প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে গ্যংটকে অনুষ্ঠিত ‘Sikkim@50’ অনুষ্ঠানে ভাষণ দিয়েছেন। ‘উন্নয়ন যেখানে উদ্দেশ্যের সঙ্গে মিলিত হয় এবং প্রকৃতি যে উন্নয়নকে লালিত করে’ এই ভাবনায় এই অনুষ্ঠানটি সাজানো হয়। প্রধানমন্ত্রী সিকিম রাজ্যের ৫০-তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে নাগরিকদের শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে মানুষের উৎসাহ-উদ্দীপনা প্রত্যক্ষ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার কারণে তা সম্ভব হল না। অদূর ভবিষ্যতে রাজ্যবাসীর সাফল্য প্রত্যক্ষ করতে তিনি সিকিম সফর করবেন বলে জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ৫০ বছর ধরে রাজ্যের মানুষ যা অর্জন করেছেন, তার উদযাপনের দিন আজ। সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর দলের সদস্যদের এই সুন্দর মনোরম অনুষ্ঠানটি আয়োজন করার জন্য তিনি ধন্যবাদ জানান। রাজ্যের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে তিনি প্রত্যেক নাগরিককে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
শ্রী মোদী বলেন, “৫০ বছর আগে সিকিম নিজেই গণতন্ত্রের যাত্রাপথে চলা শুরু করে। সিকিমের মানুষ ভারতের ভূখণ্ডের সঙ্গে সেদিন শুধু যুক্তই হননি, তাঁরা তাঁদের আত্মাকেও এর সঙ্গে যুক্ত করেন।” যখন প্রত্যেকের বক্তব্য শোনা হয়, অধিকার সুরক্ষিত হয়- তখন উন্নয়নের সমান সুযোগ সকলের কাছে পৌঁছায়। আজ সিকিমের প্রত্যেকটি পরিবারের আস্থা আরও শক্তিশালী হয়েছে। সিকিমের অভূতপূর্ব উন্নয়ন সারা দেশ প্রত্যক্ষ করেছে। “সিকিম দেশের গর্ব”। গত ৫০ বছর ধরে এই রাজ্য প্রকৃতিকে সঙ্গে নিয়ে যে উন্নয়ন বাস্তবায়িত করেছে, তা আদর্শ হয়ে রয়েছে। জীববৈচিত্র্যে ভরপুর এই রাজ্য ১০০ শতাংশ জৈব রাজ্য হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। আজ দেশের বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে মাথা পিছু আয় সিকিমে সব থেকে বেশি। এই সাফল্যের মাধ্যমে রাজ্যের মানুষের ক্ষমতা প্রতিফলিত হয়। গত ৫ দশকে সিকিম থেকে অনেক নক্ষত্রের উত্থান হয়েছে। রাজ্যের প্রতিটি সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যশালী সংস্কৃতি রয়েছে। রাজ্যের সমৃদ্ধির জন্য এঁদের প্রত্যেকের অবদান গুরুত্বপূর্ণ।

২০১৪ সাল থেকে তাঁর সরকারের সবকা সাথ সবকা বিকাশ নীতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নত ভারত গড়ার ক্ষেত্রে সুষম উন্নয়নের প্রয়োজন, যেখানে প্রতিটি অঞ্চলে সমভাবে উন্নয়ন হবে। “ভারতের প্রতিটি রাজ্য এবং অঞ্চলের স্বতন্ত্র শক্তি রয়েছে। এই বিষয়টি বিবেচনা করে সরকার গত এক দশকে উত্তর পূর্বাঞ্চলকে উন্নয়নের কেন্দ্রে রেখে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা করেছে। সরকার ‘অ্যাক্ট ফাস্ট’ ভাবানায় ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতিকে বাস্তবায়িত করছে।” দিল্লিতে সদ্য অনুষ্ঠিত উত্তর পূর্বের বিনিয়োগ সংক্রান্ত শীর্ষ সম্মেলনে প্রথম সারির বিনিয়োগকারী এবং শিল্পপতিরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা সিকিম সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগের কথা ঘোষণা করেছেন। আগামীদিনে সিকিম এবং উত্তর পূর্বাঞ্চলের যুব সম্প্রদায়ের জন্য বিপুল কাজের সুযোগ তৈরি হবে।
শ্রী মোদী বলেন, আজকের এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সিকিমের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। আজ এখান থেকে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস হয়েছে। স্বাস্থ্য পরিষেবা, পর্যটন, সংস্কৃতি এবং ক্রীড়া ক্ষেত্রের সঙ্গে এই প্রকল্পগুলি যুক্ত। সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলির উদ্বোধন ও শিলান্যাস উপলক্ষ্যে তিনি রাজ্যবাসীকে অভিনন্দন জানান।
সিকিম সহ সমগ্র উত্তর পূর্বাঞ্চলে ভারতের উন্নয়ন যাত্রার নতুন এক অধ্যায় রচিত হচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, দিল্লি দূরে হওয়ার কারণে অতীতে এখানে উন্নয়ন যথাযথভাবে হয়নি। এই অঞ্চল এখন নতুন নতুন সম্ভাবনার সুযোগ নিয়ে এসেছে। এই পরিবর্তনের অন্যতম কারণ হল এখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা বর্তমানে উন্নত হচ্ছে। সিকিমের জনসাধারণও তা প্রত্যক্ষ করছেন। আগে এই অঞ্চলের মানুষের কাছে শিক্ষা, স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং কর্মসংস্থান যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের ছিল। তবে গত এক দশকে পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়েছে। এই সময়কালে সিকিমে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার নতুন মহাসড়ক নির্মিত হয়েছে। গ্রামগুলিতে নতুন নতুন সড়ক নির্মিত হয়েছে। অটল সেতু নির্মাণের ফলে সিকিমের সঙ্গে দার্জিলিং-এর যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। এই রাজ্যের সঙ্গে কালিম্পং-এর সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য দ্রুত গতিতে কাজ হচ্ছে। বাগডোগরা-গ্যাংটক এক্সপ্রেসওয়ে ভবিষ্যতে সিকিমে যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে আরও সুবিধা করে দেবে। এই মহাসড়ককে গোরক্ষপুর-শিলিগুড়ি এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে যুক্ত করার মধ্যে দিয়ে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের পরিকাঠামো শক্তিশালী করা হবে।

উত্তর পূর্বাঞ্চলের প্রতিটি রাজ্যের রাজধানী শহরের সঙ্গে রেল পরিষেবা শুরু করার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেই কাজ দ্রুত গতিতে চলছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। সেবকের সঙ্গে রঙপোর মধ্যে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উদ্বোধন হলে তা জাতীয় স্তরে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাকে যুক্ত করবে। যেখানে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা যায় না, সেইসব অঞ্চলে বিকল্প হিসেবে রোপওয়ে গড়ে তুলতে হবে। গত এক দশকে ভারত বিভিন্ন ক্ষেত্রে নতুন নতুন সংকল্প গ্রহণ করেছে। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। গত এক দশকে প্রতিটি রাজ্যে নতুন নতুন হাসপাতাল গড়ে উঠেছে। দেশ জুড়ে এইমস সহ বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ তৈরি করা হয়েছে। এই অনুষ্ঠানে তিনি রাজ্যে ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের উদ্বোধন করেন। এর ফলে সমাজের পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের মানুষরা উন্নতমানের চিকিৎসা পরিষেবা পাবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার হাসপাতাল গড়ে তোলার বিষয়ে যেমন অগ্রাধিকার দিচ্ছে, পাশাপাশি ব্যয় সাশ্রয়ী মূল্যে উন্নত চিকিৎসা পরিষেবাও নিশ্চিত করছে। আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে সিকিমে ২৫০০০-এর বেশি মানুষ বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা পেয়েছেন। দেশ জুড়ে ৭০ বছরের ঊর্ধ্বে যাদের বয়স তাঁরা ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা পাবেন। সিকিমের মানুষদের তাঁদের পরিবারের বয়োজেষ্ঠ সদস্যদের জন্য এখন আর উদ্বেগে পড়তে হবে না।
শ্রী মোদী বলেন, “দরিদ্র নাগরিক, কৃষক, মহিলা এবং যুব সম্প্রদায়ের ক্ষমতায়ন- এই চারটি স্তম্ভের ওপর উন্নত ভারতের ভিত রচিত হয়েছে।” দেশ এই স্তম্ভগুলিকে নিরন্তর শক্তিশালী করে তুলছে। ভারতের কৃষি ক্ষেত্রের যে সাফল্য অর্জিত হয়েছে সেখানে সিকিমের কৃষকদের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা আছে। “কৃষি বিপ্লবের নতুন ধারায় সিকিম নেতৃত্ব দিচ্ছে।” সিকিম থেকে জৈব পদ্ধতিতে কৃষি কাজে উৎপাদিত ফসল রপ্তানির হার ক্রমশ বাড়ছে। সম্প্রতি সিকিমের বিখ্যাত ডাল্লে খুরসানি লঙ্কা রপ্তানি হয়েছে। রাজ্য থেকে উৎপাদিত আরও বহু ফসল ভবিষ্যতে রপ্তানি হবে। কেন্দ্রীয় সরকার সিকিম সরকারকে এই উদ্যোগগুলি বাস্তবায়নে সহায়তা করবে।
সিকিমের জৈব পদ্ধতিতে উৎপাদিত ফসলের উদ্যোগকে আরও উৎসাহিত করতে কেন্দ্রীয় সরকার সোরেং জেলায় প্রথম জৈব পদ্ধতিতে মৎস্য চাষ প্রকল্প গড়ে তুলবে- দেশের মধ্যে যা প্রথম। এর মধ্য দিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে সিকিম নতুনভাবে পরিচিত হবে। জৈব পদ্ধতিতে কৃষি কাজের পাশাপাশি মৎস্য চাষ করা হবে। এর ফলে সিকিমের যুব সম্প্রদায়ের কাছে মৎস্য চাষের নতুন নতুন সম্ভাবনা তৈরি হবে। সম্প্রতি দিল্লিতে নীতি আয়োগের পরিচালন পরিষদের বৈঠকে প্রতিটি রাজ্যের একটি পর্যটন কেন্দ্রকে বিশেষভাবে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সিকিমের পরিচয় শুধু একটি পার্বত্য পর্যটন কেন্দ্র হিসেবেই নয়, এটিকে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। “সিকিমের সম্ভাবনা অপরিসীম, এই রাজ্যের জন্য একটি পরিপূর্ণ প্যাকেজের প্রয়োজন।” সিকিম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং আধ্যাত্মিক কেন্দ্র- দু-দিক থেকেই সমান আকর্ষণীয়। এখানে হ্রদ, জলপ্রপাত, পাহাড় যেমন রয়েছে পাশাপাশি পবিত্র বৌদ্ধ গুম্ফাও আছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন কাঞ্চনজঙ্ঘা জাতীয় উদ্যান ইউনেসকো স্বীকৃত একটি ঐতিহ্যশালী স্থান। এই অঞ্চল শুধু ভারতের নয়, সারা বিশ্বের কাছে গর্বের। আজ নতুন একটি স্কাইওয়াক নির্মাণের কাজ শুরু হল, সুবর্ণ জয়ন্তী প্রকল্পের উদ্বোধন হল। এছাড়াও অটল বিহারী বাজয়েপীর একটি প্রতিকৃতিও উদ্বোধন হল। এই প্রকল্পগুলি সিকিমকে উন্নয়নের নতুন এক উচ্চতায় পৌঁছে দেবে।

প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, “অ্যাডভেঞ্চার এবং স্পোর্টস ট্যুরিজমে সিকিমের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।” ট্রেকিং, মাউন্টেন বাইকিং এবং উঁচু জায়গায় নানা ধরনের প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে এই অঞ্চলের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। সম্মেলন, স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং জলসা সংক্রান্ত পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে এই রাজ্যকে গড়ে তোলা যায়। ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে এখানে গোল্ডেন জুবিলি কনবেনশন গড়ে তোলা হবে, যে কেন্দ্রে বিশ্বের প্রথিতযশা শিল্পীরা আসবেন। তাঁরা গ্যাংটকের নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের মাঝে অনুষ্ঠান করবেন। এই রাজ্য প্রকৃতি এবং সংস্কৃতির সঙ্গে সৌহার্দ্যের সম্পর্ক বজায় রেখে চলে।
জি-২০ শিখর সম্মেলনের বেশ কয়েকটি বৈঠক উত্তর পূর্বাঞ্চলে অনুষ্ঠিত হওয়ায় সারা বিশ্বের কাছে এই অঞ্চলের সম্ভাবনাকে তুলে ধরা হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেন। সিকিম সরকার কিভাবে তাদের পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করেছে, সেই প্রসঙ্গটিও তিনি উল্লেখ করেন। ভারত বর্তমানে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রথম সারির অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। খুব শীঘ্রই ক্রীড়া ক্ষেত্রেও সে মহা শক্তিধর হয়ে উঠবে। এই স্বপ্ন পূরণে সিকিম সহ উত্তর পূর্বের যুব সম্প্রদায়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ফুটবল ব্যক্তিত্ব বাইচুং ভুটিয়া, অলিম্পিয়ান তরুণদীপ রাই এবং ক্রীড়াবিদ যশলাল প্রধানের মতো বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদদের নাম উল্লেখ করে তিনি এই রাজ্যের সমৃদ্ধ ক্রীড়া সংস্কৃতির কথা উল্লেখ করেন। এমন দিন আর দূরে নেই যেদিন সিকিমের প্রত্যেক গ্রাম এবং শহর থেকে একজন বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদের উত্থান হবে। “খেলাধুলা শুধুমাত্র অংশ নেওয়ার কর্মসূচি নয়, বরং এর মধ্য দিয়ে জয়লাভ করার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে।” গ্যাংটকে নতুন স্পোর্টস কমপ্লেক্সের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, এই কেন্দ্র ভবিষ্যতের চ্যাম্পিয়নদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হয়ে উঠবে। খেলো ইন্ডিয়া প্রকল্পের আওতায় এই রাজ্য বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। প্রতিভা অনুসন্ধান, প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি এবং ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজনে সহায়তা করা হচ্ছে। সিকিমের যুব শক্তির মধ্যে যে আগ্রহ রয়েছে তা ভারতকে অলিম্পিকে নতুন মর্যাদা নিয়ে আসবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সিকিমের জনসাধারণ পর্যটনের শক্তি উপলব্ধি করতে পেরেছেন। পর্যটন নিছক বিনোদন নয়, বরং বলা যায় এর মধ্য দিয়ে বৈচিত্রকে উপভোগ করা যায়।” পাহেলগাম-এ সম্প্রতি জঙ্গি হামলার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই হামলা শুধু ভারতবাসীদের ওপর হামলা নয়, এটি মানব জাতির ওপর হামলা, ভ্রাতৃত্ববোধের ওপর হামলা। জঙ্গিরা শুধু বহু পরিবারের আনন্দকেই কেড়ে নেয়নি, তারা ভারতবীসার মধ্যে বিভাজনের চেষ্টা চালিয়েছে। “আজ ভারতের অপ্রতিরোধ্য একতা সারা বিশ্ব প্রত্যক্ষ করেছে। দেশ এক যোগে জঙ্গিদের এবং তাদের মদতদাতাদের পরিস্কার একটি বার্তা পাঠিয়েছে।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতীয় মহিলাদের কপালের সিঁদুর মুছে দিয়ে তারা যে যন্ত্রনা দিয়েছে, ভারত তার জবাব অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে দিয়েছে। জঙ্গি ঘাঁটিগুলিকে ভারত ধ্বংস করে দেওয়ার পর পাকিস্তান ভারতের সাধারণ নাগরিক এবং সৈন্যদের ওপর হামলা চালানো শুরু করে। এর ফলে পাকিস্তানের আসল রূপ প্রকাশিত হয়েছে। ভারত পাকিস্তানের বিভিন্ন বিমান ঘাঁটিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দেশের কৌশলগত দক্ষতা প্রকাশিত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সিকিমের ৫০ বছরের সাফল্য সকলের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস। এই রাজ্যে উন্নয়ন যাত্রা ভবিষ্যতে আরও ত্বরাণ্বিত হবে।” ২০৪৭ সালে ভারত যখন স্বাধীনতার শততম বর্ষ উদযাপন করবে এবং সিকিম রাজ্য তার ৭৫-তম বর্ষ উদযাপন করবে সেই সময়ের মধ্যে রাজ্যকে উন্নত করে তুলতে হবে। এই পরিকল্পনাকে বাস্তবায়নের জন্য সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে এবং পর্যায়ক্রমে কাজের অগ্রগতির মূল্যায়ণ করতে হবে। সিকিমের অর্থনীতির উন্নয়নের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই রাজ্যকে স্বাস্থ্য পরিষেবার কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। রাজ্যের যুব সম্প্রদায়ের জন্য আরও নতুন নতুন সুযোগ তৈরি করতে হবে। “স্থানীয় চাহিদার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক চাহিদা পূরণের জন্য সিকিমের তরুণ প্রজন্মকে গড়ে তুলতে হবে।” বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা বিকাশের নতুন নতুন সুযোগ তৈরি করতে হবে যাতে বিশ্বজুড়ে সিকিমের যুব সম্প্রদায়ের চাহিদা অনুভূত হয়।
সিকিমকে আগামী ২৫ বছরে উন্নয়নের নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য সকলকে অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্য দিয়ে রাজ্যের ঐতিহ্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করবে। “শুধু ভারতের নয়, সারা বিশ্বের কাছে সিকিম পরিবেশ বান্ধব আদর্শ রাজ্য হিসেবে আত্মপ্রকাশ করুক এটিই আমাদের স্বপ্ন।” তিনি বলেন, এই লক্ষ্য পূরণে রাজ্যের প্রতিটি মানুষকে সচেষ্ট হতে হবে। প্রত্যেক বাড়িতে সৌর শক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। “কৃষি ক্ষেত্র ও পর্যটন শিল্পে স্টার্টআপ সংস্থা গড়ে তোলার নিরিখে সিকিম প্রথম সারিতে উঠে আসুক এবং জৈব পদ্ধতিতে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বিশ্বজুড়ে নিজস্ব এক পরিচিতি গড়ে তুলুক।” প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সিকিমে প্রত্যেক নাগরিক ডিজিটাল পদ্ধতিতে যাতে সহজেই লেনদেন করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে হবে। এই রাজ্যে বর্জ্যকে সম্পদে পরিণত করার উদ্যোগ এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছক। “আগামী ২৫ বছরে এই উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্যগুলি সিকিম অর্জন করুক এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করুক।” তাঁর ভাষণের শেষে প্রধানমন্ত্রী রাজ্যের প্রত্যেক নাগরিককে এই স্বপ্ন পূরণের জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানান এবং তাঁদের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের ওপর ভিত্তি করে তারা সেগুলি বাস্তবায়ন করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন ।
অনুষ্ঠানে সিকিমের রাজ্যপাল শ্রী ওম প্রকাশ মাথুর, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী প্রেমসিং তামাং সহ বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।
সম্পূর্ণ ভাষণ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
Sikkim is the pride of the country: PM @narendramodi pic.twitter.com/qiybL5ugiQ
— PMO India (@PMOIndia) May 29, 2025
Over the past decade, our government has placed the Northeast at the core of India's development journey.
— PMO India (@PMOIndia) May 29, 2025
We are advancing the 'Act East' policy with the spirit of 'Act Fast': PM @narendramodi pic.twitter.com/ui8YZqUp27
Sikkim and the entire Northeast are emerging as a shining chapter in India's progress. pic.twitter.com/gPngdyYzPS
— PMO India (@PMOIndia) May 29, 2025
We endeavour to make Sikkim a global tourism destination. pic.twitter.com/k8gUCUZFVe
— PMO India (@PMOIndia) May 29, 2025
In the coming years, India is poised to emerge as a global sports superpower. The Yuva Shakti of the Northeast and Sikkim will play a pivotal role in realising this dream. pic.twitter.com/10MVtVFNp0
— PMO India (@PMOIndia) May 29, 2025