ভারত-রাশিয়া: সহনশীল ও ক্রমবর্ধমান অংশীদারিত্ব

১. রুশ ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট মাননীয় মিঃ ভ্লাদিমির পুতিনের আমন্ত্রণে ২২তম ভারত-রুশ শীর্ষ বৈঠকে যোগ দিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ৮-৯ জুলাই রাশিয়ায় সরকারি সফরে যান। 

২. ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে বিশেষ এবং কৌশলগত অংশীদারিত্ব এবং দু-দেশের সম্পর্কের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীকে রাশিয়ার সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ‘অর্ডার অফ সেন্ট এন্ড্রু দ্য অ্যাপোসেল’-এ ভূষিত করেন মিঃ ভ্লাদিমির পুতিন। 

রাজনৈতিক সম্পর্ক

৩. দুই নেতা ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে বিশেষ এবং কৌশলগত অংশীদারিত্ব মজবুত ও দৃঢ় করার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার ওপর জোর দেন। 

৪. পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসের ওপর গড়ে ওঠা সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ দু-দেশের সম্পর্কের ব্যাপারে সন্তোষ প্রকাশ করেন দুই রাষ্ট্রনেতা। এসসিও এবং ২০২৩-এ জি২০ বৈঠকে ভারতের সভাপতিত্ব সহ সমস্ত স্তরে নিয়মিত দ্বিপাক্ষিক বোঝাপড়া এবং ২০২৪-এ ব্রিকস-এ রাশিয়ার সভাপতিত্ব এই দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্বকে আরও মজবুত ও সম্প্রসারিত করেছে। 

৫. রাজনৈতিক ও কৌশলগত, সামরিক ও সুরক্ষা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, শক্তি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, পরমাণু, মহাকাশ, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা ও মানবিক সহযোগিতা সহ সম্ভাব্য সমস্ত ক্ষেত্রে ভারত-রুশ সম্পর্কে কীভাবে দুই দেশ উপকৃত হয়েছে, তা পর্যালোচনা করেন দুই নেতা। সহযোগিতার নতুন নতুন ক্ষেত্র সহ পরম্পরাগত ক্ষেত্রে পারস্পরিক সম্পর্ক আরও মজবুত করার ওপর জোর দেন তাঁরা।

৬. বর্তমানের জটিল এবং অনিশ্চিত ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যেই ভারত-রাশিয়ার বন্ধন অটুট রয়েছে। দুই দেশই সমসাময়িক, ভারসাম্যমূলক, সহনশীল এবং দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারিত্বের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ থেকেছে। ভারত-রুশ সম্পর্কের উন্নতি দাঁড়িয়ে রয়েছে দু-দেশের বিদেশ নীতির ওপর। কৌশলগত ক্ষেত্রে বোঝাপড়া বাড়াতে দুই নেতায় একমত হন। 

বিদেশ মন্ত্রীস্তরে সহযোগিতা

৭. দুই নেতায় বিদেশমন্ত্রী স্তরে ঘন ঘন বৈঠক এবং পারস্পরিক মতবিনিময়ের প্রশংসা করেন। এইসব বৈঠকে উঠে এসেছে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়।

৮. দুই নেতাই ২০২৩-এ ডিসেম্বরে ২০২৪-২৮ পর্বের জন্য স্বাক্ষরিত প্রোটোকলকে স্বাগত জানান। দ্বিপাক্ষিক ও রাষ্ট্রসংঘ সংক্রান্ত বিষয়, সন্ত্রাস দমন এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ে নিয়মিত বৈঠক নিয়ে তাঁরা সন্তোষ প্রকাশ করেন।

সংসদীয় সহযোগিতা

৯. দুই দেশের সংসদীয় স্তরে নিয়মিত আলাপ-আলোচনার বিষয়টি তাঁদের বৈঠকে উঠে আসে। ২০২৩-এর অক্টোবরে নতুন দিল্লিতে জি২০ স্পিকারদের নবম শীর্ষ বৈঠকে রাশিয়ার অধ্যক্ষের সফরের প্রশংসা করেন তাঁরা। 

জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদে সহযোগিতা

১০. দ্বিপাক্ষিক এবং আঞ্চলিক ক্ষেত্রে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ স্তরে নিয়মিত বৈঠকের কথা তাঁদের আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব পায়। 

বাণিজ্য ও আর্থিক অংশীদারিত্ব

১১. ২০২৩-এ দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নিয়ে দুই নেতা সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং ২০২৫ সালের মধ্যে তা ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে। দীর্ঘস্থায়ী দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়াতে দুই নেতা শিল্প সহযোগিতা, নতুন প্রযুক্তি বিনিময় এবং বিনিয়োগে অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দেন। 

১২. দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে গতি আনতে ২০৩০ সালের মধ্যে দু-দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক লেনদেনের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। 

১৩. ২০২৩-এর এপ্রিলে নতুন দিল্লিতে অনুষ্ঠিত বাণিজ্য, অর্থ, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা সংক্রান্ত ২৪তম বৈঠককে স্বাগত জানান তাঁরা। ২০২৪-এর দ্বিতীয় পর্বে রাশিয়ায় এর পরবর্তী বৈঠক করার ব্যাপারে তাঁরা একমত হন। 

১৪. বাণিজ্য ও আর্থিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে আরও গতি আনা এবং দু-দেশের মধ্যে পণ্য ও পরিষেবায় অগ্রগতি বজায় রাখার ব্যাপারে তাঁরা আলোচনা করেন। ২০৩০ সাল পর্যন্ত ভারত-রুশ আর্থিক সহযোগিতার রূপরেখা তৈরির ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলিকে নির্দেশ দিয়েছেন তাঁরা। বিভিন্ন কর্মীগোষ্ঠী ও উপ-কর্মীগোষ্ঠীগুলিকে এই কর্মসূচি রূপায়ণে নিয়মিত নজরদারি ও সহায়তার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

১৫. জাতীয় মুদ্রা ব্যবস্থায় দ্বিপাক্ষিক বোঝাপড়ার লক্ষ্যে কাজ করতে সম্মত হয়েছে দুই পক্ষ। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিমার সুবিধা সহ পরস্পরের গ্রহণযোগ্য সমাধানসূত্র বার করার ওপর গুরুত্ব দেন তাঁরা। 

১৬. প্রশাসনিক বাধা সহ বাণিজ্যে নিঃশুল্ক/শুল্কের বাধা দূরীকরণে ভারত ও ইউরোপীয় আর্থিক ইউনিয়নের মধ্যে অবাধ বাণিজ্য চুক্তির লক্ষ্যে ২০২৪-এর মার্চের বৈঠকের প্রশংসা করেন দুই নেতা। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আলাপ-আলোচনার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

১৭. পরিবহণ ইঞ্জিনিয়ারিং, ধাতু, রসায়ন শিল্প ও উৎপাদনের অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব দেন তাঁরা। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে রূপায়ণের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টির কথা বলেন তাঁরা। 

১৮. ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে বাণিজ্যের পরিমান বাড়াতে ফেডারেল কাস্টমস সার্ভিস অফ রাশিয়া এবং সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস অফ ইন্ডিয়ার মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির গুরুত্বের বিষয়টি তাঁদের আলোচনায় উঠে আসে।

১৯. ভারত ও রুশ সরকারের মধ্যে ‘মাইগ্রেশন অ্যান্ড মবিলিটি’ অংশীদারিত্ব চুক্তি বজায় রাখার ব্যাপারে দুই নেতা একমত হয়েছেন। 

২০. দীর্ঘস্থায়ী ভিত্তিতে ভারত ও রাশিয়ার বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সার সংক্রান্ত চুক্তি অব্যাহত রাখতে দুই দেশ সম্মত হয়েছে। 

২১. ২০২৪-এর এপ্রিলে মস্কোয় অনুষ্ঠিত বিনিয়োগ প্রকল্প সংক্রান্ত কর্মীগোষ্ঠীর সপ্তম বৈঠককে স্বাগত জানিয়েছেন তাঁরা। সেইসঙ্গে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ এবং ‘আত্মনির্ভর ভারত’ কর্মসূচিতে রাশিয়ার বাণিজ্যিক অংশগ্রহণের ব্যাপারে মতৈক্য হয়েছে। 

২২. টেলি যোগাযোগ, উপগ্রহ যোগাযোগ, সরকারি কাজের ক্ষেত্রে ডিজিটাইজেশন, শহরের পরিবেশ, মোবাইল যোগাযোগ প্রভৃতি সহ যোগাযোগ প্রযুক্তির বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপরে জোর দিয়েছেন তাঁরা।

পরিবহণ ও যোগাযোগ

২৩. স্থিতিশীল ও দক্ষ পরিবহণ করিডর নির্মাণ, ইউরোপ এশিয়ায় উৎপাদন ও বিপণনের শৃঙ্খল তৈরির ব্যাপারে পারস্পরিক দৃষ্টিভঙ্গী বিনিময়ের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন তাঁরা। এছাড়া পরিকাঠামো উন্নতির মাধ্যমে পণ্য চলাচলে যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের কথাও তাঁদের আলোচনায় উঠে এসেছে। 

২৪. স্বচ্ছতা, বৃহত্তর অংশগ্রহণ, স্থানীয় অগ্রাধিকার, আর্থিক স্থায়িত্ব এবং সমস্ত দেশের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা বজায় রেখে পরিহণ ও পণ্য চলাচলের ক্ষেত্রে সহযোগিতা গড়ে তোলার ব্যাপারে তাঁরা সহমত হয়েছেন। 

২৫. উত্তরাঞ্চলীয় সামুদ্রিক পথ ধরে রাশিয়া ও ভারতের মধ্যে জাহাজ চলাচল বাড়াতে পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্র সম্প্রসারিত করার ওপরে গুরুত্ব দিয়েছেন তাঁরা। 

২৬. মস্কোয় অসামরিক বিমান পরিবহণ সংক্রান্ত উপকর্মী গোষ্ঠীর বৈঠক (ফেব্রুয়ারি ২০২৩) নিয়ে দুই পক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। অসামরিক উড়ান এবং অসামরিক উড়ান নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সহযোগিতা নিয়ে তাঁরা একমত হয়েছেন। 

শক্তির ক্ষেত্রে অংশীদারিত্ব

২৭. শক্তির ক্ষেত্রে সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন তাঁরা। এ প্রসঙ্গে শক্তির ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক বোঝাপড়া অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। 

২৮. কয়লার ক্ষেত্রে বর্তমানে চালু থাকা সহযোগিতা নিয়ে তাঁরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং ভারতে কোক কয়লার সরবরাহ বাড়াতে সম্ভাব্য পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। 

রাশিয়ার পূর্বাঞ্চল এবং সুমেরু অঞ্চলে সহযোগিতা

রাশিয়ার সুদূর প্রাচ্য এবং সুমেরু অঞ্চলে বাণিজ্য ও লগ্নি সহায়তা বাড়াতে দুই দেশ উৎসাহী। এই লক্ষ্যে ভারত-রুশ সহযোগিতা চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন তাঁরা। এই চুক্তি অনুযায়ী রাশিয়ার দূর প্রাচ্য এবং ভারতের মধ্যে কৃষি, শক্তি, খনিজ, হীরে, ওষুধ শিল্প, পরিবহণ প্রভৃতি ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে। 

৩০. রাশিয়ার সুদূর প্রাচ্য এবং ভারতের রাজ্যগুলির মধ্যে আলাপ-আলোচনা এবং ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, সাংস্কৃতিক বিনিময় প্রভৃতি ক্ষেত্রে যোগসূত্র গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়েছেন তাঁরা। 

৩১. রাশিয়ার সুদূর প্রাচ্যে উচ্চ প্রযুক্তির বিনিয়োগ প্রকল্পগুলিতে লগ্নির জন্য ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ভাইব্র্যান্ট গুজরাট আন্তর্জাতিক শীর্ষ বৈঠকে রাশিয়ার অংশগ্রহণের প্রশংসা করেছে ভারত। 

৩২. এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাণিজ্যিক সম্প্রসারণে সহয়োগিতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়েছেন তাঁরা। 

অসামরিক পরমাণু সহযোগিতা, মহাকাশ ক্ষেত্রে সহয়োগিতা

৩৩. কৌশলগত অংশীদারিত্বের অংশ হিসেবে পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছে দুই পক্ষ। কুদনকুলামে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাকি অংশের কাজের অগ্রগতি নিয়ে তাঁরা সন্তোষ প্রকশ করেন। পরমাণু শক্তির ক্ষেত্রে আরও সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন তাঁরা

৩৪. মহাকাশ ক্ষেত্রে সহযোগিতার গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা এবং রাশিয়ার স্টেট স্পেস কর্পোরেশনের মধ্যে চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে মানব মহাকাশ যান কর্মসূচি এবং বিভিন্ন গ্রহে পাড়ি দেওয়ার ব্যাপারে পারস্পরিক সহযোগিতার ওপর জোর দেওয়া হয়। চন্দ্রযান-৩এর সফল অভিযানের জন্য ভারতকে অভিনন্দন জানিয়েছে রাশিয়া।

সামরিক ও সামরিক প্রযুক্তি সহযোগিতা

৩৫. ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে বিশেষ অংশীদারিত্বের উল্লেখযোগ্য দিক হল, সামরিক ও সামরিক প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সহযোগিতা যা গত বেশ কয়েক দশক ধরে শক্তিশালী চেহারা নিয়েছে। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে নিয়মিত যোগাযোগ নিয়ে দুপক্ষই সন্তোষ প্রকাশ করেছে। যৌথ সামরিক মহড়া চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে তাঁরা একমত হয়েছেন। 
    
৩৬. প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারতে রাশিয়ার অস্ত্র সামগ্রীর যন্ত্রাংশ তৈরি এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে মেক ইন ইন্ডিয়া কর্মসূচিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে দুই নেতা একমত হয়েছেন। প্রযুক্তিগত সহযোগিতার ক্ষেত্রে নতুন একটি কর্মীগোষ্ঠী গড়ার ব্যাপারে তাঁরা একমত হয়েছেন। 

শিক্ষা এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সহযোগিতা

৩৭. বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, উদ্ভাবন, শিক্ষা এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার গুরুত্বের কথা আলোচনায় উঠে আসে। এ ব্যাপারে বিভিন্ন শিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা সংস্থার মধ্যে পারস্পরিক অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার ওপর জোর দেওয়া হয়।

৩৮. ভারতের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দপ্তর এবং রাশিয়ার বিজ্ঞান ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রকের মধ্যে ২০২১ সালে স্বাক্ষরিত রোডম্যাপের সফল রূপায়ণ নিয়ে তাঁরা সন্তোষ প্রকাশ করেন। 

৩৯. বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে যৌথ গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিয়ে এসব ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে দুই নেতা একমত হন। উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দেন তাঁরা। 

৪০. কৃষি এবং খাদ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, জাহাজ নির্মাণ এবং মেরামতি, সামুদ্রিক সম্পদ, জলবায়ু ও প্রাকৃতিক সম্পদ, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা প্রযুক্তি, জীবন বিজ্ঞান, জৈব প্রযুক্তি।

৪১. ভারত সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দপ্তর এবং রাশিয়ার বিজ্ঞান উচ্চশিক্ষা মন্ত্রকের মধ্যে স্বাক্ষরিত যৌথ গবেষণা প্রকল্পের সফল রূপায়ণ নিয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়। 

৪২. উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে একটি কর্মীগোষ্ঠী গঠনের ওপর জোর দেন তাঁরা। এতে উৎসাহী বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধি এবং দুই দেশের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের জড়িত করার কথা বলা হয়েছে।

৪৩. শিক্ষা এবং শিক্ষাগত ডিগ্রি প্রদানের ক্ষেত্রে পারস্পরিক বোঝাপড়া চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে দুই পক্ষ। 

৪৪. শিক্ষা ও বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক বোঝাপড়া বাড়াতে রাশিয়া ও ভারতের মধ্যে গোল টেবিল বৈঠক, সেমিনার, সম্মেলন এবং অন্যান্য কার্যকলাপের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

৪৫. শিক্ষার ক্ষেত্রে ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে শক্তিশালী সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে দুই দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে যোগসূত্র গড়ে তোলার পক্ষে মত দিয়েছেন তাঁরা। এ প্রসঙ্গে ২০২৪-এর এপ্রিলে ভারতে অনুষ্ঠিত শিক্ষা শীর্ষ বৈঠকে রাশিয়ার প্রায় ৬০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণকে স্বাগত জানানো হয়েছে। 

সাংস্কৃতিক সহযোগিতা, পর্যটন ও দুই দেশের মানুষের মধ্যে পারস্পরিক আদান-প্রদান 

৪৬. ভারত-রুশ বিশেষ ও কৌশলগত অংশীদারিত্বের উল্লেখযোগ্য দিক হল, সাংস্কৃতিক বিনিময়। দুই দেশের থিয়েটার, লাইব্রেরি, মিউজিয়াম, সৃজনশীল বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়েছে দুই পক্ষ।

৪৭. ২০২১-২০২৪ পর্বে ভারত-রুশ সাংস্কৃতিক বিনিময় নিয়ে দুই দেশই সন্তোষ প্রকাশ করেছে। এতে দুই দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্কের ভিত্তি মজবুত হয়েছে। দুই দেশ সাংস্কৃতিক ও চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজন নিয়ে সহমত হয়েছে। 

৪৮. দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নে তরুণদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা স্বীকার করে নিয়েছে দুই দেশ। সেইসঙ্গে ২০২৪-এর মার্চে সোচি বিশ্ব যুব উৎসবে ছাত্র ও তরুণ শিল্পোদ্যোগীদের অংশগ্রহণ নিয়ে তাঁরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। 

৪৯. সাংস্কৃতিক বিনিময়ের পাশাপাশি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, পরিবেশ বান্ধব শক্তি, মহাকাশ প্রভৃতি ক্ষেত্রে বৃহত্তর আকারে প্রদর্শনী ও পারস্পরিক বিনিময়ের ওপর জোর দিয়েছে দুই পক্ষ। 

৫০. ভারতে রুশ ভাষা এবং রাশিয়ায় ভারতীয় ভাষাগুলির বিকাশে যৌথ প্রয়াস অব্যাহত রাখার ব্যাপারে দুই দেশ একমত হয়েছে। 

৫১. দুই দেশের বিশেষজ্ঞ, চিন্তাবিদ এবং ভারত ও রাশিয়ার প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে পারস্পরিক বিনিময় ও যোগাযোগ বৃদ্ধি নিয়ে তাঁরা সন্তোষ প্রকাশ করেন। এর ফলে কৌশলগত অংশীদারিত্ব মজবুত হয়েছে বলে মনে করছে দুই দেশ। 

৫২. ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে পর্যটক বিনিময় বৃদ্ধির প্রশংসা করেছেন তাঁরা। পর্যটনের ধারা বজায় রাখতে সরকারি এবং বেসরকারি স্তরে সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। 

৫৩. ই-ভিসা চালু সহ ভিসার বিভিন্ন নিয়মবিধির সরলীকরণের প্রক্রিয়াকে দুই পক্ষ স্বাগত জানিয়েছে। এই প্রক্রিয়া আরও সরল করার লক্ষ্যে কাজ করার ব্যাপারে তাঁরা একমত হয়েছেন। 

রাষ্ট্রসংঘ এবং বহুমাত্রিক মঞ্চে সহযোগিতা

৫৪. রাষ্ট্রসংঘে রাজনৈতিক আলাপ-আলোচনা এবং সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়টি দুই নেতার আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিষয়ে রাষ্ট্রসংঘে একযোগে কাজ করার ব্যাপারে দুই পক্ষ সম্মত হয়েছে। আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধা এবং রাষ্ট্রসংঘের সনদ মেনে দায়-দায়িত্ব পালনের ওপর জোর দিয়েছেন দুই নেতা। 

৫৫. ২০২১-২২-এ নিরাপত্তা পরিষদে অস্থায়ী সদস্য হিসেবে ভারতের ভূমিকার প্রশংসা করেছে রাশিয়া। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদের বিষয়টিও আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে। 

৫৬. আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির বাস্তবতা মেনে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সর্বাত্মক সংস্কারের পক্ষে মত দিয়েছে দুই দেশ। নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্য পদের দাবিকে সমর্থন জানিয়েছে রাশিয়া। 

৫৭. ২০২৩-এ ভারতের জি২০ সভাপতিত্বকালে ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’ বা ‘এক বিশ্ব, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ’-এর ভাবনার প্রশংসা করেছে রাশিয়া। জি২০ সভাপতিত্বকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ভ্লাদিমির পুতিন। 

৫৮. ভারতের জি২০ সভাপতিত্বকালে আন্তর্জাতিক আর্থিক এবং গ্লোবাল সাউথের দেশগুলিকে যেভাবে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে, তার প্রশংসা করেন পুতিন। সেই সঙ্গে আফ্রিকান ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্তিকেও তিনি সমর্থন জানিয়েছেন। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আর্থিক সমস্যা সহ অন্যান্য চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় পারস্পরিক সহযোগিতাকে মজবুত করার পক্ষে মত দিয়েছেন দুই নেতা। 

৫৯. কৌশলগত অংশীদারিত্ব শক্তিশালী করা এবং ব্রিকস-এর মধ্যে ঘনিষ্ঠ বোঝাপড়ার ওপর জোর দিয়েছে দুই পক্ষ। সেই সঙ্গে ব্রিকস-এর নীতি মেনে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়া, সাম্য, সংহতি, খোলামেলা আলোচনা এবং সহমতের প্রসঙ্গ তাঁদের আলোচনায় উঠে আসে। ২০২৪ সালে ব্রিকস-এ রাশিয়ার সভাপতিত্বকে সমর্থনের জন্য ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান পুতিন।

৬০. ব্রিকস পরিবারে নতুন সদস্য দেশগুলির অন্তর্ভুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে দুই পক্ষ। ২০২৪-এর অক্টোবরে কাজান-এ ষোড়শতম ব্রিকস শীর্ষ বৈঠক সফল করার লক্ষ্যে একযোগে কাজ করার ব্যাপারে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছে দুই দেশ। 

৬১. ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে বিশেষ কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ক মজবুত করার ক্ষেত্রে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের কাঠামোর মধ্যেই একযোগে কাজ করার বিষয়টি বিবেচনা করছে দুই দেশ। 

৬২. সন্ত্রাস দমন, উগ্রপন্থা, বিচ্ছিন্নতাবাদ, মাদক পাচার, সীমান্ত অপরাধ এবং তথ্য সুরক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতে সহযোগিতা নিয়ে দুই নেতা সন্তোষ প্রকাশ করেন। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে এসসিও-র ভূমিকার প্রশংসা করেন তাঁরা। এসসিও-তে নতুন সদস্য হিসেবে ইরান এবং বেলারুশকে তাঁরা স্বাগত জানান। 

সন্ত্রাসবাদ দমন

৬৩. দুই নেতা যে কোন ধরনের সন্ত্রাসবাদ এবং উগ্রপন্থার কড়া নিন্দা করেছেন। সেই সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় জঙ্গিদের তৎপরতা এবং জঙ্গিগোষ্ঠীগুলিকে অর্থ সাহায্য ও আশ্রয় দেওয়ার নিন্দা করেছেন তাঁরা। ৮ জুলাই ২০২৪ তারিখে জম্মু-কাশ্মীরের সেনা কনভয়ে জঙ্গি হামলা এবং ২২ মার্চ মস্কোর প্রেক্ষাগৃহে জঙ্গি হামলার তাঁরা তীব্র নিন্দা করেছেন। পাশাপাশি এ ধরণের সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় শক্তিশালী সহযোগিতার ওপর জোর দিয়েছেন তাঁরা। এই ব্যাপারে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ এবং রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায় গৃহীত প্রস্তাব রূপায়ণের ওপর তাঁরা গুরুত্ব দিয়েছেন।

৬৪. সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট দেশগুলি প্রাথমিক দায়িত্বের কথা উল্লেখ করে এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইন মেনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন তাঁরা। রাষ্ট্রসংঘের কাঠামোর মধ্যেই কড়া হাতে সন্ত্রাসবাদ দমন এবং সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় নিরাপত্তা পরিষদে গৃহীত প্রস্তাবের পক্ষে মত দিয়েছেন তাঁরা। 

৬৫. দুই নেতাই জোরের সঙ্গে বলেছেন, ধর্ম, দেশ, সভ্যতা বা কোনো জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে সন্ত্রাসবাদকে যুক্ত করা উচিত নয়। যাঁরা সন্ত্রাসবাদী কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত এবং যাঁরা তাঁদের সমর্থন জানাচ্ছেন, তাঁদের অবশ্যই দায়বদ্ধ হতে হবে এবং আন্তর্জাতিক আইন মেনে তাঁদের বিচার করতে হবে। 

৬৬. ২০২২-এর অক্টোবরে ভারতে অনুষ্ঠিত সন্ত্রাসবাদ দমন সংক্রান্ত রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কমিটির বিশেষ বৈঠকের প্রশংসা করেন দুই নেতা এবং এ ব্যাপারে দিল্লির ঘোষণাকে তাঁরা স্বাগত জানান। 

৬৭. আন্তর্দেশীয় সংগঠিত অপরাধ, অর্থ পাচার, জঙ্গিদের অর্থ প্রদান এবং মাদক পাচারের মতো ক্ষেত্রে বহুমাত্রিক সহযোগিতা গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দেন তাঁরা। 

৬৮. ২০১৬ সালের ১৫ অক্টোবরের আন্তর্জাতিক তথ্য সুরক্ষায় সহযোগিতা চুক্তি অনুযায়ী নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মতবিনিময়ের ব্যাপারে দুই পক্ষ একমত হয়েছে। বিভিন্ন দেশের সার্বভৌমত্ব, সমতা এবং অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে বাইরের রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ না করার নীতি মেনে চলার ওপর জোর দিয়েছে দুই পক্ষ। রাষ্ট্রসংঘের তত্বাবধানে এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের পক্ষে মত দিয়েছেন তাঁরা। 

৬৯. মহাকাশে দীর্ঘস্থায়ী কার্যকলাপ সহ মহাশূন্যে শান্তিপূর্ণ ব্যবহার সংক্রান্ত রাষ্ট্রসংঘের কমিটির মধ্যে সহযোগিতা মজবুত করার ব্যাপারে একমত হয়েছে দুই পক্ষ। 

৭০. মানব বিধ্বংসী অস্ত্রের বিলোপের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক প্রয়াসকে আরও শক্তিশালী করার ব্যাপারে দুই দেশ তাদের অঙ্গীকারের কথা জানিয়েছে। পরমাণু সরবরাহ গোষ্ঠীতে ভারতের সদস্য পদের দাবিকে সমর্থন জানিয়েছে রাশিয়া। 

৭১. আন্তর্জাতিক সৌরজোট (আইএসএ), কোয়ালিশন ফর ডিজাস্টার রিসেলিয়েন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার (সিডিআরআই) এবং ইন্টারন্যাশনাল বিগ ক্যাট অ্যালায়েন্স (আইবিসিএ)-তে রাশিয়ার যোগদানের দিকে তাকিয়ে রয়েছে ভারত।

৭২. আফগানিস্তানের প্রশ্নে নিরাপত্তা পরিষদে ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার ব্যাপারে সন্তোষ প্রকাশ করেছে দুই দেশ। আফগানিস্তানের পরিস্থিতি এবং সেখানকার বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থা নিয়ে দুই নেতা পর্যালোচনা করেন। সেখানে সন্ত্রাসবাদ এবং মাদক পাচারের মতো বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হয়। সন্ত্রাসবাদ, যুদ্ধ এবং মাদক মুক্ত এবং স্বাধীন ও ঐক্যবদ্ধ আফগানিস্তানের পক্ষে সওয়াল করেন তাঁরা। 

৭৩. আইএসআইএস এবং অন্যান্য গোষ্ঠী সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন দুই নেতা। সেই সঙ্গে আফগানিস্তানে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক এবং কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার ব্যাপারে তাঁরা দৃঢ় আস্থা ব্যক্ত করেন। আফগানিস্তানে জরুরি ভিত্তিতে মানবিক সাহায্যের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন তাঁরা।

৭৪. ইউক্রেন সমস্যার সমাধানে শান্তিপূর্ণ আলাপ-আলোচনা এবং কূটনৈতিক পথ অবলম্বনের পক্ষে তাঁরা মত দেন। আন্তর্জাতিক আইন এবং রাষ্ট্রসংঘের সনদ মেনে শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে মধ্যস্থতার প্রস্তাবের প্রশংসা করেন তাঁরা।

৭৫. মধ্যপ্রাচ্য, বিশেষত গাজার পরিস্থিতি নিয়ে তাঁরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এক্ষেত্রে তাঁরা রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব রূপায়ণের পক্ষে মত দেন এবং গাজা ভূখণ্ডে প্যালেস্টাইন নাগরিকদের বিনা বাধায় মানবিক সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার ওপর গুরুত্ব দেন। সেইসঙ্গে সমস্ত পণ বন্দিদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং চিকিৎসা ও অন্যান্য মানবিক সাহায্য যাতে সম্ভব হয়, সে ব্যাপারে জোরালো মত দেন। রাষ্ট্রসংঘে প্যালেস্টাইনের পূর্ণ সদস্য পদের দাবিকেও তাঁরা সমর্থন জানিয়েছেন।

৭৬. বৃহত্তর ইউরোপ-এশিয়া অঞ্চল এবং ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সুরক্ষায় সেখানে যৌথভাবে কাজ করার ব্যাপারে একমত হয়েছে উভয় পক্ষ। 

৭৭. আঞ্চলিক শান্তি ও সুরক্ষার লক্ষ্যে পূর্ব এশিয়া শীর্ষ বৈঠক, সুরক্ষা সংক্রান্ত আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরাম (এআরএফ), আসিয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের বৈঠক প্লাস (এডিএমএম-প্লাস) সহ বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতা মজবুত করার ওপর গুরুত্ব দেন তাঁরা। 

৭৮. জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা এবং রাষ্ট্রসংঘের নির্দেশিকা ও প্যারিস চুক্তি মেনে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের ব্যাপারে একমত হয়েছে দুই পক্ষ। এক্ষেত্রে বিভিন্ন অভিজ্ঞ সংগঠনের মধ্যে মতবিনিময় এবং গ্রীণ হাউস গ্যাস নিঃসরণ প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণের ওপর তাঁরা যোগ দেন। 

৭৯. জি২০, ব্রিকস, এসসিও-তে যেমন আন্তর্জাতিক সরবরাহ শৃঙ্খল, অবাধ ও মুক্ত বাণিজ্য এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি নিয়ে মতবিনিময় অব্যাহত রাখার ব্যাপারে দুই দেশ একমত হয়েছে। 

৮০. ভারত-রাশিয়া বিশেষ এবং সুবিধাপ্রাপ্ত কৌশলগত অংশীদারিত্ব নিয়ে দুই দেশ সন্তোষ প্রকাশ করেছে এবং একে মজবুত করার ব্যাপারে তাঁদের অঙ্গীকারের কথা জানিয়েছেন দুই নেতা। 

৮১. আতিথিয়তার জন্য মাননীয় ভ্লাদিমির পুতিনকে ধন্যবাদ জানান শ্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ২০২৫-এ ২৩তম ভারত-রাশিয়া বার্ষিক শীর্ষ বৈঠকে যোগদানের জন্য তাঁকে আমন্ত্রণ জানান। 

 

Explore More
শ্রী রাম জন্মভূমি মন্দিরের ধ্বজারোহণ উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বাংলা অনুবাদ

জনপ্রিয় ভাষণ

শ্রী রাম জন্মভূমি মন্দিরের ধ্বজারোহণ উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বাংলা অনুবাদ
Manufacturing to hit 25% of GDP as India builds toward $25 trillion industrial vision: BCG report

Media Coverage

Manufacturing to hit 25% of GDP as India builds toward $25 trillion industrial vision: BCG report
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
সোশ্যাল মিডিয়া কর্নার 12 ডিসেম্বর 2025
December 12, 2025

Citizens Celebrate Achievements Under PM Modi's Helm: From Manufacturing Might to Green Innovations – India's Unstoppable Surge