মহামারীর দরুণ ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার হকারদের জীবিকা পুনরায় শুরু করতে সাহায্যের জন্য স্বনিধি কর্মসূচির সূচনা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
কর্মসূচিতে ৭ শতাংশ পর্যন্ত সুদ ছাড়ের সুবিধা এবং এক বছরের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করলে আরও কিছু আর্থিক সুবিধা: প্রধানমন্ত্রী
রাস্তার হকারদের ব্যবসায়িক ও ডিজিটাল লেনদেনের জন্য ওটিটি প্ল্যাটফর্মের সুবিধা দেওয়া হবে: প্রধানমন্ত্রী

আমার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য হরদীপ সিং পুরীজি, মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ভাই শিবরাজজি, রাজ্য মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্য, প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ, প্রধানমন্ত্রী স্বনিধি যোজনার সকল সুবিধাভোগী এবং এই অনুষ্ঠানে সামিল মধ্যপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশের বাইরে থেকে আসা আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা।

 

সবার আগে ‘প্রধানমন্ত্রী স্বনিধি যোজনা‘র সমস্ত সুবিধাভোগীকে আমি অনেক অনেক শুভ কামনা জানাই। কিছুক্ষণ আগেই আপনাদের মধ্যে কয়েকজনের সঙ্গে আমার কথা বলার সুযোগ হয়েছে। তাঁদের কথায় একটা আত্মবিশ্বাস ছিল,তাঁদের চোখে একটি আশার আলো দেখতে পেয়েছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ‘প্রধানমন্ত্রী স্বনিধি যোজনা‘র যে জিনিসটিকে আমি সবচেয়ে বড় সাফল্য বলে ভাবি, সবচেয়ে বড় শক্তি, তাহল আপনাদের পরিশ্রমের শক্তি। আপনাদের আত্মসম্মান এবং আত্মবলকে আমি সাদর প্রণাম জানাই।

 

সারা দেশ থেকে আসা যে বন্ধুরা ‘প্রধানমন্ত্রী স্বনিধি যোজনা‘য় অংশগ্রহণ করে এগিয়ে চলেছেন, তাঁদেরকেও আমি শুভ কামনা জানাই। বিশেষ করে, মধ্যপ্রদেশ ও শিবরাজজির টিমকে অনেক ধন্যবাদ জানাই, তাঁদের প্রচেষ্টার ফলে মাত্র দু‘মাসের মধ্যে মধ্যপ্রদেশে ১ লক্ষেরও বেশি হকার এবং ঠেলাওয়ালা, রেললাইনের দু‘পাশের অস্থায়ী দোকানদারদের স্বনিধি যোজনার মাধ্যমে উপকৃত হওয়া সুনিশ্চিত হয়েছে।

 

করোনা সঙ্কট সত্ত্বেও এত কম সময়ে ৪ লক্ষ ৫০ হাজার ঠেলাওয়ালা, রেললাইনের দু‘পাশের অস্থায়ী দোকানদারদের পরিচয়পত্র প্রদান করা, সার্টিফিকেট অফ ভেন্ডিং দেওয়া – আমি মনে করি অনেক বড় কাজ। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে অন্যান্য রাজ্যও মধ্যপ্রদেশের এই প্রচেষ্টা থেকে প্রেরণা নিয়ে তাদের রাজ্যের ভাই–বোনেদের উৎসাহিত করবেন এবং ভারতের প্রত্যেক শহরে আমাদের যত ঠেলাওয়ালা এবং রেললাইনের দু‘পাশে র অস্থায়ী দোকানদার ভাই–বোনেরা রয়েছেন, তাঁরা যেন ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পান সেজন্য আপনারা সক্রিয় প্রচেষ্টা চালাবেন।

 

বন্ধুগণ,

 

বিশ্বে যখনই কোন বড় সঙ্কট আসে, মহামারী আসে, তখন সবার আগে এবং সবথেকে বেশি প্রভাব আমাদের গরীব ভাই–বোনদের ওপর পড়ে। বেশি বৃষ্টি হলেও গরীবদের কষ্ট হয়, বেশি শীত পড়লে গরীবরাই বেশি কষ্ট পান, বেশি গরম পড়লেও গরীবদেরই বেশি সমস্যা হয়। গরীবদের রোজগারের সঙ্কট থাকে, খাওয়া–দাওয়ার সঙ্কট থাকে, তাঁদের জমানো পুঁজি এরকম শেষ হয়ে যায়। মহামারী এই সমস্ত বিপদ সঙ্গে নিয়ে আসে। আমাদের যত গরীব ভাই–বোনেরা আছেন, যত শ্রমিক সাথীরা আছেন, যত ঠেলাওয়ালা, রেললাইনের দু‘পাশের দোকানদারেরা রয়েছে, তাঁরা সকলে মহামারীর এই সঙ্কট সময়টিতে সবচাইতে বেশি কষ্ট করেছেন।

 

আমাদের অনেক এমন সাথী রয়েছেন, যাঁরা অনেক দূরের শহরে কাজ করেন, কিন্তু মহামারীর সময় তাঁদেরকে গ্রামে ফিরতে হয়েছে। আর সেজন্য করোনা বিশ্বব্যাপী মহামারীর প্রথম দিন থেকে সরকারের এই প্রচেষ্টা ছিল যে দেশের গরীব মানুষের সমস্যা যতটা সম্ভব দূর করা যায়। সরকার সক্রিয়ভাবে চেষ্টা করছে, এই সময় আমাদের দেশে যাঁরাই সমস্যায় ভুগছিলেন, তাঁদের খাবার যোগাড় করার সমস্যা ছিল, তাঁদের জন্য বিনামূল্যে রেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে, বিনামূল্যে রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার দেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ রোজগার অভিযানের মাধ্যমে এই সঙ্কটকালে লক্ষ লক্ষ মানুষকে কর্মসংস্থানের সুযোগও করে দেওয়া হয়েছে। গরীব মানুষের জন্য নিরন্তর এই কাজগুলির মাঝে একটি অনেক বড় অংশ ছিল যাঁদের দিকে নজর দেওয়ার প্রয়োজন ছিল – তাঁরা হলেন, ঠেলাওয়ালা, রেললাইনের দু‘পাশের অস্থায়ী দোকানদার ভাই–বোনেরা। ঠেলাওয়ালা, রেললাইনের দু‘পাশের অস্থায়ী দোকানদারদের পরিবার চালাতে হয়। করোনার ফলে বাজার বন্ধ হয়ে গেছে, নিজেদের জীবন বাঁচানোর জন্য মানুষ অধিকাংশ সময় বাড়িতে থাকতে শুরু করেছেন। সেজন্য আমাদের ঠেলাওয়ালা, রেললাইনের দু‘পাশের অস্থায়ী দোকানদার ভাই–বোনেদের ওপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে। তাঁদের ব্যবসার ওপর প্রভাব পড়েছে। তাঁদেরকে এই প্রবল সঙ্কট থেকে বের করে আনার জন্যই প্রধানমন্ত্রী স্বনিধি যোজনা শুরু করা হয়েছে।

 

এই যোজনার উদ্দেশ্য হল, যাঁরা নতুনভাবে শুরু করতে পারবেন, তাঁরা আবার নতুন করে নিজেদের কাজ শুরু করুন। তাঁদের সহজ সুদে ঋণের মাধ্যমে পুঁজি দেওয়া হবে। তাঁদেরকে সুদখোর মহাজনদের থেকে উচ্চহারে সুদে ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। এই প্রথম দেশে আমার ঠেলাওয়ালা, রেললাইনের দু‘পাশের অস্থায়ী দোকান দেওয়া লক্ষ লক্ষ ভাই–বোনদের এই ধরনের নেটওয়ার্কের সঙ্গে সঠিক অর্থে যুক্ত করা হচ্ছে। তাঁরা একটি নতুন পরিচয় পেয়েছেন – স্বনিধি যোজনা। স্বনিধির মাধ্যমে স্বরোজগার, স্বরোজগারের মাধ্যমে সাবলম্বন এবং সাবলম্বনের মাধ্যমে আত্মাভিমানের যাত্রার গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়।

 

বন্ধুগণ,

 

স্বনিদি যোজনা সম্পর্কে আপনাদের সকলকে বলা হয়েছে যে বন্ধুদের সঙ্গে আমি একটু আগেই কথা বলেছি, তাঁরা এ সম্পর্কে ভালোই জানেন। কিন্তু, তবুও প্রত্যেক অসহায় মানুষের কাছে এই প্রকল্পকে পৌঁছে দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। প্রত্যেক ঠেলাওয়ালা, রেললাইনের দু‘পাশে অস্থায়ী দোকান চালানো ভাই–বোনেদের এই প্রকল্প সম্পর্কে ভালোভাবে সচেতন করতে হবে। তবেই তো আমাদের গরীব ভাই–বোনেরা এর দ্বারা উপকৃত হতে পারবেন।

 

এই প্রকল্পের সমস্ত প্রক্রিয়াকে এত সরল করা হয়েছে যে, সাধারণ ব্যক্তিও এতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এখন যেমন আমাদের ভগিনী অর্চনাদি বলছিলেন, তিনি কত সহজে এই প্রকল্প দ্বারা উপকৃত হয়েছেন। তাঁর কোন সমস্যাই হয়নি। এতে প্রযুক্তির মাধ্যমে এমন ব্যবস্থা করা হয়েছে যে ঠেলাওয়ালা, রেললাইনের দু‘পাশের অস্থায়ী দোকানদারদের কোন কাগজ জমা করানোর জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়াতে হবে না। আপনারা কমন সার্ভিস সেন্টারে কিংবা নগরপালিকার কার্যালয়ে অথবা ব্যাঙ্কের শাখায় গিয়ে নিজেদের আবেদন আপলোড করতে পারেন। শুধু তাই নয়, ব্যাঙ্কের বিজনেস করেসপন্ডেন্ট বা নগরপালিকার কোন কর্মচারী গিয়েও আপনাদের কাছ থেকে আবেদন গ্রহণ করতে পারেন। আপনার যেমন পরিষেবা ঠিক মনে হয়, আপনি সেটাই ব্যবহার করুন। গোটা ব্যবস্থাটিকে এতই সরল করা হয়েছে যে যেকেউই এতে অংশগ্রহণ করতে পারেন।

বন্ধুগণ,

 

এটি এমন একটি প্রকল্প যা আপনাকে সুদ থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্তিও দিতে পারে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে এমনিতেও আপনাদের ৭ শতাংশ পর্যন্ত সুদে ছাড় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, আপনারা যদি কিছু ছোট ছোট বিষয় লক্ষ্য রাখেন তাহলে আপনাদের এই সুদও দিতে হবে না। যেমন, আপনারা যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে, অর্থাৎ এক বছরের মধ্যে ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া টাকা শোধ করে দিতে পারেন, তাহলে আপনাদের ১ টাকাও সুদ দিতে হবে না। শুধু তাই নয়, যখন আপনারা ডিজিটাল লেনদেন করবেন আপনাদের মোবাইল ফোন ব্যবহার করে টাকা নেওয়া ও দেওয়া, পাইকারী ব্যবসায়ীদের থেকেও মোবাইলে লেনদেন করবেন। তাহলে আপনার অ্যাকাউন্টে সরকারের পক্ষ থেকে পুরস্কারস্বরূপ কিছু ক্যাশব্যাক হিসেবে পাঠানো হবে। অর্থাৎ, সরকার আপনার অ্যাকাউন্টে কিছু টাকা দেবে। এভাবে আপনাদের অনেকটা সাশ্রয়ও হতে পারে আর সুদ থেকেও মুক্তি পেতে পারেন।

 

তাছাড়া, আপনারা যদি দ্বিতীয়বার ঋণ নেন, তখন আরও বেশি পরিমাণ টাকা ঋণ নিতে পারবেন। মনে করুন এবার আপনি ১০ হাজার টাকা ঋণ পেয়েছেন। যদি আপনার লেনদেন খুব পরিষ্কার থাকে আর আগামীবার আপনার ১৫ হাজার টাকার প্রয়োজন থাকে, তাহলে দ্বিতীয়বার ঋণ নিলে আপনাকে ১৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে। সেবারও যদি ভালো কাজ করেন, তারপরের বার ২০ হাজার টাকা ঋণ পেতে পারেন, তারপর ২৫ হাজার টাকা, তারপর ৩০ হাজার টাকা…এভাবে প্রতিবছর পেতে পারেন। একটু আগেই অনুষ্ঠানের শুরুতে আমাদের ছগনলালজি বলছিলেন, তিনি ১০গুণ করতে চান এবং একদিন ১ লক্ষ টাকায় পৌঁছতে চান। তাঁর কথা শুনে আমার খুব আনন্দ হয়েছে।

 

বন্ধুগণ,

 

বিগত তিন–চার বছরে দেশে ডিজিটাল লেনদেনের অভ্যাস দ্রুতগতিতে বাড়ছে। করোনার সময়ে আমরা সবাই অনুভব করেছি যে এটা কত প্রয়োজনীয়। এখন গ্রাহকরা আর নগদ লেনদেন করতে চান না। সরাসরি মোবাইলের মাধ্যমেই পেমেন্ট করতে চায়। সেজন্য আমাদের ঠেলাওয়ালা, রেললাইনের দু‘পাশের অস্থায়ী দোকানদার এই ডিজিটাল দোকানদারির ক্ষেত্রেও একদমই পিছিয়ে থাকবেন না। আপনারা খুব সহজেই এই ডিজিটাল লেনদেন করতে পারবেন। আমি দেখেছি, আমাদের কুশওয়াহাজি তাঁর ঠেলাতে কিউআর কোড লাগিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। এখন বড় বড় শপিং মলেও এটাই পদ্ধতি। আমাদের গরীব ভাই–বোনেরা প্রতিদিন নতুন কিছু শিখতে প্রস্তুত থাকেন। আর সেজন্য ব্যাঙ্ক এবং ডিজিটাল পেমেন্টের পরিষেবা মিলেমিশে একটি নতুন সূত্রপাত হয়েছে। এখন ব্যাঙ্কগুলি এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা আপনাদের বাসস্থানে আসবেন, আপনাদের ঠেলাগাড়ি এবং রেললাইনের পাশের অস্থায়ী দোকানে আসবেন এবং কিউআর কোড দিয়ে যাবেন। আপনারা কিভাবে এটিকে ব্যবহার করবেন, তার পদ্ধতিও তাঁরা শিখিয়ে দিয়ে যাবেন। আমি আমার সমস্ত ঠেলাওয়ালা, রেললাইনের দু‘পাশের অস্থায়ী দোকানদার বন্ধুদের কাছে আবেদন রাখছি যে তাঁরা যত বেশি সম্ভব লেনদেন ডিজিটাল মাধ্যমে করুন এবং গোটা বিশ্বের সামনে একটি নতুন উদাহরণ তুলে ধরুন।

 

বন্ধুগণ,

 

প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমাদের যে খাদ্য–পানীয় ব্যবসায়ীরা রয়েছেন, তাঁদের আমরা স্ট্রিট ফুড ভেন্ডার বলি। তাঁদেরকে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম প্রদানেরও প্রকল্প রচনা করা হয়েছে। অর্থাৎ, বড় বড় রেস্টুরেন্টগুলির মতোই ঠেলাওয়ালা, রেললাইনের দু‘পাশের অস্থায়ী দোকানদার বন্ধুরা তাঁদের গ্রাহকদের অনলাইন ডেলিভারি করতে পারবেন। এই ধরনের পরিষেবা প্রদানের চেষ্টা চলছে এবং কিছুদিনের মধ্যেই আপনারা অবশ্যই এগিয়ে আসবেন এবং আমরা মিলেমিশে এই কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাব। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে এ ধরনের প্রচেষ্টার মাধ্যমে ঠেলাওয়ালা, রেললাইনের দু‘পাশের অস্থায়ী দোকানদার এবং ফেরিওয়ালার কাজ করা বন্ধুদের ব্যবসা বাড়বে, তাঁদের রোজগার আরও বৃদ্ধি পাবে।

 

বন্ধুগণ,

 

হকার ভাই–বোনেদের জন্য আরেকটি প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী স্বনিধি যোজনার সঙ্গে যুক্ত হওয়া যে ঠেলাওয়ালা, রেললাইনের দু‘পাশের অস্থায়ী দোকানদাররা রয়েছেন, তাঁদের জীবন সহজ করে তুলতে, তাঁদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে সমস্ত পরিষেবা প্রদান সুনিশ্চিত করা হবে। অর্থাৎ, আমার ঠেলাওয়ালা, রেললাইনের দু‘পাশের অস্থায়ী দোকানদার ভাই–বোনেদের রান্নাঘরে বিনামূল্যে রান্নার গ্যাস সংযোগ যদি না থাকে, তাঁদের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ যদি না থাকে, তাঁরা যদি আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত না হয়ে থাকেন, তাঁদের মাথার ওপর যদি পাকা ছাদ না থাকে – এই সমস্ত বিষয়গুলিকে সঠিকভাবে খতিয়ে দেখা হবে। আর যেখানেই ত্রুটি দেখা যাবে, সরকার সক্রিয়রূপে সেই ত্রুটি সংশোধনের চেষ্টা করবে। যাঁদের কাছে এগুলির মধ্যে যে পরিষেবা থাকবে না, অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তাঁদের কাজ আগে করা হবে।

 

বন্ধুগণ,

 

আমাদের দেশে বিগত সাত দশকে দারিদ্র দূরীকরণ নিয়ে, গরীবদের নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। কিন্তু গরীবদের জন্য যত কাজ বিগত ছয় বছরে হয়েছে আর যথাযথ পরিকল্পনা অনুযায়ী হয়েছে, একটা থেকে দ্বিতীয়টা, দ্বিতীয়টা থেকে তৃতীয়টা – প্রত্যেক ক্ষেত্রে গরীবদের যত সুবিধা হয়েছে, দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাঁরা যে শক্তি পেয়েছেন এবং সেই শক্তি প্রয়োগ করে নিজেরাই দারিদ্র্যকে পরাভূত করে দারিদ্রসীমা থেকে ওপরে ওঠে এসেছেন, সেই লক্ষ্যে একের পর এক পদক্ষেপ, অনেক নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে – যা আগে কখনও হয়নি। যেখানে যেখানে গরীব, পীড়িত, শোষিত, বঞ্চিত, দলিত আদিবাসীদের জীবনে অভাব ছিল, সরকারি প্রকল্পগুলি তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের সাহায্য করেছে।

 

আপনারা স্মরণ করুন, আমাদের দেশে গরীবরা আগে নানারকম কাগজ জমা দেওয়ার ভয়ে ব্যাঙ্কের দরজা পর্যন্ত যাওয়ার সাহস পেতেন না। প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনার মাধ্যমে সারা দেশে ৪০ কোটিরও বেশি গরীবদের, নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলানো হয়েছে। এই জন ধন অ্যাকাউন্টগুলি আমাদের গরীবদের ব্যাঙ্কের সঙ্গে জুড়েছে। আর সেজন্যই এখন তাঁরা সহজে ঋণ নিতে পারছেন। সুদখোর মহাজনদের থাবা থেকে বেড়িয়ে আসতে পারছেন। এই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলির জন্যই গরীবদের কোনরকম ঘুষ না দিয়ে আবাসনের ব্যবস্থা হচ্ছে। কৃষকদের অর্থ সাহায্য সরাসরি তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাচ্ছে। করোনার সময়ে গোটা দেশে ২০ কোটিরও বেশি ভগিনীদের জন ধন অ্যাকাউন্টে প্রায় ৩১ হাজার কোটি টাকা জন ধন যোজনার ফলেই জমা হতে পেরেছে। তেমনই পিএম–কিষাণ সম্মান নিধির মাধ্যমে সারা দেশের ১০ কোটিরও বেশি কৃষক পরিবারের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৯০ হাজার কোটি টাকারও বেশি সরাসরি হস্তান্তর করা হয়েছে।

 

বন্ধুগণ,

 

আমাদের গরীবরা এই বছরগুলিতে যেভাবে জন ধন অ্যাকাউন্টের সঙ্গে, ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন, এই উদ্যোগ একটি নতুন যুগের সূত্রপাত করেছে। এখন অতি দ্রুত শহরগুলির মতো আমাদের গ্রামগুলিও অনলাইনের মার্কেটের সঙ্গে যুক্ত হবে। বিশ্বের বাজার আমাদের গ্রামে গ্রামে পৌঁছে যাবে। এবার ১৫ আগস্টে দেশবাসী সেজন্য একটি সঙ্কল্প গ্রহণ করেছে। দেশের সমস্ত গ্রামগুলিকে আগামী ১ হাজার দিনের মধ্যে অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে যুক্ত করা হবে। অর্থাৎ, দেশের সর্বত্র গ্রামে গ্রামে, বাড়িতে বাড়িতে এখন দ্রুতগতিসম্পন্ন ইন্টারনেট সংযোগ পৌঁছে যাবে। এর মাধ্যমে ডিজিটাল বিপ্লবের সুফল দ্রুতগতিতে আমাদের প্রতিটি গ্রামে, প্রতিটি গরীবের কাছে পৌঁছে যাবে। এভাবে দেশে ডিজিটাল হেলথ মিশনেরও সূত্রপাত হয়েছে। অর্থাৎ, এখন প্রত্যেক দেশবাসী একটি হেলথ আইডি পাবেন। এতে আপনার সমস্ত স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য সুরক্ষিত থাকবে। এই আইডি–র সাহায্যে আপনারা ডাক্তারদের অ্যাপয়ন্টমেন্টও অনলাইনে নিতে পারবেন আর হেলথ চেক–আপের রিপোর্টও ডাক্তারদের অনলাইনে দেখাতে পারবেন। অর্থাৎ, একভাবে দেখলে আগে যেমন প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বিমা যোজনা এবং প্রধানমন্ত্রী জীবনজ্যোতি যোজনার মাধ্যমে বিমা সুরক্ষা পেয়েছেন, তারপর আয়ুষ্মান ভারতের মাধ্যমে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসার সুবিধা পেয়েছেন, তেমনই এখন ডিজিটাল হেলথ মিশনের মাধ্যমে সহজে চিকিৎসার পরিষেবাও পেতে চলেছেন।

 

বন্ধুগণ,

 

আমাদের সরকার চেষ্টা করছে যাতে প্রত্যেক দেশবাসীর জীবন সহজ হয়। প্রত্যেক দেশবাসী সামর্থ্যবান হন, প্রত্যেকের ক্ষমতায়ন হয় আর সবথেকে বড় কথা সবাই যেন আত্মনির্ভর হয়। সম্প্রতি সরকার দেশের শহরগুলিতে আপনাদের মতো বন্ধুদের যথোচিত ভাড়ায় উন্নত আবাসনের ব্যবস্থা করার জন্য একটি বড় প্রকল্প শুরু করেছে। ‘এক দেশ এক রেশন কার্ড‘-এর পরিষেবার মাধ্যমে আপনারা দেশের যে কোনও জায়গায় গিয়ে নিজের বরাদ্দ রেশন সুলভে কিনতে পারবেন। আপনারা যেখানেই যাবেন, আপনাদের অধিকারও আপনাদের সঙ্গে সঙ্গে যাবে।

 

বন্ধুগণ,

 

এখন যখন আপনারা নতুনভাবে নিজের ব্যবসা শুরু করছেন, তখন আপনাদের কিছু সাবধানতা অবশ্যই অবলম্বন করতে হবে। যতদিন পর্যন্ত করোনার ভ্যাক্সিন না আসে, এর প্রতিরোধে কোনও উন্নত পদ্ধতি বেরিয়ে না আসে, করোনার বিপদ থেকেই যাবে। এক্ষেত্রে আপনাদের নিজের এবং গ্রাহকদের নিরাপত্তা সম্পর্কে সম্পূর্ণ খেয়াল রাখতে হবে। মাস্ক পড়া, হাত নিয়মিত পরিষ্কার করা, নিজের বাসস্থান ও দোকানের চারপাশ পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন রাখা, দু‘গজের দূরত্ব রাখা – সেগুলির সঙ্গে কোনও পরিস্থিতিতেই সমঝোতা করবেন না। পাশাপাশি, সিঙ্গল ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহার একদমই করবেন না। আপনারা করোনা থেকে নিজেদের বাঁচাতে যত ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করবেন, ততই আপনাদের ঠেলার ব্যবসা, রেললাইনের দু‘পাশে অস্থায়ী দোকানের ব্যবসা বাড়বে। আপনাদের পণ্য সম্পর্কে মানুষের নিরাপত্তাবোধ বাড়বে, আস্থা বাড়বে এবং আপনাদের বিকিকিনিও বাড়বে। আপনারা নিজেরাও এই নিয়মগুলি পালন করবেন এবং অন্যদেরকেও এই নিয়মগুলি পালন করতে অনুরোধ করে যাবেন। আরেকবার আপনাদের সবাইকে একটি নতুন সূত্রপাতের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই, অনেক অনেক শুভ কামনা জানাই। আপনারা সুস্থ থাকুন, আপনাদের পরিবার সুস্থ থাকুক, আপনাদের ব্যবসায় অনেক অনেক শ্রীবৃদ্ধি হোক – এই আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আপনাদের সবাইকে আমার পক্ষ থেকে অনেক অনেক শুভ কামনা।

 

অনেক অনেক ধন্যবাদ।

Explore More
শ্রী রাম জন্মভূমি মন্দিরের ধ্বজারোহণ উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বাংলা অনুবাদ

জনপ্রিয় ভাষণ

শ্রী রাম জন্মভূমি মন্দিরের ধ্বজারোহণ উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বাংলা অনুবাদ
Oman, India’s Gulf 'n' West Asia Gateway

Media Coverage

Oman, India’s Gulf 'n' West Asia Gateway
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Prime Minister extends compliments for highlighting India’s cultural and linguistic diversity on the floor of the Parliament
December 23, 2025

The Prime Minister, Shri Narendra Modi has extended compliments to Speaker Om Birla Ji and MPs across Party lines for highlighting India’s cultural and linguistic diversity on the floor of the Parliament as regional-languages take precedence in Lok-Sabha addresses.

The Prime Minister posted on X:

"This is gladdening to see.

India’s cultural and linguistic diversity is our pride. Compliments to Speaker Om Birla Ji and MPs across Party lines for highlighting this vibrancy on the floor of the Parliament."

https://www.hindustantimes.com/india-news/regional-languages-take-precedence-in-lok-sabha-addresses-101766430177424.html

@ombirlakota