প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ রাইজিং ইন্ডিয়া শীর্ষ বৈঠকে ভাষণ দেন।নেটওয়ার্ক ১৮ সংস্থা এর আয়োজন করেছিল। তিনি বলেন, যখন আমরা উত্থানের কথা বলি, একটিজাতির ক্ষেত্রে, তার এক ব্যাপকমাত্রা থাকে। তিনি বলেন, শুধুমাত্র অর্থনীতির উত্থানই নয়, তিনি মনে করেন, উত্থিতভারত শব্দটির মধ্যে ভারতের মানুষের আত্মমর্যাদা উত্থানের ধারণাটি নিহিত আছে। তিনিবলেন যে, দেশবাসীর সম্মিলিত মানসিক শক্তিতে, অসম্ভবকেও সম্ভব করে তোলা যায়।প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের সমষ্টিগত ইচ্ছাশক্তি নতুন ভারতের উত্থানেরলক্ষ্যে কাজ করে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন জাতির ক্ষেত্রে সাধারণ ধারণারবিপরীতে সরকার উন্নয়ন ও পরিবর্তনের নেতৃত্ব দেয়, যেখানে নাগরিকরা সরকারকে অনুসরণকরেন। ভারতে গত চার বছরে এই প্রবণতা সম্পূর্ণ বদলে গেছে। বর্তমানে নাগরিকরানেতৃত্ব দেন এবং সরকার তাঁদের অনুসরণ করে চলে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অত্যন্ত অল্প সময়ের মধ্যে স্বচ্ছ ভারত অভিযান একগণআন্দোলনে পরিণত হয়েছে। দেশের নাগরিকরা দুর্নীতি ও কালো টাকার বিরুদ্ধে লড়াইয়েডিজিটাল লেনদেনকে এক অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছেন। দেশের নাগরিকরা সরকারকে বড়সিদ্ধান্ত নিতে ও রূপায়ণ করতে অনুপ্রাণিত করছেন। তিনি বলেন, মানুষের মনের জোরেরফলেই ভারতের এই রূপান্তরমুখী অগ্রগতি সম্ভব হচ্ছে। শ্রী মোদী বলেন, জাতীয় পর্যায়েসরকারের দৃষ্টিভঙ্গী হচ্ছে অসাম্যের অনুভূতি হ্রাস করা। ভিডিও’র সহায়তায় তিনিদেখান, কিভাবে উজ্জ্বলা যোজনা যে কেবলমাত্র রান্নাঘরে রূপান্তর এনেছে তাই নয়,সমগ্র পরিবারেই রূপান্তর ঘটিয়ে ফেলেছে। এই কাজ আমাদের সামাজিক গঠনের মধ্যে নিহিতএক বড় অসমতার সমস্যাকে মোকাবিলা করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি একটি দিন মণিপুরে কাটিয়ে ফিরে এসেছেন। সেখানেতিনি বিজ্ঞান কংগ্রেসের উদ্বোধন করেছেন, ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তরস্থাপন করেছেন এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের জন্য বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণপ্রকল্পেরও সূচনা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমগ্র ভারতের সঙ্গে মানসিকযোগাযোগের বিষয়টি এবং পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির জনসংখ্যার মধ্যে বয়সজনিত সুবিধারবিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার ‘ভারতের পূর্বাঞ্চলের জন্যপূর্বাঞ্চলেই কাজ কর এবং দ্রুত কাজ কর’ – এই মন্ত্রে কাজ করে চলেছে। তিনি বলেন যে,এটা শুধুমাত্র উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্যই নয়, উত্তর প্রদেশের পূর্বাঞ্চল, বিহার,পশ্চিমবঙ্গ ও ওডিশার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
তিনি আসামে গ্যাস ক্র্যাকার প্রকল্পের উদাহরণ দিয়ে বলেন, গোরখপুর বারাউনি ওসিন্ধ্রিতে সার কারখানাগুলির পুনরুজ্জীবন হচ্ছে। জগদীশপুর-হলদিয়া গ্যাস পাইপলাইনএবং ধোলা সাদিয়া সেতুর কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এই অঞ্চলের উন্নয়নের লক্ষ্যে এইপ্রকল্পগুলি গুরুত্ব দিয়ে রূপায়িত হয়েছে। তিনি বলেন, পূর্ব ভারতে ১২টি নতুন বিমানবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে বিদ্যুৎ সংযোগবিহীন ১৮ হাজার গ্রামের মধ্যে ১৩হাজারই রয়েছে এবং ৫ হাজার রয়েছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে। খুব শীর্ঘ্রই এইসব গ্রামগুলিতেবিদ্যুৎ সংযোগের কাজ সম্পন্ন হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সৌভাগ্য যোজনার মাধ্যমেপ্রতিটি বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে। বিচ্ছিন্নতা থেকে অখন্ডতার দিকে পূর্বভারতের এই অগ্রযাত্রা উত্থিত ভারতকে শক্তি যোগাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, সরকার এক্ষেত্রেচারটি স্তম্ভের ওপর নজর দিচ্ছে। এগুলি হ’ল –
প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য
সুলভ স্বাস্থ্য পরিষেবা
সরবরাহ ক্ষেত্রের উদ্যোগ
মিশন ধাঁচে উদ্যোগ রূপায়ণ
প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, বর্তমানেদেশের ১৩ কোটি বাড়িতে শৌচাগার নির্মিত হয়েছে। ২০১৪ সালে এই সংখ্যা ছিল সাড়ে ছয়কোটি। পরিচ্ছন্নতার সুবিধা ৩৮ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৮০ শতাংশে পৌঁছে গেছে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, যোগ এক গণআন্দোলনে পরিণত হয়েছে। সাম্প্রতিক কেন্দ্রীয় বাজেটেযে স্বাস্থ্য কল্যাণ কেন্দ্রগুলির কথা বলা হয়েছে, তিনি তার উল্লেখ করেন।প্রধানমন্ত্রী সর্বজনীন টিকাকরণের কথাও বলেন। প্রধানমন্ত্রী জানান, সারা দেশে ৩হাজারেরও বেশি জনঔষধি কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। এখান থেকে কম দামে ৮০০-রও বেশিওষুধপত্র পাওয়া যাচ্ছে। হৃদরোগ চিকিৎসার স্টেন্ট এবং হাঁটু প্রতিস্থাপনের মেডিকেলসরঞ্জামেরও দাম নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে প্রায় ১০ কোটি পরিবারকেস্বাস্থ্য বিমার সুবিধা দেওয়া হবে। তিনি বলেন, চিকিৎসক ঘাটতির সমস্যা মেটাতেমেডিকেল কলেজগুলিতে আসন সংখ্যা বহুলাংশে বাড়ানো হয়েছে। তিনি আন্তর্জাতিক নারীদিবসে জাতীয় পুষ্টি মিশনের সূচনার কথা উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার প্রত্যেকটি ক্ষেত্রের জন্য পৃথক পৃথকমডেলে উন্নয়নের কাজ করে চলেছে।
শক্তি ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী স্থবিরতা ভেঙ্গে সমস্যার সমাধানের ওপরগুরুত্ব দেন। তিনি বলেন শক্তি মন্ত্রক, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি মন্ত্রক ও কয়লামন্ত্রক এক অখন্ড একক হিসাবে কাজ করে চলেছে। ভারত বিদ্যুৎ ঘাটতি থেকে অতিরিক্তবিদ্যুতের দিকে এগিয়ে চলেছে এবং নেটওয়ার্কের ব্যর্থতা থেকে নেট এক্সপোর্টার হিসাবেপরিচিতি পাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, মানুষ আজ বিশ্বাস করেন যে, ভারত তার দুর্বলতাগুলিকেপেছনে ফেলে এগিয়ে যেতে পারবে। এই বিশ্বাসটাই উত্থিত ভারতের ভিত্তিস্বরূপ।প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমগ্র বিশ্ব ভারতের এই উত্থানকে স্বীকৃতি দিচ্ছে। ভারত যেকেবলমাত্র নিজের উন্নয়নের ক্ষেত্রেই দিশা দেখাচ্ছে তাই নয়, সমগ্র বিশ্বের উন্নয়নেরক্ষেত্রেও এই কাজ করে চলেছে। ভারত আজ সৌরবিদ্যুতের বিপ্লবের নেতৃত্ব দিচ্ছে।যেমনটা দেখা যাচ্ছে, আন্তর্জাতিক সৌর জোটের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে। তিনি বলেন, এইআন্তর্জাতিক মঞ্চগুলিতে যেমন জি-২০ বা রাষ্ট্রসংঘে ভারত সন্ত্রাসবাদ, কালো টাকাএবং দুর্নীতির মতো এমনসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উত্থাপন করেছে, যা সমগ্র বিশ্বকেক্ষতিগ্রস্ত করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে গত তিন-চার বছরে ভারত বিশ্বঅর্থনৈতিক বৃদ্ধিকে শক্তি যুগিয়েছে। অর্থনীটি ব্যাপকতর সবকটি ক্ষেত্রে ভারত উল্লেখযোগ্যঅগ্রগতি করে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী জানান যে, রেটিং সংস্থাগুলি ভারতে রেটিং সংশোধনকরে ঊর্ধ্বমুখী করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, সরকার দরিদ্র, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তসম্পদায়ের মানুষের আশা-আকাঙ্খার কথা মাথায় রেখে উন্নয়নের ক্ষেত্রে এক সার্বিকদৃষ্টিভঙ্গীতে কাজ করে চলেছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা দেশের যুবক ওমহিলাদের এক ক্ষমতায়নের এক সুদক্ষ ব্যবস্থা হয়ে উঠেছে।
Read Full Presentation Here


