শ্রী পেজাবর মঠেরপরম শ্রদ্ধেয় শ্রী বিশ্বেশতীর্থ স্বামীজি,

এবং

উপস্থিত সকলশ্রদ্ধালু ব্যক্তিবর্গ।

ভারতে ভক্তিআন্দোলনের সময়ের বড় দার্শনিকদের মধ্যে অন্যতম জগদ্‌গুরু সন্ত শ্রী মাধবাচার্যেরসপ্তম শতবার্ষিকী সমারোহ উপলক্ষে বক্তব্য রাখতে পেরে আমি অভিভূত।

কাজের ব্যস্ততারকারণে আমি উড়ুপি পৌঁছতে পারিনি। একটু আগেই আলিগড় থেকে ফিরেছি। এতে আমার পরমসৌভাগ্য যে আজ আপনাদের সবার আশীর্বাদ গ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছি।

মানবজাতির নৈতিকএবং আধ্যাত্মিক উত্থানের জন্য শ্রী মাধবাচার্যের বাণী যেভাবে প্রচার-প্রসার করাহচ্ছে সেজন্য আমি সকল আচার্য ও মণীষীদের অভিনন্দন জানাই।

কর্ণাটকের পূণ্যভূমিকেও আমি প্রণাম জানাই যেখানে একজন মাধবাচার্যের মতো সাধু জন্মগ্রহণ করেছিলেন।আচার্য শঙ্কর এবং আচার্য রামানুজের মতো পূণ্যাত্মাদের বিশেষ স্নেহের পাত্র ছিলেনতিনি।

উড়ুপি শ্রীমাধবাচার্যের জন্মভূমি এবং কর্মভূমি ছিল। তিনি তাঁর প্রসিদ্ধ গীতাভাষ্য এই উড়ুপিরপবিত্র ভূমিতেই বসে লিখেছিলেন।

শ্রী মাধবাচার্যওখানকার কৃষ্ণ মন্দিরেরও প্রতিষ্ঠাতা। ঐ মন্দিরে স্থাপিত কৃষ্ণ মূর্তির সঙ্গে আমারএকটি বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। উড়ুপির সঙ্গেও আমার একটি আলাদা সম্পর্ক রয়েছে। আমিকয়েকবার উড়ুপি যাওয়ার সুযোগ পেয়েছি। ১৯৬৮ থেকে শুরু করে চার দশক ধরে উড়ুপিমিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের দায়িত্ব নির্বাহ করেছে ভারতীয় জনসঙ্ঘ এবং ভারতীয় জনতাপার্টি। ১৯৬৮-তে উড়ুপি পৌরসভাতেই প্রথম হাতে ঝাড়া-মোছার কাজ বন্ধ করা হয়েছিল। ১৯৮৪থেকে ১৯৮৯-এর মধ্যে দু’বার উড়ুপিকে পরিচ্ছন্নতার জন্য সম্মানিত করা হয়েছে।পরিচ্ছন্নতা থেকে শুরু করে নানা মানবিক মূল্যবোধে সাধারণ মানুষকে সচেতন করারক্ষেত্রে আমাদের সঙ্কল্পের জীবন্ত উদাহরণ এই শহর।

এই অনুষ্ঠানে শ্রীবিশ্বেশতীর্থ স্বামীজি নিজে উপস্থিত থাকায় আমার আনন্দ দ্বিগুণ হয়েছে। মাত্র আট বছরবয়সেই সন্ন্যাস গ্রহণ করে তিনি বিগত ৮০ বছর ধরে দেশ ও সমাজকে মজবুত করার কাজ করেযাচ্ছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে অশিক্ষা, গো-রক্ষা এবং জাতিবাদের বিরুদ্ধেলড়াই জারি রেখেছেন। এই স্বামীজির পূণ্য কর্মের প্রভাবেই তিনি তাঁর জীবনের পঞ্চমপর্যায়ে অবসর গ্রহণ করেছেন। এহেন সন্ন্যাসী পুরুষকে আমি প্রণাম জানাই।

ভাই ও বোনেরা,

আমাদের দেশেরইতিহাস হাজার হাজার বছর পুরনো। হাজার বছরের ইতিহাসকে জড়িয়ে আমাদের দেশে সময়েরপ্রয়োজন অনুসারে পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। ব্যক্তি চরিত্রে পরিবর্তন, সমাজ চরিত্রেপরিবর্তন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে মাঝে-মধ্যেই কিছু কুসংস্কারও সমাজে প্রভাব বিস্তারকরে।

কিন্তু আমাদেরসমাজের বৈশিষ্ট্য হল, যখনই সমাজ নানাভাবে কুসংস্কারাচ্ছন্ন হয়েছে, তার সংস্কারেরকাজও সমাজের মধ্য থেকেই শুরু হয়েছে। একটা সময় এমন এসেছিল, যখন এই সংস্কারেরনেতৃত্ব আমাদের দেশে সাধু-সন্ন্যাসীরাই দিয়েছেন। এটা ভারতীয় সমাজের অদ্ভুত ক্ষমতাযে যুগে যুগে আমরা দেবতুল্য মহাপুরুষদের পেয়েছি যাঁরা ঐ কুসংস্কারগুলিকে চিহ্নিতকরেছেন এবং সেগুলি থেকে মুক্তির রাস্তা দেখিয়েছেন।

শ্রী মাধবাচার্যজিওএমনই একজন সাধু ও সমাজ সংস্কারক ছিলান। তিনি ছিলেন সময়ের অগ্রদূত। অনেক প্রচলিতকু-রীতির বিরুদ্ধে তিনি প্রতিবাদ জানিয়েছেন, সমাজকে নতুন পথ দেখিয়েছেন। যজ্ঞেপশুবলী বন্ধ করানোর সংস্কার তিনিই চালু করেছিলেন। আমাদের ইতিহাস সাক্ষী যে আমাদেরসাধুরা হাজার বছর আগে সমাজের নানা কুসংস্কারের বিরুদ্ধে জনআন্দোলন শুরু করেছিলেন।সেই জনআন্দোলনকে ব্যাপ্তি দিতে তাঁরা এর সঙ্গে ভক্তিকে যুক্ত করেছেন। এই ভক্তিআন্দোলন দক্ষিণ ভারত থেকে শুরু করে মহারাষ্ট্র এবং গুজরাট হয়ে উত্তর ভারত পর্যন্তপৌঁছে গিয়েছিল।

সেই ভক্তিযুগেরকালখণ্ডে ভারতের সকল প্রান্তে সকল ভাষাভাষী মানুষদের সচেতন করতে সাধু-সন্ন্যাসীরামন্দির, মঠগুলি থেকে পথে বেরিয়ে এসেছিলেন।

এই ভক্তিআন্দোলনদকে দক্ষিণ ভারত থেকে মাধবাচার্য, নিম্বার্কাচার্য, বল্লভাচার্য,রামানুজাচার্য, পশ্চিম ভারত থেকে রাবাই, একনাথ, তুকারাম, রামদাস, নরসি মেহতা,উত্তর ভারত থেকে রামানন্দ, কবীর দাস, গোস্বামী তুলসীদাস, সুরদাস, গুরু নানক দেবএবং রবিদাস, পূর্ব ভারত থেকে চৈতন্য মহাপ্রভু এবং শঙ্কর দেবের মতো সন্ন্যাসীরা দেশেরমানুষকে সচেতন করে তুলেছিলেন। এই সাধু-মহাপুরুষদের সংস্কার আন্দোলনের প্রভাবেই সকলবিপত্তি অতিক্রম করে ভারত সেই অন্ধকার যুগ পেরিয়ে আসতে পারেছিল, নিজেকে বাঁচাতেপেরেছিল।

আদি শঙ্করাচার্যদেশের চার প্রান্তে গিয়ে মানুষকে সংসারের ঊর্ধ্বে উঠে ঈশ্বরে লীন হওয়ার পথদেখিয়েছেন। রামানুজাচার্য, বিশিষ্ট দ্বৈতবাদের ব্যাখ্যা করেছেন। তিনিও জাতির সীমাথেকে ওপরে উঠে ঈশ্বর প্রাপ্তির পথ দেখিয়েছেন।

তিনি বলতেন, কর্ম,জ্ঞান এবং ভক্তির মাধ্যমেই ঈশ্বর লাভ করা যায়। তাঁর প্রদর্শিত পথেই সন্ত রামানন্দসকল জাতি ও ধর্মের মানুষকে নিজের শিষ্য বানিয়ে জাতিবাদকে কড়া প্রহার করেছিলেন।

সন্ত কবীরওজাতিপ্রথা থেকে সমাজকে মুক্তি দেওয়ার অদম্য চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। তিনি বলতেন,“পানী কেরা বুলবুলা – অস মানস কী জাত …” – জীবনের এতবড় সত্য তিনি এত সহজ শব্দেরমাধ্যমে সমাজের সামনে তুলে ধরছিলেন।

গুরু নানক দেববলতেন, “মানব কি জাত সভো এক পহচানবো …”।

সন্ত বল্লভাচার্যস্নেহ ও ভালোবাসার পথকেই মুক্তির পথ বলে চিহ্নিত করেছেন।

চৈতন্য মহাপ্রভুঅস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে সমাজকে নতুন পথ দেখিয়েছিলেন।

সাধু-সন্ন্যাসীদেরএই পরম্পরা ভারতের জীবন্ত সমাজেরই প্রতিবিম্ব, পরিণাম। সমাজ যত প্রতিস্পর্ধারসম্মুখীন হয়, তার যাত্রাপথও ততই উত্তর-আধ্যাত্মিক রূপে প্রকট হয়। সেজন্যই, গোটাদেশে সম্ভবত এমন খুব কম জেলা রয়েছে যেখানে সময়ের প্রয়োজনে এমন কোনও সাধু মহাপুরুষজন্মগ্রহণ করেননি। তাঁরাই ভারতীয় সমাজের যন্ত্রণা নিরসনের কাজ করে গেছেন। নিজেদেরজীবন, উপদেশ এবং সাহিত্যের মাধ্যমে তাঁরা সমাজ সংস্কারের কাজ করে গেছেন।

ভক্তি আন্দোলনেরসময় ধর্ম, দর্শন এবং সাহিত্যের এমন এক ত্রিবেণী স্থাপিত হয়েছিল যা আজও আমাদেরপ্রেরণা যোগায়। তখনি রহিম বলেছিলেন, “বে রহিম নর ধন্য হ্যায়, পর উপকারী অঙ্গ,বাঁটন বারে কো লাগে, জ্যোঁ মেহেন্দি কো রঙ…” অর্থাৎ, যেভাবে মেহেন্দি হাতেলাগালে মেহেন্দির রং বদলে যায়, ঠিক তেমনই যিনি অপরের উপকার করেন, নিজে থেকেই তাঁরওভালো হয়।

ভক্তিকালের ঐ সময়েরস খান, সুরদাস, মলিক মহম্মদ জায়েসি, কেশব দাস, বিদ্যাপতির মতো অনেক মহাপুরুষনিজেদের বাণী এবং সাহিত্যের মাধ্যমে সমাজকে আয়নার মতো সমাজের অন্যায় ও খারাপদিকগুলিকে তুলে ধরেছেন। মানুষের জীবনে কর্ম, আচার-আচরণের মাহাত্যকে আমাদেরসাধু-সন্ন্যাসীরা সবার ওপরে স্থান দিয়েছেন। গুজরাটের মহান সন্ন্যাসী নরসি মেহতাবলতেন, “বাচ-কাছ-মন নিশ্চল রাখে, পরধন নব ঝালে হাত রে।” অর্থাৎ, ব্যক্তি নিজের বলাশব্দ, কাজ এবং ভাবনার মাধ্যমেই নিজেকে পবিত্র রাখতে পারে। পরের ধনকে কেউ যেনস্পর্শ না করে। আজ যখন দেশে কালো টাকা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে এত বড় লড়াই শুরুহয়েছে, তখন তাঁর এই ভাবনা কত প্রাসঙ্গিক অনুভূত হয়!

বিশ্বকে ‘অনুভবমন্টক’ বা প্রথম সংসদের মন্ত্র যিনি দান করেছিলেন সেই মহান সমান সংস্কারকবশেশ্বরজি বলতেন যে মানুষের জীবন নিঃস্বার্থ কর্মযোগের মাধ্যমেই প্রকাশিত হবে।সামাজিক এবং ব্যক্তিগত আচরণে স্বার্থের অনুপ্রবেশই দুর্নীতির প্রথম কারণ।নিঃস্বার্থ কর্মযোগকে যত বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে, সমাজে ভ্রষ্ট আচরণ তত হ্রাসপাবে।

শ্রী মাধবাচার্যসবসময় বলতেন যে কোন কাজ ছোট বা বড় হয় না। ঐকান্তিকভাবে নিষ্ঠা সহকারে যে কাজ করাহয়, তা ঈশ্বরের পুজোর মতো। তিনি বলতেন, আমরা যেমন সরকারকে কর দিই, তেমনই মানবতারসেবাই ঈশ্বরকে দেওয়া করের সমতুল। আমরা গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, ভারতে এই ধরনের মহানঐতিহ্য রয়েছে। এত মহান সাধু-সন্ন্যাসীরা ছিলেন, যাঁরা তাঁদের তপস্যা ও জ্ঞানেরমাধ্যমে দেশের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য, রাষ্ট্র নির্মাণের জন্য সারা জীবন কাজ করেগেছেন। আমাদের সন্ন্যাসীরা গোটা সমাজকে জাত থেকে জগতের প্রতি, স্ব থেকে সমষ্টিরপ্রতি, আমি থেকে আমাদের প্রতি, জীব থেকে শিবের প্রতি, জীবাত্মা থেকে পরমাত্মার পথেযাওয়ার জন্য প্রেরণা যুগিয়ে গেছেন।

স্বামী দয়ানন্দসরস্বতী, স্বামী বিবেকানন্দ, রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, জ্যোতিবাফুলে, ডঃ ভীমরাও আম্বেদকর, মহাত্মা গান্ধী, পাণ্ডুরাম শাস্ত্রী আঠবলে, বিনোবাভাবে-র মতো অসংখ্য মহাপুরুষেরা ভারতের আধ্যাত্মিক ধারাকে সর্বদা জাগ্রত রেখেছেন।কুসংস্কারের বিরুদ্ধে জন-আন্দোলন গড়ে তুলেছেন। অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে লড়াই থেকেশুরু করে জনজাগৃতি, ভক্তি থেকে শুরু করে জনশক্তি, সতী প্রথা রোধ থেকে শুরু করেপরিচ্ছন্নতা আন্দোলন পর্যন্ত। সামাজিক সচেতনতা থেকে শুরু করে শিক্ষা পর্যন্ত।স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে সাহিত্য পর্যন্ত তাঁরা নিজেদের ব্যক্তিত্বের প্রভাবেসাধারণ মানুষের মনকে বদলে দিতে পেরেছেন। এই মহাপুরুষরা দেশকে অদ্ভুত, অতুলনীয় শক্তিপ্রদান করেছেন।

ভাই ও বোনেরা,

সামাজিককুপ্রথাগুলির বিরুদ্ধে আমাদের মহান সাধু-সন্ন্যাসীরা প্রতিনিয়ত লড়াই করে গেছেন বলেআমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য প্রতিনিয়তই পুনর্নবীকৃত হয়েছে। এই মহান সন্ন্যাসীপরম্পরার কারণেই আমরা জাতীয় ঐক্য এবং রাষ্ট্র নির্মাণের ভাবনাকে সাকার করতেপেরেছি।

এইসাধু-সন্ন্যাসীরা কোন নির্দিষ্ট যুগে সীমিত ছিলেন না। তাঁরা যুগ যুগ ধরে নিজেদেরপ্রভাব বিস্তার করেছেন। তাঁরা আমাদের সমাজকে সকল ধর্মের ওপরে মানব ধর্মকেপ্রতিস্থাপিত করার প্রেরণা যুগিয়েছেন।

আজও আমাদের দেশ,আমাদের সমাজের সামনে এই সমস্যাগুলি রয়েছে। আর এগুলির বিরুদ্ধে আজওসাধু-সন্ন্যাসীরা তাঁদের লড়াই জারি রেখেছেন। আজ তাঁরা সমাজকে বলছেন যে‘পরিচ্ছন্নতাই ঈশ্বর’। তাঁদের এই বাণী সরকারের যে কোন অভিযানের থেকে বেশি প্রভাবশালী।আর্থিক শুচিতার প্রেরণাও আমরা এই সাধুদের কাছ থেকে পাই। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়েনেতৃত্ব আজকের আধুনিক সন্ন্যাসী সমাজই দিতে পারেন।

পরিবেশ রক্ষারক্ষেত্রেও সন্ন্যাসী সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আমাদের সংস্কৃতিতে যুগ যুগধরে বৃক্ষে চেতন এবং জীবনকে মেনে নেওয়া হয়েছে। পরবর্তী সময়ে ভারতেরই এক সুসন্তানমহান বৈজ্ঞানিক ডঃ জগদীশ চন্দ্র বোস বিশ্বের সামনে বৈজ্ঞানিক উপায়ে এই সত্যকেপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার আগে, বিশ্ব আমাদের এই ধারণা নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করত।

আমাদের জন্যপ্রকৃতি মাতৃস্বরূপ। তাকে আমরা দোহন করতে চাই না। সেবা করতে চাই। আমাদের সমাজে বৃক্ষরক্ষার স্বার্থে জীবন উৎসর্গের ঐতিহ্য রয়েছে। একটা গাছের ডাল ভাঙার আগেওপ্রার্থনার ঐতিহ্য রয়েছে। জীবজন্তু এবং গাছপালার প্রতি আমাদের এই সংবেদনা শৈশবথেকেই শেখানো হয়।

আমরা রোজ আরতির পরশান্তি মন্ত্রে “বনস্পতয়ঃ শান্তি, আপঃ শান্তি” বলি। আমাদের প্রাচীন পুঁথিগুলিতেপরিবেশ সম্পর্কে যা লেখা রয়েছে সেগুলি আজ পরিবেশ দূষণের সমস্যার সমাধানেআলোকবর্তিকা হয়ে উঠতে পারে।

আজও দেখবেন, গোটাবিশ্বে জীবনধারণ সংক্রান্ত যে কোন সমস্যা, যে কোন বাধার সম্মুখীন হলে বিশ্ববাসীভারতের সংস্কৃতি এবং সভ্যতার দিকে সতৃষ্ণ নয়নে তাকিয়ে থাকে। বিশ্বের সকল সমস্যারসমাধান ভারতীয় সংস্কৃতিতে রয়েছে। এই দেশে সহজভাবেই এক ঈশ্বরকে নানা রূপে পুজো করাহয়। ঋগ্বেদে বলা হয়েছে – “একম্‌ সত বিপ্রা বহধা বদন্তী”। আমরা বৈচিত্র্যকে কেবলস্বীকার করে নিইনি, আমরা তার উৎসব পালন করি।

আমরা ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’মন্ত্রের অনুসারী। গোটা পৃথিবীকে একটি পরিবার হিসেবে আমাদের পূর্বজরা মেনেনিয়েছিলেন। তাঁরা আমাদের শিখিয়েছেন, “সহনাববত-সহ নৌ ভুনক্তু”; সকলের পোষণ, সকলেরশক্তিলাভ। কেউ কারোর প্রতি দ্বেষ রেখ না। কট্টরতার এটাই সমাধান। যে কোনসন্ত্রাসবাদের মূলে রয়েছে কট্টরতা। তারা ভাবেন, আমাদের পথই সঠিক পথ। কিন্তু ভারতকেবলই সিদ্ধান্ত রূপে নয়, ব্যবহারেও শতাব্দীর পর শতাব্দীকাল ধরে নানা প্রকারউপাসনার সহাবস্থানকে মেনে নিয়েছে। আমরা “সর্বপন্থ সমভাব” নীতি অনুসরণ করি।

আমি মনে করি, আজওআমাদের সবার একসঙ্গে মিলে সমাজে পরিব্যপ্ত কু-কে দূর করার শপথ নিয়ে এগিয়ে যাওয়াউচিৎ। তবেই দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। এক্ষেত্রে সাধু-সন্ন্যাসীদের প্রদর্শিতজ্ঞান, কর্ম আর ভক্তি প্রেরণাস্বরূপ।

আজকের সময়ের দাবিহল, পুজোর সময় দেবতার পাশাপাশি রাষ্ট্র দেবতারও পুজো হোক। প্রত্যেকে নিজের ইষ্টদেবতার পাশাপাশি ভারত মাতার আরাধনা করুন। অশিক্ষা, অজ্ঞানতা, অপুষ্টি, কালো টাকা,দুর্নীতির মতো যে বদ গুণগুলি ভারত মাতাকে আষ্টেপৃষ্ঠে বন্দী করে রেখেছে সেগুলিরহাত থেকে তাকে মুক্তি দেওয়ার পথও সাধু-সন্ন্যাসীরাই আমাদের সমাজকে দেখাচ্ছেন।

আমি প্রার্থনা করি,আপনাদের সকলের প্রচেষ্টায় দেশের প্রতিটি মানুষ প্রাণশক্তিকে অনুভব করবে। “বয়মঅমৃতস্য পূত্রাহা” – আমরা সকলেই অমৃতের সন্তান! এই অনুভব আমাদের জনশক্তিকে আরওমজবুত করতে থাকবে এটুকু বলেই আমি আপনাদের সকলকে কৃতজ্ঞতা জানাই।

অনেক অনেক ধন্যবাদ।

Explore More
শ্রী রাম জন্মভূমি মন্দিরের ধ্বজারোহণ উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বাংলা অনুবাদ

জনপ্রিয় ভাষণ

শ্রী রাম জন্মভূমি মন্দিরের ধ্বজারোহণ উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বাংলা অনুবাদ
Silicon Sprint: Why Google, Microsoft, Intel And Cognizant Are Betting Big On India

Media Coverage

Silicon Sprint: Why Google, Microsoft, Intel And Cognizant Are Betting Big On India
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Prime Minister Meets Italy’s Deputy Prime Minister and Minister of Foreign Affairs and International Cooperation, Mr. Antonio Tajani
December 10, 2025

Prime Minister Shri Narendra Modi today met Italy’s Deputy Prime Minister and Minister of Foreign Affairs and International Cooperation, Mr. Antonio Tajani.

During the meeting, the Prime Minister conveyed appreciation for the proactive steps being taken by both sides towards the implementation of the Italy-India Joint Strategic Action Plan 2025-2029. The discussions covered a wide range of priority sectors including trade, investment, research, innovation, defence, space, connectivity, counter-terrorism, education, and people-to-people ties.

In a post on X, Shri Modi wrote:

“Delighted to meet Italy’s Deputy Prime Minister & Minister of Foreign Affairs and International Cooperation, Antonio Tajani, today. Conveyed appreciation for the proactive steps being taken by both sides towards implementation of the Italy-India Joint Strategic Action Plan 2025-2029 across key sectors such as trade, investment, research, innovation, defence, space, connectivity, counter-terrorism, education and people-to-people ties.

India-Italy friendship continues to get stronger, greatly benefiting our people and the global community.

@GiorgiaMeloni

@Antonio_Tajani”

Lieto di aver incontrato oggi il Vice Primo Ministro e Ministro degli Affari Esteri e della Cooperazione Internazionale dell’Italia, Antonio Tajani. Ho espresso apprezzamento per le misure proattive adottate da entrambe le parti per l'attuazione del Piano d'Azione Strategico Congiunto Italia-India 2025-2029 in settori chiave come commercio, investimenti, ricerca, innovazione, difesa, spazio, connettività, antiterrorismo, istruzione e relazioni interpersonali. L'amicizia tra India e Italia continua a rafforzarsi, con grandi benefici per i nostri popoli e per la comunità globale.

@GiorgiaMeloni

@Antonio_Tajani