প্রধানমন্ত্রী মোদী ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্ট ব্যাঙ্ক-এর উদ্বোধন করলেন
আইপিপিবি গ্রাম ও গরিবের দরজায় ব্যাঙ্ক ও ব্যাঙ্কিং সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে দেশের অর্থ ব্যবস্থায় একটি বড় পরিবর্তন নিয়ে আসবে: প্রধানমন্ত্রী মোদী
আইপিপিবি-এর মাধ্যমে দেশের প্রতিটি কোণায় ব্যাঙ্কিং পরিষেবা পৌঁছে যাবে: প্রধানমন্ত্রী মোদী
এনপিএ সমস্যা বাড়ার জন্য দায়ী পূর্ববর্তী ইউপিএ সরকার: প্রধানমন্ত্রী মোদী
দেশের অর্থনীতিকে ল্যান্ডমাইনের ওপর ফেলে গিয়েছে নামদার (কংগ্রেস), বললেন প্রধানমন্ত্রী মোদী
আমরা ঋণ খেলাপীদের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছি: প্রধানমন্ত্রী মোদী

মঞ্চে উপস্থিত আমার মন্ত্রী পরিষদের সহযোগী শ্রী মনোজ সিনহা, ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্টস্‌ ব্যাঙ্কের সিইও ও সচিব এবং উপস্থিত অন্যান্য মাননীয় ব্যক্তিবর্গ, ভদ্রমহিলা ও ভদ্র মহোদয়গণ। এই সময়ে প্রযুক্তির মাধ্যমে সারা দেশে ৩ হাজারেরও বেশি কেন্দ্রে ডাক বিভাগের কয়েক হাজার কর্মচারী এবং স্থানীয় নাগরিক এই অনুষ্ঠান দেখছেন। আমাদের মনোজজি বলছিলেন যে, প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ আজ এই অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করছেন। অনেক রাজ্যের মাননীয় রাজ্যপাল, মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্র ও রাজ্যের মন্ত্রী পরিষদের সদস্য, সাংসদ ও বিধায়কগণ-ও এই অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়েছেন। তাঁদেরকেও আমি এই সমারোহে স্বাগত জানাই, অভিনন্দন জানাই।

 

আমাদের মন্ত্রী শ্রী মনোজ সিনহা আইআইটি-র কৃতী ছাত্র হওয়ার ফলে আপন স্বভাবেই সবকিছুকে প্রযুক্তির সঙ্গে জুড়ে দেন। আর সেজন্য এই সমারোহতেও প্রযুক্তিরই জয়জয়কার। মনোজজি ব্যক্তিগত আগ্রহ নিয়ে এই পদক্ষেপকে ত্বরান্বিত করেছেন। তাঁর নিজস্ব প্রযুক্তিগত প্রেক্ষাপট থাকার ফলে এই প্রকল্প রূপায়ণে তাঁর কাছ থেকেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ পাওয়া গেছে, যা দেশকে একটি বড় উপহার তুলে দিচ্ছে। আজকের পয়লা সেপ্টেম্বর দিনটি দেশের ইতিহাসের নতুন ও অভূতপূর্ব ব্যবস্থার সূত্রপাতের জন্য মনে রাখা হবে।

 

ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্টস্‌ ব্যাঙ্ক – এর মাধ্যমে দেশের প্রত্যেক গরিব, সাধারণ মানুষ দেশের প্রতিটি প্রান্তে, দূরদূরান্তের পার্বত্য কিংবা ঘন জঙ্গলে বসবাসকারী আদিবাসী অথবা দূরবর্তী কোনও দ্বীপে বসবাসকারী প্রত্যেক ভারতীয় নাগরিকের দরজায় ব্যাঙ্ক ও ব্যাঙ্কিং সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার যে সংকল্প আমরা করেছিলাম, তা বাস্তবায়নের পথ খুলে গেল। এই নতুন ব্যবস্থার জন্য প্রত্যেক ভারতবাসীকে আমি অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।

 

ভাই ও বোনেরা, ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্টস্‌ ব্যাঙ্ক দেশের অর্থ ব্যবস্থায় ও সামাজিক ব্যবস্থায় একটি বড় পরিবর্তন নিয়ে আসবে। আমাদের সরকার আগে জন ধন প্রকল্পের মাধ্যমে কোটি কোটি গরিব পরিবারকে প্রথমবার ব্যাঙ্ক পরিষেবা পৌঁছে দিয়েছে। আর আজ এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা ব্যাঙ্কে গ্রাম ও গরিবের দুয়ারে পৌঁছনোর কাজ শুরু করছি। এর পর থেকে ‘আপনার ব্যাঙ্ক আপনার দরজায়’ কথাটা শুধুমাত্র শ্লোগানই থেকে যাবে না, এটা আমাদের দায়বদ্ধতা, এটা আমাদের স্বপ্ন। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য আমরা একের পর এক পদক্ষেপ নিয়েছি। সারা দেশে ৬৫০টিরও বেশি জেলায় আজ ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্টস্‌ ব্যাঙ্ক-এর শাখাগুলি যাত্রা শুরু করল। আর আমাদের চিঠি নিয়ে আসা ডাক হরকরারা আজ থেকে হয়ে উঠলেন এক একজন চলমান ব্যাঙ্ক।

 

এখানে আসার সময় আমি একটা প্রদর্শনী দেখেছি, কেমন ব্যবস্থা হচ্ছে, কিভাবে কাজ হবে – এসব কিছু আমাকে বিস্তারিত বলা হয়েছে, আপনারাও সম্ভবতঃ টিভি স্ক্রিনে বা আপনাদের সামনের পর্দায় দেখেছেন। আমি যখন দেখছিলাম, সেখানে উপস্থিত বিশেষজ্ঞ যখন আমাকে গোটা ব্যবস্থাটা বোঝাচ্ছিলেন তখন তাঁর প্রত্যয় দেখে, এমন কর্তব্যনিষ্ঠ সঙ্গীদের দেখে আমার মনে এত আত্মসন্তুষ্টি জেগে উঠছিল, অনুভব করছিলাম যে এই প্রচেষ্টা অবশ্যই দেশকে নতুন রঙে রাঙিয়ে দেবে! আমাদের দেশে সাধারণ মানুষের সঙ্গে ডাক হরকরাদের অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক রয়েছে। মানুষের মনে সরকারের প্রতি অবিশ্বাস তৈরি হলেও ডাক হরকরাদের প্রতি বিশ্বাস অটল থাকে। যাঁরা গ্রামীণ জীবন সম্পর্কে পরিচিত তাঁরা জানেন যে, কয়েক দশক আগে ডাক হরকরারা এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে যেতেন। তাঁদের হাতে একটি ঘুঙুর বাঁধা ঢাল থাকত। তাঁরা যখন যেতেন দূর থেকে সেই ঘুঙুরের শব্দ শোনা যেত। ঘন জঙ্গলে কিংবা যে কোনও প্রত্যন্ত দুর্গম অঞ্চলে এই ডাক হরকরাদের কোনও চোর-ডাকাতও আক্রমণ করত না। কারণ, তাঁরা জানত যে, এই ডাক হরকরা হয়তো কোনও গরিব মায়ের জন্য মানি অর্ডারের টাকা নিয়ে যাচ্ছেন।

 

আপনারা হয়তো জানেন যে, এখন যেমন প্রত্যেক বাড়িতে এক বা একাধিক ঘড়ি আছে। কিন্তু আগে গ্রামে দু-একটি টাওয়ার ছাড়া ঘড়ি থাকতো না। আমিও গ্রামের গরিব ঘরের ছেলে বলে এসব জানি। বাড়ির বয়স্ক ব্যক্তি উঠানে কিংবা দাওয়ায় বসে জিজ্ঞেস করতেন, আজ ডাকিয়া আসেননি? এমন নয় যে কারও ডাক আসবে বলেই এই জিজ্ঞাসা, অনেকে সময় জানার জন্যেও এই প্রশ্ন করতেন। কারণ তাঁরা জানতেন যে, ডাক হরকরারা এতটাই সময়নিষ্ঠ যে তাঁদেরকে দেখে সময় জানা যায়। এভাবে ডাক হরকরারা গ্রামের প্রতিটি পরিবারের সঙ্গে একটি আবেগপূর্ণ যোগাযোগের বন্ধনে বাধা পড়তেন। তাঁদের নিয়ে আসা চিঠি পড়ে মানুষ হাসতেন, কাঁদতেন। ফলে তাঁদের সমাজে একটি বিশেষ সম্মানের জায়গা ছিল।

 

আজকের এই যুগে প্রযুক্তি অনেক কিছু বদলে দিয়েছে। কিন্তু চিঠি সরবরাহের ক্ষেত্রে ডাক হরকরাদের প্রতি মানুষের যে আস্থা, তা আজও তেমনই রয়েছে। ডাক হরকরা ও ডাকঘর আমাদের সমাজ জীবনে, আমাদের সাহিত্য, লোককথা ও চলচ্চিত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আমরা আজও বিজ্ঞাপনে দেখি, ‘ডাকিয়া ডাক লায়া’র মতো গান দশকের পর দশক ধরে মানুষের হৃদয়ে আবেদন সৃষ্টি করে যাচ্ছে। আর আজ থেকে সেই ডাকিয়ারা ডাকের পাশাপাশি ব্যাঙ্ক নিয়ে মানুষের ঘরে পৌঁছবেন।

 

কয়েক দশক আগে আমি একবার কানাডা গিয়েছিলাম। সেখানে একটি সিনেমা দেখেছিলাম। আমার আজও মনে আছে, ডাক সংক্রান্ত সেই রোমহর্ষক সিনেমাটির নাম ছিল ‘এয়ারমেল’। আমাদের জীবনে চিঠির কতটা গুরুত্ব সেটাই ছিল ঐ কাহিনীর মূল কথা। সিনেমাটিতে একটি বিমান ছিল। সেই বিমানের কার্গোতে চিঠি ভর্তি ছিল। দুর্ভাগ্যবশত, বিমানটি দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়। সেই অভিশপ্ত দুর্ঘটনাস্থল থেকে চিঠিগুলিকে সংগ্রহ করে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার গল্প নিয়েই সিনেমাটি তৈরি হয়েছে। একটা মানুষের জীবন বাঁচাতে যেমন যত্ন করা হয়, ঐ সিনেমায় ডাক হরকরারা প্রতিটি চিঠিকে তেমনই যত্ন নিয়ে পৌঁছে দিয়েছিল। সম্ভবত আজও আপনারা চাইলে ইউটিউবে এই সিনেমাটি দেখে নিতে পারেন। সেই চিঠিগুলির প্রতি যত্ন, সেই চিঠিগুলির বার্তা চিন্তাভাবনা, অভিযোগ; চিঠির আত্মীয়তাই তার আত্মাস্বরূপ। আজও আমি প্রতিদিন হাজার হাজার চিঠি পাই। আমি যখন থেকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছি। ডাক বিভাগের কাজ বেড়ে গেছে। মানুষের আস্থা বৃদ্ধি পেলে তবেই চিঠি লেখে। আমার প্রতি মাসে যে মন কি বাত অনুষ্ঠান থাকে, তার প্রতিক্রিয়া স্বরূপ প্রতি মাসে হাজার হাজার চিঠি আসে। এই চিঠিগুলি জনগণের সঙ্গে আমার সরাসরি সম্পর্ক স্থাপন করে। এক একটা চিঠি পড়ি আর মনে হয় তাঁরা সরাসরি আমার সঙ্গেই কথা বলছেন।

বন্ধুগণ, আমাদের সরকারি কাজকর্ম সময় অনুযায়ী চলে। ভবিষ্যতের চাহিদা অনুসারে আমরা ব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন এনেছি। আমরা প্রাচীনপন্থী নই, আধুনিক প্রযুক্তিকে স্বীকার করে দেশ, সমাজ এবং সময়ের চাহিদা অনুসারে ব্যবস্থা বিকশিত করার পক্ষে জিএসটি থেকে শুরু করে আধার, ডিজিটাল ইন্ডিয়া-র মতো এরকম অসংখ্য প্রয়াসের শৃঙ্খলায় আজ নতুন পালক জুড়ছে ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্টস্‌ ব্যাঙ্ক।

 

আমাদের সরকার পুরনো ব্যবস্থাগুলিকেও আগের মতো রেখে দেওয়ার পক্ষে নই; আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সংস্কার ও সম্পাদনের মাধ্যমে রূপান্তরণের পথে এগিয়ে চলেছি। আজকাল ইনল্যান্ড লেটারের জায়গা নিয়েছে ই-মেল। কিন্তু উভয়ের লক্ষ্য তো একই। সেজন্য যে প্রযুক্তি ডাকঘরের সামনে প্রতিস্পর্ধা হয়ে উঠেছে, অনেকের মনে হচ্ছিল যে, ডাক বিভাগই হয়তো উঠিয়ে দিতে হবে। ডাক হরকরাদের আর চাকরিই থাকবে না। আমরা সেই প্রতিস্পর্ধাকে নস্যাৎ করে দিয়ে একই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে সমস্যাগুলিকে সুযোগে রূপান্তরিত করেছি।

 

ভারতীয় ডাক বিভাগ, আমাদের দেশে দেড় লক্ষেরও বেশি ডাকঘর রয়েছে। তার মধ্যে ১ লক্ষ ২৫ হাজারেরও বেশি রয়েছে দেশের প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে। ৩ লক্ষেরও বেশি ডাক হরকরা এবং গ্রামীণ ডাকসেবক দেশের প্রতিটি মানুষের সঙ্গে আবেগের সম্পর্কে জড়িয়ে আছে। এত বড় নেটওয়ার্ককে প্রযুক্তির মাধ্যমে যুক্ত করে পরিষেবা প্রদানের জন্য একবিংশ শতাব্দীর সর্বাধিক শক্তিশালী ব্যবস্থায় রূপান্তরিত করার কাজ আমার সরকার করেছে। এখন ডাক হরকরাদের হাতে স্মার্টফোন আর তাঁর থলেতে একটি ডিজিটাল ডিভাইস থাকবে।

 

বন্ধুগণ, ঐক্য, সাম্য, সংহতি, সেবা ও বিশ্বাসের প্রতীক এই ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্টস্‌ ব্যাঙ্ক এখন শুধু দেশের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাই নয়, ডিজিটাল লেনদেনের ব্যবস্থাকেও বিস্তারিত করার শক্তি রাখে। ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্টস্‌ ব্যাঙ্কে সেভিং অ্যাকাউন্টের পাশাপাশি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা নিজেদের সুবিধানুযায়ী কারেন্ট অ্যাকাউন্টও খুলতে পারেন। উত্তর প্রদেশ ও বিহারের যে শ্রমিকরা মুম্বাই কিংবা ব্যাঙ্গালুরু-তে কাজ করেন, তাঁরা এর মাধ্যমে সহজেই নিজেদের পরিবারে টাকা পাঠাতে পারবেন। অন্যের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফারও করতে পারবেন। বিভিন্ন সরকারি অনুদানের টাকা ও মনরেগা-র পারিশ্রমিকও এই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সহজেই পাওয়া যাবে। জনগণকে এখন বিদ্যুৎ ও ফোনের বিল জমা করার জন্য আর কোথাও যেতে হবে না। শুধু তাই নয়, অন্যান্য ব্যাঙ্ক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মিলিতভাবে ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্টস্‌ ব্যাঙ্ক ঋণও প্রদান করতে পারবে। বিনিয়োগ ও বিমার মতো পরিষেবাও প্রদান করতে পারবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হ’ল ডাক হরকরারা ব্যাঙ্কের কাউন্টারের পরিষেবা জনগণের বাড়িতে পৌঁছে দেবে। ব্যাঙ্কের সঙ্গে বিভিন্ন ডিজিটাল লেনদেনের ক্ষেত্রে জনগণকে যে সমস্ত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, আজকের প্রশিক্ষিত ডাক হরকরারা সেই সমস্যাগুলিও সমাধান করে তোলেন। কত টাকা জমা করেছিলেন, কত সুদ পেয়েছেন – সমস্ত তথ্য প্রদান করে ডাক হরকরারা শুধু চলমান ব্যাঙ্ক নয়, গ্রাম, গরিব ও মধ্যবিত্তদের বিশ্বস্ত সহযোগী হয়ে উঠবেন।

 

এখন থেকে আপনাদের নিজেদের ব্যাঙ্কের খাতা, অ্যাকাউন্ট নম্বর ও পাসওয়ার্ড মনে রাখার প্রয়োজন নেই। গ্রামীণ পরিস্থিতি মাথায় রেখে এই ব্যাঙ্কে এই সমস্ত প্রক্রিয়া অনেক সরল করে দেওয়া হয়েছে। এই নতুন ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলতে মাত্র কয়েক মিনিট লাগবে। যদিও আমাদের মন্ত্রী বলছিলেন, মাত্র ১ মিনিটের মধ্যেই খাতা খুলে যাবে। পাশাপাশি প্রত্যেক অ্যাকাউন্টধারীকে একটি কিউআর কার্ড দেওয়া হবে। একটু আগেই আমাকে একটি কিউআর কার্ড দেওয়া হয়েছে। আমিও এই ব্যাঙ্কে আজ খাতা খুললাম।

 

আপনারা শুনলে অবাক হবেন যে, আমার জীবনে কখনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার প্রয়োজন আসেনি। কিন্তু যখন স্কুলে পড়তাম তখন দেনা ব্যাঙ্কের একটি প্রকল্প অনুসারে প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীকে একটি করে পয়সা জমানোর ঘট দিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল। তখন আমাকেও দেওয়া হয়েছিল কিন্তু আমার ঘট সবসময় খালি থাকতো। তারপর আমি যখন গ্রাম ছেড়ে চলে গেলাম, আমি জানতাম না যে, ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টটি খোলা ছিল আর ব্যাঙ্ক কর্মচারীদের প্রতি বছর ক্যারি ফরওয়ার্ড করতে হ’ত। এমনভাবে প্রায় ৩২ বছর পর ঐ ব্যাঙ্কের এক কর্মচারী আমার খোঁজ পেয়ে বলেন যে, একটি সই করে অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে যান। অবশ্য তারপর আমি যখন গুজরাটের বিধায়ক হলাম তখন মাসিক বেতন পাওয়ার জন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে হ’ল। কিন্তু আজ ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্টস্‌ ব্যাঙ্ক আমার একটি অ্যাকাউন্ট খুলে দিল।

আমাদের গ্রামেগঞ্জে ডাক হরকরারা শুধু চিঠিপত্র পৌঁছে দিয়েই ছাড় পান না। যেসব পরিবারে লেখাপড়া জানা কোনও সদস্য নেই, তাঁদেরকে চিঠি খুলে পড়েও দিয়ে আসতে হ’ত। শুধু তাই নয়, অনেক বয়স্ক মায়ের অনুরোধে ডাক হরকরাকে চিঠির জবাবও লিখে দিতে হ’ত। ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্টস্‌ ব্যাঙ্ক সেই আত্মীয়তার সম্পর্কই বজায় রাখবে। একটি কিউআর কার্ডে আপনার আঙুলের ছাপ আর ডাক হরকরার প্রতিশ্রুতি ব্যাঙ্কিং-কে সহজ ও আশঙ্কামুক্ত করে তুলবে।

 

বন্ধুগণ, দেশের গ্রামাঞ্চলে সবচেয়ে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক থাকার ফলে ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্টস্‌ ব্যাঙ্ক কৃষকদের জন্য সবচেয়ে সুবিধাজনক পরিষেবা প্রদান করবে। প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনার মতো অনেক প্রকল্প আরও কার্যকরি হয়ে উঠবে। বিমার দাবি নিষ্পত্তি থেকে শুরু করে কৃষকদের এই প্রকল্পগুলির সঙ্গে ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্টস্‌ ব্যাঙ্ককে যুক্ত করার মাধ্যমে সকলেই লাভবান হবে। ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্টস্‌ ব্যাঙ্ক জনগণের দাবি নিষ্পত্তির টাকা ঘরে ঘরে পৌঁছে দেবে। তাছাড়া এই ব্যাঙ্ক সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনার মাধ্যমে মেয়েদের নামে টাকা জমানোর প্রবণতাকে গতি প্রদান করবে।

 

ভাই ও বোনেরা, আমাদের সরকার দেশে ব্যাঙ্ককে গরিবের দরজায় নিয়ে এসেছে। কিন্তু ৪-৫ বছর আগেকার কথা ভাবুন, এমন পরিস্থিতি ছিল, যখন ব্যাঙ্কের অধিকাংশ টাকা হাতে গোনা কিছু মানুষের জন্য সংরক্ষিত থাকতো, যাঁরা একটি মাত্র পরিবারের ঘনিষ্ঠ। যে কুড়ি লক্ষেরও বেশি মানুষ আজ এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত আছেন, আর তার বাইরেও যারা শুনছেন, তাঁরা এক্তহা শুনে অবাক হবেন, ১৯৪৭ থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে ৬০ বছরে আমাদের দেশের সমস্ত ব্যাঙ্ক মিলে ১৮ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। কিন্তু ২০০৮এর পর মাত্র ছয় বছরে এই ব্যাঙ্কগুলি মোট ৫২ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। আপনারা ভাবুন, ২০০৮ এর পর দেশে কী এমন পরিবর্তন এসেছিল যে ৬০ বছরে মোট যত টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে তার প্রায় তিনগুণ টাকা মাত্র ৬ বছরে ঋণ দেওয়া হল? ‘নিয়ে যান, নিয়ে যান, পরে মোদী প্রধানমন্ত্রী হলে কাঁদবে, নিয়ে যান! এতে আপনাদেরও ভাল, আমাদের ভাল!’ আর এই ঋণ কেমনভাবে পাওয়া যেত? আমাদের আধুনিক প্রযুক্তিতে ফোন ব্যাঙ্কিং বলতে যা বোঝায় সেটি তো সম্প্রতি চালু হয়েছে। কিন্তু তখনও এক ধরণের ফোন ব্যাঙ্কিং চলতো। সেটি হ’ল – যে ধনী ব্যবসায়ীর বড় অঙ্কের ঋণ প্রয়োজন, তিনি কোনও ক্ষমতাবান ব্যক্তিকে দিয়ে কোনও ব্যাঙ্কের শীর্ষকর্তাকে ফোন করিয়ে দিতেন।

 

সেই শীর্ষ কর্তা সমস্ত নিয়ম-কানুন পাশে সরিয়ে রেখে ক্ষমতাশালী ব্যক্তির সুপারিশ মতো ধনী ব্যবসায়ীকে কোটি কোটি টাকা ঋণ দিয়ে দিতেন। কংগ্রেস দল এবং সেই ক্ষমতাশালী ব্যক্তিদের চালু করা ঐ ফোন ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা দেশের অনেক ক্ষতি করেছে। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে যে, ব্যাঙ্কগুলি এই ধরণের অনৈতিক কাজ করতে অস্বীকার কেন করে? বন্ধুগণ, আপনারা জানেন যে, সেই ক্ষমতাশালী ব্যক্তিদের আশীর্বাদ ছাড়া সেই সময়ে কোনও ব্যাঙ্কের উঁচু পদে পৌঁছনো সম্ভব ছিল না। সেই কৃতজ্ঞতার পাশে আবদ্ধ ব্যাঙ্কের শীর্ষ কর্তারা নামী মানুষদের সুপারিশকে কি করে অস্বীকার করবেন! যদিও তাঁরা জানতেন যে, এই ঋণের টাকা ফেরৎ পেতে অনেক সমস্যা হবে। তবুও বিশেষ কয়েকজনকে ঋণ প্রদানে তাঁরা বাধ্য হতেন। শুধু তাই নয়, যাঁরা নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে চুক্তি অনুসারে ঋণ পরিশোধ করতে পারতেন না, তাঁদের ঋণ পরিশোধের সুবিধা করে দেওয়ার জন্য আরও বেশি মাত্রায় ঋণ প্রদান করা হ’ত। এই বিচিত্র ঋণ চক্রের বৈধ নাম দেওয়া হ’ল ‘লোন-রিস্ট্রাকচারিং’। যাঁরা এই চক্রে সামিল হতেন, তাঁরাও জানতেন এক না একদিন সব প্রকাশ্যে এসে যাবে, তা যাতে না আসে, সেজন্য আরেকটি ষড়যন্ত্র রচিত হয়। যার ফলে ব্যাঙ্কগুলির প্রদত্ত ঋণের কত টাকা পরিশোধিত হচ্ছে না, তার সঠিক পরিসংখ্যান লুকিয়ে রাখা হ’ল। দেশকে অন্ধকারে রেখে মিথ্যে বলা হ’ল যে মাত্র ২ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ পরিশোধ হয়নি। যে সময়ে দেশে বড় বড় কেলেঙ্কারির খবরে সংবাদ মাধ্যমগুলি ছয়লাপ থাকতো, সেই সময়ে পূর্ববর্তী সরকার কৌশলে সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারিটি সফলভাবে লুকিয়ে রাখতে পেরেছিল। এক্ষেত্রে ক্ষমতাশালীদের সাহায়তায় হাত বাড়িয়েছিল বেশ কিছু ব্যাঙ্কের শীর্ষকর্তা।

 

২০১৪ সালে যখন আমরা সরকারের দায়িত্ব নিলাম, তখন সমস্ত সত্য উদঘাটন হ’ল। আমরা ব্যাঙ্কগুলিকে বললাম, বড় ঋণের ক্ষেত্রে সমস্ত পরিসংখ্যান সরকারকে দিতে হবে। তখনই জানতে পারলাম যে, ব্যাঙ্কগুলিতে অপরিশোধিত ঋণের পরিমাণ ২-২.৫ লক্ষ কোটি টাকা নয়। আসলে এই অপরিশোধিত ঋণের পরিমাণ হ’ল ৯ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি। আজ দেশবাসী শুনে মাথায় হাত দিয়েছেন যে, তাঁদের সঙ্গে কতটা প্রতারণা করা হয়েছে। প্রতিদিন ব্যাঙ্কগুলিতে সুদের হার বৃদ্ধি পাওয়ার পেছনে এটাই সবচেয়ে বড় কারণ। আগামীদিনে আরও বাড়বে। কারণ, ব্যাঙ্কগুলিকে তো নিজেদের আয় ও ব্যয়ের হিসাবে ভারসাম্য আনতেই হবে।

 

বন্ধুগণ, ২০১৪ সালে সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পরই আমরা বুঝতে পারলাম যে, কংগ্রেস দলের এই নামী মানুষেরা দেশের অর্থনীতিতে এত বড় ল্যান্ড মাইন বিছিয়ে রেখেছে। সেই সময়েই যদি এই সত্যিটা আমরা দেশ ও বিশ্বের সামনে তুলে ধরতাম, তা হলে এত বড় বিস্ফোরণ হ’ত যে, দেশের অর্থ ব্যবস্থাকে সামলানো মুশকিল হ’ত। এতে দেশের সর্বনাশ হ’ত। সেজন্য অনেক ধৈর্য্য ধরে পা টিপে টিপে এগিয়ে, দিন-রাত কাজ করে, আমরা দেশকে এই সঙ্কট থেকে বের করে আনার চেষ্টা করেছি।

 

ভাই ও বোনেরা, অবশেষে আমরা এই অপরিশোধিত ঋণের এই সত্য, পূর্ববর্তী সরকারের সর্ববৃহৎ কেলেঙ্কারি দেশের সামনে তুলে ধরেছি। আমরা শুধু রোগ নির্ণয় করেই থেমে যাইনি। তার কারণও খুঁজে বের করেছি এবং নিরাময়ের জন্য বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপও নিয়েছি। বিগত সাড়ে চার বছরে ৫০ কোটিরও বেশি বড় ঋণের পর্যালোচনা করা হয়েছে। ঋণের শর্তগুলি যেন কঠোরভাবে পালন করা হয়, তা সুনিশ্চিত করতে আমরা আইনে পরিবর্তন এনেছি। কয়েকটি ব্যাঙ্ককে একত্রিত করার মাধ্যমে ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে পেশাদারিত্ব বৃদ্ধি করেছি। সরকারি ব্যাঙ্কগুলির কর্মসংস্কৃতি সংস্কারের জন্য প্রতিনিয়ত প্রচেষ্টা জারি রয়েছে। ‘ফিউজিটিভ ইকনোমিক অফেন্ডার্স বিল’ প্রণয়ন করে ঋণ পরিশোধ না করে পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার কাজ শুরু করেছি। এই পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিরা যাতে নিজেদের সম্পত্তি আর ভোগ না করতে পারে, তা সুনিশ্চিত করেছি। বড় ঋণ গ্রহণকারীদের পাসপোর্টের সমস্ত তথ্যও এখন সরকারের কাছে জমা রাখতে হবে, যাতে তাঁরা সহজেই দেশ ছেড়ে পালাতে না পারেন। ব্যাঙ্করাপ্টসি কোড এবং এনসিএলটি-র মাধ্যমে এনপিএ ঋণ পরিশোধের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। ২০১৪ সালের আগে ঋণ গ্রহণকারী এরকম ১২ জন চুক্তি লঙ্ঘনকারীর দেয় ঋণের অঙ্ক ১ লক্ষ ৭৫ কোটি টাকা তাঁদের বিরুদ্ধে দ্রুতগতিতে আইনি প্রক্রিয়ার কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই তার ফল আমরা দেখতে পাচ্ছি। এই ১২ জন ছাড়াও আরও ২৭ জন বড় ঋণ গ্রহণকারী অপরিশোধিত ঋণের পরিমাণ প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকা। সেই টাকা পরিশোধের প্রক্রিয়াও সঠিকভাবে এগিয়ে চলেছে। যাঁরা ভেবেছিলেন যে, নামী মানুষদের সহযোগিতা ও আশীর্বাদে ঋণ নেওয়া লক্ষ-কোটি টাকা মেরে দেবেন – শুধু তাঁদের আয়ের টাকাই গরম থাকবে। এখন তাদের মাথায় হাত! দেশে একটি নতুন পরিবর্তন এসেছে। আগে অনাদায়ী ঋণ পরিশোধের জন্য ব্যাঙ্ককে ঋণ গ্রহণকারীদের পেছনে পড়তে হ’ত। কিন্তু আমরা এমন আইন প্রণয়ন করেছি যে, এখন ঋণ গ্রহণকারীদেরই ঋণ পরিশোধের জন্য ব্যাঙ্কের চক্কর কাটতে হবে।

 

আমরা ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাকে এত শক্তিশালী করে তুলছি আর এ ধরণের ঋণ খেলাপীদের পেছনে তদন্তকারী সংস্থাগুলির নজরদারি এত বাড়িয়েছি যে এরা প্রত্যেকেই ঋণ পরিশোধে বাধ্য হবে। আমরা দায়িত্ব গ্রহণের পর দেশের ব্যাঙ্কগুলির দিশা ও দশা পরিবর্তনে নিরন্তর কাজ করে চলেছি। আজকের এই ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্টস্‌ ব্যাঙ্ক-ও এই প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আগে নামী লোকেদের আশীর্বাদে ধনী মানুষেরা ঋণ পেতেন আর এখন দেশের গরিবদের ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ প্রদানে ক্ষমতা ডাক হরকরাদের হাতে চলে এসেছে।

বিগত চার বছরে মুদ্রা যোজনার মাধ্যমে দেশের গরিব ও মধ্যবিত্ত যুবসম্প্রদায়কে ১৩ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি স্বনির্ভর করে তোলার জন্য ঋণ প্রদান করা হয়েছে। ৩২ কোটিরও বেশি গরিবদের জন ধন অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। ২১ কোটিরও বেশি গরিবদের মাত্র মাসে মাত্র ১ টাকা এবং দিনে মাত্র ৯০ পয়সা কিস্তি জমা দিয়ে বিমা এবং পেনশনের সুরক্ষা প্রদানের কাজ আমাদের সরকার করেছে।

 

ভাই ও বোনেরা, নামী ব্যক্তিরা দেশের অর্থনীতিতে যে ল্যান্ডমাইন পুঁতে রেখে গিয়েছিলেন, সেটাকে আমাদের সরকার নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছে। দেশ আজ একটি নতুন আত্মবিশ্বাস নিয়ে জেগে উঠেছে। একদিনে এবারের এশিয়াম গেমস্‌-এ ভারতের খেলোয়াড়রা তাঁদের সর্বকালের সেরা প্রদর্শন দেখিয়েছে। অন্যদিকে, গতকালই দেশের অর্থনীতির পরিসংখ্যানের মাধ্যমে একটি নতুন মেডেল পেয়েছি, তা হল দেশের জাতীয় আয় বৃদ্ধি পেয়ে ৮.২ শতাংশ হয়েছে। এই পরিসংখ্যান দেশে ক্রমবর্ধমান আত্মবিশ্বাসের উজ্জ্বল চিত্র তুলে ধরেছে। এই পরিসংখ্যান আবার শুধু ভালো নয়, দেশের বিশেষজ্ঞরা যতটা অনুমান করেছিলেন, তারচেয়ে অনেক বেশি। যখন দেশ সঠিক লক্ষ্যে এগিয়ে চলে, তখন এমনই ইতিবাচক পরিণাম আসতে বাধ্য। বন্ধুগণ, এটা প্রমাণিত যে, ১২৫ কোটি মানুষের পরিশ্রম ও দায়বদ্ধতার ফলেই দেশ আজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে।

 

আজ ভারত শুধুই দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলা অর্থ ব্যবস্থা নয়, দ্রুতগতিতে দারিদ্র্য দূরীকরণকারী দেশ হয়ে উঠে এসেছে। জাতীয় আয়ের এই পরিসংখ্যানই সাক্ষী যে নতুন ভারত নিজের সামর্থ্য ও সমর্পণের ভিত্তিতে এগিয়ে চলেছে। আমি দেশবাসীকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে, তথাকথিত নামী মানুষদের সুপারিশে ব্যাঙ্কগুলি সাধারণ মানুষের যত কোটি কোটি টাকা ধনী মানুষদের হাতে তুলে দিয়েছিল, তার প্রতিটি পয়সা আমরা ফিরিয়ে আনব। আর সেই টাকা দিয়ে দেশের দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর মানুষের ক্ষমতায়নে কাজ করবে। ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্টস্‌ ব্যাঙ্ক এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্টস্‌ ব্যাঙ্ক ডাকঘরের মাধ্যমে ব্যাঙ্কিং, বিমা, সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্পগুলি প্রত্যক্ষ নগদ হস্তান্তর, পাসপোর্ট পরিষেবা, অনলাইন শপিং-এর মতো অনেক পরিষেবা গ্রামে গ্রামে বাড়িতে বাড়িতে কার্যকর করবে। অর্থাৎ ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ – এর পথে আমাদের ডাক হরকরা, ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্টস্‌ ব্যাঙ্ক এখন দেশকে আরও বেশি করে সাধারণ মানুষের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, এই বিরাট মিশনকে গ্রামে গ্রামে প্রত্যেক বাড়িতে কৃষক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছে পৌঁছে দিতে দেশের ৩ লক্ষ ডাকসেবক যথাযথ প্রশিক্ষণ নিয়ে এখন প্রস্তুত। ডিজিটাল লেনদেনে সহযোগিতার পাশাপাশি এই ডাকসেবকরা সাধারণ মানুষকে এক্ষেত্রে প্রশিক্ষণও দেবে, যাতে ভবিষ্যতে মানুষ নিজেই নিজের ফোনের মাধ্যমে ব্যাঙ্কিং ও ডিজিটাল লেনদেন করতে পারেন। এভাবে আমাদের ডাক বাবুরা শুধু ব্যাঙ্কারের ভূমিকা পালন করবেন না, তাঁরা দেশের ডিজিটাল শিক্ষকও হয়ে উঠবেন। তাঁদের এই ভূমিকার গুরুত্ব অনুধাবন করে সরকার বিগত মাসগুলিতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত জুলাই মাস থেকেই গ্রামীণ ডাকসেবকদের বেতন ও ভাতাবৃদ্ধির পুরনো দাবি পূরণ করা হয়েছে। আগে তাঁরা যে সময় ভিত্তিক ভাতা পেতেন তার ডজনখানেক পর্যায় ছিল। আমরা তা হ্রাস করে তিনটি পর্যায় করে দিয়েছি। তাছাড়া, তাঁরা যে ভাতা ২-৪ হাজার টাকা পেতেন তা বৃদ্ধি করে ১০-১৪ হাজার টাকা করা হয়েছে। আর তাঁরা যে কঠিন পরিস্থিতিতে কাজ করেন, সেদিকে লক্ষ্য রেখে একটি নতুন ভাতাও চালু করা হয়েছে। মহিলা গ্রাম ডাকসেবকদের বেতন অতিরিক্ত ১৮০ দিনের মাতৃত্ব অবকাশের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সরকারের এই প্রচেষ্টার ফলে গ্রামীণ ডাকসেবকদের বেতন ৫০ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি হয়েছে। আমাকে বলা হয়েছে যে, ডাকসেবকদের শুন্য পদ পূরণের জন্য অনলাইন নিয়োগ প্রক্রয়া চালু হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত আমাদের ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্টস্‌ ব্যাঙ্ক-এর সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিনিধিদের আরও শক্তিশালী করে তুলতে সহায়ক হয়ে উঠবে।

 

বন্ধুগণ, আজ দেশ ৩ হাজারেরও বেশি স্থানে এই পরিষেবা চালু করতে চলেছে। আর আমাদের মনোজ সিনহা যেমন বলছিলেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই এই পরিষেবা দেশের দেড় লক্ষেরও বেশি ডাকঘরের সঙ্গে যুক্ত হবে। নতুন ভারতের শক্তিশালী টেলিকম পরিকাঠামোর মাধ্যমে গড়ে ওঠা এই ব্যবস্থা দেশের জনগণকে যে অভিনব ব্যাঙ্কিং পরিষেবা প্রদান করবে, তার জন্য ডাক বিভাগের সঙ্গে যুক্ত আমাদের সমস্ত সঙ্গীদের সম্মান জানিয়ে আমি নিজের বক্তব্যকে বিরাম দিচ্ছি। ডাক বিভাগের প্রত্যেক কর্মচারী, এই ব্যাঙ্কের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তিকে আমি অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানাই আর মনোজ সিনহাকেও অনেক ধন্যবাদ জানাই। কারণ তাঁর আইআইটি-র শিক্ষা এক্ষেত্রে অনেক কার্যকরি ভূমিকা পালন করেছে। সেজন্য আপনার প্রযুক্তি-নির্ভর নেতৃত্ব প্রদানের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

Explore More
শ্রী রাম জন্মভূমি মন্দিরের ধ্বজারোহণ উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বাংলা অনুবাদ

জনপ্রিয় ভাষণ

শ্রী রাম জন্মভূমি মন্দিরের ধ্বজারোহণ উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বাংলা অনুবাদ
'Will walk shoulder to shoulder': PM Modi pushes 'Make in India, Partner with India' at Russia-India forum

Media Coverage

'Will walk shoulder to shoulder': PM Modi pushes 'Make in India, Partner with India' at Russia-India forum
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Today, India is becoming the key growth engine of the global economy: PM Modi
December 06, 2025
India is brimming with confidence: PM
In a world of slowdown, mistrust and fragmentation, India brings growth, trust and acts as a bridge-builder: PM
Today, India is becoming the key growth engine of the global economy: PM
India's Nari Shakti is doing wonders, Our daughters are excelling in every field today: PM
Our pace is constant, Our direction is consistent, Our intent is always Nation First: PM
Every sector today is shedding the old colonial mindset and aiming for new achievements with pride: PM

आप सभी को नमस्कार।

यहां हिंदुस्तान टाइम्स समिट में देश-विदेश से अनेक गणमान्य अतिथि उपस्थित हैं। मैं आयोजकों और जितने साथियों ने अपने विचार रखें, आप सभी का अभिनंदन करता हूं। अभी शोभना जी ने दो बातें बताई, जिसको मैंने नोटिस किया, एक तो उन्होंने कहा कि मोदी जी पिछली बार आए थे, तो ये सुझाव दिया था। इस देश में मीडिया हाउस को काम बताने की हिम्मत कोई नहीं कर सकता। लेकिन मैंने की थी, और मेरे लिए खुशी की बात है कि शोभना जी और उनकी टीम ने बड़े चाव से इस काम को किया। और देश को, जब मैं अभी प्रदर्शनी देखके आया, मैं सबसे आग्रह करूंगा कि इसको जरूर देखिए। इन फोटोग्राफर साथियों ने इस, पल को ऐसे पकड़ा है कि पल को अमर बना दिया है। दूसरी बात उन्होंने कही और वो भी जरा मैं शब्दों को जैसे मैं समझ रहा हूं, उन्होंने कहा कि आप आगे भी, एक तो ये कह सकती थी, कि आप आगे भी देश की सेवा करते रहिए, लेकिन हिंदुस्तान टाइम्स ये कहे, आप आगे भी ऐसे ही सेवा करते रहिए, मैं इसके लिए भी विशेष रूप से आभार व्यक्त करता हूं।

साथियों,

इस बार समिट की थीम है- Transforming Tomorrow. मैं समझता हूं जिस हिंदुस्तान अखबार का 101 साल का इतिहास है, जिस अखबार पर महात्मा गांधी जी, मदन मोहन मालवीय जी, घनश्यामदास बिड़ला जी, ऐसे अनगिनत महापुरूषों का आशीर्वाद रहा, वो अखबार जब Transforming Tomorrow की चर्चा करता है, तो देश को ये भरोसा मिलता है कि भारत में हो रहा परिवर्तन केवल संभावनाओं की बात नहीं है, बल्कि ये बदलते हुए जीवन, बदलती हुई सोच और बदलती हुई दिशा की सच्ची गाथा है।

साथियों,

आज हमारे संविधान के मुख्य शिल्पी, डॉक्टर बाबा साहेब आंबेडकर जी का महापरिनिर्वाण दिवस भी है। मैं सभी भारतीयों की तरफ से उन्हें श्रद्धांजलि अर्पित करता हूं।

Friends,

आज हम उस मुकाम पर खड़े हैं, जब 21वीं सदी का एक चौथाई हिस्सा बीत चुका है। इन 25 सालों में दुनिया ने कई उतार-चढ़ाव देखे हैं। फाइनेंशियल क्राइसिस देखी हैं, ग्लोबल पेंडेमिक देखी हैं, टेक्नोलॉजी से जुड़े डिसरप्शन्स देखे हैं, हमने बिखरती हुई दुनिया भी देखी है, Wars भी देख रहे हैं। ये सारी स्थितियां किसी न किसी रूप में दुनिया को चैलेंज कर रही हैं। आज दुनिया अनिश्चितताओं से भरी हुई है। लेकिन अनिश्चितताओं से भरे इस दौर में हमारा भारत एक अलग ही लीग में दिख रहा है, भारत आत्मविश्वास से भरा हुआ है। जब दुनिया में slowdown की बात होती है, तब भारत growth की कहानी लिखता है। जब दुनिया में trust का crisis दिखता है, तब भारत trust का pillar बन रहा है। जब दुनिया fragmentation की तरफ जा रही है, तब भारत bridge-builder बन रहा है।

साथियों,

अभी कुछ दिन पहले भारत में Quarter-2 के जीडीपी फिगर्स आए हैं। Eight परसेंट से ज्यादा की ग्रोथ रेट हमारी प्रगति की नई गति का प्रतिबिंब है।

साथियों,

ये एक सिर्फ नंबर नहीं है, ये strong macro-economic signal है। ये संदेश है कि भारत आज ग्लोबल इकोनॉमी का ग्रोथ ड्राइवर बन रहा है। और हमारे ये आंकड़े तब हैं, जब ग्लोबल ग्रोथ 3 प्रतिशत के आसपास है। G-7 की इकोनमीज औसतन डेढ़ परसेंट के आसपास हैं, 1.5 परसेंट। इन परिस्थितियों में भारत high growth और low inflation का मॉडल बना हुआ है। एक समय था, जब हमारे देश में खास करके इकोनॉमिस्ट high Inflation को लेकर चिंता जताते थे। आज वही Inflation Low होने की बात करते हैं।

साथियों,

भारत की ये उपलब्धियां सामान्य बात नहीं है। ये सिर्फ आंकड़ों की बात नहीं है, ये एक फंडामेंटल चेंज है, जो बीते दशक में भारत लेकर आया है। ये फंडामेंटल चेंज रज़ीलियन्स का है, ये चेंज समस्याओं के समाधान की प्रवृत्ति का है, ये चेंज आशंकाओं के बादलों को हटाकर, आकांक्षाओं के विस्तार का है, और इसी वजह से आज का भारत खुद भी ट्रांसफॉर्म हो रहा है, और आने वाले कल को भी ट्रांसफॉर्म कर रहा है।

साथियों,

आज जब हम यहां transforming tomorrow की चर्चा कर रहे हैं, हमें ये भी समझना होगा कि ट्रांसफॉर्मेशन का जो विश्वास पैदा हुआ है, उसका आधार वर्तमान में हो रहे कार्यों की, आज हो रहे कार्यों की एक मजबूत नींव है। आज के Reform और आज की Performance, हमारे कल के Transformation का रास्ता बना रहे हैं। मैं आपको एक उदाहरण दूंगा कि हम किस सोच के साथ काम कर रहे हैं।

साथियों,

आप भी जानते हैं कि भारत के सामर्थ्य का एक बड़ा हिस्सा एक लंबे समय तक untapped रहा है। जब देश के इस untapped potential को ज्यादा से ज्यादा अवसर मिलेंगे, जब वो पूरी ऊर्जा के साथ, बिना किसी रुकावट के देश के विकास में भागीदार बनेंगे, तो देश का कायाकल्प होना तय है। आप सोचिए, हमारा पूर्वी भारत, हमारा नॉर्थ ईस्ट, हमारे गांव, हमारे टीयर टू और टीय़र थ्री सिटीज, हमारे देश की नारीशक्ति, भारत की इनोवेटिव यूथ पावर, भारत की सामुद्रिक शक्ति, ब्लू इकोनॉमी, भारत का स्पेस सेक्टर, कितना कुछ है, जिसके फुल पोटेंशियल का इस्तेमाल पहले के दशकों में हो ही नहीं पाया। अब आज भारत इन Untapped पोटेंशियल को Tap करने के विजन के साथ आगे बढ़ रहा है। आज पूर्वी भारत में आधुनिक इंफ्रास्ट्रक्चर, कनेक्टिविटी और इंडस्ट्री पर अभूतपूर्व निवेश हो रहा है। आज हमारे गांव, हमारे छोटे शहर भी आधुनिक सुविधाओं से लैस हो रहे हैं। हमारे छोटे शहर, Startups और MSMEs के नए केंद्र बन रहे हैं। हमारे गाँवों में किसान FPO बनाकर सीधे market से जुड़ें, और कुछ तो FPO’s ग्लोबल मार्केट से जुड़ रहे हैं।

साथियों,

भारत की नारीशक्ति तो आज कमाल कर रही हैं। हमारी बेटियां आज हर फील्ड में छा रही हैं। ये ट्रांसफॉर्मेशन अब सिर्फ महिला सशक्तिकरण तक सीमित नहीं है, ये समाज की सोच और सामर्थ्य, दोनों को transform कर रहा है।

साथियों,

जब नए अवसर बनते हैं, जब रुकावटें हटती हैं, तो आसमान में उड़ने के लिए नए पंख भी लग जाते हैं। इसका एक उदाहरण भारत का स्पेस सेक्टर भी है। पहले स्पेस सेक्टर सरकारी नियंत्रण में ही था। लेकिन हमने स्पेस सेक्टर में रिफॉर्म किया, उसे प्राइवेट सेक्टर के लिए Open किया, और इसके नतीजे आज देश देख रहा है। अभी 10-11 दिन पहले मैंने हैदराबाद में Skyroot के Infinity Campus का उद्घाटन किया है। Skyroot भारत की प्राइवेट स्पेस कंपनी है। ये कंपनी हर महीने एक रॉकेट बनाने की क्षमता पर काम कर रही है। ये कंपनी, flight-ready विक्रम-वन बना रही है। सरकार ने प्लेटफॉर्म दिया, और भारत का नौजवान उस पर नया भविष्य बना रहा है, और यही तो असली ट्रांसफॉर्मेशन है।

साथियों,

भारत में आए एक और बदलाव की चर्चा मैं यहां करना ज़रूरी समझता हूं। एक समय था, जब भारत में रिफॉर्म्स, रिएक्शनरी होते थे। यानि बड़े निर्णयों के पीछे या तो कोई राजनीतिक स्वार्थ होता था या फिर किसी क्राइसिस को मैनेज करना होता था। लेकिन आज नेशनल गोल्स को देखते हुए रिफॉर्म्स होते हैं, टारगेट तय है। आप देखिए, देश के हर सेक्टर में कुछ ना कुछ बेहतर हो रहा है, हमारी गति Constant है, हमारी Direction Consistent है, और हमारा intent, Nation First का है। 2025 का तो ये पूरा साल ऐसे ही रिफॉर्म्स का साल रहा है। सबसे बड़ा रिफॉर्म नेक्स्ट जेनरेशन जीएसटी का था। और इन रिफॉर्म्स का असर क्या हुआ, वो सारे देश ने देखा है। इसी साल डायरेक्ट टैक्स सिस्टम में भी बहुत बड़ा रिफॉर्म हुआ है। 12 लाख रुपए तक की इनकम पर ज़ीरो टैक्स, ये एक ऐसा कदम रहा, जिसके बारे में एक दशक पहले तक सोचना भी असंभव था।

साथियों,

Reform के इसी सिलसिले को आगे बढ़ाते हुए, अभी तीन-चार दिन पहले ही Small Company की डेफिनीशन में बदलाव किया गया है। इससे हजारों कंपनियाँ अब आसान नियमों, तेज़ प्रक्रियाओं और बेहतर सुविधाओं के दायरे में आ गई हैं। हमने करीब 200 प्रोडक्ट कैटगरीज़ को mandatory क्वालिटी कंट्रोल ऑर्डर से बाहर भी कर दिया गया है।

साथियों,

आज के भारत की ये यात्रा, सिर्फ विकास की नहीं है। ये सोच में बदलाव की भी यात्रा है, ये मनोवैज्ञानिक पुनर्जागरण, साइकोलॉजिकल रेनसां की भी यात्रा है। आप भी जानते हैं, कोई भी देश बिना आत्मविश्वास के आगे नहीं बढ़ सकता। दुर्भाग्य से लंबी गुलामी ने भारत के इसी आत्मविश्वास को हिला दिया था। और इसकी वजह थी, गुलामी की मानसिकता। गुलामी की ये मानसिकता, विकसित भारत के लक्ष्य की प्राप्ति में एक बहुत बड़ी रुकावट है। और इसलिए, आज का भारत गुलामी की मानसिकता से मुक्ति पाने के लिए काम कर रहा है।

साथियों,

अंग्रेज़ों को अच्छी तरह से पता था कि भारत पर लंबे समय तक राज करना है, तो उन्हें भारतीयों से उनके आत्मविश्वास को छीनना होगा, भारतीयों में हीन भावना का संचार करना होगा। और उस दौर में अंग्रेजों ने यही किया भी। इसलिए, भारतीय पारिवारिक संरचना को दकियानूसी बताया गया, भारतीय पोशाक को Unprofessional करार दिया गया, भारतीय त्योहार-संस्कृति को Irrational कहा गया, योग-आयुर्वेद को Unscientific बता दिया गया, भारतीय अविष्कारों का उपहास उड़ाया गया और ये बातें कई-कई दशकों तक लगातार दोहराई गई, पीढ़ी दर पीढ़ी ये चलता गया, वही पढ़ा, वही पढ़ाया गया। और ऐसे ही भारतीयों का आत्मविश्वास चकनाचूर हो गया।

साथियों,

गुलामी की इस मानसिकता का कितना व्यापक असर हुआ है, मैं इसके कुछ उदाहरण आपको देना चाहता हूं। आज भारत, दुनिया की सबसे तेज़ी से ग्रो करने वाली मेजर इकॉनॉमी है, कोई भारत को ग्लोबल ग्रोथ इंजन बताता है, कोई, Global powerhouse कहता है, एक से बढ़कर एक बातें आज हो रही हैं।

लेकिन साथियों,

आज भारत की जो तेज़ ग्रोथ हो रही है, क्या कहीं पर आपने पढ़ा? क्या कहीं पर आपने सुना? इसको कोई, हिंदू रेट ऑफ ग्रोथ कहता है क्या? दुनिया की तेज इकॉनमी, तेज ग्रोथ, कोई कहता है क्या? हिंदू रेट ऑफ ग्रोथ कब कहा गया? जब भारत, दो-तीन परसेंट की ग्रोथ के लिए तरस गया था। आपको क्या लगता है, किसी देश की इकोनॉमिक ग्रोथ को उसमें रहने वाले लोगों की आस्था से जोड़ना, उनकी पहचान से जोड़ना, क्या ये अनायास ही हुआ होगा क्या? जी नहीं, ये गुलामी की मानसिकता का प्रतिबिंब था। एक पूरे समाज, एक पूरी परंपरा को, अन-प्रोडक्टिविटी का, गरीबी का पर्याय बना दिया गया। यानी ये सिद्ध करने का प्रयास किया गया कि, भारत की धीमी विकास दर का कारण, हमारी हिंदू सभ्यता और हिंदू संस्कृति है। और हद देखिए, आज जो तथाकथित बुद्धिजीवी हर चीज में, हर बात में सांप्रदायिकता खोजते रहते हैं, उनको हिंदू रेट ऑफ ग्रोथ में सांप्रदायिकता नज़र नहीं आई। ये टर्म, उनके दौर में किताबों का, रिसर्च पेपर्स का हिस्सा बना दिया गया।

साथियों,

गुलामी की मानसिकता ने भारत में मैन्युफेक्चरिंग इकोसिस्टम को कैसे तबाह कर दिया, और हम इसको कैसे रिवाइव कर रहे हैं, मैं इसके भी कुछ उदाहरण दूंगा। भारत गुलामी के कालखंड में भी अस्त्र-शस्त्र का एक बड़ा निर्माता था। हमारे यहां ऑर्डिनेंस फैक्ट्रीज़ का एक सशक्त नेटवर्क था। भारत से हथियार निर्यात होते थे। विश्व युद्धों में भी भारत में बने हथियारों का बोल-बाला था। लेकिन आज़ादी के बाद, हमारा डिफेंस मैन्युफेक्चरिंग इकोसिस्टम तबाह कर दिया गया। गुलामी की मानसिकता ऐसी हावी हुई कि सरकार में बैठे लोग भारत में बने हथियारों को कमजोर आंकने लगे, और इस मानसिकता ने भारत को दुनिया के सबसे बड़े डिफेंस importers के रूप में से एक बना दिया।

साथियों,

गुलामी की मानसिकता ने शिप बिल्डिंग इंडस्ट्री के साथ भी यही किया। भारत सदियों तक शिप बिल्डिंग का एक बड़ा सेंटर था। यहां तक कि 5-6 दशक पहले तक, यानी 50-60 साल पहले, भारत का फोर्टी परसेंट ट्रेड, भारतीय जहाजों पर होता था। लेकिन गुलामी की मानसिकता ने विदेशी जहाज़ों को प्राथमिकता देनी शुरु की। नतीजा सबके सामने है, जो देश कभी समुद्री ताकत था, वो अपने Ninety five परसेंट व्यापार के लिए विदेशी जहाज़ों पर निर्भर हो गया है। और इस वजह से आज भारत हर साल करीब 75 बिलियन डॉलर, यानी लगभग 6 लाख करोड़ रुपए विदेशी शिपिंग कंपनियों को दे रहा है।

साथियों,

शिप बिल्डिंग हो, डिफेंस मैन्यूफैक्चरिंग हो, आज हर सेक्टर में गुलामी की मानसिकता को पीछे छोड़कर नए गौरव को हासिल करने का प्रयास किया जा रहा है।

साथियों,

गुलामी की मानसिकता ने एक बहुत बड़ा नुकसान, भारत में गवर्नेंस की अप्रोच को भी किया है। लंबे समय तक सरकारी सिस्टम का अपने नागरिकों पर अविश्वास रहा। आपको याद होगा, पहले अपने ही डॉक्यूमेंट्स को किसी सरकारी अधिकारी से अटेस्ट कराना पड़ता था। जब तक वो ठप्पा नहीं मारता है, सब झूठ माना जाता था। आपका परिश्रम किया हुआ सर्टिफिकेट। हमने ये अविश्वास का भाव तोड़ा और सेल्फ एटेस्टेशन को ही पर्याप्त माना। मेरे देश का नागरिक कहता है कि भई ये मैं कह रहा हूं, मैं उस पर भरोसा करता हूं।

साथियों,

हमारे देश में ऐसे-ऐसे प्रावधान चल रहे थे, जहां ज़रा-जरा सी गलतियों को भी गंभीर अपराध माना जाता था। हम जन-विश्वास कानून लेकर आए, और ऐसे सैकड़ों प्रावधानों को डी-क्रिमिनलाइज किया है।

साथियों,

पहले बैंक से हजार रुपए का भी लोन लेना होता था, तो बैंक गारंटी मांगता था, क्योंकि अविश्वास बहुत अधिक था। हमने मुद्रा योजना से अविश्वास के इस कुचक्र को तोड़ा। इसके तहत अभी तक 37 lakh crore, 37 लाख करोड़ रुपए की गारंटी फ्री लोन हम दे चुके हैं देशवासियों को। इस पैसे से, उन परिवारों के नौजवानों को भी आंत्रप्रन्योर बनने का विश्वास मिला है। आज रेहड़ी-पटरी वालों को भी, ठेले वाले को भी बिना गारंटी बैंक से पैसा दिया जा रहा है।

साथियों,

हमारे देश में हमेशा से ये माना गया कि सरकार को अगर कुछ दे दिया, तो फिर वहां तो वन वे ट्रैफिक है, एक बार दिया तो दिया, फिर वापस नहीं आता है, गया, गया, यही सबका अनुभव है। लेकिन जब सरकार और जनता के बीच विश्वास मजबूत होता है, तो काम कैसे होता है? अगर कल अच्छी करनी है ना, तो मन आज अच्छा करना पड़ता है। अगर मन अच्छा है तो कल भी अच्छा होता है। और इसलिए हम एक और अभियान लेकर आए, आपको सुनकर के ताज्जुब होगा और अभी अखबारों में उसकी, अखबारों वालों की नजर नहीं गई है उस पर, मुझे पता नहीं जाएगी की नहीं जाएगी, आज के बाद हो सकता है चली जाए।

आपको ये जानकर हैरानी होगी कि आज देश के बैंकों में, हमारे ही देश के नागरिकों का 78 thousand crore रुपया, 78 हजार करोड़ रुपए Unclaimed पड़ा है बैंको में, पता नहीं कौन है, किसका है, कहां है। इस पैसे को कोई पूछने वाला नहीं है। इसी तरह इन्श्योरेंश कंपनियों के पास करीब 14 हजार करोड़ रुपए पड़े हैं। म्यूचुअल फंड कंपनियों के पास करीब 3 हजार करोड़ रुपए पड़े हैं। 9 हजार करोड़ रुपए डिविडेंड का पड़ा है। और ये सब Unclaimed पड़ा हुआ है, कोई मालिक नहीं उसका। ये पैसा, गरीब और मध्यम वर्गीय परिवारों का है, और इसलिए, जिसके हैं वो तो भूल चुका है। हमारी सरकार अब उनको ढूंढ रही है देशभर में, अरे भई बताओ, तुम्हारा तो पैसा नहीं था, तुम्हारे मां बाप का तो नहीं था, कोई छोड़कर तो नहीं चला गया, हम जा रहे हैं। हमारी सरकार उसके हकदार तक पहुंचने में जुटी है। और इसके लिए सरकार ने स्पेशल कैंप लगाना शुरू किया है, लोगों को समझा रहे हैं, कि भई देखिए कोई है तो अता पता। आपके पैसे कहीं हैं क्या, गए हैं क्या? अब तक करीब 500 districts में हम ऐसे कैंप लगाकर हजारों करोड़ रुपए असली हकदारों को दे चुके हैं जी। पैसे पड़े थे, कोई पूछने वाला नहीं था, लेकिन ये मोदी है, ढूंढ रहा है, अरे यार तेरा है ले जा।

साथियों,

ये सिर्फ asset की वापसी का मामला नहीं है, ये विश्वास का मामला है। ये जनता के विश्वास को निरंतर हासिल करने की प्रतिबद्धता है और जनता का विश्वास, यही हमारी सबसे बड़ी पूंजी है। अगर गुलामी की मानसिकता होती तो सरकारी मानसी साहबी होता और ऐसे अभियान कभी नहीं चलते हैं।

साथियों,

हमें अपने देश को पूरी तरह से, हर क्षेत्र में गुलामी की मानसिकता से पूर्ण रूप से मुक्त करना है। अभी कुछ दिन पहले मैंने देश से एक अपील की है। मैं आने वाले 10 साल का एक टाइम-फ्रेम लेकर, देशवासियों को मेरे साथ, मेरी बातों को ये कुछ करने के लिए प्यार से आग्रह कर रहा हूं, हाथ जोड़कर विनती कर रहा हूं। 140 करोड़ देशवसियों की मदद के बिना ये मैं कर नहीं पाऊंगा, और इसलिए मैं देशवासियों से बार-बार हाथ जोड़कर कह रहा हूं, और 10 साल के इस टाइम फ्रैम में मैं क्या मांग रहा हूं? मैकाले की जिस नीति ने भारत में मानसिक गुलामी के बीज बोए थे, उसको 2035 में 200 साल पूरे हो रहे हैं, Two hundred year हो रहे हैं। यानी 10 साल बाकी हैं। और इसलिए, इन्हीं दस वर्षों में हम सभी को मिलकर के, अपने देश को गुलामी की मानसिकता से मुक्त करके रहना चाहिए।

साथियों,

मैं अक्सर कहता हूं, हम लीक पकड़कर चलने वाले लोग नहीं हैं। बेहतर कल के लिए, हमें अपनी लकीर बड़ी करनी ही होगी। हमें देश की भविष्य की आवश्यकताओं को समझते हुए, वर्तमान में उसके हल तलाशने होंगे। आजकल आप देखते हैं कि मैं मेक इन इंडिया और आत्मनिर्भर भारत अभियान पर लगातार चर्चा करता हूं। शोभना जी ने भी अपने भाषण में उसका उल्लेख किया। अगर ऐसे अभियान 4-5 दशक पहले शुरू हो गए होते, तो आज भारत की तस्वीर कुछ और होती। लेकिन तब जो सरकारें थीं उनकी प्राथमिकताएं कुछ और थीं। आपको वो सेमीकंडक्टर वाला किस्सा भी पता ही है, करीब 50-60 साल पहले, 5-6 दशक पहले एक कंपनी, भारत में सेमीकंडक्टर प्लांट लगाने के लिए आई थी, लेकिन यहां उसको तवज्जो नहीं दी गई, और देश सेमीकंडक्टर मैन्युफैक्चरिंग में इतना पिछड़ गया।

साथियों,

यही हाल एनर्जी सेक्टर की भी है। आज भारत हर साल करीब-करीब 125 लाख करोड़ रुपए के पेट्रोल-डीजल-गैस का इंपोर्ट करता है, 125 लाख करोड़ रुपया। हमारे देश में सूर्य भगवान की इतनी बड़ी कृपा है, लेकिन फिर भी 2014 तक भारत में सोलर एनर्जी जनरेशन कपैसिटी सिर्फ 3 गीगावॉट थी, 3 गीगावॉट थी। 2014 तक की मैं बात कर रहा हूं, जब तक की आपने मुझे यहां लाकर के बिठाया नहीं। 3 गीगावॉट, पिछले 10 वर्षों में अब ये बढ़कर 130 गीगावॉट के आसपास पहुंच चुकी है। और इसमें भी भारत ने twenty two गीगावॉट कैपेसिटी, सिर्फ और सिर्फ rooftop solar से ही जोड़ी है। 22 गीगावाट एनर्जी रूफटॉप सोलर से।

साथियों,

पीएम सूर्य घर मुफ्त बिजली योजना ने, एनर्जी सिक्योरिटी के इस अभियान में देश के लोगों को सीधी भागीदारी करने का मौका दे दिया है। मैं काशी का सांसद हूं, प्रधानमंत्री के नाते जो काम है, लेकिन सांसद के नाते भी कुछ काम करने होते हैं। मैं जरा काशी के सांसद के नाते आपको कुछ बताना चाहता हूं। और आपके हिंदी अखबार की तो ताकत है, तो उसको तो जरूर काम आएगा। काशी में 26 हजार से ज्यादा घरों में पीएम सूर्य घर मुफ्त बिजली योजना के सोलर प्लांट लगे हैं। इससे हर रोज, डेली तीन लाख यूनिट से अधिक बिजली पैदा हो रही है, और लोगों के करीब पांच करोड़ रुपए हर महीने बच रहे हैं। यानी साल भर के साठ करोड़ रुपये।

साथियों,

इतनी सोलर पावर बनने से, हर साल करीब नब्बे हज़ार, ninety thousand मीट्रिक टन कार्बन एमिशन कम हो रहा है। इतने कार्बन एमिशन को खपाने के लिए, हमें चालीस लाख से ज्यादा पेड़ लगाने पड़ते। और मैं फिर कहूंगा, ये जो मैंने आंकडे दिए हैं ना, ये सिर्फ काशी के हैं, बनारस के हैं, मैं देश की बात नहीं बता रहा हूं आपको। आप कल्पना कर सकते हैं कि, पीएम सूर्य घर मुफ्त बिजली योजना, ये देश को कितना बड़ा फायदा हो रहा है। आज की एक योजना, भविष्य को Transform करने की कितनी ताकत रखती है, ये उसका Example है।

वैसे साथियों,

अभी आपने मोबाइल मैन्यूफैक्चरिंग के भी आंकड़े देखे होंगे। 2014 से पहले तक हम अपनी ज़रूरत के 75 परसेंट मोबाइल फोन इंपोर्ट करते थे, 75 परसेंट। और अब, भारत का मोबाइल फोन इंपोर्ट लगभग ज़ीरो हो गया है। अब हम बहुत बड़े मोबाइल फोन एक्सपोर्टर बन रहे हैं। 2014 के बाद हमने एक reform किया, देश ने Perform किया और उसके Transformative नतीजे आज दुनिया देख रही है।

साथियों,

Transforming tomorrow की ये यात्रा, ऐसी ही अनेक योजनाओं, अनेक नीतियों, अनेक निर्णयों, जनआकांक्षाओं और जनभागीदारी की यात्रा है। ये निरंतरता की यात्रा है। ये सिर्फ एक समिट की चर्चा तक सीमित नहीं है, भारत के लिए तो ये राष्ट्रीय संकल्प है। इस संकल्प में सबका साथ जरूरी है, सबका प्रयास जरूरी है। सामूहिक प्रयास हमें परिवर्तन की इस ऊंचाई को छूने के लिए अवसर देंगे ही देंगे।

साथियों,

एक बार फिर, मैं शोभना जी का, हिन्दुस्तान टाइम्स का बहुत आभारी हूं, कि आपने मुझे अवसर दिया आपके बीच आने का और जो बातें कभी-कभी बताई उसको आपने किया और मैं तो मानता हूं शायद देश के फोटोग्राफरों के लिए एक नई ताकत बनेगा ये। इसी प्रकार से अनेक नए कार्यक्रम भी आप आगे के लिए सोच सकते हैं। मेरी मदद लगे तो जरूर मुझे बताना, आईडिया देने का मैं कोई रॉयल्टी नहीं लेता हूं। मुफ्त का कारोबार है और मारवाड़ी परिवार है, तो मौका छोड़ेगा ही नहीं। बहुत-बहुत धन्यवाद आप सबका, नमस्कार।