে যাবে এবং এইভাবেই আমাদের পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নীত হবে এক নতুন মাত্রায়।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,

আমি আরও একবার আপনাকে এবং আপনার প্রতিনিধিদলকে সাদর অভ্যর্থনা জানাই আমাদের দেশে।

অসংখ্য ধন্যবাদ!

প্রধানমন্ত্রীর মূল বক্তব্যটি ছিল হিন্দিতে

 

Explore More
শ্রী রাম জন্মভূমি মন্দিরের ধ্বজারোহণ উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বাংলা অনুবাদ

জনপ্রিয় ভাষণ

শ্রী রাম জন্মভূমি মন্দিরের ধ্বজারোহণ উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বাংলা অনুবাদ
Operation Sagar Bandhu: India provides assistance to restore road connectivity in cyclone-hit Sri Lanka

Media Coverage

Operation Sagar Bandhu: India provides assistance to restore road connectivity in cyclone-hit Sri Lanka
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
সোশ্যাল মিডিয়া কর্নার 5 ডিসেম্বর 2025
December 05, 2025

Unbreakable Bonds, Unstoppable Growth: PM Modi's Diplomacy Delivers Jobs, Rails, and Russian Billions