ভারতে এখন কি হচ্ছে, এ ব্যাপারে আমি আরও কিছু বলতে চাই। আমরা অদূর ভবিষ্যতেই ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি হয়ে উঠব: প্রধানমন্ত্রী
বিগত চার বছরে, সহজে ব্যবসা-বাণিজ্যের অনুকূল পরিবেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিশ্ব ব্যাঙ্কের সূচকে ভারত ৬৫ ধাপ উন্নতি করে ৭৭তম স্থানে উঠে এসেছে: প্রধানমন্ত্রী মোদী
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে গবেষণা ও উন্নয়ন অন্যতম চালিকাশক্তি হয়ে উঠতে চলেছে: প্রধানমন্ত্রী মোদী

মাননীয়,

ইয়ুনমো সাং, বাণিজ্য, শিল্প ও শক্তি মন্ত্রী,

বিশিষ্ট বাণিজ্যিক নেতৃবৃন্দ,

 

বন্ধুগণ,

 

শুভ অপরাহ্ন। সিওলে আজ আপনাদের সঙ্গে মিলিত হতে পেরে আমি আনন্দিত। মাত্র ১২ মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্যিক নেতৃবর্গের সঙ্গে এটি আমার তৃতীয় আলাপচারিতা। আমার সদিচ্ছা অনেক। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ভারতে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ যাতে বৃদ্ধি পায়, সে বিষয়ে আমি অত্যন্ত আগ্রহী। আমি যখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম তখনও দক্ষিণ কোরিয়া সফর করেছি। দক্ষিণ কোরিয়া আমার কাছে অর্থনৈতিক বিকাশের আদর্শস্বরূপ।

 

বন্ধুগণ,

 

১২৫ কোটি জনসংখ্যার দেশ ভারত, বর্তমানে পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

 

·         ভারত কৃষি প্রধান অর্থনীতির দেশ থেকে শিল্প ও পরিষেবামূলক অর্থনীতির দিকে এগোচ্ছে।

·         এমন একটি অর্থনীতি যা সারা বিশ্বের সঙ্গে একত্রে সংযুক্ত।

·         এমন একটি অর্থনীতি, যেটি লাল ফিতের বন্ধন থেকে বেড়িয়ে লাল কার্পেটের দিকে এগোচ্ছে।

 

ভারতে বর্তমানে সুযোগ বেড়েছে। আমরা ভারতের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে যখন কাজ করে চলেছি, তখন আমাদের সহযোগী হিসেবে চেয়েছি সম-মানসিকতাসম্পন্ন সহযোগী। এদের মধ্যে আমি দেখেছি দক্ষিণ কোরিয়া প্রকৃতই ভারতের সহযোগী হওয়ার ক্ষমতা রাখে। ভারত, দক্ষিণ কোরিয়ার ১০টি বাণিজ্যিক সহযোগী দেশের একটি এবং দক্ষিণ কোরিয়ার পণ্য রপ্তানির ষষ্ঠ বৃহত্তম গন্তব্য। ২০১৮-য় আমাদের বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ২১.৫ বিলিয়ন ডলার। সুসংহত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বমূলক চুক্তিটিকে আরও উন্নত করতে আলাপ-আলোচনা চালানো হবে, যাতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছনো যায়। ভারতে দক্ষিণ কোরিয়ার বিনিয়োগের পরিমাণ ৬ বিলিয়ন ডলার।

বন্ধুগণ,

 

২০১৫ সালে আমার দক্ষিণ কোরিয়া সফরের পর আমরা ঐ দেশকে সহযোগিতার জন্য ‘ইনভেস্ট ইন্ডিয়া’র অধীনে “কোরিয়া প্লাস” সেল চালু করি। হুন্ডাই, স্যামসাং, এলজি ইলেক্ট্রনিক্স ভারতে এখন নির্ভরযোগ্য ব্র্যান্ড। এর মধ্যে অচিরেই যুক্ত হবে কিয়া ব্র্যান্ডটি। ভারতে দক্ষিণ কোরিয়ার ৬০০টি বাণিজ্যিক সংস্থা বিনিয়োগ করেছে। আমরা দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আরও বেশি বিনিয়োগ আশা করি। এজন্য, দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিকদের জন্য ভিসা-অন-অ্যারাইভ্যালের ব্যবস্থা করা হয় ২০১৮-র অক্টোবর থেকে। আমরা ভারতে দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্যিক দপ্তরগুলির আরও বেশি উপস্থিতি কামনা করি। অদূর ভবিষ্যতে ভারত ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি হওয়ার দিকে এগোচ্ছে। পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) চালু করা হয়েছে। বিশ্ব ব্যাঙ্কের সহজে ব্যবসা-বাণিজ্য করার যে র‍্যাঙ্কিং পদ্ধতি রয়েছে, তাতে ভারত ৬৫ ধাপ এগিয়ে ৭৭-এ উন্নীত হয়েছে। আগামী বছর আমরা সহজে ব্যবসা-বাণিজ্য করার ক্ষেত্রে সেরা ৫০-এর মধ্যে পৌঁছনোর লক্ষ্য নিয়েছি। বর্তমানে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আমাদের দরজা পুরোপুরি খোলা। বিগত চার বছরে আমরা ২৫০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ আনতে পেরেছি।

বন্ধুগণ,

 

আমরা আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারেও যথেষ্ট উদ্যোগী হয়েছি। বিগত তিন বছরে আমরা ৩০ কোটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে পেরেছি তাঁদের ক্ষেত্রে যাঁদের কোনদিনই কোন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ছিল না। এখন ভারতীয় পরিবারগুলির ৯৯ শতাংশের কাছেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে এবং এই অ্যাকাউন্টগুলিতে ১২ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি জমা পড়েছে। বিগত তিন বছরে ‘মুদ্রা’ যোজনায় আমরা ৯০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ক্ষুদ্র ঋণ ১২ কোটি ৮০ লক্ষ মানুষকে দিতে পেরেছি। এর মধ্যে, ৭৪ শতাংশ ঋণ দেওয়া হয়েছে মহিলাদেরকে। আমরা বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং মোবাইল ফোনের সুবিধা দিয়েছি যাতে ভর্তুকি এবং পরিষেবা দেওয়া যায় তাঁদের, যাঁরা এতদিন ব্যাঙ্ক ব্যবস্থার আওতায় ছিলেন না। গ্রামীণ বৈদ্যুতিকরণের ক্ষেত্রেও আমরা যথেষ্ট উদ্যোগ নিয়েছি। ভারত বর্তমানে আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থার দ্বারা সম্মানিত কারণ, ভারতের বহু গ্রাম  ২০১৮-র মধ্যে বৈদ্যুতিকীকরণের আওতায় চলে এসেছে। এই উদ্যোগ এবং একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক সৌর জোট গড়ে তোলার ব্যাপারে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তাতে ‘গ্রিন গ্লোবাল ইকনমি’ সৃষ্টির পথিকৃৎ হয়ে যাবে ভারত।

বন্ধুগণ,

 

অর্থনৈতিক প্রগতির সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যোগ রয়েছে বিশ্বমানের পরিকাঠামোর – তা পরিবহণই হোক, বা বিদ্যুৎ অথবা বন্দর কিংবা জাহাজ নির্মাণ অথবা নগর পরিকাঠামো। ভারতে এগুলির বিপুল চাহিদা রয়েছে এবং পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়ার রয়েছে প্রযুক্তিগত ক্ষমতা।আমাদের হিসেব মতো, ভারতে ২০২২ সালের মধ্যে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে ৭০০ বিলিয়ন ডলারের মতো বিনিয়োগের প্রয়োজন রয়েছে। ‘সাগরমালা’ প্রকল্পের অন্তর্গত কিছু বন্দর প্রকল্প চিহ্নিত করা হয়েছে যেখানে আগামী পাঁচ বছরে ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে ভারতের ৫০ কোটিরও বেশি জনসংখ্যা নগর-কেন্দ্রিক হয়ে যাবে এবং এর ফলে ভারতে স্মার্ট সলিউশন গড়ে তোলার জন্য সহযোগিতার বিপুল সম্ভাবনা তৈরি হবে। ভারতে পরিকাঠামোমূলক উন্নয়নে সহযোগিতা করার গুরুত্ব অনুধাবন করতে পেরে ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া, দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহযোগিতা তহবিল এবং রপ্তানি ঋণ-এর অধীনে প্রকল্পগুলিতে আর্থিক সহায়তাদানের জন্য ১০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় নির্ধারণ করেছে।

বন্ধুগণ,

 

চতুর্থ শিল্প বিপ্লব যুগে গবেষণা এবং উদ্ভাবন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এজন্য আমরা ফ্ল্যাগশিপ কর্মসূচি ‘স্টার্ট-আপ ইন্ডিয়া’ চালু করেছি এবং এই কর্মসূচির জন্য চার বছরে ১.৪ বিলিয়ন ডলার অর্থ দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে যাতে ভারতে স্টার্ট-আপ ব্যবস্থা শুরু করা যায়। প্রেসিডেন্ট মুন-এর নেতৃত্বে দক্ষিণ কোরিয়া ২০২০-র মধ্যে ৯.৪ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার একটি কর্মসূচির কথা জানিয়েছে যাতে, স্টার্ট-আপ উদ্যোগগুলির মূলধনের প্রয়োজন বেশি করে মেটানো যায়। আমরা স্বপ্ন দেখছি, একটি ভারত-কোরিয়া স্টার্ট-আপ কেন্দ্র গড়ে তোলার যেটি দক্ষিণ কোরিয়ার স্টার্ট-আপ উদ্যোগ এবং ভারতের মেধার মধ্যে সংযোগ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে একটি হাবের মতো কাজ করবে। সাউথ কোরিয়ান ন্যাশনাল আইটি ইন্ডাস্ট্রি প্রোমোশন এজেন্সি বেঙ্গালুরুতে তাদের ভারতীয় দপ্তর খুলেছে যাতে ভারতে দক্ষিণ কোরিয়ার স্টার্ট-আপ চালু করা যায়। উদ্ভাবনের ক্ষেত্রেও দুটি দেশ ‘ইন্ডিয়া-কোরিয়া ফিউচার স্ট্র্যাটেজি গ্রুপ’ এবং ‘ইন্ডিয়া-কোরিয়া সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন কো-অপারেশন প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বন্ধুগণ,

 

আমরা, আমাদের দেশের নাগরিকদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে একযোগে কাজ করতে আগ্রহী। দু’দেশের বাণিজ্যিক নেতৃবৃন্দ আমাদের স্বপ্ন নিজেদের মধ্যে যদি ভাগ করে না নেন, তাহলে আমাদের দু’দেশের সরকারের প্রচেষ্টার সম্পূর্ণ রূপায়ণ অসম্ভবই থেকে যাবে। আমি কোরিয়ার ভাষায় শেষ করতে চাই –

 

হুনজা খাময়োন পল্লী খাজীমন

হমকে খাময়োন মল্লী খম্নিদা

 

অর্থাৎ, তুমি দ্রুত যাবে যদি তুমি একা যাও, কিন্তু তুমি দূরে যাবে যদি একসঙ্গে যাও।

 

ধন্যবাদ।

Explore More
শ্রী রাম জন্মভূমি মন্দিরের ধ্বজারোহণ উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বাংলা অনুবাদ

জনপ্রিয় ভাষণ

শ্রী রাম জন্মভূমি মন্দিরের ধ্বজারোহণ উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বাংলা অনুবাদ
India leads globally in renewable energy; records highest-ever 31.25 GW non-fossil addition in FY 25-26: Pralhad Joshi.

Media Coverage

India leads globally in renewable energy; records highest-ever 31.25 GW non-fossil addition in FY 25-26: Pralhad Joshi.
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM Modi hails the commencement of 20th Session of UNESCO’s Committee on Intangible Cultural Heritage in India
December 08, 2025

The Prime Minister has expressed immense joy on the commencement of the 20th Session of the Committee on Intangible Cultural Heritage of UNESCO in India. He said that the forum has brought together delegates from over 150 nations with a shared vision to protect and popularise living traditions across the world.

The Prime Minister stated that India is glad to host this important gathering, especially at the historic Red Fort. He added that the occasion reflects India’s commitment to harnessing the power of culture to connect societies and generations.

The Prime Minister wrote on X;

“It is a matter of immense joy that the 20th Session of UNESCO’s Committee on Intangible Cultural Heritage has commenced in India. This forum has brought together delegates from over 150 nations with a vision to protect and popularise our shared living traditions. India is glad to host this gathering, and that too at the Red Fort. It also reflects our commitment to harnessing the power of culture to connect societies and generations.

@UNESCO”