সার্ভে থেকে জানা যাচ্ছে যে গড়ে ৭০ শতাংশ মানুষ ‘মন কি বাত’-এর প্রত্যেকটা এপিসোডই শুনেছেন এবং তাঁদের ধারণা ‘মন কি বাত’ সমাজের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ইতিবাচক চিন্তা-ভাবনা বাড়িয়ে দিয়েছে: প্রধানমন্ত্রী মোদী
যখন #MannKiBaat শুরু করা হয়েছিল তখন আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে এই অনুষ্ঠানের মধ্যে কোনও রাজনীতি থাকবে না। সরকারের কোনও বাহবা থাকবে না। এই অনুষ্ঠানে কোনও ‘মোদী’ শব্দ থাকবে না: প্রধানমন্ত্রী
#MannKiBaat সরকারি কথা নয়, এটা সমাজের কথা এবং একটা আশাব্যঞ্জক, উচ্চাকাঙ্ক্ষী ভারতের কথা: প্রধানমন্ত্রী মোদী
দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য জনমানুষের প্রতিভা এবং সমাজের অন্যান্য বিষয়গুলি যাতে উপযুক্ত স্থান পায় সেটা খেয়াল রাখা আমাদের সকলের মিলিত দায়িত্ব। আর #MannKiBaat এই লক্ষ্যে এগিয়ে চলার একটা ক্ষুদ্র, বিনম্র প্রচেষ্টা: প্রধানমন্ত্রী
যখন আমি কোনো পত্র পড়ি, তখন প্রেরকের পরিস্থিতি, তার ভাবনা, আমার চিন্তাধারার অংশ হয়ে যায়: প্রধানমন্ত্রী মোদী
স্বচ্ছতা, সড়ক সুরক্ষা, ড্রাগস ফ্রি ইন্ডিয়া, সেলফি উইথ ডটার ইত্যাদি বিষয়গুলিকে মিডিয়া সৃজনাত্মক পদ্ধতিতে এক অভিযানের রূপরেখা দিয়ে এদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করেছে: প্রধানমন্ত্রী মোদী
প্রত্যাশার বদলে গ্রহণ করলে এবং খারিজ না করে আলোচনা করলে, যে কোনও সংবাদমাধ্যমই গুরুত্ব পায়: #MannKiBaat অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী
নানা ধরনের কর্মসূচি এবং সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যুবসমাজের সঙ্গে আমি অবিরাম যোগাযোগ রেখে চলেছি। যুবসমাজের ভাবনা-চিন্তা থেকে আমি সবসময় শিখি: #MannKiBaat অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী
যদি আমরা তরুণদের ওপর সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা ছেড়ে দিতে পারি এবং যদি খোলামনে তারা চিন্তা-ভাবনা প্রকাশ করতে পারে — তাহলে তারা দেশের গঠনমূলক পরিবর্তন আনতে পারে: #MannKiBaat অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী
আমাদের সংবিধানের মূল বৈশিষ্ট্য হল যে — এখানে অধিকার এবং কর্তব্য বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। দেশের নাগরিকদের জীবনে এই দুটি বিষয়ের ভারসাম্য — দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে: #MannKiBaat অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী
সংবিধানের খসড়া তৈরির এই ঐতিহাসিক কাজটি সম্পন্ন করতে সংবিধান সভার ২ বছর ১১ মাস ১৭ দিন সময় লেগেছিল: #MannKiBaat অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী
আসুন, আমরা সবাই আমাদের সংবিধানের মূল্যকে আরও মর্যাদা প্রদান করি এবং আমাদের দেশে শান্তি, উন্নতি এবং সমৃদ্ধি সুনিশ্চিত করি: #MannKiBaat অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী
আমাদের সংবিধানে ড. বাবাসাহেব আম্বেদকরের অবদান অনস্বীকার্য: #MannKiBaat অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী
প্রজাতন্ত্র বাবাসাহেবের চিন্তনের অন্তর্গত ছিল: #MannKiBaat অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী
ড. বাবাসাহেব আম্বেদকরের মূল মন্ত্র ছিল — India First: #MannKiBaat অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী
গুরুনানক দেবজি সমাজকে সবসময় সত্য, কর্ম, সেবা, করুণা ও সৌহার্দ্য–র পথ দেখিয়েছেন: #MannKiBaat অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী

আমার প্রিয় দেশবাসী! নমস্কার!

৩-রা অক্টোবর ২০১৪ বিজয়া দশমীর পার্বণ — ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা সবাই মিলে একটা যাত্রা শুরু করেছিলাম। ‘মন কি বাত’-এর সেই যাত্রার আজ ৫০-তম পর্ব পূর্ণ হলো। বলা যায় Golden Jubilee Episode — স্বর্ণময় এপিসোড। এবারে যতো চিঠি ও ফোন এসেছে তার বেশিরভাগই এই ৫০-তম সংস্করণ প্রসঙ্গেই বলেছে। ‘মাই গভ’ অ্যাপের মাধ্যমে দিল্লির অংশুকুমার, কমলকুমার, পাটনা থেকে বিকাশ যাদব আবার একই ভাবে ‘নরেন্দ্রমোদী অ্যাপ’-এ দিল্লির মণিকা জৈন, পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান থেকে প্রসেনজিত সরকার, নাগপুরের সঙ্গীতা শাস্ত্রী — এঁরা প্রত্যেকেই প্রায় এক রকম প্রশ্ন পাঠিয়েছেন। এঁদের বক্তব্য সাধারণ মানুষ আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করেন টেকনোলজির নানান সোস্যাল মিডিয়া অ্যাপের মাধ্যমে কিন্তু আপনি জনসাধারনের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য রেডিও মাধ্যম বেছে নিলেন কেন? — এই প্রশ্ন খুবই স্বাভাবিক। আজকের যুগে মানুষ যখন রেডিও-কে প্রায় ভুলতে বসেছিল, সেখানে মোদী কেন রেডিও-কে ফিরিয়ে আনল? এ নিয়ে আমি আপনাদের একটা গল্প বলি। সে সময় — ১৯৯৮ সাল, আমি হিমাচল প্রদেশে ভারতীয় জনতা পার্টির কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছি। মে মাসের সন্ধেবেলা আমি কোনও পাহাড়ী অঞ্চলে কাজ করতে যাচ্ছি। হিমাচলের ঠাণ্ডায় রাস্তার ধারে একটা চায়ের দোকানে চা খেতে দাঁড়িয়ে চা চাইলাম। খুব ছোট দোকান, কোনও ছাদ নেই, একটা ঠেলা গাড়িতে সব রেখে একা হাতেই একজন মানুষ চায়ের দোকান চালাচ্ছেন। তিনি একটা কাঁচের প্লেটে মিঠাই দিয়ে বললেন আগে মিষ্টিমুখ করুন তারপর চা খাবেন। জানতে চাইলাম, বাড়িতে কোনও বিয়ে-সাদী বা পুজো-আর্চা হয়েছে কি! এ কি তার মিষ্টি! দোকানী বললো, আরে না না, আপনি কি খবর রাখেন না? এ কথা বলার সঙ্গে তাঁর এত খুশি ও উচ্ছ্বাস দেখে আমি জানতে চাইলাম, আরে কি খবর, সেটা বলুন আমাকে! তিনি বললেন, আরে আজ ভারত বোম ফাটিয়েছে। আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। এবার দোকানী বললেন, এই নিন রেডিও শুনুন। রেডিওয় শুনলাম, সেই বোমা ফাটানো নিয়ে আলোচনা চলছে। দোকানী জানালো প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারি বাজপেয়ীজী সেই বোমা ফাটানোর, পরমাণু বোমার পরীক্ষার ঐতিহাসিক গুরুত্ব, সেই দিনটির তাৎপর্য নিয়ে রেডিওতে বলেছেন, তিনি শুনেছেন। দোকানদার ভদ্রলোকের খুশি, নাচ দেখতে দেখতে আমি ভাবছিলাম জনমানবশূণ্য এই এলাকা, বরফে ঘেরা পাহাড়ী অঞ্চলে, জঙ্গলের মাঝে এই দোকানী সারাদিন রেডিও শুনছেন তাঁর এই দোকানে। রেডিও তাঁর মনে বড় প্রভাব বিস্তার করছে, অনেক খবর পাচ্ছেন। তখনই আমি উপলব্ধি করেছিলাম আমাদের রেডিও প্রত্যেক মানুষের সব থেকে কাছে পৌঁছতে পারে, জুড়তে পারে মানুষকে। রেডিওর প্রকাণ্ড ক্ষমতা। রেডিওর কম্যুনিকেশন রিচ এবং তার সুদূরপ্রসারী প্রভাবের কথা আমি সেই থেকে ভেবে চলেছি। এরপর যখন আমি প্রধানমন্ত্রী হলাম সব থেকে শক্তিশালী সংযোগ মাধ্যমের সাহায্য নেবো এটাই স্বাভাবিক।

২০১৪-র মে মাস থেকে যখন আমি প্রধান সেবক-এর দায়িত্ব পালন করা শুরু করলাম আমার মনে হয়েছিল, আমাদের দেশের একতা, আমাদের গৌরবময় ইতিহাস, শৌর্য, বৈচিত্র্য, সাংস্কৃতিক বিবিধতা, মানুষের নানান কর্মযজ্ঞ, তার পুরুষকার, আবেগ, ত্যাগ, তপস্যা — ভারতের এই কাহিনিকে সারা দেশের সমস্ত মানুষের কাছে ছড়িয়ে দেওয়া দরকার। দূর দূর গ্রাম থেকে মেট্রো শহরগুলিতে, কিষাণ থেকে তরুণ প্রফেশন্যাল সব্বার কাছে পৌঁছে দিতে হবে দেশের এই সব কথা — এবং এভাবেই ‘মন কি বাত’ করা শুরু হয়েছিল। প্রতি মাসে লাখ খানেক চিঠি পড়তে পড়তে, ফোন কল শুনতে শুনতে, বিভিন্ন অ্যাপে আসা নানান কথা জানতে জানতে এবং সেগুলি এক সঙ্গে মিলিয়ে, আমার নিজের নানান হাল্কা মজার কথা বলতে বলতে ৫০-তম এপিসোডে পৌঁছে গেছি। ৫০-তম এপিসোডের যাত্রা আমরা সব্বাই মিলে সেরে ফেলেছি। ‘মন কি বাত’ নিয়ে আকাশবাণী একটা সমীক্ষা করেছে। সেই সমীক্ষার ফলাফল খুবই উৎসাহব্যঞ্জক। সার্ভে থেকে জানা যাচ্ছে যে শ্রোতারা ‘মন কি বাত’ শুনে আসছেন তাঁদের মধ্যে সত্তর শতাংশ মানুষ ‘মন কি বাত’-এর প্রত্যেকটা এপিসোডই শুনেছেন।

বেশিরভাগ মানুষের ধারণা ‘মন কি বাত’ সমাজের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ইতিবাচক
চিন্তা-ভাবনা বাড়িয়ে দিয়েছে। ‘মন কি বাত’-এর মাধ্যমে গণ-আন্দোলন অনেক বিস্তৃতি লাভ করেছে। ‘হ্যাস ট্যাগ ইণ্ডিয়া পজিটিভ’ এই বিষয়ের উপর বহু আলোচনা হয়েছে।

এই বিষয়টি আমাদের দেশবাসীর অন্তর্নিহিত ধারণাকে ইতিবাচক চিন্তাধারায় উদ্ভাসিত করেছে। জনগণ ‘মন কি বাত’-এর মাধ্যমে পরস্পরের অভিজ্ঞতার বিনিময় করছেন তার সঙ্গে ‘volunteerism’ অর্থাৎ স্ব-ইচ্ছায় কিছু করার ভাবনা বাড়িয়ে দিচ্ছে। এটা এমনই একটা সুষ্ঠ পরিবর্তন যাতে মানুষ সমাজসেবার জন্য অনেক বেশি এগিয়ে আসছেন। আমি এটি দেখে খুবই আনন্দিত যে ‘মন কি বাত’-এর জন্য রেডিওর এত জনপ্রিয়তা। শুধুমাত্র রেডিওর মাধ্যমে জনগণ এই ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে না — টিভি, এফ.এম রেডিও, মোবাইল, ইন্টারনেট, ফেসবুক লাইভ এবং periscope–এর সঙ্গে সঙ্গে ‘নরেন্দ্রমোদী অ্যাপ’ – এই সমস্ত মাধ্যমের সহায়তায় জনগণ ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানটিতে আন্তরিকতার সঙ্গে যোগদান করছেন। আমি ‘মন কি বাত’ পরিবারের সকলে সদস্যকে এই অনুষ্ঠানের উপর বিশ্বাস রাখা এবং এতে অংশগ্রহণের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ দিচ্ছি।

ফোন কল —

“মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহাশয়, নমস্কার! হায়দ্রাবাদ থেকে আমি শালিনী বলছি। ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানটি একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানটির গোড়াতে মানুষের ধারণা হয়েছিল এই অনুষ্ঠানটি একটি রাজনৈতিক মঞ্চে পর্যবসিত হবে এবং এটি একটি আলোচনার বিষয়বস্তুও হয়েছিল। কিন্তু এই অনুষ্ঠান যেভাবে এগিয়ে যেতে লাগল, তাতে আমরা দেখলাম, রাজনীতির পরিবর্তে অনুষ্ঠানটি সামাজিক নানান সমস্যা এবং বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের উপর কেন্দ্রীভূত এবং এই ভাবেই আমার মতন কোটি কোটি সাধারণ মানুষের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। ধীরে ধীরে আলোচনাও সমাপ্ত হল। এবার আমার প্রশ্ন হচ্ছে যে আপনি কী করে এই অনুষ্ঠানটিকে রাজনীতিমুক্ত করতে পারলেন। কখনও কি আপনার এই রকম মনে হয়নি, আপনি এই অনুষ্ঠানটিকে রাজনীতির ক্ষেত্র হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন অথবা এই অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে সরকারী সাফল্যের কথা তুলে ধরতে পারেন। ধন্যবাদ!”

আপনার ফোন কলের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ! আপনার অনুমান সঠিক। আসলে নেতারা মাইক পেলে আর লক্ষ-কোটি শ্রোতা পেলে আর কী চাই? কয়েকজন যুববন্ধু ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে এসেছিলেন এবং সব বিষয়ের উপর পর্যালোচনা করেছিলেন। ওঁরা সবকটি পর্বের ভাষা বিশ্লেষণ করেছিলেন এবং অধ্যয়ণ করে দেখেছেন যে কোনো কোনো শব্দ কতবার করে প্রয়োগ করা হয়েছে? আবার কোন কোন শব্দ বার বার বলা হয়েছে। ওঁরা এই সিদ্ধান্তে এসেছেন যে এই অনুষ্ঠানটি ‘অ্যাপলিটিক্যাল’।

যখন ‘মন কি বাত’ শুরু করা হয়েছিল তখন আমি নিশ্চিত ছিলাম যে এই অনুষ্ঠানের মধ্যে কোনও রাজনীতি থাকবে না। সরকারের কোনও বাহবা থাকবে না। এই অনুষ্ঠানে কোনও ‘মোদি’ শব্দ থাকবে না এবং এই সঙ্কল্প নিশ্চিত করার জন্য আপনাদের সবার প্রেরণাই আমার সম্বল।

প্রত্যেক ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান শুরুর আগে যে সমস্ত চিঠিপত্র, comments, phone calls আসে তার থেকে জানা যায় যে শ্রোতারাও এই অনুষ্ঠান শোনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন। মোদী আসবেন এবং চলে যাবেন কিন্তু আমাদের এই দেশ চিরস্থায়ী। আমাদের সংস্কৃতি অমর থাকবে। ১৩০ কোটি ভারতবাসীর এই ছোটো ছোটো কাহিনিগুলি সর্বদা বেঁচে থাকবে। উৎসাহ-উদ্দীপনায় ভরপুর নতুন প্রেরণা দেশকে আরও উচ্চ শিখরে পৌঁছে দেবে। আমি কখনও কখনও অতীতকে ফিরে দেখি আর বিস্মিত হয়ে যাই। আমাদের দেশের কোনও এক জায়গার কোনও একজন চিঠি লিখে জানালেন — ছোট দোকানদার, অটো চালক, সবজি বিক্রেতাদের মতো মানুষদের সঙ্গে আমাদের কখনও দরাদরি করা উচিত নয়। — আমি চিঠিগুলি পড়ি আর তার মধ্যে এইরকম ভাব অনুভব করি এবং সেগুলি মনে গেঁথে রেখে কাজ করি। দুটো ঘটনাই আমি নিজে উপলব্ধি করেছি এবং ওদের সঙ্গেও share করে নিচ্ছি এবং আপনাদের সকলের সঙ্গেও ভাগ করে নিচ্ছি। কিন্তু কে জানে কখন আবার এই কথাগুলো ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে। সোস্যাল মিডিয়া আর হোয়াটস্‌অ্যাপ-এ ঘুরে বেড়াবে এবং আর এক পরিবর্তনের দিকে এগিয়ে যাবে। স্বচ্ছতার উপর আপনাদের পাঠানো গল্পগুলি, সাধারণ মানুষের অনেক অনেক উদাহরণ — জানি না, কীভাবে কখন ঘরে ঘরে স্বচ্ছতার এই শিশু ব্র্যাণ্ড অ্যাম্বাসেডার-এর জন্ম দিয়েছে যে পরিবারের সদস্যদেরও সচেতন করে, আবার কখনও কখনও ফোন করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহাশয়কেও আদেশ দিয়ে থাকে।

কোনোদিন কোন সরকারের এতটা ক্ষমতা হবে কি, যে ‘selfie with daughter’ অর্থাৎ ‘নিজের কন্যার সাথে নিজস্বীর’ মত প্রকল্প হরিয়ানার এক ছোট্ট গ্রাম থেকে শুরু হয়ে, সমগ্র দেশেই নয়, সারা বিশ্বেও ছড়িয়ে পড়বে। সমাজের প্রত্যেক শ্রেণির মানুষ, এমনকি সেলিব্রিটিরাও এই বিষয়টির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। সমাজের চিন্তাধারাকে এমন এক আধুনিক ভাষ্য-ভঙ্গিমায় তুলে ধরা হয়েছে, যাতে আধুনিক প্রজন্ম আলোকিত হয়।

কখনো কখনো ‘মন কি বাত’ নিয়ে মজাও করা হয়েছে। কিন্তু আমার মনে সব সময়ই ১৩০ কোটি দেশবাসী বিরাজ করছে। তাদের মনই আমার মন। ‘মন কি বাত’ কিন্তু সরকারি কথা নয় – এটা সমাজের কথা। ‘মন কি বাত’ একটা আশাব্যঞ্জক, উচ্চাকাঙ্ক্ষী ভারতের কথা। ভারতের মূল প্রাণশক্তি রাজনীতি বা রাজশক্তি নয়। ভারতের মূল প্রাণশক্তি হলো সমাজনীতি বা সমাজশক্তি। সমাজজীবনের অনেক দিক থাকে যার মধ্যে রাজনীতিও একটা দিক মাত্র। রাজনীতি যদি মূল বিষয় হয়ে যায়, তা কোন সুস্থ সমাজব্যবস্থার প্রতিচ্ছবি হতে পারে না। কখনও রাজনৈতিক ঘটনা বা রাজনৈতিক মানুষেরা এতটাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়ে যে সমাজের অন্য প্রতিভা বা অন্য উদ্যম ক্ষমতা অবহেলিত হয়ে পড়ে। ভারতের মতো দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য জনমানুষের প্রতিভা এবং সমাজের অন্যান্য বিষয়গুলি যাতে উপযুক্ত স্থান পায় সেটা খেয়াল রাখা আমাদের সকলের মিলিত দায়িত্ব। আর ‘মন কি বাত’ এই লক্ষ্যে এগিয়ে চলার একটা ক্ষুদ্র, বিনম্র প্রচেষ্টা।

(ফোন কল – 2)

“নমস্কার প্রধানমন্ত্রী জি! আমি প্রমিতা মুখার্জি বলছি মুম্বই থেকে। স্যার, ‘মন কি বাত’এর প্রত্যেক পর্ব, গভীর চিন্তাভাবনায়, তথ্যে, ইতিবাচক কাহিনি এবং সাধারণ নাগরিকের শুভ কর্মে পরিপূর্ণ থাকে। তাই আমি জিজ্ঞেস করতে চাই যে প্রত্যেক প্রোগ্রামের আগে আপনি কতটা প্রস্তুতি নেন?”

ফোন করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। একদিক থেকে আপনার এই আপনার প্রশ্নটি আমাকে একজন আপনজন মনে করেই করা। আমি মনে করি ‘মন কি বাতের’ ৫০-তম পর্বের সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব এই যে, আপনি প্রধানমন্ত্রীকে নয়, যেন নিজের এক ঘনিষ্ঠ সঙ্গীকে প্রশ্ন করছেন। এটাই তো গণতন্ত্র। আপনি যে প্রশ্নটি করেছেন সহজ ভাষায় যদি তার উত্তর দিই তাহলে বলব, কিচ্ছু না। আসলে ‘মন কি বাত’ আমার জন্য খুবই সোজা একটি কাজ। প্রত্যেক ‘মন কি বাতের’ আগে মানুষে চিঠি পাঠায়। ‘মাই গভ’ আর ‘নরেন্দ্রমোদী অ্যাপ’-এ মানুষেরা তাদের মতামত ভাগ করে। একটি টোল ফ্রি নাম্বারও আছে – 1XXX XX 7800, ওখানে কল করে মানুষেরা নিজের বার্তা নিজের কন্ঠে রেকর্ডও করে। আমি চেষ্টায় থাকি, যে ‘মন কি বাতের’ পূর্বে যতটা সম্ভব চিঠি আর মন্তব্য নিজেই পড়ে নেওয়ার। আমি অনেকগুলি ফোনকলও শুনি। এবার ‘মন কি বাতের’ এপিসোড যত এগিয়ে আসতে থাকে, আমি বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণের সময় আপনাদের পাঠানো মতামত এবং চিন্তাধারা খুব মন দিয়ে পড়তে থাকি। আমার দেশবাসীরা সর্বক্ষণ আমার মনের মধ্যে বিরাজ করে। তাই যখন আমি কোনো পত্র পড়ি, তখন প্রেরকের পরিস্থিতি, তার ভাবনা, আমার চিন্তাধারার অংশ হয়ে যায়। সেই পত্রটি আমার জন্যশুধুমাত্র কোন কাগজের টুকরো থাকে না। আর এ ছাড়াও আমি প্রায় 40-45 বছর একটানা পরিব্রাজকের জীবন যাপন করেছি আর দেশের অধিকাংশ জেলাতেও গিয়েছি। দেশের প্রত্যন্ত জেলাগুলিতেও আমি অনেকটা সময় কাটিয়েছি। আর এই কারণেই যখন আমি কোনো পত্র পড়ি তখন খুব সহজেই সেই স্থান-কালের সাথে নিজেকে সংযুক্ত করতে পারি। এরপর আমি কিছু তথ্য, যেমন গ্রাম, ব্যক্তির নাম – এই ধরনের তথ্যগুলি নোট করি। সত্যি বলতে কি, ‘মন কি বাত’-এ, কণ্ঠ তো আমারই থাকে, কিন্তু উদাহরণ, আবেগ ও প্রাণশক্তি আমার দেশবাসীর। আমি ‘মন কি বাতে’ অবদানকারী সকল ব্যক্তিকে ধন্যবাদ দিতে চাই। এরকম লাখ লাখ মানুষ আছে যাদের নাম আমি আজ পর্যন্ত ‘মন কি বাতে’ নিতে পারিনি, কিন্তু তারা হতাশ না হয়ে নিজেদের পত্র, নিজেদের মন্তব্য পাঠাতেই থাকে। আপনাদের বিচার, আপনাদের ভাবনা আমার জীবনে খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমার সম্পূর্ণ আস্থা আছে যে আপনাদের বার্তা আগের থেকে অনেকগুণ বেশি আমার কাছে আসবে আর ‘মন কি বাত’-কে আরও মনোগ্রাহী, প্রভাবশালী এবং উপযোগী করে তুলবে।

এটাও চেষ্টা করা হয়, যে সব চিঠি ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে অন্তর্ভুক্ত করা হয় না, সে সব চিঠি আর পরামর্শের প্রতি সংশ্লিষ্ট বিভাগও যেন নজর দেয়। আমি আকাশবাণীর সকল প্রচার মাধ্যম, দূরদর্শন, অন্যান্য টিভি চ্যানেল, social media–র বন্ধুদেরও ধন্যবাদ দিতে চাই। তাঁদের পরিশ্রমে ‘মন কি বাত’ সব থেকে বেশি লোকের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। আকাশবাণীর টিম প্রত্যেক episode-এ অনেক ভাষাতে প্রচারের জন্য তর্জমা করে। কিছু ঘোষক আঞ্চলিক ভাষাতে মোদীর কথা বলার ও কণ্ঠের শৈলীতে ‘মন কি বাত’ শোনায় । এই ভাবে তাঁরা তিরিশ মিনিটের জন্য নরেন্দ্র মোদী হয়ে যান। আমি ওঁদেরকেও ওঁদের ট্যালেন্ট এবং স্কিলের জন্য অভিনন্দন জানাই, ধন্যবাদ দিতে চাই। আমি আপনাদের সবাইকে অনুরোধ করছি এই অনুষ্ঠানটিকে নিজেদের আঞ্চলিক ভাষাতেও যেন অবশ্যই শোনেন। আমি মিডিয়ার ওইসব বন্ধুদেরও আমার মন থেকে ধন্যবাদ জানাই, যাঁরা নিজেদের চ্যানেলে নিয়মিত ভাবে ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান প্রচার করছেন।

কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তি মিডিয়া থেকে তুষ্ট হয় না, ভাবেন তাঁকে অনেক কম কভারেজ করা হয়, অথবা নেতিবাচক কভারেজ হয়, কিন্তু ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে প্রচারিত অনেক বিষয় মিডিয়া নিজেদের বিষয় করে নিয়েছে। স্বচ্ছতা, সড়ক সুরক্ষা, drugs free India, selfie with daughter ইত্যাদি বিষয়গুলিকে মিডিয়া সৃজনাত্মক পদ্ধতিতে এক অভিযানের রূপরেখা দিয়ে এদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করেছে। টিভি চ্যানেলগুলো এটাকে Most watched radio programme-এ তৈরি করেছে। আমি আমার মন থেকে মিডিয়াকে অভিনন্দন জানাই। আপনাদের সাহায্য ছাড়া ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানের এই যাত্রা অসম্পূর্ণ থাকতো।

“নমস্কার মোদি জী ! আমি নিধি বহুগুণা বলছি, মসুরী উত্তরাখণ্ড থেকে – আমি দুটি যুব সন্তানের মা। আমি প্রায় দেখেছি, এই বয়সের ছেলেমেয়েরা চায় না, যে ওদের কেউ বলুক কি করা উচিত। সে হতে পারে ওদের টিচার বা মা-বাবা। কিন্তু যখন আপনার ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে ছেলেমেয়েদের কিছু বলেন, ওরা মন থেকে সেটা উপলব্ধি করে আর মেনেও নেয় – আপনি কি এই রহস্য আমাদের সঙ্গে ভাগ করে নেবেন ? আপনি কি, যে ভাবে বলেন বা যে সব বিষয় সামনে নিয়ে আসেন ছেলেমেয়েরা ভালোভাবে বুঝে implement করে ? ধন্যবাদ।”

নিধি-জী, আপনার ফোন কলের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। সাধারণভাবে আমি বলি আমার কাছে কোনো রহস্য নেই। আমি যেটা করছি সেটা সব পরিবারে হয়ত হয়। সহজ ভাষাতে বলি – আমি ওই সব যুবাদের মতো নিজেকে তৈরি করার চেষ্টা করি, নিজেকে ওই পরিস্থিতিতে রেখে ওদের মতামতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একটি wave length match করার চেষ্টা করি। আমাদের নিজেদের জীবনে কিছু পুরোনো baggages আছে, সেগুলো যদি সামনে আনা না হয় তাহলে কাউকে বোঝানো সহজ হয়ে যায়। কখনো কখনো আমাদের পুরনো সংস্কারগুলি ভাবনার বিনিময়ে অন্তরায় সৃষ্টি করে। মেনে নেওয়া বা না মেনে নেওয়া এবং নিজের প্রতিক্রিয়া জাহির করার চেয়েও অন্যের কথা বোঝাটাকে আমার অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি। আমার অভিঞ্জতা বলে, এরকম পরিস্থিতিতে সামনের মানুষ আমাকে convince করার জন্য বিভিন্ন তর্ক অথবা চাপ সৃস্টি না করে আমার wave length এ আসার চেষ্টা করে। এইজন্য communication gap থাকে না, তারপর দুজনেই আমারা এক বিচারের সহমতে পৌঁছে যাই। দুজনের মধ্যে কেউ আমারা বুঝতেই পারি না, এক জন কখন কিভাবে নিজের চিন্তধারা ছেড়ে অন্যের কথা স্বীকার করে নিয়েছে – আর নিজের করে ফেলেছে। বর্তমানের যুবাদের ভাল গুণ হলো, সে যেটা নিজে বিশ্বাস করে না সেটা কখনো করে না, আর যখন কোনো জিনিসে বিশ্বাস করে তখন সব কিছ ছেড়ে তার পিছনে লেগে যায়। প্রায়ই লোকেরা পরিবারের বড়ো আর Teenager-দের মধ্যে communication gap নিয়ে আলোচনা করে। কিন্তু বেশির ভাগ পরিবারে teenager-দের সঙ্গে সীমিত বিষয়ে আলোচনা হয়। বেশিরভাগ সময় পড়াশোনার কথা অথবা অভ্যাস, life style নিয়ে কথা বার্তা হয় — এটা কর, এটা না কর । কোনো রকম শর্ত আরোপ না করে খোলা মনে কথাবার্তা ধীরে ধীরে পরিবারের মধ্যে কম হয়ে যাচ্ছে, এটাও চিন্তার বিষয়। প্রত্যাশার বদলে গ্রহণ করলে এবং খারিজ না করে আলোচনা করলে, যে কোনও সংবাদমাধ্যমই গুরুত্ব পায়। নানা ধরনের কর্মসূচি এবং সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যুবসমাজের সঙ্গে আমি অবিরাম যোগাযোগ রেখে চলেছি। যুবসমাজের ভাবনা-চিন্তা থেকে আমি সবসময় শিখি। তরুণদের কাছে নানা ধরনের আইডিয়া থাকে। তরুণরা উদ্যোমী, উদ্ভাবনী এবং লক্ষ্যে অবিচল। ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমি তরুণদের প্রচেষ্টা এবং চিন্তা-ভাবনাগুলো আরও বেশি করে ভাগ করে নিতে চেষ্টা করি। আমরা প্রায়ই বলে থাকি, যে তরুণরা খুব বেশি তর্ক করে। আমি বলি কি, সদ্য তরুণরা যত প্রশ্ন করবে, ততই ভালো। কারণ, তারা সবকিছুই তলিয়ে দেখতে চায়। কেউ কেউ বলেন, তরুণদের ধৈর্য্য নেই। কিন্তু আমি মনে করি যে ওদের কাছে নষ্ট করার মত সময় নেই। আজকের তরুণ প্রজন্ম যে অনেক বেশি উদ্ভাবনী ক্ষমতাসম্পন্ন, তার কারণ এটাই । আমার মনে হয়, আজকের তরুণরা খুব উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং তারা অনেক বৃহৎ চিন্তা করে। এটাই ভালো, ওরা স্বপ্ন দেখুক এবং সেই স্বপ্ন সফল করুক — এটাই তো ‘নতুন ভারত’।

কেউ কেউ বলেন, তরুণ ছাত্ররা একসঙ্গে নানারকম কাজ করতে চায়। আমি বলি, এতে খারাপ কী আছে? ওরা ‘মাল্টি-টাস্কিং’-এ পারদর্শী, তাই ওরা এরকম করে। আমরা যদি চারদিকে দেখি, সেখানে দেখব সামাজিক উদ্যোগ হোক, ‘স্টার্ট-আপ’ হোক, খেলাধূলা হোক অথবা অন্য কোনও ক্ষেত্র — সমাজে বড় বড় পরিবর্তন তরুণরাই নিয়ে আসে।

সেই তরুণরা, যারা প্রশ্ন করার এবং স্বপ্ন দেখার সাহস দেখিয়েছে। যদি আমরা তরুণদের ওপর সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা ছেড়ে দিতে পারি এবং যদি খোলামনে তারা চিন্তা-ভাবনা প্রকাশ করতে পারে — তাহলে তারা দেশের গঠনমূলক পরিবর্তন আনতে পারে। আর এটা তারা করছে।

আমার প্রিয় দেশবাসী, গুরুগ্রাম থেকে ‘মাই গভ’ ওয়েবসাইটে বিনীতা-জী লিখেছেন যে, এবারের ‘মন কি বাত’-এ আগামী ২৬-শে নভেম্বরের ‘সংবিধান দিবস’ নিয়ে কিছু বলা দরকার। তাঁর বক্তব্য এটি একটি বিশেষ দিন, কারণ ভারতের সংবিধান চালু হওয়ার সত্তরতম বর্ষে আমরা প্রবেশ করছি।

বিনীতাজী, আপনার এই পরামর্শের জন্যে অনেক অনেক ধন্যবাদ! হ্যাঁ, কাল ‘সংবিধান দিবস’। যাঁরা আমাদের সংবিধান প্রণয়ন করেছেন — সেই সব মহান ব্যক্তিত্বদের স্মরণ করার দিন। ১৯৪৯ সালের ২৬শে নভেম্বর আমাদের সংবিধান গৃহীত হয়েছিল। সংবিধানের খসড়া তৈরির এই ঐতিহাসিক কাজটি সম্পন্ন করতে সংবিধান সভার ২ বছর ১১ মাস ১৭ দিন সময় লেগেছিল। কল্পনা করুন, তিন বছরের মধ্যেই এই মহান প্রতিভাসম্পন্ন ব্যক্তিরা আমদের এত ব্যাপক ও বিস্তৃত সংবিধান উপহার দিয়েছেন। এঁরা যে অসামান্য গতিতে সংবিধান নির্মাণ করেছেন — তা আজকের দিনেও টাইম ম্যানেজমেন্ট ও প্রোডাক্টিভিটি-র এক অনন্য উদাহরণ।

এর অনুপ্রেরণায় আমরাও আমাদের দায়িত্বগুলো রেকর্ড সময়ে শেষ করতে উজ্জীবিত হই। ‘সংবিধান সভা’ ছিল দেশের মহান প্রতিভাধর মানুষদের এক সমাবেশ। এতে প্রত্যেকে দেশকে এমন একটি সংবিধান প্রদান করতে দায়বদ্ধ ছিলেন — যাতে, ভারতের জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটে, দরিদ্রতম ব্যক্তিটিও সমর্থ হয়ে ওঠে।

আমাদের সংবিধানের মূল বৈশিষ্ট্য হল যে — এখানে অধিকার এবং কর্তব্য, অর্থাৎ Rights and Duties বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। দেশের নাগরিকদের জীবনে এই দুটি বিষয়ের ভারসাম্য — দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। যদি আমরা অপরের অধিকারকে সম্মান করি, তাহলে নিজেদের অধিকারও আপনা আপনি রক্ষিত হবে। আবার একইভাবে যদি আমরা সংবিধানে দেওয়া আমাদের কর্তব্য পালন করি — তাহলে আমাদের নিজেদের অধিকার রক্ষার কাজটিও সম্পন্ন হবে।

আমার মনে পড়ে, ২০১০ সালে ভারতের গণতন্ত্রের ৬০ বছরে গুজরাটে আমরা হাতির পিঠের ওপর সংবিধান রেখে শোভাযাত্রা বার করেছিলাম। তরুণদের সংবিধান নিয়ে সচেতন করতে এবং তাদের সংবিধানের বিভিন্ন ধারা সম্পর্কে আগ্রহী করে তুলতে এটা একটা স্মরণীয় প্রয়াস ছিল। ২০২০ সালে গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে আমরা ৭০ বছর পূর্ণ করতে চলেছি এবং ২০২২ সালে আমাদের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্ণ হবে।

আসুন, আমরা সবাই আমাদের সংবিধানের মূল্যকে আরও মর্যাদা প্রদান করি এবং আমাদের দেশে Peace, Progression, Prosperity অর্থাৎ শান্তি, উন্নতি এবং সমৃদ্ধি সুনিশ্চিত করি।

আমার প্রিয় দেশবাসী, সংবিধান সভা সম্পর্কে কথা বলতে গেলে সেই মহাপুরুষের অবদান অনস্বীকার্য যিনি সংবিধান সভার মূলে ছিলেন। এই মহাপুরুষ হলেন মাননীয় ড. বাবাসাহেব আম্বেদকর। ৬-ই ডিসেম্বর তাঁর মহাপরিনির্বাণ দিবস। সমস্ত দেশবাসীর পক্ষ থেকে আমি বাবাসাহেবকে প্রণাম জানাই, যিনি কোটি কোটি ভারতীয়কে সসম্মানে বাঁচার অধিকার পাইয়ে দিয়েছেন। প্রজাতন্ত্র বাবাসাহেবের চিন্তনের অন্তর্গত ছিল এবং উনি বলতেন যে ভারতের প্রজাতান্ত্রিক আদর্শ বহিরাগত নয়। প্রজাতন্ত্র বা সংসদীয় ব্যবস্থার সংজ্ঞা ভারতের জন্য নতুন কিছু ছিল না। সংবিধান সভায় উনি এক আবেগপ্রবণ আর্জি করেছিলেন যে, এই স্বাধীনতা বহু লড়াইয়ের পরে আমরা অর্জন করেছি আর তাই আমাদের রক্তের শেষ বিন্দু দিয়েও একে রক্ষা করতে হবে। তিনি আরও বলতেন যে আমরা ভারতীয়রা যতই ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশে বেড়ে উঠি না কেন, দেশের কল্যাণের ভাবনা যেন সর্বদা অগ্রাধিকার পায়। ড. বাবাসাহেব আম্বেদকরের মূল মন্ত্র ছিল — India First। আরও একবার বাবাসাহেবকে আমার শ্রদ্ধাঞ্জলি।

আমার প্রিয় দেশবাসী, দু’দিন আগে ২৩-শে নভেম্বর আমরা সবাই শ্রী গুরুনানক দেবের জন্মজয়ন্তী উদ্‌যাপন করেছি। আগামী বছর অর্থাৎ ২০১৯-এ তাঁর ৫৫০-তম প্রকাশ পর্ব উদ্‌যাপন করতে চলেছি। শ্রী গুরুনানক দেব সর্বদা মানবজাতির কল্যাণ কামনা করেছেন। উনি সমাজকে সবসময় সত্য, কর্ম, সেবা, করুণা ও সৌহার্দ্য–র পথ দেখিয়েছেন। আমাদের দেশ আগামী বছর শ্রী গুরুনানক দেবের ৫৫০-তম জন্মজয়ন্তী সাড়ম্বরে পালন করবে।

এর বিস্তার দেশ ছাপিয়ে, সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়বে। সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত প্রদেশগুলিকে অনুরোধ করা হয়েছে ধুমধামের সঙ্গে এই দিনটি পালন করতে। এই ভাবেই শ্রী গুরুনানক দেবের ৫৫০-তম প্রকাশ পর্ব সারা বিশ্বের সমস্ত দেশে উদ্‌যাপন করা হবে। এরই সঙ্গে শ্রী গুরুনানক দেবের সঙ্গে জড়িত সমস্ত পবিত্র স্থান জুড়ে একটি ট্রেন-ও চালানো হবে। সম্প্রতি আমি যখন এই ব্যাপারে একটি আলোচনা করছিলাম তখন আমার মনে পড়ল লখপত সাহিব গুরুদ্বার-এর কথা। ২০০১ সালে গুজরাটে ভূমিকম্পের সময় এই গুরুদ্বার বিপুলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, কিন্তু যে ভাবে স্থানীয় লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে রাজ্যসরকার ঐ গুরুদ্বার পুনরুদ্ধার করে তা উদাহরণযোগ্য।

ভারত সরকার একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে — কর্তারপুর করিডর তৈরি করার। যাতে, আমাদের দেশের যাত্রীরা সহজেই পাকিস্তানে অবস্থিত কর্তারপুরে শ্রী গুরুনানক দেবের পবিত্র ভূমি দর্শন করতে পারেন।

আমার প্রিয় দেশবাসী, ৫০-তম পর্বের পর আমরা আবার মিলিত হব আগামী
‘মন কি বাত’-এ। আমার বিশ্বাস, ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানটির বিষয়ে আমার যে চিন্তা-ভাবনা ছিল, তা আপনাদের সামনে প্রথমবার তুলে ধরতে পারলাম কারণ আপনারাই তা জানতে চেয়েছিলেন। আমাদের এই যাত্রা চলতেই থাকবে। আপনাদের সাহচর্য আমি যত বেশি করে পাব, ততই এই যাত্রা গভীর হবে এবং সন্তোষজনক হবে। কখনও কখনও মানুষের মনে প্রশ্ন ওঠে যে, ‘মন কি বাত’ থেকে আমি কী পেলাম? আমি আজ এটা বলতে চাই যে, ‘মন কি বাত’-এর যে feedback আসে, সেখানে একটা ব্যাপার আমার হৃদয় ছুঁয়ে গেছে, বেশিরভাগ মানুষ বলেছেন যে, তাঁরা যখন সপরিবারে বসে ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানটি শোনেন, তখন তাদের মনে হয় যেন পরিবারেরই কর্তা তাদের মাঝে তাদেরই কথা তাদের সঙ্গে ভাগ করে নিচ্ছেন। আমি যখন এই কথাটা বিশদে জানতে পারলাম যে আমি আপনার, আপনাদেরই একজন, আপনাদের মাঝে এবং আপনারাই আমাকে বড় বানিয়েছেন তখন আমি খুব খুশি হলাম। আমি আপনাদের পরিবারের সদস্যরূপে ‘মন কি বাত’-এর মাধ্যমে বারবার আসব, আপনাদের সঙ্গে মিলিত হব। আপনাদের সুখ-দুঃখ, আমার সুখ-দুঃখ। আপনার আকাঙ্ক্ষা, আমার আকাঙ্ক্ষা। আপনার সদিচ্ছা, আমারও সদিচ্ছা।

আসুন, এই যাত্রাকে আমরা আরও এগিয়ে নিয়ে যাই। অনেক অনেক ধন্যবাদ!

Explore More
শ্রী রাম জন্মভূমি মন্দিরের ধ্বজারোহণ উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বাংলা অনুবাদ

জনপ্রিয় ভাষণ

শ্রী রাম জন্মভূমি মন্দিরের ধ্বজারোহণ উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বাংলা অনুবাদ
India’s GDP To Grow 7% In FY26: Crisil Revises Growth Forecast Upward

Media Coverage

India’s GDP To Grow 7% In FY26: Crisil Revises Growth Forecast Upward
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...

​Prime Minister Shri Narendra Modi is paying his first bilateral visit to Ethiopia from 16-17 December 2025. In a special ceremony hosted at the Addis International Convention Centre today, the Prime Minister of Ethiopia, H.E. Dr. Abiy Ahmed conferred the highest award of Ethiopia the ‘Great Honor Nishan of Ethiopia’ upon Prime Minister Shri Narendra Modi for his exceptional contribution towards strengthening India-Ethiopia partnership and for his visionary leadership as a global statesman.

Speaking on the occasion, Prime Minister Modi noted that it was an honor for him to accept the award from one of most ancient civilizations of the world, and he did so with a deep sense of humility and gratitude. Prime Minister Modi expressed his heartfelt gratitude to Prime Minister Dr. Abiy and the people of Ethiopia for this honour. He expressed appreciation for the leadership of Prime Minister Dr. Abiy and his initiatives to promote national unity, sustainability, and inclusive development. Underlining the salience of knowledge for nation building, Prime Minister Modi stated that it was a privilege for Indian teachers for over a century now to contribute towards Ethiopia’s progress and development.

​Prime Minister Modi dedicated the award to all those – Indians and Ethiopians - who have nurtured the bilateral ties for ages and conveyed heartfelt gratitude on behalf of the 1.4 billion Indians for being bestowed with this honour. The conferment of the award marks a milestone in the close partnership between India and Ethiopia and in furthering the positive agenda of the Global South.