শেয়ার
 
Comments

উত্তরাখণ্ডের রাজ্যপাল শ্রীমতী দেবীরানি মৌর্যজি, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াতজি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহযোগী শ্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াতজি, শ্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্কজি, শ্রী রতনলাল কাটারিয়াজি, অন্যান্য আধিকারিকগণ এবং আমার উত্তরাখণ্ডের প্রিয় ভাই ও বোনেরা, চারধামের পবিত্রতাকে নিজের মধ্যে ধারণকারী দেবভূমি উত্তরাখণ্ডের মাটিকে আমি শ্রদ্ধা সহকারে প্রণাম জানাই।

 

আজ মা গঙ্গার নির্মলতা সুনিশ্চিত করতে গড়ে তোলা ছয়টি বড় প্রকল্পের উদ্বোধন করা হল। এতে হরিদ্বার, ঋষিকেশ, বদ্রীনাথ এবং ‘মুনী–কি–রেতী’তে পয়ঃপ্রণালী পরিশোধন প্রকল্প এবং মিউজিয়ামের মতো প্রকল্পগুলি সামিল রয়েছে। এই সকল প্রকল্পের জন্য উত্তরাখণ্ডের সমস্ত বন্ধুদের আমি অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।

 

বন্ধুগণ,

 

এখন থেকে কিছুক্ষণ আগে জল জীবন মিশনের খুব সুন্দর একটি লোগো এবং মিশন নির্দেশিকার উদ্বোধন করা হয়েছে। জল জীবন মিশন – ভারতের গ্রামে গ্রামে প্রত্যেক বাড়িতে নলের মাধ্যমে শুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার একটি অনেক বড় অভিযান। এই অভিযানের লোগো, নিরন্তর এই প্রেরণা জোগাবে যে জলের এক একটি বিন্দুকে রক্ষা করা কতটা প্রয়োজনীয়। তেমনই এই নির্দেশিকা, গ্রামের মানুষদের, গ্রাম পঞ্চায়েতের জন্য ততটাই প্রয়োজনীয় যতটা সরকারি ব্যবস্থাপকদের জন্য প্রয়োজনীয়, এই প্রকল্পের সাফল্য সুনিশ্চিত করার একটি অনেক বড় মাধ্যম হয়ে উঠবে।

 

বন্ধুগণ,

 

আজ যে গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন হল, সেখানে বিস্তারিতভাবে বলা হয়েছে গঙ্গা কিভাবে আমাদের সাংস্ক্রৃতিক বৈভব, আস্থা এবং ঐতিহ্য – এই তিনটির খুব বড় প্রতীক। উত্তরাখণ্ডে উৎস থেকে শুরু করে পশ্চিমবঙ্গের গঙ্গাসাগর পর্যন্ত গঙ্গা দেশের প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যার জীবনকে সমৃদ্ধ করে। সেজন্য গঙ্গার নির্মলতা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। গঙ্গার অবিরাম প্রবাহও অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। বিগত দশকগুলিতে গঙ্গা জলের স্বচ্ছতা নিয়ে বড় বড় অভিযান শুরু হয়েছে। কিন্তু সেই অভিযানগুলিতে কোনও গণ–অংশীদারিত্ব ছিল না, কোনও দূরদর্শীতাও ছিল না। ফলস্বরূপ, গঙ্গার জল কোনদিন পরিষ্কারই হতে পারেনি।

 

বন্ধুগণ,

 

গঙ্গা জলের স্বচ্ছতা নিয়ে যদি আমরা সেই পুরনো পদ্ধতিই অনুসরণ করে যেতাম, তাহলে আজও পরিস্থিতি তেমনই খারাপ থাকত। কিন্তু আমরা নতুন ভাবনা, নতুন দৃষ্টিকোণ নিয়ে এগিয়ে এসেছি। আমরা নমামী গঙ্গে মিশনকে শুধুই গঙ্গা নদীকে পরিচ্ছন্ন করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখিনি, আমরা একে দেশের সর্ববৃহৎ এবং বিস্তৃত নদী সংরক্ষণ কর্মসূচিতে রূপান্তরিত করেছি। সরকার চারিদিক থেকে একসঙ্গে কাজ এগিয়ে নিয়ে গেছে। প্রথমত, গঙ্গা নদীতে নোংরা জল যাতে না পরে তা সুনিশ্চিত করতে অসংখ্য পয়ঃপ্রণালী পরিশোধন প্রকল্পের জাল বিছানো শুরু করেছি। দ্বিতীয়ত, পয়ঃপ্রণালী পরিশোধন প্রকল্পগুলি এভাবে তৈরি করেছি, যা আগামী ১০–১৫ বছরের প্রয়োজনসাধন করতে পারে। তৃতীয়ত, গঙ্গা নদীর তটবর্তী ১০০টি বড় শহর এবং ৫ হাজার গ্রামকে উন্মুক্ত স্থানে শৌচকর্ম মুক্ত করেছি। আর চতুর্থত, গঙ্গা নদীর উপ–নদী ও শাখা নদীগুলিকে দূষণমুক্ত করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছি।

বন্ধুগণ,

 

আজ আমরা সবাই এই চতুর্মুখী কাজের পরিণাম দেখতে পাচ্ছি। আজ নমামী গঙ্গে কর্মসূচির মাধ্যমে ৩০ হাজার কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগে অনেকগুলি প্রকল্পের কাজ একসঙ্গে চলছে কিংবা সম্পূর্ণ হয়ে গেছে। আজ যে প্রকল্পগুলি উদ্বোধন করা হল, সেগুলি সহ উত্তরাখণ্ডে এই অভিযানের মাধ্যমে চালু প্রায় সমস্ত বড় প্রকল্প সম্পূর্ণ হয়ে গেছে। হাজার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পগুলির মাধ্যমে মাত্র ছ'বছরে উত্তরাখণ্ডের পয়ঃপ্রণালী পরিশোধন ক্ষমতা প্রায় চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

বন্ধুগণ,

 

উত্তরাখণ্ডে যে পরিস্থিতি ছিল তা হল, গঙ্গোত্রী, বদ্রীনাথ, কেদারনাথ হয়ে হরিদ্বার পর্যন্ত ১৩০টিরও বেশি নর্দমা গঙ্গা নদীতে এসে মিশত। আজ এই নর্দমাগুলির অধিকাংশকেই থামিয়ে দেওয়া হয়েছে। এগুলির মধ্যে ঋষিকেশ সন্নিকটস্থ 'মুনী–কি–রেতী'র চন্দ্রেশ্বর নগরের নালাও রয়েছে। এর ফলে এখানে যাঁরা পবিত্র গঙ্গাকে দর্শন করতে আসেন, রিভার র‍্যাফটিং করতে আসেন, তাঁদের অনেক অসুবিধা হত। আজ থেকে এখানে দেশের প্রথম চারতলা পয়ঃপ্রণালী পরিশোধন প্রকল্প শুরু হয়েছে। হরিদ্বারেও তেমনই ২০টির বেশি নর্দমাকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বন্ধুগণ, এবার প্রয়াগরাজ কুম্ভ মেলায় সারা পৃথিবী থেকে আসা পূণ্যার্থীরা গঙ্গা নদীর নির্মলতা অনুভব করেছেন। এবার হরিদ্বার কুম্ভমেলার সময়েও গোটা বিশ্ব নির্মল গঙ্গা স্নানের অভিজ্ঞতা পেতে চলেছে। আর সেজন্য লাগাতার চেষ্টা প্রস্তুতিচলছে।

 

বন্ধুগণ,

 

নমামী গঙ্গে মিশনের মাধ্যমেই গঙ্গার কয়েকশ' ঘাটের সৌন্দর্যায়ন করা হচ্ছে। আর গঙ্গা নদীতে নৌকা ভ্রমণের জন্য আধুনিক রিভার ফ্রন্ট নির্মাণের কাজও করা হচ্ছে। হরিদ্বারে রিভার ফ্রন্ট ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গেছে। এখন গঙ্গা মিউজিয়াম গড়ে ওঠায় এখানকার আকর্ষণ আরও বৃদ্ধি পাবে। এই মিউজিয়াম হরিদ্বারে তীর্থ করতে আসা পর্যটকদের জন্য গঙ্গার ঐতিহ্য ভালোভাবে বোঝার একটি শক্তিশালী মাধ্যম হয়ে উঠবে।

 

বন্ধুগণ,

 

এখন নমামী গঙ্গে অভিযানকে একটি নতুন স্তরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। গঙ্গা নদীর পরিচ্ছন্নতা ছাড়াও এখন গঙ্গা তটবর্তী সম্পূর্ণ এলাকার অর্থনীতি এবং পরিবেশের উন্নয়নকেও অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। সরকার উত্তরাখণ্ড সহ সমস্ত রাজ্যের কৃষকদের জৈব চাষ, আয়ুর্বেদিক ভেষজ চাষের মাধ্যমে উপকৃত করার ব্যাপক প্রকল্প গড়ে তুলেছে। গঙ্গা নদীর দুই তীরেই অসংখ্য গাছের চারা লাগানোর পাশাপাশি, জৈব চাষের নতুন করিডর বিকশিত করা হচ্ছে। গঙ্গা জলকে পরিচ্ছন্ন করার এই অভিযান এখন সমতল এলাকায় 'মিশন ডলফিন'-এর মাধ্যমে আরও জোরদার হবে। এ বছর ১৫ আগস্টেই 'মিশন ডলফিন' ঘোষণা করা হয়েছে। এই মিশন গঙ্গা নদীতে ডলফিন প্রজনন ও সংরক্ষণের কাজকেও শক্তিশালী করবে।

বন্ধুগণ,

 

আজ দেশ সেই শ্লথ সময় থেকে বেরিয়ে এসেছে যখন জলের মতো টাকা খরচ হত কিন্তু ফল পাওয়া যেত না। আজ আর সরকারী টাকা, জনগণের টাকা জলের মতো বয়ে যেতে দেওয়া হয় না, জলের মধ্যে বয়ে যেতে দেওয়া হয় না। বরং, প্রতিটি পয়সা জল শুদ্ধিকরণে খরচ করা হয়। আমাদের এখানে এমন অবস্থা ছিল যে, জলের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি অনেক মন্ত্রক এবং বিভাগের অন্তর্গত থেকে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে ছিল। এই মন্ত্রকগুলির মধ্যে, এই বিভাগগুলির মধ্যেও কোনও সমন্বয় ছিল না আর একটি সমান লক্ষ্য নিয়ে কাজ করার স্পষ্ট দিক–নির্দেশও ছিল না। ফলস্বরূপ, দেশে সেচ থেকে শুরু করে পানীয় জলের সমস্যা – এই সবকিছু নিরন্তর গুণীতক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। আপনারা ভাবুন, স্বাধীনতার এত বছর পরেও দেশের ১৫ কোটিরও বেশি বাড়িতে পাইপের মাধ্যমে পানীয় জল পৌঁছত না। এখানে আমাদের উত্তরাখণ্ডেও হাজার হাজার বাড়িতে এই দূরবস্থা ছিল। গ্রামে গ্রামে, পাহাড়ে পাহাড়ে, যেখানে যাতায়াত দুর্গম ছিল, সেখানে পানীয় জল জোগাড় করতে সব থেকে বেশি অসুবিধা হত আমাদের মা–বোনেদের। এর পেছনে এত সময় খরচ হত যে অনেকেই স্কুলছুট হয়ে যেত। এই সমস্যাগুলি দূর করার জন্য দেশে জল সংক্রান্ত সমস্ত সমস্যার সমাধানে একসঙ্গে সম্পূর্ণ প্রাণশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য আমরা কেন্দ্রীয় জল শক্তি মন্ত্রক গঠন করেছি।

 

আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে অত্যন্ত কম সময়ে কেন্দ্রীয় জল শক্তি মন্ত্রক দ্রুতগতিতে এই কাজ বাস্তবায়িত করতে শুরু করেছে। জল সংক্রান্ত সমস্ত সমস্যার পাশাপাশি, এই মন্ত্রক এখন দেশের গ্রামে গ্রামে প্রত্যেক বাড়িতে নলের মাধ্যমে জল পৌঁছে দেওয়ার কাজ মিশন মোডে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আজ জল জীবন মিশনের মাধ্যমে প্রতিদিন প্রায় ১ লক্ষ পরিবারকে বিশুদ্ধ পানীয় জলের পরিষেবায় যুক্ত করা হচ্ছে। মাত্র এক বছরের মধ্যেই দেশের ২ কোটিরও বেশি পরিবারে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এখানে উত্তরাখণ্ডে তো ত্রিবেন্দ্রজি ও তাঁর দল এক কদম এগিয়ে মাত্র ১ টাকায় পানীয় জল সংযোগ দেওয়ার কাজ শুরু করেছেন। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে উত্তরাখণ্ড সরকার ২০২২ সালের মধ্যে রাজ্যের প্রতিটি বাড়িতে জল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে চলেছে। করোনার এই কঠিন সময়েও উত্তরাখণ্ডে বিগত ৪–৫ মাসে ৫০ হাজারেরও বেশি পরিবারে নলের মাধ্যমে পানীয় জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এই সাফল্য উত্তরাখণ্ড সরকারের দায়বদ্ধতার পরিচায়ক।

 

বন্ধুগণ,

 

জল জীবন মিশন যেমন গ্রাম ও গরীবের বাড়ি পর্যন্ত জল পৌঁছে দেওয়ার অভিযান, তেমনই গ্রাম স্বরাজকে, গ্রামের ক্ষমতায়নকে, তার জন্য একটি নতুন প্রাণশক্তি, নতুন শক্তি, নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়ার অভিযান। সরকারের কাজ করার পদ্ধতিতে কত বড় পরিবর্তন এসেছে এটা তার উজ্জ্বল উদাহরণ। আগে সরকারি প্রকল্পগুলি সম্পর্কে সমস্ত সিদ্ধান্ত দিল্লিতে বসেই নেওয়া হত। কিন্তু গ্রামে কোথায় জলের উৎস স্বরূপ পুকুর খনন করা হবে, কোথায় ট্যাঙ্ক তৈরি হবে, কোথা দিয়ে পাইপলাইন পাতা হবে – এই সমস্ত সিদ্ধান্ত অধিকাংশই রাজধানীতে বসেই ঠিক হত। কিন্তু জল জীবন মিশন এখন এই সম্পূর্ণ ব্যবস্থাকেই বদলে দিয়েছে। গ্রামে জল সংক্রান্ত কাজ কী কী হবে, কোথায় হবে, তার জন্য কেমন প্রস্তুতি নিতে হবে – এ সবকিছু ঠিক করার, সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার এখন শুধু গ্রামবাসীদেরই দেওয়া হয়েছে। জল প্রকল্পের পরিকল্পনা থেকে শুরু করে সংরক্ষণ এবং সঞ্চালন পর্যন্ত গোটা ব্যবস্থা গ্রাম পঞ্চায়েতই করবে, গ্রাম পঞ্চায়েতের জল সমিতিই করবে। এই জল সমিতিগুলির মধ্যেও ৫০ শতাংশ প্রতিনিধি গ্রামের মা–বোন ও মেয়েরা থাকবেন; এটাই সুনিশ্চিত করা হয়েছে!

 

বন্ধুগণ,

 

আজ যে দিক–নির্দেশিকা উদ্বোধন করা হল তা এই বোন, মেয়ে ও মায়েদের যাঁরা জল সমিতির সদস্য হবেন, আর যাঁরা পঞ্চায়েত সদস্য তাঁদের সকলেরই কাজে লাগবে। এক ধরনের পথও প্রদর্শন করবে। এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস, জলের কষ্ট কাকে বলে, জলের মূল্য কতটা, জলের প্রয়োজনীয়তা কিভাবে সুবিধা এবং সঙ্কটের সঙ্গে জড়িত – এই বিষয়গুলি আমাদের মা–বোনেরা যতটা বোঝেন, হয়তো আর কেউ তেমন বোঝেন না। আর এজন্যই যখন এর সম্পূর্ণ ব্যবস্থাপনা মা–বোনেদের হাতে দেওয়া হয়, তখন অত্যন্ত সংবেদনশীলতার সঙ্গে, অত্যন্ত দায়িত্বের সঙ্গে তাঁরা এ কাজ সম্পন্ন করে এবং পরিণামও খুব ভালো হয়।

 

এই দিক–নির্দেশিকা গ্রামের মানুষদের একটি নতুন পথ দেখাবে, তাঁদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাহায্য করবে। আমি মনে করি, জল জীবন মিশন গ্রামের মানুষদের একটি সুযোগ দিয়েছে। হ্যাঁ সুযোগ। নিজের গ্রামকে জলের সমস্যা থেকে মুক্ত করার সুযোগ। নিজের গ্রামে জলের অভাব দূর করার সুযোগ। আমাকে বলা হয়েছে যে আগামী ২ অক্টোবর গান্ধী জয়ন্তী উপলক্ষে জল জীবন মিশন আরেকটি অভিযান শুরু করতে চলেছে, ১০০ দিনের একটি বিশেষ অভিযান, যার মাধ্যমে দেশের প্রতিটি স্কুল এবং প্রত্যেক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রকে নলের মাধ্যমে জল সরবরাহ সুনিশ্চিত করা হবে। আমি এই অভিযানের সাফল্য কামনা করি। শুভকামনা জানাই।

 

বন্ধুগণ,

 

নমামী গঙ্গে অভিযান থেকে শুরু করে জল জীবন মিশন কিংবা স্বচ্ছ ভারত অভিযান – এরকম অনেক কর্মসূচি বিগত ছ'বছরে অনেক বড় বড় সংস্কারের অংশ। এগুলি এমন সব সংস্কার যা সাধারণ মানুষের জীবনকে, এই সামাজিক ব্যবস্থায় সার্থক পরিবর্তন আনতে সহায়ক হয়ে উঠবে। বিগত এক থেকে দেড় বছরে এক্ষেত্রে কাজের গতি অনেক বেশি বেড়েছে। বিগত সংসদ অধিবেশনে দেশের কৃষক, শ্রমিক ও স্বাস্থ্য–সংশ্লিষ্ট বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বড় সংস্কার আনা হয়েছে। এই সংস্কারগুলির মাধ্যমে দেশের শ্রমিকরা ক্ষমতায়িত হবেন। দেশের নবীন প্রজন্ম, মহিলা ও কৃষকরা ক্ষমতায়িত হবেন। আজ দেশবাসী দেখছেন কিভাবে কিছু লোক শুধু বিরোধিতার জন্যই বিরোধিতা করে চলেছে।

 

বন্ধুগণ,

 

কিছুদিন আগেই দেশ তার কৃষকদের অনেক বন্ধন থেকে মুক্ত করেছে। এখন দেশের কৃষকরা যেখানে ইচ্ছে, যাকে ইচ্ছে তাঁদের উৎপন্ন ফসল বিক্রি করতে পারেন। কিন্তু আজ যখন কেন্দ্রীয় সরকার কৃষকদের তাঁদের অধিকার দিচ্ছে, তখনও এই মানুষেরা বিরোধিতা করতে পথে নেমে এসেছেন। তাঁরা চান না যে কৃষকরা খোলা বাজারে নিজেদের উৎপন্ন ফসল বিক্রি করতে পারুন। তাঁরা চান যে আগের মতোই কৃষকদের ফসল বোঝাই গাড়ি বাজেয়াপ্ত হোক, তাঁদের কাছ থেকে কম দামে ফসল কিনে দালালরা লাভের কড়ি গুনুক। তাঁরা কৃষকদের স্বাধীনতার বিরোধিতা করছেন। কৃষকরা যে জিনিসগুলি, যে সরঞ্জামগুলির পুজো করে, সেগুলিতে আগুন লাগিয়ে তাঁরা কৃষকদের অপমানিত করছেন।

 

বন্ধুগণ,

 

বছরের পর বছর ধরে মানুষের দাবি ছিল ন্যূনতম সহায়ক মূল্য চালু করা। এই ন্যূনতম সহায়ক মূল্য চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েও সরকার তা চালু করেনি। আমাদের সরকারই স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ অনুসারে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ব্যবস্থা চালু করেছে। আজ এই বিরোধীরা ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিয়েও কৃষকদের ভ্রমিত করে চলেছে। গুজব রটাচ্ছে, আমি বলছি, দেশে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যও থাকবে, আবার কৃষকরা যেখানে খুশি, যাকে খুশি নিজেদের উৎপাদিত ফসল বিক্রিরও স্বাধীনতা পাবেন। কিন্তু এই স্বাধীনতা কিছু মানুষ মেনে নিতে পারছেন না। তাঁদের কালো টাকা রোজগারের একটি পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এটাই তাঁদের আসল সমস্যা।

 

বন্ধুগণ,

 

করোনার এই সঙ্কটকালে দেশবাসী দেখেছে কিভাবে আমাদের চালু করা ডিজিটাল ভারত অভিযান, জন ধন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং রুপে কার্ড জনগণের কত কাজে লেগেছে। কিন্তু আপনাদের হয়তো মনে আছে, যখন আমাদের সরকার এই কাজ শুরু করেছিল, তখন তাঁরা কত বিরোধিতা করেছিলেন। তাঁদের দৃষ্টিতে দেশের গরীব, দেশের গ্রামের মানুষ অশিক্ষিত এবং অবুঝ। তাঁরা কিভাবে ব্যাঙ্কে গিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলবেন, কিভাবে ডিজিটাল লেনদেন করবেন, এসব ভেবে তাঁদের ঘুম আসছিল না! সেজন্য তাঁরা বিরোধিতা করেছিলেন।

 

বন্ধুগণ,

 

দেশবাসী এটাও দেখেছে, যখন 'এক দেশ এক কর ব্যবস্থা' চালু করি, আমি জিএসটি–র কথা বলছি, তখনও তাঁরা অনেক বিরোধিতা করেছেন। কিন্তু এই জিএসটি–র ফলেই বেশ কিছু গৃহস্থালী-পণ্যের ওপর কর অনেক কমে গেছে। অধিকাংশ গৃহস্থালীতে ব্যবহার্য পণ্য এবং রান্নাঘরে কাজে লাগে এরকম সব পণ্যের ওপর থেকে কর একদমই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে কিংবা ৫ শতাংশেরও কম রাখা হয়েছে। আগে এই জিনিসগুলি কিনতে অনেক বেশি কর দিতে হত। জনগণকে তাঁদের পকেট থেকে অনেক বেশি টাকা খরচ করতে হত। কিন্তু আপনারা দেখুন, এই জিএসটি নিয়েও আমাদের বিরোধীদের কত সমস্যা। তাঁরা এটাকে নিয়ে ব্যাঙ্গ–বিদ্রূপ করেন, বিরোধিতা করেন।

 

বন্ধুগণ,

 

এই বিরোধীরা কৃষকদের স্বার্থের কথা ভাবেন না, যুব সম্প্রদায়ের স্বার্থের কথা ভাবেন না, সৈনিকদেরর স্বার্থের কথা ভাবেন না। আপনাদের হয়তো মনে আছে, যখন আমাদের সরকার 'এক পদ এক পেনশন' প্রথা এনেছিল, উত্তরাখণ্ডের হাজার হাজার ভূতপূর্ব সৈনিককে তাঁদের অধিকার দেওয়া হয়েছিল, তখনও এই বিরোধীরা বিরোধিতার জন্যই বিরোধিতা করে যাচ্ছিলেন। 'এক পদ এক পেনশন' চালু করার পর থেকে সরকার ইতিমধ্যেই ভূতপূর্ব সৈনিকদের প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা এরিয়ার হিসেবে দিয়েছে। এখানে উত্তরাখণ্ডের ১ লক্ষেরও বেশি ভূতপূর্ব সৈনিক এর দ্বারা লাভবান হয়েছেন। কিন্তু এই 'এক পদ এক পেনশন' চালু করতে পূর্ববর্তী সরকারগুলি নানা রকম টালবাহানা করে গেছে। আর আমরা করতে গেলে তারা বিরোধিতা করেছে।

 

বন্ধুগণ,

 

এই মানুষেরা বছরের পর বছর ধরে সেনাবাহিনী, দেশের বায়ুসেনা এবং নৌ–সেনাকে শক্তিশালী করার জন্য কিছুই করেননি। বায়ুসেনা বারবার মনে করিয়েছে যে তাদের আধুনিক লড়াকু বিমান চাই। কিন্তু সরকার বায়ুসেনার এই প্রয়োজনকে গুরুত্ব দেয়নি। যখন আমাদের সরকার সরাসরি ফরাসী সরকারের সঙ্গে রাফায়েল যুদ্ধবিমান আমদানি চুক্তি সম্পাদন করেছে, তখন তা নিয়ে তাদের অনেক সমস্যা শুরু হয়েছে। ভারতীয় বায়ুসেনার বিমান বহরে রাফায়েল যুক্ত হলে ভারতীয় বায়ুসেনার শক্তি বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু তাঁরা এর বিরোধিতা করে গেছেন। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে আজ রাফায়েল ভারতীয় বায়ুসেনার শক্তিবৃদ্ধি করছে। আম্বালা থেকে শুরু করে লেহ পর্যন্ত এই যুদ্ধবিমানের গর্জন ভারতীয় বীর যোদ্ধাদের মনোবল বৃদ্ধি করছে।

 

বন্ধুগণ,

 

চার বছর আগে এমন সময়েই যখন দেশের অসম সাহসী সৈনিকরা সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করে সন্ত্রাসবাদীদের ডেরাগুলি ধ্বংস করে দিয়েছিল, তখন এরা আমাদের বীর সৈনিকদের সাহসিকতার প্রশংসা করার পরিবর্তে তাঁদের কাছ থেকেই সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের প্রমাণ চাইছিল। সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের বিরোধিতা করে এই মানুষেরা দেশের সামনে নিজেদের পরিচয় এবং নিজেদের মনোভাব স্পষ্ট করে দিয়েছে। দেশের স্বার্থে হওয়া সমস্ত কাজের বিরোধিতা করা তাদের অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেছে। তাঁদের রাজনীতির একমাত্র পদ্ধতি এটাই – বিরোধিতা। আপনারা স্মরণ করুন, ভারতের উদ্যোগে যখন গোটা বিশ্ব আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালন করছিল, তখন এই মানুষেরা ভারতে বসে এর বিরোধিতা করছিলেন, ব্যাঙ্গ–বিদ্রূপ করছিলেন। যখন দেশের কয়েকশ' রাজন্যশাসিত রাজ্যকে যুক্ত করার ঐতিহাসিক দায়িত্ব যিনি পালন করেছেন, সেই লৌহ পুরুষ সর্দার প্যাটেলের বিশ্বের সর্বোচ্চ মূর্তির আবরণ উন্মোচন হচ্ছিল, তখনও এঁরা বিরোধিতা করেছিলেন। আজ পর্যন্ত তাঁদের কোনও বড় নেতা এই স্ট্যাচু অফ ইউনিটি দর্শন করতে যাননি। কেন? কারণ, তাঁরা নিছকই বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা করতে ভালোবাসেন।

 

বন্ধুগণ,

 

যখন সাধারণ গরীবদের ১০ শতাংশ সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তখনও তাঁরা এর বিরোধিতা করেছেন। যখন ২৬ নভেম্বর সংবিধান দিবস পালনের প্রস্তাব উত্থাপিত হয়, তখনও তাঁরা এর বিরোধিতা করেছিলেন। ডঃ বাবাসাহেব আম্বেদকরের বিরোধিতা করেছিলেন। বন্ধুগণ, বিগত মাসে যখন অযোধ্যায় সুদৃশ্য রাম মন্দির নির্মাণের জন্য ভূমি পূজা করা হয়েছিল, এই মানুষেরা আগে সুপ্রিম কোর্টে রাম মন্দিরের বিরোধিতা করেছিলেন, আর এবার ভূমিপূজার বিরোধিতা করতে শুরু করেন। প্রত্যেক পরিবর্তিত তারিখে বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা করার উদ্দেশ্য নিয়ে এই মানুষেরা দেশের জন্য, সমাজের জন্য অপ্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছেন। তাঁদের ছটফটানি, অস্বস্তি, হতাশা ও নিরাশা আমাকে অবাক করে। এমন একটি দল যাদের একটি পরিবারই চার–চার প্রজন্ম ধরে দেশ শাসন করেছে। তারা আজ অন্যদের কাঁধে চড়ে দেশ হিতের সঙ্গে যুক্ত প্রতিটি কাজের বিরোধিতা করে নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধি করতে চায়।

 

বন্ধুগণ,

 

আমাদের দেশে এমন অনেক ছোট ছোট দল আছে যারা কখনও শাসন ক্ষমতায় আসার সুযোগই পায়নি। তারা প্রতিষ্ঠা দিবস থেকে শুরু করে এখনও পর্যন্ত অধিকাংশ সময় বিপক্ষে বসেই কাটিয়েছে। এত বছর ধরে বিপক্ষে থাকার পরও তাঁরা কখনও দেশের স্বার্থে নেওয়া সিদ্ধান্তের কোনও বিরোধিতা করে না। তাঁরা দেশের বিরুদ্ধে কোনও কাজ করে না। কিন্তু কিছু মানুষ মাত্র কয়েক বছর হল বিপক্ষে বসছেন। তাঁদের চলা–ফেরা, শারীরী ভাষা আজ দেশবাসী দেখছে, বুঝতে পারছে। তাঁদের স্বার্থ নীতির মাঝে আত্মনির্ভর ভারতের জন্য বড় বড় সংস্কারের এই ধারাবাহিকতা, দেশের সম্পদগুলি উন্নত করার জন্য এই ধারাবাহিকতা আমরা দেশের স্বার্থেই এগিয়ে নিয়ে চলেছি। দেশের দারিদ্র্য মুক্তির অভিযানের জন্য, দেশকে শক্তিশালী করে তোলার জন্য আমাদের এই কাজগুলি নিরন্তর জারি থাকবে।

 

আরেকবার আপনাদের সবাইকে উন্নয়নের জয়যাত্রায় এই সকল প্রকল্পের জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা।

 

আরেকবার এটাই অনুরোধ জানাব যে আপনারা নিজেদের স্বাস্থ্যের প্রতি সজাগ থাকবেন, সাবধানে থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, নিরাপদ থাকবেন, বাবা কেদারনাথের কৃপায় আমরা সবাই যেন সুস্থ থাকি।

 

এই কামনা নিয়েই আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই। জয় গঙ্গে, গঙ্গা মায়ের জয় !

Explore More
৭৬তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর জাতির উদ্দেশে ভাষণের বঙ্গানুবাদ

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৬তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর জাতির উদ্দেশে ভাষণের বঙ্গানুবাদ
India's economic juggernaut is unstoppable

Media Coverage

India's economic juggernaut is unstoppable
...

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Prime Minister Narendra Modi to inaugurate the National Training Conclave
June 10, 2023
শেয়ার
 
Comments
Representatives from civil services training institutes across the country will participate in the Conclave
Conclave to foster collaboration among training institutes and help strengthen the training infrastructure for civil servants across the country

Prime Minister Shri Narendra Modi will inaugurate the first-ever National Training Conclave at the International Exhibition and Convention Centre Pragati Maidan, New Delhi on 11th June, 2023 at 10:30 AM. Prime Minister will also address the gathering on the occasion.

Prime Minister has been a proponent of improving the governance process and policy implementation in the country through capacity building of civil service. Guided by this vision, the National Programme for Civil Services Capacity Building (NPCSCB) – ‘Mission Karmayogi’ was launched to prepare a future-ready civil service with the right attitude, skills and knowledge. This Conclave is yet another step in this direction.

The National Training Conclave is being hosted by Capacity Building Commission with an objective to foster collaboration among civil services training institutes and strengthen the training infrastructure for civil servants across the country.

More than 1500 representatives from training institutes, including Central Training Institutes, State Administrative Training Institutes, Regional and Zonal Training Institutes, and Research institutes will participate in the conclave. Civil Servants from central government departments, state governments, local governments, as well as experts from the private sector will take part in the deliberations.

This diverse gathering will foster the exchange of ideas, identify the challenges being faced and opportunities available, and generate actionable solutions and comprehensive strategies for capacity building. The conclave will have eight panel discussions, each focusing on key concerns pertinent to Civil services training institutes such as faculty development, training impact assessment and content digitisation, among others.